২০ বছর আগে গাঁস্ত রোবের্জ ‘অ্যানাদার সিনেমা ফর
অ্যানাদার সোসাইটি’ নামে বই লিখেছিলেন। ‘নতুন
সিনেমার সন্ধানে’ নামে তা বাংলায় অনুদিতও হয়েছে।
বিশ বছর পর নতুন ইলেকট্রনিক, সাইবারনেটিক,
ডিজিটাল মিডিয়ার যুগে প্রকাশিত হলো তার নতুন বই
‘সাইবারবাণী : বিয়িং হিউম্যান ইন দ্য নিউ মিডিয়া
এনভায়রনমেন্ট’। সাংস্কৃতিক ও মানবিক পরির্বতনে
সিনেমা এবং গণমাধ্যমের ভূমিকাকে স্পষ্ট করাই তাঁর
ল্ক্ষ্য। এ ছাড়া লিখেছেন চিত্রবাণী (১৯৭৪), ম্যাস
কমিউনিকেশন অ্যান্ড ম্যান (১৯৭৭), ফিল্মস ফর অ্যান
ইকোলজি অব মাইন্ড (১৯৭৮), মেডিয়েশনস, দ্য
অ্যাকশন অফ দ্য মিডিয়া ইন আওয়ার সোসাইটি
(১৯৮০), দ্য সাবজেক্ট অব সিনেমা (১৯৮৫), দ্য
কমপ্যাশনেট ফেস অব মিনিং (২০০৪) প্রভৃতি। গাঁস্ত
রোবের্জের জন্ম ১৯৩৫ সালে কানাডার মন্ট্রিল শহরে।
মন্ট্রিল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ ডিগ্রি অর্জনের পর
নিজের আগ্রহে জেসুইট মিশনের সদস্য হয়ে ১৯৬১
সালে চলে আসেন কলকাতায়। পরে ইউনিভার্সিটি অব
ক্যালিফোর্নিয়া থেকে থিয়েটার আর্টসে (ফিল্ম) এমএ
করেন। ১৯৬১-তেই সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে কলকাতায়
প্রতিষ্ঠা করেন কমিউনিকেশন সেন্টার চিত্রবাণী। এছাড়া
ভারত সরকারের আমন্ত্রণে দূরদর্শনের জন্য তৈরি করেন
একাধিক শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান। অধ্যাপনা করেছেন পুনে
ফিল্ম ইনস্টিটিউটটসহ একাধিক প্রতিষ্ঠানে। সম্প্রতি তিনি
ঢাকায় একটি কর্মশালা পরিচালনার জন্য এলে এ সাক্ষাকারটি গৃহীত হয়।
আপনার নতুন বই সাইবারবাণীতে আপনি নতুন মিডিয়া পরিবেশে মানবিক হওয়ার কথা বলেছেন। মানবিক হওয়া বলতে আপনি কী বোঝাতে চেয়েছেন?
মনে রাখতে বলি যে, শেষ পর্যন্ত আমরা মানুষ। আজকাল অনেকে প্রযুক্তি ও আর্টিফিশিয়াল বুদ্ধিবৃত্তি ইত্যাদির বিকাশ দেখে বলেন, আমাদের আর মানুষ বা হিউম্যান হওয়ার দরকার নেই। হিউম্যানের থেকে আরো ভালো হবে পোস্ট হিউম্যান বা সাইবার হিউম্যান বা ট্রান্স হিউম্যান। আমি এর সঙ্গে একমত নই। আমার ধারণা, মানুষের পরে আর কিছু হবে না। মানুষ কেবল আরো ভালোভাবে মানুষ হতে পারে। আমরা আমাদের এই গ্রহটাকে নষ্ট করে ফেলছি, অথচ কেউ কেয়ার করে না। ক্যাপিটালিস্ট যারা, শোষণ করে যারা তারা আর কিছু দেখে না কেবল মুনাফা দেখে। আমার চোখে সবচেয়ে খারাপ লাগে যে, আজকাল অনেক মানুষ পানীয় জল পায় না। মানুষের জন্য পানীয় জল কি খুব অসাধারণ জিনিস? এক জায়গার মানুষ আর্সেনিক মিশ্রিত পানি পান করছে, আরেক জায়গায় পানিই নেই যথেষ্ট। তো আমরা যদি এতটুকু করতে না পারি, তা হলে কেন ট্রান্সহিউম্যান হতে চাই! আমি বিশ্বাস