সচলাদের সময়বাড়ি : সন্ধ্যাদেশে ঘরে ফেরা

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি
লিখেছেন ফারুক ওয়াসিফ (তারিখ: রবি, ১১/০৫/২০০৮ - ৪:৫৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

...তারপরে থাকে শুধু অন্ধকার আর মুখোমুখি বসিবার সচলাধার। বিশ্বের সচলেরা আপাতত ওখানেই থাকেন। মাটিতে তারা র'ন বটে, কিন্তু পাই কই? মাটির দুনিয়ায় কত কী ঘটে, কিন্তু রটে গিয়ে ওই আরশের ভার্চুয়াল মিনার হতে। দিনান্তে সেই আরশের খবর না নিলে নামাজ কাজা করার মতো খুঁত বাজে মনে। তাই আবার আসি, আর হাসি-কাঁদি। কিছুদিন কামাই দেবার পর মনে হয়, হায়! কোথায় কী যেন ঘটে যাচ্ছে, আমারে কে জিগায় কে জানায়? আবার উঁকি-ঝুঁকি চলে। কখনো কখনো অন্তর্যামীর ওহী আসে, অনেক হইয়াছে আর নয়! কিন্তু কে শোনে কার কথা!
সচল নিয়া এই এক খুনসুটি। কাছে এলে মনে হয় দূরে যাই, দূরে গেলে মনে হয়, হায় কেহ নাই! মাঝে মাঝে মনে হয়, কত গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার আছে ব্যস্ত থাকার, কত কত দায়িত্ব পালনের সময় চলে যায়। তার মধ্যে কীসের সচল! মন যেদিকে পার চলে যাও। কিন্তু যাইব কোথা? কবি রণজিত দাশগুপ্ত লিখেছিলেন, 'মনে হয় যে দিকে দু চোখ যায় চলে যাই', কিন্তু সেই দিকটি কোনদিকে? 'সম্ভবত গড়িয়াহাটার দিকে'। অধমের অবস্থাও তাই। যে দিকে দুচোখ যায় সেদিকে যেতে গিয়ে আগে ঘুরে-ফিরে আজিজ মার্কেটে যেতাম; এখন যাই সচলাদের বাড়ি। উহারা বেড়ে রসিক, যাওয়ামাত্রই হাঁ হাঁ করে তেড়ে আসে। ধরে মার্কা মেরে দেয়: এক দুই তিন চার পাঁচ। মার্কার লোভ কে পারে এড়াতে; আমি চলি সেও চলে সাথে।
সচলাস্তান কোনো স্থান নয়, সময়ের তরী। সময় ছাড়া আর কিছু নাই যা দিয়া সেখানে যাওয়া যায়। আর সময় দিলে সব পাওয়া যায়। বঙ্গদেশের আলুময় আবহাওয়ার দোষ আর পশ্চিমের বিদেশ-বিভুঁইয়ের প্ররোচনা আর প্রহসনের মধ্যে কোনো সেতু নাই। কেহ বলিবে, কেন 'দেশমাতৃকা'? তা কি আমাগের সবার এজমালি নয়? বটে বটে। কিন্তু এখনকার সাইবার-মানুষের দেশ থাকতে নাই, অভিজ্ঞতায় এর সঙ্গে ওর জলচলের উপায় নাই। অধিকন্তু বিমানের অনেক ভাড়া।
আমাদের আছে কেবল সময়: যার পাটাতনে একত্রে বাঁচি বাংলাদেশে, মেক্সিকোয়, ইউক্রেনে, জার্মানিতে, আরবে, নিউইয়র্কে আর কোথা কোথা দেশান্তরে!
কেহ দেশ হারাইয়াছে কেহ স্বজন বিহনে রহিয়াছে, কিন্তু সময়ের রাজ্যে সকলের অবাধ প্রবেশ। সেই সময়েরই রাজপথ সচলায়তন। ল্যান্ড-পিপল-আর হিস্টরির বাইরে চলতি সময়ের ছাপ সেখানেই পাওয়া যায়। সেখান থেকে আবার তৈরি হয় আরেক দেশ, আরেক মানুষ আর অন্য এক ইতিহাস আমাদের সত্যিকারের দেশের আদলে। আল্লা তাঁর আপন মূর্তিতে মানুষকে বানাইছিলেন, আর আমরা আমাগের দেশের মূর্তিতে ভার্চুয়াল সচলাদের বাড়িতে দেশ বানাই। সেটাই বাঙালের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ঐশী (ইন্টারনেট) সুড়ঙ্গ।
আজ আবার কিছুদিন পরে সেই সুড়ঙ্গে ঢুকে দেখি, সেটাকে কারা যেন আরো বড় করে ফেলেছে। অনেক আলো ও হাওয়ার মাতম সেখানে। পেছন ফিরে পাতার পর পাতা উল্টিয়ে শুঁকে নিই সময়ের সুরভি। মনে পড়ে নজরুলের গান:
'কারা যেন এসেছিল, এসে ভালবেসেছিল
তাহাদের স্মৃতি আজ পথেরও ধুলায়,
হায় সন্ধ্যায়।'
বাইরে তাকিয়ে দেখি, বঙ্গদেশ জুড়ে সন্ধ্যা নামছে।


