'৬৮ এবং '৬৯-এর মাতাল হাওয়া আমার ওপর দিয়ে গিয়েছে। কিছু অভিজ্ঞতা উপন্যাসের ফাঁকে ফাঁকে ঢুকিয়ে দেব। উপন্যাসের কাঠামো নির্মাণে এই বিষয়টা চলেনা, তবে মাতাল হাওয়া কখনই নিয়ম মানে না।
হুমায়ূনের নিজের অভিজ্ঞতা মূলত ১৯৬৮-৬৯ এর সময়ের। তিনি থাকতেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহসিন হলে। সেইসময়কার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিশেষ করে বিভিন্ন সংঘটনের ছাত্রনেতাদের নিয়ে তার অভিজ্ঞতা এবং তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকদের রাজনৈতিক অবস্থান আংশিকভাবে এই লেখায় এসেছে। আর প্রাসংগিকভাবে এসেছে সেই সময়ের দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির বর্ণনা। তবে "মধ্যাহ্ন" বা "জোছনা ও জননীর গল্প"- তে যে পরিমান ইতিহাসের রশদ ছিল তা এখানে পাওয়া যায় না। তারচেয়েও বড় কথা, সেই সময়ে উত্তাল ঢাকা শহরের বা দেশের সামগ্রিক চিত্র এই উপন্যাসটিতে কতটুকু উঠে এসেছে তা নিয়ে আমরা পরে আলাপ করব।
অন্যদিকে নাদিয়া-হাবীব-হাসানদের নিয়ে যে গল্প, তা অনেকটা প্রচলিত। হাবীব সাহেব ময়মনসিংহ-নেত্রকোনা অঞ্চলের বিশিষ্ট আইনজীবি। সেইসময়কার গভর্নর মোনায়েম খান তার আত্মীয়। এই আপাত পরাক্রমশালী আইনজীবিটি প্রভাব এবং প্রতিপত্তি দুদিক থেকেই অনেক উচুঁতে অবস্থান করেন। তার মেয়ে নাদিয়া (অন্য নাম তোজল্লি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে এবং সেখানকার শিক্ষক বিদ্যুত কান্তিকে তার ভাল লাগতে শুরু করে। হাবীব তারই মত ময়মনসিংহ অঞ্চলের আরেক বিত্তশালী জমিদার বংশীয় পরিবারের ছেলে হাসান রাজাকে একটা খুনের মামলা থেকে বাঁচাতে চেষ্টা করে এবং হাসানের সাথে মেয়ে নাদিয়ার বিয়েও ঠিক করে। কিন্তু ঐতিহ্যবাহি এই পরিবারগুলোতে যা হয়, অতীতের কিছু পাপের ফলে লেগে যাওয়া কাল দাগ সহজে মোছা যায়না। ঘটনা পরম্পরায় পাঠক সেগুলো জানতে পারে। শেষ পর্যন্ত নাদিয়া আর হাসানের মিল হয়না। কারন হাসান সেই খুনের খুনী হিসেবে স্বীকারোক্তি দেয় এবং বিচারে তার ফাঁসি হয়।
এই দু'টো কাহিনীর একমাত্র যোগসূত্র হচ্ছে হুমায়ূন আর নাদিয়া। তারা দু'জন একই সাবসিডিয়ারি কোর্সের ক্লাসমেট। নাদিয়া হুমায়ূনকে বিভিন্ন সময়ে চিঠি লিখে তার খবরাখবর জানাতো। এর বাইরে দুই গল্পের মধ্যে আর তেমন সংযোগ দেখা যায়না। হুমায়ূনের আত্মকাহিনী আর নাদিয়া-হাসানের গল্প মোটামুটি সমান্তরালভাবে এগিয়ে চলে।
"মাতাল হাওয়া" উপন্যাসের পটভূমি যে সময়ের, তা নিয়েই আমার আগ্রহ বেশি ছিল। ভেবেছিলাম '৬৮-'৬৯ সময়কার গনজোয়ার বা আন্দোলনের বর্ণনার সাথে সাথে উপন্যাসের বিভিন্ন চরিত্রের গল্প এক একটা ভিন্ন ধারা তৈরী করবে। আখতারুজ্জামান ইলিয়াস যেমন "চিলেকোঠার সেপাই"-তে লিখেছেন,
ওসমান প্রথমে তাকায় উত্তরে। কালো কালো হাজার হাজার মাথা এগিয়ে আসছে অখন্ড স্রোতের মধ্যে ঘাই-মারা রুইকাতলার মতো মুষ্টিবদ্ধ হাত ওপরে ওঠে আর নামে। উত্তেজিত রুই-কাতলার ঝাঁক নিয়ে গর্জন করতে করতে আসছে কোটি ঢেউয়ের ঢল। দক্ষিনে তাকালেও দেখা যায় এই স্রোতধারা কেবল এগিয়ে যাচ্ছে সামনের দিকে।