করি যে, আমরা হিউম্যান হতে পারবো যদি আরো ভালো মানুষ হতে পারি। কম্পিউটার দিয়ে, ন্যানো টেকনোলজি দিয়ে আমরা আমাদের মস্তিষ্ককে আরো বিস্তৃত করতে পারি, ক্ষমতা বাড়াতে পারি; আমার ভয় হয়, তাহলেও আমরা আরো ভালো মানুষ হতে পারবো কিনা। আজকাল এত যুদ্ধ হয়, এত জীবনের ক্ষতি হয়। আমাদের যদি আরো ক্ষমতা হয় তাহলে কি আমরা আরো বেশি বেশি যুদ্ধ করবো, নাকি কম করবো? এই প্রশ্নটা আমার মনে আছে, আমার সন্দেহ আছে। সর্বপ্রথমে, আমাদের বুঝতে হয় বিশেষভাবে যাদের ক্ষমতা আছে মিডিয়ার মাধ্যমে তারা কী করতে চায়। কারণ আমরা যারা দর্শক-শ্রোতা, মিডিয়ার সাপেক্ষে আমাদের ক্ষমতা খুব কম। আমরা হয় টেলিভিশন বন্ধ করি, নয় তো চ্যানেল পাল্টাই। কিন্তু বড় বড় কোম্পনি বা বড় বড় লোকের হাতে মতা আছে যে, টেলিভিশনে কী তারা দেখাবে আর কী দেখাবে না। আমাদের ভালোর জন্য নয়, তাদের স্বার্থেই তারা পলিসি ঠিক করে। তাদের প্রধান উদ্দেশ্য হলো ইকনমিক।
এতে আমাদের মনোবৃত্তিতে কী ধরনের পরিবর্তন হচ্ছে মনে করেন?
টেলিভিশন মাধ্যম দিয়ে আমাদের কনজিউমার হিসেবে গড়ে তোলা হয়। তারা আমাদের মন তৈরি করে। আমাদের বলে কী কী ভালো জিনিস তারা আমাদের জন্য রেখেছে। যদিও সেসব হয়তো আমাদের দরকারই নেই। বারবার দেখে দেখে এক সময় মনে হয় এটি ছাড়া আমরা বোধহয় ভালো থাকব না। এটা যদি আমরা একটু বুঝি তবে সুবিধা হয়। তার জন্য মিডিয়ার থেকে একটু দূরে রাখা দরকার। আমি প্রস্তাব করি, সপ্তাহে একবার অন্তত মিডিয়া থেকে দূরে থাকুন। একটা দিন মোবাইল, ইন্টারনেট, টেলিভিশন থেকে দূরে থাকি, যাতে আমরা অভিজ্ঞতা দিয়ে বুঝতে পারি যে, মাধ্যম ছাড়া জীবন কেমন হয়। যেমন, একদিন মোবাইল নিলাম না, টেলিভিশন দেখলাম না, কাগজ পড়লাম না। আমি টেলিফোন, টেলিভিশন, সংবাদপত্রের বিরুদ্ধে নই। এগুলো
খুবই দরকারি। তবে আমি চাই যে আমরা দেখাই: টেলিফোন, টেলিভিশন আমাদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, আমরা স্বাধীন। এখন মোবাইল স্থায়ী হয়ে গেছে আমার পকেটে। মোবাইল ব্যবহার করতে করতে আমিও মোবাইল হয়ে যাই। মোবাইল আমার গলায় ঝোলে, নাকি গলায় মোবাইলটা ঝোলানো হয়, যাতে কেউ তা ধরে আমাকে টেনে নিয়ে যেতে পারে? আমরা আরো ভালোভাবে মানুষ হতে পারবো যদি যে মাধ্যম আমার হাতে আছে তার সম্পূর্ণ ব্যবহার করতে পারি। আমরা এমন এক যুগে প্রবেশ করেছি যে, বলা হয় আমরা একটা গ্লোবাল ভিলেজে বাস করছি। এটা একটু রোমান্টিক কথা। বাস্তব হচ্ছে আমরা বাস করছি গ্লোবাল সিটিতে। দুটি একদম আলাদা। সিটিতে সমাজ চাপা পড়ে।
