-কী এমন রাজকার্য সামলাচ্ছিলে তুমি যে আমার ফোন ধর নাই?
ফুটন্ত তেলে পাঁচফোড়নের মত জ্বলে উঠল মিলি!
-ইয়ে মিটিং এ ছিলাম, তাই খেয়াল করি নাই…
-অফিস থেকে ফেরার পথে পেইনকিলার আনবা বিশটা!
-কেন জান? আবার মাথাব্যথা হইসে নাকি?
-জ্বি না, চল্লিশবার ফোন করসি তোমাকে, আমার হাতটা ব্যথা হয়ে গেসে।
-কই চারটা মিসকল তো…
-ফাইজলামি কর তাইনা? খেয়াল করে নাই আবার কথা বল!
-আচ্ছা বল কেন ফোন করসিলা।
-আগে তুমি চল্লিশবার আমাকে রিং দাও তারপর খুলে বলি।
ফোন কেটে দিল মিলি।
ফোঁস করে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল সজীব। সে খুব ভাল করেই জানে যে সত্যি সত্যিই এখন উনচল্লিশবার ফোন করলেও বউ নামের প্রকৃতির ওই অদ্ভুত সৃষ্টিটা তার ফোন রিসিভ করবে না, চল্লিশবারের সময় করবে। আবার ফোন না করলেও নিস্তার নেই। দিনরাত নিত্য নতুন শাস্তির আইডিয়া এই ব্রিলিয়ান্ট বউটার মাথায় কিলবিল করে, সে বাসায় ফিরলেই প্রয়োগ করা হবে! মাঝে মাঝে সজীব গালে হাত দিয়ে ভাবে-তার ঘরে যে রমণীটি তার উপর অষ্টপ্রহর ছড়ি ঘুরায় সে কি আসলে বউ! বউই যদি হয় তাহলে বউটা কেন বসের মত আচরন করে? এমন তেজপাতার মত জীবন তো সে কখনো চায় নি! ভাবতে ভাবতে যখন তার চোয়ালটা ঝুলে যায় তখন হঠাৎ মনে হয়-নাহ, জীবনে ভাল কিছুও পেয়েছে। যেমন এই যে অফিসে তার বস জলিল ভাইয়ের কথাই ধরা যাক না! তিনি তো আর দশটা বসের মত নন। কী মাই ডিয়ার লোক, কত স্নেহ করেন তাকে। নতুন চাকরির কিছুদিন যেতে না যেতেই প্রমোশন দিয়েছেন, বলে দিয়েছেন বসকে ভাই বলে ডাকতে, ছুটি চাইলেও তেমন একটা ঝামেলা করেন না। লোকটা আছেও আরামে। বউ নেই, তাই কপালে ভাঁজ টাজও নেই একটাও, কত শান্তি! আয়েশ করে তিনি যখন চায়ের কাপে শব্দ করে চুমুক দেন তখন সজীবের মনটা হু হু করে উঠে। এমন একটা নির্ভেজাল চিরকুমার জীবন তো তারও হতে পারতো। আসলে সব দোষ তার খালাতো শ্বশুরের মানে কিনা তার বিয়ের ঘটকের বা এই কিম্ভূত বিক্রিয়ার যিনি অণুঘটক, তার! ওই স্ত্রৈণ লোকটাই তার জীবনটা নিরামিষ করে দিল। নিজে একটা মিনসে, বউকে মানে তার খালা শাশুড়িকে একবেলাও শাসন করেননি জীবনে। লোকটার বউ বা বসটা মিলির চেয়েও কয়েক কাঠি সরেস। সজীব আড়ালে ভদ্রমহিলাকে মিলিটারি খালা বলে ডাকে। ওই মিলিটারি খালার কাছে বড় হয়ে ওই খালাকেই মিলি তার জীবনের আদর্শ বানিয়েছে আর নিজের বরকে চব্বিশ ঘণ্টা দৌড়ের উপর রাখাকেই করেছে এইম ইন লাইফ!
