নারী দিবসের লেখাগুলো পড়তে পড়তে রাগে ফুঁসছিলাম। আমাদের দেশে মেয়ে হওয়া কতটা যন্ত্রণা সেটা বাংলাদেশের মেয়ে হলে না জন্মালে মনে হয় বোঝা সম্ভব না।
কিন্তু পড়তে গিয়ে মনে হলো স্রোতের বিপরীতেও চলার গল্প কিছু থাকুক, আশার কথা কিছু থাকুক।
সত্যি বলতে কি, সেটার জন্য খুব বেশি কিছু প্রয়োজন নেই, মানসিকতার সামান্য একটু বদল হলেই চলে।
ঘটনা একঃ
আমরা তিন বোন বলার পরে অবধারিতভাবেই যে কথাটা শুনতে হয়েছে সব সময়, সেটা হলো, "ভাই নেই?" সেটা আলাদা করে কেন জিজ্ঞেস করতে হবে সেটা বুঝতাম না ছোটবেলায়। এরকম একবার গ্রামের বাড়িতে আম্মু পুত্রগর্বে গরবিনী এক মায়ের প্রশ্নের উত্তরে তিন মেয়ে বলার পরে মহিলা কপট সান্ত্বনা দিলেন, আহা ছেলে হয় নি! আম্মু কিছু বলার আগেই আমার দাদী আগ বাড়িয়ে বলে দিলেন, "ছেলের দরকার নেই। আল্লায় দিলে আমার নাতিনরা যা হবে অনেক ছেলে তেমন হতে পারে না।"
ঘটনা দুইঃ
আমার বড় বোনের শ্বশুর-শাশুড়ি আমাদের বাসায় বেড়াতে এসেছেন, সেখান থেকে ঢাকায় আমার বড় বোনের বাসায় যাবে। আম্মু তাদের জন্য যা-ই রান্না করেন, মাঐমা দেখি অল্প একটু একটা ছোট বাটিতে তুলে ফ্রিজে রাখেন। জিজ্ঞেস করায় বললেন, "ঢাকায় নিয়ে যাই, বৌমা নিজের মায়ের হাতের রান্না অনেকদিন খায় না।"
ঘটনা তিনঃ
সবাই রান্না শেখে মায়ের কাছে, বোনের কাছে। আমি রান্না শিখেছি আমার বড় দুলাভাইয়ের (আমি ভাইয়া ডাকি) কাছে। আম্মু আমাদের তিন বোনকেই কখনো রান্নাঘরে ঢুকতে দিত না। বড় দুই বোন তাও নিজের ইচ্ছায় একটু আধটু শিখলেও আমার আগ্রহ ছিল না কখনো। আম্মুর মাথায় বাজ পড়ল যখন দেশের বাইরে আসার সুযোগ হয়েছে তখন। কিন্তু চাকরির প্রয়োজনে দুইজন থাকি দুই জায়গায়। এই সময় এগিয়ে আসলো ভাইয়া। ভাইয়া রান্না করার সময় পাশে গিয়ে একটু দাঁড়াতাম, ভাইয়া পুরো সায়েন্টিফিক্যালি ব্যাখ্যা করত কখন কোনটা দিচ্ছে, আর কেন। পুরো জিনিসটা একটা কেমিস্ট্রি এক্সপেরিমেন্ট ধরে নেওয়ার পরে রান্না করতেও যেমন মজা পাই, পাতিল ধরে ফেলে দেওয়ার মত কিছুও কখনো রান্না করা হয় নি। এক করতে গিয়ে আরেক হয়েছে, কিন্তু খাওয়া যায় না এমন কিছু হয় নি কখনো।
এগুলো আসলে বিচ্ছিন্ন কিছু ছোট ঘটনা। কিন্তু এই ঘটনাগুলো ঘটেছে আমাদের পরিবারের আবহের কারণেই। আমাদের পরিবারে আমি যা দেখেছি, সেটা হলো সবাই সব কাজ করে। ছেলেরা সবাই রান্না করে, মেয়েরা সবাই চাকরি করে। অনেকদিন পর্যন্ত এটা না হওয়াটাই আমার কাছে অস্বাভাবিক লাগত। সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট নিয়ে বোনেরা সতর্ক করে দিত, কিভাবে প্রতিরোধ করা যাবে সেটাও শিখিয়ে দিত। আব্বু-আম্মু বন্ধুর মত সব কথা শুনত, নিজেদের মত দিতে দিত। পরিচিত কারও হাতে ছোটবেলায় মলেস্টেড হতে হয় নি কখনো কারণ সবাই জানত আমি মুখ বন্ধ রাখবো না। এই বোধগুলো যদি একটা বাচ্চাকে ছোটবেলায় দিয়ে দেওয়া যায়, তার শৈশবটা অনেক সুন্দর হয়ে উঠবে কিন্তু।