আমাদের একটু কষ্ট করে জানতে হবে যে, কী করে মাধ্যমকে, প্রযুক্তিকে ব্যবহার করা যায়। এই স্বাধীনতাটা প্রথমে আনতে হবে। এতে ভীষণ শান্তি ও আনন্দ আছে। সপ্তাহে একটা দিন কেবল আমার জন্য থাক। যাতে আমরা অনুভব করতে পারি আমি স্বধীন এবং এই স্বাধীনতা কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। আমাকে কেউ খুন করতে পারে কিন্তু আমার স্বাধীনতাকে নয়।
ফায়ার ইন মাই হার্ট নামে একটা ইতালীয় ফিল্মের কথা আমার মনে আসছে। নেপলস শহরের কাহিনী। এক যুবক; সে সাগর খুব পছন্দ করে। তো যুদ্ধ লাগলে একসময় সৈন্যরা তাকে খুন করতে আসে। সে তখন দেখে যে, সে শান্তিতে তার প্রিয় সাগরের মধ্যে চলে যাচ্ছে। সে রাগ করে না, ঘৃণা করে না। তার
অনুভব, ‘কোনোদিন এত আনন্দ বোধ করিনি’। এটাই স্বাধীনতা, এটাই আনন্দ, এটাই শক্তি। সেই ছবিতে একজন সাধু ছিল। তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়, ‘তিনি কীভাবে সব ত্যাগ করতে পারেন’। সাধু একটুক্ষণ চুপ করে থেকে বলেন, ‘ইচ্ছা করে’। আমাদের এই ইচ্ছাটা জাগাতে হবে।
নাগরিক জীবনের নিঃসঙ্গতা কি আমাদের অনেক বেশি কম্পিউটার নির্ভর করে তুলছে? সামাজিক যোগাযোগ যত কমছে, তত আমরা কম্পিউটারকে বন্ধু ভাবছি, সাইবার স্পেসে আশ্রয় খুঁজছি? শিশু-কিশোরদের বেলায়ও দেখা যায় খেলাধুলার জায়গা নিচ্ছে কম্পিউটার।
কিন্তু কম্পিউটার তো বন্ধু হতে পারে না। কম্পিউটার কি আমাকে বুঝবে? ইলেকট্রনিক মাধ্যম মানুষের মধ্যে মিডিয়েট করে। আমাদের বন্ধু তো কম্পিউটার বা ইন্টারনেটের সঙ্গে নয়, মানুষের সঙ্গে। কম্পিউটার নিজে থেকে কিছু করতে পারে না।
আজকালকার শিশুরা শুরু থেকেই ভিডিও গেম বা কম্পিউটারকে সঙ্গী করে। আমার ভয় হয়, তারা হয়তো সত্যিকার দুনিয়ার সঙ্গে সংযোগ হারিয়ে ফেলবে। আসল পৃথিবীর থেকে তারা অনেক বেশি থাকে কম্পিউটারের ভার্চুয়াল পৃথিবীতে। এটা খুবই সাংঘাতিক। আমি নিজে দেখেছি যে, কোনো সমস্যা হলেই বা খারাপ লাগলেই তারা কম্পিউটারের মধ্যে ডুবে যায়। আমি সব সময় এই কথা ভেবে অবাক হয়ে যাই যে, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এ বিষয়ে ছেলেমেয়েদের খুব একটা সাহায্য করে না। এটা আশ্চর্য! অপরদিকে আমরা বুঝতে পারি যে, সবই সেন্ট্রালাইজড। আমরা চিন্তা করে কিছু উপায় সৃষ্টি করতে পারি, যাতে মানুষকে সাহায্য করতে পারি। যেহেতু
সিনেমা সমাজ বিচ্ছিন্ন নয় আবার অন্যান্য মাধ্যম থেকে আলাদাও নয়, সেহেতু একে বুঝলে সমাজকেও আরেকটু ভালোভাবে বুঝতে পারি। কিন্তু বাঞ্ছনীয় হতো যদি আমাদের কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নতুন মিডিয়া বাস্তবতাকে আরো ভালোভাবে শিক্ষাক্রমে আনতো।
আপনি কি তা হলে আমাদের পাঠতালিকায় মিডিয়া শিক্ষাকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করছেন?
