কিছুদিন আগে সিলেট গিয়েছিলাম। শাহ্জালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা সম্পর্কে আলাপকালে অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল অবাক করা এক তথ্য দিলেন। অনেক শিক্ষার্থীই মায়ের নামের জায়গায় লিখেছে ‘বেগম’। আর কিছু লেখেনি। একজনের ভুল হওয়া স্বাভাবিক, কিন্তু কয়েক শত শত শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে তা হতে পারে না। এরা কেউই মায়ের নাম লিখতে আগ্রহী নয়- ফরম বাতিল হয়ে যেতে পারে সে জন্যই শুধু ‘বেগম’ লিখে ঘর পূরণ করেছে মাত্র। এ ঘটনা প্রমাণ করে আমাদের নিজেদের মধ্যে মায়ের পরিচয় নিয়ে এক ধরনের হীনম্মন্যতা বাসা বেঁধে আছে। মায়ের পরিচয় দিতে যারা দ্বিধাগ্রস্ত তাদের উদ্দেশ্যে বলি, ভবিষ্যতে তারা নিজেদের ‘মানুষ’ বলে পরিচয় দিতে দ্বিধাগ্রস্ত হবে না তো?
প্রায় একই সময়ে মায়ের অধিকার প্রতিষ্ঠার একটি খবর পাওয়া গেল। সম্প্রতি সরকার বাবার পাশাপাশি অভিভাবক হিসেবে মায়ের নাম দিয়ে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় নিবন্ধন (রেজিস্ট্রেশন) করার পক্ষে মত দিয়েছে। সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ইতিবাচক এই উদ্যোগ যেমন প্রশংসিত হয়েছে, তেমনি জন্ম দিয়েছে আরও কিছু প্রত্যাশারও।
শুধু মায়ের নাম ব্যবহার করলে পরীক্ষার ফরম অপূর্ণ বিবেচিত হবে কেন - তা জানতে চেয়ে ব্লাস্ট (বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট), বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ও নারীপক্ষ হাইকোর্টে রিট আবেদন করে। হাইকোর্টের রায়ের পরিপ্রেক্তিতে সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে শিক্ষাক্ষেত্রে সমান্তরালে অভিভাবক হিসেবে মায়ের ভূমিকা নিশ্চিত হলো। কিন্তু হাইকোর্ট রুল জারির সময় সরকারকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, কেবল এসএসসি বা এইচএসসির কথা না বলে সব পর্যায়ের শিক্ষা ও চাকরির আবেদনের ক্ষেত্রে এ দাবি অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। এ নির্দেশনা সম্পূর্ণভাবে পালন না করে একটি সুযোগ হেলায় হারাল সরকার। শিক্ষার পাশাপাশি জন্ম নিবন্ধন, পাসপোর্ট, চাকরির আবেদন, বিয়ে, ব্যাংকের কাজকর্মসহ জীবনের সব দাপ্তরিক কাজে বাবার সমান্তরালে অভিভাবক হিসেবে মায়ের ঘোষণা দিলে আরও ভালো হতো।
যেকোনো সুস্থ মানুষই এ কথা স্বীকার করবেন যে, শিশুর জন্মপ্রক্রিয়া ও লালনপালনের ক্ষেত্রে মায়ের ভূমিকাই প্রধান। কিন্তু সামাজিক বিধিনিষেধ আর দেশের আইনকানুনের বেড়াজালে পড়ে সমাজ ও রাষ্ট্রে মায়ের অবস্থান এখনো প্রান্তিক পর্যায়েই রয়ে গেছে। সন্তানের মা-বাবা হিসেবে দুজন একই মর্যাদায় অভিভাবকত্ব পাওয়ার দাবিদার। আমাদের দেশের পুরুষতান্ত্রিক সমাজকাঠামোয় নারীর ক্ষমতায়নের পথে এ উদ্যোগ বড় ধরনের মাইলফলক হিসেবে ভবিষ্যতে স্বীকৃত হবে বলেই আশা করা য়ায়।
