• Warning: Illegal string offset 'alt' in theme_imagefield_formatter_image_plain() (line 17 of /var/www/sachalayatan/s6/sites/all/modules/imagefield/imagefield_formatter.inc).
  • Warning: Illegal string offset 'title' in theme_imagefield_formatter_image_plain() (line 18 of /var/www/sachalayatan/s6/sites/all/modules/imagefield/imagefield_formatter.inc).
  • Warning: Illegal string offset 'alt' in theme_imagefield_formatter_image_plain() (line 21 of /var/www/sachalayatan/s6/sites/all/modules/imagefield/imagefield_formatter.inc).
  • Warning: Illegal string offset 'title' in theme_imagefield_formatter_image_plain() (line 21 of /var/www/sachalayatan/s6/sites/all/modules/imagefield/imagefield_formatter.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function 'theme_imagefield_image' not found or invalid function name in theme() (line 669 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/theme.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

পক্ষীপুরাণ

টিউলিপ এর ছবি
লিখেছেন টিউলিপ [অতিথি] (তারিখ: রবি, ১৫/০৫/২০১১ - ৪:৫৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সকাল থেকেই কিচিরমিচির কিচিরমিচিরে কান ঝালাপালা। পা টিপে টিপে লিভিং রুমে গিয়েই দেখলাম পুরোদস্তুর সার্কাস চলছে। একটা পাখি আসে, এসে প্রথমে রেলিংএ বসে, ইতিউতি চায়, ঝুপ করে ঝোলানো বার্ড ফিডারে গিয়ে ঠোঁটে বিচি তুলে নেয় একটা। তারপর উড়ে গিয়ে মাচায় বসে খুব দ্রুত ঠুকঠুক করে বিচিটা ভেঙে খেয়েই উড়ে পালায়। আবার একটু পরে এসে একই কান্ড করে। মাঝে মাঝে বার্ড ফিডারের মাঝে রাখা বাটির পানিতে একটু ঠোঁট ভিজিয়ে নেয়।

বার্ড ফিডারের শখ ছিলো আসলে পল্লবের। কিন্তু ওর মনের মতো বার্ড ফিডার পাওয়া বেশ ঝামেলা হচ্ছিলো। আমাদের বাসার আশেপাশে খুব বেশি গাছ নেই যেগুলোতে পাখি বসে। গতবার একটা বার্ড ফিডার কিনে ঝুলিয়ে দিয়েছিলাম, কেউ আসতো না। এবার তাই ওটায় আর বিচি দেইনি। বরং বারান্দার এক সাইডে মেঝেতে ছড়িয়ে দিয়েছিলাম। এবার দেখা গেলো পাখি খোঁজ পেয়েছে ফ্রি হোটেলের। কিন্তু সমস্যা হলো যখন একগাদা গাছের চারা পুরো বারান্দা দখল করে নিতে থাকলো। পাখির খাবার দেওয়ার জায়গা আর হয় তো থাকে না। তাই ডলার স্টোর থেকে একটা বাঁশের ঝুড়ি কিনে তাতে একটা প্লাস্টিকের স্বচ্ছ গ্লাস বসিয়ে খাবার পানি দুটোরই ব্যবস্থা করে ঝুলিয়ে দিলাম। দেখতে এখন ভালোই লাগে। গাছগুলো একটু গুছিয়ে নিচের জায়গাটাও এখনো ধরে রেখেছি। সুতরাং দুই শাখায় হোটেল সালাদিয়ার ব্যবসা এখন রমরমে। আর কত রকম যে পাখি আসে, চিকাডি, চড়ুই, টিটমাউস, কার্ডিনাল। আর বাড়িতে থাকলেই পল্লব থাকে লিভিং রুমের সোফার পিছনে ঘাপটি মেরে বসে। পাখি আসলেই ক্লিক ক্লিক ক্লিক। খুব দুঃখ ওর, টকটকে লাল ছেলে কার্ডিনালের এখনো কোন ভালো ছবি ওঠে নি, বেশিরভাগ সময়েই এরা টবের আড়ালে লুকিয়ে থাকে। আর ক্যামেরার ক্লিক শুনলেই উড়ে পালায়। সেদিন আবার হঠাৎ এসেছিলো দুটো ঘুঘু। কিন্তু আলো তখন এত কমে এসেছে যে আর ভালো ছবি উঠলোই না।

