প্রথমবারেরটা হারিয়ে গেল কোথায়। আবার দিলাম ভুলভালসহ।
১. বৃষ্টি হলে কিছু জল মাটি পায় কিছু গড়িয়ে যায় নদীতে-জলাশয়ে। দুটোই পরিবেশের কাজে লাগে, দীর্ঘমেয়াদে প্রকৃতি তাতে শুশ্রুষা পায়। কোনোটাই অপচয় নয় যদি তা বৃষ্টি হয়। সচলে একটা বৃষ্টিপাত হয়েছে, কিছু মেঘ-বাষ্প বেশি ভারি হওয়ায় শিলা হয়েও পড়েছে, তাতে সামান্য অনিষ্টও হয়েছে। তা বৃষ্টিরও দোষ নয়, প্রকৃতিরও ব্যাঘাত নয়। এটাই জগতের নিয়ম। সেই নিয়মে প্রমাণ হয়েছে, সচল কমিউনিটি ঘাতসহ ও সক্ষম। এর ওপর ভরসা রাখলে চিন্তা ও বিতর্কের প্রসারণে আর দ্বিধা থাকবার কারণ থাকে না।
২. মনজুরাউল ভাই-য়ের কথা সূত্রে কথার চালাচালি এমন জায়গায় গিয়েছে, যা যাওয়া উচিত হতো না। তার জন্যই সি-২/৭ পোস্টের ৩৩ নং মন্তব্যে আমি নৈর্ব্যক্তিক ভাবে একটা ব্যাখ্যা ও মত দেবার চেষ্টা করেছি। ওতেই কাল হলো। আমি মনে করি না, ওখানে এমন কিছু লেখা ছিল যার জন্য গুরুতর বিতর্কের প্রয়োজন পড়ে। বরং ইঙ্গিতে মঞ্জু ভাইয়ের আহত মনকে কিছুটা ছাড় দিয়ে পরিস্থিতি সমাপ্ত করার একটা আমন্ত্রণ ছিল। তা করতে গিয়েছিলাম বিশেষত হিমুর ২৩ নং কমেন্টের উপক্ষার সুর দেখে। উপেক্ষা কে পারে? যার ক্ষমতা থাকে। আমি ওই মন্তব্যে মডারেটরের ক্ষমতার প্রকাশ ঘটতে দেখেছি। আবারো বলছি, মঞ্জু ভাইয়ের সদস্যপদ পাওয়ায় বিলম্বের কারণ হিসেবে প্রকারান্তরে তাঁকে ‘কলহপ্রিয়’ বলা হয়, তাঁরও ‘মানসিক বিষফোঁড়া’ আবিষ্কার করে সেখানে খোঁচানো হয়। ওই পয়েন্টেই আমার আপত্তি অনড়। কারণ এভাবে সত্যিসত্যি কারো মনে বিষফোঁড়া জন্ম নিতে পারে। ৯ নং কমেন্টে এসে এম মাহবুব মোর্শেদের সচলের নীতি ও কৌশল নিয়ে অবস্থান ব্যাখ্যা যৌক্তিক ও বিবেচক লেগেছে। সবার শেষে কনফুসিয়াস এক কথায় বিজ্ঞোচিত হলেন। ততক্ষণে পর্বতের ঢাল বেয়ে পাথর গড়াতে শুরু করেছে।
মঞ্জুরুল হয়তো একটা ভুল বোঝা বুঝে নিয়েছিলেন যে, জনপ্রিয়তা একটা মাপকাঠি হতে পারে। তাই তিনি হিট-মন্তব্য ইত্যাদির প্রসঙ্গ টেনেছেন। তাঁকে সেটা বুঝিয়ে দিলেই চলে। আর তিনি যখন অভিযোগ করবার কারণ পেয়েছেন বলে মনে করছেন, তখন তুলনাটা দেয়া তাঁর জন্য ফরজ হয়ে, নইলে অনুযোগ জানানোর প্রয়োজনই তো থাকে না। এই লজিকটা বোঝা দরকার ছিল। বিষয়টা অপ্রীতিকর বিধায় এটা তিনি ব্যক্তিগত ভাবে জানালেই পারতেন। (বিভিন্ন সময়ে আমিও তা-ই করেছি) বাকিটা তাঁর সিদ্ধান্ত। সেটা নিয়ে বলবার কিছু নাই।
৩. গোড়া থেকেই আমি হিমুর কমেন্টের সুর ও স্বর নিয়ে কিছুটা চাপ বোধ করছিলাম। কারণ এমন সুর মানুষকে উস্কে দেয়। যার ক্ষোভ আছে (সঙ্গত অসঙ্গত যা-ই হোক) সে এতে দাঁড়িয়ে পড়ে। এক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। ব্যক্তি হিমুর লেখা ও রসিকতা আমার খুব প্রিয়। কিন্তু মডারেটর হিসেবে তাঁর আরো নৈর্ব্যক্তিক ও বিবেচক হবার দরকার ছিল। পাবলিক প্রাইভেটের ভেদ এতে লঙ্ঘিত হয়েছে। এবং সেটা হওয়ায় আমার মানসিক সুস্থতা থেকে শুরু করে এমন চূড়ান্ত কথা পর্যন্ত বলা হয়েছে, ব্লগোষ্ফিয়ার না হলে তা চিত্তচাঞ্চল্যকে সীমাছাড়া করার জন্য যথেষ্ঠ ছিল। খেয়াল করবার অনুরোধ করি, অরূপও আমাকে এই অভিযোগ করেছিল। উভয়ক্ষেত্রেই মনে হয়েছে এর জবাব দেয়া যায় না। দিচ্ছিও না। কিন্তু এই অ্যাপ্রোচ ধ্বংসাত্মক। কাউকে বিরোধী মনে হলেই সেটা তার মানসিক সমস্যার লক্ষণ মনে করাটা অবশ্য দার্শনিক। দার্শনিক ক্রোচে মনে করতেন, ইতিহাস আসলে মনের ইতিহাস। আমি মনে করি, ইতিহাস বাস্তব কর্মকাণ্ডের ইতিহাস। মনের মধ্যে নয়, এর সূত্র সন্ধান করা উচিত প্র্যাক্টিসের জগতে। সেখানে আমারো সমস্যা থাকতে পারে বৈকি।
৪. প্রসেস অবশ্যই মানতে হবে। এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী তার সৃজনশীল ব্যবহারই কাম্য। কিন্তু জগতে যেহেতু বিশুদ্ধ নৈর্ব্যক্তিকতা সম্ভব নয়, সেহেতু প্রসেসের মধ্যে ব্যক্তি মনের ইচ্ছা-অনিচ্ছা, মতাদর্শ, ক্ষমতা-চর্চার প্ররোচনা ঢুকে পড়তেই পারে। সেটা সমস্যা নয়, সেজন্য প্রসেসের প্রহরী ও চালকদের কিছুটা রক্ষণাত্মক ও বিবেচক থাকাই শ্রেয়। এর অপর নাম জবাবদিহি। ক্ষমতার সঙ্গে জবাবদিহি যুক্ত না হলে তা কী মারাÍক হয়, বিশুদ্ধ বিপ্লবী স্ট্যালিনই তার প্রমাণ। যে কোনো এককেন্দ্রিক ক্ষমতার বেলাতেও এটা সত্য। মডারেশন তেমনই এক ক্ষমতা। যার কারণেও স্ট্যাবিলিটি ব্যাহত হতে পারে। এটা যেহেতু ন্যস্ত মাত্র কয়েকজনের হাতে, ফলে তাদের আরো সতর্কতা কাম্য। আবার আমাদের মতো লোকের জন্যও স্ট্যাবিলিটি ব্যাহত হয় এবং হয়েছে, তাও দক্ষ হাতে হ্যান্ডেল করা চাই।
৫. এর বাইরেও অনেক কথা বলা হয়েছে, সেসবের উত্তরে যাচ্ছি না। আমি এখনও মনে করি আমার ৩৩ নং কমেন্টের বক্তব্য যৌক্তিক। আগ্রহীদের সেটা আবার পড়ে দেখার অনুরোধ করি।
