নোবলেজয়ী পল ক্রুগম্যানের বই 'এক উদারনৈতিকের বিবেক': যে আমেরিকা আমরা চেয়েছিলাম

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি
লিখেছেন ফারুক ওয়াসিফ (তারিখ: শুক্র, ১৭/১০/২০০৮ - ১:১৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমি জন্মেছি ১৯৫৩ সালে। আমার প্রজন্মের আর সবার মতো আমিও যে আমেরিকায় বেড়ে উঠেছি, সেই আমেরিকাকেই মেনে নিয়েছি। বাস্তবে আমার প্রজন্মের আরও অনেকের মতো আমাদের সমাজের গভীর অসাম্যের বিরুদ্ধে, কম্বোডিয়ায় বোমাবর্ষণের বিরুদ্ধে আমিও মিছিলে নেমেছি। উদারনৈতিক রাজনৈতিক প্রার্থীর সমর্থনে ঘুরেছি দোরে দোরে। আমাদের জাতীয় ইতিহাসে সেটা ছিল এক অপূর্ব সময়। আজ যখন যৌবনের সেই সময়টার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিবেশের দিকে ফিরে তাকাই, তখন বুঝতে পাই, আমরা 'স্বর্গহারা' হয়েছি।

বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী আমেরিকা সবকিছুর পরও ছিল এক মধ্যবিত্ত-সমাজ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যেভাবে লাফ দিয়ে মানুষের আয় বাড়ে, তাতে করে কোটি কোটি মানুষ_এদের মধ্যে আমার বাবা-মাও রয়েছেন_ রাতারাতি শহুরে বস্তিজীবন ও গ্রামীণ দারিদ্র্য থেকে উঠে আসে। সেই প্রথম তারা বাড়ির মালিক হয় এবং অভূতপূর্ব স্বাচ্ছন্দ্যের জীবন পায়। বিপরীতে ধনীরা কমজোরি হয়ে যায়। তারা ছিল সংখ্যায় কম এবং বিকাশমান মধ্যবিত্তের তুলনায় ততটা বিত্তবান তারা ছিল না। গরিবরাও সংখ্যায় বেশি ছিল না। কিন্তু তখনো তারা ছিল বিচ্ছিন্ন সংখ্যালঘু। সুতরাং সে সময় গড়পড়তা আমেরিকানদের আর্থিক অবস্থার মধ্যে খুব বেশি ফারাক ছিল না। আমেরিকার বেশির ভাগ মানুষ দৃষ্টিগোচরভাবে একই ধরনের এবং বিশিষ্ট রকম শোভনজীবন যাপন করতে পারত।

অর্থনীতির এই ভারসাম্যের সঙ্গে মানানসইভাবে ছিল মার্জিত রাজনীতি। আমার যৌবনের পুরোটা জুড়ে না হলেও বড় অংশ জুড়েই ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের মধ্যে পররাষ্ট্রনীতি ও বেশ কিছু অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সমঝোতা বিরাজ করেছিল। এবং আসলেই অর্থবহ হয়ে উঠেছিল দ্বিদলীয় ব্যবস্থা। ভিয়েতনাম নিয়ে গোলযোগ এবং সাদা-কালো বৈষম্য সত্ত্বেও, নিক্সন ও তাঁর সাঙ্গপাঙ্গদের কুকীর্তির পরও আমেরিকা প্রধানত পরিচালিত হয়েছিল দুই দলের লোকদের একটি জোটের দ্বারা। তাঁরা কিছু মৌলিক মূল্যবোধের বিষয়ে একমত হতে পেরেছিলেন।

আমেরিকার ইতিহাসের সঙ্গে পরিচিত সবাই জানে, আমেরিকা সর্বদা এমনটা ছিল না। একদা আমাদের চিহ্নিত করা হতো বিরাট অর্থনৈতিক অসাম্য দিয়ে। তিক্ত দলীয় বিভাজন দেশটাকে বিভক্ত করে রেখেছিল। কিন্তু যুদ্ধের পরের বছরগুলোতে মনে হচ্ছিল, মার্কিন সমাজের চরম বৈষম্য ও সংঘাতময় রাজনীতি যেন এক অতীতের ব্যাপার, যেন তা আমাদের বেড়ে ওঠার সময়ের বৈশিষ্ট্য। যেন তা শিল্পায়নের প্রাথমিক দশার কঠিন সময়ের ঘটনা, বর্তমানে তা বিলীয়মান। এখন আমেরিকা অনেক পরিণত। একটি শক্তিশালী মধ্যবিত্ত শ্রেণীসমেত তুলনামূলক সমতাভিত্তিক সমাজ এবং একটি ভারসাম্যপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যবস্থা; আমরা ভেবেছিলাম এটাই হবে আমেরিকার স্বাভাবিক হাল।

