[সম্প্রতি আমেরিকার নিউজার্সি এয়ারপোর্টে ভারতীয় চলচ্চিত্র তারকা শাহরুখ খান হেনস্তার শিকার হয়েছেন। ইউরোপ বা আমেরিকায় বসবাসরত দক্ষিণ এশীয় নাগরিকদের অনেক সময় এ ধরনের তিক্ত অভিজ্ঞতার মুখে পড়তে হয়। ভারতের প্রখ্যাত সাংবাদিক কূলদীপ নায়ারের সাম্প্রতিক একটি লেখা অনুবাদ করে তুলে দিলাম।]
বারাক ওবামা প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পরও যুক্তরাষ্ট্র কেন তার বর্ণবাদী ও সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি অব্যাহত রেখেছে তার অজস্র ব্যাখ্যা থাকতে পারে। একটি হচ্ছে, শ্বেতাঙ্গরা ভাবছে ওবামাকে দেশের সর্বোচ্চ পদে বসিয়েই অশ্বেতাঙ্গ বিশ্বের প্রতি তারা বুঝি তাদের দায় চুকিয়েছে। ওবামার প্রেসিডেন্ট হওয়ার মতো ঘটনাও যুক্তরাষ্ট্রকে উদারপন্থী হয়ে উঠতে দেয়নি। সত্যি বলতে কি, যে রক্ষণশীল পথ ওবামা গ্রহণ করছেন, তাতে পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে যে শুরুতে পুঁজিবাদ ও বর্ণবাদের বিরুদ্ধে তিনি যে উদারনৈতিক অবস্থান নিয়েছিলেন, তার চেয়ে শ্বেতাঙ্গদের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনই তার কাছে এখন বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
আমি খুবই আশাহত হয়েছি। কারণ আমি তার মধ্যে লিঙ্কন, রুজভেল্ট ও কেনেডির ছায়া দেখতে পেয়েছিলাম। কিন্তু ওবামা যা করছেন তা অত্যন্ত ভাসা ভাসা কিছু পরিবর্তন। তিনি দৃশ্যত বর্ণবাদ ও ধর্মীয় স্বার্থের সঙ্গেই আপস করছেন। পুনর্মূল্যায়ন করলে বলতে হয়, তাঁর নির্বাচনপূর্ব বক্তৃতা ছিল আসলে নির্বাচনে জয়লাভের কৌশল মাত্র। তাঁর জন্য সত্যিই দুঃখ হয়। দুঃখ হয় যুক্তরাষ্ট্রের জন্যও, যেখানে আশার আলো দেখা দিয়েও মিলিয়ে গেল।
সম্প্রিত নিউজার্সি এয়ারপোর্টে শাহরুখ খানকে দুই ঘণ্টা আটকে রেখে যে আচরণ করা হয়েছে, তা আসলে সাম্প্রদায়িক ভেদনীতির প্রমাণ। মুসলমান হওয়ায় তাঁর 'অপরাধ' দ্বিগুণ মাত্রা পায়। পক্ষপাতমূলকভাবে তাঁকে যেসব প্রশ্ন করা হয়েছে, তার কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। মামুলি অজুহাত দেখানো হয়, তাঁর মালপত্র পরীক্ষা করতে কিছু সময় প্রয়োজন ছিল। তাঁর সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, এটি তার জবাব হিসেবে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের আচরণ মার্কিনিরা এশিয় ও অশেতাঙ্গদের সঙ্গে প্রায়ই করে থাকে।
যখন গণতান্ত্রিক যুক্তরাষ্ট্রের জায়গা দখল করে নিয়েছে উদ্ধত ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন যুক্তরাষ্ট্র, তখনই আসলে যুক্তরাষ্ট্রের মৃত্যু হয়েছে। এই হচ্ছে সার কথা। কর্তৃপক্ষ শাহরুখ খানের সঙ্গে ন্যূনতম ভদ্রতা প্রদর্শন করেনি। এশিয়ার একজন স্বনামধন্য ব্যক্তিকে হেনস্তা করার জন্য কাউকে জবাবদিহি করতে হয়নি, কাউকে শাস্তিও পেতে হয়নি। শাহরুখ খানের বিষয়টিকে 'মামুলি ভুল' বলে চালিয়ে দেওয়া যায় না, কারণ তিনি গত মাসেই সে দেশে গিয়েছিলেন, কাস্টমস ও ইমিগ্রেশনের কম্পিউটারে ছবিসহ তাঁর সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য রয়েছে।
ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি এ পি জে আব্দুল কালামও দুর্ব্যবহারের শিকার হয়েছেন। এর আগে সাবেক প্রতিরামন্ত্রী জর্জ ফারনান্দেসেরও একই অবস্থা হয়েছিল। আমি জানি না, আব্দুল কালাম ও জর্জ ফারনান্দেসকে হেনস্তা করার জন্য কারও কোনো সাজা হয়েছিল কি না। যুক্তরাষ্ট্র সব সময় ব্যস্ত শেতাঙ্গদের নিয়ে। আরেক দিন পাঁচ সদস্যের এক ভারতীয় পরিবার এবং ২৫ জন পোল্যান্ডের নাগরিক একই বিমানে আমেরিকা যাচ্ছিলেন। শুধু ভারতীয়দের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও হেনস্তা করা হয়। পোল্যান্ডের নাগরিকদের এক সেকেন্ডের জন্য থামানো হয় না; এমনকি লোকদেখানোর জন্যও না।
যুক্তরাষ্ট্র অবশ্য চীনাদের বিষয়েও যত্নশীল। কারণ তাদের অর্থনৈতিক ভিত্তি যুক্তরাষ্ট্রকে আঘাত করার মতো। দুর্ভাগা ভারত তখনই যুক্তরাষ্ট্রের বিবেচনায় আসে যখন কৃপাভিক্ষার জন্য হোয়াইট হাউস কিংবা স্টেট ডিপার্টমেন্টে ধরনা দেয়। পরপর দুইবার নির্বাচিত সরকার ভারতকে নামাতে নামাতে একেবারে তাঁবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করে ফেলেছে। শাহরুখ খানের হেনস্তার মতো ঘটনায় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে কূটনৈতিক তৎপরতা চালানোর কথা বলা হলেও শেষমেশ তারা পিছু হটে। কৌশলগত মিত্র যুক্তরাষ্ট্রকে তারা চটাতে চায় না। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কি এ রকম আরও কোনো লাঞ্ছনার ঘটনা ঘটলেই তবে ব্যবস্থা নেবে?