৬. এবার আমার নিজের তরফে একটা ব্যাখা দেয়া জরুরি মনে করছি। আপনাদের অনেকেরই মনে থেকে থাকবে, বন্ধু সুবিনয়ের সঙ্গে একটা বিতর্কে আমাকে চরমভাবে অপমানিত হতে হয়েছিল অরূপ, আদিত্য প্রমুখ সেখানে ভূমিকা পালন করেছেন। এই আদিত্য খুবই ইন্টারেস্টিং এক চরিত্র, কেবল কাউকে ধোলাই দেবার দরকার হলেই তাঁর আবির্ভাব ঘটে। বাকি সময় তিনি স্বর্গে বিরাজ করেন। তারপরও দ্রুত আমি সামলে নিয়ে আপস করে ফেলি। কিন্তু কেউই এর জন্য দুঃখপ্রকাশ করেনি। দ্বিতীয়ত নুশেরার বিদায় পোস্টে আমি মন্তব্যে বলি যে, সচলে যদি মাত্র ১ শতাংশও ভেজাল থাকে, তাহলে তো চিন্তার কিছু নাই এবং সেটা সামাল দেয়া কোনো সমস্যাই নয়। মন্তব্যটা রেস্ট্রিক্টেড করা হয়, এবং ব্যাখ্যা চাইলেও দেয়া হয় না। এরকম ছোটো খাটো ব্যাপার আরো ঘটেছে। মনে রাখিনি, কিন্তু কোনোবারই কারো তরফেই দুঃখপ্রকাশ না করাটা আমার মনে ছিল।
হিমু এবং অরূপ উভয়ই এক বিষয়ে একমত যে,
‘‘আপনি কি মানসিকভাবে অসুস্থ? নাকি স্মৃতিভ্রষ্ট? সচল যখন ব্যান হলো, আপনার সাথে প্রহরে প্রহরে আমি নিজে যোগাযোগ করেছি। আপনার, ব্যক্তি ফারুক ওয়াসিফের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন দশটা দিন কাটিয়েছি। এই উদ্বেগের কারণও ছিলো, সেটা আপনি ভালো করেই জানেন। আর আপনি এখন বলছেন আপনাকে ষড়যন্ত্রকারী ভেবেছি আমরা!
আমার ধারণা আপনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত, এবং মৃদু পারসিকিউশন ম্যানিয়ার রোগী। এবং আমাদের বিরুদ্ধপক্ষ ভেবে আপনি রীতিমতো পুলকিত হন। এই ভুল ধারণাগুলো থেকে বেরিয়ে আসুন, নিজেও সুখে থাকবেন, আমাদেরও স্বস্তিতে রাখতে পারবেন।’’
আমি এ মন্তব্যকে বিচলিত মানুষের প্রলাপ হিসেবেই দেখতে পারতাম। কিন্তু এর মধ্যে যে অভিমান ও অভিযোগ আছে তাকে সম্মান করে কিছু কথা বলা দরকার মনে করছি। আমি আমার ভুল বোঝার সম্ভাবনা বাতিল করছি না, কেবল আমার মনে কী আছে, তা তুলে ধরছি।
...................................................................
সচল ব্যান হলে আমি অন্যদের মতোই যারপরনাই তৎপর হয়ে উঠি। মনে করি সেটাই আমার কর্তব্য। খোঁজ নিই এবং নিশ্চিত হয়ে সচল কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষ ব্যানের সংবাদটি নিউজ হিসেবে ছাড়ি। এমনভাবে ছাড়ি যাতে সচলের কোনো সমস্যা না হয়। আমরা ঢাকার যারা একত্র হয়েছিলাম তাদের কারো কারো মনে হয়েছে আমাদের ঠিকমতো ইনফর্ম করা হচ্ছে না যে, কী পরিস্থিতি, কী করণীয়। আমরা বৈঠক করে কাজের সিদ্ধান্ত নিই। সেটাও আবার কর্তৃপক্ষের অনুরোধে স্থগিত করে দিই। ওদিকে সচল কর্তৃপক্ষ ৪/৫ দিনের মাথায়ও এমন বক্তব্য দিতে থাকেন যে, সচল ব্যান নাও হতে পারে। জিমেইল-এর গ্রুপ আলোচনাতেও সেই সুর দেখতে পাই। এদিকে আমাকে পরিহাস করে সামইনে লেখা আসতে থাকে। আমি চুপই থাকি। কারণ সচল কী করবে বুঝতে পারি নাই বলে। নোংরাদের জবাবে নোংরা স্টাইলে যুদ্ধ চলে ‘আমার ব্লগে’। দেখে আরো দমে যাই। আরো কিছু জিনিষ জানতে পাই (সেগুলো আমার পক্ষে ডিসক্লোজ করা সম্ভব না) তা থেকে ধারণা করি, আমাদের লাইন অব অ্যাকশন আর প্রবাসী সরকারের লাইন অব অ্যাকশন এক হচ্ছে না। অতএব চূড়ান্ত ভাবে খ্যামা দিই। সেই ঘটনায় যা হওয়ার কথা ছিল সচলের জন্য গৌরবময় অধ্যায়, তা হয়ে তাকলো বিব্রতকর ধোঁয়াশা একটা অধ্যায়।
এর মধ্যে সচল গ্রুপে অরূপ লেখেন,
‘‘এই মুহুর্তে আপনাদের দায়িত্ব লালসার্ট"গ্রুপকে কন্ট্রোলে রাখা। এরা আমাদের ঝামেলার বলি বানিয়ে স্বার্থ উদ্ধারে ব্যস্ত। অলরেডি ই-বাঙলাদেশের রিপোর্ট দেখেছেন। সচলায়তনের ব্যানে যদি অন্যরা ফায়দা নিতে যায়, আমি সাথে সাথে সাইট ডাউন করে দেব। যা করতে হবে গুছিয়ে করতে হবে। ধৈর্য্য ধরেন, আমরা সমাধানের চেষ্টা করছি।’’
এই গুরুত্ব চিহ্নিত করা অংশ খেয়াল করুন। অরূপের সঙ্গে আমার আগের বিতর্ক, ব্যান নিয়ে নানান সন্দেহপূর্ণ বক্তব্য (সেসময়ের ঘোষণা, কমেন্ট, জিগ্রুপের কথোপকথন) এবং নানান পারিপার্শ্বিক কারণে আমার মনে হয় লাল শার্ট গ্রুপ আমাদেরই বলা হচ্ছে। কারণ আমরা বিষয়টা নিয়ে প্রেস কনফারেন্স, বিবৃতি ইত্যাদির দিকে যাচ্ছিলাম। ওই সময়ে কিছু বিভ্রান্তিকর ঘটনাও ঘটে। বিডি নিউজের সংবাদ, বিবিসি নিয়ে গুজব ইত্যাকার ঘটনায় ঢাকা ও বিদেশের মধ্যে আসলেই অস্পষ্টতা তৈরি হয়।
এর মধ্যে সবজান্তার পোস্টে আমার কমেন্টের ধারাবাহিকতায় অরূপ লেখে,
একবার কাকে যেন বল্লাম দেব একটা চড়, কোথা থেকে চলে এলেন মধ্যবিত্ত প্রসঙ্গ। সচলে কাউকে ব্যান করা হল, বলা হল মধ্যবিত্ত মানসিকতা! পাশের বাসার কুকুর ঘেউ করলো, লাফ দিলো পুঁজিবাদ, আকাশে মেঘ করলো, শুরু হল শ্রেণী সংঘাত। এই তোতাপাখিদের নিয়ে বড় যন্ত্রনা!