আরও কত যে আফসোস পল্লবের, হামিংবার্ড ফিডারে এখনো হামিংবার্ড বসে না (আমাদের এইদিকে কমই আসে, তবু তার জন্য আয়োজন কম নেই), বারান্দাটা ওর মনের মতো সব গাছ লাগানোর জন্য বড় না, লাউয়ের চারা বের হয় নি। তবে যখন গ্র্যাড লাইফের বিরল কিছু সময়ে যখন বাসায় থাকি, আর হঠাৎ বারান্দায় তুমুল হট্টগোলে আমাদের অতিথিদের তৃপ্তি নিয়ে খাওয়ার সাড়াশব্দ পাই, ভাবি, জীবনটা মন্দ কি?


মন্তব্য

আসমা খান, অটোয়া। এর ছবি

পাখীর ডাক শুনতে খুব ভালো লাগে। খুটে খাওয়ার দৃশ্যটা অতি চমৎকার। সারাদিন ওদের দেখেই কাটিয়ে দেয়া যায়। আমার এলাকায় বাড়ীর বাইরে পানি ব্যাবহার করা বারন, রেইন ব্যারেলের ভরষায় লাউ, কুমরা, পুই লাগাচ্ছি, আর মনে মনে জপছি ‘মেঘ দে, পানি দে।‘।মাচায় ঝোলা লাউ, পুই আঙ্গিনাতে এক টুকরো বাংলাদেশ দেখতে কি যে ভালো লাগে।

টিউলিপ এর ছবি

আমার বারান্দায় এখন পা ফেলার জায়গা নেই আসলে, গাছগাছালি পাখপাখালিতে ভরা। আজ আবার একটা ঘুঘু বাসা করার জন্য ঘুরঘুর করছিলো, পরে আরেকটা ঝুড়িতে খড় দিয়ে দিলাম, দেখি কি হয়।

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আমরার এইত্তা ঝুলানের জায়গা নাই...
আর ঝুলাইলেও খালি কাউয়া আইবো :(

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

ফাহিম হাসান এর ছবি

ভাইয়া, আপনি একবার ঝুলায় দেখেন। ঢাকায় এখনো নানা জতের পাখি আছে। :D

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ঢাকায় যে এখনো অনেক জাতের পাখি আছে সেটা জানি। মাঝে মধ্যেই চিপা চাপা দিয়ে উড়তে দেখি। কিন্তু তা খুব কমে আসছে। গাছ কমে গেছে, পাখিদের খাদ্য কমে গেছে... পাখিরা খাবে কী?

ঝুলাবো... গাছও লাগাবো... কয়দিন ধরেই মাথার মধ্যে ঘুরতেছে এইসব চিন্তা, সময় করে উঠতে পারতেছি না

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অপছন্দনীয় এর ছবি

খালি খাদ্য কমে গেছে তা-ই না। নিজেরাও খাদ্য হয়ে গেছে। চড়ুই মেরে খেতে আমি নিজেই দেখেছি!