শাখরুখ খানের ওই ঘটনার পর যখন তথ্যমন্ত্রী অম্বিকা সোনি বলেছিলেন, আমাদেরও উচিত হবে এই আচরণ ফিরিয়ে দেওয়া, তখন আমি খুশি হয়েছিলাম। আমি মনে করি, অন্তত একটি ঘটনা হলেও এমনটা করা দরকার। এতে করে মার্কিনিরা অন্তত বুঝতে পারবে যে ভারতীয়রা একদিন ব্রিটিশদের বিতাড়ন করেছে, তারা এখন ফেলনা আসবাবপত্র হয়ে যায়নি। এমবিএ পড়ুয়া এক ছাত্রী আমাকে আশ্বস্ত করল এই বলে যে, সে দিন আর বেশি দেরি নেই, যখন ভারত মার্কিনিদের ভিসা বাতিল করবে, যেমনটা তারা আমাদের প্রতিনিয়ত করে থাকে।
এখন মার্কিনিদের উপলব্ধি করার সময় উপস্থিত যে 'কুৎসিত' শব্দটি ঘৃণাভরে তাদের দিকেই ফিরে আসছে। যখন অশেতাঙ্গদের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ন্যূনতম শ্রদ্ধাবোধ দেখা যায় না, এশীয়, আফ্রিকান ও আরবদের ওপর দোষ চাপিয়ে এসব দায় থেকে তারা মুক্তি পেতে চায়, তখন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ও আফগানিস্তানে তাদের সেনা ঘাঁটি স্থাপন তাৎপর্যহীন হয়ে পড়ে। যথেষ্ট হয়েছে, যথেষ্ট।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তপে করে তার প্রকৃষ্ট প্রমাণ হলো 'আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতাবিষয়ক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কমিশন' ইউএসসিআইআরএফ কর্তৃক জারিকৃত একটি প্রজ্ঞাপন। সেখানে ভারতকে তারা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের রায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থ হওয়ায় 'নজরদারির তালিকা'য় রেখেছে।
ইউএসসিআইআরএফ বলেছে, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রতি সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষতে ভারত এই 'নজরতদারির তালিকা'য় এসেছে। বিশেষত, ২০০৮ সালে উড়িষ্যায় খ্রিষ্টানদের প্রতি এবং ২০০২ সালে গুজরাটে মুসলমানদের প্রতি সংঘটিত সহিংসতার সময়ে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে ভারতের এই তালিকাভুক্তি।
ইউএসসিআইআরএফ চেয়ারপার্সন লিওনার্দো লিও বলেছেন, 'এটা অত্যন্ত হতাশাব্যঞ্জক যে বহু ধর্মের মানুষের বাসভূমি ভারত সহিংসতার শিকার ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের রা করা ও তাদের প্রতি ন্যায়বিচার পালনে এতটাই অমক্ষম।'
উড়িষ্যা ও গুজরাটের ঘটনার জন্য ভারত যারপরনাই লজ্জিত। ওসব ঘটনা ভারতের ধর্মনিরপেতার মর্যাদাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। দোষীদের শাস্তির ব্যাপারে গণমাধ্যমগুলো সোচ্চার হয়েছে। গুজরাটের ঘটনায় সুপ্রিম কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুলিং দিয়েছে।
আমাদের নিজের দেশে সাম্প্রদায়িকতার যে চর্চা হচ্ছে তা নিয়েও আমরা বিচলিত। গায়ের রং সাদা হলেই তা শ্রেষ্ঠ- এ দৃষ্টিভঙ্গির শিকার হচ্ছি আমরাও। গাত্রবর্ণ বা বর্ণবাদ নিয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে প্রায়ই অভিযোগ শুনতে হয় আফ্রিকা কিংবা দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য থেকে পড়তে আসা শিক্ষার্থীদের মুখে। তাদের আবাসনের জন্য জায়গা খুঁজে পেতে রীতিমতো সংকটে পড়তে হয়। কার্যত অন্য ভারতীয়দের সঙ্গে তাদের মেলামেশার সুযোগ নেই বললেই চলে।
আমাদের সাহিত্যে সাদা রঙের বা ফর্সা নারীর গুণকীর্তণে ভরা। কালীদাস তাঁর শকুন্তলায় সাদাকে সৌন্দর্যের সঙ্গে তুলনা করেছেন। শকুন্তলা সুদর্শনা, কারণ সে দেখতে অন্যদের চেয়ে বেশি ফর্সা। এ ছাড়া সাদা বা ফর্সার প্রতি আমাদের এই আকর্ষণের কারণ দেড় শ বছরের ব্রিটিশ শাসনামলের দাসত্বের শৃঙ্খল। আমরা এখনো সেই দাসত্বের ঘোর কাটিয়ে উঠতে পারিনি।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, সংখ্যালঘুদের সঙ্গে কেমন ব্যবহার করতে হবে, তার শিক্ষা দেওয়ার যুক্তরাষ্ট্র কে? তারা এমন এক সমাজে বসবাস করে, যেখানে শেতাঙ্গরা নিজেদের শ্রেষ্ঠ ভাবতে ভালোবাসে। তারা সংখ্যালঘুদের সঙ্গে এমন আচরণ করে, যা বলার অযোগ্য।
যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণাঙ্গ ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সঙ্গে কেমন আচরণ করা হয়, তা যাচাই করতে আমাদেরও উচিত হবে একটি কমিটি গঠন করা এবং সেখানে যুক্তরাষ্ট্রকে 'নজরদারি তালিকায়' রাখা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে শেষমেশ আমি যা বলতে পারি তা হলো: কবিরাজ, আগে নিজের অসুখ সারাও। নিজের চরকায় তেল দাও।
মন্তব্য
আপনার এই লেখাটি আজকের প্রথম আলোয় ছাপা হয়েছে। এ ব্যাপারে মডারেটর রা কি বলছেন? ডুয়াল পোস্টিং এর ব্যাপারে?