এতে আহত হওয়ার সঙ্গত কারণ আছে। একজন লিখলো মধ্যবিত্ত নিয়ে আমি নিজেও সাড়া দিয়ে সহযোগী পোস্ট দিলাম, আর উনি এসে লাফ দিয়ে নামলেন। বউকে বোঝাতে কবে ঝি-কে মেরেছেন তার নমুনা দিলেন। পুঁজিবাদ, মধ্যবিত্ত, শ্রেণী সংঘাত নিয়ে আমি নিয়মিতই লিখে থাকি, আরো কেউ কেউ লেখেন। ফলে বিষয়টাকে যেভাবে ট্রিট করা হয়, তাতে আক্রান্ত না হওয়াই অস্বাভাবিক। উনি ধরে নিয়েছেন, ওনার এই কমেন্ট পড়েই আমি মধ্যবিত্ত নিয়ে লিখেছি। অথচ অন্তত পোস্টিংয়ের সময় দেখলেই বোঝা যাওয়ার কথা, আমি সবজান্তার পোস্টের সম্প্রসারণ হিসেবেই লিখেছি। অরূপের কমেন্ট দেখেছি পরে। তাই হিমুর এই উত্তর মানা যাচ্ছে না।
‘‘আপনি হয়তো সচলায়তনের আগে বাংলা ব্লগোস্ফিয়ারে আমাদের সক্রিয়তা সম্পর্কে অবগত নন। চড়ের প্রসঙ্গটা একসময় ঝড় তুলেছিলো, এবং অরূপ যে কথা উল্লেখ করেছে, তার সাথে জড়িত ব্লগাররা ছিলেন ব্রাত্য রাইসু, জামাল ভাস্কর ও আস্তমেয়ে। এতে আপনি কোনভাবে জড়িত নন, কিন্তু অযথাই নিজের গায়ে কথা টেনে নিয়ে একটা তিক্ত তর্কের সূত্রপাত করলেন। কেন? আপনি সব কিছুর মধ্যে আপনাকে উদ্দিষ্ট করে চালিত আক্রমণের গন্ধ কেন খুঁজে পান? আপনার কি মনে হয় না, কোন কিছু বুঝতে না পারলে সেটি আপনাকে উদ্দেশ্য করে বলা কোন কিছু না-ও হতে পারে? সচলায়তনের সবাই কি আপনাকে ঠ্যাঙানোর জন্যে বসে আছে?''
এবং,
‘‘আমি বারবার দেখছি আপনি আগ বাড়িয়ে লাগতে আসেন। ঘোড়া সামলান। পায়ে পা দেওয়াটা অশোভন। সচল কাউকে আটকে রাখে না। সবাই মুক্ত। জোর-জবরদস্তির কিছু নাই। এখানে যন্ত্রনা হলে, যেখানে উপশম হয় সেখানে আড্ডা গাড়াই ভালো। সচলের নিয়মের পিছে না লাগাই ভালো, নিয়মহীনতার একাধিক ত্রে আছে, ঠিকানা প্রয়োজন হলে জানাবেন।
দয়া করে অপ্রয়োজনে না পিছে লাগলে সুখী হই। প্যারানয়া থেকে বের হয়ে আসুন, আগ বাড়িয়ে ক্যাচাল করাটা হজম করা সম্ভব না।
শুভেচ্ছায়
অরূপ’’
এই হলো সচলে বিতর্ক করবার ফল। আমি এই মনোভাবকে মানসিক সমস্যা বলব না, বলবো একচেটিয়া ক্ষমতাবানের আচরণ। দোষ কেবল স্ট্যালিনেরই, তাই না?
এর পিছে এসে আদিত্য লিখলেন, (১০.১.১.১.২.১ । আদিত্য (যাচাই করা হয়নি) । মঙ্গল, ২০০৮-০৮-১২ ০৭:০৬ )
‘‘হা হা হা...অরুপের মন্তব্য 'বিপ্লব’, আপনি জানেন না চরমেরা প্যারানয়েড ? সুলন বিলন কিছুনা, আসল লন হইলো কার্য সম্পাদন করিতে হইবে যে করেই হোক! তা না হলে কি তারা সবার জিনিষ এক দৈর্ঘ্যের হওয়া উচিত এমন খোয়াব দেখেন? নন্দীগ্রামে যা প্রোডাকশন দিয়েছে তারা, তা কোন অভদ্দর লোক অন্দর বাড়ীর ঝি'র পেটেও দেয় না।’’
ইনি অন্যত্রও আমাকে এই ভাবে সম্বোধন করেছিলেন। প্রতিক্রিয়ার এই ধরনটা কী বিষ্ময়করভাবে তিনজনের বেলাতেই এক???