এরকম রক্ত গরম করা কোনো বর্ণনা ছিল না এই উপন্যাসে। বরং ব্যাক্তি হুমায়ূন নিজে যেমন নিষ্প্রভ ছিলেন তেমনি নাদিয়া-হাসানের গল্পে গনআন্দোলনের প্রভাব প্রায় ছিলনা বললেই চলে। তারপরও হুমায়ূনের নিজেস্ব চিন্তাভাবনা বা কান্ডকারখানার প্রতি একটু কৌতুহল জেগেছিল। কিন্তু তাতে পানি ঢেলে দিয়েছেন তিনি নিজেই। কারন তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র। পড়ালেখার বাইরে তিনি তেমন কোনো কাজই করতেননা (!) সারাদিন লাইব্রেরী আর মহসীন হলের একটা রুমে নিজেকে বন্দী করে পড়ালেখা-পরীক্ষার প্রস্তুতি ইত্যাদিতে করে তার দিন কেটেছে। তিনি সর্বদা এনএসএফ নামক সরকারি পান্ডাদের ভয়ে ত্রস্ত থাকতেন। তার জবানিতে-
মহসিন হলের ৫৬৪ নম্বর রুমে রসায়ন বিভাগের অতি সাধারন একজন ছাত্র বাস করত। SSC এবং HSC-তে তার রেজাল্ট ভাল ছিল বলে তাকে একটা সিঙ্গেল রুমের সিট দেয়া হয়েছিল। এই বেচারা সারাদিন এনএসএফ নেতাদের ভয়ে অস্থির থাকত। একদিন কোনো কারন ছাড়াই এনএসএফ নেতারা তার ঘরে ঢুকে রুম তছনছ করে দিল। তোষক জ্বালিয়ে দিল এবং বেচারার নিজের টাকায় কেনা Organic Chemistry'র Morrison and Boyed এর লেখা বিশাল বইটা ছিঁড়ে কুচিকুচি করে ফেলল। ...গোবেচারা এই ছাত্রের নাম হুমায়ূন আহমেদ।
আইয়ুব খানের পোষা গুন্ডা এনএসএফ বাহিনীর অনেক কুকীর্তি বর্ণনার সাথে হুমায়ূনের এই ঘটনাও তার ভাস্যমতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কারন, স্কলারশীপের টাকায় কেনা ঐ বইটা তার একমাত্র নিজের বই আর বাকিগুলো লাইব্রেরী থেকে নেয়া! যাই হোক, এরকম একটা উত্তাল সময়ে যখন ঢাকা শহর মানুষে মিছিলে সরগরম, গনমানুষের মুক্তির দাবি যখন একমাত্র চাওয়াতে পরিণত হয়, ইলিয়াস লিখেন,
হাওয়ায় শোনা যায় মালীবাগ, কমলাপুর, শাহাজানপুর থেকে, নাখালপাড়া মনিপুরী পাড়া থেকে হাজার হাজার মানুষ কারফ্যু ভেঙ্গে ছুটে যাচ্ছে ক্যান্টনমেন্টের দিকে। ক্যান্টনমেন্টের চারদিকের দেয়াল ভেঙ্গে ফেলা হবে আজ রাতে, বিশাল সমাবেশের সমবেত আঘাতে চূর্ণ-বিচুর্ণ হয়ে যাবে মিলিটারির গুদাম গুদাম হাতিয়ার। কিংবা হাতিয়ার চলে আসবে মানুষের হাতে।
এমন একটা সময়ে হুমায়ূন নিজেকে শামুকের মত খোলসে আবৃত করে রাখলেন। আর সেই খোলসটা হচ্ছে, ম্যাজিক দেখানো, হাত দেখে দেয়া ইত্যাদির খোলস। তাকে একবার জোর করে হিপনোটিজম করে দেখাতে বললে, হুমায়ূন সত্যি সত্যি ছাত্রলীগের এক নেতাকে হিপনোটাইজ করে ফেলেন। শেষপর্যন্ত সেই নেতাকে হাসপাতালেও নিতে হয়েছিল। সেইসময়ের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সম্পর্কে তার নিজেস্ব মত ছিল এরকম, সম্পূর্ণ কোট না করে লিখছি-
ছাত্রইউনিয়ন, ...এদের ভাষা শুদ্ধ। নদীয়া শান্তিপুর ষ্টাইল। যেকোনো বিপদ-আপদে দ্রুতস্থান ত্যাগ করতে পারদর্শী। মিছিলের সময় পালাবার সুবিধার কথা বিবেচনায় রেখে এরা পেছনদিকে থাকে।
ছাত্রলীগ, পড়াশোনায় মিডিওকার এবং বডিবিল্ডার। এদের প্রধান কাজ হলো এনএসএফ এর গুন্ডাদের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করা।
