ধরেন আপনি খুব মাঞ্জা মেরে সাজ-গোজ করলেন। মানে ইস্ত্রী করা কালো প্যান্ট আর একদম ফকফকা সাদা ফুল শার্টের ভাঁজটা কোন ভাবে নষ্ট না করে পরে নিলেন। খুব সাবধানে ইন্ করলেন, কোমরের দুই পাশে তিনটা করে কুচি আর বাকিটা খুব যত্নের সাথে সামনে পেছনে গুঁজে দিয়ে-যাকে বলে পারফেক্ট ইন্। তারপর খুব সাবধানে হাতের কাছে থাকা গমছাটা দিয়ে চেয়ার মুছে তাতে বসলেন। হুইল ওয়াশিং পাউডার দিয়ে ধোয়া মোজা জোড়া নিয়ে পরলেন আর মনে মনে বললেন আল্লায় জানে প্যান্টের পেছন দিকে কুঁচকে না যায়! এরপর অক্সফোর্ড শু জোড়া বের করে তার গায়ে নিজের চেহারা দেখা যায় কিনা একবার পরখ করে মনে মনে পালিশওয়ালার প্রশংসা করলেন। এবার ধার করা কয়েকটা টাই থেকে বেছে বেছে সবচেয়ে সুন্দরটা পরলেন আর মনে মনে বললেন, ও নিশ্চয়ই এটা পছন্দ করবে। সুগন্ধি বোতলের তলানি থেকে অনেক কসরত করে এক ফোঁটা মেখে নিলেন কারন, একদিন ও বলেছিল এটার ঘ্রান নাকি খুব ভাল লাগে।
ঠিক এই সময়, আপনার আগোচরে আপনাকে ফলো করতে থাকা আমি মনে মনে বলি, আজকে আপনি আমারে ফাঁকি দিতে পারেবেননা বস্। আমি দেখেই ছাড়ব কে সেই ব্যাক্তি, যার সাথে দেখা করার জন্য আপনার এমন যত্ন করে সাজগোজ করা।
এবার চন্দনপুরা জামে মসজিদের পাশে যে মেস্টাতে আপনি থাকেন সেটা থেকে বেরিয়ে গলির রাস্তা ধরে একটু ত্রস্ত পায়ে আপনি হেটে চললেন। ঘড়িতে দেখলেন দশটা বেজে পাঁচ-মনে মনে বললেন, ইশ্ অলরেডী পাঁচ মিনিট লেট। অবশ্য অসুবিধা নেই ও নিশ্চয়ই অপেক্ষা করবে। ভাবতে ভাবতেই রাস্তার পাশে জমে থাকা পানি দেখে আপনার নাক মুখ কুঁচকে যায়। বিপরীত দিক থেকে আসা গাড়ির চাকা থেকে ছিটকে সেই নোংরা পানি যেন আপনার প্যান্ট নষ্ট করতে না পারে সেজন্য আপনি একটু দূরে গিয়ে দাড়ান যতক্ষন না রিক্সা, প্রাইভেট কার অথবা সিএনজি পার হয়ে যায়।তারপর আবার আপনি এগিয়ে যান। সকালের রোদের তাপ আর আপনার মানষিক চাপ দুয়ে মিলে ঘাড় বেয়ে চলে আসা ঘামের স্রোতকে আপনি রুমালের আলতো ছোঁয়ায় হাওয়া করে দেন। আবার ঘড়িতে চোখ গেলে আপনি দেখতে পান দশ মিনিট লেট। পুরনো সেই ঘড়ির ছিড়ে যাওয়া বেল্টের ভেতরের অংশ যে আপনি খুব যত্ন করে স্ট্যাপল মেশিনের পিন দিয়ে আটকে রেখেছেন তা কিছুতেই যেন ওর চোখে না পড়ে, সেজন্য ঘড়িটাকে শার্টের কাফ্ দিয়ে দ্রুত ঢেকে দেন। তারপর যখন গলির শেষ মাথায় যেখানটাতে বড় রাস্তার সাথে মিশে গেছে, সেখানে বড় বড় বাস আর ট্রাকের আনাগোনা দেখে আপনি আরেকটু উতকন্ঠিত বোধ করেন। কারন আপনার গন্তব্য সমাগত, সেখানে কেউ একজন আপনার জন্য অপেক্ষা করছে।
আমিও কিছুটা উত্তেজিত বোধ করি। এতক্ষন ধরে আপনাকে ঘুনাক্ষরেও বুঝতে না দিয়ে আমি যে আপনাকে ফলো করছি, সেটা বোধহয় একটু পর সার্থক হবে।
অবশেষে আপনি আপনার গন্তব্যে পৌছান। আপনি দেখতে পান হলিউড-বলিউড এর সব নামকরা নায়ক আর নায়িকার পোষ্টারে ঢাকা কাঁচের দেয়ালের এক পাশে ছোট একটা কাউন্টার, আর তাতে বসে আছে পারমিতা ফটো স্টুডিওর মালিক কার্তিক মোহন। আপনাকে দেখেই বলে উঠেন, "আরে! আইসা পরছেন। আসেন আপনের পাসপুটের ফটু তুইলা দেই।
আমি একটা ভুদাইয়ের মতো ভ্যাক ভ্যাক করে তাকিয়ে রই। আমার মনটাও কালা, নাহলে এমন আবোলতাবোল ভাবি!
