Manekshaw: A soldier who created a nation ভারতের সুপ্রচারিত অনলাইন জার্নাল রেডিফ এভাবেই এই বীর সেনানীর প্রতি শেষ অভিবাদন জানায়। তাহলে তিনিই বাংলাদেশের জন্মদাতা? এর প্রতিধ্বনি ওঠে ভারত তো বটেই এমনকি বাংলাদেশেরও বেশ কিছু পত্রিকার ভাষ্যে ও লেখায়। দেখি এবং চুপ করে থাকি।
একটা সময় শোক ছাপিয়ে মনে সমালোচনা বাজতে থাকলো চড়া সুরে। অস্বস্তির কাঁটা খোঁচাতেই থাকে। এই লেখার তাড়না সেই কাঁটা।
বাংলাদশে রাষ্ট্ররে জন্ম কি সত্যেই ভারতের এক সেনাপতির কৃতিত্বের ফসল? তিনি না থাকলে বা তাঁর জয় না হলে কি ইতিহাস অন্যরকম হতো? ইতিহাসে ব্যক্তির ভূমিকা কি এতই মোক্ষম? এসব প্রশ্ন মাথায় আসছে।
মানকেশ যা করছেনে, সটো তাঁর দায়িত্ব ছিল। তাঁর সরকাররে হয়ে যুদ্ধ করা তাঁর চাকরির শর্ত।
কিন্তু বাংলাদেশের অগণিত মুক্তিযোদ্ধ আর অজস্র সেনা কর্মকর্তাদের জন্য স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়া চাকরির শর্ত তো ছিলই না। তাঁদের পূর্বতন আনুগত্য অস্বীকার করেই অর্থাত বিদ্রোহী হয়েই তাঁরা যুদ্ধে নেমেছিলেন। এ দুইকে এক করে দেখা সম্ভব নয়।
মানেকশ এখানেই অনন্য যে, তিনি বীর।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়া ছিল ভারত সরকারের রাজনৈতিক ও সামরিক সিদ্ধান্ত। তিনি সেই সিদ্ধান্তের সফল ও সুচারু বাস্তবায়ক। আর আমরা জানি যে, যুদ্ধ হচ্ছে রাজনীতিরই সম্প্রসারণ। ভারত তার রাজনীতি করেছে এবং তার সুফল বাংলাদশে বিপুলভাবে পেয়েছে। এবং ভারত গঠনগতভাবে এমন রাষ্ট্র নয় যে, যে কোনো স্বাধীনচেতা জাতির পক্ষে অবস্থান নিতে তা সাংবিধানিক বা আদর্শগতভাবে বাধ্য। তা হলে আসাম, নাগাল্যান্ড, পাঞ্জাব বা কাষ্মীরে তাকে দীর্ঘমেয়াদে দমন-পীড়ন ও সামরিক শাসন চালাতে হতো না। এবং বাঙালির 'কথিত মুক্তিদাতা' স্যাম মানেকশ-কেও আসাম-নাগাল্যান্ড বা কাশ্মীরে বিদ্রোহ দমনে নিয়োজিত থাকতে হতো না। বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামের যিনি বন্ধু তিনি আবার অন্য জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামের শত্রু হন কীভাবে, যদি না যুদ্ধ কেবল তার পেশাগত বিষয় না হয়? তিনি পেশাদার যোদ্ধা এবং সেই পেশায় তিনি সর্বোতকৃষ্টদের একজন। এবং ১৯৭১-এ ভারতের বাংলাদেশকে সর্বোতভাবে সাহায্য করা নিশ্চয়ই ভারতের মহিমাকে বাড়িয়েছে, কিন্তু সেই মহিমা থেকে বাংলাদেশের জন্ম বা বিজয় কোনোটাই হয় নাই। আমাদের জন্ম আমাদের রাজনৈতিক ইতিহাসের বিকাশের মধ্যে এবং এই জনগোষ্ঠীর স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষার মধ্যে। এ বিষয়ে কোনো ছাড় দেয়া মানে হয় ঐ রাজনৈতিক ইতিহাসকে ভুল বলে বাতিল করা নতুবা তাকে ঠিক মতো বুঝতে না পারা।
