'মনে হলো
মৃত-পাখা ঝাপটে উড়ে যায় কবিতার আত্মা
নির্বোধ কবির দেহ নামাবলি ঢাকা
চোখে তুলসি পাতা
বুকে একখানি গীতা...'
(কল্পনার অশেষ অথর্বতা)
''ইতিহাস, এমনকি মৃত্যুও কাউকে কাউকে স্পর্শ করবার আগে কুর্ণিশ করে। তাই যখন সে রক্ত-কান্না-ধূলায় মাআমাখি হয়ে সড়কের ওপরে শুয়ে পড়েছিল অন্তিম শয়ানে, তখনও তার হাতে ধরা ছিল এক খণ্ড কাগজ। নিজেরই রক্তবমিতে বিপ্লবের মতো লাল হয়ে গিয়েছিল অক্ষরগুলো।''
এক.
এভাবেই বুঝি মৃত্যু এক দাগে কেটে দেয় নাম, লিখিয়ে নেয় স্বগত এপিটাফ। নিজের মৃত্যু রচনা করে যাওয়ার এই মর্মবিদারী খাটুনিই হয়তো কবিত্ব। জগতে এই রহস্যের মীমাংসা নাই। কবির লিখন তাই নিয়তির মতন। সে লিখে রাখে আপন মৃত্যুযাত্রার স্মৃতি। এতার কবিতাগুলো তাই মৃত্যুর মতো হিম। অথচ তার জন্ম চৈতন্যের চমকজ্বরার ঘোরে‘হঠাত্ আলোর ঝমকানিতে। তথাপি সে চেয়েছে বিদ্রোহ, চেয়েছে এই সমাজসংসারের খোল ও নলচে একত্রে বদলানোর দিন। তার কবিতার ভাষায় ‘এক অসম্ভব সংসারশক্তি’র বিরুদ্ধে। অথচ তার বারান্দার বেড়ার ঘরে সে যখন একা, বিছানার পাশে সার করে রাখা বইগুলো_ আরো ভেতরে, ঘরের ভেতরের ঘরে দুটি শীর্ণ পুরনো বৃক্ষের মতো মা-বাবা। বাইরে, বৃষ্টিভেজা উঠানে একটা পেয়ারা গাছ-- এই-ই তো চন্দ্রমণির দীন সংসার, সীতাকুণ্ড পাহাড়ের তলে। এ সংসারের কী-বা শক্তি কী-বা মায়া! কিন্তু এই শক্তিই তার ভেতরে হুতাশন জ্বালিয়েছিল। ঐ তিনটি মানুষের দুঃখছায়াঘেরা জীবনের মায়ার শাসনে থাকতে থাকতেই সে বুঝে নিয়েছিল নিজেকে। বুঝে নিয়েছিল যে, আরো বড় এক জগত্শক্তির অধীন তারা সকলে। ঐ শক্তি সমাজ ঐ শক্তি রাষ্ট্র ঐ শক্তি মনের ভেতরে বাঘের ছাল গায়ে বসে থাকা কপট ও ভীরু এক ছাগের আমিত্ব। চন্দ্রমণি মানুষের সংসারকে ঐ শক্তির হাত থেকে মুক্ত করতে চেয়েছিল। সে জেনেছিল,
‘নিষ্ঠুরতার পদাঘাতে পিষ্ট কিষ্ট
অদমিত দুঃখিত সভ্যতা গড়াতে গড়াতে
সোনালী ফসলের মাঠে এসেও,
শক্তিমান সেই নিষ্ঠুর রক্তবমির আশঙ্কা!
আর এই আশঙ্কা মুক্তির...’
(সভ্যতা)
মানুষের আপনকার সংসারশক্তি আর জগতশক্তির বিরোধের যতটা খবরই তরুণ মনে জাগুক, সে বুঝেছিল গড়তে হবে সংঘ। তাতেই সে নিবিষ্ট ছিল আজীবন। হায় কত স্বল্পদৈর্ঘ্য কিন্তু আস্ত একটা জীবনই তো তা! যতণ না মৃত্যু এসে তাকে থামিয়ে দেয়। অসমাপ্ত জীবনের অভিশাপ খোদার পাপ, সেই পাপ আমরা সইবো কেন?
