ওদিকে আরেক ইতিহাস তৈরি হচ্ছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। কয়েকশ ছেলেমেয়ে সারারাত রেজিস্টার ভবন ঘেরাও করে বসে ছিল। তাদের ঘিরে ছিল ছাত্রদলের গুন্ডারা। ভবনের ভেতর সদ্য সভা সমাপ্ত করা সিন্ডিকেট সদস্যরা। নানা টালবাহানা করে যৌন নিপীড়ক শিক্ষক সানিকে বাঁচাতে তাদের টালবাহানার ঝুলি এখনো খালি হয়নি। যৌন নিপীড়ন বিরোধী নীতিমালার দাবিকে আবারো তারা ঠেকালো।
রাতে থেমে থেমে ফোন করি আর শুনি স্লোগান, শুনি গান, শুনি চিতকার। জাহাঙ্গীরনগর গত এক তিনমাস ধরে এ দাবিতে গর্জাচ্ছিল। জরুরি অবস্থার চূড়ান্ত থমথমে ভাবের মধ্যে গত বছরও তারা মিছিল-অবরোধ ইত্যাদির পর বিরাট তাঁবুর নীচে দলে দলে অনশনে বসেছিল। তিনদিন পর সুলতানা কামাল, আনু মুহাম্মদরা গিয়ে তাদের আশ্বাস দিয়ে অনশন ভাঙ্গান। এবারও তা ক্লাইমেক্সে পোঁছালো।
এই ভোরেও খবর পেলাম, তারা আছে এবং তারা সরব। তারা ঘেরাও ছাড়ে নাই। দশ বছরের এ আন্দোলন বোধহয় এবার শীর্ষে পৌঁছবে। দশ বছর আমরাও এভাবে নেকড়ে আর শেয়ালদের ঘেরাওয়ের মধ্যে ভিসি ভবস ঘেরাও করে বসেছিলাম ঝড়-বৃষ্টি আর বন্যার এক ভুতুড়ে ক্যাম্পাসে। সেই নাটকের পুনরাভিনয় আবার, আবার আরেক ট্র্যাজেডির মঞ্চসজ্জা চলছে নাকি?
ওদিকে আজকের প্রথম আলোর খবর : শিক্ষা মন্ত্রণালয় আর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন নিপীড়নবিরোধী নীতিমালা প্রণয়নে এগার সদস্যের কমিটি করেছে। আমরা কি সফল হতে যাচ্ছি।
দশ বছর আগে
উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আমরা বসে ছিলাম। দিনের পর দিন, রাতের পর রাত। সেটা সম্ভবত আগস্ট মাস ছিল। এ সময়টায় ঝড়-বৃষ্টি বেশিই হয়। তার মধ্যেই সকাল থেকে সন্ধ্যা, সন্ধ্যা থেকে ভোর, আবার ভোর থেকে আরেক ভোর অবধি আমরা বসে থেকেছি। দিনের পর দিন। সেবার খুব বন্যা হয়েছিল দেশে। ঢাকার সঙ্গে বাইরের যোগাযোগ বন্ধপ্রায়। ক্যাম্পাস থেকে ঢাকায় কিংবা ঢাকা থেকে ক্যাম্পাসে আসার একমাত্র বাহন ছিল নৌকা। বন্যা ও আন্দোলন উভয় কারণে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ। বিরাট ক্যাম্পাসে আমরা অল্প কিছু প্রাণী আছি। আর আছে ‘ধর্ষক গ্র“প’ নামে পরিচিত সে সময়ের সরকারি সংগঠনের ক্যাডারকুল।
খবর আসত যে ঢাকা থেকে অস্ত্র এসেছেÑযেকোনো দিন হামলা হবে। হামলা যে একেবারে হয়নি তা নয়। কিন্তু ভয়াবহ কিছু ঘটার গুজব তখন আমাদের চারপাশে। খবর আসে, রাতের অন্ধকারে চৌরঙ্গীতে একদল যুবক মুখে কালো কাপড় বেঁধে জমায়েত হয়েছে। সবাই জানত ওরা কারা। কিন্তু আমরা নিরুপায়। এমনকি ভয় পাওয়ার সামর্থ্যও যেন লোপ পেয়েছিল। আমাদের ফেরার পথ ছিল না। কেন ছিল না তা দেশবাসী জানে, আজ তা ইতিহাস। আমরা আমাদের কয়েকজন সহপাঠীর ওপর বীভৎস ধর্ষণের বিচারের জন্য মরিয়া হয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের
উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বসে ছিলাম; হিংস্র হায়েনার ঘেরাটোপের মধ্যে গায়ে গা লাগিয়ে, মেষশাবকের দলের মতো। তার আগে পেরিয়ে আসতে হয়েছে অনেক কাঁটায় ছাওয়া দীর্ঘ পথ।
সেই পথে আবার ওরা নেমেছে। জাহাঙ্গীরনগর বারবার অন্ধকারে বাতিঘর হয়ে জ্বলেছে। আজ আবার ওরা বাতি জ্বেলেছে। আমরা কি তা দেখতে পাচ্ছি? ওদের সঙ্গে দাঁড়ান।
মন্তব্য
হুমম... ঠিকাছে...