বাঙালিরা স্বাধীনতার ইচ্ছা করেছে এবং তার জন্য যুদ্ধ করার প্রস্তুতিও নিয়েছে। এই সংকল্প না থাকলে কারো পক্ষেই সম্ভব ছিল না বাংলাদেশকে মুক্ত করা। এই সংকল্প তিনটা ধারায় দিনে দিনে দানা বেঁধেছিল। এগুলোর প্রথমটি হলো সাংস্কৃতিক। জাতীয়তাবোধের জায়গা থেকেই বাংলার মানুষ পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় পরিচয় এবং তার সাংস্কৃতিক রাজনীতির সঙ্গে দূরত্ব বোধ করছে। বাস্তবের পাকিস্তানের আগেই মনের পাকিস্তানকে তারা ধ্বংস করেছে। এ থেকেই জন্ম নিয়েছে স্বাধীনতা সংগ্রামের দ্বিতীয় ধারা জাতীয়তাবাদের রাজনীত। জাতির মুক্তিকে এই রাজনীতি একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের আধারে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছে। ৪৮-৭১ পর্যন্ত এরই বিকাশ আমরা বহুধারায় বহু ঘটনার মধ্যে দেখি। এরই চরম পর্যায়ে জন্ম নেয় স্বাধীনতার পথে তৃতীয় ধরনের সংগ্রাম। সেটা হলো সামরিক সংগ্রাম। ৫২ সাল থেকে শুরু করে আগরতলা মামলা র্পযন্ত এর প্রথম ধাপ এবং দ্বিতীয় ধাপ দেখা দেয় একাত্তরের র্মাচ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সশস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধে। সংস্কৃতি-রাজনীতি এবং জাতিতে সশস্ত্র করে তোলা এই তিন হচ্ছে স্বাধীনতা সংগ্রামের বলবান পর্বত। যুদ্ধ হচ্ছে এর শিখর। ভিত্তি হচ্ছে সংস্কৃতি আর রাজনীতি হচ্ছে এর সৌধ। এই শিখর পর্বেই ভারত-সহ আন্তর্জাতিক নানান শক্তির ভূমিকা দেখতে পাই। কিন্তু কেবল শিখরকেই স্বাধীনতার মূল দেহ ভাবলে পর্বতটাকে কেবল একটা টিলা মনে হতে বাধ্য।
১৯৭১ সালে উপমহাদেশে দুটি যুদ্ধ হয়েছিল। একটি বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের যুদ্ধ। অন্যটি ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের যুদ্ধ। পাক-ভারত যুদ্ধ হচ্ছে সেই টিলা বিজয়ের যুদ্ধ। ভারত রাষ্ট্রের ইতিহাসে এটা এক গৌরবজনক অধ্যায় মাত্র। ভারত রাষ্ট্রের সমগ্র অস্তিত্বের প্রতীক বা তার সমমূল্য কিন্তু এই বিজয় পায় না। কিন্তু বাংলাদেশের জন্য তা তার জাতীয় অস্তিত্বের সমতুল এবং পরিণতি। ভারতীয় পক্ষ থেকে তাদের মিডিয়ায় এবং বাংলাদেশেও কেউ কেউ মুক্তিযুদ্ধকে প্রকারান্তরে ভারতেরই বিজয় হিসাবে দেখতে চান এবং মূল যুদ্ধকে_যেটা বাঙালির জাতীয় যুদ্ধ_ খাটো করে দেখেন। মানেকশ'র বিজয় বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা সম্ভব করেছে বা সেই বিজয়ের ফল বাংলাদেশের জন্ম, এমন মনোভাবের মধ্যে যে অধিপতি সুলভ দৃষ্টিভঙ্গি বা তাকে মেনে নেয়ার মধ্যে সমর্পিত মনোভাব থাকে তা আপত্তিকর। একজন কেন লক্ষ সৈনিকেরও কাজ নয়, কোনো দেশ স্বাধীন করা। সেটা তাদের ক্ষমতার বাইরের ব্যাপার। পরাধীন দেশের বেলায় তা আরো সত্য। সমগ্র জনগণের গভীর সাংষ্কৃতিক, রাজনৈতিক ও সামরকি প্রস্তুতি ও সংকল্প না থাকলে জাতীয় যুদ্ধে বিজয়ী হওয়া যায় না। এই জিনিষ সেনা কমান্ডে গঠিত হয় না।