মায়ের অভিভাবকত্বের সূত্র ধরে ১০ বছর আগে চোখ ফেরানো যাক। ১৯৯৮ সালের ৯ ডিসেম্বর রোকেয়া দিবস উপলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছিলেন, ‘এখন থেকে বাবার পাশাপাশি মায়ের নামও লিখতে হবে।’ এরপর সংবিধান, প্রচলিত বিধিবিধান ও বিদ্যমান আইনগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সেই ঘোষণার প্রায় দুই বছর পর ২৭ আগস্ট ২০০০ সালে সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে মায়ের নাম লেখার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। গত ১০ বছর ধরে জীবনের সব ক্ষেত্রে মায়ের নামটি উচ্চারিত হচ্ছে স্বতঃস্ফূর্তভাবে। এরই ধারাবাহিকতায় এবার বাবার সমান্তরালে অভিভাবক হিসেবে মায়ের স্বীকৃতি অর্জিত হলো।
অভিভাবক হিসেবে মায়ের স্বীকৃতির পরও বলতে হচ্ছে, বাংলাদেশের সমাজ ও রাষ্ট্রীয় কাঠামোয় এখনো একজন নারীর ন্যায্য অধিকার যথাযথভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এর মূল কারণ, উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে বৈষম্য। এ কারণেই দেখা দেয় সমাজে মেয়েশিশুর প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ। এর প্রভাব পড়ে সুদূরপ্রসারী। সুতরাং পরিবার থেকেই সব শিশুকে সমান মর্যাদায় বড় হওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে। পাখির একটি ডানা ভেঙে গেলে যেমন পাখি উড়তে পারে না, তেমনি সমাজে নারী-পুরুষের একটি অংশকে পশ্চাৎপদ রেখে সমাজ কখনোই এগিয়ে যেতে পারবে না। আমরা যদি উন্নত দেশগুলোর দিকে দৃষ্টি দিই তাহলে দেখব, প্রায় সব দেশেই সম্পত্তিতে নারীর সমানাধিকার স্বীকৃত। সুতরাং সরকারের এই জায়গায় দৃষ্টি দেওয়া অপরিহার্য হয়ে পড়েছে।
আমরা মাকে নানা বিশেষণে মহিমান্বিত করে থাকি। মাকে আবেগে-ভালোবাসায় যতটা মর্যাদা দিয়ে থাকি, তার বিন্দুমাত্র প্রাতিষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিতে চাই না। কেন? এ প্রশ্নের জবাব হচ্ছে, পুরুষতান্ত্রিক বৈষম্যমূলক সমাজকাঠামোর মধ্যে আমরা বেড়ে উঠেছি। আর এই বেড়ে ওঠার মধ্যেই আমরা কখন যে ‘একচক্ষু মানুষ’ হয়ে উঠেছি, তা টেরই পাইনি। খণ্ডিতভাবে দেখতে দেখতে আমরা সঠিকভাবে দেখার অভ্যাসটিই হারিয়ে ফেলেছি।
মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত- এ জাতীয় কথাবার্তা সমাজে প্রচলিত থাকলেও প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতির ক্ষেত্রে সেসব ‘বীরপুরুষ’কে আর খুঁজে পাওয়া যায় না।