তাছাড়া না খেলেও অনেক মানুষেরই দেখি স্বাভাবিক(!) প্রবৃত্তিই হচ্ছে মেরে ফেলা...আরে এই বিড়ালটা তো খুব সুন্দর, আগে ওটাকে পিটিয়ে মার। দেখ, একটা ডলফিন পারে উঠে এসেছে, আগে ওটাকে পিটিয়ে মার। আরে, এই পাখির ডানা ভেঙে গেছে, উড়তে পারে না, আগে ওটাকে পিটিয়ে মার। বাঘডাশ, শেয়াল সবই তো গেছে, এখন পাখিগুলো যেতে যে কদিন লাগে আর কি :( ।

টিউলিপ এর ছবি

ঝুলায় ফেলেন ভাইয়া, পাখির ডাক শুনতে যে কি ভালো লাগে। আজ কত্তদিন পর ঘুঘুর ডাক শুনলাম।

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

ফাহিম হাসান এর ছবি

চ্রম জট্টিল পোস্ট।

পাখ-পাখালি ভালো লাগে খুব। আপনি যার ছবি তুলেছেন তিনি হলেন white breasted nuthatch. কিউট একটা পাখি। মোটেই magpie এর মত ঝগড়াটে না। আর দেখতেও খুব আপন আপন, কার্ডিনালের মত অত ঝলমলে না।

আপনি কিন্তু বার্ড ফিডার নিজেই বানাতে পারেন।

হামিংবার্ড আনতে চাইলে কিছু টেকনিক আছে। আপনি কই থাকেন তার উপর নির্ভর করছে তো বটেই। :D

পল্লব এর ছবি

আমি নেট ঘেটে পাইলাম, এইটা Tufted Titmouse। ঝুঁটিটা দেখা যাইতেসে না এই ছবিটায়। ঝগড়াটে পাখি এখনও আসে নাই, বা এখনও কোনটারে মারামারি করতে দেখি নাই। তবে ছেলে House Finch গুলা আসলে এইটা, Carolina Chickadee এইগুলা ভেগে যায়, কেন জানিনা। আর আসে মেয়ে Northern Cardinal। ছেলেগুলা (যেগুলা টকটকা লাল হয়) কেন জানি আসে না, আসলেও লুকায়া থাকে। আজকে অনেক কষ্টে একটা ছেলের ফটো তুলে ফেলসি :D

কালকে থেকে ঘুঘুও আসা শুরু করসে। আজকে দেখি একটা বারবার ঘরে ঢুকতে গিয়ে বারান্দার দরজায় বাড়ি খাচ্ছে। পরে একজনের সাথে কথা বলে বুঝলাম ডিম পাড়ার জায়গা খুঁজতেসে বোধ হয়। তাড়াতাড়ি করে ডলার স্টোরে গিয়ে ঝুড়ি এনে গাছের ডাল কেটে একটা বাসার মত বানায়ে ঝুলায়ে দিলাম। দেখি কি হয়। আপনাদের দোয়াপ্রার্থী :)

হামিং বার্ড নিয়া কি ট্রিক জানেন, বলেন। বারান্দায় নেকটার ফিডারে বাসি হইতেসে খালি।

==========================
আবার তোরা মানুষ হ!

ফাহিম হাসান এর ছবি

পল্লব ভাইয়া, Tufted Titmouse হতে পারে। কিন্তু ছবি দেখে white breasted nuthatch মনে হচ্ছে। আপনার ফ্লিকারের এই ছবিটাও দেখলাম। Tufted Titmouse এর ঝুঁটি নাই তো! ডানা দেখেও nuthatch মনে হচ্ছে।

------------------------------

আপনি কোন রিজিওন এ থাকেন? হামিং বার্ড আনার জন্য অনেকে রঙ্গিন কাগজের টুকরা (লাল/হলুদ) ফিডারের আসে পাশে ঝুলায় রাখে। কাজ হবে বলে ধারণা। তবে আপনার সিজন আর পড়শিদের গাছপালার উপরও নির্ভর করে।

হামিং বার্ডের ছবি তুলতে পারলে ছবি পোস্ট দিতে হবে কিন্তু। ছাড়াছাড়ি নাই। :D

পল্লব এর ছবি

ঝুঁটি না ঠিক, মাথার পিছেন দিকে কয়েকটা পালক উঁচা হয়ে থাকে। Tufted নামটা বোধ হয় সেইজন্যেই। এই ছবিটা দেখলে বুঝবেন।

Hmmm, what'll I have??

