আত্মজের জন্য

গান্ধর্বী এর ছবি
লিখেছেন গান্ধর্বী [অতিথি] (তারিখ: সোম, ২১/১০/২০১৩ - ১২:০১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

-আ্যই ঘুমুবে না? অনেক রাত হয়ে গেল...পাশের ঘর থেকে নীলজের ঘুম জড়ানো গলা শুনতে পেল সেমন্তী।

‘আসছি’ বলে এঘর ওঘর আরো কিছুক্ষণ পায়চারি করল সে। তারপর নীলজ যখন অপেক্ষা করে করে ঘুমিয়ে পড়ল তখন সেমন্তী নিঃসাড়ে ঘরে এসে ঢুকল। ইজিচেয়ারে শরীরটাকে এলিয়ে দিল। হাতে তার বাবার সেই ডায়েরিটা, যেটা আজ বারবার হাতে নিয়েও পড়ে দেখতে পারে নি, ইচ্ছে হয়নি। এখন নিশুতি রাত, হঠাৎ খুব ইচ্ছে হল ওটাকে পড়ে দেখার। তাছাড়া সে বুঝতে পারছে না এটা কেন তাকে দিয়ে দেয়া হল!
একটা মানুষ সারা জীবন যতই ঘৃনা অবহেলা পাক না কেন যখন মৃত্যুময় ছায়া তাকে ঘিরে ফেলে তখন মুখ ফিরিয়ে নেয়া কাছের মানুষগুলোই তাকে আগলে রাখে। জীবনের ওম দিয়ে উষ্ণতার আয়োজনে ব্যস্ত হয়ে ওঠে। ঠিক এমনটাই হয়েছে সেমন্তীর বাবার সাথে। পুরোটা জীবন বাবার সাথে তার দূরত্ব ঘুচল না। কিন্তু মাসখানেক আগে যেদিন তিনি হঠাৎ স্ট্রোক করে হসপিটালে ভর্তি হলেন, সেদিন সেমন্তী খবর পেয়ে ছুটে গিয়েছিল। সব সময় যাকে সুস্থ সবল দেখে এসেছে তাকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে সেমন্তী কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছিল। কনক তাকে সেদিন বুকে টেনে নিয়েছিলেন, সেমন্তীও বাধা দেয় নি। যে ভদ্রমহিলাটি তার বাবার বর্তমান স্ত্রী, যাকে সবসময় সেমন্তী ঘৃনা করে এসেছে সেদিন তাকেই সবচেয়ে কাছের বলে মনে হচ্ছিল। সেমন্তী সারাক্ষণ বাবার পাশে থেকে কাটিয়েছে। পুরোটা সময় অচেতন ছিলেন বাবা, আর কোনো কথা হয় নি মেয়ের সাথে। দুদিন পরই বাবা মারা গেলেন। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া হয়ে গেছে গত সপ্তাহে।

ছেলেবেলার টুকরো টুকরো স্মৃতি না চাইতেও মনে পড়ে যাচ্ছে কদিন ধরে। সেমন্তী শত চেষ্টা করেও তার সবচেয়ে অপ্রিয় মানুষটাকে, তার বাবাকে ভুলে থাকতে পারছে না! তার বাবা তার কাছে এতই অপ্রিয় ছিল যে তিনি যা কিছু পছন্দ করতেন, ভালবাসতেন সেসব কিছু সেমন্তী খুব সতর্কতার সাথে এড়িয়ে চলত, অবহেলায় দূরে সরিয়ে রাখত। এই যে কনক, যিনি তার বাবার দ্বিতীয় স্ত্রী আর অদ্বিতীয় প্রণয়িনী, তিনি কিন্তু সবসময়ই সেমন্তীকে কাছে টানতে চাইতেন। ওর অবহেলায়, ঘৃণায় সত্যিই কষ্ট পেতেন। কিন্তু সেমন্তীর তাতে কিছু আসে যায় না। সে কখনোই তার নিজের মায়ের কথা ভোলে নি। তার সব সময় মনে পড়েছে তার মায়ের বিষণ্ণ মুখটা। স্কুল থেকে ফিরে যেদিন মায়ের নিথর শরীরটাকে দেখেছিল সেদিন সেমন্তী ঠিক বুঝেছিল যে মন খারাপের অসুখেই তার মা এভাবে মরে গেছে! ডাক্তার কাকু অবশ্য বরাবরই বলে এসেছেন যে মায়ের নাকি হার্টের অসুখ ছিল, নিয়মিত ওষুধ না খেয়ে নিজেকে শেষ করে দিয়েছেন তার মা। সেমন্তীর মন মানে না, ওই ডাক্তার কাকুটাও তো বাবারই বন্ধু!