জাহাঙ্গীরনগরের আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীদের সালাম জানাই।
হায় সময় চলে যায়, দশটা বছর। জাহাঙ্গীরনগরের এই ছেলেমেয়েগুলোর মুখ বদলায়, শুধু নিয়ম বদলায় না। তবু নতুন মুখগুলো নতুন করে আবার প্রতিবাদমুখর হয় এইসব অনিয়মের বিরুদ্ধে। কিসের ভরসায়? এরা সব নিতান্ত সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী, কোন রাজনৈতিক দলের ব্যাক-আপ নেই। ঘোর বিপদ আর প্রতিকূল পরিস্থিতি মাথায় নিয়ে তবু আন্দোলন। জাহাঙ্গীরনগর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, প্রকৌশল বিশ্বিবিদ্যালয়। ২০০২-এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হলে পুলিশ আক্রমনের প্রতিবাদের আন্দোলনে আমরা একেবারে সাধারণ ছেলেমেয়েরা আন্দোলনে নেমেছিলাম। হলে থাকতাম, প্রতি মুহুর্তে ছাত্রদলের ক্যাডারদের হুমকি...বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে হল ভ্যাকান্টের আদেশ দিলো, তবু আমরা থামলাম না। জাহাঙ্গীরনগর, বুয়েট যোগ দিলো আমাদের সাথে। রোকেয়া হলের সামনের জায়গাটাকে "মুক্তাঞ্চল" ঘোষণা করে সারাদিন ধরে বৃষ্টিতে ভিজে দখল করে রাখলাম। চললো গান, প্রতিবাদ। আর হঠাৎ সেই মুক্তাঞ্চলে টিয়ার শেল, লাঠিপেটা... একপাশে পুলিশ আরেকপাশে লোহার রড হাতে ছাত্রদলের ক্যাডার...কোথায় যাই? সংগে ভয়াবহ সব গালাগালি, "মুক্তাঞ্চল তোদের ... দিয়ে ... দেবো"। হায়... তবু থামি না। আবার বুয়েটে সনি হত্যার প্রতিবাদের আন্দোলন হয়, অনশনে থাকা ছেলেমেয়েগুলোর ওপর আক্রমণ হয়, গায়ে স্যালাইনের সূচ নিয়ে দৌড়ুতে হয়ে তাদের...। এক আন্দোলনে চিহ্নিত হয়ে যাই। তবুও আবার...হুমায়ূন আজাদ স্যারের ওপর হামলার প্রতিবাদ--মিছিল, আবার হুমকি। আজ আবার জাহাঙ্গীরনগরের সেই একই...
নাহ, মাথাটা বনবন করছে...