আমি যতটা জানি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত লেখা একই সাথে ব্লগে দেয়ায় নীতিমালা ভঙ্গ হয়না। ডুয়াল পোস্টিং এর ব্যাপারে নীতিমালায় বলা আছে মুদ্রিত মাধ্যম বা বিচ্ছিন্ন ব্যক্তিগত ব্লগে প্রকাশের ক্ষেত্রে এ নিয়মটি প্রযোজ্য নয়।
ধন্যবাদ অনুবাদের জন্য, পড়ে ভালো লাগলো।
দৈনিক পত্রিকায় ছাপা লেখা আমি আমার ব্লগে দিতেই পারি।
এ বিষয়ে আপত্তির কী আছে।
লেখা নিয়ে মন্তব্য প্রত্যাশিত।
ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।
ডুয়াল পোস্টিংয়ের কারনে এই পোস্টটিকে নিজ ব্লগে সরানো হল। অনুগ্রহ করে ডুয়াল পোস্টিং ব্যাপারটি এড়িয়ে চলবেন। বিষয়টি নজরে আনার জন্য অতিথি মন্তব্যকারীকে ধন্যবাদ।
প্রিয় মডারেটর (আসমানী-মডু)
আমি অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, একজনের ভুল অভিযোগের ভিত্তিতে আমার পোস্টটি প্রথম পৃষ্ঠা থেকে সরানো হয়েছে।
আমি দৃঢ়চিত্তে জানাচ্ছি, আমার লেখাটি অন্য কোনো ব্লগে প্রকাশ করিনি। এটি একটি দৈনিক পত্রিকায় অর্থাৎ মুদ্রিত মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
প্রিয় মডু, লক্ষ করুণ,
সচলায়তনের নীতিমালার ধারা-২ তে উল্লেখ রয়েছে: ' সচলায়তনে প্রকাশিত লেখাগুলি... অন্য কোন কমিউনিটি ব্লগে প্রকাশিত হতে পারবে না। মুদ্রিত মাধ্যম বা বিচ্ছিন্ন ব্যক্তিগত ব্লগে প্রকাশের ক্ষেত্রে এ নিয়মটি প্রযোজ্য নয়।'
সচলায়তনের নীতিমালা অনুযায়ী ' ডুয়াল পোস্টিংয়ের' অপবাদ কেন আমাকে দেওয়া হচ্ছে। লক্ষ করে থাকবেন, আমি সব সময় দায়িত্বশীলতার সঙ্গে লেখা পোস্ট ও কমেন্ট করে থাকি।
সুতরাং নীতিমালা ভঙ্গ না করায় আমার লেখাটি প্রথম পৃষ্ঠায় পুনরায় দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।
ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।
প্রিয় ফিরোজ জামান চৌধুরী,
নীতিমালার বর্তমান রূপ অনুযায়ী আপনার বক্তব্য সঠিক। এই যথার্থতার প্রতি সম্মান দেখিয়ে লেখাটি পুনরায় প্রথম পাতায় প্রকাশ করা হল।
সচলায়তন তার সদস্যদের কাছ থেকে অনন্য লেখা প্রত্যাশা করে। লেখার অনন্যতা বজায় রাখবার জন্যই ডুয়াল পোস্টিং কঠোর ভাবে নিরুৎসাহিত করা হয়।
মুদ্রণ মাধ্যমের ক্ষেত্রে দু'টি পর্যবেক্ষণ সত্য। প্রথমত, ব্লগারদের প্রকাশিত লেখার সংখ্যা খুব কম। দ্বিতীয়ত, লেখা প্রকাশিত হলেও তা অনেক ক্ষেত্রে পরিমার্জিত রূপে দিনের আলো দেখে। এমতাবস্থায় দৃষ্টি আকর্ষণ কিংবা পূর্ণ কলেবরে প্রকাশের জন্য ব্লগে তা প্রকাশিত করা যায়।
যে-লেখা মুদ্রণ মাধ্যমে পূর্ণ কলেবরে প্রকাশিত কিংবা যে-লেখকের লেখা নিয়মিত মুদ্রণ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়, তাঁর ক্ষেত্রে একই লেখা ব্লগে দেখতে পাওয়া পাঠকের প্রতি অবিচার। সেই আলোকে, লেখার অনন্যতা রক্ষার স্বার্থে এই পদক্ষেপ। ব্লগীয় পরিভাষায় একে ডাম্পিং বলে অভিহিত করা হয়ে থাকে প্রায়শই। ডুয়াল পোস্টিং-এর মতই ডাম্পিং-ও সচলায়তনে নিরুৎসাহিত করা হয়।
আপনার লেখাটি বিদ্যমান ল'-এর সাথে সাযুজ্যপূর্ণ হলেও স্পিরিট অফ ল'-এর সাথে সাংঘর্ষিক। আশা করি লেখাটির ব্যাপারে সচলায়তনের অস্বস্তির কারণটি বোঝাতে সক্ষম হয়েছি।
সচল থাকুন, সচল রাখুন।
ধন্যবাদ বেগুনী-মডু।
ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।
লেখাটি সমসাময়িক এবং প্রাসঙ্গিক বিবেচনায় সচলায়তনে পোস্ট করা হয়েছে।
আমার যুক্তি ও আবেগের প্রতি সম্মান জানানোর জন্য মডারেটরবৃন্দকে ধন্যবাদ।
++
এ বিষয়ে বির্তেকর চেয়ে মূল লেখা নিয়ে আলোচনার জন্য সচলদের প্রতি অনুরোধ রইলো।
ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।