অনেক চেষ্টার পরও সেমন্তী পারে নি শুধু নীলজকে এড়িয়ে যেতে। বছর তিনেক আগে যখন সেমন্তী টের পেল যে সে ক্রমশ তার বাবার সবচেয়ে প্রিয় আর ব্রিলিয়ান্ট ছাত্রটার প্রতি প্রচণ্ড রকম দুর্বল হয়ে পড়েছে তখনও সে প্রাণপণে চেষ্টা করেছে নিজের অনুভূতিটাকে হিমঘরে বন্দি করে রাখতে। পারেনি, নীলজের কাছে ঠিক ধরা পড়ে গিয়েছিল সে! সেই থেকে তাদের একসাথে পথচলা। নীল এসে যেন সোনার কাঠি রুপোর কাঠি ছুঁইয়ে দিল! সব অভিমান, বায়না যা কিছু অপূর্ন ছিল সব নীলের কাছ থেকে আদায় করে নিত সেমন্তী! সেমন্তী অবাধ্য হতে চেয়েছিল, বাবাকে কিচ্ছু না জানিয়ে বিয়ে করে নিতে চেয়েছিল। কিন্তু নীল তার বাবাকে জানিয়ে সম্মতি নিয়েই বিয়ে করল সেমন্তীকে। বছর দেড়েকের সংসার তাদের। কোনো দুঃখের ছায়া নেই, কষ্টের মেঘ নেই। নাহ, কষ্ট নেই বললে ভুল হবে। ইদানিং সেমন্তীর কিছুই ভাল লাগছে না, তিতিবিরক্ত হয়ে থাকে সারাক্ষণ। কেন নীল তাকে আগের মত সময় দেয় না, কেন অফিস থেকে জলদি ফেরে না …আরো অনেক অভিযোগ তার। নীল তাকে ঠাণ্ডা মাথায় বোঝাতে চায়, কিন্তু অবুঝ মেয়ের মত জেদ করেই চলে সেমন্তী। দুদিন ধরে ঠিক মত কথাও বলছে না নীলের সাথে। জেদের বশে সবচেয়ে সুখের খবরটাও এখনো ওকে দেয় নি সেমন্তী!

বিছানায় নীলজের শরীরটা নড়েচড়ে উঠল। সেমন্তী লাইট অফ করে দিয়ে টেবিল ল্যাম্পটা জ্বেলে নিল। তারপর ডায়েরিটা খুলে বসল।
একটা পাতায় এসে চোখ আটকে গেল ওর।

‘সেমন্তীটার এত কম বয়স। ওকে কি করে বোঝাবো যে ওর মা, রেণুর প্রতি আমি জেনেশুনে কোনো অবহেলা করি নি। গুরুজনদের অমতের কারনে কনকের সাথে আমার ঘর বাঁধা হয়ে ওঠে নি। বাধ্য হয়েই রেণুকে বিয়ে করেছিলাম-এ কথা ঠিক। কনকের কথা প্রথম দিনই রেণুকে জানিয়ে দিয়েছিলাম। গোপন করার মত অসততা আমার পক্ষে করা সম্ভব ছিল না, তাই। রেণু কিন্তু আমাকে সুখী করতে না পারলেও কখনো অশান্তি দেয় নি। সেটুকু স্বস্তিই বা কজন দিতে পারে! বিনিময়ে আমি ওকে কিছুই দিতে পারিনি। ওর প্রতি কৃতজ্ঞ ছিলাম খুব, ওর মুখের দিকে তাকিয়ে সব সময় চেষ্টা করেছি কনককে ভুলে যেতে। রেণু ঠিক বুঝতে পারত যে আমি তাকে ভালবাসতে পারিনি। কিন্তু ও নিজে এত চাপা স্বভাবের ছিল যে তাকে আমি বুঝে উঠতেও পারিনি। ওর বিষণ্ণতা আমার চোখ এড়িয়ে গেছে বরাবরই! বেখেয়ালি স্বভাবও বটে আমার! নিজেকে এত ব্যস্ত রাখতাম কাজে…ছাত্রদের নিয়ে, লাইব্রেরী নিয়ে সময় কাটিয়ে দিতাম। এছাড়া কিছু করারও ছিল না! কনককে ভুলে থাকা কি এত সহজ ছিল আমার জন্য! কনকের সাথে শুধু কি সংসার করার স্বপ্ন ছিল! কথা ছিল একসাথে কবিতা পড়ার, হাত ধরে মাঝে মধ্যে হারিয়ে যাওয়ার! কনক আমার লেখালেখিরও প্রেরনা ছিল, শাশ্বত এক ফল্গুধারার মতন। ঘরে বাইরে সবখানেই ওর অভাবটা বেশ টের পেতাম। কনকের সাথে একবার দেখা হয়ে গিয়েছিল, সেই পুরোনো ক্যাম্পাসে। ওর নিজের কথা কিচ্ছু বলে নি সেদিন, শুধু বলেছিল ‘একা আছি!’ তারপর আবার হারিয়ে গেল কনক। কিছুদিন পর আমাদের ঘর আলো করে সেমন্তী এল, আমি নতুন একটা বাহানা পেলাম। থমকে থাকা জীবন একটু গতি পেল। ’

