এতক্ষণে অরিন্দম কহিলা বিষাদে!
সবাই এত হাসি হাসি কেন? সবাই এত রাজি রাজি কেন? এ ওকে লম্পট বলছে ও একে জারজ বলছে। জমছে। সেখানেই সন্দেহ, এ নাটকের স্ক্রিপ্ট কার লেখা?
ফখরুদ্দীন সাহেব বলেছেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য আইনের দরজা খোলা আছে। নির্বাচন কমিশনও নৈতিক ঐকমত্য জানিয়েছে। তাহলে বেড়ালের গলায় ঘন্টাটা ঝুলাবে কে?
তারা বলছেন কোনো মামলা করা হয় নাই। কথাটা সত্য নয়, অনেক মামলাই হয়েছে ৩৬ বছরে। একটার উদাহরণ দিই।
''ফরিদা বানু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শিক্ষক গিয়াসউদ্দিন আহমেদের ছোট বোন। ১৯৯৭ সালের ২৪ সেপ্টেম্বরে রমনা থানায় তিনি একটি মামলা দায়ের করেন। তার অভিযোগ, ১৯৭১-এর ১৪ ডিসেম্বরে তার ভাইকে অপহরণ ও হত্যা করা হয়েছিল। প্রতিদিন রুটিনমাফিক নানারকম এফআইআর রমনা থানাকে গ্রহণ করতে হয়, কিন্তু এটি সাধারণ কোনো এফআইআর ছিল না। গণহত্যায় নিহত হওয়া এক শহীদ বুদ্ধিজীবীর বোন ২৬ বছর পর তার ভাই হত্যার বিচার চাইতে এসেছেন। এই মামলার মধ্যে দিয়েই আবার উঠে আসে একাত্তরের ঘাতকদের বিচারের প্রশ্নটি। কেবল ফরিদা বানুই নন, মুক্তিযুব্দ নিহত আনুমানিক ৩০ লাখ শহীদের জীবিত আপনজনেরা এখনও তাদের প্রিয়জনের নির্মম হত্যার বিচারের দাবি ত্যাগ করেননি।'' (দৈনিক সমকাল ১৬ ডিসেম্বর, ২০০৬ সালে আমার করা একটি রিপোর্ট।)
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, বিচারের দাবি আছে কিন্তু রাষ্ট্র তা স্বীকার করছে না বলে বিচার হচ্ছে না। এটা খুবই সাদা ব্যাপার। এর মধ্যে কোনো ঘোলানো বিষয় নাই। যতক্ষণ না রাষ্ট্র সিদ্ধান্ত নেবে যে বিচার হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত এ বিষয়ে ব্যক্তির মামলা বেশিদূর যাবে না। তুনিয়ার কোথায় হয় নাই। গোলাম আজমের মামলার কথা খেয়াল করুন। তার পরিণতি কী হয়েছিল?