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
হায়, এই অধমকে কোথাও দেখেছিলেন সেখানে? কিংবা ফারজানা ববি নামে কাউকে? ওই আন্দোলনের শক্তি ও সাহসে অসাধারণ হয়ে উঠেছিল সাধারণরা। আর যাদের আপনারা অ-সাধারণ বলতেন, মানে আমরা যারা সংগঠন করতাম, তারাও মানি, কীভাবে শিক্ষার্থীরা পাহাড় সরিয়েছিল। বিশেষত ওই সময়ে। কিন্তু তলায় কত কত ষড়যন্ত্র, কত অন্তর্ঘাত পেরিয়ে ধাপে ধাপে সফলতার সিঁড়ি বেয়ে ওঠা গিয়েছিল, সেই গল্প একদিন বলতে চাই। আমার জীবনে দু-একটি বলবার মতো বিষয়গুলোর একটা সেটা।
আপনিই আগে শুরু করেন না কেন?
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
সেই দিন এস এম হল থেকে যেই মিছিলটি বের হয়েছিলো সেটির অগ্রভাগে ছিলাম , এক চিৎকারে এস এম হলের ৬০০ ছাত্র নেমে ছিলো রাস্তায় । ডইনিং হলে তখন খাবার খাচ্ছিলাম। বিবিসি বাংলা সার্ভিসের সংবাদ শুনে খাবার ফেলে উঠে এসেছিলাম। আমার সেই দিনের কথা মনে পড়ে। ছাত্রদলের ছেলেরা বলেছিলো, তানভীর ভাই রুমে গিয়া চুপচাপ বসে থাকেন আপনার অসুবিধা হবে। কোন কিছুই সেদিন মানিনি। হল ভেক্যান্টের প্রতিবাদে সেই রাতে প্রথম টিয়ার সেল বুক পেতে নিয়েছিলাম। জগন্নাথ হলের ছেলেদের ছাত্রদলের ছেলেরা বের হতে দিচ্ছিলনা। আমরা সেই গেটের তালা ভেঙ্গে ওদের আমাদের সাথে মিছিলে নামতে সাহায্য করি। রাজু ভর্স্কর্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যেই মিছিলটি প্রথম যাই সেটি ছিলো এস এম হলের। সূর্যসেন ,জসিম উদ্দীন হল শহীদুল্লাহ হল থেকে মিছিলে মিছিলে ভরে যায় টিএসসির চত্বর। তার পর সকাল বেলা রোকেয়া হলের সম্মুখে মুক্তাঞ্চল ঘোষনা করে আন্দোলনের সূচনা.শহীদ মিনারে আমরণ অনশন সব কিছুই আমি দিব্য দৃষ্টিতে দেখতে পাচ্ছি।
আন্দোলনের জয় হোক। সাথে আছি।
--------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে
-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে
ফারুক ভাই
কষ্ট হয় এ ভেবে যে রাজশাহী আর চট্টগ্রামে কেন কোন আন্দোলন হয় না?
পোস্টের জন্য ধন্যবাদ।
একজন হারামজাদাকে রক্ষা করার জন্য অনেকগুলো হারামজাদা একমত হবে সেটাই স্বাভাবিক। অবাক হইনি মোটেই।
"আজ আবার ওরা বাতি জ্বেলেছে" (ফারুক )
ফারুক
এই আগুন ছড়িয়ে দিতে হবে
সবখানে সবখানে সবখানে
নতুবা তুমি যে ত্রিবেনীর কথা বলেছ আগের পোস্টে তার থেকে নিস্তার নেই
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
A life unexamined is not worthliving.-Socrates
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
জাহাঙ্গীরনগরের প্রতিটা বিপ্লবী প্রাণের তরে লাল সেলাম !
------------------------------
'এই ঘুম চেয়েছিলে বুঝি ?'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
আন্দোলন সফল হোক
---------------------------------------------------------
আমাকে ডাকে আকাশ, বোঝে মাটি হাওয়া জল
বোঝে না মানুষ আর বিনাশী মুদ্রার ছল
---------------------------------------------------------
ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.
আন্দোলনের সাথে একাত্ম।
মূর্তালা রামাত
যৌন নিপীড়নকারীদের কেবল বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীক না... রাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ীও বিচার হউক...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
এটা মধ্যবিত্ত নারীদের নিপীড়নের বিরুদ্ধের আন্দোলন, কিন্তু বস্তিতে, গার্মেন্টস-এ সহ অজস্র রাহেলাদের বিষয়ে আমরা একইরকম সোচ্চার থাকবো তো? এমনকি আমার জাবির বন্ধুদের সকলেও সেই বিষয়ে সমান জাগ্রত নয়। তবে বৃত্তাবদ্ধ চেতনাও চেতনাই, কেবল অপরিণত আর কি?