ঠিক তা করছি না। কারণ সেটাও তখন সেন্ট্রালাইজড হয়ে যাবে। প্রতিষ্ঠানের সমস্যা হচ্ছে নতুন চিন্তা উদিত হওয়ার পর সেখানে তা আসতে ১০/১৫ বছর সময় লাগে। তার বদলে ফিল্ম সোসাইটি বা ফিল্ম কাব বা এ জাতীয় প্রতিষ্ঠান কাজটি করতে পারে। ওদের স্বাধীনতা থাকে, ফেক্সিবিলিটি থাকে। আমাদের কেন্দ্রীভূত শিক্ষা ব্যবস্থা খোলামেলা পরিবেশ রাখতে পারে না। আর শিকরা কেবল সিলেবাস নিয়ে থাকেন, তারা ভালোভাবেই পড়ান। কিন্তু খুব কম শিকই ভালো এডুকেটর হন। কারণ, শিক্ষার বিষয়টি তো সিলেবাসে নেই। তারা সিলেবাস পড়ান পরীক্ষায় পাস করানোর জন্য।
আমি নিজে অনুভব করেছি যে, এখন নতুন ধরনের ফিল্ম সোসাইটি দরকার। যদি ভাবি আগে যা করেছি সেটাই ভালো ভাবে করবো, তা হলে হবে না। কেবল ভালো করে পুরানো কাজ করলেই হবে না, নতুন ধরনের কাজ করতে হবে। একটা স্লোগান আছে, ‘ডোন্ট সলভ দ্য ওল্ড প্রবলেম, ট্রাই সামথিং নিউ’। কারণ আপনি যতক্ষণে পুরনো সমস্যা সমাধান করবেন, ততক্ষণে নতুন সমস্যা এসে দাঁড়াবে। আমার বয়স যখন ১৬ বছর ছিল, তখন আমি ছিলাম যেন জলের ভেতরে মাছ। মাছ যেমন জল সম্পর্কে অচেতন, তেমনি আমরাও নতুন মিডিয়া ও প্রাযুক্তিক বাস্তবতা সম্পর্কে অচেতন। ফিল্ম সোসাইটিতে ঢুকে আমি
আবিষ্কার করেছি যে, কোনটা আমার আসল জগত। তবে শুধু সিনেমা নিয়ে কাজ করলে হবে না। এখন টেলিভিশন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। সব কিছুই সেখানে আসছে। এক সময় রেডিও-প্রেস-সিনেমা সবই আলাদা আলাদা ছিল। প্রত্যেকেরই নিজস্ব ভূমিকাও ছিল দ্বন্দ্ব। এখন সব একাকার হয়ে যাচ্ছে। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে, আইপডের মাধ্যমে সব এক জায়গায় চলে আসছে।
মার্শাল ম্যাকলুহান বলেছিলেন ‘মিডিয়াম ইজ দ্য মেসেজ’।
আমি বলি মিডিয়াম মেসেজ নয়, ম্যাসাজ অর্থাৎ মিডিয়া আমাদের সচেতন করে না, বরং মালিশ করে। ঠিক আছে, কিন্তু রোজ কত ঘন্টা সেই মালিশটা আমাদের দরকার? বাচ্চাদের নিয়ে একটা গবেষণা হয়েছে। তাদের টেলিভিশনের সামনে রাখলে প্রথমে খুব খুশি হয়, বেশ আনন্দ। কিন্তু তাদের মধ্যে যারা বেশি বুদ্ধিমান তারা আস্তে আস্তে ছেড়ে দেয়। তারা চায় আরো আকর্ষণীয় জিনিষ, বিভিন্ন ধরনের খেলা। কিন্তু যারা বেশি সাধারণ তাদের জন্য ঐ মালিশ যথেষ্ঠ।
সাধারণত আর্ট ফিল্ম আর জনপ্রিয় ছবি বলে দুটি ভাগ করা হয়। আপনি এটাকে কীভাবে দেখেন?জনপ্রিয় ছবি নিয়ে আমার একটা সংজ্ঞা আছে। একটি ছবি রিলিজ করার পর যদি দেখি ২/৩ মাস পরও লোকজন সেই ছবি দেখতে যাচ্ছে, তাহলে বুঝতে হবে ছবিটা তাদের মনে ধরেছে। ‘বেদের মেয়ে জ্যোৎস্না’ নিয়ে আমরা একটা গবেষণা করেছিলাম। আমরা মানুষকে জিজ্ঞাসা করেছি, কোন চরিত্রটি ভালো লেগেছে, কেন লেগেছে। পশ্চিমবঙ্গের এক গ্রামীণ মহিলা বলেছে, ‘ঐ চরিত্রটি, যে মেয়ে হয়েও ভালো কাজ করেছে ...’। ছবিতে একটি মেয়ে মুখে গোঁফ লাগিয়ে রাতে বনের মধ্যে যায় জ্যোৎস্না ও রাজপুত্রকে একটা জরুরি খবর দিতে। এটা তাদের ভালো লেগেছে যে, সে মেয়ে হয়েও ভালো কাজে সাহসী হয়েছে। আমরা বিভিন্ন অঞ্চলের পঞ্চাশ জন নারী-পুরুষ দর্শককে এ ছবি নিয়ে সাক্ষাৎকার নিই। এত লোক যে ছবিটা দেখলো, তারা ওই ছবিতে এমন কিছু পেল যা তাদের ভালো লেগেছে। আরেকটা ছবি ছিল, ‘একাত্তরের যীশু’। কিন্তু সবাই ‘বেদের মেয়ে জ্যোৎস্না’কে ভালো
ফিল্ম বলবে না।
এ প্রবণতাকে আপনি কীভাবে ব্যাখ্যা করেন?