আগে যে দুটি যুদ্ধের কথা বলেছি, তার মিলিত রূপটি ছিল মিত্র বাহিনীর প্রতিষ্ঠা। সেই বাহিনী যৌথ কমান্ডে চলতো, কিন্তু কার্যত প্রধান ছিলেন মানেকশ। এর গঠন এবং ভারতীয় বাহিনীর একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ আছে। আগামি দিনের কোনো ইতিহাসবিদ হয়তো তা করবেন। কিন্তু যুদ্ধের মধ্যেই বাংলাদেশকে নানানভাবে কোণঠাসা করে রাখা হয়। মুজিবনগর সরকারের বিবরণীতে তার অনেক নজির আছে। যুদ্ধ পরিচালনার ব্যাপারেও এ কথা খাটে। নভেম্বরে শুরু হওয়া ভারতীয় অভিযান থেকে শুরু করে আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান পর্যণ্ত এর অনেক প্রমাণ মিলবে। বাংলাদেশের জনগণের বিরাট-বিপুল প্রতিরোধ সংগ্রামকে পাশ কাটিয়ে তার সুফল নিয়ে পাকিস্তানকে এক হাত দেখে নেয়ার প্রবণতা ভারতীয়দের মধ্যে ছিল। তারই প্রমাণ ঢাকা অভিযানে বাংলাদেশি বাহিনীকে সঙ্গে না রাখা, যদিও তারা তখন কর্ণেল শফিইল্লাহর নেতৃত্বে তিন দিক থেকে ঢাকাকে ঘিরে রেখেছিল। তাদের ওপর দিয়ে উড়ে গিয়ে জেনারেল অরোরা পাকিস্তানীদের বলেন, বাঙালিরা এসে তোমাদের শেষ করে দেবে। তার চাইতে আমাদের কাছে আত্মসমর্পণ করো আমরা তোমোদের নিরাপত্তা দেব। ভারত এ প্রতিশ্রুতি রাখে এবং শিমলা চুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পথ বন্ধ করে দেয়। ভারতের কাছে আমরা চিরকৃতজ্ঞ কিন্তু এরকম অনেক জটিলতার জন্ম তাদের কারণেই হয়েছে।
যাহোক আমি একাত্তরে বাঙালি সমাজরে সর্বাত্মক প্রতিরোধের ব্যাপকতার দিকেই মনোযোগ কাড়তে চাই। এ যুদ্ধে কৃষক-সন্তান ও শহুরে তরুণরা লড়াইয়ে নেমেছেল। গোটা সমাজও সেই যুদ্ধের সঙ্গি হয়েছিল। ভারতীয় অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ নিয়ে এরাই কিন্তু পাকিস্তানীদের কোনঠাসা করে ফেলেছিল। নভেম্বরের দিকে সবখানেই পাকিস্তানীদের দাপট নিজ নিজ ঘাঁটির মধ্যে সীমিত হয়ে পড়েছিল। তাও কেবল শহুরে এলাকায়। তারা তখন সপ্তম নৌবহররে আর চিনা অস্ত্রের চালানের অপেক্ষায় দিন গুণছিল। দরকার ছলি একটা ফাইনাল ব্লো। ভারতীয় বাহিনী চকিতে একতরফা ভাবে সেই কাজটাই করে। তখন বাংলাদেশ বাহিনী এর জন্যই তখন ঢাকার দোরগোড়ায় এসে অপেক্ষা করছে চূড়ান্ত নির্দেশের। তার আগেই ভারতীয়রা কৌশলে আত্মসর্মপণ নাটক মঞ্চস্থ কর। এ ঘটনার নাটকীয় বিবরণ পাবেন মুক্তিযোদ্ধা ব্রিগেডিয়ার হেলাল মোর্শেদ খানের জবানীতে। পরের আরেকটি ব্লগে তা দিলাম। রিপোর্টটা আমার ছিল। এটা ছাপা হয়েছিল ২০০৭ সালের ১৩-১৪ তারিখের সমকাল পত্রিকায়।
আমার এত কহন কওয়ার উদ্দেশ্য আর কিছু না। মুক্তিযুদ্ধ ও এর রাজনীতিকে একদল ভারতের পক্ষপুটে বসে দেখেন, আরেকদল মৃত পাকিস্তানের ভুতের আছরলাগা ঘোর থেকে দেখেন। বাংলাদেশের স্বতন্ত্র জায়গা থেকে দেখার লোক কমই আছে।
১৯৭১ সালে আমরা কেবল গোলামির জিঞ্জির ছিন্ন করেই বেরিয়ে আসিনি, ইতিহাসের দিগন্তে নতুন একটি রাষ্ট্রেরও জš§ দিয়েছিলাম। যে জনগোষ্ঠীর জেদে এই মহাকর্তব্য হাসিল হলো, স্বাধীনতার মতায় কী সে অর্জন করতে পারে, সে জ্ঞান আজো তার হয়নি। এ না জানলে স্বাধীনতার সামর্থ্যটাই মাটি হয়ে যায়। দুর্ভাগ্য যে আজ তা হতে বসেছে।
এ বাপারে বাংলাদেশের ঘরের রাজনীতিতে কোনো সমঝোতা না থাক, বোঝাপড়াটুকুও নাই। ফলে উপমহাদেশের রাজনৈতিক পাটাতনে আমাদের ভূমিকার স্পষ্টতা ও নিজস্ব কার্যকারিতাও নাই। আমরা দুলছি বড় রাষ্ট্রের ঢেউয়ের ধাক্কায়_ কাণ্ডারিহীন। সবরকম দীনতার মাফ আছে, কিন্তু নিজের অস্তিত্ব নিয়ে এরকম বেহুশ যে, তার দীনতার মাফ নাই। ইতিহাসে বেশুমার প্রমাণ আছে এর। বাংলা ভূখণ্ডে বসতকারি নানা জাতিগোষ্ঠী, ধর্ম ও সম্প্রদায়ে লোকেরা যতদিন নিজেদের রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী হিসাবে চিনতে না পেরেছে, ততদিন নিজেদের দেশ ও সমাজের কর্তৃত্বের দাবিদার তারা হতে পারবে না।