আমি প্রতিবাদ করেছিলাম। তারপরও সাতদিনের মতো এই অপমানের প্রদর্শনী চললো। অবশেষে অরূপ সরিয়ে নিলেন, আর আদিত্য এখনো সেখানে আপনমূর্তিতে ঝুলছেন। মডারেশন নির্বিকার।
হাওয়ার ওপর তাওয়া আমি ভাজিনি। ব্যক্তিগত ভাবে না হোক, কমেন্টের জবাবে এরকম কমেন্ট দিলে তা যে অপরকে হেয় করা হয় এই মিনিমাম স্ট্যান্ডটাও এই এখনকার বিতর্কেও স্বীকার করতে দেখলাম না। এতে করে আমার অবিশ্বাস আরো বদ্ধমূলই হলো বরং।
এর পরে প্রিভিলেজড ইত্যাদি অভিযোগ আমি তুলেছি। এটার বিস্তারিত বলা আমার পক্ষে সম্ভব না। তাতে বন্ধুকেও অভিযোগ করা হয়। কিন্তু কারো পোস্ট রিপোস্ট হতে পারে, কারোটা পারে না। চমস্কির একটা অনুবাদ দিয়েছিলাম, সেটা প্রথম পৃষ্ঠা থেকে সরিয়ে নেয়া হয়। কারণ পোস্টের ৬/৭ ঘন্টা পরে ওটা প্রথম আলোর ওয়েবে আসে, এবং ১২ ঘন্টা পরে ছাপা হয়। নিয়ম মেনে সরিয়ে নিলাম। কিন্তু দুই বছর আগের প্রথম আলোয় ছাপা লেখা কিন্তু ঠিকই প্রথম পাতায় চলে আসে। এরকম আরো আছে, আমার এবং অপর কারো কারো বেলায়।
মনজুরাউল অ্যান্টি গল্প লিখতেন, তা থেকে শুরু হলো অ্যান্টিছড়ার চরম মশকরা। এবং তা সমাদর পেতে লাগলো। মঞ্জু ভাইয়ের আক্রান্ত হওয়াই স্বাভাবিক ছিল, তা তিনি হয়েওছেন। তবুও মডারেশন নির্বিকার। এখন বেচারা জুলিয়ান ভাইও কী বলতে এসে কী শুনে গেলেন!
সব আমি মনে রাখিনি, সেটা উচিতও নয়। কয়টা উদাহরণ দেয়া দরকার ছিল, কারণ আমার মানসিক রোগটা আজকে একটু বেড়ে গিয়েছে কি না!
এগুলো আসলেই বড় ব্যাপার নয়, কিন্তু সব কিছুর সঙ্গে মিলিয়ে দেখলে এবং মঞ্জুর সামান্য প্রতিবাদ (হোক তা ভূল) ছাড় না পাওয়ায় এবং তারপরে আমাকে নিয়ে যা হলো, তার পরে এগুলো আত্মপক্ষ সমর্থনে নয়, আমাদের কোথায় কীভাবে ত্রুটি হয়ে যায়, তা ধরিয়ে দেয়ার বাধ্যতা।
যেভাবে বলতে এসেছিলাম, সেভাবে বলা হলো না, কিছুটা তর্ক হয়ে গেল। সচলে আমি তুমুল বিতর্ক করতে রাজি আছি, কিন্তু এখানে কারো সঙ্গে যুদ্ধ করা আমার পক্ষে সম্ভব না, এ আমি বুঝে গেছি। আমার কলমও তা পারবে না। কারণ কৃতজ্ঞতা, কারণ ভালবাসা। কারণ একটি অভিসারের মধুর স্মৃতি। তাতে অরূপ ও হিমুর মতো প্রতিভাবান তরুণদের প্রতি ভালো লাগার রেশ থেকেই যাবে। আমি ওদের রুদ্র মূর্তির প্রতিক্রিয়া করলাম, ওদের সদয় মনের প্রতি প্রণতি জানালাম। বর্তমান একদিন সেই ভবিষ্যতে পোঁছাবে, তাইরেসিয়াসের মতো তাই-ই ভাবতে চাইছি। আর অর্জুনের মতো করে বলবার সাধ হচ্ছে, জয় নয় অভীষ্ট চাহিয়াছি। সেই অভীষ্টের নাম মুক্তপ্রাণ সচলায়তন।
সচলের চিরবন্ধু,
ফারুক ওয়াসিফ
প্রিয় হিমু - 'লেখক হিমু'র প্রতি যে শ্রদ্ধা ছিলো, আপনার এই বক্তব্য পড়ে 'ব্যক্তি হিমু'ও তাতে অন্তর্গত হলো! এটাকে দয়া করে নিছক স্তুতিবাক্য হিসেবে নেবেন না - একদম মন থেকেই বলছি।
সচলায়তন আমার একটা বিশ্রাম নেয়ার জায়গা, একটা বন্ধু পাবার জায়গা। এতগুলো সমমানসিকতার মানুষ একজায়গায় সহজে কি আর মেলে?!
যে দূরদৃষ্টি, প্রগতিশীল চিন্তা, সময় আর পরিশ্রম দিয়ে আপনারা কয়েকজন এটা গড়ে তুলেছেন - তাদের জন্য সবসময় আমার কৃতজ্ঞতা এবং অভিনন্দন থাকবে!!
ধন্যবাদ - অশেষ!
আমরা যারা জানি এধরনের একটা সাইট তৈরী করতে আর পরিচালনা করতে কত ম্যান-আওয়ার দিতে হয় তারা আপনাদের ভার বুঝতে পারে। কিন্তু অধিকাংশ পাঠক-লেখকের পক্ষে সেটা অনুধাবন করাও সম্ভব নয়। এই সত্যটুকু মেনে নিয়েই আপনাদের সচল চালনা করতে হবে, চালু রাখতে হবে।
আর তাই আমি অনুরোধ করছি যুক্তি পাল্টা যুক্তি আপনারা যতই দেন না কেন এর সমাপ্তি হবে তখনই যখন একজন ক্ষ্যান্ত হবে। লিখে আর যাই হোক একজন মানুষের মনের অবস্থার প্রকৃত প্রকাশ সম্ভব নয়। সেজন্যই ইমোটিকনের জন্ম হয়েছে। সেটাও কি ভাব প্রকাশে শতভাগ সক্ষম? কখোনোই না।
ফারুক ভাই মনে হচ্ছে বেশ অভিমান করেছেন। আপনার লেখায় তো সবসময় ভীষণ যুক্তি কাজ করে। অভিমান করে বিদায় নেয়াটা একদম মানা যায়না। আপনার আর সুবিনয় মুস্তফির সেই পোস্টটাতে মন্তব্যের যে যুদ্ধ দেখেছি সেটাকে কখোনই আমার বিবাদ মনে হয়নি। আমার কাছে তা মনে হয়েছে খুবই সুস্থ একটি বিতর্কের মত। অথচ আপনি বা অনেকেই হয়তো সেটাকে তেমনভাবে দেখেননি। তার অর্থ হলো একটা লেখা কে কিভাবে গ্রহণ করলো সেটা পাঠকের কাছে গুরুত্বপূর্ণ, লেখক কি মনে করে লিখেছে সেটা লেখকের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। অন্তত আমার তাই মনে হয়।
শেষ কথা হলো সবাই বুঝলাম। শুধু দুইটা বিষয় মানতে পারছিনা:
১। ফারুক ওয়াসিফের চলে যাওয়া
২। হিমুর মনে সচলায়তন বন্ধ করে দেয়ার ভাবনার উদয় হওয়া।
সচলায়তনে শুধু সময় কাটাতেই আসি না, এখানে আসলে অনেক নতুন কিছু শেখাও হয়। আর তাই আপনাদের দুজনের প্রতি দাবি: দুই জনই উপরের দুইটা পয়েন্ট ভুলে যান। তার পর যা খুশি বলেন, লেখেন, মন্তব্য করেন, সুস্থ বিতর্ক করেন-- সবাই তাতে খুশী।
ফারুক ভাই তো লেখার শুরুতেই বলেছেন
প্রথমবারেরটা হারিয়ে গেল কোথায়। আবার দিলাম ভুলভালসহ।
আর হিমুকে সচলায়তন বন্ধ করতে দিচ্ছে কে?