এর পেছনে আছে শ্রেণী মানসিকতা ছাড়া অন্য কিছু নেই। লোকেরা সমাজে ছোট হতে পারে, কিন্তু পাগল নয়! যদি তারা ভিড় করে একটা ছবি দেখে তবে বুঝতে হবে সেটা দামি। দুই হাজার বছর আগে ভরতমুনি তার নাট্যশাস্ত্রে বলেছিলেন যে, পণ্ডিতরা নয় জনগণই নিরূপণ করবে কোনটা ভালো আর কোনটা মন্দ। আমাদের যে জাতবোধ ও শ্রেণী মানসিকতা, তা অনেক সত্যের সামনে আবডাল তৈরি করে। ‘একাত্তরের যীশু’তে আছে, একটা বোবা মেয়ে বাঁশী বাজাচ্ছে। এটা অসাধারণ প্রতীক। এক সময় বাংলাদেশকে দমন করা হয়েছিল যেন সে কথা বলতে না পারে। ছবিতেও ওই মেয়েটি কথা বলতে পারে না কিন্তু বাঁশি বাজাতে পারে, সঙ্গীত সৃষ্টি করতে পারে। সাংঘাতিক! এটা আমাদের বিশ্বাস করতে শেখায়, আশা দেখায়। আমি একটা লেখায় লিখেছিলাম, বেদের মেয়ের জ্যোৎস্নার তিনজন পিতা। একজন তার পালক, একজন সত্যিকার, আরেকজন হলেন রাজা। এটাও আমার কাছে বাংলাদেশের প্রতীক মনে হয়। এ তিনজনের একজন ধর্মীয়, একজন সাংস্কৃতিক একজন রাজনৈতিক। এই তিনই তো বাংলাদেশের সমস্যা ও সম্ভাবনা।
আপনি নতুন মিডিয়া পরিবেশে প্রিক্যারিয়েত নামে নতুন একটি বর্গের কথা এনেছেন? কারা তারা?
এক সময় আমরা প্রলেতারিয়েতের কথা জানতাম। আজকাল একটা নতুন শ্রেণী তৈরি হয়েছে, যারা শুধু গরিব নয়। এদের অনেকের কোনো সামাজিক নিরাপত্তা নেই, স্থায়ী কর্ম নেই। চুক্তিভিত্তিক কাজ থাকলেও নিয়োগদাতা যে কোনো সময় তা বাতিল করে দিতে পারে। অনিশ্চয়তা এদের সঙ্গী। যার সামাজিক নিরাপত্তা নেই আমরা বলি যে, সে প্রিক্যারিয়াস জীবনযাপন করে। এখান থেকে এসেছে প্রিক্যারিয়েতের ধারণা। যারা আর্ট ইন্ডাস্ট্রিতে বা ইন্টেলেকচুয়াল ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করে তারা স্থায়ী চাকরি চায় না, চায় চুক্তিভিত্তিক কাজ। এতে করে তারা একটা ভালো কন্ট্রাক্ট শেষ হওয়ার পর আরেকটা ইন্টারেস্টিং কাজে যেতে পারে। আজকাল অনেকে, বিশেষত তরুণরা স্থায়ী চাকরিতে দিনের পর দিন একই কাজ করে যাওয়া পছন্দ করছে না। যদিও সেখানে বেতন বেশি হতে পারে। ওরা এই ফেক্সিবিলিটিটা চায় সিকিউরিটির বিনিময়ে। যতক্ষণ না নতুন কন্ট্রাক্ট পাচ্ছে ততক্ষণ ওদের দাবি, রাস্ট্র ওদের একটা নূনতম ভাতা দিক। এটা বেশি দেখা যায় সৃজনশীল ক্ষেত্রের কর্মীদের মধ্যে। সে জন্যই ইতালির অ্যাক্টিভিস্টরা বলছে, ‘আমরা প্রলেতারিয়েত নই, আমরা প্রিক্যারিয়েত’।
প্রিক্যারিয়াত এসেছে প্রে বা প্রার্থনা করা থেকে। অর্থাৎ যাদের
কাজের জন্য এখানে-ওখানে হাত জোড় করে থাকতে হয়। এই লাইনে ওরা একজন নতুন সেইন্ট বা সাধু পুরুষও উদ্ভাবন করেছে। তারা একে বলে সাধু প্রিক্যারিও। আমি ইতালীয়দের জিজ্ঞাসা করে জেনেছি যে, এই ‘সাধু প্রিক্যারিও’ এখন ইতালিতে সবচে জনপ্রিয় সেইন্ট। ধর্মীয় সেইন্ট নয়, তারা একে অ-ধর্মীয় ভাবমূর্তিতে নির্মাণ করেছে। এটা একটা প্রতীক। তারা নতুন এক মা মেরির চিত্রও বানিয়েছে। সেখানে দেখা যায়, মাথায় হেডফোন লাগানো একজন নারী। সে কল সেন্টারে অস্থায়ী চাকরি করে। তার কোলে একদিকে একটি শিশু দুধপান করছে,
আর আরেকদিকে একটা কিবোর্ড। এটা বিখ্যাত ভেরোনিকার নতুন সংস্করণ। এ দিয়ে বোঝানো হচ্ছে এই মেয়েটির কোনো মাতৃকালীন ছুটি নেই। এরাই প্রিক্যারিয়েত। পাশ্চাত্যে এদের সংখ্যা বাড়ছে, উপমহাদেশেও বাড়বে।
আমাদের বেশির ভাগ যোগাযোগ, জ্ঞান ও আনন্দ সংগ্রহ এখন প্রযুক্তির মাধ্যমে ছাড়া আসছে না। এটা কি আমাদের সংবেদন, মনস্তত্ত্ব এমনকি মানবীয় বৈশিষ্ঠ্যকে পাল্টে ফেলতে পারে?