ইতিহাস, এমনকি মৃত্যুও কাউকে কাউকে স্পর্শ করবার আগে কুর্ণিশ করে। তাই যখন সে রক্ত-কান্না-ধূলায় মাআমাখি হয়ে সড়কের ওপরে শুয়ে পড়েছিল অন্তিম শয়ানে, তখনও তার হাতে ধরা ছিল এক খণ্ড কাগজ বার্তাবহ বুলেটিন। নিজেরই রক্তবমিতে বিপ্লবের মতো লাল হয়ে গিয়েছিল অক্ষরগুলো।
দেহ জর তার ক্ষয় আছে, অক্ষর অজর তার ক্ষয় নাই। জরজর দেহ ফেলে চন্দ্রমণি দত্ত সেই থেকে অক্ষর হয়ে গেছে। আজ আর তার ক্ষয় নাই।
তাকে পাঠ করে সেই অক্ষরের অবিনাশী আগুনের ছোঁয়া পাই। সেই আগুন যুগে যুগে জনপুঞ্জের ভেতরে একটি একটি তরুণকে ইতিহাসের ডাক পাঠায়। সংসারশক্তির টানে অদম্য প্রেরণার ছলে তাকে নিয়ে যায় মানুষ ও প্রকৃতির কাছে, প্রাণ ও পরিচয়ের কাছে। কেননা তরুণই প্রথম টের পায় কেবল বঞ্চনা নয়, তাকে ছোট করে দেয় অধীন করে রাখে, তার মুক্তিকে মাঝপথে আটকে দেয় দাপটের কর্তাশক্তি। প্রাণ ও পরিচয়ের স্বাধীনতার জন্য সে তখন বিদ্রোহ করে। এই বিদ্রোহীর ছবিই আমাদের সময়ের-- শোষণজর্জর সকল অমানবিক সময়ের তরুণের প্রধান মুখচ্ছবি। এখনও তরুণের মুখেই নায়কের আভা খোঁজে আমাদের সমাজ। তাই ইতিহাসের তরঙ্গ ক্ষুদিরাম, সূর্য সেন, নজরুল, সুকান্ত এবং ’৫২, ’৬৯ ও ’৭১-এর তরুণ আর নব্বইয়ের নূর হোসেন হয়ে চন্দ্রমনিকে পর্যন্ত তুলে নিয়ে আরো আরো তরুণের প্রাণে ঠাঁই খোঁজে। তরুণের প্রাণের দাম ছাড়া পরিবর্তন আর সৃষ্টির বীজ কোথায় কবে উপ্ত হয়েছে? কেন তরুণদেরই আমরা মুক্তিযুদ্ধে বা জাতীয় আলোড়নে বেশি করে আলোড়িত হতে দেখি? কেন তাদের রক্ত পান না করলে ইতিহাস দেবতা কোনো বরই দান করেন না। মৃত তরুণদের হাড়গোড়ের স্তুপেই তো সভ্যতার সৌধ গড়ে ওঠে। মুক্তিযোদ্ধা ও বিপ্লবীর প্রতিকৃতি চিরকালের জন্যই তরুণদের জন্যই নির্দিষ্ট হয়ে গেছে। সে নারীই হোক আর পুরুষই হোক। বাংলাদেশেই হোক আর আন্দামানে হোক। তাই চন্দ্রমণি দত্ত নকু’র মুখে কেবল তার স্বপ্নেরই আলো ভাসে না, ভাসে আমাদের সময়ের আশার আভা।
‘আগুন দেখতে পায় আগুনেরই ছবি!
