নিতান্তই বড় শহরে এসে না পড়লে দেশি খাবার খাওয়ার দুইটা উপায়, রন্ধনপটিয়সী ভাইয়া/ভাবিদের পটিয়ে ফেলা, অথবা নিজের হাতেই নিজের ভার তুলে নেওয়া। কিন্তু সেখানেও আরেকটা ঝামেলা আছে, দেশি রান্নার স্বাদের মূল কারণ হলো মশলা। আর সেই দেশি মশলা ছোট শহরে নিতান্তই দুষ্প্রাপ্য। নিজে দেশ থেকে নিয়ে আসলেও সেই ভান্ডার তো একদিন না একদিন শেষ হবেই। তখন হয় আশেপাশের বড় শহরে যেতে হবে, আর না হলে ভারতীয়/পাকিস্তানি দোকানে হাজিরা দিতে হবে। সেখানে হাজিরা দিয়ে শুরুতে থরে থরে দেশি এলাচ, দারচিনি, জিরা, হলুদ সাজানো দেখে মনে হতেই পারে, "পাইলাম, আমি ইহাকে পাইলাম!" তারপর ভালো করে একটা প্যাকেট তুলে দেখবেন মশলার প্যাকেটটা খুব সম্ভবত শানের, গায়ে লেখা মেড ইন পাকিস্তান।
এই পর্যায়ে এসে অনেকেই হতাশ হয়ে কি আর করা ভেবে হাল ছেড়ে শানের মশলা কিনে নেন। কিন্তু হতাশ হবেন না ভাই ও বোনেরা, এর পরেও উপায় আছে।প্রথম কাজ যেটা করবেন সেটা হলো দোকানে ঘ্যানঘ্যান করা, রাঁধুনী মশলা নেই কেন এই বলে। আমরা দেড় বছর ঘ্যানঘ্যান করে শেষ পর্যন্ত আমাদের ছোট শহরের ভারতীয় দোকানে বাংলাদেশি মশলা, সবজি, মাছ সবই আনিয়েছিলাম। সেগুলোর বিক্রি দেখে দোকানদারকে পরে আর কিছু বলতে হয় নি। কিন্তু আপনি হয় তো এত ছোট শহরে থাকেন যেখানে সেই পরিমাণে বাঙালি নেই যেটাতে দোকানদারের লাভ হবে। অথবা ঘ্যানঘ্যান যতদিন করতে হবে সেই সময়ের জন্যও উপায় আছে।
প্রথমেই জানতে হবে আপনার রান্নার স্কিল কতটুকু। মানে আপনি কি একেবারে বিগিনার লেভেলে; মাছের মসলা, মাংসের মশলা, কাবাবের মশলা সব প্যাকেজ মশলা কেনেন? না কি এর চেয়ে অ্যাডভান্সড লেভেলে; নিজের মশলা নিজেই মেশান?
যদি প্রথম পর্যায়ে হয়ে থাকেন, তাহলে ভারতীয়/পাকিস্তানি প্যাকেজ মশলা বাদ দিতে হলে আপনাকে আগে দ্বিতীয় পর্যায়ে যেতে হবে। যতটা ভয় পাচ্ছেন ততটা ভয়ের কিছু নেই। গ্র্যান্ড ইউনিফায়েড থিওরি অফ ফোর্সের মত আমার কাছে গ্র্যান্ড ইউনিফায়েড থিওরি অফ মশলা আছে।
রান্নাবান্নায় মশলার কাজ মূলত তিনটা, কিছু মশলা স্বাদের যোগান দেয়, কিছু যোগান দেয় গন্ধের, আর অল্প কিছু রঙের। স্বাদের জন্য আছে মূলত লবণ, মরিচ, চিনি, তেতুল, লেবু এইসব। হলুদগুঁড়া, মরিচগুঁড়া এইসব মশলা থেকে আসে রং। আর জিরা, ধনে, দারচিনি, এলাচ, তেজপাতা এইসব হলো মূলত গন্ধের জন্য।
এইবার চলুন দেশি রান্নাকে কয়েক ভাগে ভাগ করে ফেলি।
১/একদম প্রথম ভাগে আছে বিভিন্ন ভর্তা ও ডিম ভাজি। এর জন্য লাগে শুধু তেল, লবণ, মরিচ, পেঁয়াজ।
২/ পরের ধাপে আছে মাছ ও অন্যান্য শাকসবজি। এর জন্য আগের চারটা উপকরণের সাথে যোগ করে দিন রসুন, আর একটু হলুদ ও জিরা। এখানে বিভিন্ন অঞ্চলের জন্য একটু ব্যতিক্রম হয়, অনেক অঞ্চলে মাছ আর সবজিতে জিরা দেয় না, সাধারনত সবুজ সবজি ভাজিতেও হলুদও দেওয়া হয় না। নিজে দুই একবার পরীক্ষানিরীক্ষা করে রান্না করলেই টের পেয়ে যাবেন। এখানে উলটাপালটা করলেও খাবার কম বেশি খাওয়ার যোগ্য থাকবে।