যে দেশের স্বাধীনতার জন্য আড়াই লক্ষ নারীকে প্রাণের পরে যা তা দিতে হয়েছিল, সইতে হয়েছিল তেমন নির্যাতন, সেদেশে তো যৌন নিপীড়ন বিষয়ে সর্বোচ্চ স্পর্শকাতরতা থাকার কথা ছিল শাসকমহলে, মধ্যবিত্ত সমাজে। এই একটা এসিড টেস্টেই বোঝা যায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বড়াই কত ফাঁপা।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
.........................................
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
একাত্ম.. ক্ষোভে বিক্ষোভে
সত্য সুন্দরের জয় হোক !
জয় হোক!!
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
আপডেট
জাবিতে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে
সরকারি আইন শৃংখলা বাহিনী অবস্থান নিয়েছে
যে কোন সময় সংঘর্ষ শুরু হবে
এই পোস্টের ব্লগার ফারুক আন্দোলনের সাথে
একাত্ত্ব প্রকাশ করে সেখানেই রয়েছে ।
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
A life unexamined is not worthliving.-Socrates
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
পোড়াকপাইল্যা মানুষ, নিজে গিয়ে যোগ দিবার সুযোগ নাই, নইলে তাই করতাম।
আন্দোলনের প্রতিটা মানুষের সাথে একাত্মতা।
-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
নব্বই পরবর্তী বাংলাদেশের যেকোন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোন আন্দোলন যদি লক্ষ্য করেন তাহলে দেখতে পাবেন যে সেগুলোর ঘটনা প্রবাহ, শিক্ষার্থীদের ভুমিকা, তাদের বিভক্ত হওয়া, শিক্ষকদের ভূমিকা, সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা, সরকারের ভূমিকা সবকিছুতে বেশ মিল আছে। সেখান থেকে বর্তমান ঘটনাবলীর ব্যাপারে আপনি ফোরকাস্ট করতে পারবেন এবং তা ভুল হবে না। আন্দোলনগুলো থেকে কিছু আপাতঃ অর্জন হয় যেগুলো সময়ের সাথে সাথে টিকে থাকে না এবং পরিস্থিতি আবার আগের রূপ ধারন করে। প্রশাসন জানে যে শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থানকাল সীমিত সময়ের জন্য ও তা অচিরেই শেষ হয়ে যাবে। তারা সেই সময়টুকু পার করার কৌশল অবলম্বন করে মাত্র। কাছাকাছি চরিত্রের আন্দোলন চলতেই থাকে বিভিন্ন লোকেশনে কিন্তু তাদের পরিনতি একই প্রকারের। যতক্ষন পর্যন্ত না মূল রাজনৈতিক দলগুলো এই ব্যাপারগুলোতে সম্পৃক্ত হবে এবং সমস্যাগুলোর মূলোৎপাটন করার চেষ্টা করবে, ততক্ষন পর্যন্ত এর শেষ হবেনা। আরেকটি বিষয় খেয়াল করবেন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকদের একটা বড় অংশ গত বিশ বৎসরে কিভাবে নিয়োগ পেয়েছেন। তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড কি, তাদের শ্রেণীচরিত্রই বা কি? সমস্যা কেন জিইয়ে থাকে, কিভাবে থাকে সে প্রশ্নের একটা উত্তর সেখান থেকে পেয়ে যাবেন। এই অধম পান্ডবের মত আম-জনতা যতক্ষন পর্যন্ত না শুধু সমর্থন জানিয়ে ক্ষান্ত না দিয়ে সক্রিয় অংশগ্রহন করবে ততক্ষন পর্যন্ত মূল রাজনৈতিক দলগুলোও এই ব্যাপারগুলোতে সম্পৃক্ত হবে না।
================================
তোমার সঞ্চয় দিনান্তে নিশান্তে পথে ফেলে যেতে হয়
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আপডেট :
৬ দিন সময় দিয়ে অবরোধ ছেড়েছে জাবি শিক্ষার্থীরা : (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)
আছি...ফলোআপ দিয়েন...