তা হলেও, আশির দশকে ক্রমশ পরিষ্কার হতে থাকল, মধ্যবিত্তকেন্দ্রিক মধ্যপন্থী রাজনীতির পথে চলাই আমেরিকার শেষ কথা নয়। অর্থনীতিবিদেরা দেখাতে থাকেন, কীভাবে তীব্র গতিতে বৈষম্য বাড়ছে। কীভাবে যখন বেশির ভাগ মার্কিনির উন্নতি থমকে আছে, তখনো অল্প কিছু মানুষ ধাই ধাই করে বিত্তশালী হয়ে উঠছে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরাও দেখাতে থাকলেন যে বৈষম্যের সঙ্গে তাল দিয়ে বাড়ছে রাজনৈতিক মেরুকরণ। এ অবস্থায় 'ডেমোক্র্যাট' আর 'রিপাবলিকান' হয়ে উঠল 'উদারনৈতিক' ও 'রক্ষণশীলতা'র সমার্থক। সেই ধারা আজও চলমান। আয়বৈষম্য এখন বিশের দশকের পর্যায়ে উঠেছে। রাজনৈতিক মেরুকরণ ছাপিয়ে গেছে আগের যেকোনো অবস্থাকে। এ থেকে আধুনিক আমেরিকার ইতিহাসে দুটি বৃত্তচাপ বা বাঁকের দেখা মেলে_চরম বৈষম্য থেকে তুলনামূলক কম বৈষম্যে গিয়ে আবার আগের অবস্থায় ফিরে যাওয়ার অর্থনেতিক বৃত্তচাপ, এবং চরম মেরুকরণ থেকে দ্বিদলীয় ব্যবস্থায় গিয়ে আবার আগের অবস্থায় প্রত্যাবর্তনের রাজনৈতিক বৃত্তচাপ। এ দুটি ঘটনা প্রায় সমান্তরালেই ঘটে। অর্থাত যখন দ্বিদলীয় ব্যবস্থা থাকে তখন অর্থনৈতিক সমতার স্বর্ণযুগও এগিয়ে আসে। আবার রাজনৈতিক মেরুকরণ বৃদ্ধি অর্থনৈতিক বৈষম্যকেও বাড়িয়ে তোলে। এটা ঘটে ধনীদের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে।

৪০ বছর আগে আমেরিকায় ধনীদের হাতে এত ভূসম্পত্তি ও অর্থ ছিল না। সেই আমলে তারা এত ধনী ছিল না যে, কর মওকুফের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে টাকা দিয়ে প্রচারণা ও তদবির করিয়ে নিতে পারে। এখন তারা তা পারে এবং বুশ প্রশাসন এসে তাদের ভূসম্পত্তির করসহ কয়েক রকমের কর মওকুফ করে দেয়। গোটা সত্তরের দশক জুড়ে গোঁড়া ডানপন্থীরা আগের কয়েক দশকে কমা যেটুকু বৈষম্য কমেছিল তা ব্যর্থ করে দিতে মরিয়া হয়। তাদের মদদপুষ্ট ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরে গড়ে ওঠা সমতাকামী প্রতিষ্ঠানগুলোকে আঘাত করতে থাকে। অতি ডানদের উত্থানের সুবাদে ব্যবসায়ীরা শ্রমিক আন্দোলনের ওপর সর্বাত্মক আক্রমণ চালিয়ে শ্রমিকদের দরকষাকষির ক্ষমতাকে এক ধাপে অনেকটা কমিয়ে ফেলে। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নির্বাহীরা রেহাই পায় সব রাজনৈতিক ও সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে। উচ্চ আয়ের লোকদের ওপর ধার্য করের বেলাতেও বিরাট আকারে কাটছাঁট করা হয়। এ ছাড়া আরও নানা পথে বিত্তবৈষম্য লাগামছাড়া হয়।

