এক.
বৃষ্টি প্রকাশ্য, গা খোলা পৃথিবীর নাঙ্গা অবগাহন। সব কিছু ভিজে যায়, এমনকি কখনো মনে না পড়া শুকনো স্মৃতিও। বৃষ্টি বৈপ্লবিক, মাটির জলের সঙ্গে আকাশের জলের মিতালি। বৃষ্টি বলে, গোপন হও ভিজে ভিজে আড়াল হও। বলে, বনের ধারে নদীর পাড়ে যাও; যেখানে 'পরাণ সখা বন্ধু হে আমার...হতেছ তুমি পার।' বৃষ্টি গোপন ও প্রকাশ্য সবকে একশা করে দেয়। এখন সেরকম বৃষ্টি ঝরছে...বাইরে...প্রকাশ্যে...নগরের সকল শূণ্যতা জুড়ে। বৃষ্টি ঝরছে আরো দূরে দূরে... কোনো গাঁয়ের শ্যাওলার মতো মায়াবি চোখের পুকুরের ওপর...টুপ টুপ অজস্র জলজ তারাবাজির মতো তারা ফুটছে, ছুটছে, বিঁধিয়ে নিচ্ছে সব। তারপর নেচে নেচে চলে যাচ্ছে অপর আকাশে।
দুই.
পয়মন্ত গমের ক্ষেতে যেমন ফড়িংয়েরা ওড়ে, তেমনি বৃষ্টির কণা-কিশোরীরা ঘুরছে ছুটছে, গড়াচ্ছে এ ওর গায়ের ওপর। ডানার ঝাপটা দিচ্ছে পথচারীদের। আর মনে হচ্ছে,
''দিনমান জলের শরীরে যত জল গড়ায়,
আর তাতে যত কথা হয়
আমি জানি তার থেকেও বেশি।
সেই আঁচে, আমারও শিরা উথলায় সুরবশে
বলো কেন তবে ঝরি তার নিঃশ্বাসে নিঃশ্বাসে।''
তিন.
বৃষ্টি প্রকাশ্য, কিন্তু তা আমাদের গোপন হতে বলে। গোপনে বার্তা আসে মেঘের বেশে। মেঘ হয়ে ফিরে আসে সকল না-থাকারা, সকল চুরি হওয়া স্মৃতিরা, ডেকে ডেকে ফিরে যাওয়া প্রেমের ব্যথারাও তখন ঝরে। একদিন সন্ধ্যে বেলা বৃষ্টির মধ্যে বিল পেরিয়ে সাঁতরে চলে যাব তোমার হাত ধরে_ ও বৃষ্টি ও মরণ।
চার.
তোমার শিরায় শিরায় যে শির শির, আমার হাড়সুড়ঙ্গে যে তরঙ্গঝলক, কোনো সন্দেহ নেই এ উস্কানি বৃষ্টির। রাত নামবার আগেই তুমি ঘরে ফিরো। বৃষ্টির ধারাপাতে নদী উতলা হবে, পথ বেভুল হবে, ঘোর মায়া নামবে তোমার চোখে। তুমি ঘরে ফেরো,
''আজকে রাতে বৃষ্টি হবে
বলে গেছে কান্না বুড়ো
ঘাসের বন মূর্চ্ছা পাবে
মরে যাবে পাহাড় চূড়ো।
তবু বৃষ্টি ঝরে,
তবু বৃষ্টি ঝরে মরুর দেশে
চিঠির পাতায় লেখা মোছে। ''
'বৃষ্টির সুতো ধরে ধরে এই ভুল বোঝা কুয়াশায় কোথায় যাচ্ছিলে তুমি?'
বন্ধু, তুমি ঘরে ফেরো।
পাঁচ.
আমি জানি, একদিন যিশুর মতো নাঙ্গা একদিন পথের পাগলের মতো নিলাজ হয়ে দাঁড়াব তোমার সমুখে, ও বৃষ্টি। আমি জানি একদিন তোমার অজস্র তীর আমাকে বিদ্ধ করে চলে যাবে। আকাশ কালো করে, বনবাদাড়ের শিকড় কাঁপিয়ে তোমার অক্ষৌহিণী আমাকে মিহি করে ছড়িয়ে দেবে আকাশে।
ও বৃষ্টি, সেই আলোয় আমি হব অমিয়।
এ ধরনের আরো কিছু জার্নাল ধরনের লেখা হয়তো আসবে। এখন মনে হচ্ছে এগুলো আগে শুরু করা আমার ব্যক্তিগত অডেসি সিরিজেরই অংশ হওয়া ভাল। সেকারণেই নামে কিছুটা বদল ঘটালাম।
মন্তব্য
হুম
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
ভায়া 'কবিকে পাওয়া যাবে না আত্মজীবনীতে'। কে যেন বলেছিল, কেন যেন বলেছিল?
...........................................................................................................