লেখাটা পত্রিকায় পড়ার পর নাম দেখে ভেবেছিলাম সচলে দেখতে পাবো। এরকম নিন্দনীয় ঘটনা আমাদের নিয়ে অহরহই ঘটে থাকে। ২০০০ সালে আমি যখন জুরিখ যাই প্লেন থেকে সবার আগে নামার পরও (বিজনেস ক্লাসে সবার সামনের সীট দুটো আমাদের ছিলো) সেই প্লেনের গেটে আটকিয়ে রাখা হয়েছিলো আমাদের, সমস্ত প্লেনের যাত্রী নেমে যাবার পরও প্রায় আধ ঘন্টা। ইতালী যাবার পথে জু্তা পর্যন্ত খুলে দেখাতে হয়েছিলো। উলটো সুবিধা পেয়েছিলাম হিথ্রোতে ইমিগ্রেশনের বিশাল এক গ্রুপ লাইনে সামনে থাকায় তাদের ডিঙ্গিয়ে আমাদের সামনে নিয়ে আসা হয়েছিলো আগে বের হবার জন্য, আর একাজটা করেছিলেন কালো রংয়ের এক পুলিশ।
...........................
Every Picture Tells a Story
ধন্যবাদ মুস্তাফিজ।
ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।
মুস্তাফিজ ভাই আমার অভিজ্ঞতাগুলো বললে সাত কাহন হয়ে যাবে, ব্যক্তিগত ক্ষোভ থেকে হয়তো বিশ্বজয়ী সভ্য দেশগুলোকে নির্মম আক্রমণও করে বসতে পারি আর তাতে পশ্চিমাবিষ্ট লোকজনদের বিরাগভাজন হবারও বিয়াপক সম্ভাবনা আছে।
তাই আপাতত শুধু হুম দিয়ে গেলাম।
আরো আছে রে ভাই, নিজেকে তখন এত ছোট মনে হয়। তাই ইদানীং এসব জায়গায় ছেলেকে নিয়ে যাওয়া এড়িয়ে চলি।
...........................
Every Picture Tells a Story
ভাল লাগলো পড়তে পেরে। ধন্যবাদ অনুবাদের জন্য।
নৈশী।
ধন্যবাদ নৈশী।
ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।
হোয়াইট হাউজ আসলে হোয়াইট হাউজ এটা ব্লাক হাউজ, আমেরিকা হাউজ, এশিয়া হাউজ বা হিউম্যান হাউজ নয়। হোয়াইট হাউজটি যে শুধু সাদা মানুষদের জন্য তার প্রমান তারা অনেকবার দিয়েছে। ওবামা পরিবর্তনের কথা বললেও আমেরিকান বর্হিবিশ্ব পলিসি মনে হয়না কারো পক্ষে পরিবর্তন করা সম্ভব হবে। জোর যার মুল্লুক তার এটাই তাদের মূলমন্ত্র।
ধন্যবাদ রেঁনেসা।
ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।
মামুন হক, একটা দুইটা অভিজ্ঞতা অন্তত বলেন।
ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।
অনুবাদের জন্য ধন্যবাদ ফিরোজ ভাই।
গত জানুয়ারীতে আমাকে এক কনফারেন্সের কাজে যুক্তরাষ্ট্র যেতে হয়েছিল। কানাডা থেকে যুক্তরাষ্ট্র যাবার সময় ইমিগ্রেশন কানাডা থেকেই হয়। এ যেন কানাডার ভেতর ছোট্ট এক ইউএস। আমার নাম দেখেই আমাকে মূল লাইন থেকে সরিয়ে অন্য এক রুমে নিয়ে যাওয়া হল, ভাবটা এমন ' এবাই পাইছি' তার পর এক গাদা ফরম পূরন, দফায় দফায় জিজ্ঞাসা অথচ আমার ৫ বছরের ভিসা আছে। প্রায় ১ ঘন্টার বেশী সময় পরে আমাকে আবার মূল লাইনে নিয়ে আসা হলো। সব কিছু শেষ করে যখন কেবিন লাগেজ চেক করতে দিয়েছি সেইখানে দাঁড়ানো এক চিঙ্কু ( এয়ারপোর্টের কর্মী) আমাকে বেশ মজা নিয়ে জিজ্ঞেস করে ' ও তোমাকে ঐ বিশেষ রুমে যেতে হয়েছিল তাই না অনেক ঝামেলা করেছে নিশ্চই'। কথাটা বলার সময় তার মুখের ভাব দেইখা ইচ্ছে করছিল ধইরা আছাড় দেই।
সবচেয়ে অবাক বিষয় হলো আমাকে ইমিগ্রেশনের সময় একটা i-94 ফরম ধরাইয়া দিল আর সেই সাথে দিল ইউএস এর বিভিন্ন এয়ারপোর্টে CBP( US customs and Border Protection) এর অফিস সময় এবং বলে দিল আসার সময় এই ফরম আবার তোমাকে ফেরত দিয়ে আসতে হবে। আমার কপাল ভাল ছিল যে আমার আসার ফ্লাইট ছিল ৮ টায় আর অই এয়ারপোর্টে CBP এর অফিস খোলা ছিল ৭ টা পর্যন্ত। আমার পরিচিত অনেককেই তাদের আসার ফ্লাইট পরিবর্তন করতে হয়েছে অনেক ক্ষেত্রে আসার এয়ারপোর্টে CBP এর অফিস সময় আর ফ্লাইট সময়ের ব্যাপক ফারাকের কারনে।
-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
আমেরিকায় পড়তে আসা লোকজনকেও i-94 ফরম ফিলআপ করতে হয়।
ধন্যবাদ অমিত।
ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।
এটা তো ওদের নিয়ম। প্রথমবার সময় লাগে, দ্বিতীয়বার তাড়াতাড়ি হয়। আমার প্রথমবার প্রায় ২ঘন্টা লেগেছিল বাবা-মা সাথে থাকার কারণে। নাহলে দ্রুতই হতো। দ্বিতীয়বার খুবই দ্রুত (আধা ঘন্টার মতো) হয়েছিল।