বাংলাদেশ মানে তাই পাকিস্তান থেকে বেরিয়ে আসা রাষ্ট্র নয়, নয় কেবল ভারত রাষ্ট্রের প্রতিবেশী ও সেই রাষ্ট্রের বাঙালিদের ‘অপর’ অংশের দেশ। কেবল মুসলমান বাঙালি বা সরাসরি বললে মুসলিম পরিচয়ের মধ্যে ভারত থেকে আমাদের আলাদা থাকার যুক্তি তৈরি হয় না, কেননা ভারতেও বিপুলসংখ্যক মুসলমান বাস করেন। যুক্তি হিসাবে এটা দুর্বল। বাংলাদেশ নামক ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতার খোঁজ এতে মেলে না। সেই খোঁজ নাই বলেই এদেশের শাসকশ্রেণী, বিদ্বৎ সমাজ ও রাজনৈতিক
সংস্কৃতিতে আজগুবি দুই ‘বাংলাদেশ’ আবিষ্কৃত হয়। খামাখাই এক সাংস্কৃতিক গৃহযুদ্ধ চলে। এ দুই বাংলাদেশের একটা পাকিস্তানের কোটরে আস্তানা গেড়ে ভারতের প্রতি খবরদারের আঙুল তোলে। আরেকটা খেয়ে না খেয়ে ভারতের কাঁধে ভর দিয়ে পাকিস্তানের প্রেত তাড়ানোর বায়বীয় লড়াইয়ের কোশেশ করে যায়। ওদিকে দেশ ঠিকই দখল হয়ে যায়। এ দুটোই প্রতিক্রিয়াজাত। ভারত ও পাকিস্তানের রাজনৈতিক অস্তিত্বের প্রতিক্রিয়া। কিন্তু কর্তারূপ বাংলাদেশের ক্রিয়া কই? সেও কি একাত্তরের শহীদদের মতোই বেওয়ারিশ লাশ হয়ে সতকারহীনভাবে পড়ে আছে ইতিহাসের কোনো অন্ধকার আবর্তে। তাই বারবারই তার বিজয় হাতছাড়া হয়, আর তার যুদ্ধ হয়ে যায় অপরের যুদ্ধ। তাকে জন্ম দেয় অপরে! হা, বিষ্ময়! এরা এতই বেহুশ যে, জনগণ এবং জাতিই যে একমাত্র অলৌকিক, সে নিজের গর্ভে নিজেকে জন্ম দেয়, সেই হুঁশ আসে না। জাতির কোনো স্রষ্টা নাই। সে নিজেই নিজের স্রষ্টা। এই জন্যই ঈশ্বর বনাম জনগণ পরস্পরকে কখনো সার্বভৌম বলে স্বীকার করতে পারে না।
মন্তব্য
এই হইল অবস্থা।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
একসময় কয়েক কিস্তি করেছিলাম আহাম্মকের আমলনামা নামে। কিন্তু নানান গ্যাঞ্জামে এতই আহাম্মক হয়ে থাকি যে আর আমলনামা লেখা হয় না।
আপনার আমন্ত্রণে আনন্দিত হয়েছি। দেখি কোনো একসময় পারি কিনা।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
ভারত-পাকিস্তানের হেজিমনিক ক্রাইসিসকে কৌশলে সামনে টেনে আনার উদ্দেশ্য আমার মনে হয় ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের গণযুদ্ধ কে আড়াল করা। ভারতের ভুমিকাকে নির্ধারক বলে সামনে নিয়ে আসার ফলাফল একদিকে ভক্তিগদগদ সাংস্কৃতিক(!) শুচিবায়ূগ্রস্থ কতিপয় উচ্চমধ্যবিত্তের নাকি কান্না, অন্যদিকে পৃথিবীর বৃহত্তম মুসলীম রাষ্ট্র ভেঙে যাওয়ায় হামাতম সখিনামাতম করা জামাতমুসলীম লীগকেই ফুয়েল জোগায়।
ঈশ্বরাসিদ্ধে:
অজ্ঞাতবাস