পুরো পৃথিবীর মাত্র এক শতাংশ জমির মালিক নারী-- এ থেকেই জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে নারীর প্রান্তিক অবস্থানটি সহজেই বোঝা যায়। রাষ্ট্র ও সমাজে নারীর মর্যাদার প্রশ্নে অনেক ভালো কথা বলা হলেও নারীর উত্তরাধিকারের প্রশ্নে ছাড় দিতে নারাজ। নারীর প্রগতির পথে সবচেয়ে বড় বাধা উত্তরাধিকারে বৈষম্য। সমাজের এসব অচলায়তন ভাঙতে অগ্রসর পুরুষদের এগিয়ে আসা কর্তব্য। উত্তরাধিকার আইনে সমতা ভিন্ন নারীর পক্ষে মূলধারায় এগিয়ে যাওয়া খুব সহজ হবে না। এদিকে নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি দেওয়ার সময় এসেছে।
বাংলাদেশে নারীশিক্ষার হার উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। পরীক্ষার ফলাফলেও মেয়েরা শীর্ষস্থান দখল করছে। বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, সংসদ উপনেতা, কৃষিমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী- দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রধান প্রধান পদের দায়িত্বে রয়েছেন নারী। এ সবই নারীর অগ্রযাত্রার ইঙ্গিতবাহী। কিন্তু তার পরও সমাজে বিদ্যমান আইনগত বৈষম্যের কারণে সব ক্ষেত্রে নারীরা এখনো সমভাবে এগিয়ে যেতে পারছে না। নারীকে সমাজের মূলধারায় আনতে হলে সবার আগে উত্তরাধিকার সম্পত্তিতে তার ন্যায্য সমানাধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
বাংলাদেশে উত্তরাধিকার আইন সংশোধনের দাবি দীর্ঘদিনের। কিন্তু সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় তা পড়ে রয়েছে বছরের পর বছর। এ ক্ষেত্রে সরকারের একটি প্রগতিশীল চিন্তাই বদলে দিতে পারে পুরো বাংলাদেশের চিত্র। একই মা-বাবার সন্তান হয়ে সম্পত্তি বণ্টনের ক্ষেত্রে ভাইয়ের জন্য এক নিয়ম আর বোনের জন্য আরেক নিয়ম থাকবে কেন?
জন্মগতভাবে প্রত্যেকটি শিশু সমান অধিকার ও সুযোগের দাবিদার। কিন্তু আমাদের দেশের বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। বাংলাদেশে মুসলিম পারিবারিক আইন-১৯৬১ অনুযায়ী ভাই যতটুকু সম্পত্তি পায়, বোন পায় তার অর্ধেক। অন্যদিকে বাংলাদেশের হিন্দু ও বৌদ্ধ পারিবারিক আইন আরও পক্ষপাতমূলক- এখানে ভাই সমুদয় সম্পত্তির মালিক হয়, বোনের ভাগে পড়ে শূন্য।
বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মুসলিম সম্প্রদায়ভুক্ত। তাই মুসলিম পারিবারিক আইন উন্নত করার ক্ষেত্রে ধর্মীয় মূলবোধের প্রতি সম্মান এবং ধর্মীয় উদার ব্যাখ্যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিজের মেয়েকে ছেলের সমান সম্পত্তি দেওয়া যাবে না- এ মর্মে ইসলামে কোনো বিধিনিষেধ নেই। কোনো বাবা-মা চাইলে তাঁদের ছেলে বা মেয়েকে ‘হিবা’র মাধ্যমে সমান সম্পত্তি দিতে পারেন। বাংলাদেশে অনেক পরিবারেই এটা হচ্ছে। কাজেই মেয়েসন্তানের জন্য ছেলেসন্তানের সমান সম্পত্তির বিধান করলে তা ধর্মীয় রীতিবিরুদ্ধ হয় কী করে?