ইসলামী ছাত্রসংঘ, মওদুদীর বই বিলিয়ে 'দীনের দাওয়াত দেয়া' তাদের অনেক কাজের একটি। পূর্বপাকিস্তানকে হিন্দুয়ানি সংস্কৃতির হাত থেকে রক্ষা করা, মসজিদ ভিক্তিক সংগঠন করা এদের কাজ।
এনএসএফ, প্রধান এবং একমাত্র কাজ সরকারি ছাতার নিচে থেকে গুন্ডামি করা।সরকার এদের উপর খুশি। কারন এদের কারনে অন্য সঙ্গগঠনগুলো মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছেনা।
এনএসএফ যে সেসময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ত্রাস সৃষ্টি করেছিল তার কিছু চিত্র উঠে এসেছে এই উপন্যাসে। তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা সব দেখেও না দেখার ভান করতেন এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে তাদের অনেক বাড়তি সুযোগসুবিধাও দিতেন। তারপরও, মিছিলে আর শ্লোগানে উন্মাতাল ঢাকা সহ সারা দেশের মানুষের যখন একটা দাবি "তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা-মেঘনা যমুনা", যখন সার্জেন্ট জহুরুল হক, আসাদ, ড. সামসুজ্জোহার মৃত্যুতে সারা দেশের মানুষ ক্ষোভে ম্যুহমান প্রতিশোধের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে তখন হুমায়ূনের বিশ্ববিদ্যালয় হলকেন্দ্রিক একাকী জীবনের বর্ণনা আমার কাছে বড্ড ম্যাড়ম্যাড়ে আর কাপুরুষোচিত ঠেকে।
হুমায়ূনের অন্য সব গল্পে যেমন থাকে কিছু অপ্রধান কিন্তু আবেদনময়ী চরিত্র- সেরকম মাতাল হাওয়া'তেও ছিল। যেমন নাদিয়ার দাদী "হাজেরা বিবি", উঠতে বসতে অশ্লীল কথা বলা যার স্বভাব, পাঠকের মনে একটা ঘৃণা তৈরী করে। কিন্তু পরে দেখা গেছে তার এরকম কান্ডকারখানা অনেক মানবিক। তারপর বিদ্যুত কান্তি, যিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নাদিয়ার শিক্ষক। তিনি চমতকার করে কথা বলতে পারেন এবং ম্যাজিক দেখাতে পারেন। হিন্দু হবার কারনে সেই সময়ে অনেকের জীবনে দুর্দশা নেমে আসে, বিদ্যুত কান্তি তাদের একজন। হাসানের বাবা রহমত রাজা চৌধুরী, যিনি তার ছেলের মামাতো বোনের সাথে ছেলের বিয়ে দেবার কয়েক ঘন্টার মধ্যে তালাক নেবার ব্যবস্থা করেন এবং হাবীব সাহেবকে তার মেয়ের সাথে হাসানের বিয়ে দেবার সম্মতি জানান।
সব মিলিয়ে "মাতাল হাওয়া" হুমায়ূনের আরেকটা অপুষ্ট উপন্যাস যেখানে সম্প্রতিককালে তার অন্যান্য বইয়ের মতই হালকা চালে কাহিনী বলে যাবার প্রবনতা স্পষ্ট। উপন্যাসের বুনট বা গাঁথুনি তেমন মজবুত মনে হলনা। গল্পের মাঝে মাঝে তার নিজের অভিজ্ঞতা বলতে চাওয়া অনেক ক্ষেত্রেই কাহিনীর সচলতা নষ্ট করেছে। নাদিয়া-হাসানদের গল্পের প্রায় কাছাকাছি প্লট নিয়ে তার বোধহয় আরও কিছু উপন্যাস আছে। "মাতাল হাওয়া" লিখলেও '৬৮-৬৯ এর তৎকালীন সামাজিক-রাজনৈতিক কর্মকান্ড এবং গনজোয়ারের বাতাস তার লেখায় তেমন একটা উঠে আসেনি। গল্পের সাথে সেই হাওয়া মিশিয়ে এই উপন্যাসটি আরও ভাল হতে পারত।
মন্তব্য
পড়েছি... পুরো কাহিনীটা মনে নেই। বাস্তব জীবনে পাওয়া মাত্র গোটা কয়েক চিঠির উপর ভিত্তি করে হুমায়ূন এই উপন্যাসটা লিখেছিলেন- এটাই মনে আছে।
অপুষ্ট উপন্যাস, এই ধারণার সাথেও একমত। রাজনৈতিক তথ্যাবলী খুবই কম। চানাচুর উপন্যাস বললেই ভালো। শেষটা রীতিমত হতাশাজনক...
