যেকোনো নির্বাচনের সঠিক প্রেডিকশন করা সত্যিকার অর্থেই একটা প্রচন্ড দুরূহ কাজ। খোদ আমেরিকাতে, যেখানে পুরো নির্বাচনকালীন সময়ে সারা দেশজুড়ে হাজারখানেক জনমত জরিপ হয়, সেখানেও গত প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনের প্রায় সকল জরিপের ফলাফল হিলারির পক্ষেই ছিল। আর বাংলাদেশের এই নির্বাচনের জন্য, যেখানে কোনোই নিরপক্ষীয় সাম্প্রতিক জরিপ নেই, সেখানে যেকোনো প্রেডিকশনই আসলে সার্বিক পরিস্থিতির ব্যক্তিগত ধারণামূলক আন্দাজ ছাড়া আর কিছু না। ২০১৪-১৫ পর্যন্ত ডেইলি ষ্টার/প্রথম আলো বিভিন্ন মার্কেট রিসার্চ ফার্মকে দিয়ে জনমত জরিপ করত, গত ২-৩ বছর ধরে কেন জানি করছে না। নির্বাচনী জরিপ বলতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সজীব ওয়াজেদ জয় পরিচালিত একটা জরিপ, যেখানে ৫১ টা আসনে ৫১ হাজার ভোটারের মধ্যে করা জরিপের ভিত্তিতে প্রেডিক্ট করা হচ্ছে আওয়ামী লীগ এককভাবেই (মহাজোটের অন্যান্য শরিক বাদে) ১৬৮-২২২ টি আসন পাবে। অন্যদিকে দুইদিন আগে Research and Development Center (RDC) নামে একটা প্রতিষ্ঠানের জরিপে দাবি করা হচ্ছে মহাজোট ২৪৮ টি আর ঐক্যফ্রন্ট ৪৯ টি আসন পাবে। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানের সাথেও আওয়ামী সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আছে। কোনো নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠানের সর্বশেষ করা জরিপ প্রকাশিত হয়েছে এবছর জুন মাসে, আমেরিকার International Republican Institute (IRI) পরিচালিত জরিপ, যার সময়সীমা এপ্রিল-মে ২০১৮। এই জরিপে দলগুলোকে সমর্থনের ব্যাপারে সরাসরি প্রশ্ন করা হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত "এপ্রুভাল" রেটিং ও দেশের অবস্থার প্রতি সন্তুষ্টি মোটামুটিভাগে ৬০-৬৫ ভাগের মধ্যে থাকলেও সেটা ভোটের ময়দানে ঠিক কতটুকু ডিরেক্ট ট্রান্সলেট হবে, সেটা বোঝা কঠিন। কারণ এর আগেও বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা দল হিসাবে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তার চেয়ে অনেক বেশি। এছাড়াও এ জরিপের পর থেকে, অর্থাৎ মে থেকে ডিসেম্বরের রাজনীতির ময়দানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে, যেগুলোর নির্বাচনী প্রভাবের এনালিসিস কোনো জরিপেই আসেনি।