পৃথিবীর বিভিন্ন মুসলিম দেশে ইসলামি দার্শনিক ও গবেষক ধর্মের প্রগতিশীল ব্যাখ্যা দিয়েছেন। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হিসেবে বাংলাদেশ অবশ্যই সেসব ব্যাখ্যা কাজে লাগাতে পারে। সিডও কমিটির সাবেক চেয়ারপারসন সালমা খান এসব উদাহরণ তুলে ধরে লিখেছেন, “নারীকে সমান সম্পত্তি দেওয়া সম্পূর্ণ যুক্তিযুক্ত। মরক্কো, তিউনিসিয়া, ইন্দোনেশিয়াসহ বেশ কিছু মুসলিম দেশ ‘ইজতেহাদ’ বা interpretive judgement কে ব্যবহার করে ইসলামে নারীর মর্যাদা ও মৌলিক সমতার নীতিকে ব্যবহারের নিদর্শনকে কেন্দ্র করে সম্পত্তিতে সমান উত্তরাধিকারকে সমর্থন করে।” (আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও নারীর সমতা, পৃষ্ঠা: ১১২, উইমেন ফর উইমেন, জুন ২০০৩)।
উত্তরাধিকার প্রশ্নে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ মুসলিম দেশ ইন্দোনেশিয়া এবং অন্যান্য মুসলিম দেশের উদাহরণ বাংলাদেশ কাজে লাগাতে পারে। মানুষ সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব। তাই পৃথিবীর সমস্ত আইন-কানুনের লক্ষ্য হওয়া উচিত মানুষের কল্যাণ। এ বিষয়ে কারও দ্বিমত কাম্য নয়।
২০০৪ সালে ইন্ডিয়ান সাকসেশন অ্যাক্ট সংশোধনের পর থেকে ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ, তামিলনাড়–, মহারাষ্ট্র, কেরালাসহ বিভিন্ন রাজ্যে সম্পত্তিতে নারী-পুরুষের সমান উত্তরাধিকার নিশ্চিত হয়েছে। বাংলাদেশের হিন্দু পারিবারিক আইন পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ভারতের উদাহরণ ব্যবহার করা যেতে পারে।
বাংলাদেশে খ্রিষ্টীয় উত্তরাধিকার আইনের ক্ষেত্রে ছেলেমেয়ের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠিত। বাংলাদেশের প্রধান চারটি ধর্ম ছাড়াও বিভিন্ন আদিবাসীদের জন্য ভিন্ন ভিন্ন উত্তরাধিকারের নিয়ম-কানুন-প্রথা প্রচলিত রয়েছে। সেগুলোও অভিন্ন উত্তরাধিকার আইনের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে।
বাংলাদেশের সংবিধানে সব নাগরিকের অধিকার সমান। প্রস্তাবিত কোনো আইন বিদ্যমান আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হলে সে ক্ষেত্রে সংবিধানকে অগ্রাধিকার দেওয়াই হবে সরকারের কর্তব্য।
১৯৯৬-২০০১ সালের শেখ হাসিনা সরকার জীবনের সব ক্ষেত্রে বাবার নামের পাশাপাশি মায়ের নামের প্রচলন করে এক নীরব বিপ্লব সাধন করেছে। এবার শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন নতুন সরকার কি অভিন্ন উত্তরাধিকার আইন প্রণয়ন করে ইতিহাস সৃষ্টি করতে পারবে?
firozডটchoudhury@ইয়াহু ডট কম
মন্তব্য
খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর আলোকপাত করেছেন।