আমি একজন লেখক। এক সময় হাতে লিখতাম, পরে টাইপ রাইটার, তারপর ইলেক্ট্রনিক টাইপ রাইটার আর এখন এসেছে কম্পিউটার। এর দ্বারা আমি অনেক কিছুই করতে পারি। আবার এটা ব্যবহার করতে করতে আমার অ্যাটিচুডও বদলাতে পারে। এখন আমি এমন অনেক কাজ করতে পারি যা আগে করতে পারতাম না। তারপরও আমি জোরের সঙ্গে বলতে চাই, মেশিন আমাকে কিছু করতে পারে না। মেশিনের কোনো ক্ষমতা নেই আমাকে চালানোর। এটা কেবলই একটা ইন্সট্রুমেন্ট। এ দিয়ে আমি নতুন ধরনের কল্পনা করতে পারি, নতুন ধরনের বই লিখতে পারি ইত্যাদি।
প্রায়ই শোনা যায়, প্রযুক্তি দুনিয়া বদলে দিল। কিংবা নতুন প্রযুক্তি দুনিয়াকে বদলে দিচ্ছে। এসব কথার ভিত্তি কতটা?
এ ধরনের ভাষা বিজ্ঞানীরা ব্যবহার করলেও আমি করবো না। একজন বৈজ্ঞানিক লিখেছেন, ফাইবার অপটিকস পৃথিবীকে বদলে দিয়েছে। আমি প্রশ্ন করতে চাই, পরিবর্তনের আসল দায়িত্ব কি প্রযুক্তির না মানুষের? প্রযুক্তি দিয়ে আমি অনেক কিছু ভালো কাজ করতে পারি। কিন্তু যতক্ষণ না সাইবর্গ হচ্ছে, ততক্ষণ প্রযুক্তি বা কম্পিউটার নিজে কিছুই করতে পারে না। পরিবর্তনের চালক মানুষ, বাহকও মানুষই। এ দায়িত্ব আমরা পরিত্যাগ করতে পারে না। উচিত নয়। এর ফল ভালো হবে না। ইলেকট্রনিক মিডিয়া বা ডিজিটাল মিডিয়া তো আর ঔষধ নয় যে, দিলেই সব ভাল হয়ে যাবে। তবে এর মাধ্যমে মানুষকে চালনা করা যায়। কারণ ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো পৃথিবীর সকল মানুষকে একত্রে চালনা করা সম্ভব হয়েছে। সেটা ভাল’র জন্যও যেমন খারাপের জন্যও তেমন। এটা এমন এক যুগ যখন প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য সভ্যতার মধ্যে সংঘর্ষ কল্পনা করছে কেউ কেউ। এ অবস্থায় অন্য এক সংস্কৃতি থেকে এখানে এসে কাজ করার বেলায় আপনি কি সমস্যা বোধ করেন?