পাখিগুলা খুবই ফাস্ট আর অস্থির, আর আমার বারিন্দায় লাইট কম :( এইটা আর carolina chicadee এর একখান কইরা ভাল পোজমারা ছবি এখনও তুলতারলাম না।

টেনেসি থাকি। বারান্দায় গাছ আছে অনেক, কয়টা লাল-হলুদ ফুলগাছের বিচি ওয়ালমার্ট থেকে কিনসিলাম, কেন জানি এইবার হইতেসে না। হামিং বার্ড একদিন আইসা "ধুর! ভালো না!" কয়া চলে গেল :( তারপর ফিডার কিনলাম, লাল রঙ, ফুটাগুলায় আবার হলুদ ফুল বানানো। লাল রংয়ের নেকটার ভরে রাখসি দুই হপ্তা, তাও কোন পাত্তা নাই।

==========================
আবার তোরা মানুষ হ!

ফাহিম হাসান এর ছবি

এইবার পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে। এইটা টাফটেড টিটমাউসই বটে। আমার ভুল।
লজ্জা, লজ্জা। $)

টিউলিপ এর ছবি

ছবি পল্লবের তোলা। ও বলছিলো এইটা টাফটেড টিটমাউস :S

বার্ড ফিডার তো নিজেরই বানানো এটা। আজকে আরেকটা বাসা করলাম ঘুঘুর জন্য।

হামিংবার্ডের জন্য এবছর আসলে দেরি হয়ে গেছে। তাও দিয়ে রেখেছি পথভোলা কেউ আসলে। সামনের বছর কোমড় বেঁধে আবার নামবো

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

ফাহিম হাসান এর ছবি

আপু, আমার কাছে nuthatch মনে হচ্ছে, Titmouse হতে পারে, কিন্তু সম্ভাবনা কম। ঘুঘুর ছবি দিয়েন পারলে।

------------------

অফটপিক: নতুন রেসিপি দেন

টিউলিপ এর ছবি

নাহ, আসলেই টিটমাউস, ঝুঁটিটা ছবিতে আসে নি। এইজন্য নাটহ্যাচ মনে হচ্ছে। ছবির মালিক পল্লব, ও আপনাকে ফেসবুকে খুঁজছে, আপনার ছবি দেখার জন্য। :)

অঃটঃ, সব রেসিপির আসল রেসিপি তো মুর্শেদ ভাই দিয়ে দিয়েছেন, সেই মুগডাল ভর্তার পোস্টে।

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

হাসিব এর ছবি
টিউলিপ এর ছবি

:)

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

তুলিরেখা এর ছবি

আহ, দারুণ। আমি কেবল পাখিদের ফুড়ুৎ ফাড়াৎ উড়তে দেখি, ফোটো তুলতে পারি না। খুব চঞ্চল ওরা। একটা লাল কার্ডিনাল তুলেছি কিন্তু তেমন স্পষ্ট হয় নাই। অনেক দূরে ছিলো।

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

টিউলিপ এর ছবি

আমি তো ছবিই তুলি না, খালি পল্লবের উপরে মাতব্বরি করি, শিল্প নির্দেশক আর কি! তবে পাখির ছবি তোলা আসলেই কঠিন।

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

আয়নামতি1 এর ছবি

ছোট্ট কার্ডিনাল দেখতে আসলেই এত কিউট! আমাদের এদিকে দেদারসে পাখি আসে, কিন্তু তেনারা যখন আসেন তখন হাতের নাগালে ক্যামেরাই থাকেনা। আপু আপনি ভাইয়াকে নিয়ে আমাদের এখানে বেড়াতে চলে আসেন, কথা দিচ্ছি কার্ডিনালের অন্নেক সুন্দর ছবি তুলতে পারবেন :) ছবিটা বেশ হয়েছে কিন্তু!