চাকরি ক্ষেত্রে বৈষম্য, সামাজিক বৈষম্য - এগুলো পালটানো একটু দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার। কিন্তু একটা মেয়েকে মানুষ হিসাবে নিজেকে বিবেচনা করার শিক্ষাটা আসে ছোটবেলায়, তার পরিপার্শ্ব দেখে। সুতরাং চলুন না অন্তত নিজের পরিবারে সেই পরিবেশটা সৃষ্টি করি। কাউকে ছেলে, কাউকে মেয়ে হিসেবে না দেখে সবাইকে মানুষ হিসাবে দেখি।
মন্তব্য
প্রাথমিক শিক্ষা পরিবার থেকেই আসে। প্রতিটি পরিবারে বৈষম্যহীন পরিবেশ তৈরি হোক।
------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।
সেটাই, চ্যারিটি বিগিনস অ্যাট হোম।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
যদিও এটা একটা অতি ক্ষুদ্র অংশের চিত্রই, তবু পড়ে একটু শ্বাস নিতে পারলাম যেন। সত্য যে পরিবার একটা বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। এটা যেমন নারীর নিরাপত্তার বিষয়ে, তেমনি পুরুষের মানসিক গঠনটার নিয়ামক হিসেবেও।
অনেক ধন্যবাদ লেকাটার জন্য।
স্বয়ম
ধন্যবাদ আপনাকেও। নিজের অভিজ্ঞতাও কিছু লিখুন।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
আমি এখনো বিশ্বাস করি যে পৃথিবীতে খবিসরা এখনো সংখ্যালঘু। কিন্তু সংখ্যালঘুদের কাছেও সংখ্যাগুরুরা নিরাপদ না। প্রতিটা পরিবারে ছেলেবেলা থেকেই বাচ্চাদের সতর্ক করার রেওয়াজ থাকা উচিত। আপনার ভিন্নচিত্রটি ভালো লাগলো।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
খবিসরা সংখ্যালঘু কি না জানি না, তবে এটুকু জানি যে এদের অনেকেই আসলে কাপুরুষ। যে ছেলেটি অসহায় পেয়ে একটা বাচ্চাকে মলেস্ট করে, সে যদি জানে বাচ্চাটি মলেস্ট করতে গেলে ভয়ে লজ্জায় কুঁকড়ে না গিয়ে সবার সামনে তার মুখোশ খুলে দেবে, তাহলে কিন্তু অনেকেই এই কাজ করতে সাহস পাবে না।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
আপনার অভিজ্ঞতা ভালো লাগল আপু।
আশা করতে দোষ কোথায় হয়ত একদিন এই ভিন্নচিত্রটি স্বাভাবিক চিত্র হিসেবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হবে......
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
সেইটাই, আমার কাছে এটা কিন্তু স্বাভাবিক চিত্র, শুধু নিজের পরিবারে না, আশেপাশে আরও কিছু পরিবারে।এরকম পরিবারের সংখ্যা বাড়তে থাকুক এটাই চাই।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
তোমার কাহিনীগুলো শুনে বুকটা ভরে উঠলো। তুমিও জানো সার্বিক চিত্রটা এমন সুন্দর নয়। তবে সেটা কীভাবে সুন্দর হতে পারে তার পথটাও বাতলে দিয়েছো। গুড জব!
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
পাণ্ডবদার কমেন্ট পেয়ে আমার বুকটাও ভরে গেল।
সার্বিক চিত্র এত সুন্দর না বলেই আশা হারাই মাঝে। তখন এরকম ছোট ছোট কিছু ঘটনার কারণে আবার আশা ফিরে পাই।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
কাউকে ছেলে, কাউকে মেয়ে হিসেবে না দেখে সবাইকে মানুষ হিসাবে দেখি।
facebook
সেইটাই। মানুষ এত বিচিত্র প্রাণী, তাকে এইরকম গৎবাঁধা দুইটা ছকে বেঁধে ফেলার মানে হয়?