৩/ পরের ধাপে হলো ডাল। এর জন্য তেল-লবণ-মরিচ-পেঁয়াজ, রসুন-হলুদ-জিরার সাথে যোগ করুন আদা আর পাঁচফোড়ন।
৪/ সবশেষের ধাপে হলো মাংস। এখানে আগের সব মশলা তো রাখবেনই, সাথে দিন ধনেগুঁড়া, দারচিনি, এলাচ, লবঙ্গ, তেজপাতা, জায়ফল, গরম মশলা।
কি কি মশলা দেবেন জানার পরের প্রশ্নই হবে কতটুকু দেবেন। লবণ আর মরিচই যেহেতু এইখানে খালি স্বাদের জন্য, সুতরাং এই দুইটার দিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখতে হবে। হলুদ আর মরিচগুঁড়া থেকে আসবে রঙ। সুতরাং প্রথম কয়েকবার অল্প অল্প করে দিয়ে দেখেন রঙ কেমন দেখাচ্ছে। মনে রাখবেন, হলুদ বেশি দিয়ে ফেললে তরকারির রঙ উলটে কালো হয়ে যাবে, আর তিতকুটে একটা স্বাদ হবে। আর গন্ধের জন্য যেসব মশলা, সেগুলোর জন্যও একই কথা, তেলে অল্প অল্প করে দিয়ে দেখেন, গন্ধ ছাড়তে শুরু করলেই যথেষ্ট। বেশি দিয়ে দিলে বরং খাওয়ার পরে অস্বস্তি হবে। আদাবাটা, লবঙ্গ, দারচিনি -এইসব মশলার আবার ঝাঁজও আছে, সেজন্য সাবধানে দেওয়াই ভালো। আর রান্নার ক্ষেত্রে ঐকিক নিয়ম সাধারনত চলে না, দুইজনের রান্নায় যেটুকু মশলা দেবেন, ছয়জনের রান্নার মশলাও তার চেয়ে সামান্যই বেশি হবে, তিনগুণ হবে না।
এত গেল প্রতিদিনের রান্না। বিরিয়ানি, পোলাউ, কাবাব এইসব শাহী খাবারদাবার রান্না করতে চাইলে এমন একটা রেসিপি খুঁজে নিন যেখানে প্যাকেট মশলার বদলে এরকম মূল উপকরণ দিয়ে রান্নার কথা বলা আছে। ইন্টারনেট ভর্তি প্রচুর রেসিপি, খুব বেশি কষ্ট হবে না। আর না হলে সিদ্দিকা কবিরের বই প্রবাসে অনেক সহজলভ্য হওয়ার কথা, সবাই নিয়ে আসে এক কপি।
প্যাকেট মশলার হাত থেকে মুক্তি পেয়ে গেলেন, কিন্তু লবঙ্গ-জিরা-দারচিনিই বা পাবেন কোথায়? সেখানেও অনেক ছোট শহরে ভারতীয়/পাকিস্তানি দোকান ছাড়া উপায় নেই শুরুতে মনে হতে পারে। তবে আমি বলি কি, ওয়ালমার্ট বা বড় সুপারস্টোরের স্পাইস সেকশন আর ইন্টারন্যাশনাল সেকশনটা একটু ঘুরে দেখুন। সেখানে যা যা দেখবেন,
১/ clove - লবঙ্গ
২/ cumin - জিরা
৩/ cardamom - এলাচ
৪/ cinnamon - দারচিনি
৫/ bayleaf - তেজপাতা
৬/ nutmeg - জায়ফল
৭/ mace - জয়ত্রী
বাঙালি রান্নার দুইটা অতি প্রয়োজনীয় মশলা পাঁচফোঁড়ন আর গরম মশলা অবশ্য সুপারস্টোরে পাওয়া যাবে না। পাঁচফোড়ন বানাতে লাগবে জিরা (cumin) , কালোজিরা (nigella seed), মেথি (fenugreek seed), মৌরি (fennel seed) আর রাঁধুনি (celery seed)। আর গরম মশলা তৈরি করতে গুঁড়া করে নিন দারচিনি, লবঙ্গ, এলাচ, জিরা, জায়ফল, জয়ত্রী, তেজপাতা।
আর এরপরেও সাহায্য লাগলে এই দুইটা উইকি লিঙ্ক ঘুরে আসুন।
১/ বাংলাদেশি মশলার ইংরেজি নাম
২/ ঝালের পরিমাণ অনুযায়ী মরিচের নাম
এর পরেও রান্না ভয় লাগলে জেনে রাখুন, কয়েকবার অখাদ্য রান্না না করলে ভালো রাঁধুনি হওয়া যায় না। তাই "ডরাইলেই ডর" বলে শুরু করে দিন আজ থেকেই। শুভ রান্নাবান্না!