টিউলিপ এর ছবি

পাখি আমাদের এখানেও কম নেই, কিন্তু এত্ত চঞ্চল এরা। আর খুব লাজুক, ক্যামেরার শব্দ পেলেই ফুড়ুৎ। মোটেও পলিটিশিয়ানদের মতো ক্যামেরা দেখলে হামলে পড়ে না :(

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

অপছন্দনীয় এর ছবি

দিব্যি ছবি :) ।

পাখির ছবি তোলার ধৈর্য আমার নেই, তবে দিনকয়েক আগে গ্রাউন্ড স্কুইর‍্যালের ছবি তুলতে গেছিলাম। আমাকে রীতিমত চরকি নাচন নাচিয়ে ছেড়েছে। ঘাসের মধ্যে গড়াগড়ি করে জামাকাপড়ের বারোটা বাজিয়েছি, হাত পায়ের চুলকানিতে সেই রাতে ঘুমাতে পারিনি - কিন্তু একটা ছবিও তুলতে পারিনি।

ঢাকায় চড়ুই রীতিমত ঘরের মধ্যে আসে, কাউকে দেখলে একটু দূরে বসে কী সব বলেও। মা ওগুলোকে খাওয়ায়, আর তারাও মনের সুখে ধোয়া জামাকাপড় শুকাতে দিলে সেগুলোতে নিজেদের চিহ্ন ছেড়ে যায়। চলে আসার আগে আগে একটা খুঁজে পেলাম সিঙ্কের মধ্যে, পানিতে ভিজে মরমর অবস্থা। অনেক কষ্ট করে মুছে টুছে তাকে গরম করা লাগলো। পরেরদিন আরেকটাকে পেলাম সামনে, না খেয়ে মরার দশা - এত দুর্বল যে ওড়া দূরে থাক, লাফাতেও পারে না। সেটাকে এনে খাওয়াতে জীবনটা ভাজা ভাজা হয়ে গেছে। চাল গুঁড়ো করে, সাথে ছোট পোকাটোকা যা পাওয়া যায় সেগুলো দিয়ে প্রোটিনের ব্যবস্থা করে পেস্ট বানিয়ে খাওয়ানো - উফফফ, তাও যদি খায়!

বার্ড ফিডার একটা ছিলো, কিন্তু চড়ুই সেখান থেকে খেয়েদেয়ে মা'র যত ছোট গাছ আছে সবগুলো গোড়াসুদ্ধ উপড়ে রেখে যায়, কাজেই অনেক কষ্টে রিঅ্যারেঞ্জ করে দূরে সরাতে হলো।

পল্লব এর ছবি

চড়ুই ঘরের ভিতরে ঢুকে? :( আমি কাছে যাওয়ার নাম নিলেই খালি সব ভাগে।

তাও অবশ্য এইখানেরগুলা গাছের তেমন ক্ষতি করে নাই। আমার বাগানের সবকিছু ঠিকঠাক আছে এখনও।

চড়ুই খাওয়ানোর গল্প শুইনা হেভি মজা পাইলাম। যত্নআত্তির কথা শুনে ভাল্লাগসে খুব।

==========================
আবার তোরা মানুষ হ!

অপছন্দনীয় এর ছবি

ঘরের মধ্যে ঢোকে খালি না, টেবিলে নেচে বেড়ায়। মনে হয় বুঝেছে কেউ ধরবে না।

এসির পাইপগুলো যেখানে বারান্দা থেকে ঘরের মধ্যে ঢুকেছে, সেখানে গর্তটা খুব পছন্দ হয়েছে তাদের। প্রায় তিন বছর ধরে ক্রমাগত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে গর্তের মধ্যে ঢোকার। বাথরুমের জানালার উপরে একটা বাসা বানিয়েছে, সেখানে রীতিমত একটা ম্যাটার্নিটি ক্লিনিক। এতদিন জানতাম চড়ুই প্রতি বছর নতুন বাসা বানায়, এখানে দেখছি একজনের ছেড়ে যাওয়া বাসা অন্যজন এসে ব্যবহার করছে।