তাই আসলে সংবাদপত্রের রিপোর্ট আর ফেসবুকে মানুষজনের কথাবার্তার ধরণ থেকে যে যার মতো আমরা আন্দাজ করছি নির্বাচনের হালহকিকত। কেউ কেউ হয়ত ফেসবুকে বিভিন্ন পোলের মাধ্যমে ভোটের হাওয়া বোঝার চেষ্টা করছি। কিন্তু যেটা বুঝলাম, ব্যক্তি পর্যায়ে যার যার রাজনৈতিক অবস্থানের প্রতিফলনই তাদের দেয়া ফেসবুক পোলগুলোতে উঠে আসছে। আওয়ামী পন্থীদের দেয়া পোলগুলোতে নৌকার একচেটিয়া প্রাধান্য, আর বিএনপি সমর্থকদের দেয়া পোলগুলোতে ধানের শীষের প্রাধান্য। এ থেকে জনপ্রিয়তার বাস্তব অবস্থার ধারণা পাওয়া কঠিন। তবে একটা জিনিস বোঝা যাচ্ছে, নির্বাচনী প্রচারে প্রায় সারা দেশেই মহাজোটের প্রার্থীরা সব দিক থেকেই এগিয়ে আছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের তুলনায়। কিছু জায়গায় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের উপরেও সরাসরি হামলা হয়েছে, নেতা কর্মীদের উপর হামলা, ভয় ভীতি প্রদর্শনের বহু নজির আছে। প্রশাসনিক পরিস্থিতিও মনে হচ্ছে ঐক্যফ্রন্টের পুরোপুরিই প্রতিকূলে। এমনিতেও ঐক্যফ্রন্ট শেষ মুহূর্তে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেয়াতে ঘর গোছানোর সময় পেয়েছে অনেক কম। এর উপর যোগ হয়েছে শেখ হাসিনার একক কাল্টের বিপরীতে ঐক্যফ্রন্টের নেতৃত্ব নিয়ে ধোঁয়াশা আর শেষ পর্যন্ত আদৌ নির্বাচনে থাকবে কিনা বিএনপি, সেটা নিয়েও জল্পনা কল্পনা। এ সব কিছু মিলিয়ে মনে হচ্ছে প্রস্তুতি ও নিজেদের ভোটারদের মনোবল বাড়িয়ে ভোটকেন্দ্রে আনায় উদ্বুদ্ধ করার লড়াইয়ে ঐক্যফ্রন্ট অনেকটাই পিছিয়ে আছে। এই বাস্তবতায় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে মহাজোটের ২০০৮ এর বিশাল বিজয়ের সমীকরণকে উল্টে দিয়ে নিজেদের জন্য জয় ছিনিয়ে আনা অনেকটাই অসম্ভব বলে মনে হচ্ছে আমার কাছে।
২০০৮ এর আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের বিজয়টা ঠিক কতটুকু বিশাল ছিল? ২০০৮ এ মহাজোটের ভোট ৫৬%, সিট ২৬২ টি, নির্বাচনের টার্ন আউট ৮৫%। বাংলাদেশের ইতিহাসে ১৯৭৩ সালের পর সকল দলের বড় দলের অংশগ্রহণে হওয়া কোনো নির্বাচনে এর চেয়ে বেশি ভোট বা সিট নিয়ে কোনো দল বা জোট ক্ষমতায় আসেনি। সারা দেশে বিএনপির অস্তিত্ব কেবল বৃহত্তর বগুড়া, বৃহত্তর নোয়াখালী, দক্ষিণ চট্টগ্রাম ছাড়া আর হাতে গোণা দুয়েকটা সিটে। অন্যভাবে চিন্তা করলে ৫৬ হাজার বর্গমাইলের ৫০ হাজার বর্গমাইল থেকেই বি এন পির চিহ্ন মুছে গিয়েছিল। সেখান থেকে স্রোত নিজেদের দিকে ঘুরাতে ঐক্যফ্রন্টের দরকার নিজেদের পক্ষে একটা বিশাল ভোট সুইং।