ডায়েরির পাতা দ্রুত উল্টে যাচ্ছে সেমন্তী।

‘রেণুর বুকের ব্যথাটা ঠিক ডায়াগনোসিস করেছিল সজল। ইস্কেমিক হার্ট ডিসিস। অনেক চেষ্টা করেও স্পেশালিষ্ট ডাক্তারের কাছে নেয়া যায় নি ওকে। রেণু সবসময় বলত ওটা নাকি আসলে গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা, এমনিতেই সেরে যাবে। এভাবেই একদিন ব্যথায় নীল হয়ে চলে গেল জীবন থেকে, চিরদিনের জন্য। দিনটার কথা ভোলা যায় না…সেদিন স্কুল থেকে ফিরে রেণুকে দেখার পর আমার মেয়ে, আমার ছোট্ট সেমন্তী তীব্র চোখে তাকিয়ে দেখছিল আমাকে! মেয়ের ওই চাউনিটা পুরোটা জীবন আমাকে তাড়া করে ফিরল। ’

‘জীবনে আরেকটা ভীষণ ভুল করে ফেলেছি, কনক। আমাদের বিয়ে করা উচিত হয় নি মোটেও। সেমন্তীকে একটা সুন্দর জীবন দেয়াইতো মূল কারণ ছিল, কিন্তু কই সে তো খুশি হয় নি। সে আরো দূরে সরে গেল আমার কাছ থেকে। মায়ের মুখে তোমার কথা আগেই শুনতে পেয়েছিল, তারপর থেকে কেমন ধারা হয়ে গেল। দূরে দূরে থাকে। অতটুকুন মা মরা মেয়ে, নিজেকে দিন দিন কেমন গুটিয়ে নিচ্ছে আমাদের কাছ থেকে। কনক, তুমি কেন সেমন্তীর মা হতে চাইলে? এত ভার কেন বইতে চাইলে? চেষ্টার কোনো ত্রুটি করেছ সে কথা বলার সাধ্য তোমার শত্রুরও হবে না, আর আমি তো জ্বলজ্যান্ত সাক্ষী! কিন্তু আমি নিজেই তো জন্ম দিয়েও ওর বাবা হতে পারলাম না, সেটা ভেবে দেখলে না?…সেমন্তী যে পুরোপুরিই ওর মায়ের মেয়ে, রেণুর মেয়ে, আমরা ওর কেউ নই!’