ঈশ্বরাসিদ্ধে:
অজ্ঞাতবাস
আপডেট্ঃ
শিক্ষক সমিতির মধ্যস্ততায় আপাতত আন্দোলনে বিরতি দেয়া হয়েছে ।
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
A life unexamined is not worthliving.-Socrates
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
ফারুক ভাই শুক্কুর বার দিন নন যাই।
সবাইরে জানাও, ২ তারিখে সকাল থেকে সন্ধ্যা ওখানে থাকতে হবে। আর তোমার-আমার তো আজ থেকেই কাজ। যোগযোগ কইরো সত্বর।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
আমি যখন ক্যাম্পাসের ডেইরি ফার্ম গেট দিয়ে ঢুকি, তখন সেখানে শ দুয়েক পুলিশ দাঁড়িয়েছিল। সোজা রেজিস্টার বিল্ডিংয়ে গিয়ে দেখি সেখানে শ দুয়েক ছেলেমেয়ে ব্যারিকেড দিয়ে বসে আছে। ইতস্তত দাঁড়িয়ে আছে ততোধিক। এরা গতকাল সকাল থেকে ওখানে ধর্না দিয়ে বসেছিল। একটা রাত পার করেছে, ছাত্রদলের গুন্ডাদের হুমকির মধ্যে। ভবনের ভেতরে ভারিক্কি সিন্ডিকেট মেম্বররা বেকায়দায় আটকে আছে। কোনোদিন এদের দেখা যায়নি, ছাত্রস্বার্থে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে। পেলায় পড়লে অবশ্য অন্য কথা। ক্যাম্পাসের পুরনো লোকদের থেকে খবর নিলাম, শিকদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বললাম। আর যাদের সঙ্গে বলা দরকার, তাদের সঙ্গে তো গতকাল থেকেই চলছে।
এর মধ্যেই একটা শোরগোল উঠলো। তাকিয়ে দেখি কবির সরনির দিক থেকে পুলিশের বিরাট দলটি দাঙ্গা পুলিশদের সামনে নিয়ে আসছে। পুরো জমায়েত তটস্থ হয়ে গেল। দুটি মেয়ে নিচে নেমে লেকের পাড়ে, রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকাদের ডাকলো: আপনারা মূল জমায়েতে এসে বসেন। বেশিরভাগই গেল। যারা তখনও দ্বিধান্বিত, তাদের বকা শুনতে হলো, আমরা মেয়েরা পারি আপনারা পারেন না? আপনাদের সাহস নাই? কথাটায় কিছু কাজ হলো। পরের দৃশ্যটা দেখার মতো। পুলিশ এসে লেকের পাড়ের রাস্তায় পজিশন নিয়ে ফেলল। বাঁয়ে নীল পুলুশ ডানে দাঙ্গা পুলুশ। আর পুলিশ দেখে চলে আসা আরো শ দেড়েক পুলিশের পেছনে দাঁড়িয়ে গেছে। সজ্জাটা যুদ্ধকৌশলের দিক থেকে কাজের। এ্যাকশনে গেলে পুলিশকে সামলাতে হবে, সামনে পেছনে দুদিকেই। কিন্তু কার্যত তা হবে না। মার খেয়ে জমায়েত প্রথমে ছত্রভঙ্গ হবে। তারপর একটা দূরে গিয়ে জমায়েত হয়ে পাল্টা আক্রমণ শুরু করবে। তখন আর এ দিয়ে হবে না। এর তিন-চার গুণ পুলুশ আনতে হবে। তখন তারা ছেলেমেয়েদের বালিশ পেটা করার সাহস পাবে। তার আগে নয়। আর কাক যেমন কাকের মাংস খায় না, গিয়ে দেখি, কথা বলে বুঝি, শিক্ষকদের বেশিরভাগই কাকস্বভাবী হয়ে আছেন।