মন্তব্য
অনেক মূল্যবান ও তথ্যপূর্ণ পোস্ট - অনেকের কাজে আসবে ৷
ছোট্ট দুটো টিপস দিয়ে যাই নতুন রাধুনিদের জন্য -
১. অনেকেই বিদেশে গিয়ে খাসির মাংসে গন্ধ পান, খেতে পারেন না ৷ আবার অনেকে গরুর মাংসে একটু কলিজার মত স্বাদ পান (ভিতরে রক্ত থাকার কারনে) যা অনেকের পছন্দ না ৷ এর থেকে পরিত্রানের জন্য বুচারিতে গিয়ে তাজা goat meat খুজবেন, ল্যাম্ব না ৷ আর কসাই মশাইকে রানের মাংস কেটে দিতে বলবেন চর্বি বাদ দিয়ে ৷ আর বিদেশে জবাই করার পর মাংস ফ্রিজ করে ফেলে বলে ভিতরের রক্ত জমাট বেঁধে যায়, এর জন্য উত্তম হলো তাজা মাংস কেনা - না হলে বাসায় ফিরে ঘন্টা খানেক পানিতে ভিজিয়ে রাখবেন, তারপর একটু কচলে কচলে ধুয়ে নিবেন ৷
২. অনেকেই ডাল বাগার দিয়ে খেতে ভালবাসেন (ওই পেয়াজ রসুন পাঁচ ফোড়ন ভেজে উপরে দিয়ে দেয়া আর কি) কিন্তু অনেক সময় আলাদা করে করার সময় হয় না ৷ সুপারমার্কেট এ fried onion বাক্স পাবেন (সব দেশে পাবেন কিনা বলতে পারছি না) - এক মুঠো নিয়ে মাইক্রোওয়েভ এ ৩০ সেকেন্ড গরম করে নিয়ে ডালের উপর ছড়িয়ে দিন, কিছুটা হলেও স্বাদ বাড়বে ৷ আর fried onion এর ছোট ছোট বাক্স কিনবেন, একবার খুললেই এরা নেতিয়ে যায় ৷
মরুচারী
আপনার সাথে একটু ইনফো অ্যাড করে দেই। চর্বি ছাড়া রান্না করলেও অনেকে ল্যাম্ব এর মাংস থেকে গন্ধ পান। এক্ষেত্রে পরিত্রাণের উপায় হল রান্না করার এক ঘণ্টা আগে মাংসে নরমাল ইয়োগার্ট (টক দই ), (এক কেজি মাংসে তিন টেবিল চামচ হিসাবে দিয়ে দিন) দিয়ে মেরিনেট করে রেখে দিন, ব্যস আর কোন গন্ধ পাবেন না। সব সময় তাজা মাংস না পেলেও এভাবে দই দিয়ে তাজা বাসী সব ধরনের ল্যাম্ব রান্না করা যায়।
........................................................
গোল্ড ফিসের মেমোরি থেকে মুক্তি পেতে চাই
শুধু আমি না, আমার সাথে পুরো জাতি
লেখায়
আমার কাছে মনে হয়েছে, বিদেশে পাকি কিংবা ইন্ডিয়া থেকে আনা মসলা না ব্যবহার না করে এলাচ, দারুচিনি ব্যবহার করে গরম মসলা এর কাজ চালানো যায়। জয়ফল আর জয়ত্রী এর একটু অভাব থাকে, কিন্তু বাকী বেশির ভাগ মসলা বিদেশে পাওয়া যায় দেখেছি। আর বিরিয়ানি মসলা অথবা কাবাব মসলা প্রতিদিন লাগে না, কাজেই আশেপাশের যে শহরে পাওয়া যায় সেখানে থেকে একটু বেশি করে নিয়ে আসলেই হয়ে যায়। আমার পরিচিত এক বিখ্যাত বাংলাদেশি অধ্যাপক ( বাংলাদেশে একটি ইউনির ভিসি ) একদিন তার গ্লাসগোতে পিএইচডি করার অভিজ্ঞতা বলছিলেন, তার মতে যে কোন রান্না মজা করার জন্য দুটি জিনিস লাগে, টমেটো আর কাঁচা পেয়াজ। আমি নিজের অভিজ্ঞতাতে দেখেছি, এ দুটো জিনিস আসলে বেশ প্রভাব ফেলে।
আমার মাস্টার্সের পুরোটা সময় আর পিএইচডি এর সময়টাতে নিজেই বিশাল রাঁধুনি হয়ে গিয়েছিলাম। সচলে খুঁজলে ২/১ টা পোস্ট পাওয়া যাবে ;)। রান্না করা কোন রকেট সাইন্স মনে হয়নি আমার কাছে
........................................................
