আটসকালে ওয়ার্ডে ঢুকেই বিরক্তিতে মুখ কুঁচকে গেল অমানুষের। রোগীদের তুতো স্বজনবৃন্দ গিজগিজ করছে পুরো রুম জুড়ে। প্রতিদিনের মত ষাঁড়সুলভ মিনিটখানেক চ্যাঁচানোর পর একটু ফাঁকা হল রুমটা। স্টেথোটাকে হাতে নিয়ে প্রথমেই পাঁচ নম্বর বেডের দিকে এগুলো সে। ইস্কেমিক স্ট্রোকের রোগী, একটা পা প্যারালাইজড। কয়েক ডিগ্রি বেশি বিরক্তি নিয়ে তাকিয়ে আছে রোগীর স্বামী। কিছুই জিজ্ঞেস করার প্রয়োজন হল না, ভদ্রলোক নিজেই জানালো গতকাল রাতের ওষুধটা মিস হয়েছে, সাথে জুড়ে দিল কঠিন প্রশ্ন- কেন এমন হল?
-সময়মত ওষুধ খাওয়ানো বা কখন কোনটা খেতে হবে সেটা বুঝিয়ে দেবার দায়িত্ব নার্সের।
-তাহলে ডাক্তার মশাই কী করবে?
-ডাক্তার রোগীর অবস্থা বুঝে কোন কোন ওষুধ, পরীক্ষা নিরীক্ষার প্রয়োজন সেটা বলবে।
-নার্সদের ডাকাডাকি করেও পাওয়া যায় না কেন?
-সরকারি হাসাপাতালে অনেক বেশি রোগী, কিন্তু সেই অনুপাতে ডাক্তার-নার্সদের সংখ্যা কম। তাই ডাকাডাকি করেও মাঝেমাঝে পাওয়া যায় না।
- দরকারের সময় না পাওয়া গেলে আমরা তাহলে এখানে কেন আসব?
প্রশ্নগুলো জটিল হতে থাকে আর এইসব জ্ঞানগর্ভ আলাপ কখনোই জম্পেস হয়ে ওঠে না তাই অমানুষ সেসব কথায় না গিয়ে রোগীর ফাইল খুলে ভদ্রলোককে ধৈর্য ধরে বুঝিয়ে দিল কখন কোন ওষুধ খাওয়াতে হবে। নার্স অন্য কোনো খারাপ রোগী নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও তার অপেক্ষায় থেকে ওষুধ মিস হবে না।
ভদ্রলোক ঠান্ডা হলেন। অমানুষ প্যারালাইজড মহিলাটিকে পায়ের ব্যায়াম শিখিয়ে দিয়ে পরের বেডে গেল। রোগীর মুখটা বেশ পরিচিত, দুদিন আগেই একে ছুটি দেয়া হয়েছে আর ছুটি সে নিজেই দিয়েছিল, আবার ভর্তি হল কেন ভাবতে গিয়ে তাই অমানুষের গলা শুকিয়ে গেল। কী জানি কী ভুল ওষুধ দিয়েছিল সে! একটু সাহস করে পুরো ব্যাপারটা জেনে নিল। রোগী বাড়ি গিয়ে না বুঝে ওভারডোজে ওষুধ খেয়ে ফেলেছিল, ফলে ওষুধের প্রতিক্রিয়ায় আবার অসুস্থ হয়ে ভর্তি হয়েছে। ভুলটা রোগী নিজে করেছে, হাফ ছেড়ে বাঁচল অমানুষ!
হঠাৎ পাশের বেড থেকে চিৎকার- সিস্টার, অই সিস্টার। স্যালাইন ফুরাইয়া গেসে, আরেকডা লাগাই দ্যান
অমানুষ প্রথমে পাত্তা দিল না। তারপর খেয়াল করল এই আদেশবাণী তার উদ্দেশ্যেই বর্ষিত হচ্ছে!
ঠান্ডা গলায় আদেশকর্তাকে জানাল- ভাই, আমি সিস্টার নই, ডাক্তার। একটু অপেক্ষা করেন, সিস্টার আসবে ।
লোকটা সরু চোখে তাকালো, তারপর ফাঁকিবাজি ধরে ফেলেছে এমন ভাব করে ক্রুর একটা হাসি ছুঁড়ে দিল অমানুষের দিকে।
তিতিবিরক্ত হয়ে কোনভাবে রাউন্ড শেষ করল অমানুষ।
সপ্তাখানেক পরের কথা। সেদিন অমানুষের বিকেলে ডিউটি । রোগীরা আরাম করে ঘুমুচ্ছে। তাই আয়েশ করে পেপার খুলে বসেছে সে। ঠিক তখন এক লোক এসে ঢুকল রুমে। লোকটাকে দেখে প্রায় আঁতকে উঠল অমানুষ। সেই রোগীটির ভাই, যে কি না ভুল করে ওভারডোজে ওষুধ খেয়ে আবার ভর্তি হয়েছিল। কিন্তু তাকে তো আবার ছুটি দিয়ে দেয়া হয়েছিল। আবার কি ভুল হল? অমানুষ লোকটাকে জিজ্ঞেস করতে লোকটা বলল
- এই দিক দিয়ে যাচ্ছিলাম তাই ভাবলাম আপনার সাথে একটু দেখা করে যাই
-আপনার বোন কেমন আছে?