আমি দেখি আমার ছবি
...মৃতের প্রবাহে
বহুদূর জানা অজান্তে...।’
(মৃতে মৃত্যু ভাসে)
কবিতা আর বিপ্লব-- এই এক জোড়া শালিক তার অস্তিত্বের ভেতর ধুমিয়ে আলোবাদ্যির উত্সব জাগিয়েছিল। অলক্ষে তাকে জানিয়ে দিয়েছিল শুভসঙ্কেত। তাই অশান্ত ছিল না সে; আর ছিল অমলিন শুভেচ্ছাকাতর হাসি। তাই সে বলতে পারে, ‘এ জীবন অঘোর ঘুমের এক অদ্ভুত স্বপ্নের কারুকাজ!’ কিন্তু সেই স্বপ্নের কারুকাজে কালি মাখাতে ওত পেতে ছিল মৃত্যুর অন্ধকার পাখসাট। এক অন্ধকার ডানার ছায়ায় একজোড়া শালিক। এই যেন চন্দ্রমণি দত্ত নকুর জীবনগাত্রে খোদিত চিত্র।
কবির ঈশ্বর নাই, আছে প্রেম ও বিদ্রোহ। এ দুয়ের মাঝখানে পিছুডাক হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে মা। কবির তারুণ্যে মাতৃমূর্তি এসে সত্তাকে কাঁপায়। রোমান্টিক কবির জন্মমুহূর্ত যেন মায়ের ছায়া থেকে বেরিয়ে অসীম পৃথিবীর মায়ায় ক্ষিপ্ত হওয়া একটি তীর-- অনিবার্য বিচ্ছেদের সুরে বাঁধা।
দুই.
সেখানে জীবনের অন্ধকারে
আছে মসৃণতা মৃত্যুর।
(কল্পনার অশেষ অথর্বতা)
শিশুর আয়ু নিয়ে কেউ মারা গেলে সে স্বর্গে যায়। তরুণ ২২-এ যে যায় সে কোথায় যায়? তরুণের আয়ুনাশের মতো অপচয় আর নাই। যে যায় তার জন্য যত যার যায় তার ততোধিক। এজন্য যে, বাকিটা জীবন তাদের মনে থাকে, সে ছিল; আর নাই। বিস্মৃতিপ্রবণ পৃথিবীতে তাদের বারবার সাক্ষ্য দিয়ে দিয়ে যেতে হয় যে, সে ছিল। এই রচনা নকু বিষয়ক তেমনই এক সাক্ষ্য মাত্র। এমন তরুণের জন্য স্বর্গভাগ থাক।
বললাম যে, এটুকু বলার মনোবলভরসা কি আসলেই আছে? কিন্তু চন্দ্রমণি দত্ত নকু লেখে, ‘মধ্যিখানে বয়ে যায় এক অসম্ভব সংসারশক্তি’। মানুষ এ জগতে যা পেতেছে তা ঐ সংসার। তা-ই ইতিহাস তা-ই জীবন। সেই অসম্ভব সংসারশক্তি স্রোতের মতো টেনে নিয়ে যায় আমাদের। ঘুরতে ঘুরতে আমরা সেখানে ফেনা হয়ে যাই। আজকের বাংলাদেশের ডিজুস স্রোতের তোড়ে পথে-ঘাটে এরকম ফেনার মতো তরুণরা ভাসে। রূপকথার ডাকিনী সাহসী রাজপুত্রকে পাথর বানিয়ে ফেলে জাদুবলে আর পণ্যের বাজিকর তাদের ভোগের ফেনার নিরর্থক মত্ততায় ভাসায়, তারা ‘দুনিয়ার সুখে’ খাবি খেতে খেতে বড় হয়। হয়ে কী হয় আজকের বাংলাদেশ তার প্রমাণ। তাই তার সঙ্গে আমাদের দূরত্ব তাই কেবল বাড়তেই থাকবে। আমাদের আয়ু বাড়বে, চেতনা শানিত হবে বা হবে অসাড়, পোড় খাবে বা ক্ষয়ে ক্ষয়ে ঢেলা হবে। সেই ঢেলা কার কী কাজে লাগে?
নকুদের জন্ম ও বেড়ে ওঠা তাই অন্য ইতিহাসের অংশ। তারপরও অসমাপ্ত প্রতিমার সঙ্গে জাগ্রত দেবীর যতটা তুলনা, চন্দ্রমণি দত্তের সঙ্গে অপর কোনো আয়ুষ্মান কবির ততটাই তুলনা। সে হয়ে ওঠার একটি অলখ মুহূর্ত, বুঝবার আগেই মিলিয়ে গেল নিখিলে। এদিক থেকে সুকান্তের সঙ্গে তার আশ্চর্য মিল। সুকান্তের সমুখে যেমন ছিল মানিক বন্দোপাধ্যায়, তার সমুখে তেমন করে ছিলেন আখতারুজ্জামান ইলিয়াস। ইতিহাসের এ এক অদ্ভুত ইশারা।
তিন.