লাঞ্চে গিয়ে দেখে বস মানে জলিল ভাই একা লাঞ্চ করছেন, মায়া লাগলো সজীবের। সে গিয়ে জলিল ভাইয়ের পাশের চেয়ারে বসলো ।
তাকে দেখে স্বভাবসুলভ দেঁতো হাসি ছুঁড়ে দিলেন জলিল ভাই।
-রোজ বাইরের খাবার খেয়ে খেয়ে দেখসো শরীরের কী হাল হয়ে গেছে আমার!
সজীব চোখ ছোট করে দেখল বসকে, বুঝতে পারলো না ইয়া বড় ভুঁড়ি নিয়ে কী করে ওই ছোট্ট চেয়ারে তার জায়গা হচ্ছে! সামনে খাবারের পাহাড়। বিশাল বপুর এই সহজ সরল লোকটাকে দেখে হঠাৎ তার খুব হাসি পেয়ে গেল। বহু কষ্টে সামলে নিয়ে বলল
-জ্বী ভাই ঠিকই বলেছেন। তা এত কষ্ট কেন করেন?
-কী করব বিয়ে টিয়ে করি নাই, বউ টউ নাই…
-ধুর ভাই, কী যে বলেন, ভাল খেতে বউ থাকা লাগে নাকি? বুয়া টুয়া নাই?
-হুম তুমি তো বলবাই, চিরকুমারের দুঃখ তুমি আর কী বুঝবা!
-আচ্ছা ভাই বিয়েটা কেন করলেন না একটু বলেন না?
-কী করব, আমার মত খ্যাত লোককে কে বিয়ে করবে!
-নাহ বস বলেন না কেন?
-কী আর বলব ভাই! পাশের বাসায় মিলি নামে এক মেয়ে থাকতো, তাকে খুব বেশি পছন্দ করতাম কিন্তু কোনোদিন বলার সাহসই পাই নাই। একদিন মিলির বিয়ে হয়ে গেল। এই আর কি!
ফোঁস করে আরেকটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল সজীব। এইখানেও মিলি!! হালকা কেশে গলাটা পরিষ্কার করে নিয়ে বলল
-এত ভয় কেন পেতেন, খুব জাঁদরেল ছিল নাকি?
-হুম তা একটু তো ছিলই।
-তবু সাহস করে বলে ফেললেই পারতেন।
-ও তো ঠিকই বুঝতো, যেদিন টের পেল সেদিন থেকেই খুব ভাই ভাই করতে লাগল! বলতো আমি নাকি তার বড় ভাইয়ের মত!
একটু লাজুক হেসে আবার বললেন
-জানো মিলি না আমাকে জলি ভাই বলে ডাকতো! জলি আর মিলি! কেমন মিলে গেল তাই না!
অন্যমনস্কভাবে সজীব বলল
-আসলে মিলি নামের মেয়েগুলো মনে হয় এই রকমই হয়।
মুখে প্রশ্নবোধক এঁকে সজীবের দিকে তাকালেন জলি ভাই!
-না মানে আমার বউ মিলিও একটু জাঁদরেল স্বভাবের কিনা…মিলি না হয়ে চিলি হলেই ভাল হত!
-হা হা হা। আবারো সেই দেঁতো হাসি হাসলেন জলিল ভাই।
-আসলে ব্যাপারটা হল গিয়ে…
জলি ভাই বকেই যাচ্ছেন। সজীব ভাবছে তার মিলিও যে কেন প্রথম পরিচয়েই তাকে বড় ভাইয়ের মত ভাবল না! নিয়তির কি বিমাতাসুলভ আচরন!
লাঞ্চ সেরে খুব মনোযোগ দিয়ে ঘাড় গুঁজে কাজ করছিল সজীব। অনেক কাজ জমে গিয়েছে, সকালটা কী যে সব আবোল তাবোল চিন্তায় কেটে গিয়েছে খেয়ালই করে নি সে। দ্রুত কাজ শেষ করে বেড়িয়ে পরবে আজ, বাসায় গিয়ে আবার কোন জেরার মুখে পড়তে হয়! সে দিব্যদৃষ্টিতে মিলির অন্তর্ভেদী চাহনি দেখতে পাচ্ছে! ভাবতে না ভাবতেই আবার ফোন। এবার রিং হতে না হতেই রিসিভ করে ফেলল সজীব। গলায় যথাসম্ভব মধু ঢেলে দিয়ে বলল-
-হ্যালো জান, তুমি কেমনে টের পেলে যে তোমার কথাই ভাবছিলাম?