নতুন অর্থনৈতিক অসাম্য
কিন্তু রাজনীতি কি অর্থনীতিকে এত মারাত্মকভাবে পাল্টে ফেলতে পারে? শুনতে আজব লাগলেও উত্তর হচ্ছে: পারে। আমি চারটি প্রমাণ দেব।
প্রথমত, অর্থনীতিবিদেরা আমেরিকার মধ্যবিত্তদের গোড়া খুঁজতে গিয়ে বিস্ময়ের সঙ্গে দেখলেন যে যুদ্ধপূর্ব ধনিক-সমিতির (গিল্ড) যুগের বৈষম্য থেকে তুলনামূলক সমতার যুগে উত্তরণটি ক্রমবিকাশের পথে হয়নি এবং তা অর্থনীতির নিয়মেও ঘটেনি। সেখানে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপই ছিল প্রধান। রুজভেল্টের যুদ্ধকালীন প্রশাসন আয়-নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নিয়ে মধ্যশ্রেণীর বিকাশ সুগম করে। বিষয়টি খেয়াল করেন অর্থনৈতিক ইতিহাসবিদ ক্লডিয়া গোল্ডিন ও রবার্ট মার্গো। তাঁরা দেখান, ৩০ বছর ধরে আমেরিকায় এ অবস্থা টিকে ছিল। অর্থাৎ বিভিন্ন রকমের প্রতিষ্ঠান, বিধিবিধান ও রাজনৈতিক পরিবেশের প্রভাবেই সমতামূলক আয়-বণ্টন সম্ভব হয়েছিল। ১০১ জন অর্থনীতিবিদও যদি আমাদের বলতে চান যে বাজারের বিমূর্ত শক্তিই সবকিছু করে, তা সত্য নয়।

দ্বিতীয়ত, রাজনীতি ও অর্থনীতির পরিবর্তনের এই সময়টা ইঙ্গিত করে যে অর্থনীতি নয়, রাজনীতিই পরিবর্তনের হোতা। আশির দশক পর্যন্ত আমেরিকায় বিপুলাকারে বৈষম্য বাড়েনি। তা ঘটতে শুরু করে ১৯৮৩-৮৪ নাগাদ। ডানপন্থী রিপাবলিকান পার্টি ক্ষমতায় আসে সত্তরের দশকের মাঝামাঝি। এবং যে রক্ষণশীল আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে তা জয়ী হয় তারও আবির্ভাব সত্তরের দশকের গোড়ার দিকে। সুতরাং প্রমাণ হলো যে আগে রাজনীতি বদলেছে, পরে তাকে অনুসরণ করেছে অর্থনীতি।

তৃতীয়ত, বেশির ভাগ অর্থনীতিবিদ মনে করেন আমেরিকায় বৈষম্য বৃদ্ধির জন্য দায়ী প্রাযুক্তিক বিকাশ। ধরে নেওয়া হয়, উচ্চতর প্রযুক্তি উচ্চ প্রশিক্ষিত কর্মীর প্রয়োজন সৃষ্টি করায় কম শিক্ষিতেরা বেকার হয় বা তাদের মজুরি কমে যায়। কিন্তু পরিসংখ্যানের দিকে নিবিড় নজর দিলেই ধরা পড়ে যে বেশির ভাগ উচ্চশিতি মার্কিনিরই আয় তেমন বাড়েনি। বরং আয় বেড়েছে মুষ্টিমেয় এলিটদের, যারা জনগণের মাত্র ১ শতাংশ। সুতরাং বৈষম্য বাড়ার কাহিনীর মূলে প্রযুক্তি নেই, রয়েছে আগে বলা ওই সব প্রতিষ্ঠান ও বিধিবিধানের বিলোপ। আর তা করেছেন ডানপন্থী রাজনীতিবিদেরা।
চূড়ান্তভাবে, আন্তর্জাতিকভাবে মার্কিনি রাজনীতির ডানপন্থী মোড় নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে ওই সময়ের অন্য অগ্রসর দেশগুলোর প্রবণতার বিপরীতে। এ ব্যাপারে আমেরিকার মতো কাউকেই দেখা যায়নি। প্রাযুক্তিক পরিবর্তন ও বিশ্বায়ন নিচুতলার প্রত্যেককেই আক্রান্ত করেছে। মার্গারেট থ্যাচারের আমলে ব্রিটেনেও আয়বৈষম্য বাড়লেও তা মোটেই আমেরিকার মতো এত প্রকট নয়। যদি বাজারের অদৃশ্য হস্তই এটা ঘটাত তাহলে অন্য উন্নত দেশগুলোতেও তা ঘটত। অতএব, মূল দায় রাজনৈতিক পরিবর্তনের। তাহলে কীভাবে তা ঘটল?

