আসুন আমরা প্রায় পনের বছর আগের একটা গল্প শুনি। গল্পের নায়ক ফরহাদ- বয়স সাতাশ, ছয়ফুট লম্বা, শ্যাম বর্ণের পেটানো শরীর এবং যে কিনা টুকটাক ফুটবলও খেলে। ফরহাদ একজন টেলিফোন এক্সচেঞ্জ অপারেটর। আমাদের এই গল্পটা যে জায়গাতে শুরু তার সম্পর্কে একটু না বললেই নয়। রাজধানী ঢাকা থেকে আরও চারশ কিলোমিটার দক্ষিনের একটা সীমান্তবর্তী মফস্বল শহর, যেখানে তখনও ডিজিটাল টেলিফোন এক্সচেঞ্জ হয়নি, আছে একটা ...
কালকে সমাজ-বিজ্ঞান পরীক্ষা, তারপর ধর্ম, তারপর শেষ- আহ্ কী যে শান্তি! এই শান্তির বাতাস পেয়ে এখনই পড়াতে আর মন বসছে না, ফলাফল কালকের সমাজ-বিজ্ঞান পরীক্ষাটা খারাপ হবে নিশ্চিত। তারপর একটু পড়ে নিই, তারপর আবার ভাবতে বসে যাই, বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হলেই ব্যাডমিন্টন খেলার শুরু। শীতের কুয়াসা মোড়া বিকেল শুরু হতেই সবাই ব্যাডমিন্টন কোর্টে হাজির। আমাদের খেলা শেষ হতো সন্ধ্যায়, তারপর বাতি লাগিয় ...
হুমায়ূন আহমেদের "মাতাল হাওয়া" নিয়ে আগ্রহ ছিল মূলত তার ইতিহাস নির্ভর আগের কয়েকটি উপন্যাসের কারনে। "মধ্যাহ্ন" আর "জোছনা ও জননীর গল্প" আগেই পড়েছিলাম। তাই কিছুদিন আগে হাতে পেয়ে পড়ে ফেললাম "মাতাল হাওয়া"। এই বইয়ের কাহিনীকে মোটামুটি দু'ভাগে ভাগ করা যায়। নাদিয়া-হাবীব-হাসানদের কাহিনী আর হুমায়ূনের আত্মকাহিনী। নাদিয়া-হাবীব-হাসানদের গল্প বলার ফাঁকে ফাঁকে হুমায়ূন তার নিজে ...
আমার বাবা একটা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরী করতেন। তো সে প্রতিষ্ঠান আবার নিয়মিত বেতন দিতে পারতনা। দেখা যেত তিন চার মাস পর পর বেতন হতো তাও পুরোটা না, এক বা দুই মাসের। আমার আম্মা সংসার চালাতে হিমশিম খেতেন। আর বাবাকে তার পরিচিত লোকজনের কাছ থেকে নিয়মিত টাকা ধার করতে হতো। এমনও হয়েছে বাড়িওয়ালার তিন মাসের বাড়িভাড়া বাকি, আবার আব্বা গিয়েছেন টাকা ধার করতে। সেই বাড়িওয়ালা হয়তো কিছু দিতেন অথ ...
ধরেন আপনি খুব মাঞ্জা মেরে সাজ-গোজ করলেন। মানে ইস্ত্রী করা কালো প্যান্ট আর একদম ফকফকা সাদা ফুল শার্টের ভাঁজটা কোন ভাবে নষ্ট না করে পরে নিলেন। খুব সাবধানে ইন্ করলেন, কোমরের দুই পাশে তিনটা করে কুচি আর বাকিটা খুব যত্নের সাথে সামনে পেছনে গুঁজে দিয়ে-যাকে বলে পারফেক্ট ইন্। তারপর খুব সাবধানে হাতের কাছে থাকা গমছাটা দিয়ে চেয়ার মুছে তাতে বসলেন। হুইল ওয়াশিং পাউডার দিয়ে ধোয়া মোজা জোড়া ...
জালাল স্যারের মেয়ে মানু আমার সাথেই পড়ত, মানে একই ক্লাসে কিন্তু ভিন্ন স্কুলে। মানুর আসল নাম কী ছিল আমি জানিনা, হয়তো মনোয়ারা বা অন্য কিছু। আমি যখন জালাল স্যারের কাছে অঙ্ক করতে যেতাম তখন মানুও এসে বসত। আসলে স্বেচ্ছায়তো আর আসত না, স্যারের ভয়ে আসত। মেয়েটা অঙ্কে বড় কাঁচা ছিল, তার চেয়েও অঙ্ক ভীতি ছিল বেশি। চলিত নিয়মের অঙ্ক করতে গিয়ে এমন কোনো দিন নেই যেদিন স্যারের ঝাড়ি খায়নি বেচারি। একদি ...
১।
আরেকটা সেমিষ্টার শুরু হয়ে গেল। ক্লাস, রিপোর্ট নিয়ে ব্যাস্ততাও শুরু হয়ে গেছে। দীর্ঘ সামার ভেকেশনের পর ক্যাম্পাসের সবাই আবার আগের ফর্মে। এবার দেশ থেকে পোষ্টগ্রেড ছাত্র/ছাত্রী একদম নাই বললেই চলে। বর্তমান ছাত্রদের সবার মধ্যেই এক প্রশ্ন, ঘটনা কী! দেশের অনেকেরই শুনি এপ্লিকেশন রিজেক্ট। অন্যদিকে চীন বা ভারত থেকে তো প্রচুর ছাত্র/ছাত্রী আসছে। এর মানে রিসার্চ ফান্ড এর অভাব হবার কথা ...
বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের থাকার জন্য বিভাগীয় শহর আর বিভিন্ন জেলা শহরে সরকারি কলোনী অথবা সরকারি বাংলো থাকে। কলোনীগুলোতে থাকার অভিজ্ঞতা কখনও কখনও খুব বিচিত্র, বিশেষ করে কলোনীগুলো যখন হয় বিভাগীয় শহরের কেন্দ্রীয় বা প্রধান সরকারি কলোনী। আমার জন্ম, বেড়ে ওঠা নিয়ে শৈশবের বড় একটা সময় কেটেছে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ সিজিএস (সেন্ট্রাল গভার্ণমেন্ট ষ্টাফ)কলোনীতে। এ লেখাটা ...