মন্তব্য

তীরন্দাজ এর ছবি

ভাল লাগলো আপনার লেখাটি....।
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

ধন্যবাদ ভাই।


মনে হয় তবু স্বপ্ন থেকে জেগে
মানুষের মুখচ্ছবি দেখি বাতি জ্বেলে

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

আহমেদুর রশীদ এর ছবি

" কাল কেউটের ফণায় নাচছে লখিন্দরের স্মৃতি
বেহুলা কখনো বিধবা হয় না-এটা বাংলার রীতি "

---------------------------------------------------------
আমাকে ডাকে আকাশ, বোঝে মাটি হাওয়া জল
বোঝে না মানুষ আর বিনাশী মুদ্রার ছল

---------------------------------------------------------

ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

হ্যাঁ, আমরা বোধহয় পুরাতনপন্থি, দেশ নামক সংস্কারে ভুগি।


মনে হয় তবু স্বপ্ন থেকে জেগে
মানুষের মুখচ্ছবি দেখি বাতি জ্বেলে

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

শাহীন হাসান এর ছবি

আজ আবার কিছুদিন পরে সেই সুড়ঙ্গে ঢুকে দেখি, সেটাকে কারা যেন আরো বড় করে ফেলেছে। অনেক আলো ও হাওয়ার মাতম সেখানে। পেছন ফিরে পাতার পর পাতা উল্টিয়ে শুঁকে নিই সময়ের সুরভি। মনে পড়ে নজরুলের গান:
'কারা যেন এসেছিল, এসে ভালবেসেছিল
তাহাদের স্মৃতি আজ পথেরও ধুলায়,
হায় সন্ধ্যায়।'
বাইরে তাকিয়ে দেখি, বঙ্গদেশ জুড়ে সন্ধ্যা নামছে।

খুব ভাল-লাগলো আপনার লেখাটি। শুভেচ্ছা!
....................................
বোধহয় কারও জন্ম হয় না, জন্ম হয় মৃত্যুর !

....................................
বোধহয় কারও জন্ম হয় না, জন্ম হয় মৃত্যুর !

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

নয়া সুড়ঙ্গসাথীকে স্বাগতম!


মনে হয় তবু স্বপ্ন থেকে জেগে
মানুষের মুখচ্ছবি দেখি বাতি জ্বেলে

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

নয়া সুড়ঙ্গসাথীকে স্বাগতম!


মনে হয় তবু স্বপ্ন থেকে জেগে
মানুষের মুখচ্ছবি দেখি বাতি জ্বেলে

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

ধ্রুব হাসান এর ছবি

ভাইজান শিল্পকর্মটি কি শফিউদ্দিন স্যারের?

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালো লিখেছেন। সচলায়তনের গুণে আমার তো অফিসের কাম কাইজ লাডে উঠতে বসছে। কবে জানি বেবাকতে মিল্লা অফিস থাইকা আমারে বাইর কইরা দেয় ইয়ে, মানে...