অবশ্য ১৯৯১ সালের পর থেকে প্রতিটা নির্বাচনেই সবশেষ সরকারের বিরুদ্ধে কম-বেশি সুইং হয়েছে। আবার জোট মেরুকরণের রাজনীতির কারণে কিছু যোগ বিয়োগের খেলাও চলেছে। কিন্তু ২০০৮ আর ২০১৮ তে জোটের চেহারা মোটামুটি একই রয়ে গেছে। ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে কিছু দল বি এন পির সাথে আসলেও নির্বাচনী হিসাবে এদের সমন্বিত প্রভাব টাঙ্গাইল ও চট্টগ্রামের বাইরে নেই। লীগের ক্ষেত্রে বিকল্প ধারার যোগ হওয়াটা এক দুইটা আসনের বেশি কোনো প্রভাব রাখবে না। তাই এবারের নির্বাচনের মূল হিসাবটাই হবে সরকারবিরোধী সুইং ভোটারদের ভোট দিতে কতটুকু উদ্বুদ্ধ করতে পারবে ঐক্যফ্রন্ট।
সরকারবিরোধী সুইং ভোটারের হার ঠিক কতটুকু হবে, সেটার নির্ণয়ে আমার মতে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর কাজ করবে।
১. ২০০৮ এ যারা নৌকায় ভোট দিয়েছিল, তাদের মধ্যে একটা অংশ এন্টি ইনকামবেনসির কারণে এবারে বি এন পিকে ভোট দেবে।
২. প্রতিটি আসনে গত ১০ বছরে যোগ হওয়া নতুন তরুণ ভোটারদের মধ্যে সুইংয়ের হার বেশি হবে। তরুণেরা সবসময়ই বাংলাদেশে সরকারবিরোধী সুইংয়ের মূল চালিকাশক্তি। এছাড়াও গত ছয়মাসে নেয়া কিছু কিছু পদক্ষেপের কারণে তরুণ প্রজন্মের ভোটের একটা অংশ আওয়ামী লীগ হারানোর কথা। উল্লেখ্য মোট ভোটারের প্রায় ২৫% ২০০৮ এর পরের ভোটার।
৩. শহরাঞ্চলে সুইং ভোটের হার গ্রামাঞ্চল থেকে কিছুটা বেশি হবে। কারণ সরকারবিরোধী প্রচারণাগুলো সাধারণত শহরকেন্দ্রিক শিক্ষিত মধ্যবিত্তকে টার্গেট করেই করা হয়, আর শহরাঞ্চলে অনলাইন মিডিয়া এক্সেসের কারণে এই প্রচারের কার্যকারিতাও বেশি। শহরের মধ্যেও আবার জেলা শহরের তুলনায় বড় শহরগুলোর সুইং বেশি হয়, আর সবচাইতে বেশি সুইং হয় রাজধানী শহর ঢাকায়।
৪. এগুলোর পাশাপাশি বিগত নির্বাচনগুলোর ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায় সুইং ফ্যাক্টরগুলো সকল এলাকায় সমানভাবে প্রযোজ্য হয়না। কোন এলাকায় কতটুকু সুইং হবে, সেটা আগে থেকে বোঝার সহজ কোনো উপায় নেই, সেটা বহু লোকাল ফ্যাক্টরের, যেমন প্রার্থীর যোগ্যতা, ইতিহাস, এলাকার স্থানীয় জনবিন্যাস উপরে নির্ভর করে। তবে একটা সাধারণ ট্রেন্ড হচ্ছে যেসব এলাকায় সরকারি দলের শক্তি বেশি, সেসব এলাকায় স্যুইং কম হয়। যেমন ধরা যাক ২০০৮ এর বিএনপির ভোট ২০০১ এর তুলনায় ২০% এর বেশি কমলেও বিএনপির ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত বগুড়া ও নোয়াখালী অঞ্চলে ভোট কমেছিল ১০% এর কম। এই প্রবণতার আমি নাম দিয়েছি "অটুট দুর্গ প্রতিরোধ", আর এই প্রবণতা শুধু আসনভিত্তিকই নয়, বরং কেন্দ্রভিত্তিকও, অর্থাৎ বিভিন্ন আসনে যে কেন্দ্রগুলোতে আওয়ামী লীগের বিগত বছরগুলোতে ভোটের হার বেশি, সে সব জায়গায় আওয়ামী লীগের ভোট ধরে রাখার হারটাও বেশি হবে, অর্থাৎ সুইং কম হবে। সুইংয়ের বাস্তবানুগ মডেলের জন্য এই অটুট দুর্গের ধারণাটাকেও প্রয়োগ করা প্রয়োজন।