আমার হিসাব বলছে, পুলিশ অন্তত সন্ধ্যার আগে ঝাঁপাবে না। কিন্তু তারা যে ঝাঁপাবে তা বলা যায়। শিক সমিতি ধরি মাছ না ছুঁই পানি করছে। এর মধ্যে কর্মচারি সমিতিও হাজির। আগামি তিনদিন বন্ধ বলে আজই তারা বেতন চায়। বুঝলাম, এটা গোলমাল ভিন্নখাতে বইয়ে দেয়ার জন্য।
মেয়েরা একদিকে আর ছেলেরা একদিকে তখন ব্যারিকেড দিয়ে দাঁড়িয়েছে। মারামারি শুরু হলে, হলেরগুলোও চলে আসবে জানি। ওদিকে উত্তেজনা বাড়ছে, আর ঢোলের বাজনাও দিমিক দিমিক চলছে। ঢোলগুলো নাট্যতত্ত্বের শিার্থীদের। আন্দোলনটার বাদি ওরাই। ওদের সহপাঠিই নির্যাতিত হয়েছে। ওদেরই জেদটা বেশি।
ওদিকে ঢাকায় যত যত জায়গায় খবর দেয়া দরকার দেয়া হয়েছে। মিডিয়াও এসেছে। এরকম সময়ে, শিক সমিতির নেতারা এলেন, ভেতরে গেলেন। কিছু কথা হলো বোধহয় ওপরমহলের সাথে। তারপর প্রশাসনের তরফ থেকে আরো কয়েকদিন সময় চাওয়া হলো। প্রতিবাদীরা এই চালের জন্যই অপো করছে। এখনই মারামারিতে যাওয়া তাদের উচিত হতো না। ২ আগস্ট ধর্ষক প্রতিরোধ দিবস। এ দিন, নব্বইয়ের পর প্রথম নিরস্ত্র শিক্সার্থীদের উত্থানে ছাত্রলীগের ধর্ষক ক্যাডারেরা জান হাতে নিয়ে ক্যাম্পাস থেকে পালিয়েছিল। সেটা ছিল তাদেরই আমল। তারপরও! ওদিন ক্যাম্পাসে বড় সমাবেশ হবে। জাতীয় ব্যক্তিত্বদের কাউকে কাউকে নিয়ে যাওয়া হবে। এর মধ্যে মিডিয়া আরো খেয়াল করবে। অতএব সময় চাই। এটাই ভাল মনে হল। ওরা ৫ আগস্টের আল্টিমেটাম দিয়ে দুইদিনের ঘেরাও কর্মসূচি স্থগিত করলো।
বিরাট মিছিল তখন ট্রান্সপোর্টে গিয়ে সমাবেশে বসেছে। সারাদিন কত কাজ পড়ে আছে ওদের।
ওদের এই সময় নেয়াটা দরকার ছিল। ওদিকে শিক্ষা মন্ত্রনালয় ও ইউজিসি সকল উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন নিপীড়ন বিরোধী নীতিমালা প্রণয়নের জন্য যে কমিটি গঠন করেছে সেটা জাবিরই বিজয়। এখন ওরা চায় নিপীড়ক শিকের বহিস্কার। তার জন্য ওদের আরো কয়েকটা দিন অপো করতে হবে।
জাবির, যারা প্রাক্তন, যারা সহমর্মী, সমব্যথী এখন তাদের অনেক কিছু করার আছে। জাবির ছেলেমেয়েরা তাদের ডাকছে।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
আমার আজ সত্যিই যেতে ইচ্ছা করছে....আন্দোলনকারীদের প্রতি পূর্ণসমর্থন ...শুধু আমার পক্ষ থেকে না কাসেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত প্রগতিশীল ছাত্রের প্রতিনিধীদের পক্ষ থেকে.......আমার চৌরঙ্গী...আমার ট্রান্সপোর্ট...আমার কবীর স্মরণীতে....চিরদিন আমাদের জয় হোক!
ঈশ্বরাসিদ্ধে:
অজ্ঞাতবাস
২ আগস্ট মুক্তমঞ্চে সংহতি সমাবেশের আমন্ত্রণ কি ব্লগে দেওয়াটা ঠিক হবে?
চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...
চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...
ব্যক্তিগত মেসেজ করে পাঠানো যায়।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
খুবই হতাশাজনক! মাঝে মাঝে এত অসহায় পরিস্থিতি আসে যে কিছুই করার থাকে না! আন্দোলন সফল হোক!
আমি হচ্ছি সুবিধাবাদী - ভীতু একজন মানুষ। আমি চাই সব বিপ্লব সফল হোক, কিন্তু নিজে অংশগ্রহণে ইতস্তত করি। তবু আজ খুব ইচ্ছা করছে, জাহাঙ্গীরনগরে চলে যাই, অসংখ্য বিদ্রোহী প্রাণের সাথে আন্দোলনে সামিল হই।
আন্দোলন চিরজীবি হোক।
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
দশ বছর আগের জাহাঙ্গীরনগরের ঘটনাকে এখনও কাছের বলে মনে হয়------পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতিটি ঢাকা,চট্টগ্রাম, রাজশাহী......... এ ধরনের এক সমস্যায় জর্জরিত-------- এ এক আশ্চর্যজনক বিষয় ----- জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার দীর্ঘ চাকরী জীবনে এভাবে কোন মেয়ে হেনস্থা হয়েছে কিনা আমি জানিনা অথচ বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে যেখানে পড়তে হলে সবচেয়ে মেধাবীর তালিকায় নিজেকে নাম লেখাতে হয়---যারা পড়ায় তাদের জ্ঞান আকাশচুম্বী বলে ধরা হয় সেই সব বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিভাগগুলো 'সানি স্যারের মতন বাবা' দিয়ে ভর্তি (শোনা যায় প্রতিবাদের শুরুর দিকে স্যার পরোক্ষ স্বীকারোক্তি দিয়েছে না বুঝেই। ছাত্রীর কান্নাকাটি আর বিচারের দাবীতে তাকে সরাসরি প্রশ্ন করা হলে সে বলেছে বাবাও তো মেয়েকে জড়িয়ে ধরতে পারে, একি কোন বড় সমস্যা?) কথাটি আরও অন্যরকম ভাবে বলেছে আমি পুরোপুরি শব্দগুলো ভুলে গেছি। অথচ এই সব বাবা স্যারেরা জানে না যে এদেশীয় সংস্কৃতিতে এখনও কোন বাবা মেয়েকে জড়িয়ে ধরে আদর করে না।
তদন্ত কমিশন বরাবরই হয়-----বহু বার হয়েছে-------কিন্তু মূলা দেখিয়ে সেই বাবারা বা তাদের ছেলেরা বহাল তবিয়তে বিচারের পর ঘুরে বেড়িয়েছে------কারণ প্রচলিত শাস্তি তাদের কখনও হয়নি---অন্তত কোন শিক্ষকের তো হয়ই নি-------
যে তীর্থভূমি থেকে আমরা নিজেদের মহামূল্যবান সম্পদ হিসেবে নিজেকে সবার সামনে গরিমায় মেলে তুলি সেই ভূমি কামুকদের ঘিরেই আবর্তিত হবে ------ হতেই থাকবে ------- যতদিন রাজনীতি প্রশাসনের কাঠামো সংস্কারে ব্রত থাকবে।
.....................................................................................
সময়ের কাছে এসে সাক্ষ্য দিয়ে চ'লে যেতে হয়
কী কাজ করেছি আর কী কথা ভেবেছি..........
.....................................................................................
সময়ের কাছে এসে সাক্ষ্য দিয়ে চ'লে যেতে হয়
কী কাজ করেছি আর কী কথা ভেবেছি..........
এই আন্দোলন সফল হোক, অতি দ্রুত !
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
সত্যের জয় হোক, সুন্দর এর মুক্তি হোক।
তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
আগামীকাল হচ্ছে সমাবেশ? দূর থেকে একাত্মতা জানাচ্ছি।
সংহতি জানিয়ে দেব ওদের। আপনার আগামি আমাদের পরশু। আমরা একদিন পিছিয়ে আছি।
;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
নতুন মন্তব্য করুন