ধন্যবাদ প্রকৃতি।
ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।
আপনি যদি যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগের সময় আই-৯৪ ফেরত না দিয়ে থাকেন তাহলে তাদের কম্পিউটার দেখাবে আপনি অবৈধভাবে সেখানে থেকে গেছেন, অথবা অতিরিক্ত অবস্থান করেছেন। ফলে আপনার পরে ঢোকার সময় হয়তো আরো ঝামেলা হবে, ভিসা থাকলেও। ভালো হবে আপনি যদি সেটা ফেরত পাঠান এবং আপনি যে নির্ধারিত শেষ সময়ের আগেই চলে গেছেন, তার প্রমাণ দেখান।
ধন্যবাদ সুধীর, আপনার দেওয়া দরকারি তথ্যের জন্য।
ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।
ধন্যবাদ জাহিদ,
আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য।
ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।
৯/১১ এর পর ব্রাজিলের নাগরিকদের মার্কিন ইমিগ্রেশনে একটা লম্বা হুজ্জতের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছিলো। ব্রাজিলের সরকারপ্রধান লুলা দা সিলভা সাথে সাথে ব্রাজিলে ইমিগ্রেশনে কেবল মার্কিন নাগরিকদের জন্যে অনুরূপ এক হুজ্জতের আয়োজন করে এর জবাব দিয়েছিলেন। আমরা যেহেতু গরীবের বউ, তাই এমন কিছু করার ক্ষমতা আমাদের নেই।
'আমরা যেহেতু গরীবের বউ, তাই এমন কিছু করার ক্ষমতা আমাদের নেই।
ধন্যবাদ হিমু, আপনার চমৎকার কমেন্টের জন্য।
ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।
আমারও খুব বাজে কিছু অভিজ্ঞতা আছে। সেগুলোর বয়ানে নাহয় না যাই এই মুহূর্তে।
লেখাটার মূল সুরের সাথে আমার দ্বিমত আছে। 'আউট-ফ্যানাটিসাইজ' করা আমার কখনও পছন্দ না। বল্গাটা শেষ পর্যন্ত দুই পক্ষেই চরমপন্থীদের হাতে থাকে। ভয় লাগে এমন মুহূর্তের কথা ভাবলে।
সাধারণ একজন ইমিগ্রেশন অফিসার শাহরুখ বা আব্দুল কালামকে না চিনতেই পারেন। এর জন্য বারাক ওবামাকে ধরে টান দেওয়া একটু অতিরঞ্জন মনে হয়েছে। যে যা-ই বলুক না কেন, ওবামার মতো উদার রাষ্ট্রপতি বিশ্ব অনেক দিন পাবে না আর।
''আউট-ফ্যানাটিসাইজ' করা আমার কখনও পছন্দ না। বল্গাটা শেষ পর্যন্ত দুই পক্ষেই চরমপন্থীদের হাতে থাকে। '
ধন্যবাদ ইশতিয়াক।
ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।
সহমত।
ধন্যবাদ সিরাত।
ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।
frisking নিয়ে আবুল কালামের ব্যাপারটা পড়েছি। নিয়ম নিয়মই। আমি এতে খারাপ কিছু দেখিনা। ওই নিয়মটা ভারতীয় আরেকটা আইনের সাথে সাংঘর্ষিক ছিল বলেই সমস্যাটা হয়েছে। ভারতীয় আইনে সম্ভবত তিন ধরনের মানুষকে frisking করা যায়না। আবার আরেকটা নিয়ম আছে বিমানে ওঠার আগে পুলিশ সবাইকেই frisking করতে বাধ্য।
পোস্টের মূল সুরের সাথে একমত।
যুক্তরাষ্ট্রে শাহরুখ কে আটকানো হয়েছিল। কিন্তু কালাম সাহেবের ক্ষেত্রে যেটা হয়েছে বলে আমি জানি তা হল - প্লেনে উঠার আগে ইন্ডিয়াতেই তাকে সার্চ করা হয় আমেরিকান নিয়ম অনুযায়ী (উনাকে জুতাও খুলতে হয়েছিল) - এই কাজটা করেছিল আমেরিকান সিকিউরিটি। এখন সমস্যা টা বাঁধার কারন হল ইন্ডিয়ার একটা আইন। সেদেশের জেড প্লাস ভিভিআইপিদের (সংখ্যাটা সম্ভবত ১৮ জন) ওই দেশের মধ্যে কোথাও সার্চ করা যায় না। কিন্তু ৯/১১ পর আমেরিকানরা হয়ে গেছে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে আপোসহীন - তুমি যেই হও না বাপু আমেরিকায় আসতে হলে তোমার হাড়ির খবর আমাদের জানতে হবে - এই হল তাদের মানসিকতা এখন।