এই চারটি ফ্যাক্টরের বাইরে জাতীয় পার্টির দ্বৈত প্রার্থিতার কারণে কিছু কিছু আসনে মহাজোটের ভোটে ভাগের কারণে হাতছাড়া হবে। অন্যদিকে শেষ মুহূর্তে বাতিল প্রার্থিতার কারণে নয়টি আসনে অন্যদলের আর সাতটি আসনে বিকল্প দলীয় প্রার্থীকে সমর্থন দিতে হচ্ছে বি এন পিকে। একটি আসনে বি এন পি সমর্থিত কোনো প্রার্থীই নেই। এসবের কারণে বি এন পি কিছু আসন হারাবে।
এই সবগুলো ফ্যাক্টর বিবেচনায় এনে নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টের সুযোগ বিশ্লেষণ করার জন্য তিনটি ভিন্ন সিনারিও কনসিডার করতে পারি:
১. ঐক্যফ্রন্টের জন্য নিম্নসীমা (lower limit):
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে করা জরিপগুলোতেও মহাজোটের সম্ভাব্য আসন সংখ্যা ২০০৮ এর আসন সংখ্যা থেকে কম। এর অর্থ হচ্ছে সামান্য হলেও মহাজোটের ভোট কমবে ২০০৮ এর তুলনায়। ঐক্যফ্রন্টের জন্য নিম্নসীমা হিসাবে যে সিনারিওটি আমি ধরছি, তা হলো পুরোনো ভোটারদের মধ্যে কোনো সুইং হবেনা। নতুন ভোটারদের (২০০৮-২০১৮) মধ্যে গ্রামাঞ্চলে ১০% সুইং হবে। আর শহরাঞ্চলে কিছু অতিরিক্ত সুইং হবে। এই সুইং এর পরিমাণ জেলা শহরে ২.৫%, বিভাগীয় সদরে ৫% আর ঢাকায় ১০% হারে হবে। এই হিসাবে দেখা যাচ্ছে ঐক্যফ্রন্টের আসন সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৯ টি, আর বাকি আড়াইশো আসনে মহাজোট জেতে। ঐক্যফ্রন্টের জেতা আসনগুলো (BNP Very Likely Seats) প্রথম ছবিতে দেয়া হলো। মূলত ২০০৮ এ বিএনপি জামাতের জিতে আসা আসনগুলোর বাইরে খুব অল্প ব্যবধানে হেরে যাওয়া ডজনখানেক অতিরিক্ত আসনে জিতবে ঐক্যফ্রন্ট। অবশ্যই এলাকাভিত্তিক বাস্তব পরিস্থিতির ভিন্নতার কারণে কিছু গরমিল হতে পারে, কিন্তু আমার ধারণা এই আসনগুলোর সিংহভাগই এবার ঐক্যফ্রন্টের দখলে থাকবে।
২. ঐক্যফ্রন্টের জন্য সম্ভাব্য ফলাফল (likely result):