মোক্ষম সারাংশ। এর সঙ্গে এটুকু যোগ করতে চাই যে, গণযুদ্ধের ধারাকে আড়াল করার সঙ্গে সঙ্গে সেই গণযুদ্ধের রাজনীতিকেও পরাস্থ করা। যে রাজনীতি ছিল সবরকম আধিপত্যবাদ তথা ভারত-পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় দর্শনেরও বিপরীত। অর্থাত এক বা দ্বিজাতি নয়, ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে প্রগতিশীল কৃষক-শ্রমিক-মধ্যবিত্তের শ্রেণী-মৈত্রীর রাষ্ট্র। মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সংগঠক দলটিই প্রথম এই চেতনার বরখেলাপ শুরু করে। সেকারণে গণযুদ্ধের ইতিহাসকে তারা কখনোই সামনে আনতে চায়নি।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
গণযুদ্ধের মূল সাপোর্ট বেইজ যারা তৈরী করেছিলেন তাঁরা ষাটের রাজনীতিতে মুক্তিযুদ্ধের প্রধাণ সংগঠক দলের কাছে পরাজিত হলেও মাঠ ছাড়েননি। তাঁদের বেশীর ভাগই যুদ্ধের মাঠে লড়েছেন। ফজিলত পেয়েছে সেই প্রধাণ সংগঠকদের প্রকৃত খুঁটি রাজনৈতিক শ্রেণী। তাঁদের কাছে গণযুদ্ধ শব্দটা ভীতিকর। ১৯৭২ না, ১৯৪৭ সাল থেকেই তাঁরা কখনো নির্বাচিত কখনো অনির্বাচিত কায়দায় ক্ষমতায় ছিলেন।
ঈশ্বরাসিদ্ধে:
অজ্ঞাতবাস
পেয়ারাবাগানে সিরাজ শিকদার, পাবনায় টিপু বিশ্বাস, আত্রাইয়ে অহিদুর রহমান, টাঙ্গাইলে কাদের সিদ্দিকী ছাড়াও মাওবাদী কমিউনিষ্টদের একটা অংশ ভারতে না গিয়েই দেশের ভেতর প্রথম প্রতিরোধ সংগঠিত করেছিলেন।
আর যে বিষয়টা কেউই খেয়াল করে না যে, যুদ্ধের মধ্যেও যে নারীরা দেশে রয়ে গিয়েছিল, যে প্রবীণরা রয়ে গিয়েছিল তারা এবং অবশিষ্ঠ মানুষেরা কিন্তু সমাজ-সংসার-উতপাদন জারি রেখেছিল। এ ভাবে তারা সমাজকেই বাঁচিয়ে রেখেছিল। পরে যারা ফিরে এসেছে, তারা কিন্তু এ সমাজের কাছেই আশ্রয় পেয়েছে। সমাজের এই প্রতিরোধ অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কেবল যুদ্ধের সামরিক ইতিহাসে এটা ধরা পড়ে না। গত বছর আফসান চৌধরী তিন খণ্ডে বাংলাদেশ ১৯৭১ নামে একটি বই লিখেছেন। সেখানে এই ইতিহাস বিবৃত আছে।
একাত্তরের চেতনা বলে যা খোঁজা হয়, এখানকার শাসকশ্রেণী ও ভদ্রসমাজ তার উত্তরাধিকার বহন করে নাই। এটা আজো পাওয়া যাবে গ্রামে, বাম রাজনৈতিক ঐতিহ্যে এবং প্রতিটি গণঅভ্যুত্থানে। যেমন ফুলবাড়ীতে এশিয়া এনার্জি বিরোধী সাত দিনের অভ্যুত্থান ও পুলিশ-বিডিআরের নিপীড়ন তাদের কাছে একাত্তরের যুদ্ধের ব্যাঞ্জনা দেয়। তারা বলে, সেই এক লড়াই হয়েছিল আর এই বার। কানসাটেও এই ব্যাখ্যা পাওয়া যায়।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
অরাজনৈতিক মুরুব্বীদের স্মৃতিচারণে প্রকাশ পায় নভেম্বর নাগাদ "উচ্চমধ্যবিত্ত" ভদ্দরলোকদের অনেকেই "উদ্ভুত পরিস্থিতি"র উপর বীতশ্রুদ্ধ হয়ে পড়ছিলেন। সকল ভদ্দরলোক জাহানারা ইমামের মতো আচরণ করেন নাই। বিষয়টা অনেকটাই গায়ের উপর দিয়ে যাওয়া-না যাওয়ার। তবে সেই বিচারে পরিসংখ্যানের প্যারামিটারে গায়ের উপর ট্যাঙ্কের চাকা অনুভব করার বিষয়টা অনেক বেশী করে প্রান্তিক জনগণের দিকে সরে যায়। ২৫ মার্চ রাতে শুধু মাত্র কিছু ছাত্র-শিক্ষক নিহত হন নাই। বিপুল পরিমাণ বস্তিবাসীও নিহত হয়েছেন পাকিস্তানী সেনাবাহিনির হাতে। তারপর টানা নয়মাস ধরে লাশের স্তুপের পরিসংখ্যানও লাশের শ্রেণীচরিত্রের জানান দেয়। সেই লাশের শ্রেণীর যে সংগ্রাম সেটা এখনো বহুলাংশে অব্যক্ত। এখন হয়তো আরো কাজ হচ্ছে, তাকে সাধুবাদ জানিয়েই বলতে হয়, বস্তুত মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের নিয়মিত পাঠকের কাছে শ্রমজীবি মানুষের মুক্তিসংগ্রাম এখনো কার্যত অব্যক্ত। এই অংশে সার্চলাইট ফেলা ইতিহাসবেত্তাদের এখনকার সবচাইতে বড় কর্তব্যগুলির একটি। এঙ্গেলস যাকে বলেছেন জনগণের ইতিহাস।