গোল্ড ফিসের মেমোরি থেকে মুক্তি পেতে চাই
শুধু আমি না, আমার সাথে পুরো জাতি
রান্না আমার কাছেও রকেট সায়েন্স লাগে না, তবে অনেকের অহেতুক ভীতি আছে। আমার নিজেরও ছিল একটা সময়ে। এই ভীতি থেকে কাজ সহজ করতে পাকি-ভারতীয় মশলা ব্যবহার করা হয়ে যায় অনেক সময়। জয়ফল-জয়ত্রী গুঁড়া আমি ওয়ালমার্টে সবসময়েই দেখেছি, ম্যাকরমিক ব্র্যান্ডের। নাম জানা না থাকার কারণেই অনেকে সেটা না কিনে দেশি দোকান থেকে পাকি মশলা কেনে।
একেবারে মশলা ছাড়াও রান্না করা যায়, লবণ আর মরিচ ঠিকমত দিয়ে, পেঁয়াজ-টমেটো বেশি করে দিলেই অন্যরকম স্বাদ হয়ে যায় আসলেই।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
আপনি যেমন আংকেল স ্যাম এর দেশের ওয়ালমার্টে কথা লিখলেন, আর আমি বললাম পৃথিবীর উত্তরের দেশ সুইডেনের কথা। জয়ফল-জয়ত্রী এর গুড়ো এখনো এখানে চোখে পড়েনি।
........................................................
গোল্ড ফিসের মেমোরি থেকে মুক্তি পেতে চাই
শুধু আমি না, আমার সাথে পুরো জাতি
জায়ফল= নাটমেগ nutmeg
জয়ত্রী = মেস mace
এটা ইউরোপিয়ান আর আমেরিকান বিভিন্ন রান্নায় বহুল ব্যবহৃত মশলা।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
অনেক ধন্যবাদ টিপস দুইটার জন্য।
গন্ধ দূর করার আরেকটা ভালো বুদ্ধি হলো ম্যারিনেশন। ভালোমত মশলা মাখিয়ে ফ্রিজে সারারাত রেখে দিলে গন্ধ লাগে না, তাজা বাসি যে কোন মাংসেই। তবে তাজা খাওয়ার মজাই আলাদা।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
ভাল লাগলো। আমি খুব আলসে মানুষ, আবার বিদেশ ভ্রমণে আগ্রহ থাকলেও স্থায়ী হওয়ার কোন ইচ্ছে নেই। অতএব ঝামেলা হবে না আশা করাই যায়। ডিম ভাজি আর ভাত রান্না ছাড়া আর কিছুই জানি না। তাই বিয়ের পর বউয়ের হাতের রান্নাই হবে মূল ভরসা। আশা করছি তিনি কিছুটা ঝাড়ি দিলেও রান্নার দায়িত্বটা আমার উপর চাপিয়ে দিবেন না। তাহলে বাসার সবাইকেই না খেয়ে থাকতে হবে।
ফাহমিদুল হান্নান রূপক
মেয়েমানুষের তিনটে আসল জায়গার একটা হলো রুটি বেলার কাঠে।
রান্নার জন্য উল্টো সো্য়ামিকে ঝাড়ি দিবে মানে! কী বলেন এইসব?
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
আমার উনি রান্না করতে খুব পছন্দ করেন কি না। ইতোমধ্যে হুমকি দিয়ে রেখেছেন তার কথা না শুনলে বিয়ের পর না খাই য়ে রাখবেন। আবার আমি রান্নাঘরে যাব সেটিও হবে না। তাহলে নাকি বাসায় কারও খাওয়া হবে না। কে হায় হৃদয় খুঁড়ে মাথায় বিপদ নিতে আসে বলুন।
ফাহমিদুল হান্নান রূপক
রান্নাটা শিখা রাখেন। প্রিয়ার কালো চোখ ঘোলাটে হয়ে আসবে কিন্তুক তাজা গরুর মাংসের ঝোল অনন্ত যৌবনা।
..................................................................
#Banshibir.
এখন তাহলে বাসার সবাই কি খেয়ে আছে?