সেমন্তী নিঃশব্দে কাঁদছে আর পড়ছে…

‘আজ আমার খুব আনন্দের দিন। আমার খুব প্রিয় একটা মানুষের সাথে আমার মেয়েটার বিয়ে হয়ে গেল আজকে! নীলজ খুব ব্রাইট আর অনেস্ট, সবচেয়ে বড় কথা সে একটা স্বচ্ছ মনের ছেলে। সেমন্তী নিজ থেকে ঠিক একজনকে বেছে নেয়ায় খুব শান্তি পেলাম। কনক খুব ব্যস্ত ছিল কটা দিন। সেমন্তী যেন রাগ না করে তাই দূরে থেকে থেকে সমস্ত আয়োজন করল। এতগুলো বছর পর আমাদের দুজনের জীবনে এতটুকু আনন্দের উপলক্ষ এল শেষমেশ! মেয়েটা আর চোখের সামনে থাকবে না এটা ভাবতেও কষ্ট হচ্ছে খুব।

মেয়েটা একটু সুখে থাকুক এবার। ওর জীবনটা সহজ সরল হোক। ওকে তো কিছুই দিতে পারিনি আজ অব্দি। সব সময় একা একা থাকলো মেয়েটা। চোখের সামনে দেখেছি স্নেহভারে নুইয়ে পড়ছে কনক। নিজের কোনো ছেলেপুলে পর্যন্ত নেয় নি, যদি সেমন্তী আরো দূরে চলে যায় এই ভয়ে! কিন্তু মেয়েটা কনককে নিজের কাছেই ঘেঁষতে দেয় নি কখনো। শুধু ঘেন্না করবে বলেই যেন পণ করেছিল! ওর কখনো ইচ্ছে হল না একটু আদর পেতে, একটু সান্নিধ্য পেতে?! ’

অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ চলছে। ভোরের দিকে হিম পড়তে শুরু করেছে কদিন ধরে। ডায়েরির শেষ পাতাটুকু পড়তে গিয়ে সেমন্তী খেয়াল করল নরম আলো ঘরের মধ্যে লুটিয়ে পড়ছে। খুব অস্থির লাগছে তার। একটা মানুষকে সারাটা জীবন ভুল বুঝে এসেছে সে। নাহ, শুধু তার বাবাকে নয়, সেই সাথে কনককেও কখনো বুঝতে পারেনি সে। এতগুলো বছর পর তাকে নিয়ে তার বাবার ভাবনাগুলো আজ যখন জানতে পারল, তখন তার কিছুই করার রইল না। অনুতাপে জ্বলে যাচ্ছে সেমন্তী। কনক ইচ্ছে করেই তাহলে এই ডায়েরিটা ওকে দিয়ে দিয়েছিলেন!

এক্ষুনি একটা ফোন করা দরকার। মোবাইলটা হাতে নিয়ে কনকের নাম্বারে ডায়াল করল সেমন্তী।

-হ্যালো! কি ব্যাপার সেমন্তী? এত সকালে…’ কনকের কণ্ঠে উৎকণ্ঠা টের পেল সেমন্তী।
-ইয়ে…তোমার সাথে কিছু কথা ছিল…
-আমি তো এক্ষুনি বেরিয়ে পড়ব…
-এত সকালে কোথায় যাচ্ছ?
-ওহ, তুমি ভুলে গেছ? আজকে তো আমার ফ্লাইট, সকাল ন’টায়! আধঘণ্টার মধ্যেই বেরুতে হবে।

সেমন্তীর কান্না পেয়ে গেল। মনে পড়ল আজ কনক চলে যাচ্ছেন, আমেরিকায় তাঁর নিজের ভাইয়ের কাছে।

-আমি তাহলে এক্ষুনি চলে আসছি…দেরি হবে না…’ মরিয়া হয়ে উঠল সেমন্তী!
-কিছু হয় নি তো? সব ঠিক আছে? নীল কোথায়?
-ও ঘুমুচ্ছে, সব ঠিক আছে…আমি আসি?
-এসো, তুমি এলেই আমি বেরুবো…গাড়িতে কথা হবে।

কনকের লাগেজ গাড়িতে তোলা হল। গাড়ি ছুটছে এয়ারপোর্টের দিকে। মিনিট দশেক পেরিয়ে গেছে। একটা কথাও বেরুলো না সেমন্তীর মুখ থেকে। কনক জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন ওর দিকে। তারপর একসময় বাঁধ ভেঙ্গে গেল। কনকের বুকে মাথা রেখে কান্নায় ভিজে গেল সেমন্তী। কনকও কাঁদছেন, আর ধীরে ধীরে মেয়েটার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। ওকে ফেলে রেখে যেতে একটুও মন চাইছে না তাঁর।