ভালো লাগছে না এইসব আর। খরগোশ হয়ে গর্তে মাথা ঢুকিয়ে বসে থাকতে ইচ্ছে করছে।
অনেকদিন আগে শোনা এক শ্রদ্ধেয়ের বাণী মনে পড়ছে - তুমি যদি মনে করো, তুমি পার্ফেক্ট, আমি নিশ্চিত তুমি মিথ্যাবাদী।
মডারেটরেরা ঈশ্বর নন, আমি নিজে পার্ফেক্ট নই। এইটুকুই আমার উপলব্ধি।
এক ঘণ্টা ধরে ভাবছিলাম কী বুঝলাম আর কমেন্ট কী করব
তারপর বুঝলাম ভুল বোঝাবুঝি (হয়তো) কিছুটা হয়েছে কিন্তু সেটা বেশ ধারালো মিসআন্ডারস্ট্যান্ডিং
যা কাটে
যা ঘা করে দেয়
আর সব শেষে মনে হলো এখনও সময় আছে ভুলবোঝাবুঝিগুলোকে বোঝাশোনায় নিয়ে আসার
০২
মডারেটরদের কাছে কি অনুরোধ করতে পারি যে যেসকল কমেন্ট থেকে ভুল বোঝাবুঝিগুলো তৈরি হয়েছে (যেগুলো রেফারেন্স হিসেবে এসছে) সেগুলো কি মুছে ফেলা যায়?
০৩
ফারুক ওয়াসিফ
থাকেন
লেখেন
যাবার দরকার নেই
০৪
মনজুরাউল ভাইর ক্ষোভটা পরিষ্কার সদস্যপদ নিয়ে (হয়তো বা ভুলবুঝাবুঝিও)
সদস্যপদ যদি দান করা যেত তাহলে আমার ১১ মাস বয়েসী সদস্যপদটা আমি তাকে দিয়ে দিতাম
আমি লিখতাম অতিথি হয়ে
আমি কারো পক্ষে বিপক্ষে কিছু বলছি না।
কিন্তু ব্যক্তিগত ইমেইল, মেইলিং-লিস্টের কথা, এখানে তুলে দেয়া, রেফারেন্স দেয়া মানতে পারছি না। এটা বাজে কাজ।
বেশ কিছুদিন থেকে নানা কারণে ব্লগে অনিয়মিত ছিলাম। এতকিছু ঘটে গেছে জানতামই না। আজ তা জেনে মনটাই খারাপ হয়ে গেল।
মনে পড়ছে, ভাইবোনে আমরা কত তর্কবিতর্ক/ঝগড়াঝাটিই না করেছি, কিন্তু কেউ কি কাউকে ছেড়ে গেছি, নাকি যাওয়া যায়?
................................................................
তোমার হাতে রয়েছি যেটুকু আমি, আমার পকেটে আমি আছি যতটা, একদিন মনে হবে এটুকুই আমি, বাকি কিছু আমি নই আমার করুণ ছায়া
... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী
রেস্ট্রিক্টেড কমেন্টঃ
পরিশিষ্টঃ
মনে হয় সচল ইমার্জেন্সি গ্রুপের ঐ মেসেজটিকে আপনি ভুল বুঝেছেন। শুধু সচলায়তন নয়, আপনারও ঘাড়ে বন্দুক রেখে গুলি ফোটানোর চেষ্টার ব্যাপার মাথায় রেখে বলা হয়েছিল সে'কথা।
সেই সময়টায় আমিও সরাসরি প্রতিবাদ, ইত্যাদির পক্ষপাতী ছিলাম। সচলায়তন কর্তৃপক্ষ সেটা না করার কারণ সেই গ্রুপেরই ইমেইলে লেখা ছিল। এক এবং একমাত্র চিন্তা ছিল বাংলাদেশে অবস্থানরত ব্লগারদের নিরাপত্তার। সেই চিন্তা থেকেই যোগাযোগে সাবধান হবার কথা হয়েছিল, ব্লগারদের লেখার মেজাজে সংযত হতে বলা হয়েছিল।
সে-সময় আমারও ভাল লাগেনি সেটি। মডুদের জানিয়েছিলামও সেটা। আজকে বুঝি যে সিদ্ধান্তটা সঠিক ছিল, সেটায় দায়িত্ববোধের পরিচয় ছিল।
সবশেষে, এতজন যখন বলছেন, হয়তো সচলায়তনের মডুদেরও ভেবে দেখা উচিত কেন তাঁদের কথাগুলো ভুল ভাবে নিচ্ছেন সবাই।
আজ এই প্রথমবারের মতো বিবেচনা করতে ইচ্ছে করছে, সচলায়তন বন্ধ করে দিলে কেমন হয়।
এ কদিন ধরে ঘুরেফিরে শুধু দুতিনটি পোষ্ট দেখছি আর প্রার্থনা করছি এমন একটি পোষ্ট বা কিছু মন্তব্য যা ম্যাজিকের মতো সারিয়ে দেবে সব রাগ অনুযোগ কিংবা অভিমান । ভালোবাসার আলতো স্পর্শে শুষে নেবে সব কষ্ট। কিন্তু আমার আর সব প্রার্থনার মতো এটাও পূরণ না হবার সম্ভাবনা সমূহ । তাই নিয়মিত পাঠক হবার অধিকারে মাউসের শরনাপন্ন হলাম ।
নিয়মিত পাঠক হিসাবে আমার কিছু বলার আছে - সচলায়তন আমার কাছে খুব সুন্দর সাজানো গোছানো বাগানের মত যেখানে আমি বা আমরা প্রাণভরে নিশ্বাস নেই । তর্ক বিতর্ক বাদানুবাদ গুলো কেয়ারী করা ঝোপ এর মতো ফুলের বাগান আগলে আছে সযত্নে । ওগুলো বাগান আগলে আছে বলেই ফ্লাওয়ার বেডগুলোকে আমরা আলাদা করে দেখতে পাই এপ্রিশিয়েট করি। তাই তর্ক বিতর্ক বাদানুবাদ নিয়ে আমি আদৌ চিন্তিত নই । চিন্তিত হঠাৎ করে এই সুন্দর সাজানো বাগানটার কিছু ফ্লাওয়ার বেড সিজনাল ফুলের মত হারিয়ে যাবার আশংকায় । তাই প্রিয় ফারুক ভাই ও মনজুরাউল ভাই ফিরে আসুন নিজের আঙ্গিনায় ।
শেষে প্রিয় হিমুর উদ্দেশে একটাই কথা ভূলেও সচল বন্ধকরার চিন্তা মাথায় আনবেন না । নাহলে আমি কিন্তু কাসেলে গিয়ে কামড়ে আসবো ।আর আমি কিন্তু মোটেও যত্ন করে কামড়াই না । বিশ্বাস না হলে প্রমান দিতে নমুনা হাজির করতে রাজী আর লন্ডন থেকে কাসেল খুব একটা দুর নয় ॥ সবাই ভালো থেকে আমাদের ভালো রাখুন।
শুভকামনায়
তানিয়া
মুজিব ভাই বলেছেন...মনে পড়ছে, ভাইবোনে আমরা কত তর্কবিতর্ক/ঝগড়াঝাটিই না করেছি, কিন্তু কেউ কি কাউকে ছেড়ে গেছি, নাকি যাওয়া যায়?