আপনার এই লেখাটি প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। সচলায়তনে আমি অনন্য লেখা পাঠের প্রত্যাশায় আসি, সেই প্রত্যাশায় চিড় ধরে যখন দেখি একই সময়ে পত্রিকায় প্রকাশিত আপনার একটি লেখা সচলে প্রকাশিত। তখন আমার মনে হয়, সচলায়তন ডাম্পিং গ্রাউন্ড হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। আমি আশা করবো আপনি আমাকে সচলায়তনে আপনার একজন মনোযোগী পাঠক ধরে নিয়ে আমার এই প্রতিক্রিয়া নিয়ে ভেবে দেখবেন। সচলের নীতিমালায় এ ব্যাপারে বাধা নেই বলে সেদিকে দিকনির্দেশ করছি না, একজন পাঠকের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে যাচ্ছি। ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ হিমু।
এই লেখাটির একটি পাঠ/অংশ প্রথম আলোতে ১২ নভেম্বর প্রকাশিত হয়েছে।
সচলের নিয়ম মেনেই আমি লেখা পোষ্ট/কমেন্ট করি। তবে আইনের কড়াকড়ির চেয়ে মানসম্পন্ন লেখার দিকে নজর দিতে চাই।
সবার কাছে লেখার বিষয়বস্তু নিয়ে কমেন্ট প্রত্যাশা করছি।
হিমু'র বক্তব্যের সাথে একমত। সচলে পাঠক হিসেবে আমিও অনন্য লেখা পড়তে চাই। আমার মত অধিকাংশ সচলরাই এখানে এমন লেখা পড়তে চান যা অন্য কোথাও পাওয়া যায় না তো বটেই যার কণ্ঠস্বরও আলাদা।
ফিরোজ জামান চৌধুরীকে অনুরোধ করবো, সচলায়তনের কথা মাথায় রেখে শুধু সচলায়তনের জন্যই লিখুন। কর্মসূত্রে আপনার লেখা প্রথম আলোয় ছাপা হচ্ছে হোক। ভালবাসাসূত্রে অনন্য লেখা তৈরি করুন সচলায়তনের জন্য।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন... ...সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
ধন্যবাদ মি. চৌধুরী, আপনার বুদ্ধিদীপ্ত পরামর্শের জন্য।
তবে আমি বিশ্বাস করি, যে কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিভা বিকাশের অন্তরায়। এটি রক্ষণশীল চিন্তার প্রকাশ।
মুদ্রণ মাধ্যম আর ইলেকট্রনিক মাধ্যম বা আকাশ পথের লেখাকে এক করে দেখা উচিত নয়। কেউ কারো প্রতিন্দ্বন্দ্বী নয়, পরিপূরক মাত্র। আমি, আপনি, আমরা, যে কেউই হয়তো আজকের সচলের লেখা আগামীকাল বই হিসেবে প্রকাশ করবে। তখন নিজেরা নিজেদের কী বলে শান্তনা দেবো?
তবে হ্যা, একই সাথে দুটি ব্লগে লেখা প্রকাশ করা অনুচিত, যেটা সচলায়তনের নীতিমালায় রয়েছে, যা আমি সব সময় মেনে চলি।
(আশা করি, আমার এই উত্তরটি 'কিল' না করে প্রকাশ করবেন।)
ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।
ধন্যবাদ পিপি।
ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।
মায়ের নাম না লেখার পেছনে যুক্তিটা কী?
পুরুষতান্ত্রিক চিন্তা। মা হলেও সে তো নারী। নাকি?
ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।
মায়ের নাম না লেখার ব্যপারে হীনমন্যতা না বরং কুসংস্কারের ভূমিকা থাকতে পারে। আমি প্রথমে ইংরেজী মাধ্যমে পড়ালেখা করতাম, সেখান থেকে যখন ধানমন্ডি বয়েজ এ ভর্তি হলাম, তখন কিছু কারণে হোক মায়ের নামটা এসেছিল, তখন কিছু সহপাঠী এই বলে তিরস্কার করেছিল যে মায়ের নাম বলতে হয়না -স্পষ্ট মনে আছে। আমি নিজেই বেশ কিছুদিন এ ফতোয়া মেনে চলেছিলাম, পরে বাসা থেকে ভুল ভাঙ্গিয়ে ছিল
এইতো পাইছি একটারে। ধানমন্ডি বয়েজের কোন ব্যাচ?
