(১)
চন্দনের বনে হাঁটছি আমরা।
‘ভ্রু পল্লবে ডাক দিলে, দেখা হবে চন্দনের বনে’।
আবৃত্তির স্বরে কেউ একটানা বলে যাচ্ছে। প্রচণ্ড হাওয়ায় উড়ছে সবকিছু, আমার পরনের আলুথালু শাড়ির আঁচল, চুল, ওর মৃদু হাসি…চন্দন গাছের সবকটা পাতা, সব উড়ছে। ওর গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছি আমি। হঠাৎ আমরা ছুটতে শুরু করলাম, চন্দনের বনটাকে পেছনে ফেলে সৈকতে গিয়ে থেমেছি। তারপর ঢেউয়ের দিকে এগোলাম আমি, একা… ধীরে ধীরে ডুবে যাচ্ছি গলা অবধি…পেছনে ভেজা বালিতে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে ও। তারপর আরেকটা ঢেউয়ের আড়ালে হারিয়ে গেলাম…।
ঘুম ভেঙে শুনতে পাই সাগর থেকে ভেসে আসা হাওয়ায় শোঁ শোঁ শব্দ। পাশ ফিরে দেখি বিছানায় ও নেই, খোলা জানলার ধারে দাঁড়িয়ে দূরের সমুদ্র দেখছে। মৃদুস্বরে ওকে ডাকলাম কাছে। আমার ফ্যাকাশে মুখ দেখে জিজ্ঞেস করল
-কী হয়েছে? স্বপ্ন?
-খুব খারাপ স্বপ্ন…
-বোকা মেয়ে, স্বপ্ন কখনো সত্যি হয়?
বলেই আমার চুলে হাত বুলোতে শুরু করল। আবার চোখের পাতা ভারি হয়ে এলো আমার।
(২)
ছুটির দিনের সকালবেলা। থমথমে হয়ে আছে ঘরের বাতাস। বাবা বাজার থেকে ফিরে টেবিলে পেপার নিয়ে বসেছে, নাশতার প্লেটটা হাতে নিয়ে নিজের ঘরে চলে গেল ভাইটা। মা গম্ভীর মুখে রান্নাঘরের দিকে গেল চায়ের কাপগুলো তুলে নিয়ে। আমার চেয়ারটা ফাঁকা পড়ে আছে।
ঘরের দেয়াল ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছি আমি…না, ঝুলে আছি! আর চুপচাপ দেখছি বিষণ্ণ মানুষগুলোকে, ছবির ফ্রেমের ভেতর থেকে। শুধু দেখতে পাই, এর বেশি কিছু করার সাধ্যি নেই এখন আর।
একটা দুঃস্বপ্ন দেখেছিলাম মাসখানেক আগে, নিজেকে নিয়ে। তারপর চলে গেলাম, স্বপ্নটাকে সত্যি করে দিয়ে। খুব ইচ্ছে করে আবার একটা স্বপ্ন দেখতে, সুন্দর কোনো স্বপ্ন, যেটা সত্যি হয়ে যাবে।
কিন্তু স্বপ্নগুলো মরে গেছে, ছবির ফ্রেমে বন্দি মানুষটার মতই।
--------------------------------
মন্তব্য
অদ্ভুত!
বলতে কি, এমন অতলস্পর্শী তীব্র অনুভূতির গল্প খুব কম পড়া হয়েছে!
.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল
একটু দ্বন্দ্বে ছিলাম ঠিকঠাক বোঝাতে পারলাম কিনা, কেমন প্রতিক্রিয়া হবে এই নিয়ে!
যাক, ভাল লেগেছে জেনে আমারও ভাল লাগছে
অশেষ ধন্যবাদ!
------------------------------------------
'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)
গল্পের আইডিয়া পছন্দ হয়েছে।
তারা দিলাম।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
ধন্যবাদ তিথীডোর, দিলাম
------------------------------------------
'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)
সুন্দর !!
তাহসিন
ধন্যবাদ
------------------------------------------
'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)
গল্পটা অদ্ভুত সুন্দর। অল্পতে শেষ হয়ে গেলো। কিন্তু রেশ শেষ হয় না। অনুরিত হতে থাকে। সেটাও যেন গল্পে বলা চরিত্রটির মতো এক লুপ-এ বন্দি।
অনেকদিন মনে থাকবে গল্পটা।
---- মনজুর এলাহী ----
লিখতে গিয়ে বেগ পেতে হয়েছে খানিকটা, গুছিয়ে লেখা বেশ কঠিন একটা ব্যাপার!