-সারাক্ষণ ফোন হাতে নিয়ে বসে থাকো তাই না? আর শুনো সজীব এইসব পুরান ঢং বাদ দাও তো, নতুন কিছু থাকলে শোনাও।
ফুটো বেলুনের মত চুপসে গেল সজীব। এই রকম মুহুর্তগুলোতে তার প্রায়ই মনে হয়ে নিজের নামটা একটা ভাল দিন দেখে বদলে ‘নির্জীব’ করে ফেলবে।
-আমি ফোন করসি এটা বলতে যে আজকে তুমি বাইরে খেয়ে আসবা।
-কেন জান? তুমি এখনো রাগ করে আছ? আমি সর্যি তো, কান ধরলাম বাবা!
-আমি বিজি, এত কথা শোনার সময় আমার নাই। একটু পরে খালামণির বাসায় যাচ্ছি, কাল ফিরবো, বাসায় তালা দিয়ে যাবো। চাবি তোমার জরিনা ভাবির কাছে থাকবে।
-মিলিটারি খালার বাসায়?
-তুমি তো খুব বেয়াদপ হয়ে গেসো সজীব!
- আচ্ছা সর্যি! তা খালামণির বাসায় কেন হঠাৎ?
-কেন আমি যেতে পারি না?
-না না আমি যেতে নিষেধ করি নি তো। কিন্তু জরিনা ভাবি কে যেন?
-ন্যাকা!! চেন না? তোমার পাকা রাঁধুনি ভাবি যার রান্নার স্বাদ মুখে লেগে…
-অ, সে তো পাশের ফ্ল্যাটের রোজিনা ভাবি!
-ওই একই হল, আর হ্যাঁ বাইরে খেতে না চাইলে ওই ভাবির হাতের প্রিয় শুঁটকি ভর্তাই খেয়ে নিও আজকেও!
-তুমি এখনো রেগেই আছ…
-নাহ তো আমার এত ফালতু টাইম নেই, রাখলাম।
সজীবের ইচ্ছে করছে মাথায় যে কটা চুল অবশিষ্ট আছে সব ছিঁড়ে ফেলতে। কোন কুক্ষণে যে ওই রোজিনা ভাবির রান্নার প্রশংসা করেছিল, তাও আবার মিলির সামনে! এখনো এর জন্য দুই বেলা কথা শুনতে হচ্ছে। পরে ভাবল এই হারে যদি চুল ছিঁড়তে হয় তো পুরো টাক হয়ে যেতে হপ্তাখানেকও লাগবে না।
অফিস শেষে বাসে বা মুড়ির টিনে ঘণ্টা দেড়েক পিষ্ট হয়ে সজীব যখন বাসায় ফিরলো তখন ঘড়ির কাঁটায় দশটা। মেজাজ খিচড়ে আছে তার। ভেবেছিল আজকে বাসায় ফেরার কোনো তাড়া নেই, চুটিয়ে আড্ডা দেবে পুরোনো বন্ধুদের সাথে। কিন্তু হল না, সবকটা বন্ধু অফিস শেষে বাধ্য শিশুর মত যার যার খোঁয়াড়ে ফিরে গেছে! আরে বাবা একটা দিন একটু দেরিতে বাড়ি ফিরলে কী এমন ক্ষতি হয়, বিয়ে হয়ে গেলেই কি আর বন্ধুবান্ধব থাকতে নেই, আড্ডাবাজি করতে নেই নাকি! যত্তসব স্বৈরতন্ত্র!