আজকের বাংলাদেশের বেশিরভাগ তরুণদের মনে এরকম কোনো ইশারাভেদের ইচ্ছা জাগে না। ডিজুস কালচারে তারা ঢেকে গেছে। তাদের চোখ দেখার উপায় নাই, ফলে জানারও উপায় নাই, সেখানে আগুন জ্বলে কী না। আজ সেখানে হয় কালো সানগ্লাস অথব বেগুনী মোহ। বিনোদন সংস্কৃতি, কর্পোরেট মিডিয়া পরিবেশিত শরীরী কালচারের অনিঃশেষ ভোগের ডাক তার চিন্তন ক্ষমতাকে অসাড় করে দিচ্ছে। ইন্দ্রিয় কেবল সদাজাগ্রত। সেই ইন্দ্রিয় ভোগ-হিংসা আর প্রতিষ্ঠার নামে উত্তেজিত ও বিহ্বল। বানোয়াট উত্তেজনাও একটা নেশা। সেই নেশা তাদের ধরেছে। তার মাথা নাই চিন্তা করার, হাত নাই ধরার, পা নাই যাওয়ার, চোখ নাই দেখার। তার প্রতিটি অঙ্গেই কারো না কারো পণ্য পরানো। জীবন এখন মিথ্যা হয়ে গেছে, এখণ সত্য হলো বিজ্ঞাপন। বিজ্ঞাপনের ভীড়ে আজকের নায়ক-নায়িকার মুখ আর দেখা যায় না।
তরুণদের চোখে বা মনে কল্পনা না থাকা মানে সমাজের স্বপ্ন মরে যাওয়া। অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন ‘কল্পনা হচ্ছে অবিদ্যমানের নিঃশ্বাস’। যা নাই তার আভাস। তরুণদের স্বপ্নহীন করে দিয়ে আমরা কি সমাজের স্বপ্নকেই হত্যা করেছি? অথচ ক্রুশবিদ্ধ তরুণ যিশুর মূর্তি কি কেনোকালে ভোলা যাবে। আমাদের সময় কেবলই তরুণকে হত্যা করে। ইরাকে যারা মরছে আমেরিকান জল্লাদদের হাতে, তারা তরুণ। যারা মরছে গেরিলাদের হানায় তারাও তরুণ। মুক্তিযুদ্ধে নিহত লক্ষ লক্ষ বাঙালির বেশিরভাগই ছিল তরুণ। গণবাহিনী করতে গিয়ে যুদ্ধের পরপরই রক্ষিবাহিনীর হাতে নিহত হয়েছে আরো কয়েক হাজার তরুণ। আমাদের সমাজ হয় তরুণদের মেরে ফেলে নয়তো তাদের ছুটি দেয় ইতিহাসের দায় থেকে, পরিবর্তনের দায় থেকে। অফুরন্ত অবসরে সে প্রেমের মখশো করবে, কিন্তু শান্তি পাবে না, অনেক ক্যারদানি মারা পোশাক পরবে কিন্তু বারবার নিজেকে হারাবে। ভিডিও গেম, পুল, চ্যাটিং খেলবে- রূপটান লাগাবে, সুন্দর লাগবে তাতে দেখতে। আমরা এদের শূন্য করে সুন্দর হওয়ার সাধনা দিয়েছি। সীতাকুণ্ড পাহাড়ের সন্তান নকুর জীবন হয়তো এর থেকে কিছুটা ভরাট। তাকে হারানো সেই ভরাট জীবনস্পন্দ খুইয়ে ফেলার সমান। তাই,
‘দম্ভিত দালানের অশান্ত শাসনে
তখন চোখের জলে স্মৃতি ভাসে।’
(কবিতা সংলাপ)
চার.