কল্পনা আক্তার

...............................................
সব মানুষ নিজের জন্য বাঁচেনা

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

হেল্লাইগাই তো ঐ যে কে যেন বলেছিল, কী যেন বলেছিল?


মনে হয় তবু স্বপ্ন থেকে জেগে
মানুষের মুখচ্ছবি দেখি বাতি জ্বেলে

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

ধুসর গোধূলি এর ছবি
স্নিগ্ধা এর ছবি

সচলাস্তান কোনো স্থান নয়, সময়ের তরী। সময় ছাড়া আর কিছু নাই যা দিয়া সেখানে যাওয়া যায়।

এবং গেলে পরে সেই সময়েরই কিছুটা অংশ সেখানে কিনা খাজনা বাবদ রেখে আসতে হয়, আপনার dilemma কি আর এমনি এমনি? হাসি

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

ধরেছেন দারুণ তো? এইদিকটা তো ভাবিনি। কিন্তু আপনি ধরিয়ে দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে চিন্তার পুরো পথরেখাটা ঝলক দিয়ে এলো। থ্যাঙ্কস!

সচলাস্তান কোনো স্থান নয়, সময়ের তরী। সময় ছাড়া আর কিছু নাই যা দিয়া সেখানে যাওয়া যায়।
আমি কেবল এইটুকু বলার জন্যই কাহিনীটা ফেঁদেছিলাম। দেখা গেল ভাবটা অভাবে মারা পড়েনি। যাহোক ঐ dilemmaর নিদান দ্যান!


মনে হয় তবু স্বপ্ন থেকে জেগে
মানুষের মুখচ্ছবি দেখি বাতি জ্বেলে

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

ইয়া হাবিবি ওয়া দিল্লাগি!


মনে হয় তবু স্বপ্ন থেকে জেগে
মানুষের মুখচ্ছবি দেখি বাতি জ্বেলে

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

নিঘাত তিথি এর ছবি

চলুক
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

মুজিব মেহদী এর ছবি

সচলায়তনের প্রতি নেশাটাকে আমার ক্রমশ বইয়ের শক্র বলে মনে হচ্ছে। পড়াশোনার জন্য বরাদ্দ সময়টুকুতেই তো স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকছি দিনকে দিন। বইপত্রের দিকে তাকালে কেমন যেন পর পর বোধ হয় এখন।
কী সাংঘাতিক!

................................................................
আমার সমস্ত কৃতকর্মের জন্য দায়ী আমি বটে
তবে সহযোগিতায় ছিল মেঘ : আলতাফ হোসেন

... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

ডিলেমার জবাব বোধহয় দেয়াই ছিল। আমি নিজেও খেয়াল করিনি। @স্নিগ্ধা

আমাদের আছে কেবল সময়: যার পাটাতনে একত্রে বাঁচি বাংলাদেশে, মেক্সিকোয়, ইউক্রেনে, জার্মানিতে, আরবে, নিউইয়র্কে আর কোথা কোথা দেশান্তরে!
কেহ দেশ হারাইয়াছে কেহ স্বজন বিহনে রহিয়াছে, কিন্তু সময়ের রাজ্যে সকলের অবাধ প্রবেশ। সেই সময়েরই রাজপথ সচলায়তন। ল্যান্ড-পিপল-আর হিস্টরির বাইরে চলতি সময়ের ছাপ সেখানেই পাওয়া যায়। সেখান থেকে আবার তৈরি হয় আরেক দেশ, আরেক মানুষ আর অন্য এক ইতিহাস আমাদের সত্যিকারের দেশের আদলে। আল্লা তাঁর আপন মূর্তিতে মানুষকে বানাইছিলেন, আর আমরা আমাগের দেশের মূর্তিতে ভার্চুয়াল সচলাদের বাড়িতে দেশ বানাই। সেটাই বাঙালের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ঐশী (ইন্টারনেট) সুড়ঙ্গ।


মনে হয় তবু স্বপ্ন থেকে জেগে
মানুষের মুখচ্ছবি দেখি বাতি জ্বেলে

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

স্নিগ্ধা এর ছবি

সেটাই বাঙালের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ঐশী (ইন্টারনেট) সুড়ঙ্গ।

হলো না হাসি প্রত্যাবর্তন কেন বললেন? প্রত্যাবর্তন কেন হতেই হবে? হলোই না হয় সমান্তরাল দেশ ?