এর মধ্যে আমি অন্য ঘ্রাণ পাচ্ছি। এখনই বিশদ বলার সময় আসেনি। কিন্তু মনে হচ্ছে, বিচারের থেকে বিচার নিয়ে কোন্দলটাই কারো কারো বেশি চাওয়া। কিংবা বিচারের ছলে ২/১ জনের প্রার্থীতা বাতিল করে দিয়ে বাকিদের খালাস দেয়া। মনে রাখতে হবে ১৯৭২-এ মার্কিন-সৌদি চাপেই সরকারকে পিছু হঠতে হয়েছিল। এবং নিজামীরা সেসময় সিআইয়ের তালিকা ধরেই বুদ্ধিজীবী নিধন করেছিল। আরো মনে রাখা দরকার যে, রিচার্ড বাউচার বাংলাদেশে এসে জামাত সম্পর্কে বলেছিলেন, জামাত মুসলিম মডারেট গণতান্ত্রিক দল। এটাই জামাত সম্পর্কে তাদের অবস্থান। আর বর্তমান সময়ে জামাত তাদের বাংলাদেশ বিষয়ক পরিকল্পনার পঞ্চম বাহিনী। সুতরাং ডাল মে কুছ কালা হ্যায়।
দ্বিতীয়ত, যুদ্ধাপরাধ ব্যক্তির বিরুদ্ধে করা হয় না, করা হয় রাষ্ট্র এবং জাতির বিরুদ্ধে। বাংলাদেশ জাতিরাষ্ট্র। সুতরাং রাষ্ট্রের দায়িত্ব বিচারের ব্যবস্থা করা। জেনেভা কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী হিসাবে এটা বাংলাদেশের জন্য বাধ্যবাধকতা। তা না করে তারা চাইছেন, এটা নিয়ে সমাজে কোন্দল সৃষ্টি করে এমন কিছূ করা যাতে সাপও মরবে লাঠিও ভাংবে না। তারা দুর্নীতির বিচার, সংস্কার ইত্যাদির বেলাতেও তা-ই করেছেন। জনপ্রিয় ইস্যু তাতে আরো বিতর্কিত হয়েছে।
আর আজ ৩৬ বছর পর রাষ্ট্র না চাইলে কোনো অপরাধীর বিপক্ষেই পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণ সম্ভব না। তার জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল চাই। এটা তো ফৌজদারি অপরাধ নয়, ঘাতকরা কাউকে ব্যক্তিগতভাবে হত্যা করেনি। তারা তাদের রাজণৈতিক শত্রু হিসাবেই তা করেছে। সে কারণেই তারা চিরকালই জাতীয় শত্রু হিসাবেই গণ্য হবে। রাষ্ট্রের চরিত্র বদল হলেও তাতে কিছু যাবে আসবে না। যেহেতু তারা রাষ্ট্র ও জাতিরই শত্রুতা করেছিল ২৬ মার্চের পর। তাই এ রাষ্ট্র যতক্ষণ না তা করছে, ততক্ষণ রাষ্ট্রই অপরাধী থেকে যাবে, গণহত্যাকারীদের পৃষ্ঠপোষকতার দায়ে। মুজাহিদীর মন্তব্য যে সংবিধানবিরোধী সেটা প্রমাণ করার দায়িত্ব তাই রাষ্ট্রের অর্থাত সরকারের।
এখান থেকে দৃষ্টি সরানোর জন্য যারাই যা বলছেন, তার পেছনে অন্য কোনো নীল নক্শা নেই তো? আমার সন্দেহ আছে। সময়েই তা প্রমাণিত হবে। সেজন্য ভাই, কেবল ঘৃণার মাহফিল বসিয়ে লাভ নাই। কূটচালগুলো ধরতে হবে এবং জানাতে হবে।
আর যারা মামলা খুঁজছেন কিন্তু যুদ্ধাপরাধী খুঁজছেন না, তাদের উদ্দেশ্যে সুকুমার রায়ের এই ছড়া, 'ধেড়েটার বুদ্ধি দেখ। চড় মেরে সে নিজের গালে, কে মেরেছে দেখবে বলে, উঠেছে গিয়ে টিনের চালে'।
আসুন ক্ষমতার কুতুব মিনার থেকে আমরা তাদের মাটিতে নেমে দেখতে বলি কার শরীর থেকে এখনও রক্ত ঝরছে, আর কার হাতে এখনও রক্ত লেগে আছে। নতুন রক্তপাতের আগেই তা নিরূপণ জুররি। সময় নাই।
মন্তব্য
রাষ্ট্র স্ব-ইচ্ছায় সিদ্ধান্ত নেবার বাস্তব সম্ভাবনা শুন্যের কোঠায়। রাষ্ট্র যেটা করার সম্ভাবনা বেশী তা হলো কিছুদিন বিষয়টা নিয়ে আলাপ করিয়ে দূর্বল মামলা দিয়ে দুয়েকজন জামাত নেতাকে জেলে পিকনিক করিয়ে তারপর হান্নান সাহেবের বক্তব্যকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া। তবে রাষ্ট্রকে কখনো কখনো বাধ্যও করা যায়। তার পথই খুজতে হবে।
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অজ্ঞাতবাস
.