মাঝে মধ্যে বারান্দায় গেলে ঘাড় কাত করে খুব বিরক্ত স্বরে কি সব বলে, আমার আর মা'র দুজনেরই ধারণা আমাদের বাসা ছেড়ে চলে যেতে বলে, নিজেরা থাকবে।

একবার এক কবুতর কি করে যেন পথ ভুলে এসে জবুথবু হয়ে বসে ছিলো। দুইদিন খাওয়ালাম দাওয়ালাম, বারান্দায়ই বসে থাকতো। একদিন ফিরে দেখি বাঁশ টাঁশ দিয়ে কি এক ক্যারিকেচার করে পাশের বাড়ির ছাদ থেকে বারান্দা পর্যন্ত এসে কেউ ধরে নিয়ে গেছে।

তবে খালি পাখি না, আমার বাসা পাড়ার সব বিড়ালেরও অভয়ারণ্য - রীতিমত সোফায় চড়ে ঘুমায়, লাঠি দেখালে বিশাল হাই তোলে। সে গল্প নাহয় আরেকদিন হবে :D।

টিউলিপ এর ছবি

মাঝে মধ্যে বারান্দায় গেলে ঘাড় কাত করে খুব বিরক্ত স্বরে কি সব বলে, আমার আর মা'র দুজনেরই ধারণা আমাদের বাসা ছেড়ে চলে যেতে বলে, নিজেরা থাকবে।

লেখেন না ভাইয়া, আপনার লেখার হাত এত্ত চমৎকার। ছবিগুলো চোখের সামনে দেখতে পাই। এই এখন যেমন দেখছি, আপনি একটা লাঠি নিয়ে দূর থেকে হুশ হুশ করছেন, আর একটা বিড়াল সোফায় আধশোয়া হয়ে নিজের গা চাটছে, আর মাঝে মাঝে হাই তুলে আপনার দিকে তাকাচ্ছে।

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

পল্লব এর ছবি

=(( =(( আমি হইলাম গিয়া শয়তানের ছাও, আমারে আশেপাশে দেখলে সব খালি ভাগে! খেলুম না!

আর এইগুলা নিয়া লেখা শুরু করেন, মন্তব্য পইড়াই লোভ হইতেসে।

==========================
আবার তোরা মানুষ হ!

টিউলিপ এর ছবি

কাঠবেড়ালি তো আড়াই ফুট দূরে থাকতেই পালিয়ে যায়! তবে একটা দেখেছিলাম, ন্যাশনাল মলে। রীতিমত ডাকাত। আমার আর আরেক আপুর ব্যাগ খুলে ভিতরে ঢুকে ফলের মতো দেখতে ইরেজারগুলো আছে না, ঐটা বের করে খাওয়ার চেষ্টা করলো। সেই চান্সে কাঠবেড়ালির লেজে হাত দেওয়ার আজীবনের শখটাও মিটিয়ে নিয়েছি।

চড়ুইয়ের কথা শুনে মায়া লাগলো। দেশে প্রায়ই চড়ুই বাসায় ঢুকে পড়ত। তখন তাড়াহুড়া করে সব ফ্যান বন্ধ করতে ছুটতাম। তাও একবার ছুটতে ছুটতেই ফ্যানে বাড়ি খেল। অনেক চেষ্টা করেও একদিনের বেশি বাঁচাতে পারি নি। :(