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

সকল যাওয়াই তো ফেরা, সমান্তরালতাও তো এক প্রকার সহজীবনী। এটা হলো আত্মপক্ষ সমর্থন। তবে আমার বলার পেছনে অন্য ইতিহাসের অনুপ্রাস ছিল। একদা বাঙাল মুসলমান এলিট নিজেকে ভিনদেশি ভাবতো, ইরান তুরানের ঘ্রাণ গায়ে শুঁকে পাবার অভিলাষ করতো। পরের যুগে আরেকধরনের এলিট বাঙাল পাশ্চাত্যকে (ইওরোপ অথবা পশ্চিমবঙ্গ) নিজের সাংস্কৃতিক জন্মভূমি মনে করা শুরু করে। এর বিপরীতে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের একটা প্রপঞ্চ দাঁড়িয়ে যায়। আজকের অভিবাসীদের একটা অংশ এবং দেশের কালচারাল এলিটরাও তাই মনে করে। তাদের জন্য 'দেশে ফেরা'র অভিযানটি প্রাস্গিক মনে করি। অনেকটা সদ্যপ্রয়াত সেনেগালিয় কবি এমে সেজেয়ারের দেশে ফেরার খাতা'র মতো।


মনে হয় তবু স্বপ্ন থেকে জেগে
মানুষের মুখচ্ছবি দেখি বাতি জ্বেলে

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

স্নিগ্ধা এর ছবি

সকল যাওয়াই তো ফেরা, সমান্তরালতাও তো এক প্রকার সহজীবনী।

এর বিপরীতে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের একটা প্রপঞ্চ দাঁড়িয়ে যায়।

আমার বক্তব্যও আসলে সেটার পরিপ্রেক্ষিতেই ছিলো হাসি আমি নিজে ব্যক্তিগতভাবে আসলে মনে করি না যে সব যাওয়াই 'ফেরা'। কিছু যাওয়া যাওয়াই থাকে, ভাগ্যিস ! আর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের প্রপঞ্চ টা কে - আমি আবারো বলছি, ব্যক্তিগতভাবে - আমি দেখি অন্যভাবে। কারণ এখন আমি 'স্বদেশ' ব্যাপারটিকেই দেখি অন্যভাবে হাসি

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

আমার অনুমানও তা-ই ছিল। আপনার ঐ 'অন্য ভাবের' মধ্যকার সৌন্দর্যটা এবং তার অন্য-তাটা টের পাই মনে হয়। ভাল হতো যদি তা জানা যেত।
কুন্ডেরার আনবিয়ারেবল লাইটনেস অব বিয়িং উপন্যাসেও বোধহয় এ ধরনেরই একটা সমস্যা আছে। আমি অসংলগ্ন প্রকৃতির, কিন্তু থাকতে চাই লগ্ন হয়ে। আমার ডিলেমা এটাই।


মনে হয় তবু স্বপ্ন থেকে জেগে
মানুষের মুখচ্ছবি দেখি বাতি জ্বেলে

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

স্নিগ্ধা এর ছবি

কুন্দেরার সেই উপন্যাসটির ওপর হলিঊড নির্মিত সিনেমাটিও কিন্তু অপূর্ব। ড্যানিয়েল দী ফো আর জুলিয়েট বিনোশে।

আপনার ডিলেমা কিছু কাটুক, আর কিছুটা থাকুক - এই কামনা করে এই আলোচনার এখানেই ইতি টানলাম হাসি

অনিন্দিতা এর ছবি

সচলায়তনের প্রতি নেশাটাকে আমার ক্রমশ বইয়ের শক্র বলে মনে হচ্ছে। পড়াশোনার জন্য বরাদ্দ সময়টুকুতেই তো স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকছি দিনকে দিন।