দেখুন, আমি এসেছি মত প্রচার করতে নয়। আমি শিখতে এসেছি। চেষ্টা করছি কিছু করার জন্য। ক্ল্যাশ অফ সিভিলাইজেশন-এর ধারণাটা একটা সংস্কার। আমি একটা বই সম্পাদনা করছি, যার বিষয় হচ্ছে এনকাউন্টার বিটউইন সিভিলাইজেশন। ক্যাশ নয়, এনকাউন্টার, সংঘাত নয় মুখোমুখি হওয়া। অনেক সময় মুখোমুখির ফল সহিংসও হতে পারে, ফলপ্রদও হতে পারে। আজ যে সংঘাত হচ্ছে সেটা স্বার্থপরতার জন্য। মি.বুশ সভ্যতার জন্য যুদ্ধ ঘোষণা করছেন না, করছেন লালসার জন্য। এর সঙ্গে সভ্যতা বা সংস্কৃতির সম্পর্ক নেই; তেলের সম্পর্ক আছে। তবে রাজনীতি কখনো কখনো নিজের দরকারে সংস্কৃতি, সভ্যতা ও মানবজাতিকে পরস্পরের বিরুদ্ধে প্ররোচিত করতে পারে। অকারণে নয়, ওদের কারণ আছে। মানুষ শত শত বছর একসঙ্গে থাকতে পারল, আজ সংঘাত হবে কেন।
মন্তব্য
কী ভয়ংকর!
সত্যিই খুব চিন্তার কথা।...
আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
বুঝুন তাহলে!
মনে হয় তবু স্বপ্ন থেকে জেগে
মানুষের মুখচ্ছবি দেখি বাতি জ্বেলে
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
পড়লাম
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
ধন্যবাদ আপনাকে।
মনে হয় তবু স্বপ্ন থেকে জেগে
মানুষের মুখচ্ছবি দেখি বাতি জ্বেলে
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
অনেক পরিবর্তন ঘটছে সামগ্রিক মানব সমাজে। মানবিক গুনগুলো ক্রমশ:ই পিছিয়ে যাচ্ছে সে পরিবর্তনের ধাক্কায়। আজকাল সবকিছুই বাজারমূল্যে বিচার করা হয়। কর্পোরেট বিশ্ব!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
হ্যাঁ ঠিকই বলেছেন। মানুষ আর মানুষ নাই। মানুষের ধারণা বোধহয় নতুন করে নির্মাণ করতে হবে। কিন্তু ফাদার গাঁস্ত যেভাবে ভাবেন তার মধ্যে একটা মিশনারির হিতবাদী সৌন্দর্য্য আছে। একটা জীবন উনি এ কাজে ব্যয় করছেন। জ্ঞান যে দুনিয়ায় আধিপত্যের সহায়ক, সেখানে তিনি জ্ঞানকেও তাঁর সেবাব্রতের লক্ষ্য বানিয়েছেন।
মনে হয় তবু স্বপ্ন থেকে জেগে
মানুষের মুখচ্ছবি দেখি বাতি জ্বেলে
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
গাঁস্ত রোবের্জের আরেকটা সাক্ষাতকার পড়ছিলাম... সেখানে তিনি গ্লেবালাইজেশনের বিপরীতে গ্লোকালাইজেশনের কথা বলছিলেন... বলছিলেন সিনেমা বা শিল্প গ্লোবালের চেয়ে গ্লোকাল হওয়াটা জরুরী... যা লোকাল হয়েই গ্লোবাল হবে। বিষয়টা ভালো লাগছিলো।
ভালো লাগলো এই সাক্ষাতকারটাও... তিনি সবসময়ই অযান্ত্রিক হইতে বলেন... কিন্তু এই ক্রমশ আরো বেশি যান্ত্রিকতার দুনিয়ায় খাড়ায়ে কিভাবে সেইটারে অস্বীকার করা যায় তা বাত্লান না।
এই অংশটা ঠিক মিলাইতে পারতেছি না... যন্ত্র দিয়া কিভাবে নতুন ধরনের কল্পনা করা সম্ভব?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
সম্ভবত অতদূর পর্যন্ত ভাবনার দায় তিনি নেন না অথবা ঐ ধরনের চিন্তার সমস্যাই এটা যে, রোগ চিহ্নিত করেই খালাস সারাবে ভবিতব্য! সেটা তাঁর মধ্যে যতটা ভাববাদী ব্যাপার আছে তার সীমাবদ্ধতা।
তবে একটা জিনিষের ওপর তিনি জোর দেন, সেটা হচ্ছে মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক। এখানে বদল না এলে প্রযুক্তি, পণ্য বা সম্পাত্তির সঙ্গে আমাদের কারো কারো সম্পর্ক যতই নিবিড় হোক, সেই নিবিড়তা হয় আমাদের অন্য মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন করবে, নতুবা অন্য মানুষদের আমাদের হাতের পুতুল করে তুলবে। মানুষের সহায় মানুষ ছাড়া আর কিছু না। সমস্ত মানুষ মুক্ত না হলে ব্যক্তি মানুষ পূর্ণ মানুষ হয়ে উঠতে পারে না। ভাবেন তো, আমরা কয়েকজন আছি বা কয়েক লক্ষ আছি, আর বাকিরা নাই_তাহলে আজ যে মানবতা নিয়ে আমাদের গর্ব হয়, আমাদের কল্পনায় অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যতব্যাপী এবং দেশে দেশে যে মানুষের বিস্তার তা কত হ্রস্ব হয়ে যেত, কমে যেত আমাদের আত্মবিশ্বাস।