আমেরিকায় বৈষম্যের রাজনীতি
জর্জ বুশ ও ডিক চেনি যখন আমেরিকাকে ৫০ বছর আগের সেই অবস্থায় পিছিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, যখন ন্যাশনাল রিভিউ পত্রিকার তরুণ সম্পাদক উইলিয়াম বার্কলে দক্ষিণের শ্বেতাঙ্গদের অগ্রাধিকার রক্ষার জন্য প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। বার্কলে মনে করতেন, 'শ্বেতাঙ্গরা বেশি অধিকারের দাবিদার, কারণ আপাতকালে তারাই উচ্চতর জাতি'। তিনি এমনকি স্পেনের ফ্যাসিস্ট নেতা জেনারেল ফ্রান্সিসকো ফ্রাঙ্কোকে 'সত্যিকারের জাতীয় বীর' বলে অভিষিক্ত করেন। ফ্রাঙ্কো চার্চ ও সম্পত্তির নামে নির্বাচিত সরকারকে উচ্ছেদ করে স্পেনে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিলেন। বার্কলে-দের ওই খুদে আন্দোলনটি 'নব্য-রক্ষণশীলতাবাদ' নামে পরিচিতি পেয়েছিল। আসলে এটা ছিল প্রেসিডেন্ট আইজেনহাওয়ার এবং অন্য রিপাবলিকান নেতাদের রুজভেল্টের 'নয়া বন্দোবস্তের' (নিউ ডিল) ধারাবাহিকতা রক্ষার বিরুদ্ধের আন্দোলন।

সেই 'নব্য-রক্ষণশীল আন্দোলন' আজ শক্তিশালী রাজনৈতিক ক্ষমতা হয়ে উঠেছে। এটা আসলে নানা ধরনের মানুষ ও প্রতিষ্ঠানের একটা যোগসাজশ। রাজনৈতিক বৃত্তের বাইরেও এর প্রভাব প্রসারিত। রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটিক দল তো বটেই, বিভিন্ন গণমাধ্যম, চিন্তাশালা (থিংক ট্যাংক), প্রকাশনা সংস্থাসহ বহুরকম প্রতিষ্ঠান এর সঙ্গে জড়িত। এত বিরাট এদের যোগাযোগ-জাল; যে কারও সারা জীবনের কাজবাজ এদের সঙ্গেই চলতে পারে। এবং এ জন্য তারা পুরস্কৃত হয়। কোনো উদারনৈতিক যুদ্ধে খারাপ করলে বা প্রেমিকাকে খুশি করার জন্য নীতির লঙ্ঘন ঘটালেও তার জন্য একটি ভালো চাকরি অপেক্ষা করবে; যেমনটা (কেলেঙ্কারির পরও) পল উলফোভিতস পেয়েছেন আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটে।

একসময় রিপাবলিকান দলের অনেকেই এই রক্ষণশীল আন্দোলনে জড়িত ছিলেন না, কিন্তু আজ কম লোকই এর বাইরে আছে। কেননা যারা তা করে না তাদের জন্য জীবনটা অনেক জটিল হয়ে ওঠে। কোনো সিনেটর যদি এদের বিরোধিতা করেন, তাহলে পরের বার নির্বাচিত হওয়া তাঁর জন্য প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠতে পারে।

এই রক্ষণশীল আন্দোলনের প্রধান রসদ হলো টাকা। এই টাকা জোগায় কতিপয় চরম ধনী ব্যক্তি ও কিছু করপোরেশন। এরাই বৈষম্য বৃদ্ধি ও অতিরিক্ত আয়ে কর মওকুফের সুবিধা নিয়ে অসীম ক্ষমতা অর্জন করেছে। এ আন্দোলনের অন্যতম নেতা গ্রোভার নরকুইস্ট একদা ঘোষণা করেছিলেন যে তিনি আমেরিকাকে টেডি রুজভেল্টের আগের সময়ে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চান, অর্থাত সেই বর্বর সুবিধাবাদের কালে।

এই আন্দোলন মৌলিকভাবে অগণতান্ত্রিক। কিন্তু তাদের ফ্রাঙ্কোর মতো ক্যু করতে হয়নি, তারা নির্বাচনের মাধ্যমেই যা করার করে আসছে। সে জন্য ভোটের সময় তারা অর্থনীতি ছাড়া আর সব নিয়ে কথা বলে। এবং তারা প্রমাণ করেছে, এভাবে নির্বাচনে জয়ী হওয়া সম্ভব। রোনাল্ড রিগ্যান এই পথের দিশারী। প্রথম দিকে তাঁর রাজনৈতিক সাফল্যের সূত্র নিহিত ছিল কমিউনিজমের ভয় দেখানো এবং সাংস্কৃতিক ও যৌন উত্তেজনা সৃষ্টির মধ্যে। তিনি তাঁর নির্বাচনী অভিযান শুরু করেন মিসিসিপি শহর থকে, যে শহরে তিনজন নাগরিক-অধিকার কর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল। আরও পরে আরেক রক্ষণশীল নিউট গ্রিংরিচ কংগ্রেসকে করায়ত্ত করতে পেরেছিলেন দক্ষিণাঞ্চলের শ্বেতাঙ্গদের সমর্থনের ঢলের জোরে। এবং দক্ষিণের রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটরা একযোগে তাঁর পক্ষে দাঁড়ায়। কার্যত তিনি নাগরিক-অধিকার আন্দোলনের বিরোধী শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যকামীদের কাজে লাগান। প্রধানত আমি বলতে চাই, আমেরিকা আজ যে চেহারা পেয়েছে তার প্রধান চালিকাশক্তি এই শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদ।