****************************************
রান্নার মত এত সহজ একটা কাজের জন্য পরমুখাপেক্ষী হয়ে থাকা মোটেও ভালো কাজ না। আর বউয়ের ঘাড়ে সব রান্নার দায়িত্ব চাপিয়ে দেওয়াটা অন্তত সচলে কেউ ভালো চোখে দেখবে না বলেই মনে হয়।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
বউ এর যদি রাধতে ভালো না লাগে? তবু তাকে জোর করে হেশেলেই পাঠাবেন? যার খেতে ইচ্ছা করে তারই রাধা উচিত। যে রাধতে ভালো বাসে না, তাকে দিয়ে জোর করে রান্না করালে স্বাদ ভালো হয় না কখনো। যেকোন রান্নার সবচেয়ে জরুরি উপকরণ হলো আগ্রহ।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
বুড়ো আঙ্গুলে নিয়মঃ
এক কেজি যে কোন কিছু ( আমিষ/ নিরামিষ) তে সব রকম মশলা এক চা চামুচ, আদা রসুন এক টেবিল চামুচ আর লবন দেড় টেবিল চামুচ দিয়ে রান্না শুরু করে দেয়া যায়, এরপর অবস্থা বুঝে আরও যোগ বিয়োগ করে কাংখিত স্বাদ দিয়ে আসাটা যার যার জিহবার ব্যাপার। মশলা বেশি দিলে তো আর কমানো যায় না, তখন অনুপাত এডজাস্ট করতে আলু যোগ করতে হবে। অন্তত খাওয়ার যোগ্য হবে। এরপর বাকি যা যোগ করবেন সবই অলংকরণ।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
বাহ বাহ-
facebook
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
কানাডার বাসিন্দা প্রবাসীদের জন্যঃ প্রায় সকল শহরে bulk burn এর দোকান খুঁজে পাবেন। এই পোস্টে উল্লেখিত সকল মশলা (এবং আরও অনেক কিছু) সেখানে পাওয়া যায়।
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
ধন্যবাদ, আমি অ্যামেরিকার দক্ষিণের ছোট শহরের অভিজ্ঞতা থেকে লিখেছি। কানাডা সম্পর্কে ধারণা নেই। আপনি যোগ করে দেওয়াতে খুব ভালো হল।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
অতি কাজের এবং মজার পোস্ট। কিন্তু আমিতো রাঁধতে ভালো পাইনা শুধু খেতে ভালু পাই
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
আমার হলো পালস ওয়েভ, মাঝে মাঝে অনেক রান্না করি। তারপর আবার বসে বসে খাই। আপাতত যেমন থ্যাঙ্কসগিভিং-এর পরে বসে বসে খাচ্ছি। এর মাঝেই হিমু ভাই আদেশ করলেন পোস্ট নামিয়ে দিতে, তাই আর কি।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
আপনি যে দেশেই থাকুন, রান্নার জন্য কতিপয় বেসিক পরামর্শঃ
১। মাছ চেষ্টা করবেন বাসায় না কাটতে। বাজার/দোকান থেকে মাছ কাটিয়ে আনবেন। বাইরে থেকে কাটা মাছ প্রথমে প্রতিটি পিস খুব ভালো করে সিংকে ধারাজলে ধুয়ে নেবেন। মাঝারী সাইজের মাছ হলে পেট-মাথার ভেতরকার ময়লা ভালো করে পরিষ্কার করে নেবেন। এরপর মাছে লবন আর প্রচুর পরিমাণে লেবুর রস দিয়ে মাখিয়ে ৫/৭ মিনিট রেখে আবার ধারাজলে ভালো করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নেবেন। এতে মাছে কোন গন্ধ হবে না। মাছ রান্না না করে ফ্রিজে রাখতে বাধ্য হলে দুটো উপায় আছে। এক, মাছে খুব অল্প হলুদ, মরিচ আর লবন মাখিয়ে এয়ারটাইট বক্সে ঢুকিয়ে ডীপ ফ্রিজে রেখে দিন। দুই, মাছ অল্প হলুদ, মরিচ আর লবন মাখিয়ে; তেল গরম করে তাতে দুই পিঠ অল্প ভাজুন। কড়া করে ভাজবেন না। এবার টিস্যু পেপার বা কিচেন টাওয়েল দিয়ে তেল শুষে নিয়ে এয়ারটাইট বক্সে ঢুকিয়ে ডীপ ফ্রিজে রেখে দিন। যেদিন রান্না করবেন সেদিন ঘন্টা দুই আগে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রেখে থ' করে নিন।
২। খাসী/ছাগল/ভেড়া'র মাংস প্রচুর পরিমাণ লবন আর অল্প লেবুর রস মাখিয়ে ৫ মিনিট রেখে সিংকে ধারাজলে ধুয়ে নিন। এই প্রসেসটি পর পর ৪/৫ বার করুন। খুব ভালো করে ধোবেন যেন লবন/লেবু'র অবশেষ না থাকে। তাহলে মাংসে বাজে গন্ধ থাকবে না।
৩। বাজার/দোকান থেকে হিমায়িত মাংস কিনলে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় অবস্থা বুঝে কয়েক ঘন্টা থ' করুন। মাংস টিপে দেখুন পুরো নরম হয়েছে কিনা। অনেক সময় উপরের অংশ নরম হলেও মাংসের কোর অংশ ঠাণ্ডা পাথর হয়ে থাকে। সুতরাং সময় নিন। মাংস স্বাভাবিক তাপমাত্রায় আসলে ভালো করে ধারাজলে ধুয়ে নিন। প্রয়োজনে ২ নং স্টেপ ফলো করুন। মাংসের পানি খুব ভালো করে ঝরিয়ে নেবেন।
৪। কলিজা/প্লীহা (তিল্লি)/ফুসফুস (ফ্যাঁপসা) প্রথমে বড় বড় করে পিস করুন। এবার পাত্রে নিয়ে তাতে ডোবানো পানি দিন। প্রতি কেজিতে এক চা চামচ হলুদ আর এক টেবল চামচ লবন দিয়ে ১০ মিনিট সিদ্ধ করুন। ১০ মিনিট পর সব পানি ফেলে দিয়ে কলিজা স্বাভাবিক পানিতে ধুয়ে ঝরতে দিন। ঠাণ্ডা হলে ছোট ছোট পিস করে রান্না করুন। এতে কলিজাতে বাজে গন্ধ হবে না, রঙও কালো হয়ে যাবে না।
অনেক ধন্যবাদ টিপসগুলোর জন্য।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
হায় রে! সব প্রবাস যদি আম্রিকা হত!