মন্তব্য
)
নাম আর শুরুটা দেখেই ধর্তে পার্সি
নেন, (গুড়) নেন
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
কেমনে ধরলি? নিশ্চয়ই তুই মুর্শেদ ভাইয়ের পুলার ছবি দেইখা পাখি ভাইয়ের লাইগা পাসপুট সাইজ ছবি তুলবার গেছিলি?
লেখা মজারু হইসে ভাই। (গুড়) নেন। চাইলে মেমরিস্টিক ও নিতে পারেন
আপনি দিলেন গুড়।
ঠিকাছে এই নেন চিনি সাথে
মন্তব্যটা 'মুনোযুগ' দিয়ে পড় আবার
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
এহ্হেরে...(মন খারাপ)
ভালো লাগল।
কুটুমবাড়ি
ধন্যবাদ কুটুমবাড়ি
ঈশ! আমি জম্পেশ একটা ডেট এর আশা করেছিলাম।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ঈশ্ আমি আপনাকে আশাহত করলাম
অ.ট. মিউজিক্যাল র্যাট কি পাব সহসা?
মনে হচ্ছে না রে ভাই। নিজেই ইন্দুর দৌড়ের উপরে আছি তাও মিউজিকের তালে তালে, ছন্দে ছন্দে!
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
তাইলে তো মিউজিকাল র্যাট দিতে দেরি হবার কথা নয়! আমিও ঐটার অপেক্ষায় আছি।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
মিউজিক্যাল র্যাট দেয়া যাবে না, বড়জোর মিউজিক্যাল ধুগো দেয়া যেতে পারে। কিন্তু সেইটা তো আবার নিপাতনে সিদ্ধ না।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
মজা লাগল পড়ে---
অনেক অনেক অনিকেতদা।
আমারো মন কালা; কি না কি আশা করছিলাম...
অনন্ত
হে হে...নিজেরে চিনসেনতো?
পড়ার জন্য
হা হা হা হা।
আমার মন দেখি কাক্কেশ্বর কুচকুচে।
কাকস্য পরিবেদনা
যাক একজনরেতো পাইলাম আমার কাছাকাছি!
হা হা... লেখায় (গুড়)... আর আপনার ব্যর্থ পরিশ্রমের জন্য সান্ত্বনা।
লেখা তো ভালই হয়েছে, শুধু ঘ্রাণ-টান কিছু বানানের দিকে নজর দিয়েন, আর কি...
মন্তব্যের জন্য নেন বস্
ভাল্লাগছে
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ধন্যবাদ নজরুল ভাই।
এত সাপ খুড়তে যেয়ে কেঁচো বের হল!