প্রথম সিনারিওতে সুইং এর যে হার ধরা হয়েছে, মাঠ পর্যায়ের সকল বাস্তবতা ও দুর্বলতার পরেও আমার ধারণা সুইং এর হার এর চেয়ে বেশি হবে। মোটামুটি ৬০-৬৫ ভাগ ভোট যদি কাস্ট হয়, সেক্ষেত্রে দেখা যাবে এন্টি ইন্কাম্বেন্সি ফ্যাক্টর আরো বেশি রোল প্লে করবে। আমার ব্যক্তিগত অভিমত হচ্ছে পুরনো ভোটারদের মধ্যে সুইংয়ের হার ৫% আর নতুন ভোটারদের মধ্যে সুইংয়ের হার অতিরিক্ত ১০% (অর্থাৎ মোট ১৫%) থাকবে গ্রামাঞ্চলে। শহরাঞ্চলে এর বাইরেও অতিরিক্ত ২.৫/৫/১০% (জেলা/বিভাগ/ঢাকা) যুক্ত হবে। এই সিনারিওতে বিএনপি প্রথম সিনারিওর ৪৯ টি আসনের বাইরেও আরো ৩৫ টি অতিরিক্ত আসন পাবে (দ্বিতীয় চিত্র (BNP Likely Seats)), অর্থাৎ ঐক্যফ্রন্টের মোট আসন দাঁড়াবে ৮৪ টি। ২১৫ টি আসন জিতবে মহাজোট। ঐক্যফ্রন্টের নতুনভাবে জেতা এই আসনগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই উত্তরবঙ্গ আর দক্ষিণাঞ্চলে। ইন্টারেস্টিং হচ্ছে এই হিসাব অনুযায়ী সিলেট-১ এ ঐক্যফ্রন্ট জিতলেও সরকারে থাকবে আওয়ামী লীগ, যেটা স্বাধীন বাংলাদেশে কখনোই হয়নি এ পর্যন্ত। এছাড়াও ঢাকার একটা আসন ঢাকা-৬ আর চট্টগ্রামের চারটা আসন ঐক্যফ্রন্টের ঝুলিতে আসে।
৩. ঐক্যফ্রন্টের জন্য উচ্চসীমা (Upper limit):
যদি ভোট ৬৫ শতাংশের বেশি পড়ে সেক্ষেত্রে সুইঙের হার আরো বেশি হবে। তবে মাঠ পর্যায়ের বাস্তবতায় আমার ব্যক্তিগতভাবে মনে হয় গ্রামাঞ্চলে পুরোনো ভোটারের সুইং ১০%, নতুন ভোটারের অতিরিক্ত সুইং ১৫% (অর্থাৎ নতুন ভোটারের সুইং ২৫%) এর বেশি নেয়া কোনোভাবেই সম্ভব হবেনা ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে। এর সাথে শহরাঞ্চলের অতিরিক্ত ২.৫/৫/১০% সুইং ধরলেও ঐক্যফ্রন্টের সর্বোচ্চ আসন সংখ্যা দাঁড়াবে ১২৯। অর্থাৎ প্রথম ও দ্বিতীয় সিনারিওর অতিরিক্ত আরো ৪৫ টি আসনে ঐক্যফ্রন্ট তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার পর জিততে পারে (তৃতীয় চিত্র: BNP Competitive Seat). এই ৪৯ টি আসনের ঢাকার আসন ৬ টি (ঢাকা-৫, ৮, ১২, ১৩, ১৫, ১৬), অর্থাৎ ঢাকা মহানগরের বেশিরভাগ আসনেই ঐক্যফ্রন্টের জয়ী হবার সুযোগ থাকবে। রাজশাহী বিভাগ ও চট্টগ্রাম বিভাগে ঐক্যফ্রন্টের প্রাধান্য থাকবে। এর পরেও ১৭১ টি সিট নিয়ে মহাজোটের সরকার ক্ষমতায় আসবে। এই সিনারিওর সকল আসনওয়ারি ভোটের হিসাব এই লিংকে (https://drive.google.com/file/d/19EPj9HJmobxIwWdpEIT_akc14IiUQ3S0/view?usp=sharing) দেয়া হলো।