হাত মুখ ধুয়ে ল্যাপটপ খুলে বসল সজীব। মেইল চেক করল। প্রিয় বাংলা ব্লগের নতুন পোস্টগুলো পড়ল, টুকটাক মন্তব্য করল। ফেসবুকে কিছু লাইক টাইক দিল। নাহ সারাটা দিন খুব অস্থিরতায় কাটলেও এখন বেশ সজীবই লাগছে নিজেকে! এই সময় মিলি থাকলে নির্ঘাত কোনো না কোনো প্রশ্নবাণে তাকে জর্জরিত হতেই হত! একটু একা থাকতে পেরে বেশ ভালই লাগছে।
আবার ফোন। বসের!
-কি খবর? বাসায় কখন ফিরেছ?
-এইতো জান, অনেকক্ষণ! তোমাকে মিস করছি খুব!
-তাই নাকি? আহারে!
মিলির গলা নরম শোনাচ্ছে! সজীবের ধড়ে প্রাণ এল!
-তুমি কাল ছুটি নাও নি, তাই না জান?
সাথে সাথেই বুকটা ধড়াস করে উঠলো সজীবের! এই ধরনের একটা আত্মঘাতী কাজ কি করে করল সে? কি করে ভুলে গেল তার কাল ছুটি নেবার কথা, কারন তার জান মিলির কাল জন্মদিন, কাল সারাটা দিন মিলির দাসানুদাস হয়ে কাটাতে হবে তাই ছুটি নেয়া অত্যাবশ্যক!
-খুব ভাল করসো সজীব। ছুটি নিলে তোমার অফিস তো আবার দেউলিয়া হয়ে যাবে তাই না? আমি কিন্তু জানতামই যে তুমি ছুটি নিবা না!
-নাহ মিলি, মিলু…পাখি…ময়না…
-তুমি ছুটি নাও নি তো কি হইসে, জলি ভাই তো ছুটি নিসে। সে আমাকে ফোন করেছিল একটু আগে। কালকে আমি আমার ওই খ্যাত জলি ভাইয়ের সাথেই ঘুরবো, শপিং করবো, ডেটিং করবো। তুমি অফিসে বসে বসে মিটিং কইরো, কেমন?
নিজের কানকেও বিশ্বাস করতে পারছে না সজীব! এই ভূপৃষ্ঠে কি আর অন্য একটা মিলিও ছিল না?! আচ্ছা মিলি না হয় ওয়ান এন্ড অনলি হতে পারে কিন্তু ওই ভুঁড়িওয়ালা জলিল কি ওয়ান পিস নাকি! এ কারনেই জলি ভাই নামটা খুব চেনা চেনা লাগছিল তার। সাড়ে সর্বনাশ অবস্থা! ঝগড়ার সময় কম করে হলেও চল্লিশবার ওই জলিল মানে জলি ভাইয়ের কথা মিলির মুখে শুনতে হয়েছে তার। মিলি প্রায়ই আক্ষেপের সুরে বলে ওই বোকা মোটা লোকটাকে বিয়ে করলেও নাকি সে অনেক বেশি সুখে থাকতে পারতো! এতবার লোকটার কথা শুনেছে তবু সজীব মনে রাখতে পারল না। ওর মাথায় বড় ধরনের কোনো রোগ দেখা দিল না তো! বহু কষ্টে সামলে নিয়ে বলল
-নাহ মিলি, জান শুনো আমি তো কালকে ছুটি নিয়েছিই…আসলে আমি আসতেসি, মিলিটারি মানে ইয়ে খালামণির বাসায় আমি এক্ষুনি আসতেসি তোমাকে নিতে। বারোটার আগেই পৌঁছে যাব…
ঝুরি ঝুরি মিথ্যাকথা বলে কোনোভাবে ফোনটা রেখে তড়িঘড়ি করে বাসা থেকে বেরিয়ে গেল সজীব। রাস্তা প্রায় ফাঁকা হয়ে গেছে। ক্লান্তিতে আর ঘুমে চোখ দুটো ঢলে পড়ছে তার। সি এন জি বা বাসও চোখে পড়ছে না! এতরাতে মিরপুর থেকে আজিমপুর কী করে পৌঁছাবে সে, অবস্থা বেগতিক, হন্টন ছাড়া গতি নেই মনে হচ্ছে! আকাশে একরত্তি চাঁদ, মরা জোছনার আলো চারিপাশে । ফুটপাতে একটা পাগল পা ছড়িয়ে বসে আছে আর ফিকফিক হাসছে। সজীবকে দেখেই হাসছে না তো? হাসবেই তো, পাগলের তো বউ নেই, সে কি আর বুঝবে…নাহ বউ অবশ্যই আছে, তাই তো ব্যাটা এই ফুটপাতে পা ছড়িয়ে বসে আছে! হঠাৎ করে পুরো পরিবেশটাকে খুব অপার্থিব মনে হল তার! গলাটা একদম শুকিয়ে গেল, প্রচণ্ড পিপাসা পেল সজীবের। খুব মায়া হচ্ছে নিজের জন্য। ইচ্ছে হচ্ছে নিজের মাথায় নিজেই একটু হাত বুলিয়ে দেয়!