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
ভাল লাগলো টিউলিপ।
শুনে আমারও ভাল্লাগলো সাফি ভাই।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
ভাল্লেগেছে।
মেয়ের মায়েদের এই শক্ত স্ট্যান্ডটা নেওয়া খুব জরুরী যে ছেলে বা মেয়ে যাই হোক আমার সন্তান সুস্থ সবল সেইই ভাল। সে/তারা এক একজন ভাল মানুষ হয়ে উথুক। ছেলে বলে আলাদা করার কিছু নাই তো।
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
সেটাই আপু। শুধু মা না, বাবারও।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
আপনার গল্প দারুণ লাগল। শুধু ফ্যামিলির সাপোর্ট পেলেই যে অনেক কিছু একেবারেই অন্যরকম হতে পারে সেটা একটা আশার কথা। এই ধরণের সচেতনতাগুলো একেবারে স্কুল কলেজের সিলেবাসের অংশ হিসেবে থাকা প্রয়োজন। আমরা যারা ছেলে হিসেবে জন্মেছি তাদের এই বিষয়গুলো চিন্তাই করতে হয় নি বা হয় না। একটা বয়স হবার আগ পর্যন্ত হয়ত এই বৈষম্যের বিষয়গুলো খেয়ালও করতে পারি নি। আমি অনেক সময় কথা বলতে গিয়ে দেখেছি, অনেকেই (ছেলের সংখ্যা বেশি হলেও মেয়েরাও আছে) আসলে এই বৈষম্যগুলোর ব্যাপারে সচেতনই নয়। কিছু যে ঠিক নেই, সেটা নিয়ে যে কথা বলার দরকার আছে এরকমই অধিকাংশ মানুষ মনে করে না।
আমি মনে করি সিলেবাসে এসব বিষয় অন্তর্ভূক্ত করার পাশাপাশি রেডিও টেলিভিশন ইত্যাদিতে সচেতনতামূলক বিজ্ঞাপন তৈরি হওয়া দরকার। আপনি যে পারিবারিক আবহ পেয়েছেন সেটা বাংলাদেশের বেশিরভাগ পারিবারিক আবহকে প্রতিনিধিত্ব করে না। কীভাবে এটা বদলানো যায় সেটাও আমাদেরই ভাবতে হবে।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
আমি মফঃস্বলে আব্বু-আম্মুর সক্রিয় চেষ্টায় গড়ে তোলা একটা আবহে বড় হয়েছি আসলে। যে কারণে আমার চারপাশের অনেকগুলো পরিবারেই ছোটবেলায় এইরকম দেখে এসেছি। বাস্তব এমন না সেটা যখন বুঝেছি ততদিনে আমার নিজের স্ট্যান্ড দাঁড়িয়ে গেছে।
সচেতনতা আসলেই আমাদের বিভিন্নভাবে বাড়ানো দরকার। প্রতিটা চ্যানেল যদি বস্তাপচা প্রেমের নাটক আর টকশো নিয়ে মাতামাতি না করে এইগুলোর জন্য একটু এগিয়ে আসত।
আমাদের ছোটবেলাতেই বিটিভির মীনা কার্টুন আর নানা রকম জনসচেতনতামূলক প্রোগ্রাম তো হত। এইডস, রাতকানা রোগ, জাটকা ইলিশ না ধরা নিয়ে গান ছড়া গুলো আমার এখনো মুখস্ত। এরকম কিছু করা যায় না?
