সুবিনয়ের সঙ্গে আমার পুরান শত্রুতা। তার নজর এড়ানো কঠিন। তারই খেয়াল হলো যে, এটি সচলে আমার শততম পোস্ট। এভাবে ধরা খাব ভাবিনি, কেন ধরা তা রহস্যই থাক। এটি তাই সুবিনয় মুস্তফীকেই নিবেদন করা গেল।
কাব্য আমার বহু পুরাতন দ্বিধার নাম। বাল্যকাল থেকে এই দ্বিধা আমার সবকিছুর মধ্যে ঢুকে বসে আছে। সেই দ্বি-ধার এ পারে সঙ্গীত ওপারে গদ্য, মাঝখানে কাব্যসমরূপার অধিষ্ঠান। তা আমাকে এক হতে দেয় না, কেবলই বিবিধ প্রকারে ভাগ করে রাখে। কবিতা আমার কী, তা না বুঝলেও, এ বুঝি যে, কবিতা দিয়েই সেই দ্বিধাকে অভীধায় পরিণত করতে পারি, পারি দ্বিধামোচন করতে। তাই এই হাত মখশ_ ছোঁড়াখোঁড়া গানের আকাশে।
মাস দুয়েক আগের কথা। আমি আর অরূপ রাহী যাচ্ছিলাম কালিয়াকৈর। গোধূলিবেলায় গাজীপুর পার হতে দেখি আকাশের লাল আর ভাটার কালো ধোঁয়ায় চারপাশ যেন মূর্তিমান স্যুররিয়ালিটি। আমরা যাব বিলের পাড়ের এক ঘাটজঙ্গলভরা প্রাচীন জমিদার বাড়িতে। রাত্রিবাস হবে সেখানে।
সে যাত্রায় গাড়িতে বসে দুজনে খেলি পুরানো সেই খেলা_ যৌথ কবিতা লেখা। ও শুরু করে শেষ হয় আমার হাতে। কলম হাতে নিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখতে পাই, দুপাশে অজস্র ইটভাটা আর তার গোদা গোদা চুল্লিগুলো যেন আকাশকে বিদ্ধ করে আছে। সেই বেদনায় কাল হয়ে আছে সন্ধ্যার আকাশ, সেই আঘাতে লাল হয়ে আছে দিগন্তবলয়। শানে নুযুল এটুকুই।
কাল রাতে সেই খসড়াটাকে দিতে গেলাম, মুছে গেল। আবার লিখতে গিয়ে কিছুটা বদলালো, সেটা প্রকাশ-বাটনে দিতে না দিতেই বিদ্যুৎ চলে গেল। তারপর অনেক রাতে এটুকু বেরল। এ ঢংয়ের লেখা আজকাল অচল। নবীন কবিরা লিখেন না। কী করা যাবে, তবুও কথা মনে আসে, আর তারা প্রকাশের জন্য আকুপাকু করে!
কবিতা আসলেই আমার যাবতীয় দ্বিধার অপর নাম।
..............................................
হাতচিঠি
...............................................
পাড়ে পাড়ে ফোটে আমার তারারা
ফোটে ফুলকি খুলি মগজ শিশুর কবচ।
আমি তাই নাম ধরে ডাকি
আমি তার শম থেকে বাজি
রোষকান্ত রাত্রি পার হয়ে যায়।
পাহড়ে পাহাড়ে ছোটে আমার ঘোড়ারা
আমি তার দম ধরে হাঁকি।
রাখো আমায় বেনামি
কিংবা হাতে হাতে গোপন কিছু বিলি।
আমার অক্ষর পাখি বুকের ধধধপ।
আমার অক্ষর সূর্যের ইঞ্জিন ধপধপ।
আমাকে পাঠাও সেই ডাকঘরে।
ঘাটজঙ্গলের সিঁড়িতে সন্ধ্যায়,
তাকে দিস সিঁথিচিহ্ন ভার,
_ এই হাতচিঠি তার,
শিয়রের কাছে যার তারা ডুবে যায়।
মন্তব্য
সচলে সেঞ্চুরি হাঁকানোর শুভেচ্ছা। আপনার কলম/কীবোর্ড থেকে আরো এক হাজার লেখা পড়ার আশা রাখি।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
আমি তো টের পাই নাই!!! একেবারে ধরা খেয়ে গেলাম মনে হচ্ছে।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
তবে আপনের গদ্য বেশী প্রেফার করি (একটু নিরস লোক তো...!!!)
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
তা হোক, কিন্তু গদ্য নিরস তা কে বলল ?
জগতে বিভিন্ন রসের বাহারে
রসিক থাকেন বিবিধ প্রকারে।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
শিয়রের কাছে তারা ডুবে যায়... কী সুন্দর! অনেক ভালো লেগেছে ফারুক ভাই।
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
শিয়রের কাছে তারা ডুবে যায়... প'ড়ে লতা মঙ্গেশকরের একটি গানের লাইন মনে এল, গুলজারের লেখা, মেরে সরহানে জ্বলাও সপনে, মুঝে জরা সি তো নিন্দ্ আয়ে..... অর্থ আলাদা কিন্তু বিষণ্ণতার সুরটা একই। এখানে অনেককে হিন্দি জানা নেই বলতে শুনেছি, তাই কাছাকাছি বাংলাটাও বলছি:
শিয়রে আমার স্বপনের দীপ জ্বেলো, তবু যদি চোখে তন্দ্রার ছোঁয়া লাগে -
কবিতা নিয়ে আপনার দ্বিধা করার কারণ দেখি না।
দুর্দান্ত।
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
আপনার কবিতা আমাকে অন্য একটি মোহাচ্ছন্ন করে যায়।
যা জীবন ও যাতনাকে আমার খুব কাছে নিয়ে আসে ।
আমার তো নিজেরই মাঝে মাঝে একঘেঁয়ে লাগে।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
শুভেচ্ছা..
...অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা...
------------
...অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা...
সম্পাদনা করতে গিয়ে হারিয়ে গিয়েছিল, পেলাম মনে হচ্ছে। আমার সম্পাদনার দরকার নাই, আসল খোয়া না গেলেই হলো।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
শুভেচ্ছা...
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
শত তম পোষ্টের শুভেচ্ছা ।
তাকে দিস সিঁথিচিহ্ন ভার,
_ এই হাতচিঠি তার.
ভালো লেগেছে।শত তম পোষ্টের শুভেচ্ছা ।
নতুন মন্তব্য করুন