এয়ারপোর্টে বিদায় নেবার সময় নিজেকে সামলে নিয়ে কনক বললেন

-সেমন্তী, নীলজ কিন্তু খুব ভাল ছেলে। আমার চাইতে তুমি তো ওকে অনেক বেশি চেন, তাই না? ওকে ভুল বুঝো না কখনো। কেমন?
সেমন্তী ছোট্ট করে হ্যাঁ বলল।

গাড়ি এখন সেমন্তীর বাসার দিকে ছুটেছে। সেমন্তী ঘরে ফিরছে। রোদের ফিতেটা তিরতির করে কাঁপছে গাড়ির জানলায়। সেদিকে একমনে তাকিয়ে আছে সেমন্তী আর ভাবছে নীলের কথা। মনে মনে পণ করল আর কক্ষনো সে অমন রুক্ষ আচরণ করবে না নীলের সাথে। জীবনটা ওদের ইচ্ছের ছকেই তো চলছে, তবে কেন অহেতুক বুকের ভেতরে কষ্ট কষ্ট ভাব ঘাপটি মেরে থাকবে? আর কত স্বেচ্ছা নির্বাসনে ভুগবে সেমন্তী! এখন তো নতুন করে পথ চলার পালা, আত্মজকে সাথে নিয়ে! হ্যাঁ সেমন্তী এখুনি গিয়ে সবচেয়ে সুখের এই খবরটা নীলকে দিয়ে দেবে। দুদিন ধরে খবরটা চেপে রেখেছে বলে নীল নিশ্চয়ই খুব কষ্ট পাবে, সেমন্তী ক্ষমা চেয়ে নিবে। যখন ও জানবে যে সেমন্তীর মধ্যে আরেকটা নীল বা সেমন্তীর কুঁড়ি জেগেছে তখন আত্মহারা হয়ে যাবে আনন্দে! দুজনে মিলে কুঁড়িটার যত্নআত্তি করবে। অনাগত সন্তানের জন্য ভালবাসার রংতুলিতে রাঙিয়ে রাখবে ছোট্ট ঘরের দেয়াল, আলো হাওয়ায় ভরিয়ে রাখবে ওদের নিজস্ব ভুবনটাকে…সে হাওয়ায় একটা ফুটফুটে প্রজাপতির মত গুটি গুটি ডানা মেলবে আত্মজ ওদের!

---------------------------------------
গান্ধর্বী


মন্তব্য

মেঘলা মানুষ এর ছবি

বিষণ্নভাবে শুরু করা গল্পের একটা সুন্দর সমাপ্তি -মনটা ভালো হয় গেল শেষটায় এসে।
চলুক

গান্ধর্বী এর ছবি

হাসি
আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

এক লহমা এর ছবি

আপনার লেখা ঝরঝরে, সেটা ভাল লাগে।
ছোট গল্পে পড়ুয়ার জন্য একটু অবকাশ দিতে পারলে গল্প আরো বেশী রেশ রেখে যেতে সক্ষম হয়। শেষ প্যারাগ্রাফটায় সেই অবকাশ (space)-টা আকাঙ্খিত ছিলো। দুটি কি তিনটি বাক্য। সেমন্তী কি করবে শুধু সেটা জানানো। কেন করবে সেটা হিসেব করবার ভার গল্পের পাঠক-এর।
পরের গল্পের সাগ্রহ অপেক্ষায় থাকলাম।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

গান্ধর্বী এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ আপনার সুচিন্তিত মতামতের জন্য। হাসি
সত্যি বলতে 'গল্প' ট্যাগ করে আমি নিজেই সন্দিহান থাকি যে বস্তুটা আদৌ গল্প হল কিনা! নিজের লেখা পড়ে তৃপ্তি পাওয়া খুব দুর্লভ অনুভূতি, তাই না? আমার কাছে অন্তত তাই-ই মনে হয় ইয়ে, মানে...

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক
ইসরাত

গান্ধর্বী এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালো, খুব ভালো।
হাততালি

--------------------
কামরুজ্জামান পলাশ

গান্ধর্বী এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার প্রতিটি গল্পে ভ্যারিয়েশন আছে। চমৎকার লিখেন আপনি।
আমি আপনার লেখার ভক্ত হয়ে যাচ্ছি খুব।
ভালো থাকুন, অবিরত।

-এস এম নিয়াজ মাওলা

গান্ধর্বী এর ছবি

অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই হাসি ভাল থাকুন আপনিও!