অসংখ্য ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য
শুভকামনা
------------------------------------------
'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)
------------------------------------------
'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)
ছোট্ট একটা গল্প, কিন্তু নাড়িয়ে দিয়ে গেলো।
তবে দ্বিতীয়বার পড়ার সময় বাবা-মা-ভাইয়ের পাশাপাশি "ও"র অভাব বোধ করলাম।
অনেকদিন পরে লিখলেন। ব্যস্ত নাকি? আপনাদের গল্পের অপেক্ষায় থাকি।
____________________________
'ও' মশাইকে কৌশলে আড়ালে রাখলাম আর কি, এটা ইচ্ছাকৃত!
কখনো ব্যস্ত, কখনো অখণ্ড অবসর কিন্তু মাথা কাজ করে না, এই আর কি! তাছাড়া সচলের তুখোড় গল্প লিখিয়েদের ভিড়ে মনে মনে লজ্জাও পাই মাঝেসাঝে
------------------------------------------
'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)
এত অল্প শব্দে এমন চমৎকার একটা গল্প লিখতে পারা কিভাবে সম্ভব সেটা ভাবছি রে!
লজ্জাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে আরো এমন গল্প আসুক
এই সেরেছে! আয়নাদিদি আমার সাথেও বায়না করে! ঝড়ে বক ছিল গো দিদি
------------------------------------------
'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)
‘ভ্রু পল্লবে ডাক দিলে, দেখা হবে চন্দনের বনে’। -- এটা সুনীলের লেখাতে পড়েছি। এই লাইনটা এক অদ্ভুত স্যে তাঁর মাথায় আসে, এবং মনে হয় এর পরের লাইন সে আর লিখতে পারে নি তখন।
লেখায়
facebook
কবিতার এই লাইনটা প্রথমবার পড়ার পর মাথায় গেঁথে গিয়েছে আর চন্দনের বনের দৃশ্যটা কল্পনায়!
অনেক ধন্যবাদ অণুদা
------------------------------------------
'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)
একটা স্বপ্নের আবহাওয়া আর কিছু ক্লাইমেক্সের ছোঁয়া দিয়েই শেষ করে দিলেন?
Shah Waez (শাহ্ ওয়ায়েজ।)
Facebook
..............................................................................................
কোথাও নেই ঝুমঝুম অন্ধকার
তক্ষক ডাকা নিশুতিতে
রূপকথা শুনে শিউরে উঠে না গা
স্বপ্নে আমার শরীরে কেউ ছড়ায় না শিউলি ফুল
আলোর আকাশ নুয়ে এসে ছোঁয় না কপাল
বেশি কথা কইতে গেলে ব্যাপারটা ভেস্তে যেতে পারে, সেই ভয়ে থেমে গিয়েছি ভাই
------------------------------------------
'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)
লেখা ঝরঝরে, যেমন হওয়ার কথা কিন্তু, অতিরিক্ত সংক্ষিপ্ত লাগল ।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
লিখতে গিয়ে কলম ভাঙে, সংক্ষিপ্ত তো হবেই!
------------------------------------------
'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)
এ বড় অবিচার হল হে মাশাই! সাধ না মিটিলো, আবার মিটিলোও।
-দেব প্রসাদ দেবু
------------------------------------------
'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)
"লিখেছেন : গান্ধর্বী" "ক্যাটেগরি : গল্প " এই দুইটা জিনিস দেখলে নির্দ্বিধায় পড়ে ফেলা যায়। আস্থার যায়গাটা আপনিই তৈরি করেছেন। লিখতে থাকুন, আমরা পড়ে মুগ্ধ হতে থাকি ...
সুবোধ অবোধ
আপনিও শিগগির সচল হউন
ধন্যবাদ
------------------------------------------
'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)
আপনিও শিগগির সচল হউন
ধন্যবাদ
------------------------------------------
'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)
ভালো লাগল।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
ধন্যবাদ
------------------------------------------
'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)
এক কথায় অসাধারণ ৷ অল্প বাক্যে দারণ গল্পটিতে উপস্থাপনাও নজর কাড়ে ৷ রয়ে যাবে অনেকদিন কিন্তু ৷
--------------------ঝিঝি পোঁকা(ভুল বানানেই সচলে)
অনেক ধন্যবাদ পোঁকা
------------------------------------------
'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)
বাহ! বেশ চমক দেখিয়েছ, বোন। মুগ্ধতা!
একটি টাইপো, 'আবৃতি' নয় 'আবৃত্তি'। আবৃতির অর্থ ভিন্ন।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
রোমেল ভাই, ভুলটা চোখেই পড়ে নি, খুব তাড়াহুড়ো আমার,ঠিক করে দিলাম
শুভকামনা
------------------------------------------
'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)
পরাবাস্তব।
দ্বিতীয়টায় বেশি।
হুম!
------------------------------------------
'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)
অনেক ভাল লেগেছে । চমৎকার একটি লেখা ।
মনের ঈশ্বর
ধন্যবাদ
------------------------------------------
'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)
নতুন মন্তব্য করুন