ধন্যবাদ সাফি।
ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।
বিস্তারিত আলোচনার জন্য ধন্যবাদ।
শিক্ষার পাশাপাশি জন্ম নিবন্ধন, পাসপোর্ট, চাকরির আবেদন, বিয়ে, ব্যাংকের কাজকর্মসহ জীবনের সব দাপ্তরিক কাজে বাবার সমান্তরালে অভিভাবক হিসেবে মায়ের ঘোষণা দিলে আরও ভালো হতো। - জন্ম নিবন্ধন, পাসপোর্ট এবং ভোটার আইডিতে তো এখন বাবার পাশাপাশি মায়ের নাম থাকে। সেখানে কিন্তু আলাদা ভাবে অভিভাবক হিসাবে কিছু উল্লেখ থাকে না। (২০০০ সালে ইস্যু করা পাসপোর্টে দেখলাম শুধু বাবার নাম ছিল, কিন্তু ২০০৪ এবং ২০০৯ সালের পাসপোর্টে বাবার সাথে সাথে মায়ের নামও আন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। শিশুর পাসপোর্টের জন্য আবেদনপত্রে মাকেও অভিভাবক হিসাবে দেয়া যায়, যদিও পাসপোর্টে এর উল্লেখ থাকে না)। আমি বলব অন্ততপক্ষে কাগজে কলমে কিছু কিছু পরিবর্তন হচ্ছে।
ধন্যবাদ নৈষাদ।
বাংলাদেশে শিশুর পাসপোর্টে মাকে একক অভিভাবক হিসাবে দেয়া যায় না। আমার এক বন্ধু (মেয়ে বন্ধু) তাঁর মেয়েকে নিজের পরিচয়ে আবেদন করলে পাসপোর্ট দেওয়া হয়নি। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, মেয়ের বাবার পরিচয় ছাড়া পাসপোর্ট দেওয়ার নিয়ম নেই।
এই হচ্ছে বাংলাদেশের বাস্তবতা।
ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।
আমি প্রথম আলোর লেখাটা পড়িনি তাই এটাই আমার কাছে প্রথম।আমার লেখাটা খুবি মান্সম্মত লেগেছে।
আমি খুবি খুদ্র একজন পাঠক,তাই মায়ের নাম লেখার বেপারটা আমার খুব ভাল লেগেছে।
লেখক কে ধন্যবাদ।
প্রিয় অতিথি লেখক, আপনার ধারণা ভুল। পৃথিবীর সব বাংলাভাষী পাঠক প্রথম আলো পড়ে, আর পড়ে সচলায়তন। তাদের তো অন্য কোনো কাজ নেই।
ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।
খুবই সময়োপযোগী পোষ্ট ফিরোজ ভাই। নারীদের সম্পতি আইন পরিবর্তনের পাশাপাশি আমাদের সামাজিক মূল্যবোধ পরিবর্তন প্রয়োজন। আমাদের দেশে মেয়েরা বাবার সম্পত্তি যতটুকুই পান তাও নিতে গেলে সমাজে ছি ছি পড়ে যায় আর এজন্যই দেখেছি সামাজিকতার কারনে নেহায়েৎ বিপদে না পড়লে মেয়েরা বাবার সম্পত্তিতে অধিকার ফলাতে আসেনা। এর পরিবর্তন তো আইন দিয়ে করা যাবেনা। এর জন্য প্রয়োজন মানুষের মানসিকতা পরিবর্তন।
----------------------------------------------------------------------------
zahidripon এট gmail ডট কম
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
আপনার সাথে সহমত জাহিদ।
তবে শুধু সচেতনা বাড়ালেই হবে না। আইন বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই রক্ষাকবচ হয়। তাই আইন করে অভিন্ন উত্তরাধিকার আইন করতে হবে।
ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।
একটি প্রয়োজনীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন সে জন্য ধন্যবাদ। আমি যদি ভুল না বুঝে থাকি তবে আপনার মূল বক্তব্য হচ্ছে সংবিধানের উত্তরাধিকার আইন নিয়ে। এই বিষয়ে আপনার সাথে আমার কোন দ্বিমত নেই। একজন পিতা হিসেবে আমি আমার সন্তানকে মেয়ে বা ছেলে হিসেবে আলাদা করতে পারবো না।