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

অপছন্দনীয় এর ছবি

এটা ঠিক গাছে চড়া কাঠবেড়ালী না। মাটিতে গর্ত খুঁড়ে থাকে - লেজ সরু। একটা ঢিপিমত জায়গায় কয়েকটাকে দেখেছিলাম। রোববার সময় করে গেলাম সেখানে। অনেকক্ষণ ঘোরাঘুরির পর একটাকে পেলাম, খেয়েদেয়ে গর্তের ঠিক মুখে বেশ আয়েশ করে বসে আছে। কিছুদুর হেঁটে গেলাম, তারপরে মাটিতে বসে আরো খানিকটা। আমার লেন্স ভালো না - তারপরেও ঠিকমত আসছে না দেখে শেষটা মাটিতে শুয়ে পড়ে ক্রল করে এগোলাম। কাছে গিয়ে সেটিং আর ফোকাস ঠিক করা পর্যন্ত ঠিকঠাক বসে ছিলো। যেই শাটারটা টিপতে যাবো, অমনি হাওয়া।

তবে ঘটনা সেখানেই শেষ নয়। ওই গর্তের ডজনখানেক মুখ আছে মনে হয়। পুরো র‍্যান্ডম প্যাটার্নে একেকবার একেকটা দিয়ে মাথা বের করে, আবার আমাকে দেখেই সুড়ুৎ করে ঢুকে পড়ে। প্রায় এক ঘন্টা ওই ঘাসের মধ্যে শুয়ে কাটিয়েছি যদি একটা ছবিও তোলা যায়। কিন্তু কিছুতেই কিছু হলো না।

ভদ্রলোকের / ভদ্রমহিলার চেহারাটা এখানে পাবেন

এই ঘটনার পরে জীবনের ধ্যান জ্ঞান হয়ে দাঁড়িয়েছে একটা ভালো লেন্স কেনা - দরকার হলে না খেয়ে থেকেও :D ।

টিউলিপ এর ছবি

ছবিটা দেখতে পাচ্ছি না। তবে বুঝতে পারছি, অচিরেই আরো কিছু ছবি (নিজের তোলা) আসছে সচলে।

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

অপছন্দনীয় এর ছবি

ওইটা নিজের তোলা না, উইকিপিডিয়া থেকে দিতে চেয়েছিলাম - আসলো না। এইবার পেজটাই লিংক করে দিলাম।

কৌস্তুভ এর ছবি

দারুণ করেছেন তো।

আমাদের এখানের বাসায় বাইরে টিলার ধারে খানিকটা জায়গা গাছপালায় ডাকা, শীতকাল বাদে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালে শহরটাই আড়াল হয়ে যায়, মনেই হয় না খোদ বস্টনে থাকি। পাখি গুটিকয় আছে, খুব বেশি বৈচিত্র নেই।

দেশে আমাদের বাড়ির পাশেই অনেকটা জায়গা জুড়ে একটা পরিত্যক্ত কারখানা ছিল, সেই জঙ্গলে প্রচুর দুর্লভ পাখি থাকত। এখন আমাদের বাড়িতে দুয়েকটা বড় বড় গাছ আছে, তাই সেটা পাখিদের অভয়ারণ্য। দারুণ লাগে!

টিউলিপ এর ছবি

ছোট শহরে থাকার এই সুবিধা, এত্ত পাখি আর গাছ এখানে। আর নিচে নামলেই দেখা যায় কাঠবেড়ালি তুড়তুড় করছে। আফসোস, তিনতলায় কাঠবেড়ালি আসার উপাউ নেই।

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

সাফি এর ছবি

আমাগো জন্য যদি এমন একখান ফ্রি হোটেলের ব্যবস্থা করতেন প্রীত হইতাম, কথা দিতেছি পল্লব ভাইয়ের সামনেও পোজ দিব দাঁত কেলিয়ে। ছবি লেখা ভালু পেয়েছি

পল্লব এর ছবি

আইসা পড়েন। হোটেল তো খোলাই আছে।

Sparrow Feast

এইগুলার মতন গার্ড বসায়া খাওয়াও লাগবে না। আরাম কইরা চেয়ার-টেবিলে বইসা খাইবেন।

==========================
আবার তোরা মানুষ হ!