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
ছোটদের শেখানো যত সহজ বড়দের শেখানো ততটা সহজ না। আমাদের টার্গেট করতে হবে নেক্সট জেনারেশনকে। বাবা-মার বয়েসি হয়ে যাবার পর বেশিরভাগ মানুষই নতুন ধারণা গ্রহণ করার মতো মানসিকতা থাকে না। বিশেষ করে আমি লক্ষ্য করেছি, বেশিরভাগ লোকজন পরিবির্তনে ভয় পায়। বুড়ো হয়ে যাওয়া বা পেকে যাওয়া প্রজন্ম নিয়ে আমি আশা করি না। কিন্তু ছোটদের জন্য আমাদের অবশ্যই ভাবতে হবে।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
পরিবার এবং নৈতিকতার শিক্ষা- একটা পরিবারে কার প্রতি আচরণ কীরকম করা হয়, সেটাই ঠিক করে দেয় ছেলেটি/পুরুষটি/নারীটি কীরকম হবে।
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
সেটাই। ছোটবেলায় যেটা শেখানো হয়, সেটা অনেকটা সহজাত হয়ে আসে। এইসময় বাচ্চারা যদি পরিবারে সম অধিকারের প্রয়োগ দেখে, সেটাই তার কাছে স্বাভাবিক হবে।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
আপনার মতো প্রতিটি পরিবারেই যদি এ-ধরনের অবস্থা থাকতো, তাহলে হয়তো দেশের নারীদের অবস্থা আজকের মতো হতো না। আমার পরিবারেই যেমন ছোট থেকে দেখে আসছি- ছেলেরা ভালো জিনিসগুলো পাবে, মেয়েরা পাবে তুলনামূলকভাবে কম। ছোটবেলায় মনে হতো এটাই স্বাভাবিক; এখন বুঝি আমি ও আমার পরিবার আমার ছোট বোনের সাথে কী পরিমাণ বৈষম্য করেছে! মুশকিলটা হলো, এই বিষয়গুলো আমার ছোট বোনের মাথার মধ্যে এমনভাবে ঢুকে গেছে যে, সেও মনে করে ছেলে-মেয়ের মধ্যে এ-ধরনের কিছু কিছু বৈষম্য থাকবেই। অনেক বুঝানোর পরও কাজ হয় না।
আমাদের মানসিকতা সহসা বদলাবে বলে মনে হয় না। সময় লাগবে, কিন্তু কতোদিন তা-ই ভাবনার বিষয়।
বয়স্কদের মানসিকতা বদলাতে অনেক সময় লাগে আসলে। কিন্তু আপনার আশেপাশে যে সব বাচ্চারা আছে, তাদের দিকে একটু মনোযোগ দিয়ে দেখুন, তারা যেন একটা সুস্থ মানসিকতা নিয়ে বড় হয়ে ওঠে।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
এই দৃষ্টিভঙ্গীও অপ্রতুল নয়। টিউলিপকে ধন্যবাদ রেয়ার এই উদাহরণগুলো তুলে আনার জন্য।
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
ভাল লাগলো অনেক
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
ধন্যবাদ ভাইয়া।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
বাচ্চারা আসলে জিনিসপত্র তাদের নিজের মতো করে বুঝে নেয়। ভাই আছে কিনা প্রশ্ন থেকে তারা বোঝে ভাই থাকতেই হবে বা ভাই থাকলে ভালো হয়। এরকম করে আস্তে আস্তে মেয়েশিশুর মনে তারা যে একটু নিচু গোত্রের কিছু সেটা দানা বাঁধে। এই নিচু হয়ে যাওয়া মন থেকে অধিকাংশই বের হতে পারে না।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
আব্বু আম্মুর কারণে এই জিনিসটা কখনো মনেও আসে নি। খুব অবাক হতাম তাই, ভাই থাকলে তো বলতামই, আলাদা করে দুইবার জিজ্ঞেস করার কি আছে!
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
খুব ভালো লাগল লেখাটা। খুব খুব ভালো।
আমার এই সামান্য জীবনে কত এইরকম মানুষ দেখেছি, অপ্রত্যাশিত অবস্থার মধ্য থেকে বার হয়ে এসেছে প্রায় ভাবতে না পারা সমর্থন ও সাহায্য, সামাজিক পরিচয়ে নিতান্ত সাধারণ এমন মানুষের কাছ থেকে এসেছে কত অসাধারণ যুক্তিবুদ্ধি, নারীপুরুষ যে উভয়েই সমান মর্যাদার এই বোধ ।