বন্দনা এর ছবি

আপনি এত্ত ভাল লেখেন, পড়তে পড়তে ভিন্নরকম স্বাদ পেলাম। চলুক চলুক চলুক

গান্ধর্বী এর ছবি

এ পাড়ায় এখনো নতুন, তাই একটু ভয়ে ভয়ে থাকি, কি লিখতে কি লিখে ফেলি! কিন্তু পাবলিশ হলেই মনে হয় মুই কি হনু রে! হাসি আর এমন কমেন্ট পেলে তো কথাই নেই, খুশিতে গদগদ হয়ে যাই। দেঁতো হাসি
অনেক ধন্যবাদ বন্দনা দিদি।

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক

-ছায়াবৃত্ত

গান্ধর্বী এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- হাসি

নির্ঝর অলয় এর ছবি

১। নীল না নীলজ?
২। এই বেধড়ক গরম এবং অনাবৃষ্টির যুগে "কোনো দুঃখের ছায়া নেই, কষ্টের মেঘ নেই।"- ইত্যাকার বেহুদা উপমা প্রয়োগের মানে কী?

গান্ধর্বী এর ছবি

১) দুটোই
২) মানে নেই, বাহুল্য বলা যায়!

তাপস শর্মা এর ছবি

একেবারেই গত-বাধা গল্পের প্লট। এটাকে একটু আলাদা আঙ্গিকে উপস্থাপন করলে ভিন্ন কিছু একটা দাঁড়াতে পারত। সন্দীপন চট্টোপাধ্যায় এর 'কোলাজ' উপন্যাসটা পড়ে দেখতে পারেন। তাহলে এই ধরণের গল্প নিয়ে আলাদাভাবে ভাববার রসদ হয়তো পেয়ে যেতে পারেন

এবং লিখতে থাকুন। আপনার গদ্য লেখার এলেম আছে হাসি

গান্ধর্বী এর ছবি

ধন্যবাদ আপনার মন্তব্য আর সাজেশনের জন্য হাসি

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

লেখা চলুক। পড়ছি।

গান্ধর্বী এর ছবি

হাসি
আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

তিথীডোর এর ছবি

টিপিক্যাল প্লট।
এতো ভালবাসা, এতো ভালমানুষি, এতো সরলরৈখিক সমাপ্তি অবাস্তব লাগে।

আরো লিখুন। হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

গান্ধর্বী এর ছবি

ইয়ে, মানে... আমার নিজের কাছেও কি অবাস্তব লাগে নি!
পড়ার জন্য আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

অতিথি লেখক এর ছবি

নাটকীয় গল্প হয়ে গেছে, বাস্তবতা থেকে যা ক্রমশ দূরে সরে গেছে। আমার কাছে তাই এ গল্প ভালোলাগেনি। ট্রেডিশোনাল ভালোবাসা, সস্তা ভাবুলতা, খুব বেশি ভালোমানুষি, নাটকের মতোই শেষে এয়ারপোর্ট বিদায় আর মহৎ সাজার চেষ্টা করা দেখতে কিংভা পড়তে ভালোলাগে না। এই সবি এই গল্পটার প্রাণটুকু কেঁড়ে নিয়েছে। বাস্তব জীবনকে কিংবা বাস্তবতাকে ঠিক খুঁজে পেলাম না গল্পে। আশা করি পরবর্তী লিখায় আরো যত্নবান হবেন, আর আমরা ও ভালো লেখা পাবো।

মাসুদ সজীব

গান্ধর্বী এর ছবি

হুম, আরো ভেবে লেখা যেত। আগামীতে খেয়াল রাখব। ধন্যবাদ ভাই আপনার মন্তব্যের জন্য।
ভালো থাকুন হাসি

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

নীলের উপর অভিমানের কারণ কী? এটা ছাড়া ঐ প্যারাটা কেমন যেন একটু আরোপিত মনে হচ্ছে।

আপনার গল্প লেখার হাত আসলেই অসাধারণ! আপনাকে হাচল করার দাবী জানিয়ে গেলাম।

ইয়ে, "ডিসিস" টা কি ডিজিজ হবে?