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
হুম... আপনার তো দেখি বৃষ্টি বিহনে কবিতা নামে না... কেইস কী? গেলো বর্ষায় একটা লেখছিলেন... সে বড় জব্বর ছিলো...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আপনার কথায় আমারো মনে হচ্ছে, ঘটনা হ্যাজ।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
বৃষ্টিকথন ভালো লাগলো।
বেশ
***********
শাহেনশাহ সিমন
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
খুব সুন্দর লাগলো, ধন্যবাদ এমন একটা লেখা সচলে প্রকাশের জন্য।
আমাদের ভাই বহুদিন পর সূর্য উঠেছে। আমিও সূর্য নিয়ে একটা লেখা রেডী করে তাহলে। বৃষ্টিকে দিলাম ছুটিইইইইইইইইইইইইই
তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
বৃষ্টি তো দূরে থাকাই নিরাপদ। তাই না?
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
বদ্ধ জানালা এপারে আমি, ওপারে বৃষ্টির জল
ভাবছি হাট্ খুলে কি না হয়, হোক যা খুশি হোক না যা হয়
ভাবছি আর ভেবেই চলেছি, ভেবেই চলেছি
এমন সময় হা রে রে রে রে
হু হু বাতাস এলো তেড়ে
আমি যে ভি জে গে ছি সেই বৃষ্টিতে; আমি যে ভি যে গেছি সেই বৃষ্টিতে
সুন্দর কমেন্ট ।
বৃষ্টি তো মনেও ঝরে, সেটাও ভেজায় আর মাতাল করে।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
বৃষ্টি তো মনেও ঝরে, সেটাও ভেজায় আর মাতাল করে।
বাহ।
কিন্তু তা তো প্রকাশের নয়। বাইরের বৃষ্টি ছাড়া সে কি আর আসতে পারে? পুকুরে ডুব দিয়ে উঠলে পরে যেমন কানে পানি ঢুকে বসে থাকে, তেমনি জগতের মধ্যে মোহ-ডুব দিয়ে থাকা আমাদের মনেও কিছু মোহ-বৃষ্টি জমা থাকে। কানের পানি বের করার মতো তাকেও বের করতে হলে বাইরের বৃষ্টির উস্কানি চাই, টান চাই। নইলে অবিরল ঝরে যাওয়া ছাড়া তার উপায় কী? খাত পেলে কেবল নদী নয়, পুকুরের জলও তো সমুদ্রের দিকে হাঁটা দিত হস্ত-পদ-স্কন্ধহীন গড়ানে।
কোথাও পদ পেলে আমি বৃষ্টি-দর্শন রচনার দায়িত্ব নিতাম।
ধন্যবাদ।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
আপনাকে একটা মেসেজ দিয়েছিলাম, আশা করি পেয়েছেন। একটু তথ্য দিয়ে সাহায্য করলে খুশী হতাম। ধন্যবাদ।
-----------------------------------
আমার ইচ্ছে হলো বাজাতে গীটার, মন আমার, মন আমার, মন আমার-
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
আমার যোগাযোগ রক্ষার গুণ প্রায় নির্গুণ পর্যায়ে পৌঁছেছে। তার জন্য দুঃখিত। তার জন্য কি লেখাটাকেই এড়িয়ে গেলেন?
আমার সংগ্রহটি খোয়া গেছে। আমাদের লাইব্রেরিতেও নেই। আজিজে গিয়ে দেখে জানাব চিন্তা করেছি। তারপর যাওয়া হয়নি। যাওয়া মাত্রই খবর পাবেন।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
না না, লেখা এড়াইনি, পড়েছি। আমি আসলে আপনার সাথে এই ব্যাপারে যোগাযোগের আর কোন উপায় খুঁজে পাচ্ছিলাম না, তাই এখানে এরকম আলটপকা মন্তব্য রেখে যেতে হয়েছে।
একজন বন্ধু বললেন, আপনার কাছ থেকেই সবচে সঠিক তথ্য জানা যেতে পারে এ ব্যাপারে, আপনি সম্ভবত ইত্তেফাকে বা আর কোথাও এই নিয়ে লিখেছিলেন, সে জন্যেই আপনাকে ধরেছি।
অসুবিধা নেই, সময় ও সুযোগ বুঝে কোন এক ফাঁকে আমাকে জানালেই চলবে, আমি অপেক্ষায় থাকলাম।
-----------------------------------
আমার ইচ্ছে হলো বাজাতে গীটার, মন আমার, মন আমার, মন আমার-
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
এইটারে কি বলা হবে? কাব্য? না অন্যকিছু?
যাই হোক। পড়ে আরামবোধ হইছে। আম পাঠকের কাছে আরামটাই আসল। বাকি সব বোগাস।
----------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
সেটাই, আমিও কি ছাই জানি এটা কী? পড়তে পেরেছেন এটাই বড় কথা। পড়ে ভাল লাগাকেই আমি যে কোনো লেখার মূল মানদণ্ড মনে করি। যদিও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাতে ব্যর্থ হই।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
নতুন মন্তব্য করুন