ঈশ্বরাসিদ্ধে:
অজ্ঞাতবাস
একাত্তরের মাঝামাঝি সময় থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাসও চলেছিল। নিয়েছিলেন কিছু শিক্ষক।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
মে জুন থেকেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক দাবী করার অজুহাতে লোকজনরে বাধ্যতামূলক চাকরিতে যোগ দেওয়ার... স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় খোলা রাখার প্রক্রিয়া শুরু হয়। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাও হয়। এমনকি ঢাকায় বারও খোলা ছিলো তখন... এবং তখন নাকি বারে লোকজন পান করতেও যাইতো! এই বিষয়েও একটু খোঁজ খবর নিবো ভাবছিলাম একবার...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
বক্তব্যের সাথে একশ ভাগ সহমত।
অনেব একাডেমীক আলোচনায় দেখেছি; বাংলদেশের স্বাধীনতায় তক লোকের কত বীরগাথা!
শুধু এদেশের মানুষদের স্বাধীন হবার বাষণাটি তেমন আমল পায়নি।
কোন এক আলোচনায় বোকারমত; স্বাধীণতা সংগ্রামকে গন আন্দোলন বলেছিলাম; তাতেই মুক্তি সংগ্রাম ছোট হয়ে গেছে।
জনগনের ইচ্ছাটি এভাকবে অনেক ভাবে যে খাটো করে দেখা হচ্ছে সেটি অনেক বিজ্ঞ আলোচকের দৃষ্টি এড়িয়ে গেছে।
অবশ্যই আমাদের মুক্তির লড়াইয়ে "স্যাম মানেকশ" সহ আরো অনেকের অবদানকে শ্রদ্ধাভরে স্বরণ করি। কিন্তু বাংলাদেশ বাঙ্গালী চেয়েছে বলেই হয়েছে।
অনেক ধন্যবাদ লেখককে এ কথাটি আবার স্বরণ করিয়ে দেবার জন্য।
**********************
কাঁশ বনের বাঘ
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
সুমন চৌধুরী-র, অনুধাবনটি পাঁচবার তোপধ্বনি দিয়ে বরণ করলাম।
**********************
কাঁশ বনের বাঘ
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
দুর্দান্ত আলোচনা
গল্প কবিতা বাদ দিয়ে আপনি রাজনীতি নিয়েই লিখেন
এ কী কইলেন ওস্তাদ, একেকটা শব্দ যেন শেলসম বিঁধিল বক্ষে!
...........................................................................
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
দারুন মনতব্য[
এম. এম. আর. জালাল
"ফিরে দেখুন একাত্তর ঘুরে দাঁড়াক বাংলাদেশ।"
এম. এম. আর. জালাল
"ফিরে দেখুন একাত্তর ঘুরে দাঁড়াক বাংলাদেশ।"
অভিনন্দন!
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
চোদ্দকুড়ি ধন্যবাদ.......
আপনি যে জার্নালের রেফারেন্স দিলেন সেটা ভারতের বলে না হয় মেনেই নিলাম তারা আমাদের স্বাধীনতার যুদ্ধ নিয়ে এমনটা ভাবে। কিন্তু বাংলাদেশের যেসব পত্রিকা দায়িত্বজ্ঞানহীনভাবে হুবহু সেসব ছাপিয়ে দেয়, তাদেরকে কি বলবেন?