নতুন 'নয়া বন্দোবস্ত'
২০০৪ সালের নির্বাচনে জর্জ বুশ পুনর্নির্বাচিত হওয়ার পর আমার অনেক সাংবাদিক-সহকর্মী আমাকে বোঝাতে থাকেন যে বুশ প্রশাসন ও রক্ষণশীলতাবাদের সমালোচনা করে আমার আর সময় নষ্ট করা উচিত নয়। আমাকে বলা হয়, 'নির্বাচনই সবকিছুর ফয়সালা করে দিয়েছে।' ২০০২ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনে সন্ত্রাসবাদের ধুয়া তুলে রিপাবলিকানরা বিরাট বিজয় অর্জন করে। বুশ ভেবেছিলেন, তিনি মার্কিন সমাজে যুদ্ধকালীন মনস্তত্ত্বকে চিরস্থায়ী করে গেঁথে দেবেন। ভেবেছিলেন ছোট এক যুদ্ধের বিজয় তাঁকে আবারও নির্বাচিত করবে। কিন্তু বিরাট আয়োজন সত্ত্বেও যুদ্ধ খারাপ দিকে মোড় নেয় এবং সেটাই ঘটার কথা। বুশের হোয়াইট হাউসে ঢোকার মধ্য দিয়ে রক্ষণশীলেরা ক্ষমতার চূড়ান্ত কর্তৃত্ব গ্রহণ করে। কিন্তু সহসাই তারা টের পায় তারা দেশ চালাতে অক্ষম। বুশ প্রশাসন যা-ই করেছে তার মধ্যেই কতিপয়তন্ত্র ও দুর্নীতির প্রকট প্রভাব পড়েছে। যাদের রাজনীতি বেশির ভাগ আমেরিকানের স্বার্থের বিপক্ষে, ক্ষমতায় টিকে থাকতে হলে তাদের একদিকে শঠতা, প্রতারণা ও মিথ্যার বেসাতি করতে হয়, অন্যদিকে অনুগতদের মধ্যে ধন-সম্পদ বিলাতে হয়। বুশ প্রশাসনের এহেন আচরণের কারণেই ২০০৬ সালের সিনেট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটরা বিজয় পায়। কিন্তু একটা নির্বাচনেই রাজনীতির গতিপথ বদলে যায় না।

রিগ্যানের গভর্নর নির্বাচনের সময় থেকেই রক্ষণশীলেরা বহু রকমের গোপন ও সূক্ষ্ম কলাকৌশল কাজে লাগিয়ে আসছে। একদিকে মার্কিন ভোটারদের বেশির ভাগই অশ্বেতাঙ্গ। অন্যদিকে মার্কিন আমজনতা ১৯৯০ সাল থেকে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কিছুটা বামে ঝুঁকছে। যে জাতি নিজেই বহুজাতিক হয়ে উঠছে এবং বর্ণবাদ থেকে সরে আছে, সেখানে শাসকদের বর্ণবাদ বেশি দিন টিকতে পারে না।
কিন্তু বর্ণবাদীদের হাতে রয়েছে বিপুল অর্থ। এর পরও সেটাই যথেষ্ট নয়। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তাই যেকোনো কিছুই ঘটা বিচিত্র নয়। মনে হচ্ছে, ২০০৯ সালে আমেরিকা শাসন করবেন একজন ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট। কংগ্রেসেও থাকবে তাদেরই প্রাধান্য। এবং তা হবে বিল ক্লিন্টনের আমলের থেকে আলাদা। তিনিও শেষ পর্যন্ত রক্ষণশীলদের সঙ্গেই মিলেছিলেন।