টিউলিপ এর ছবি

ওই, আমার পোস্টে তুই রিপ্লাই দেস কিল্যা? তুই যে আমার রেসিপি মাইরা এত্তগুলা পোস্ট দিসিলি, আমি বাগড়া দিসি?

অঃটঃ, ছবিটা পসন্দ হইসে। :D

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

পল্লব এর ছবি

দিতে না করসি? তুই আইলসামি করিস, আমি ভালু, খর্মট।

==========================
আবার তোরা মানুষ হ!

টিউলিপ এর ছবি

হ্যাঁ ভাইয়া, চলে আসেন, আমাদের এইখানে কেউ আসে না। :(

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

পল্লব এর ছবি

<ঘ্যাচাং>

==========================
আবার তোরা মানুষ হ!

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

আহ, মনটা কি যে ভালো করে দিলেন।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

টিউলিপ এর ছবি

(ধইন্যা)

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

নীড় সন্ধানী এর ছবি

এরকম ব্যবস্থাও যে থাকে আজই প্রথম জানলাম। তবে নজু ভাইয়ের মতো বলি, আমাদের এখানে উপায় নাই। এখানে ঝোলালে কাউয়া এসে সারাদিন বসে থাকবে। একটা চড়াইও আসার সুযোগ পাবে না। :(

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

টিউলিপ এর ছবি

ঝুলিয়ে দেখেন না ভাইয়া। আমি যদিও মফস্বলে থাকতাম, কাকই বেশি দেখতাম। তবু বারান্দায় ভাত/রুটি ছড়িয়ে দিলে মাঝেসাঝে চড়ুই বা টুনটুনি যে আসতো না তা না।

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

হতাশ করলেন। গতকাল থেকে ঠিক করে রাখছি সময় পেলেই এই পোস্টে ঢুকব। কিন্তু ঢুকেই শেষ হয়ে গেল। এত কম লেখা দিলে চলে? ছবিগুলোই নাহয় দিতেন :) মাইনাস দিয়ে গেলাম।

টিউলিপ এর ছবি

ভাইয়া মাইনাসটা পল্লবকে দেন। ছবি ওর তোলা, ওকে কবে থেকে আমি বলছি ছবিপোস্ট দিতে, অন্যেরটা নিয়ে আমি মাতব্বরি করবো কেন বলেন?

আর লেখা, আমার প্রফ যদি টের পায়, লেখা ছুটিয়ে দেবে পুরোপুরি। :)

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

রু (অতিথি) এর ছবি

খুব ভালো লাগলো। কয়েকদিনের মধ্যে আমিও একটা বার্ড ফিডার ঝুলাচ্ছি।

নিভৃত_সহচর এর ছবি

কাকতাল আর কাকে বলে। আমাদের ভিটায় কয়েকদিন ধরে ঘুঘু চড়ে বেড়াচ্ছে, ক্যামেরা নিয়ে বের হলেই উড়ে পালায়। অন্য কিছু পাখির ছবি কোনভাবে তুললেও বেশি যুত হয় নাই। পাজিগুলা বসে গিয়ে আমাদের প্রতিবেশির গাছে। ছবি তুলতে গিয়ে তো প্রায়ই ভয়ে থাকতে হয়, কখন ভাবে আমি ওর ঘরের ছবি তুলি আর আমাকে লাঠি নিয়ে দৌড়ানি দেয়। আজকেও হতাশ হয়ে ফেরত এসে কেবল সিদ্ধান্ত নিলাম ফিডার ঝুলাবো তখনি দেখি অপছন্দনীয়র পোস্ট আর সেখান থেকে আসলাম এখানে। ছবিগুলো দেখে ফিডার ঝুলানোর ইচ্ছা আরো প্রবল হলো।

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

চমৎকার পোস্ট। ফুল, পাখি আর সুখাদ্য, আপনাদের আর কি চাই :)

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।