New Age পত্রিকার সেদিনের রিপোর্ট পড়ে মাথার চান্দি গরম হয়ে গিয়েছিল। কিছু একটা লিখে প্রতিবাদ পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। ছাপায় নি আজো। সেনাবাহিনীর সমর্থনপুষ্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কড়া সমালোচনা করে প্রথম আলো, Daily Star এর চেয়ে এই পত্রিকা আর 'আমাদের সময়' বেশ বাহবাহ পাচ্ছে। কিন্তু এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন রিপোর্ট করলে আস্থা রাখতে কষ্ট হয়।
রিপোর্টটা পড়ে যে impresssion টা পাওয়া গেল তা হচ্ছে - নভেম্বর ডিসেম্বরের আগ পর্যন্ত বাংলাদেশে গোলমাল (তাদের ভাষায় volatile situation) চলছিল। যুদ্ধ পূর্ণরূপ পায় ভারত যোগ দেবার পর। ভাবখানা এমন - ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ লাগছিল। বাংলাদেশ মাঝখান দিয়া পয়দা হইয়া গেছে!
"বাংলাদেশের জন্ম" - এই কথাটিতে বিরাট একটা বোকামি আছে । বাংলাদেশে মানব বসতী হওয়ারও আগে থেকেই এই ভূখন্ড এখানেই পড়ে ছিল । আমাদের পূর্বপুরুষেরা এসে এখানে বসতী করার পর কিছু একটা নাম করন ঘটেছে মাত্র । " বাঙ্গালি জাতির জন্ম" - এটা আরো বড় বোকামি কথা । কারো একার পক্ষে জাতির জন্ম দেয়া সম্ভব না । লক্ষ্যার্থেও অর্থেও না, বাচ্যার্থেও না । তবে হ্যাঁ, "বাঙ্গালির স্বাধীনতা লাভ" - প্রসঙ্গে আলোচনা করা যেতে পারে ।
চমৎকার বিশ্লেষণ ।
বাংলাদেশকে স্বাধীন করার ব্যাপারে মানিকশের ভূমিকা নিয়ে পত্রপত্রিকা অনেক কথা বলছে, কিন্তু স্বয়ং মানিকশের মতামতটা কী তা কি কেউ জানেন ? পত্রিকা যা বলে বলুক, মানিকশ কতখানি বীর আর কতখানি পেশাদার যোদ্ধা টের পাওয়া যাবে তার নিজের মতামতটা জানতে পারলে । এই ব্যাপারে তিনি জীবদ্দশায় মুখ খুলে থাকলে ভাল, আর তা যদি না হয় তবে তাকে নিরাপদ দূরত্বে রেখে (একটু আধটু ভুলে গিয়েও) এগিয়ে যাওয়াই মনে হয় উচিৎ হবে ।
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
এ বিষয়ে তাঁর নিজের তেমন কোনো বক্তব্য দেখিনি। তবে, যুদ্ধের সময় নির্ধারণ এবং মূল পরিকল্পনাটি তাঁর। ইন্দিরা চেয়েছিলেন আরো আগেই আক্রমণ করতে। তিনি বলেছিলেন, তিনি রাজি নন।
আর আত্মসমর্পণ ঘটানোর কায়দাটি জেনারেল জ্যাকবের।
আর একাত্তরে পাকিস্তান বাহিনী যেরকম অপদার্থতা আর জনবিচ্ছিন্নতায় ছিল, তাদের পরাজয় অনিবার্যই ছিল।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
হুমমম...
মানিকশকে তাহলে ঘাগু বলতে হয় । বক্তব্য দেয়ার মত ভুল করেনি । অবশ্য তারমত পেশাদার লোকের কাছ থেকে এমনটাই আশা করা যায় । কোন কথা বলতে হয়, কোন কথা একেবারেই বলতে হয়না আর কোনটা কখন করতে হয় - সেব্যাপারে টনটনে জ্ঞান না থাকলে এতদূর যেতে পারতনা ।
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
না মনে হয়, 'বাংলাদেশের জন্ম' কথাটায় কোনো বোকামি নাই। এখানে রাজনৈতিক অর্থে বাংলাদেশের কথা বলা হয়েছে। এর আগে ঊনিশ শতকের শেষের দিক থেকে দুই বাংলাকে একত্রে কেউ কেউ বাংলাদেশ বলা শুরু করেন, তার আগে ছিল কেবলই বাংলা। এবং লোকভাষ্যে সেই বাংলার সীমান্ত সুস্পষ্টভাবে চিহ্নিত ছিল না । ইংরেজরা যে অঞ্চলকে দাগিয়ে দেন তার নাম হয় বেঙ্গল বা বাংলা, সুলতানি আমলে তা ছিল সুবেহ বাংলা ইত্যাদি।