হা হা....কৈরে ভাই, আমিতো দেখি না।
বেশ তো। একটু সাজেশন।
গল্পে আপনার উপস্থিতি না থাকলে ভালো লাগতো
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
সাজেশনের জন্য
জম্পেশ একটা এন্ডিং থেকে বঞ্চিত করছেন, কোন নাইকার এন্ট্রি নাই কেন? এইজন্য একটু ছিদ্রান্বেষ করি, ছবি তোলার জন্য তো আর সুগন্ধী মাখার দরকার নাই, নাকি? এখন সুগন্ধীরে বৈধতা দেয়ার জন্য একটা ডেটিং এর আয়োজন করেন মিয়া।
সজল
আপনার ছিদ্রান্বেষণকে আরেকটু বেগবান করে দেই।
অক্সফোর্ড ব্ল্যাক জুতারও দরকার নাই। আর প্যান্টের পেছনে খানিক কুচকে গেলেই বা ক্ষতি কী? ছবি কি পেছনের তোলা হবে? আমার তো মনে হয় লুঙ্গি পরে, রূপসা চপ্পল পায়ে দিলে গেলেও চলতো।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
এইবার আমি নিশ্চিত ডালে কিছু কালা আছে। এত প্রিপারেশনের পর কাহিনী অনেক দূর না গড়িয়ে পারেনা। মনে হয় সেন্সর করতে গিয়ে বাউলিয়ানা, নায়করে স্টুডিওতে ঢুকিয়ে দিয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলছে।
কালকে যে কী হইল, আগের মন্তব্যটা করার পরে এই পোস্টে কিছুতেই আর ঢুকতে পারলাম না!
যাই হোক, গল্প তো ভালই লাগল, খালি শেষের আসল কথাটাই তো লিখতে ভুলে গেছেন মনে হয় যে ফটোগ্রাফারের জন্যেই লুঙ্গী আর রবারের পাম-শু (বৃষ্টির দিন কিন্তু!) বাদ দিয়ে ইস্ত্রি করা প্যান্ট আর অক্সফোর্ড জুতোটা বের করা, তার কথা! দ্বিতীয় পর্বে সুগন্ধী পছন্দ করা মহিলা ফটোগ্রাফারকে এনে ফেলুন, সবাইকে আর জোর করে আঁধারে ধরে রাখতে পারবেন না এমনিতেও, সবাই ধরে ফেলেছে ডেটের ব্যাপারটা, আপনি যতই রাস্তার ওপারে স্টুডিওর বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখেন না কেন!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
যাযাবর, নিচে বলেছি এটা গল্প না। আলমগীর ভাইয়ের অনেক বাতিকগুলার মধ্যে একটা ছিল পরিপাটি সাজগোজ। সেটা নিয়ে তাকে আমরা প্রায়ই পচানি দিতাম। তবে সেটা অন্য গল্প।
তবে পারমিতা ষ্টুডিওর ভেতরে কোন ছবি তোলা ছাড়াও কোনো প্রেমালাপ অধিবেশন হয়েছিল কিনা আমার জানা নাই। দেখি আরও তদন্ত করে, তারপর জানাবোনে।
শুভেচ্ছা জানবেন।
হে হে...দেখি আবার চোখ খুলে নতুন কিছু পাই কিনা। পেলে অবশ্যই জানাবো তবে সেটা হবে নতুন কোনো গল্প।
হে হে হে... সজল আর ধুগোদা দেখি লেখার ভালই ডিসেকশন করসেন। আসলে সুগন্ধী, অক্সফোর্ড শু এই ব্যাপারগুলা বোধহয় লেখাটার দুর্বলতা।
তবে একটা কথা, এটা কোনো গল্প না। আমি যাকে পর্যবেক্ষন করে এই লেখাটা লিখি, সেই আলমগীর ভাই, যিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে মাষ্টার্স করতেসেন, সাথে সাথে ডিভি লটারীর আবেদন করতে করতে শেষ পর্যন্ত সফলও হয়ে গেসেন, ভদ্রলোক কিন্তু সত্যি এভাবেই পাস্পোর্টের ছবি তুলতে গেছেন। কিন্তু পারমিতা ষ্টুডিওর ভেতরে কি কেউ তার অপেক্ষায় ছিল কিনা তা আমি জানিনা।
শুভেচ্ছা রইল।
মজা পেলুম। সাধারণ অভ্যস্ততায় শ্রেয়তর সমাপ্তি আশা করেছিলাম। তবে গল্পটা যদিমাত্র সত্য ঘটনার অনুলিপি হয়ে থাকে তাহলে আর কি......
নতুন মন্তব্য করুন