_________________________________________
সেরিওজা
হাহা...আমিও একমত।
উপন্যাসের বেশ কিছু জায়গা, বর্ণনা চমৎকার, বেশ চমৎকার। কিন্তু সব মিলিয়ে ভালো লাগে নি।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
শিক্ষাবিষয়ক সাইট ::: ফেসবুক
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
হুমায়ূনের অনেক বিখ্যাত উপন্যাসের তুলনায় এটা তেমন ভাল লাগার মতও না।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ গৌতমদা।
হু.আ.র বই আয়োজন করে পড়া হয়না ম্যালাদিন হল। এ বইটাও মনে হচ্ছে হাতের কাছে পেলেই পড়া হবে, তার ওপর রিভিউ-কমেন্ট পড়ে পস্তানোর একটা ভয়ও থেকে যাচ্ছে।
--------------------------------------------
আজি দুঃখের রাতে, সুখের স্রোতে ভাসাও তরণী
তোমার অভয় বাজে হৃদয় মাঝে হৃদয় হরণী।
--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।
আপনার আগ্রহে পানি ঢেলে দিতে চাইনা। সময় সুযোগ পেলে পড়বেন বৈকি।
শুভেচ্ছা জানবেন।
পড়েছি। ভেবেছিলাম ইতিহাস নির্ভর বই। ধরা খেয়েছি ।। পুরো বইটায় সবচে পছন্দ হয়েছে মলাটটা।।
_______________________________________________
সিগনেচার কই??? আমি ভাই শিক্ষিৎ নই। চলবে টিপসই???
হুম দারুন বাঁধাই বইটার। এরকম মলাটের বই দেশে দেখা তেমন একটা যায় না।
মাতাল হাওয়া'তে হুমায়ুন আহমেদ কাহিনী বলে গেছেন নিজের মতো করে তার নিজস্ব স্টাইলে, গল্পে হালকা রস যেমন ছিলো, তেমনি তখনকার দিনের দুই আইন ব্যবসায়ীর কথা ছিলো, এদের দুজনেই আবার ধুরন্ধর !!! এদের একজন মোনায়েম খান, অন্যজন হাবিব। ইতিহাস বলতে এই বইতে কি লেখা সেটা আমি খুঁজে পাইনি। হুমায়ুন আহমেদ গতানুগতিক নিজস্ব ধারার বাইরে যেতে পারেননি। শেষটা হয়েছে বাংলা সিনেমার শেষ দৃশ্যের মতো, পড়ার জন্য পড়া যায়, এই কারণেই বইটা পড়া যায় !!!
__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________
__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________
হে হে...আচ্ছা।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
উদ্ধৃতি
'পড়ার জন্য পড়া যায়, এই কারণেই বইটা পড়া যায়'
হ
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
হুম ঠিক কথা।
আপনার রিভিউ ভাল লাগল । “মাতাল হাওয়া” পড়ার কোন ইচ্ছা রইল না । তবে, হুমায়ুন আহমেদের অসংখ্য পাঠক এখনো আছে, তা নইলে একক বই মেলা হয় কী করে!!! ভদ্রলোকের পরিমিতি বোধের পরিমান দেখে অবাক হতে হয় ।
……………………………………
বলছি এক জ্যোতির্ময়ীর কথা
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
ধন্যবাদ পড়বার জন্য।
শুভেচ্ছা জানবেন।
অনেক দিন পর এই বই মাধ্যমে হু আ পড়েছি। এবং এক বসাতেই পুরো বই শেষ করেছি। এখানেই হু আ'র কৃতিত্ব; সে পাঠক ধরে রাখতে পারে। তবে এত্টুকুই। পুরা উপন্যাসই আসলে বাংলা সিনেমার মত। তার অন্যান্য সাধারণ উপন্যাসের মতই। ইতিহাসের ব্যাপারটিকে হয়ত সে পাঠকের আকর্ষণের জন্য ব্যবহার করেছে। তবে তার সত্যবাদিতা পছন্দ হয়েছে যে সে একটা কাপুরুষ ছিল সে সময়ে।
আপনার রিভিউটা ভাল হয়েছে। তবে পুরা গল্পটাই বলে দিলেন। তাও দুই লাইনে! আসলে ওটাই মূল গল্প!