আমার সাইকেল শেখা হয়েছিল এক বৃদ্ধার উৎসাহে, সেই সত্তরোর্ধা বলতেন, "তুই সাইকেল চালাইতে শিখবি, আমার অনেক ভালো লাগে দেখতে। কত তাড়াতাড়ি যাইতে পারবি ইস্কুলে।"
আর, আরো অনেক আগে আমাকে এক অসাধারণ কথা শিখিয়েছিলেন, "তরে কেউ, সে বাপেমায়েই হউক কি অন্য কেউ, অন্যায়ভাবে মারতে আইলে তুই যদি পারস উল্টা দিয়া দিবি নাহয় ফইচকা পালাবি। দাঁড়াইয়া মাইর খাইবি না, হারবি না।" এই মন্তর আমার সমস্ত জীবন কাজে লেগেছে, শুধু অত্যাচার ঠেকাতেই না, নিজের আত্মবিশ্বাস তৈরী করতেও।
"স্রোতের বিপরীতে" লেখাটির জন্য আবার ভালো লাগা জানাই।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
তুলিরেখা, আপনার পোস্ট কই? আজ হোক, কাল হোক, আগামী সপ্তাহে হোক পোস্ট দিন। আমরা সবাই মিলে এগুলো নিয়ে লিখলে, আলোচনা করলে কোন না কোন পথের দিশা মিলবে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আসলে কী জানেন ষষ্ঠ পান্ডব, এই বিষয় নিয়ে নিরাসক্ত, যুক্তিপূর্ণ লেখা লিখবার উপযুক্ত আমি না। কারণ আমি একটা ছোটো পরিসরে মানুষ হয়েছি, ঘটনাচক্রে বা সৌভাগ্যক্রমে মানুষজনও চারপাশে মোটের উপরে ভালো আর বিশ্বাসযোগ্যই ছিল। আর ভালো ভালো টিপস পেয়েছিলাম বলে সেসব কাজে লাগিয়ে আত্মরক্ষার কিছু উপায় পেয়েছিলাম। এদিক ওদিক খুচরো ঝামেলা মশা মাছি তাড়াবার মতন তাড়িয়ে নিজের পথে চলে গেছি। সেভাবে বলতে গেলে কিছুই দেখিনি, কঠিন লড়াই, কঠিনতর দুনিয়া, অন্যায় অত্যাচার প্রা্য সবই অন্যের দিক থেকে শোনা। তবু সেইগুলোই এতটাই রাগিয়ে রেগেছে, নারীপুরুষ উভয়ের উপরেই, যে সেই নিয়ে কথা বলতে গেলে কোনো লাগাম থাকবে না। তাই মাফ চাই।
তবে পড়ছি সবই।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
তুলিরেখা, ঐ রাগটা মনের মধ্যে চেপে না রেখে এখানে প্রকাশ করে ফেলুন। প্রতিটি কেসের কিছু ইউনিক দিক আছে। সেগুলো নিয়ে কথা বললে অমন পরিস্থিতিতে কী করতে হবে সেটা জানা যাবে। এতে আর কিছু না হোক সবাই সতর্ক হতে পারবেন।
লিখুন প্লিজ!
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ধন্যবাদ আপু। আপনার এই মন্ত্রটার কথাই লিখুন না, দরকার আছে।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
সময় অনেক বদলেছে, আমার দাদু-নানুরা যেখানে প্রথমে মেয়ে হলে কিংবা পর-পর দুটো মেয়ে হলে মুখ শ্রাবণ মাসের মতো অন্ধকারে ঢেকে ফেলতো সেখানে আমার মা-বোন-ভাবিদের দেখি আগে মেয়ে চায়, মেয়ে হলেই মুখ আলোকিত হয়। এটা অনেক বড় পরিবর্তন।
শিক্ষা, পারিবারিক মূল্যবোধ, পরস্পর আস্থাবোধ, বিশ্বাস, সম্মান, সম-অধিকার পরিবারে প্রতিষ্ঠা করতে পারলে সেখানে ছেলে-মেয়ে বলে আলাদা কিছু থাকে না। নতুন প্রজন্মকে আমাদের পারিবারিক শিক্ষা, মূল্যবোধ, আর সম-অধিকারের শিক্ষা দিতে হবে। তারা সেই শিক্ষা পেলে পরবর্তী প্রজন্মে এই বৈষম্যের দেয়াল অনেকখানি কমে যাবে।
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
আমি দেশ নিয়ে মাঝে মাঝেই আশা হারিয়ে ফেলি, তখন মনে করি এই যে আমাদের দেশের নারীরা এভাবে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী, সেটার ফল কি আমরা দেখবো না? আজ হোক কাল হোক এইসব নারীরা নিশ্চয়ই সব বৈষম্যকারীর মুখে ঝামা ঘষে দেবে।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