------------------------
মন্তব্য
লেখা ঝরঝরে তবে, বৌরে না জিগাইয়া এই লেখায় এর বেশী কমেন্ট দেওন-এর রিস্ক নেওন যায় না।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
গান্ধর্বী
এহহে! জলজ্যান্ত দাদারে, দিদি দিদি ডেকে মুখে ফেনা তুলেছি এতদিন
দাদা কে?
হেহেহে সেইরকম পেইনওয়ালী বউ দেখি!
এ লাইনটা পড়ে বেদম হাসি পেলো
বসের সাথে কথোপকথনের সময়েই বোঝা যাচ্ছিল ঘটনা কোন দিকে যাচ্ছে। তবুও লেখার গুনে শেষ করে ফেললাম। কিন্তু আবারও মনে হলো - শেষটায় এসে একটু তাড়াহুড়ো হয়ে গেছে!
ইয়ে, অজ্ঞানতার জন্য দু:খ প্রকাশ করে জানতে চাইছি - মিনসে শব্দটা কি এখানে অন্য কোন অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে? যেমন স্ত্রৈণ বোঝাতে?
টাইপো - ঝুরি ঝুরি->ঝুড়ি ঝুড়ি।
আপনার লেখার হাতটা ভালো - লিখতে থাকুন সমানে।
____________________________
হুম মিনসে ওই অর্থেই লিখেছি
ধন্যবাদ
গান্ধর্বী
যদিও গল্পটির পরিণতি কিছুটা আরোপিত লেগেছে, তবু সংলাপগুলো দারুণ জুতসই হয়েছে, একটুও বানানো লাগেনি! গল্পটি পড়তে পড়তে ভাবছিলাম, এই সময়ের দম্পতিরা তো ঠিক এভাবেই কথা বলে! তাছাড়া লেখাটিতে রয়েছে গতি। সব মিলিয়ে পাঠকদের হতাশ করেননি লেখিকা!
লেখিকার কাছ থেকে সামনে আরও সুন্দর সুন্দর গল্প পেতে যাচ্ছি আমরা, সন্দেহ নেই।
হুম এভাবেই কথা বলে বেশির ভাগ দম্পতি আজকাল। যদিও ভঙ্গিটা আমার নিজের কাছেই ভীষণ বিরক্তিকর লাগে, তবু একটু বাস্তবসম্মত করতে গিয়ে লিখেছি ওভাবে!
অসংখ্য
গান্ধর্বী
দিল্লিকা লাড্ডু
পস্তাতে হবেই
গান্ধর্বী
ডায়ালগগুলো বেশ মজার!
রাসিক রেজা নাহিয়েন
গান্ধর্বী
এটা আমার নিজস্ব কোন সমস্যা কিনা জানি না তবে কেন জানি এই
মার্কা বাংলায় লেখা কোন কিছু আমার ভাল লাগে না।
দুঃখিত ভাই, পারলে ক্ষমা করবেন, ভাষার কারণে গল্পটাকে সর্বাঙ্গীন সুন্দর বলতে পারলাম না।
আমার আবার এইটা বেশ ভাল লাগে!