এখন প্রশ্ন হলো, ওই আসন্ন সংখ্যাগরিষ্ঠতার কাজ কী? আমার মতে, তাদের প্রথম কাজ হলো আপসহীনভাবে সামাজিক নিরাপত্তাজালকে প্রসারিত করা। সেটাই হবে এক নতুন নয়া বন্দোবস্ত (নিউ ডিল)। একুশ শতকের সেই সামাজিক নিরাপত্তার সমার্থক হলো সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার নিশ্চয়তা। বেশির ভাগ অগ্রসর দেশ ইতিমধ্যে তা করে ফেলেছে। সেখানে পৌঁছার জন্য আমাদের দরকার, কোথায় আমরা ছিলাম তার দিকে একবার ফিরে দেখা।

(সামান্য সংক্ষেপিত অনুবাদ, এটি আজকের প্রথম আলোয় প্রকাশিত হয়েছে)


মন্তব্য

সুমন চৌধুরী এর ছবি

পল ক্রুগম্যান কে অভিনন্দন। এই বইটা পড়বো। মূল্য আওতার মধ্যে থাকলে কিনতেও পারি।

একই প্রসঙ্গ আরেক্টু অন্যভাবে আলোচনা করেছিলেন আরো এক উদারনৈতিক জগদীশ ভগবতী। পৃথিবীর বেশীর ভাগ অর্থনীতিবীদ (আসলে রাজনৈতিক অর্থশাস্ত্রবীদ) ই লিবারেটারিয়ান। কোন না কোনভাবে তাঁরা পুঁজিবাদের সুষম বিকাশের পথ চেয়ে বসে আছেন। কিন্তু পথ মিলছে না।

ধৈর্য ধরে আছি সুনা।



অজ্ঞাতবাস

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

এনার সমালোচনাটা গ্রহণীয়। কিন্তু অন্তত এই আলোচনায় কিছুটা ঘাটতির কথা না বললে নয়। প্রথমত, বিশ্বযুদ্ধ ও তার পরের পরিবেশে মার্কিন শিল্প পুঁজি বিরাট উল্লম্ফনের সুযোগ পায়। সেই উল্লম্ফনের সুবাদে মুনাফার বাড়তি অংশটি সমাজে বিতরিত হয়। সেসময় আমেরিকার ভেতরে শক্তিশালী ট্রেড ইউনিয়ন, ছাত্র ও নাগরিক অধিকার আন্দোলনের চাপ এবং বাইরে থেকে সমাজতান্ত্রিক বিশ্বের চাপ ছিল। এর জন্য বিশ্বের সর্বত্রই পুঁজিবাদকে কিছুটা আপসে চলতে হয়েছিল, এসেছিল কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের ধারণা। (সেটা যে সোনার পাথরবাটি, আজ তা প্রমাণিত।) ফলে একদিকে আমেরিকায় শিল্প পুঁজির প্রাধান্য এবং মার্শাল প্ল্যানের সুবাদে বিকশিত অর্থনীতি অন্যদিকে জনগণের রাজনৈতিক চাপই মধবিত্তীয় আমেরিকা নির্মাণ করেছিল। এটা কেবল রুজভেল্টদের ভালমানুষীর জন্য হয়নি।
আজকের মন্দার পরিবেশেও একজন উদারনৈতিক, তা তিনি অর্মত্য সেনই হন আর ভাগবতীই হন, বলবেন বাজারের নিয়ন্ত্রণহীনতার কথা, ব্যবসায়িদের লোভের কথা। বিশ্লেষণটি নৈতিক। অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ এটা নয়। মার্কস কথিত পুঁজির অতি উতপাদন এবং ছোট বাজারের সমস্যাটি তাঁরা দেখবেন না। পুঁজির অতিষ্ফীতি জনিত এই সংকট ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর লোভের জন্য হচ্ছে না, তা পুঁজির চলনেরই সমস্যা।
তাই লিবারেলিজমের ভূমিকা শেষ বিচারে যাত্রার বিবেকের, তাদের কথা না শোনে রাজা না শোনে বিদ্রোহী প্রজা। তবে তাঁর এই স্বীকারোক্তির গুরুত্বপূর্ণ যে, আমেরিকায় করপোরেট ক্যাপিটালিজম ফ্যাসিবাদী আয়োজন সম্পন্ন করে এনেছে (তিনি যাকে বলছেন শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদ)। একই জিনিষ ভারতেও দেখা যাবে, সেখানে আগ্রাসী করপোরেট আর সনাতন ভারতীয় গৈরিক ফ্যাসিবাদ মানিকজোড়ের ভূমিকায় অবতীর্ণ।
তৃতীয়ত, তিনি রাজনীতি ও অর্থনীতির পরস্পরনির্ভরতাকে যেভাবে উদাহরণ দিয়ে দেখান, তা বিরক্তিকর অর্ধশিক্ষিত 'বামপন্থিদের' এবং তাদের সমালোচকদের অর্থনৈতিক নির্ধারণবাদের একটা সংশোধন হিসেবে দেখা যেতে পারে। সব মিলিয়ে ক্রুগম্যানকে, সীমিত দৃষ্টির যথার্থ পর্যবেক্ষক হিসেবে দেখা যায় বোধহয়। তাঁর বাকি তত্ত্ব কেইনসীয় নিয়ন্ত্রিত পুঁজিবাদের সমর্থক বলে জানি। যার জন্য নোবেল পেলেন, সেই তত্ত্বটি এখনো চেখে দেখিনি।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