অনন্ত
আগের দুটি উপন্যাসের পর হুমায়ূনের কাছে প্রত্যাশা অনেক বেশি ছিল, সেটা তিনি পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন।
হুমায়ূন আহমেদের এই পাঠক ধরে রাখার কৃতিত্ব বোধহয় বেশিদিন থাকছে না। আমি নিজে তো বটেই, পরিচিত অনেককে দেখেছি হুমায়ূন আহমেদের বই পড়তে পড়তে বিরক্ত হয়ে ফেলে রেখে উঠে গেছে। সংখ্যাটা বোধহয় বাড়ছে।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
শিক্ষাবিষয়ক সাইট ::: ফেসবুক
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
বইটার পিডিএফ সংস্করনটা পেয়েছিলাম। পড়া হয়নি। রিভিউ পড়ে আগ্রহ আরো কমে গেল। হুমায়ুন আহমেদ মুক্তিযুদ্ধের উপর বিশালাকার একটা উপন্যাস লেখার কথা দিয়েছিলেন বছর বিশেক আগে। এটা কি সেই বইয়ের প্রথমাংশ?
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
এ ভ্রমণ, কেবলই একটা ভ্রমণ- এ ভ্রমণের কোন গন্তব্য নেই,
এ ভ্রমণ মানে কোথাও যাওয়া নয়।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
বিশাল উপন্যাসের প্রথমাংশ কিনা জানিনা বস্। তবে তা হয়ে থাকলে, সত্যিই হতাশাজনক।
অবশ্য সেই উপন্যাসটা "জোছনা ও জননীর গল্প"-ও হতে পারে।
গল্পের মধ্যে যেই জায়গাতে হাজেরা বিবি তার উকিল ছেলে হাবিবকে হাবু বলে ডাকে সেই জায়গা সবচেয়ে ভাল লাগসে।
গল্পের মধ্যে যেই জায়গাতে হাজেরা বিবি তার উকিল ছেলে হাবিবকে হাবু বলে ডাকে সেই জায়গা সবচেয়ে ভাল লাগসে।
বইটা হাতে এসেছিল। ইতিহাস নির্ভর উপন্যাস শুনে পড়ে ফেললাম।
কিন্তু কথা সত্য। একেবারেই চানাচুর উপন্যাস।
হুমায়ুন মনে হয় সুনীল স্টাইলে "সেই সময়", "প্রথম আলো" জাতীয় ইতিহাসনির্ভর দীর্ঘোপন্যাস লেখার চেষ্টায় আছে বহুকাল থেকে। কিন্তু হায়! তার মতো চানাচুরঅলার হাত থেকে ঝালমুড়ির বেশি কিছু বেরোয় না!
একই জিনিস প্রত্যক্ষ করেছি "মধ্যাহ্ন"তেও!
সুনীলের সেই রক্তক্ষয়ী পরিশ্রমের ফসল "সেই সময়"-এর পাশাপাশি এই চানাচুর-মুড়ি উপন্যাসের অবস্থান কী করুণ!
নিজের কাছেই লজ্জা লাগে।
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ মৃদুলদা।
যথারীতি এবারের বইমেলাতেও এসে গেছে হু.আ. এর বই "ম্যাজিক মুন্সি"। তার নির্মানাধীন চলচ্চিত্র "ঘেঁটুপুত্র কমলা" এর শুটিং এর জন্য সুনামগঞ্জ যাবার ভ্রমণকাহিনি। কেন জানি মনে হয় হু.আ. কে জোর করে এগুলো লেখানো হয়।
শাওন ম্যাডআম কে বিয়া করার পরে ই মনে হয় হু আ সাহেব কে ভীমরতি ধরেছে , তা যাই হোক তবে এই বর্তমান সময়ে ছাত্রলীগ এর কার্যকলাপ এন এস এফ এর কাছে থেকেই উত্তরাধিকার সুত্রে পাওয়া এই ইনফর্মেশন টুকু পাওয়া যায় হু আ সাহেবের এই কুখাদ্য বই খানা থেকে ।
নতুন মন্তব্য করুন