ভীষণ রকম সত্যি। আমার তো পত্রিকা পড়তেও আজকাল ইচ্ছে হয় না । সচলায়তনের জন্য সময় ও পাই না। আর অফিস? প্রায়ই হয়ত সহকর্মীরা দেখে যে আমি সচলায়তন খুলে বসে আছি। বেগতিক দেখলে minimize করা থাকে। ঐ পর্যন্তই। এটা বোধহয় open secret হয়ে গেছে। কোন দিন যে ঝাড়ি খাব কে জানে? কোনদিন না ঢুকতে পারলে বুকের ভেতরটা খুব খালি খালি লাগে।
সত্যি বড় বিপদে আছি।

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

আগের মন্তব্যের সঙ্গে না ছড়িয়েও এটুকু যোগ করা দরকার ছিলে যে, ফেরা বা দেশকে যদি সীমিত করে ফিলিস্তিনি বা ইরাকিদের জায়গা থেকে অথবা কোনো উপনিবেশিতের জায়গা থেকেও দেখা যায়।


মনে হয় তবু স্বপ্ন থেকে জেগে
মানুষের মুখচ্ছবি দেখি বাতি জ্বেলে

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

স্নিগ্ধা এর ছবি

সেটা ঠিক, সেটা 'ফেরা'ই বটে - এবং ওটা নিয়ে কোন কথা বলার ধৃষ্টতা আমার নেই। আমার ব্যক্তিগত ফেরা বা ফেরা নিয়ে কথা বলাটাই হচ্ছে সেই তুলনায় একধরনের স্যুররিয়্যাল ন্যাকামি !

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

ফেরা বা ফেরা নিয়ে কথা বলাটাই হচ্ছে সেই তুলনায় একধরনের স্যুররিয়্যাল ন্যাকামি !

আমারটা ততোধিক, মাইরি!


মনে হয় তবু স্বপ্ন থেকে জেগে
মানুষের মুখচ্ছবি দেখি বাতি জ্বেলে

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

পাঁচটি তারা দিয়ে বসে থাকি... লেখি... মুছে ফেলি... আবার লেখি... আবারও মুছি... আবার পড়ি পুরোটা... আবারও লেখি... তারপর আবারো মুছি...
হায়... এরকম লেখা বারবার শুধু পড়াই যায়... অসাধারনের চেয়েও একটু বেশি ভালো হয়ে গেছে।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

মিশে গেলাম!!!!


মনে হয় তবু স্বপ্ন থেকে জেগে
মানুষের মুখচ্ছবি দেখি বাতি জ্বেলে

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

বস... মিশে যাবার আগে একটা খোঁজ জানায়ে যান তো... কুন্দেরার ছোটগল্পের বাংলা খুঁজতেছি... করছে কেউ? (টপিকের বাইরে গেলাম বলে দুঃখিত)______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

আরে নাহ! ঠাট্টা নামে joke উপন্যাসের অনুবাদ হয়েছে। আর বোধহয় একটা গল্পের বইও হযেছে।


মনে হয় তবু স্বপ্ন থেকে জেগে
মানুষের মুখচ্ছবি দেখি বাতি জ্বেলে

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

হু... ঠাট্টা পড়ছি... শেখ আব্দুর রহমানের অনুবাদ... গল্পের বইটার সন্ধানই নাই... ঠিকাছে...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সুমন চৌধুরী এর ছবি

এই হইলো দুনিয়ার অবস্থা.......



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

শেখ জলিল এর ছবি

সচলাস্তান নামক সময়ের ঘড়ি আছে বলেই আমার সচল ক্ষণগুলো কেটে যায়, কিছু লেখালেখিও হয়।
...ভালো লাগলো আপনার সচল প্রণয়ঘটিত লেখা।

যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

(বিপ্লব)

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

আপনাদের কৃপা...


মনে হয় তবু স্বপ্ন থেকে জেগে
মানুষের মুখচ্ছবি দেখি বাতি জ্বেলে

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

দুর্দান্ত এর ছবি

ভালরে ভাল।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।