দিনমজুর এর ছবি

আপনার অনুবাদটি এই মন্তব্য এবং পরের মন্তব্যের মাধ্যমে সম্পূর্ণ হলো- কিন্তু আফসোস, প্রথম আলো পত্রিকাটি তো ব্লগ নয়!!

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

হ্যাঁ প্রথম আলো ব্লগ নয়, সেটা পুঁজির দরবার আর এটা আমাদের জায়গা। আমরা এখানে বিষয়গুলো নিয়ে কথা চালিয়ে একটা অবস্থানে আসতে পারি। আজকের দুনিয়ায় সবচেয়ে ঘোর ও রহস্য অর্থনীতি নিয়েই চালু আছে। এই ঘোর ভাঙ্গা গেলে দুনিয়াকে বোঝা ও পাল্টানোর কাজ কিছুটা এগয়। ধন্যবাদ দিনমজুর।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

শিক্ষানবিস এর ছবি

পড়লাম। খুব সময়োপযোগী লেখা। বইটা নিশ্চয়ই খুব ভালো হবে। সবাই দেখি বলছেন, ডেমোক্রেটরা জিতবে। তা-ই যেন হয়। আমরা যেন আমেরিকাকে আবার উদারনৈতিক হয়ে উঠতে দেখি!

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

ফারুক ভাই, সময়োপযোগী লেখা, বেশ ভালো লাগলো। ক্রুগম্যানের নোবেল বিজয়ের ফলে অর্থনীতি বিষয়ের সাথে জড়িত অনেকেই বেজায় খুশী হয়েছেন। তবে গত কয়েক বছর ধরেই তিনি বুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে যেভাবে আপোষহীন পত্রিকার কলাম লিখে আসছিলেন, তাতে অনেকেই ভয় পেয়েছিলেন যে তার টেকনিকাল গবেষণার যথাযোগ্য সম্মান তাকে দেয়া হবে না। অন্তত বুশের শাসনামলে তো নয়ই, কারন তাতে নোবেল কমিটির বিরুদ্ধে "পুরষ্কার রাজনৈতিকীকরণের" অভিযোগ উঠতে পারে। কিন্তু বুশের অন্তিম প্রস্থানের মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে ঠিকই ক্রুগম্যানের হাতে এই পুরষ্কার তুলে দিয়ে নোবেল কমিটি বুশ-কে শেষবারের মত আরেকটা চপেটাঘাত করে নিলেন - এমনটাই ভাবা হচ্ছে।

ক্রুগম্যান নিউ ইয়র্ক টাইমসে কলাম ছাড়াও নিয়মিত ব্লগ লিখেন। পুরষ্কার প্রাপ্তির দিন তিনি এক লাইনের একটি পোস্ট দেন - A funny thing happened to me this morning …

*

দুটো জিনিস চোখে পড়লো। ন্যাশনাল রিভিউ পত্রিকার মরহুম সম্পাদক উইলিয়াম বাকলি (William F. Buckley) আধুনিক রক্ষণশীল চিন্তাধারার জনক। মারা গেছেন এই বছরের শুরুতে। তার ছেলে ক্রিস্টোফার বাকলি এই ইলেকশনে ওবামাকে প্রকাশ্য সমর্থন দেয়ার ফলে তার প্রয়াত বাবার পত্রিকায় কলামিস্ট-এর পদটি খুইয়েছেন গত সপ্তাহে। এই নিয়ে তার মজার দুটি লেখা।
১) Sorry, Dad, I'm Voting for Obama
২) Sorry, Dad, I was fired

আর মার্কিন ভোটারদের বেশির ভাগই অশ্বেতাঙ্গ। - এটা বোধ হয় ঠিক নয়। ২০০৬ সালের হিসাবে ৭৬% আমেরিকান এখনো শ্বেতাঙ্গ। পন্ডিতদের মতে অশ্বেতাঙ্গদের সংখ্যা্গরিষ্ঠতা পেতে ২০৪২ সাল পর্যন্ত লাগবে। এই প্রসঙ্গে প্রগতিশীল ঘরানার শ্রেষ্ঠ ব্লগারদের একজন বিলমন-এর একটি লেখা -The Future Belongs to We