একমত@ সুমন চৌধুরী।।
আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
গন্ধটা আমার কাছেও অন্যরকম লাগছে।গোলাম আজম স্টাইলের বিচারের পরিনতি তো সবার জানা।ওইরকম কিছু হলে একাত্তর শোধবোদ হয়ে যাবে।মুক্তিযুদ্ধ বলতে কোন শব্দ থাকবে না।
---------------------------------------------------------
ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.
SEEKING INFORMATION AGAINST INTERNATIONAL TERRORISM [War Crimes]
http://www.rewardsforjustice.net/index.cfm?page=wci&language=english
ফাকা মাঠে গোল করার সুযোগ তৈরী করা হচ্ছে ।
-----------------------------------
মানুষ এখনো বালক,এখনো কেবলি সম্ভাবনা
ফুরোয়নি তার আয়ু
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
এখন কিন্তু এই বিষয়ে বিপুল তথ্যপ্রবাহ একটা অস্ত্র হতে পারে।
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অজ্ঞাতবাস
লে. জে ইবরাহিম এমন একটি সন্দেহের কথা কয়েকদিন আগে বলেছিলেন- আগামি বিজয়ের দিনকে সামনে রেখে এবং বিশেষ করে এমন একটি অসাংবিধানিক সরকারের দুর্বল সময়ে বিষয়টি নিয়ে নানাকথা হচ্ছে যে, ঘোরতর সন্দেহ হয় অন্য কোনো উদ্দেশ্য নেই তো ! সবাইকে তিনি সতর্ক থাকতে আহ্বান জানিয়েছিলেন। আপনার লেখায় তারই ব্যাখ্যা পাওয়া গেল। কিন্তু আশায় যে বুক বাঁধতে ইচ্ছে করে!
--------------------------------------------------------
দেয়ালে দেয়ালে মনের খেয়ালে/ লিখি কথা ।
আমি যে বেকার, পেয়েছি লেখার/ স্বাধীনতা ।।
ভালো ভালো কিছু পয়েন্ট তুলে ধরেছেন। প্রশ্ন হল কি করা যেতে পারে এখন?
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
আবারো বলি, বাংলাদেশে বা বিশ্বে নব্য রক্ষণশীল তরিকা হলো, এখন সবকিছূই করা হয় ভালোর নামে, কিন্তু ফল হয় খারাপ। যেমন আগামী নির্বাচনে জামাতকে বর্জন করা হলো। কারণ জামাতের সমর্থন ছাড়া সরকার গঠন করা কারো পক্ষে সম্ভব না। তো সেরকম একটি সরকার ব্যর্থ হলো বা নির্বাচনই ভণ্ডুল হলো। তারপর যেই লাউ সেই কদু।
এখন এতটুকুই, আশা করি ঘটনার সূত্র আর কয়েকদিনেই ফকফকা হবে। গল্পটা মনে আছে তো, সেই যে বান্দর নাচ দেখিয়ে ভীড় জমিয়ে পকেটমারা সারা!
;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;
বহুদিন হলো নিকষ কুঠার ফেলে এসে ভুলে
দাঁড়িয়েছি আজ মেঘের কিনারে এসে
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
হ্যাঁ,সত্যিই তাই, দারুন একটা বানর নাচের আয়োজন করেছে রাষ্ট্র। হাততালিয়া বাজিয়েরাও প্রস্তুত। প্রস্তুত না কেবল আমরা-যাদের পকেটমারা সারা হবে।
ফারুক ভাইকে ধন্যবাদ।
জুয়েল বিন জহির
নতুন মন্তব্য করুন