এই সীমান্ত এবং এ বসতি নিয়ে বাংলার একাংশে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা পায় ১৯৭১ সালে। তার আগের আন্দোলনের নাম হয় বাংলাদেশ আন্দোলন। বাংলাদেশ এখন একটি রাজনৈতিক প্রত্যয়, এর আগে ছিল সাংস্কৃতিক কিংবা ভৌগোলিক অস্তিত্ব মাত্র। বাকি দু্ইয়ের সঙ্গে এই রাজনৈতিক পরিচয় যুক্ত হয়ে বাংলাদেশ একটি রাষ্ট্র হয়।
তবে বাঙালি জাতির জন্ম বিষয়ে আপনার মন্তব্য একশোয় দুইশো ভাগ সঠিক। যদিও বাঙালি জাতি বলে যে জাতীয়তাবাদ নির্মিত হয়েছে তা ঊনিশ শতক শুরু করে বিশ শতকের মধ্যভাগে মধ্যবিত্ত কবি, ইতিহাসবিদ ও রাজনীতিকদের সৃষ্টি। এর সঙ্গে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর আত্মপরিচয় বা জাতীয়তাবোধের সম্পর্ক ক্ষীণ।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধটা তো আসলে
কোন না কোনভাবে সামরিকত্বরিই বীরত্বগাঁথা।
হয় বাংলার নয় ভারতের।
বীরশ্রেষ্ঠ সাতজনের সাতজনই সামরিক।
শেষবিচারে আমাদের মুক্তিবাহিনী সেকেন্ড ক্যাটাগরি ভারতের মিত্রবাহিনীর কাছে।
প্রথম যেদিন পাকিস্তানের আত্মসমর্পনের ছবি দেখলাম,
প্রানপনে খুঁজছিলাম একজন বাঙালির মুখ। পাইনি। পাবোনা কখনো।
আমার দেশের মানুষের রক্ত দিয়ে কালি বানিয়ে
কলম ধরিয়ে দিল অন্যকেউ।
ফারুক ওয়াসিক।
লীলেন ভাইয়ের কথায় কান দেবেননা।
শুধু গল্প কবিতার পাশাপাশি কলামটা চালু রাখুন
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
আমরা নিজের কৃতিত্ব অন্যরে দিতে খুবই পছন্দ করি।
যেমন সৈয়দ আলি আহসান এরশাদ চাচারে কবিতা লেইখ্যা দিতেন (জনশ্রুতি) আর সেই কবিতা চাচার নামে সব প্রত্রিকায় পাবলিশ হইতো।
তেমনি বাংলাদেশ পাকিস্তানের লগে ক্রিকেট খেলায় যখন জিতলো, টেস্টস্ট্যাটাস পাইলো কোনো কোনো চদু বোদ্ধা কইলেন- পাকিস্তান ইচ্ছা কইরা বাংলাদেশ রে জিতাইসে। নাইলে বাংলাদেশ ক্রিকেট টেস্টস্ট্যাটাস পাইতো না।
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।
___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!
এরকম একটা লেখার খুব দরকার ছিল। লেখককে ধন্যবাদ।
— বিদ্যাকল্পদ্রুম
ইতিহাসের এই ব্যাখ্যা গুলোর এখনি এই অবস্থা।
আরো বছর চল্লিশেক পরে কেমন হবে, বলুন তো? রামছাগলদের ইতিহাস-সন্ত্রাস তো আছেই, তার উপরে এইরকম মতদ্বৈধতা।
আহ ঈশ্বর, আমাদের ক্ষোভ কি তোমাকে স্পর্শ করে?
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
ধন্যবাদ সৌরভ ও শিক্ষানবীস
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
ধন্যবাদ ধ্রুব হাসান, শিক্ষানবিস ও সৌরভ।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
ভারতের ক্রেডিটকে বড় করে দেখাতে যেয়ে আমদের মহান মুক্তিযুদ্ধ তথা এদেশের দীর্ঘ স্বাধিকার আন্দোলন কে পাশ কাটানো/চেপে যাওয়া/অস্বীকার /তাচ্ছিল্য করা নিয়ে ভারতের প্রশাসন ও মিডিয়া আর এদেশের দালালদের ভুমিকায় দুঃখিত হবার অবকাশ আছে কিন্তু বিস্মিত হবার কিছুই নেই ।
এই তো গত বছর রাহুল গান্ধী আমাদের জানিয়েছিলেন যে তার পরিবারের জন্যই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে । মুল নিউজ রিপোর্ট আছে এখানে
প্রতিক্রিয়া ইন ইন্ডিয়া আছে এখানে
আর বন্ধু জাহেদ আহমেদের নিউ এজ এ প্রকাশিত প্রতিক্রিয়া দিলাম এখানে
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************A life unexamined is not worthliving.-Socrates
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
আহ! এই কমেন্ট আরো আগে আসলে আলোচনা আরো তীক্ষ্ন হতো। ধন্যবাদ মানিক।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
নতুন মন্তব্য করুন