এইটাই কথা ... আসলেই কি যায়????
--------------------------------------------------------
... বাড়িতে বউ ছেলেমেয়ের গালি খাবেন, 'কীসের মুক্তিযোদ্ধা তুমি, কী দিয়েছ আমাদের'? তিনি তখন আবারো বাড়ির বাইরে যাবেন, আবারো কান পাতবেন, মা জননী কি ডাক দিল?
---------------------------------------------------------------------------
কারও শেষ হয় নির্বাসনের জীবন । কারও হয় না । আমি কিন্তু পুষে রাখি দুঃসহ দেশহীনতা । মাঝে মাঝে শুধু কষ্টের কথা গুলো জড়ো করে কাউকে শোনাই, ভূমিকা ছাড়াই -- তসলিমা নাসরিন
(এক) ইশতিয়াক রউফের মন্তব্যের সারমর্মের সাথে তাল মেলালাম। ফারুক ভাই বিবেচনা করবেন আশা করি।
(দুই) "সচল ইমার্জেন্সি গ্রুপ"-এর যে মেসেজটির কথা বলা হয়েছে তার ব্যাখ্যা হিমু ভাইয়ের মন্তব্যে আছে। তবে যতো যাই হোক - গ্রুপ-এর ব্যক্তিগত আলোচনা এখানে তুলে আনাটা খুব বাজে লাগলো। নিজেদের মধ্যে সেখানে আমরা ইচ্ছে মতো আলাপ করেছি। ব্যক্তিগত আলাপে আমরা অনেক কিছুই বলি, অনেক কঠিন কথা, অনেক অভিযোগ, সেগুলো সবার সামনে প্রকাশের জন্য নয়।
(তিন) ক্লান্ত লাগছে এখন এসব দেখে।
প্রিয় ফারুক ভাই,
ব্যাপারটা এখন এমন যে, কথা বললে কথা বাড়তেই থাকবে। মাঝখানে যখন "ভুল বোঝাবুঝি" এসে দাঁড়ায়, তখন কিন্তু নিজের জায়গায় সবাইই সঠিক থাকে।
তারচেয়ে বরং, সব ভুলে যাওয়া যায় না? আমাদের সবার বক্তব্যের বটমলাইনই হলো সচলায়তনের প্রতি ভালবাসা। যেমন করে আমরা আমাদের বাড়িটাকে ভালবাসি, বা দেশটাকে।
তো যাবতীয় সুর যখন একসাথে বাজে, দুয়েকটা বেসুরো শব্দকে মুছে দিলে কি হয়? অসম্ভবতো নয়, মোছা যায়ই তো।
এইসব তাহলে বাদ দেয়া যাক। ভুলে যাওয়া যাক। আমাদের সব আনন্দ, ব্যথা, ঝগড়া ঝাটি, সব নিয়েই এখানে থাকতে চাই আমরা। চলে যাওয়ার প্রশ্ন তবে কেন?
থেকে যান, প্লিজ। মনের মতন সঙ্গী পাওয়া বেশ দুরূহ, পেয়েও আমরা তা হারাতে চাই না।
-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
ফারুক ভাই, ব্যস্ত থাকার কারণে বেশ অনেকদিন প্রায় কোন পোস্টই পড়া হয় না। আপনাদের মধ্যে কি হয়েছে আমি জানি না। এমনকি এই পোস্টও পুরোটা পড়িনি। মন্তব্যও সব পড়িনি।
সুন্দর একটা পরিবেশ দেখে সচলে এসেছিলাম, সুন্দর পরিবেশেই সবাই থাকব।
কে কি বলেছে, কে ঠিক বলেছে, কে ভুল বলেছে আমি জানি না। প্লিজ, আপনি আমাদের ছেড়ে যাবেন না।
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে
আরেক জায়গায় বলেছি---এইখানে আবার বলছি---যাবার কথা কইলে কিন্তুক মাইর ----হু হু----
ফারুক ভাই, বুইঝেন কিন্তু----
Khub druto koyekti observation ditchhi.
1. Keu jodi sochol chhere dey tahole duto kkhoti - nijer o pathoker. Tobe prothomer khoti-i beshi.
2. Mone rakha bhalo, socholer lekhok/ pathok/ moderator 'homogenous' non. Ekek jon ekek bhabe response korben etai swabhabik.
3. Jini heterogenous response-er modhye theke dindin aro beshi khurodhar hoye uthben tini-i shottikarer protishrutisheel o dayittoban, ebong shesh bichare nijer o taar pathokder proti shubicharak.
ক্লান্ত
বিব্রত
বিষন্নবোধ করছি।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
জটিল !
সচলে যারা ব্লগিং করেন, সবাই লেখক। মডারেটররাও। মান বিচারে হয়তো তারতম্য আছে। লেখকের সংবেদনশীলতাকে আমি শ্রদ্ধা করি। এটা না থাকলে তিনি প্রকৃতই লেখক হবেন কী করে ?