____________________________

গান্ধর্বী এর ছবি

ওই 'বিয়ের পর আর সময় দাও না' ইত্যাদি কারণ আর কি, লিখেছি তো । ইয়ে, মানে... যাই হোক আরেকটু যত্ন নিয়ে লেখা উচিত ছিল সেটা বুঝতে পারছি।
আর ডিজিজ লিখলেই ঠিক হত, খেয়াল করি নি। দেখুন তো কি কাণ্ড, ডাক্তার কিনা ডিজিজ লিখতে ভুল করে! কি লজ্জা লইজ্জা লাগে

পড়ার জন্য থ্যাঙ্কস হাসি

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

আপনি ডাক্তার নাকি? কেন যেন আমার মনে হচ্ছিল আপনি বোধহয় এখনো ছাত্র, থুড়ি, ছাত্রী!! তো লেখেন না মেডিকেল কলেজ জীবনের ঘটনা নিয়ে কোন রম্য গল্প!

____________________________

গান্ধর্বী এর ছবি

ওই হল! এ বিদ্যায় আজীবন ছাত্রই থেকে যেতে হয়!
আচ্ছা মেডিকেল লাইফ নিয়েও না হয় হাবিজাবি কিছু লিখে ফেলা যাবে হাসি

তানিম এহসান এর ছবি

আপনার লেখার হাত বেশ ভাল, প্লট এ বৈচিত্র নিয়ে আসুন এবং এখন যেমন লিখছেন মনের আনন্দে লিখে যান। শুভকামনা হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, পড়ার জন্য আর মন্তব্যের জন্যও!
ভাল থাকুন হাসি

কাজি মামুন এর ছবি

আপনার লেখা এত স্বচ্ছন্দ, বুনন এত সম্পূর্ণ যে মনেই হয় না কোন নতুন লেখকের লেখা পড়ছি। লেখার স্টাইল আমাদের খুব চেনা কথাসাহিত্যিকদের মনে করিয়ে দেয়।

ওর কখনো ইচ্ছে হল না একটু আদর পেতে, একটু সান্নিধ্য পেতে?!

শুধু টাইপো হলে উল্লেখই করতাম না, কিন্তু আমিও ধন্দে আছি! কোশ্চেন মার্ক অথবা বিস্ময় চিহ্ন- কোনটি হবে?

আর হ্যাঁ, লেখার শুরুটা যতটা ভাল লেগেছে, শেষটা অতটা না, আনপ্রিডেক্টবল পরিসমাপ্তি বেশি পছন্দ করি বলেই হয়ত। তবু গল্পটি উৎরে গেছে আপনার লেখনিগুনেই। সামনে আরও গল্প চাই।

গান্ধর্বী এর ছবি

তাইতো! প্রশ্নবোধক বা বিস্ময়চিহ্ন- যেকোনো একটিই হবে। যাচ্ছেতাই অবস্থা একেবারে!!
অনেক ধন্যবাদ শুধরে দেবার জন্য। আর সুন্দর মন্তব্যের জন্যও আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-
ভাল থাকুন।

গান্ধর্বী

অতিথি লেখক এর ছবি

সচলে প্রথম মন্তব্য আপনার লেখায়।
খুব মন দিয়ে পড়লাম-দুইবার। এমনিতে গল্প আমার খুব প্রিয়।
এই গল্পটা পড়ে খুব আরাম পেলাম।

-অনিমেষ রহমান

গান্ধর্বী এর ছবি

অসংখ্য ধন্যবাদ!
সচলের সাথেই থাকুন,
ভাল থাকুন হাসি

সাত্যকি এর ছবি

অনেক সুন্দর হয়েছে গান্ধর্বী। প্লট সাদামাটা- কেননা চরিত্রগুলো কোথাও আনএক্সপেক্টেড কোন মোচড় নেয় না, তাও খুব ভালো লেগেছে আপনার ভাষার গুণে। এই টেনশনবিহীন ঋজু ভঙ্গিটাও দারুণ ভাল্লাগে পড়তে। গল্পে সবসময় পাঠকের পিলে চমকায়ে দিতে হবে -- এমন ভাবার কোন মানেই নেই।

গান্ধর্বী এর ছবি

দেঁতো হাসি হুম, একটু নাটুকে গল্প হয়ে গেছে এবারেরটা।
তবু আপনার ভাল লেগেছে জেনে আমারও ভাল্লাগলো! আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- হাসি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।