ইউরোপের এক ছোট শহরে থাকছি, ইন্ডিয়ান পাক্কি দোকান তো দূরে থাক (এইটা অবশ্য ভালই ব্যাপার) এক পিস কাঁচামরিচও চোখে দেখি না। অবস্থা হচ্ছে এইরকম। ইংরেজি নাম দিয়েও কাজ হইত না। এইখানকার লোকাল ভাষা জানা লাগবে, হাহ! দেশ থেকে আসার সময় জামা কাপড় বাদ দিয়ে ব্যাগ ভর্তি মসলা আনা ছাড়া উপায় নাই।
তবে আপনার এই প্যারাটার জন্য বিরাট ধন্যবাদ।
হলুদের এই কাহিনী অনেকবার ঘটিয়েছি। এটা পড়ে বুঝলাম ঘটনা কি?
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
আপনি যে শহরে থাকেন না কেন, কোন বড় সুপার স্টোরের মসলা এর সেকশনে যেয়ে সব মসলা এর ছবি তুলে নিয়ে আসেন। তারপর বাসায় এসে গুগুল ট্রান্সলেটর দিয়ে চেক করে দেখুন ইংলিশ নাম কি , যদি উত্তর ইউরোপের কোন দেশে থাকেন তাহলে উপায় বলতে পারি। ইউরোপের বাকী দেশ গুলোতেও ভালো মসলা পাওয়া যায়, যদিও সব জায়গায় ইউকে এর মতো বৈচিত্র্য নেই। কিন্তু পাওয়া যায়
........................................................
গোল্ড ফিসের মেমোরি থেকে মুক্তি পেতে চাই
শুধু আমি না, আমার সাথে পুরো জাতি
এই কাজই করছি। একখান ট্রান্সলেট এ্যপ্স ডাউনলোড করেছি, ক্যামেরা অন করে ছবি দেখালেই ব্যাটা ট্রান্সলেট করে দেয়। ময়দা, চিনি, লবণ সব এইভাবে কিনেছি।
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
আপনার লিঙ্কের লেখাটা পড়ে সেইরকম মজা পেলাম। তবে হতাশ হবেন না, আরিফিনসন্ধি যে বুদ্ধি দিয়েছেন সেটা কাজে লাগান। আর নইলে লবণ-ঝাল ঠিক রেখে এটার সাথে সেটা মিশিয়ে রান্না করে ফেলেন, খারাপ হবে না।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
কাচামরিচের জন্য দেশি দোকানের চাইতে চাইনিজ গ্রোসারি স্টোর যাওয়া ভাল ইউরোপে। প্রচন্ড ঝাল লাল কাচামরিচ পাওয়া যায়। সাথে আরো পাবেন সস্তায় দেশের ম্যাগির মত ইন্সট্যান্ট নুডুলস(আরেকটু ভাল স্বাদ), সয়া সস, ফিশ সস, অয়স্টার সস, হিমায়িত চিংড়ি ইত্যাদি
রান্না নিয়ে আমার মায়ের টেনশন ছিল খুব। ছেলে রান্নাবান্না করতে জানে না, বিদেশে গিয়ে খাবে কি এই টেনশনে আমার মায়ের ঘুম হারাম। কয়েকবার রান্নার ট্রেনিং দিতে গিয়ে ফেল করে আবার হার্ট এট্যাক করার মত অবস্থা। উদ্ধার করতে এলেন বাবা, "যা ইচ্ছা তাই মসলা দে, শুধু খেয়াল রাখবি যেন ঝাল আর লবন ঠিক থাকে" ..