তবে হাঁ, একটা বিষয়ে বোধ করি আমরা সবাই একমত হবো যে, এখানে আমরা সবাই রক্তমাংসের মানুষ। আমরা কেউ আবেগ, অভিমান,সংবেদনশীলতা ইত্যাদি থেকে মুক্ত নই। এবং এটাই সবচে' আশার কথা যে, আমরা কেউ এখনো যন্ত্র হয়ে যাই নি। হলেই বরং সমস্যা ছিলো। যন্ত্রের সাথে মানুষ সাময়িক অবস্থান করতে পারে, বাস করতে পারে না।
যেহেতু আমরা কেউ যন্ত্র হয়ে যাই নি, তাহলে মনে হয় আমরা সবাই এক্ষেত্রে আপাতত আর কোন যুক্তির ক্ষমতা যাচাইয়ে না গিয়ে একবাক্যে একে অন্যকে পারষ্পরিক 'সরি' শব্দটি ব্যবহার করতে পারি। সম্ভবত যন্ত্রই কেবল সরি শব্দ ব্যবহার করে না।
আমাদের অনুভব আর উপলব্ধিগুলোকে কি এই সরি শব্দটির ইতিবাচক দিকে ব্যবহারমুখী করার প্রস্তাব করতে পারি ?
এটা আমার কমেণ্টস নয়, সবার প্রতি বিনীত অনুরোধ। নজরুলের(?) সেই কথাটা কি দারুণ না, চাঁদে কলঙ্ক আছে বলেই চাঁদ এতো সুন্দর ! মানুষেরও কলঙ্কমুক্ত হওয়া ঠিক না। তাহলে ফেরেশতা হয়ে যাবে। আমার মনে হয় মানুষ মানুষের সাথে থাকতেই পছন্দ করে।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
মন্তব্য
সহস্র বর্ষের সখা সাধনার ধন।"
প্রিয় ফারুক ভাই,
ছোট্ট একটা নুড়ি যদি পাহাড়ের ঢাল দিয়ে গড়ায়, অনেক বড় শৈলপতন ঘটতে পারে বৈকি। তেমনটিই বোধ করছি আপনার এই পোস্টটি পড়ে।
এই ছিলো আমার ২৩ নং কমেন্ট
এখানে আপনি উপেক্ষার সুর খুঁজে পেলেন? এখানে ক্ষমতার প্রকাশ দেখলেন?
মনজু ভাইকে কোথায় কলহপ্রিয় বলা হয়েছে, অনুগ্রহ করে দেখান। তাঁর "মানসিক বিষফোঁড়া"র ব্যাখ্যা তাঁর পোস্টেই পাবেন। একজন উদ্বেগাকূল পিতা সন্তানের অসুস্থতা কাটিয়ে ওঠার পর এসে জমে থাকা সব ক্লান্তি আর টেনশন ঝেড়ে দিয়েছেন সচলের ওপর, কেন তাকে সচল করা হলো না অন্য তিনজনের সাথে বা তাদের আগে। এই অভিমানে তিনি বিদায় নিচ্ছেন। এতেই আপনার আপত্তি। আপনি "মানসিক বিষফোঁড়া" কথাটিতে অনড় আপত্তি জানান, অথচ এই একই আপনি পোস্ট লেখেন, "পুঁজির মূত্রস্রোতে মানবতার অলীক ফুল।"
আমার মনে হয় ব্যাপারটি উল্টো। আপনি ক্ষুব্ধ, সেই ক্ষোভ প্রকাশের একটা সুযোগ খুঁজছিলেন, তাই আমার সুর আর স্বরকে উপলক্ষ্য করে মনজু ভাইয়ের পোস্টে প্রসঙ্গ থেকে সরে গিয়ে নিজের ক্ষোভ ঝাড়া শুরু করলেন। কী ছিলো শুরু থেকে আমার সুর আর স্বরে? আসুন দেখি আবার।
মন্তব্য ৫:
মন্তব্য ১৯.৩.১.১
মন্তব্য ২০.১
মন্তব্য ২১.১
এর পরপরই আপনি এলেন। আপনার দীর্ঘ কমেন্টের একটি অংশ উদ্ধৃত করি।
এখানে আপনার অনুচ্চারিত দাবি, কেন মডারেটরের কমেন্ট প্রথম মন্তব্য হবে না। আপনি কি ব্লগকাঠামোর ফিজিক্যাল লিমিটেশনের সাথে পরিচিত নন? একজন মডারেটর কি প্রতিটি পোস্ট পড়ে প্রথমে প্রতিক্রিয়া জানাতে পারেন? এটা কি সম্ভব?
আপনি প্রশ্ন করছেন,
কী বলবো এ কথার উত্তরে? আপনার কথা কি ফিরিয়ে দেবো আপনাকে?
আমি এর উত্তরে বলেছি,
আপনি বলছেন,
উত্তরে আমি বলছি,
কোন সদুত্তর পাইনি। লক্ষ্য করুন, আপনি এসে আপনার ধারণাটি প্রকাশ করছেন যে, মডারেশনের পক্ষ থেকে ভাবা হচ্ছে, মনজু ভাই অনুযোগ জানিয়ে অন্যায় করেছেন। এমনটি আপনার মনে হবার কারণ কি আমি জানি না। আপনি ব্যাখ্যাও করেননি। তবে আবারও সম্ভবত সুর আর স্বরের ওপর দোষ দেবেন। আমি বিনয়ের সাথে অনুরোধ জানাই, দয়া করে একটা উদাহরণ দেখান, যেখানে আমি আগ বাড়িয়ে গিয়ে সুর ও স্বরের সাহায্য কোন সচলকে আক্রমণ করেছি। আমি বরাবরই আক্রান্ত হলে কথা বলি। মনজু ভাই তীব্রভাবে তাঁর আবেগ প্রকাশ করেছেন, তিনজন সদ্যসচলের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর সুর আর স্বর নিয়ে আপনি বলেছেন, তাঁর লেখায় নাকি যুক্তি আর আবেগের ভারসাম্য অটুট ছিলো। এর উত্তরে কী বলবো, বলুন?