তবে আমি আপনার লেখার একটু সমালোচনা করবো। লেখাটির শিরোনাম এবং ভূমিকা আপনার প্রবন্ধের মূল আলোচনাকে হালকা করে দেয়। শিরোনাম দেখে কোনভাবেই বুঝার উপায় নেই যে আপনি উত্তরাধিকার আইন নিয়ে কথা বলবেন ভেতরে, যদি না কেউ আপনার লেখাটি সম্পূর্ণ না পড়ে। অনেকক্ষেত্রেই পাঠক লেখার শুরু পড়ে তারপর শেষ করে না, এক্ষেত্রে তিনি আপনার মূল বক্তব্য পর্যন্ত যেতে পারছে না।
এবার আসি ভূমিকার কথা। আপনি ভূমিকা হিসেবে যা বলেছেন সেগুলোকে আরো স্বল্প পরিষরে বলতে পারতেন। পুরো প্রবন্ধের অর্ধেকেরও বেশি আপনি কথা বলেছেন মায়ের নাম নিয়ে, তারপর হঠাৎ করেই শুরু করেছেন উত্তরাধিকার প্রসঙ্গ নিয়ে। এভাবে একটি প্রসঙ্গ থেকে অন্য প্রসঙ্গে হঠাৎ করে চলে যাওয়া পাঠকের জন্য সুখকর নয়। প্রবন্ধের ধারাবাহিকতা নষ্ট হয় এক্ষেত্রে। তাই আমার মতে ভাল হত যদি ভূমিকা আরো ছোট হত, তারপর আপনি ধীরে ধীরে উত্তরাধিকার নিয়ে আসতেন। যদি আরো পরিষ্কার করে বলি, এখানে দু'টো ভিন্ন প্রসঙ্গ নিয়ে আপনি আলোচনা করেছেন, যা নিয়ে দু'টো ভিন্ন লেখা দিলে সেটা আরো পাঠক প্রিয় হত।
তারপরেও প্রয়োজনীয় একটি বিষয় নিয়ে লেখার জন্য আপনাকে আবারো ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ স্বাধীন।
আপনার মন্তব্য দেখেই বোঝা যাচ্ছে, আপনি বেশ মনোযোগ দিয়ে লেখাটা পড়েছেন।
আপনার উত্তরে বলি, দুটি পোস্ট দিলে ভালো হতো, তা ঠিক। তবে আমার মনে হয়েছে, দুটির এক ধরনের যোগসূত্র আছে।
ভবিষ্যতে উত্তরাধিকার আইন নিয়ে বিস্তারিত লেখার ইচ্ছা আছে, যদি তা সচলায়তনের 'সংবিধান' লঙ্ঘন না করে। এবং তা প্রকাশ হয়, তাহলে নিশ্চয় পড়তে পারবেন।
(আর আমার লেখার সমালোচনা সম্পর্কে বলব, আমি ভাই বড় কোনো বিখ্যাত ব্লগার নই, বড় কোনো লেখক নই, সবকিছু গুছিয়ে লিখতে পারি না। একেক জনের একে রকম সীমাবদ্ধতা থাকবেই। )
ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।
আমার মূল বক্তব্য 'সংবিধানের উত্তরাধিকার আইন' নিয়ে নয়। আমি বলছি ধর্মীয় উত্তরাধিকার আইন নিয়ে।
ধন্যবাদ স্বাধীন।
ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।
বিয়ের কার্ডেও দেখবেন মায়ের নাম সাধারণতঃ দেয়া হয় না। থাকে, জনাব অমুক উদ্দিন চৌধুরী ও বেগম চৌধুরী। বড্ড চোখে লাগে এগুলো।
**************************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
ধন্যবাদ তানবীরা। এ বিষয়ে আপনারও লেখা চাই। আপনার অভিজ্ঞতা, পর্যবেক্ষণ ইত্যাদি।
ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।
আমার ফর্মফিলাপের সময় মায়ের নাম লেখায় স্থান ছিল না, থাকলে অবশ্যই লিখতাম, আড় বুঝলাম না, এখনকার পোলাপাইনের মাঠায় মায়ের লেখতে দ্বিধা জন্ম নিল কিভাবে? এমন মনোভাব দেখে বিশেষ বিরক্ত হইলাম, আমি এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছি ১৯৯৫ তে, তখন মায়ের নাম লেখার স্থান ছিল না, তবে আমার মায়ের পরিচয় দিতে আমি সবসময়ই গর্ব বোধ করতাম এবং এখনও করি।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
নতুন মন্তব্য করুন