সো প্লেন কোম্পানীগুলো পড়ে বাটে - তারা যদি জনাব কালাম-কে সার্চ না করত তাহলে আমেরিকার নিয়ম ভাঙত আর সার্চ করায় ভারতের নিয়ম ভেঙেছে। সাথে যেটা হয়েছে, ভারতে কালাম সাহেব খুবই জনপ্রিয় একজন মানুষ পরমানু বোমা তৈরী ও তাঁর সাদাসিদে জীবনের জন্য। তাই পাবলিক সহ সব রাজনৈতিক দল ক্ষেপেছিল এবং প্রচুর প্রতিবাদও হয়েছে এজন্য। প্লেন কোম্পানী বলেছে তারা দু:খিত কিন্তু এইটা কিন্তু বলে নাই যে তারা আর এই কাজ করবে না। মনে হচ্ছে তারা ভবিষ্যতে আবারও করবে এবং পরে ভুজং ভাজং দিয়ে দু:খও আবার প্রকাশ করবে। এই লুপের শেষ নাই :(।
ধন্যবাদ তন্ময়।
ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।
ভারতীয়রা আজকাল ভিসা নিয়ে আমাদের সাথে যা ঝামেলা করে, এরকম দু চারটা ওদের সাথে হলে মন্দ হয় না, সুপ্ত নিদ্রা থেকে যদি উনারাও জাগেন, তাহলে আমরা প্রাণে বেঁচে যাই।
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
ধন্যবাদ তানবীরা, আপনি গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রসঙ্গ তুলেছেন , ভারতীয়রা ভিসা নিয়ে ইদানিং খুব ঝামেলা করে।
অভিন্ন সার্ক ভিসা চালু করার উদ্যোগ নেওয়া উচিত।
ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।
আমারও অভিজ্ঞতা আছে ভাই। আমিও লাইনে খাড়াইলাম।
তয় এখন কমু না। দেশে আসি। তারপর। এখন কইলে রাগে দুঃখে আবার চোখে পানি আইসা যাইব!
তবে ইমিগ্রেশনের বড়লাটদের নানাবিধ আচরণের কষাঘাতে বিধ্বস্ত হইয়া টরন্টো এয়ারপোর্টে বাইর হইয়া দেখি, আমার যে দেশি ভাইয়ের আমারে নিতে আসার কথা ছিল, তিনি নাই। তারপর তিনি আরো তেলেসমাতি কাণ্ড দেখাইলেন, ঘণ্টাচারেক ফোন ধরলেন না, ক্ষুধার্ত তৃষ্ণার্ত আমি বইসা বইসা মাছি মারলাম। শেষপর্যন্ত একটা ট্যাক্সি ভাড়া কইরা গেলাম তার বাড়িতে। সে লোক ঘুম থিকা উঠল আরো দুই ঘণ্টা পর, আমারে দেইখা নির্বিকার চিত্তে কইল, আইছেন? তারপর বাথরুমে গেল...
স্বদেশি ভাইয়ের ব্যবহারে মুগ্ধ হইয়া আমি বিদেশিগুলারে বেশ খানিকটা মাফ দিসি।
--------------------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়...
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
ধন্যবাদ মৃদুল।
খুবই কষ্টকর অভিজ্ঞতা আপনার।
ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।
বিদেশে গেছেন (তা যে দেশেই হোক) আর কোন বাঙালী বিদেশের ইমিগ্রেশন বা কাস্টমস দিয়ে হয়রানী হননি এমনটি মনে হয় খুঁজে পাওয়া যাবে না। এয়ারপোর্টের বাইরে, রাস্তা-ঘাটে এমনকি হোটেলেও নানা রকম হয়রানীর শিকার হতে হয় বাঙালীদের। যারা বিদেশে থাকতে যান তারা তো এক সময় এগুলোকে স্বাভাবিক বলে ভাবতে শুরু করেন। এনিয়ে আমাদের সরকার বা কারো কোন ভাবনা আছে বলে মনে হয়না। ভারতের আম-জনতাও যে হর-হামেশা এই ধরণের হয়রানীগুলোতে পড়েন তা নিয়ে ভারত সরকারেরও বিশেষ চিন্তা-ভাবনা আছে বলে শুনিনি। খালি ভিআইপিদের হয়রানী হলে সরকার, মিডিয়া সবার যাবতীয় চিন্তা শুরু হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আমেরিকার সীমান্তগুলো রক্ষা করার জন্য ৯/১১ পরবর্তী সময়ে কিছু কিছু আইন একটু বেশি শক্তপোক্ত করা হয়েছে, সেটা ঠিক। তবে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া শুধুমাত্র এশিয়ান না মুসলমানদেরকে ভোগানোর জন্য করা হয়েছে সেটা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। আমি নিজে "মুসলিম" নামধারী হয়ে ৯/১১ পরবর্তী সময়ে অসংখ্যবার আমেরিকার ইমিগ্রেশন পার হয়ে ভিতরে ঢুকেছি, কয়েকশোবার আমি আমেরিকার এয়ারপোর্টগুলোর সিকিউরিটি পার হয়েছি। বাজে ব্যবহার পাইনি তা না, তবে সেগুলো কখনোই আমার দিকে ব্যক্তিগত বা জাতিগত বা ধর্মগত আক্রমন মনে হয়নি। একটা ক্লাসিক উদাহরণ আমি প্রায়ই দেই। আমি নিজের চোখে দেখেছি লস অ্যানজেলেস এয়ারপোর্টে একজন হিজাবী মহিলা সিকিউরিটি অফিসার একজন সাদা আমেরিকান মহিলার দেহ তল্লাশী করছেন। আর অন্যদিকে আমি কলকাতার এয়ারপোর্টে আমার ভ্রমন জীবনের ইতিহাসে সবচাইতে রুড আচরণের সম্মুখীন হয়েছি, কোন কবিরাজ আগে নিজের অসুখ সারাবে?