নারী-পুরুষ আলাদা না করে সকলকেই যদি একই রকম সদস্য ভাবা হয় একটা পরিবারে, তাহলেই সমাজে পশুরা থাকবে না।
রাসিক রেজা নাহিয়েন
সেটাই।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
বাকি লেখাগুলি সব পড়ছি আর ভেতরটা বিষিয়ে উঠছে। একবারে পড়া যায় না, তাই চুপ থেকে অনেক পরে ফিরে আসি। মন্তব্য দিতে গিয়ে কিবোর্ড চলে না। আপনার লেখাটাও ফেলে রেখেছিলাম পরে পড়বো বলে। পড়লাম। ভেতরটা কেমন যেন একটা অদ্ভুত শান্তিতে ভরে গেল। চারিদিকে এত বিতৃষ্ণা, এত কদর্যতা, এর মধ্যে আপনার কাহিনীগুলি সবুজের মতো মনে হল
ডাকঘর | ছবিঘর
এইরকম কাহিনী মূলধারার বাইরে হলেও একেবারে কম না কিন্তু। আমি নিজেও সব পোস্ট পড়ে দম নিতে পারছিলাম না বলেই ইচ্ছা করেই পজিটিভ গল্পগুলো বললাম।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
আমার কাহিনীটা আবার একটু উল্টো।
পাঁচ বোনের মধ্যে আমি বোনদের মধ্যে ছোট, আমার ছোট ভাই।
আম্মা বলতেন আমরা পাঁচ বোন পাঁচটা পেলে ভাই একাই পাবে পাঁচটা।
ভাইয়ের সাথে মারামারিতে আমি মার খেতাম, ভয়ে বেশি মারতাম না। কারণ উল্টো আম্মার মার খাব।
বোনদের একদম নদীভাঙ্গা টাইপ আদর ছিল/আছে আমার জন্য, আম্মারো আছে। কিন্তু এই জিনিসগুলো মাথা থেকে বের হতে চায়না একদম।
সৌভাগ্য যে, আমার ভাই এইসব থেকে মুক্ত। সে কখনোই ছেলে মেয়ে আলাদা করে দেখেনা।
তোমার এই লেখাটা পড়ে খুব ভাল লাগলো। সবাই মিলে রাঁধা, সবাই মিলে চাকরী করা এই জিনিসটাই যে একটা পরিবারকে পরিবার করে তোলে এই বোধটা আসা জরুরী।
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
আমি আসলেই খুব লাকি এরকম একটা পরিবেশে বড় হয়ে। এইরকম বৈষম্য আশেপাশে দেখি নি তা না, কিন্তু আব্বু আম্মু সচেতন ছিল মেয়ে বলে যেন কখনো বৈষম্যের স্বীকার না হই।
তবে ছোট ভাইদের ব্যাপার কিন্তু ছোট ভাই না হয়ে পরিবারের ছোট হওয়ার কারণেও হতে পারে আপু। আমি অনেক বেশি আদরে বড় হয়েছি পরিবারের সবার ছোট বলে।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
চমৎকার। ভাগ্যবান এমন পরিবার পেয়েছেন!
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে
আপনার জীবনের ব্যতিক্রমী বিষয়গুলি জেনে ভাল লাগলো।
সচলেই আমার একটি লেখার উদ্ধৃতি,
ইশ! কি সুন্দর! দুই নাম্বার ঘটনাতে মনটাই ভালো হয়ে গেলো!
টিউপু তোমার বাবা-মা আসলেই অন্যরকম মানুষ! খালা আর খালুর সাথে খানিকখন আড্ডা দিয়েই বোঝা গেছে!
আমাদের বাসায় পরিস্থিতি ছিলো অন্যরকম, ছেলেদের প্রাধান্য, কিন্তু আব্বু আম্মু নানী মারা যাবার পরে নানার সাথে থাকতে বাধ্য হয়েছিলো বলে আমার দিকে ছোটবেলায় কারও খেয়াল ছিলোনা, শুধু ঠিক সময়ে খেতে গেলেই হলো! এই কারণে নিজে নিজে বড় হতে হয়েছে, তাতে ঝামেলা কম হয়নাই তা নয়, মলেস্টেশনও হয়েছে অনেক। কিন্তু বড় হবার সময় আম্মু-নানু-মামার বিশাল বইমেলার দরজাটা খুলে নিতে পেরেছিলাম বলে মাথাটা শরীরের চেয়ে বড় হয়ে গেলো! এখন আমি সবাত্তে বেশী বুজি!
শেষে দেখা গেলো আমাদের পরিবার নিউক্লিয়াস হবার পরে এখানের ছেলে আমি, আর আমার ছোটভাই মেয়ে! এটাই চলে আসছে গত ২৪ বছর ধরে।
তুমি কতোদিন পরে লিখলা! বাবারে বাবা!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
নতুন মন্তব্য করুন