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

বৈশ্বিক পুঁজিবাদী কাঠামোর একটি স্তরের ভাঙ্গন/সংকটের সময় আসলে কোনো মুক্তবাজারি তাত্ত্বিককে কি আসলেই নোবেল প্রাইজ দেয়া যেত? আমার মনে হয় না। সুতরাং নোবেল কমিটির এই সিদ্ধান্তকে পক্ষপাতদুষ্ট না বলেও, সময়ের তালে তাল দেয়া বলা যায়। এ কারণে যে, যে কমিটি আগের বছর ক্ষুদ্রঋণের তত্ত্বকে ঘুরিয়ে খাওয়ায় শান্তির অবদান বলে, সেই কমিটিই তো এবারের পুরস্কারটি দিল।
তবে আমাদের লাভ এই যে, আমরা একজন ভাল সমালোচকের স্বীকৃতি পেয়েছি। তবে এও ভুলি না যে, এই ক্রুগম্যান কুখ্যাত এনরনের বিশেষজ্ঞ ছিলেন বা ইত্যাদি।

আর আমেরিকায় শ্বেতাঙ্গদের সংখ্যা নিয়ে আলাদা করে খোঁজ করার সুযোগ পাইনি। আমি জানতাম যে, তারা মোট ভোটারদের ৪০%। যাহোক, ক্রুগম্যান কি শ্বেতাঙ্গ ভোটার না জনসংখ্যা, কোন অর্থে বলেছেন, তা চেক করে দেখছি।

তবে আমি যথারীতি, ওবামা বা ডেমোক্র্যাটদের নিয়ে আলাদা করে আশাবাদী নই। তবে কম উগ্র লোক আসা বিশ্বের জন্যও মঙ্গল।

আমেরিকান সাম্রাজ্যকে আমার এখন পতনকালের রোমান সাম্রাজ্যের মত মনে হয়। যার অতি প্রসারণ ও সামরিকয়ান ভেতর থেকে তাকে ক্ষয়ে ফেলেছিল। রোমান লিজিয়নগুলো ভরে গিয়েছিল অ-রোমানদের দিয়ে। আর্থিক ও রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে তখন স্বাধীনচেতা জাতিগুলোর উত্থান তারা ঠেকাতে পারেনি। সেই দুর্বল রোমানদের পরাজিত করেছিল কিন্তু জার্মানির বর্বরেরা। আজকের যুগে সেই ঘটনার মিল দেখা যাচেছ না কি?

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

ইউনাইটেড স্টেটস অফ ভয়ংকর আমেরিকার কেন্দ্রে থেকে যখন ক্রগম্যান উচ্চারন করেন- রাষ্ট্র কোন কর্পোরেট কোম্পানী নয় । মুনাফাখোরী রাষ্ট্রের ধর্ম হতে পারেনা'- তখন তা খুব মানবিক শুনায় । কেন্দ্র থেকে বহুদূরের ভুক্তভোগীরা ভরসা পায় ।

কিন্তু এই ক্রুগম্যানই যে কর্পোরেট দানব ENRON এর কনসালটেন্ট ছিলেন!

পল ক্রুগম্যানকে অভিনন্দন ।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

সম্প্রতি অর্থনৈতিক ধাক্কা, যুদ্ধ বিষয়ক গোলযোগ ইত্যাদির কারনে মার্কিন রাজনীতি বেশ খানিকটা স্টাডি করছি। লেখার বিষয়টা তাই দৃষ্টি কাড়ল। বিষয়টা ভালো লেগেছে। আরো অনুবাদ ছাড়ুন। তবে অস্বস্থি নিয়ে বলি অনুবাদটা একটু শক্ত ঠেকেছে। আরেকটু তরল করে লিখলে পড়তে আরাম লাগত।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

মঞ্জুলী এর ছবি

অর্থনীতি আর দুর্নীতি কখন যে মিলেমিশে সরকারের নীতি হয়েছে, আমেরিকার চোখধাঁধাঁনো বৈভবের আলোকছটায় সেটা বোঝার জন্য যে ভবিষ্যদৃষ্টি দরকার, সেই মানুষদের দূরে রাখার নীতিই বোধহয় দেশটাকে টেনে নিয়ে এসেছে এই পরিণতিতে। আসলে খরস্রোতা নদীই লোকে ভাবে সব শক্তির উৎস , মূল উৎসের খোঁজ করাতে ঝুঁকির দায় আর কে নেয়?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।