কূলদীপ নায়ারের লেখায় আশ্চর্য হইনি। শাহরুখ খানের সঙ্গে "ন্যূনতম ভদ্রতা" প্রদর্শন না করা নিয়ে পুরো আমেরিকাকে "সাম্প্রদায়িক ভেদনীতি"র দেশ, আর ওবামাকে "বর্ণবাদী ও সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি-ওয়ালা প্রেসিডেণ্ট বলে দেয়াটা সহজ। নায়ারের মত সাংবাদিকরা ভালো করেই জানেন কোন লেখাটায় মানুষের অনুভূতি নিয়ে খেলা করে সস্তা জনপ্রিয়তা অর্জন করা যাবে।
তথ্যমন্ত্রী অম্বিকা সোনির প্রতিশোধ নেয়ার ইচ্ছাতেও আশ্চর্য হই না। কয়েকবছর আগে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষীরা যখন ভারতের ১৪ জন অবৈধ অনুপ্রবেশকারী সৈন্যকে সম্মুখযুদ্ধে পরাস্ত করে মেরে ফেলেছিলো, তখন এই ভারতেরই এক সাংসদ বাংলাদেশের উপর প্রতিশোধ বা শাস্তি হিসেবে তিনি বাংলাদেশে অবাধে ঢুকে গিয়ে ১৪ জন বিডিআর মেরে আসার অধিকার পাওয়ার দাবী জানিয়েছিলেন। ইণ্টারেস্টিং বিষয় হলো ভারতের এখন সাহস হয়েছে ছোট প্রতিবেশীদের ছাড়াও বড়ভাইদের চোখ রাঙানোর।
পত্র-পত্রিকা পড়লে দেখবেন অনেক রিপোর্টেই শাহরুখ খানের এই ঘটনার পরবর্তী মন্তব্যগুলোকে পাবলিসিটি স্টাণ্ট হিসেবে ধরা হয়েছে। উনি এর পর কি করেন দেখার বিষয়। ইউসুফ ইসলাম (ক্যাট স্টিভেনস) এরকম আচরণের স্বীকার হবার পর ঘোষণা দিয়েছেন উনি আর কখনো আমেরিকাতে আসবেন না। শাহরুখ পারবেন সেরকম কিছু বলতে? তাহলে ফি-বছর আমেরিকাতে পাঁচ-দশটা ইনডিয়ান সাংস্কৃতিক গ্যালা নাইট শো করে উনার যে উপার্জন, সেটা বন্ধ হয়ে যাবে না?
বব ডীলানকেও কদিন আগেই নিউ জার্সির পুলিশ রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে গেছে গৃহহীন হিসেবে। তরুনী পুলিশ অফিসার তাকে চিনতে পারেননি (ওইরকম সুন্দরী পুলিশ অফিসার আমাকে ধরতে চাইলে আমি অবশ্য কোনদিনই বাঁধা দেবো না, তবে সেটা অন্য আলোচনা)। নি:সন্দেহে আমেরিকাতে বব ডীলানকে অনেক বেশি লোক চেনে শাহরুখ খানের তুলনায়। আমেরিকার এয়ারপোর্টের সিকিউরিটিতে নাজেহাল হবার ঘটনা আছে খোদ এদেশেরই হাউজ রিপ্রেজেণ্টেটিভের।
সংখ্যালঘুদের সাথে অসদাচরণ সব দেশেই আছে, কিন্তু সেসব প্রতিরোধে যেসব আইন আমেরিকাতে আছে - তার কণামাত্রও ভারতের মত বহুধর্মী-বহুজাতির দেশে নেই। তাই "গুজরাটের ঘটনায় সুপ্রিম কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুলিং দিয়েছে" এটা যেখানে স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হবার কথা ছিলো, সেখানে কূলদীপ নায়ার এটার মাহাত্ন্য বর্ণনা করেন "দেখুন আমরা কি বিরাট কাজ করেছি" ধরণের বুক ফোলানো মন্তব্যে।
আমেরিকাকে গালাগালি করার যৌক্তিক বিষয়ের অভাব নেই। আর সেখানে শাহরুখ খানের মত "প্রবল জনপ্রিয়" একজন যুক্ত থাকলে তো আর কথাই নেই। এসব নিয়ে লিখলে অত্যন্ত সহজে "হিটখোর" হয়ে ওঠা যায়। কূলদীপ নায়ার সেটা ভালোই জানেন বলে মনে হলো।
'সংখ্যালঘুদের সাথে অসদাচরণ সব দেশেই আছে, কিন্তু সেসব প্রতিরোধে যেসব আইন আমেরিকাতে আছে - তার কণামাত্রও ভারতের মত বহুধর্মী-বহুজাতির দেশে নেই।'
আপনার মন্তবের সাথে একমত।
দীর্ঘ প্রতিক্রিয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ যুধিষ্ঠির।
ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।