আপনাকে প্রশ্ন করেছিলাম,
উত্তর আসেনি।
আপনি বলছেন,
আমি বুঝতে পারছি, আপনি কী বলতে চাইছেন। মডারেটরের আহত হওয়াটাই স্বাভাবিক, কারণ তাঁকে থাকতে হবে আক্রমণের মুখে, অভিযোগের মুখে। কিন্তু কোন সচল আহত হতে পারবেন না। আমি সম্মত এই প্রস্তাবে। এর উদাহরণ আপনি পাবেন, যখন সচলদের মধ্যে তীব্র কোন বিবাদে মডারেটররা কাজ, ঘুম এবং আহার ফেলে এসে দাঁড়িয়ে তা মিটমাট করার চেষ্টা করছেন। সচলে সদস্যর সংখ্যা পৌনে দু'শো, নিয়মিত সচলদের কাছ থেকে একের পর এক অনুরোধ, জিজ্ঞাসা, অনুযোগ আসতেই থাকে। এমন দিনের সংখ্যা কম নয়, যেদিন রাত জেগে কাটিয়েছি সদস্যদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি সমাধানের জন্যে। বিনিময়ে যে তিরস্কার, ভর্ৎসনা, কটূবাক্য পেয়েছি কয়েকজনের কাছ থেকে, তা নিয়ে কখনও সচলে পোস্ট বা মন্তব্য দিই না। কারো ব্যক্তিগত মেসেজ থেকেও কোট করে সেই ক্ষোভ ঝাড়ার চেষ্টা করি না। তারপরও আপনি একই নিক্তিতে চাপাবেন না আমাদের। এই যে মানসিক আর শারীরিক ক্লান্তিটুকুর ভেতর দিয়ে আমরা চলি, কেবল সচলায়তন সুস্থ থাকবে এই আশায়, এর মূল্য কি মেলে, যখন আপনি বলেন, একই নিক্তিতে মাপা যায় না? আমরা তো সুপারম্যান নই, মানুষই তো।
খুব গর্ব নিয়ে বলি, আমাদের এই কষ্টের ফল আমরা পেয়েছি। সচলায়তনের দিকে তাকিয়ে দেখুন। এর নেপথ্যে কি আমাদের এই পরিশ্রমটুকুর কোন ভূমিকা নেই, কোন মূল্য নেই?
আপনি বলছেন,
আপনি অভিযুক্ত করছেন আপনার সহসচলদের। তাঁদের কয়েকজন আপনার চেয়ে বেশি সুবিধাভোগী। এটি কতটুকু সুবিবেচনার পরিচয় দেয়, বলুন?
আমি বলছি,
এই পোস্টে আপনি এই কলহপ্রিয় শব্দটির সাথে যোগরেখা টেনেছেন মনজু ভাইয়ের সাথে। আমার মন্তব্যের কোথাও কি মনজু ভাইয়ের কথা বলা হয়েছে? যদিও তিনি বহুবার তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন সচলদের, বিভিন্ন পোস্টে তাঁর মন্তব্যগুলি দ্রষ্টব্য। হুমায়ূনভক্তদের খাটো করতে গিয়ে তিনি যে ভাষা ব্যবহার করেছেন একবার, তা দেখবেন দয়া করে। দয়া করে তাঁর সাথে আমরা কী ভাষায় কেমন আচরণ করেছি, তা-ও দেখবেন। তুলনা করবেন।
এর পর আপনি যা করলেন, একটি ব্যক্তিগত মেসেজ তুলে দিয়ে নিজের ক্ষোভের কারণ ব্যাখ্যা শুরু করলেন। আজও আপনি সচল ইমার্জেন্সির একটি মেসেজ তুলে দিয়েছেন পাঠকের জন্যে। আপনার সাথে ইমেইল চালাচালির সময় আপনি নিজে লেখেন সেইসব মেইল মুছে দিতে। বিশ্বস্ততার সাথে তা করেছি। অথচ আপনি নিজে ব্যক্তিগত মেসেজ প্রকাশ করতে বিন্দুমাত্র কুণ্ঠা বোধ করেন না। এ প্রসঙ্গে কিছু বলবেন, আপনার বক্তব্য শোনা প্রয়োজন।
সবশেষে বলেছি,
আপনি উদ্ধৃতও করেছেন এটি। কিন্তু এড়িয়ে গেছেন নিচে সুবিনয়ের তিরস্কারের জবাবে আমার উত্তর।
আপনি আরও বলছেন,
মনজু ভাইয়ের পক্ষ থেকে কি আপত্তি জানানো হয়েছিলো মডারেশনের কাছে? হয়নি। "অ্যান্টিছড়ার চরম মশকরা" নিয়ে কি মনজু ভাই বা আপনি সংশ্লিষ্ট লেখকের কাছে প্রতিবাদ করেছিলেন?
সচলে দীর্ঘদিন মূলধারায় প্রকাশিত লেখাকেও প্রকাশে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। সম্ভবত সেই সময়ে আপনার লেখাটিকে সরানো হয়েছে। খুব বেশিদিন হয়নি, সে ধরনের লেখাকে আমরা প্রকাশ করছি। আপনি নিজের লেখার প্রতি "অবিচার" এর কথা উল্লেখ করেছেন, কিন্তু টাইমফ্রেমের কথা ভাবেননি। দু'টি ঘটনা কি একই সময়ে ঘটেছিলো?
আপনি বলছেন,
মনজু ভাইয়ের প্রতিবাদ সামান্য কি না সে বিষয়ে মতভেদ থাকতে পারে, কিন্তু "ছাড় না পাওয়া"র ব্যাপারে আপনি কী বোঝাতে চাইলেন, বুঝতে পারিনি। প্রতিবাদের উত্তরে যদি মডারেশনের পক্ষ থেকে বক্তব্য না আসতো, তাহলেই কি ঠিক হতো? আমরা চুপ থাকলে আপনি প্রশ্ন তুলতেন মডারেশন চুপ কেন।
পরিশেষে অনুরোধ, আপনি নিজের ত্রুটির কথাও ভাবুন। আমরা আমাদের ত্রুটি সংশোধনের জন্যে সর্বদা সচেষ্ট আছি। কিন্তু যেভাবে আমরা আক্রান্ত হই সামান্য কারণে, তা চলতে থাকলে অযথা তিক্তবাক্যবিনিময় বাড়ে।
গভীর বিষাদ নিয়ে অনুভব করছি, সচলায়তনের পেছনে আমাদের কষ্টটুকুর কোন মূল্য আপনি দিলেন না। সচলায়তন এমনি এমনি হয়নি, হাওয়া ফুঁড়ে বেরোয়নি, আমাদের ঘাম আর অশ্রু গায়ে মেখে বড় হয়েছে। একে অস্বীকার করে আমাদের গালি দেয়া সহজ, কষ্টটুকু উপলব্ধি করা সহজ নয়। মাঝে মাঝে অনুশোচনা হয়, কেন একটা নিরিবিলি লেখার জায়গা গড়তে গেলাম আমরা? থাকতাম কাদায় গড়াগড়ি দিয়ে, খিস্তি আর জামাতি প্রোপাগান্ডার সাথে মাখামাখি হয়ে। অভুক্ত অবস্থায় রাত জেগে গালিও খেতে হতো না, এই বাড়তি উদ্বেগের মুখোমুখিও হতে হতো না। ক্যারিয়ারের পেছনে মন দিতাম, ঝাঁকের কই ঝাঁকে মিশে যেতাম।
আজ এই প্রথমবারের মতো বিবেচনা করতে ইচ্ছে করছে, সচলায়তন বন্ধ করে দিলে কেমন হয়।
ভালো থাকুন।
হাঁটুপানির জলদস্যু