ঐক্যফ্রন্টের জন্য কি জিতে আসা একেবারেই অসম্ভব? গাণিতিকভাবে অবশ্যই অসম্ভব না। তৃতীয় সিনারিও থেকে সুইংয়ের পরিমাণ যদি আরো ২.৫% বেশি হয়, তাহলেই নির্বাচন Tie হবে। কিন্তু এই ২.৫% অতিরিক্ত সুইং আনতে হলে যে পরিমাণ "জোয়ার" তুলতে হবে, দলীয় ভোটারদের মাঝে যেভাবে বাঁধাবিপত্তি জয় করার মানসিকতা তৈরী করতে হবে, যে প্রতিবন্ধকতা পার করতে হবে ঐক্যফ্রন্টকে, সেটা করার সামর্থ্য বা বাস্তবতা, কোনোটাই আছে বলে মনে হয়না আমার কাছে। তাই আমার ধারণা এই ১২৯ টি আসনের কাছাকাছি যেতে পারাটাই বিশাল একটা প্রাপ্তি হবে ঐক্যফ্রন্টের, বাকি ১৭১ টি আসনের কোনটি থেকেই জিতে আসা তাদের জন্য প্রায় অসম্ভব। তবে সব কিছুই শেষ পর্যন্ত ভোটারদের হাতে। যদি ভোটার টার্ন আউট ৫০% এর নিচে হয়, সেক্ষেত্রে নিশ্চিত আসনগুলোরও কিছু হারাতে পারে ঐক্যফ্রন্ট। টার্নআউট ৭৫% পার হলে অপ্রত্যাশিত ফলাফলও হতে পারে। কিন্তু আমাকে প্রশ্ন করলে আমি ঐক্যফ্রন্টের আসন সংখ্যা ৮৪ এর আশেপাশেই রাখব।
এই হলো নির্বাচনে আমার ব্যক্তিগত পূর্বাভাস। মাত্র একদিন পরেই সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটবে। যারা দেশে আছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আপনার ভোটাধিকার প্রয়োগ করুন, তা যে দলকেই সমর্থন করেন না কেন।
মন্তব্য
পূর্বাভাস তো পুরোপুরি ব্যর্থ! অবশ্য আমার অনুমানও পুরোপুরি ভুল প্রমানিত। এবং বলাইবাহুল্য দেশের, হয়ত বা সারা বিশ্বের সবার অনুমানই সম্পুর্নরুপে ব্যর্থ।
"হয়ত বা সারা বিশ্বের সবার অনুমানই সম্পুর্নরুপে ব্যর্থ।"
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
কোন কিছুই আল্লাহ্র ইচ্ছা ও হুকুম ব্যতীত সংঘটিত হয় না। সুতরাং যারা ঘটিত বিষয়ে আল্লাহ্ ভিন্ন অন্য কারো ইচ্ছা ও হুকুমের প্রতি নির্দেশ করে থাকে তারা নাফরমানী করল।
গায়েবের মালিক একমাত্র আল্লাহ্। ভবিষ্যতে কী ঘটবে সে সম্পর্কে যারা নানা প্রকার ভবিষ্যদ্বানী করে বা পূর্বাভাস দেয় তারা সত্য সম্পর্কে বেখবর। তারা জানে না ভবিষ্যতের গর্ভে আল্লাহ্ কী নিয়ামাৎ বা গযব্ লুকিয়ে রেখেছেন। সেসব না জেনে অজ্ঞতাপ্রসূত পূর্বাভাস দেয়াও একপ্রকার নাফরমানী।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ব্যক্তিগত পরিচয় না থাকলে কনফিউজড হয়ে যেতাম।
আমি নিজে স্তম্ভিত, হতবাক, বিমূঢ়, প্রস্তরীভূত, কাষ্ঠপুত্তলিকাবৎ, তুষারিত, গতিহীন ধারা ...........
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
সে কারনেই পূর্বাভাস দেয়ার মত কোন নাফরমানী কাজ করা থেকে বিরত থেকেছি, এমনকি ফলাফল প্রকাশের আগে সে সম্পর্কে কিছুমাত্র বাৎচিত করি নাই। যৎকিঞ্চিত অনুমান করেছিলাম মাত্র, কিন্তু খুব নিরাপদ গোছের কোন কিছু অনুমান করাও যে কত বড় আহাম্মকের কাজ হয়ে উঠতে পারে গায়েবুল মালিক সেটাই যেন হাড়ে হাড়ে টের পাইয়ে দিলেন।
নতুন মন্তব্য করুন