আমি ঠিক এই ট্রেনিংটা নিয়ে এসেছিলাম। বাকিটা পুরোই এক্সপেরিমেন্ট করে। তবে আমার পরীক্ষা-নিরীক্ষার একটা মূল লক্ষ্য ছিল পাকি-ভারতীয় মশলা নির্ভরতা কিভাবে কমানো যায়। এইজন্যই এই পোস্ট।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
ভাজা পিঁয়াজ খাইতে চিপসের মতন মজা!
(সম্পূর্ণ অফ-টপিক কমেন্ট, মাইরেননা )
..................................................................
#Banshibir.
আগে আম্মু পোলাউয়ে দেওয়ার জন্য বেরেস্তা ভাজত দাওয়াত থাকলে, আমি সেগুলো এমনি এমনি খেয়ে ফেলতাম। কিন্তু দোকান থেকে কেনা ফ্রাইড অনিয়নসে সেই মজা নাই। আরেকটা কাজ করত আম্মু। ঠান্ডা লাগলে সরিষার তেলে পেঁয়াজ-রসুন-কালোজিরা মুচমুচে করে ভেজে গরম গরম খেতে দিত, আমি ঠান্ডা লাগলেই সেটার জন্য অপেক্ষা করে থাকতাম।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
দোকানের ফ্রাইড অনিয়নসে ময়দা মিশিয়ে ভাজা থাকে, এই জন্য ওগুলো থেকে বেরেস্তা এর মতো মজা লাগে না। আগে পোলাও রান্না করার সময় ফাকিবাজি করার জন্য, এই দোকানের ফ্রাইড অনিয়নস ইউজ করতাম।। কিন্তু মজা হয় না দেখে আমার চেয়ে এক্সপার্টরা বলেন , এই ময়দা মেশানোর কথা।
........................................................
গোল্ড ফিসের মেমোরি থেকে মুক্তি পেতে চাই
শুধু আমি না, আমার সাথে পুরো জাতি
পীরসাহেব, আপনার না দুবাইতে স্টপ ওভার করার কথা আসিলো?
তাজা পেয়াজের ফ্রেশ চিপস খাওয়াব কথা দিচ্ছি ৷
মরুচারী
আরে এই চুক্তি কবে হইল? স্মরণ হৈতেছেনা তবে নোট রাখলাম, দেখা যাক।
..................................................................
#Banshibir.
রান্না নিয়ে লুৎফুল আরেফীনের 'স্মৃতিবিপর্যয় ৯: রান্না খেলা সারাবেলা!' লেখাটা স্মর্তব্য।
আপনি আছেন প্রবাসীদের নিয়া! দেশের সুপারশপগুলোর মশলার তাকে প্রচুর পাকি মশলা পাওয়া যায়, আর আমাদের দেশের লোকজন আমোদ করে সেগুলা কিনে রাইন্ধা খায়।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
প্রাণ-আরএফএলের পাকি, না এক্কেবারে খাঁটি মারখোরদের? দেশে থাকতে রাঁধুনী বাদ দিয়ে পাকি মশলা কেনার কি কারণ থাকতে পারে?
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
নজু ভাই ঠিক বলেছেন। আজকাল বাংলাদেশের সুপারশপগুলোতে এক্কেবারে শতকরা ১০০ ভাগ খাঁটি মারখোর শান মশলাতে ভরপুর, চলেো সেইরকম। গত দুই এক বছর ধরে দেশে গেলে দোকানে ঘুরেই লক্ষ্য করেছি বিষয়টা। অনেককেই রাধুনি/বিডিফুডস ইত্যাদি বাদ দিয়ে সেগুলো কিনতেই বেশ ভালো পান।
বুঝেনই তো, রান্না আর রাজনীতি মেশাবেন না!
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
সব বেদনা মুছে যাক স্থিরতায়
হৃদয় ভরে যাক অস্তিত্বের আনন্দে...