ঐ যে তিনি বলেন, যন্ত্র হচ্ছে ইনস্ট্রুমেন্ট। এই যেমন আমার আপনার ভার্চুয়াল যোগাযোগ, আমার কল্পনায় এখনই দুনিয়ার অন্য প্রান্তে আরেকজন মানুষের মন ও মুখ ধরা পড়ছে এটায় যন্ত্রটা সাহায্য করছে না? এর জন্যই তো আমরা এখন বিশ্বের মানুষকে একত্রে কল্পনায় আনতে পারি, কারণ টিভি বা সিনেমায় ঐসব মানুষের ধারণা আমাদের হয়। কিংবা চলচ্চিত্র ও গানে নতুন নতুন কল্পনার বিস্তার এটায়ও যন্ত্র সাহায্য করছে। যন্ত্রের মাধ্যমে আমরা আমাদের স্নায়ুকে প্রখর ও প্রসারিত করতে পারছি।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, কষ্ট করে এত বড় লেখা পড়ার জন্য।
মনে হয় তবু স্বপ্ন থেকে জেগে
মানুষের মুখচ্ছবি দেখি বাতি জ্বেলে
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
হু... তার ভাবনাটায় আস্থাবান... আর সেজন্যই আছান খুঁজি। অন্য কেউ এমনতরো চিন্তা করেন না বলেই গাঁস্তর কাছেই খুঁজি... তার উপর দায় চাপাই না অবশ্য।
থিয়েটার চর্চায় আমার প্রথম দল সুবচন-এর মূলকথা ছিলো মানুষ মূখ্য মানুষ বিষয় মানুষই অনন্ত সম্ভাবনা...
এই কারনেই প্রশ্নটা করছিলাম... যন্ত্র মারফত অন্যের কাছে পৌঁছানের চেয়ে মানুষই মানুষের মঞ্জিল হইবে... এই ভাবনাটাই তার কথামালাতে পাই মনে হয়। সেইখানে কল্পনার মতো একটা বিষয়রে কিভাবে তিনি যন্ত্রনির্ভর হইতে বলেন? সেইখানেই আমার একটু খটকা লাগে।
আর সচলায়তনে যেহেতু লেখাপড়া করতেই আসি তাই গাঁস্ত রোবের্জের সাক্ষাত্কার পড়ার পুরষ্কার ধন্যবাদ হইতে পারে না বোধহয়। আপনার কাঁধেই ধন্যবাদ বর্তায় আমারে এই সাক্ষাত্কারটা পড়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
মাঝে মাঝে নিজেকে অসহায় মনেহয়। জীবন, সমাজ, সংস্কৃতি কী ভীষণ দ্রুততায় পাল্টে যাচ্ছে। খুব কাছের বন্ধুটির সাথে মুখোমুখি শেষ কবে ভালোভাবে কথা বলেছি মনেপড়ে না। লেখাটি পড়ে বেশ ভালো লাগলো। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
সৈয়দ আখতারুজ্জামান
প্রযুক্তি আমাদের মধ্যে কত যোগাযোগ বাড়িয়েছে, তবুও আমরা একা!
মনে হয় তবু স্বপ্ন থেকে জেগে
মানুষের মুখচ্ছবি দেখি বাতি জ্বেলে
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
প্রিক্যারিয়েত শ্রেনীটি আমারও খুব যৌক্তিক মনে হয়েছে। এই দাবীটি আরো জোরালো হওয়া প্রয়োজন।
ভালো লাগলো সাক্ষাতকারটি পড়ে। (বিপ্লব)
---------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে
-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে
সাক্ষাতকারটি প্রকাশের জন্য ধন্যবাদ! অনুবাদ কি আপনার?
সাক্ষাতকারটি আমি নিয়েছিলাম বাংলা ও ইংরেজি মিশিয়ে। রোবের্জ যেখানে যেমন স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেছেন তেমন বলেছেন। ওনার বাংলা ভাল। নম্র ও মিতভাষী মানুষটার বলার ধরনটাও একটা সৌন্দর্য।
মনে হয় তবু স্বপ্ন থেকে জেগে
মানুষের মুখচ্ছবি দেখি বাতি জ্বেলে
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
নতুন মন্তব্য করুন