তারপর কোনো এক দিন বিশাল পাথরের গোলার মতো নিয়তি সময়ের ঢাল দিয়ে গড়িয়ে আসে, নিঃশব্দে। নকু সেদিন সিতাকুণ্ড পাহাড়ের নীচে সড়কের ওপর নিয়তির সেই চলনের সামনে পড়ে গিয়েছিল। জীবনানন্দের দিকে ছুটে এসেছিল ট্রাম আর নকুকে পিষে চলে গিয়েছিল একটি ট্রাক। নকু অনেকবার ঐ পাহাড় পেরিয়ে আরো ভেতরে চলে যেতে চেয়েছিল। হায় এই ইচ্ছা-- এই ইচ্ছা জীবন জীইয়ে রাখে। কোথায় এক জবুথবু পাহাড়ের তলে এক তরুণের মনে কৈশোর থেকে পাহাড় পেরুনোর কী এক তাড়না, জীবনের আস্বাদনের ভেতরে একটা কোমল সঙ্কল্পের বীজের এই এক উদ্গ ম_ ইতিহাস এমনই সব আলোড়নের জন্য অপেক্ষা করে। এ ছোট স্পন্দনের বাইরে জীবন কোথায়? তরুণের মনে এরকম সঙ্কল্প ছাড়া কোনো পরিবর্তন কী হয়েছে কোথাও? সেই সঙ্কল্প অনেক অসহায়ত্বে জ্বলে জ্বলে পোড়াকাঠ হওয়া জীবন দিয়ে মানুষের আকাশে রেখে যাওয়া দাগ, জলে আঁককাঠির অপসৃয়মান রেখামাত্র তা নয়।
মন্তব্য
-----------------------------------
মানুষ এখনো বালক,এখনো কেবলি সম্ভাবনা
ফুরোয়নি তার আয়ু
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
হাসান মোরশেদের কোটেশনটা আমিও দিতে চেয়েছিলাম। স্বপ্নহীন পঙ্গুত্বকেই অভ্যর্থনা জানায় আমাদের সমাজ।
চন্দ্রমণি দত্তের বই কি পাওয়া যাচ্ছে কোথাও?
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অজ্ঞাতবাস
বেরিয়েছে, ওটা ঠিকঠাক এডিট করা দরকার ছিল না। যথারীতি হয় নাই। বামপন্থি কাজ তো? আমিও সময় পাই নাই। দেরি দেখে ওরা বের করে ফেলে। এই লেখাটা ওই বইয়ের ভূমিকা।
::::::::::::::::::::::::::::::::::::
বহুদিন হলো নিকষ কুঠার ফেলে এসে ভুলে
দাঁড়িয়েছি আজ মেঘের কিনারে এসে
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
ঘরে শীর্ণ দুটি বৃক্ষের মত বাবা-মা.... এই জায়গাটা মনে ধরল খুব।
..............................................................
শুশুকের ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সাঁতরে এসেছি কুমীরে-ভরা নদী!
দুঃস্থ পিতা-মাতার অসহায় সন্তান, তায় আবার কবি ও বিপ্লবী। তায় সেটিও মরলো। এটা বাস্তবতা নয়, বাস্তবতার ব্ল্যাক হোল। ও আমি ভয় পাই।
::::::::::::::::::::::::::::::::::::
বহুদিন হলো নিকষ কুঠার ফেলে এসে ভুলে
দাঁড়িয়েছি আজ মেঘের কিনারে এসে
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
সীমাহীন অজ্ঞতা!
খুব কাছের কতজনেরই যে খবর রাখি না কিছু!
...................................................................
অসংখ্য 'নেই'-এর ভিড় ঠেলে
জ্বলজ্যান্ত 'আছে' খুঁজে পাওয়া হলো আসল ফকিরি
... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী
কুর্ণিশ ; নকু আর লেখক দু'জনের প্রতিই ।
---------------------------------------------------------
নীল সার্ট নেই বলে কেউ আমাকে নাবিক বলেনি !
অথচ সমুদ্রে-ই ছিলাম আমি
---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !
মাথা নত করে নিলাম
::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::
মনে হয় তবু স্বপ্ন থেকে জেগে
মানুষের মুখচ্ছবি দেখি বাতি জ্বেলে
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
নতুন মন্তব্য করুন