বিডিফুডসের জামাত-সংশ্লিষ্টতা নিয়ে একবার মনে হয় কিছু কথাবার্তা শুনেছিলাম।
বিডি ফুডস খালা জামাতিই না, এরা মাদক পাচারের সাথেও সম্পৃক্ত।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
দেশে বসে শান মশলা খাওয়ার কারণ ৩ টা, ১। শান মশলার কোয়ালিটি, দুঃখজনকভাবে, বাকি সব মশলার থেকে অনেক এগিয়ে, আমাদের দেশের রাঁধুনি হাতে গোনা কয়েকটা মশলা ভালো বানায়, যেমন হালিম, ক্ষীর মিক্স--- কিন্তু বিরিয়ানি/চিকেনটিক্কা/কারি এইগুলি শানেরটা ভারতীয়-বাংলাদেশী যেকোন মশলাকে গো-হারা হারাতে পারে।
২। দেশে বসে "এক্সোটিক" কিছু খাওয়ার আশা থেকে শানের দিকে হাত বাড়ান অনেকে, আর পাকিস্তানী জিনিস ভালো এধরনের ধারণা অনেকেই লালন করেন।
৩। শেষ কারণটা ইন্টারেসটিং, এটা নিয়ে আমার ধারণা ৩/৪ বছর আগেও ছিলনা। আমাদের দেশের জিহ্বার স্বাদের সাথে পাকিস্তানী কিউজিনের স্বাদের মিলই বেশী, ভারতীয় স্বাদের থেকে। বিশেষ করে "একটু স্পিশাল" খাবার দাবার যেমন বিরিয়ানি/কিমা/মাংসের কারী এগুলোয় ভারতীয় মশলার অনেক স্বাদই আমাদের জিহ্বায় অপরিচিত ঠেকে, অতিরিক্ত ধনে থাকায় মনে হয় "খাইতে খারাপ না, তবে কী জানি একটা ঝামেলা আছে"।
প্রবাসে বসে, শানের "বার্বিকিউ চিকেন" আর "সিন্ধি বিরিয়ানি" এই দুটা মশলা আমার ঘরে সবসময় ২/৩টা করে মজুদ রাখি, এতই ব্যবহার করি।
তবে আপনার এই আহবানের পর ঠিক করলাম, এই ২ টা মিক্স আমি নিজেই বানিয়ে নেব এর পর থেকে। আমি নিজে আস্ত গরম মশলা সেঁকে গুড়ো করি, আমার জন্য হয়ত এতো কঠিন হবে না, তবে সঠিক কম্বো পেতে ২/৩ বার এক্সপেরিমেন্ট লাগবে। আর যাঁরা রান্নাঘরে নতুন আর শানে অভ্যস্ত, তাদের জন্য আসলে এখনো সহজ কোনো বিকল্প নেই।
---দিফিও
১/ হালিম, বিরিয়ানি আর বোরহানি ছাড়া কোন কিছুর জন্য কখনো প্যাকেট মশলা ব্যবহার করি নি, সে কারণে তুলনা করতে পারছি না। তবে রাঁধুনির মূল মশলাগুলো নিজে মিশিয়ে কখনোই খারাপ ফল পাই নি, এবং আমি বিদেশে আসার আগে জীবনে রান্না করি নি, পুরো রান্নাই নিজে নিজে শিখেছি।
২/ বাংলাদেশে পাকিস্তানি লন নামে যা বিক্রি হয়, তাদের অনেকগুলোই দেশি লন, পাকিস্তানি বললে বেশি চলে সেটাও শুনেছি। কি আর বলব এটা নিয়ে, আইপিএলে ভারতীয় খেলোয়াড়দের বেশি টাকা দেওয়া হয়, আর বিপিএলে আমরা দেশি সেরা খেলোয়াড়দের উলটো কম টাকা দেই, বাতিল চোরা পাকিগুলোকে বেশি টাকা দিয়ে ক্রিকেটে আনার ব্যবস্থা করি। নিজেরা নিজেদের দাম না দিলে দুনিয়ার কেউ দাম দেবে না সেটা যত দ্রুত আমাদের মাথায় ঢুকবে ততই মঙ্গল।
৩/ ভারতীয় রান্নার চেয়ে পাকিস্তানি রান্নায় মিল বেশি এটাও আসলে ভুল কথা মনে হয়, ভারতের অনেক প্রদেশ, তাদের অনেক রকম রান্না। দেশি স্বাদের সাথে তুলনা করলে পাকিটাতেও স্বাদ লাগে না। আবার হায়দ্রাবাদী বিরিয়ানি আর পাকি বিরিয়ানির মাঝে পছন্দ করতে হলে আমি হায়দ্রাবাদীটাই নেব।
আমি নিজে ভারত-পাকিস্তান দুই দেশের কারও পকেটেই আমার টাকা দিতে রাজি না, কিন্তু লেসার অফ টু ইভল বললে আমার কাছে ভারত। পাকিস্তানের সাথে কোন দেশের তুলনা করতে আমি রাজি না, সেটা যে কোন ব্যাপারেই।
সবশেষে সাধুবাদ আপনার সংকল্পের জন্য। একটু চেষ্টা করে দেখুন, খুব বেশি কষ্ট হয় না। আমি সিন্ধি বিরিয়ানি মশলা ছাড়াই ৩০ জন লোকের দাওয়াত দিয়ে খাসির কাচ্চি রান্না করে খাইয়েছি কিছুদিন আগেও, আপনার রেসিপির কাছাকাছি একটা রেসিপিতে। এক্সট্রা কিছু করছি বলে মনে হয় নি।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
নতুন মন্তব্য করুন