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
আমার তেমন লাগে না, বিশেষ করে বেশ কিছুদিন ধরে বাংলা নাটক গুলো দেখতে বেশ রাগ লাগে, বিশেষ করে এই ধরনের কথোকথনের জন্যে!
হুম ভাষা নিয়ে আমিও দ্বন্দ্বে ছিলাম। আমারো তাই মনে হয়! কিন্তু ক্ষমা চাইবার কিছু নেই ভাই
গান্ধর্বী
ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের কথা বলছি তো তাই ক্ষমা চেয়ে নিলাম, সার্ব্জনীন কিছু হলে চাইতাম না।
আমারও এই "তেসি" টাইপের কথা ভালো লাগেনা। কিন্তু বাস্তবতা হলো এখনকার তরুণ/তরুণীরা এভাবেই কথা বলে। প্রথমে ভেবেছিলাম এটা বাংলা নাটকের আর কাওরান বাজারের আরোপিত ভাষা। কিন্তু পরে দেখি এখনকার পোলাপানের মুখের কথা। আমার পাশেই দুইটা প্রাইভেট ভার্সিটি - এগুলোর ছেলেমেয়েদের কথা শুনি রাস্তায় অথবা চায়ের দোকানে। আমার পছন্দ না হলেও এটাই বোধহয় এখনকার বাস্তবতা!!!
____________________________
ইউনিভার্সিটি নামের একটা সিরিয়ালে দেখেছি একই বাক্যে দেখছি,করছি এর সাথে 'তেসি' চলছে। ভার্সিটিকে "ওয়ার্সিটি" বলছে! এরা বোধহয় তামিল!
আমিও দেখেছি!
____________________________
ভাইরে ভাই, বিবাহ করলেই কি এই সব ঝাড়ি খাইতে হবে?
মাইচ্চে, আঁই বিয়া কইতান্ন, মাফও ছাই, দোয়াও ছাই
-----------------------------------------------------------
আঁখি মেলে তোমার আলো, প্রথম আমার চোখ জুড়ালো
ঐ আলোতে নয়ন রেখে মুদবো নয়ন শেষে
-----------------------------------------------------------
জ্বী জনাব, এ যুগে এমনই চলে।
- ছায়াবৃত্ত
হা হা হা
চমৎকার লিখেছেন। এক লহমা ভাইয়ার মতো আমিও বলতে চাই- বেশি কিছু লেখা রিস্কি, বউ যদি পড়ে!
-নিয়াজ
ধন্যবাদ। কিন্তু খেয়াল করেছেন নিশ্চয়ই যে 'জান' বেশ কমন সম্বোধন, শুনতে যদিও ন্যাকা ন্যাকা লাগে!
গল্প বেশ ভাল লেগেছে, তবে জান শব্দটা শুনতে কেমন যেন লাগছিল ।
এখনকার খুব প্রচলিত শব্দ জান। এখনকার ভার্সিটি পড়ুয়া ছেলেমেয়েরা মোবাইলে ভালোবাসার মানুষকে বলে "জান, তুমি কি করতেস?" কেউ কেউ আর একধাপ এগিয়ে বলে "জানু"।
____________________________
জান বলে ডাকলেই ইচ্ছা করে ঘাড়টা ধরে জানটা করে দেই কোরবান
গান্ধর্বী
এই গল্পে নতুন কিছু নাই।
সবকিছুই মনে হলো নিজের গল্প। কখনো নিজেকে সজিব মনে হলোতো পরক্ষণেই মনে হলো আমিই জলিল।
সব চেনা, সব।
*****
গান্ধর্বী, আপনাকে শুভেচ্ছা।
------------------
কামরুজ্জামান পলাশ
অনেক ধন্যবাদ!
সজীব আর জলিলানুভূতি শুভ হোক
গান্ধর্বী
কেমন যেন শেষ হইয়াও হইলোনা শেষ। তবে লেখনি চমতকার!!
ধন্যবাদ লাল পিঁপড়ে!
------------------------------------------
'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)
নতুন মন্তব্য করুন