আনেকটা একমত। New York -এর Underground Subway - তে প্রায় সময় কড়াকড়ি Security Checking হয়। আমাকে কোন সম্য় Security Checkingএর সম্মুখীন হতে হয়নি, বরং এখানকার সদাদেরকেই এই ঝামেলায় পড়তে দেখেছি। একবার আমি নিজে আমার ব্যাগ দেখাতে গিয়েছিলাম, কোন কিছু Check -ই করে নি।
এখানে এত মসজিদ, মন্দির আছে যে অবাক হতে হয়, ঈদের দিনকে ছুটির দিন করার সম্ভবনাও আছে।
কিন্তু Immigration এবং Airport Security-এর ব্যাপারটা আলাদা, এরা সত্যিকার অর্থেই Brain-washed এবং Racist। মোটামুটি সবাই cheking - এর মধ্য দিয়ে যায়,তবে দড়িটুপি ও বিশেষ কিছু নাম থাকলেই, অপমানজনক Cheking এর মধ্য দিয়ে যেতে হয়, আমি নজে এই রকম একটা ব্যাপার লক্ষ্য করেছি JFK তে, একটা পরিবারকেই (নারী পরুষ ও বৃদ্ধ সহ ৮/১০ জন হবে) একটা বিশেষ ঘরে ঘন্টা খানেকের জন্য জেরা করা হয়েছিল, যদিও তাদের সবাই Green Card ওয়ালা ছিল।
ভারতের ব্যাপারে আপনার সাথে পুরোপুরি একমত। ভারতের দার্জিলিং ঘুরতে যাওয়ার সময় ভারতীয় দূতাবাস কতৃপক্ষের ও বুড়িমাড়ি সীমান্তে অসভ্য BSF-এর যে রকম জঘন্য ব্যাবহার পেয়েছি সেটা ভুলার মত না, BSF আমাদের ব্যাগ তছনছ করা সহ, কয়েকটা ক্যামেরাও ছিনিয়ে নিয়েছিল, আর সবার কাছ থেকে ২০০/৩০০ রুপি করে ঘুষ ও নিয়েছিল, এই হল ভারতীয়দের ব্যাবহার,(অন্যদিকে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষিদের -এর ব্যাবহার ছিল ঠিক উল্টোটা,এদের কয়েকজন আমদের ব্যাগ ভদ্রতা করে এগিয়ে দিয়েছিল)
এত কিছুর পর ও লোকজন কেন যে ভারতে ঘুরতে যায় সেটাই বুঝতে পারছিনা।
আপনার বক্তব্যের শেষ অংশের সাথে একটু দ্বিমত। দার্জিলিং আমিও গিয়েছি বেশ ক'বার। গতবারই গিয়েছি বুড়িমারি সীমান্ত দিয়ে। বিএসএফের ব্যবহার নিয়ে খুব বেশি কিছু বলার নেই। তবে অবশ্যই আমার থেকে ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়নি। সাথে ক্যামেরা আছে কিনা জিজ্ঞেস করার পর যখন হ্যাঁ সূচক উত্তর দিয়েছি, তখন সেটা পাসপোর্টে এন্ট্রি করে দিয়েছে।
কিন্তু বাংলাদেশের বিডিআরদের যতোটা মহানুভব বললেন, আমি দুর্ভাগ্যবশত একবারও পাই নি। আমি বরং দেখেছি টাকার গন্ধ পেলেই, বিডিআর- বিএসএফ সবার ব্যবহারই একরকম হয়ে যায়।
আর কতোজন লোক ভারতে শুধুই ঘুরতে যায়, আর কতোজন কোন একটা দরকারে যায়, তা কি আপনি জানেন ?
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
ধন্যবাদ সবজান্তা।
ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।
১) আমার মনে হয়নি ব্যাপারটা কোনোভাবে আন্তর্জাতিক রাজনীতির সাথে সম্পর্কিত তাই সেদিকে আর লিখছি না।
২) আমার একটা সাধারণ প্রশ্ন আছে - আমাকেও একি ভাবে সব জায়গাতে হেনস্থা হতে হয় - ভারতে বা বিদেশে। কিন্তু এ নিয়ে আমার ভাবনা আলাদা - আমি মনে করি এর ফলে যদি একটাও প্লেন হাইজ্যাক হওয়া থেকে বাচে তাহলেই আমি খুশী। শাহরুখ বা কালামের সেটা কি অভ্যাসে নেই?
শুধু দক্ষিণ এশিয়দেরই এরকম অবস্থায় পড়তে হয় - সেটা ঠিক নয়। কিন্তু বাবু কালচারটা শুধু দক্ষিণ এশিয়দেরই মধ্যে দেখি। সম্মানিত ব্যক্তিমাত্রেই এখানে নিজেকে আইনের ঊর্ধ্বে মনে করে। অফিসে বাবুরা অফিসের আইনের ঊর্ধ্বে আর দেশে মন্ত্রীরা। এত বদভ্যাস মনে হয় ভাল না।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
ধন্যবাদ দিগন্ত।
ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।
নতুন মন্তব্য করুন