-ভাল আছে
-ঠিক আছে, বোনকে নিয়মমত ওষুধগুলো খাওয়াবেন।
লোকটাকে ইতস্তত করতে দেখে অমানুষ বলল
-কী, আর কিছু বলবেন?
- আপা আমাদের বাড়িতে বেড়াতে আসবেন একদিন।
লোকটা বিদায় হলে খানিকক্ষণ চিন্তা করল অমানুষ- ইয়ার্কি করে গেল নাকি! এত খাতির তো কেউ করে না!
কদিন পরেই আরো বেশি অবাক হতে হল অমানুষের। সেদিন অমানুষ সার্জারি ওয়ার্ডে ডিউটি করছিল। সেখানে এসে হাজির হল মেডিসিন ওয়ার্ডের সেই প্যারালাইজড রোগী, স্বামীসহ। রোগী এখন পুরো সুস্থ। সারা হাসপাতালে খুঁজে খুঁজে এই দম্পতি অমানুষকে বার করেছে। তার কারনও চমকপ্রদ। তাদের মেয়ের বিয়ে। এই দম্পতি অমানুষকে নেমন্তন্ন করতে এসেছে। তাদের ধারনা মাসখানেক আগে স্ট্রোকের কারনে রোগীর যে প্যারালাইসিস হয়েছিল সেটা সেরে যাবার মূল কারন অমানুষের চিকিৎসা! অমানুষের মনে পড়ে গেল ছুটির সময় রোগীর স্বামী তার কাছে ঠিকানা জানতে চেয়েছিল। না জেনে অমানুষ আবার কি ভুল করে ফেলেছে, এখন হয়ত দলবল নিয়ে হামলা করবে তাই লোকটা ঠিকানা চাইছে - এইসব ভেবে সে ঠিকানা দিতে চাইছিল না। এদিকে বারবার অনুরোধ করছে লোকটা, তাই একটা ভুলভাল ঠিকানা গছিয়ে দিয়েছিল অমানুষ। কিন্তু মানুষগুলো তাকে খুঁজে বার করে ফেলল! সেদিন সে টের পেল এসব কোনো ঠাট্টা বা ভণিতা নয়।
এইসব টুকরো ঘটনাই অমানুষের অবসন্ন মনে স্বস্তি এনে দেয়। কিন্তু অঘটনের সংখ্যাই বেড়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। অমানুষের সুখস্মৃতি তাই ফিকে হয়ে যায়। শরীর জড়িয়ে থাকে গঞ্জনা, অপমান আর আঘাতে মলিন সাদা এপ্রন।
-----------------------------
মন্তব্য
আমার মনে হয় এইসব ঘটনা দিনদিন কমে আসবে। আমরা যারা রিসেন্ট ইন্টার্ন শেষ করে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করেছি বা করতে যাচ্ছি এই ধরনের সুখানুভূতিগুলো আর পাবই না। ইন্টার্নের সময় পেয়েছি। আর পাব না।
বেকার খাটি ঢাকা মেডিকেলে। এখন মানুষজন আরো বেশি অস্থির। এডমিসনে একটা রোগী রিসিভ করতে থাকলে আরেকজন গায়ের উপর এসে পড়ে যায়, তার রোগী কেন দেখছি না বলে। ওয়ার্ডে ৬০ বেডে পাঁচটা অক্সিজেন লাইন, পাঁচটা অকুপাইড। রেসপিরেটরী ফেইলরের রোগী। অক্সিজেন নেই। দোষ কিন্তু আমাদের-ই। দালাল ওয়ার্ড বয় রা কেন টাকা নেয়, দোষ আমাদের ই। অমুক পরীক্ষা কেন দেয়া হলো, একটা রোগ ধরার জন্য এত পরীক্ষা কেন? এত পরীক্ষা করেও রোগ ধরা পড়ল না কেন? কতশত প্রশ্ন।
আমি কেবল জানি, ইন্টার্ন অবস্থায় রোগীর প্রতি, মানুষের প্রতি যে দরদ থাকে, মায়া থাকে তা বোধহয় বয়সের সাথে কমতে থাকে।
পুরো সিস্টেম ভেঙ্গে পড়ছে। জানি না, এই অবিশ্বাসের শেষ কোথায়, কিভাবে হবে
------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
সিস্টেমটাকে নতুন করে সাজাতে হবে- সে অসম্ভব কিছু নয়। কিন্তু আমাদের নৈতিকতা বোধ -যেটা ক্ষয়ে গেছে সেটা ফিরে পাওয়া অসম্ভবের চেয়ে বেশি কিছু।
------------------------------------------
'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)
ডি এম সি র অ্যাডমিশন নাইট, সারারাত রোগী রিসিভ করে পরেরদিন রাউন্ড দিয়ে বাসায় ফেরা।
এক দিন দুদিন না, টানা তিন বৎসর। তাও বিনে পয়সায়।
আহা ডাক্তারি পড়া, ক্লিনিকাল সাবজেক্ট, সবই ভুল , অল্প বয়সের ভুল, যৌবনের ভুল।
শোধরাবার নয়।
সত্যিই ভুল। চান্স পেয়ে ভর্তি হবার পর বাবা মায়ের যে হাসিমুখ দেখেছিলাম সেই মুখেই এখন দুশ্চিন্তার ভাঁজ। ছাত্র অবস্থাতেই আসল পরিস্থিতি টের পাচ্ছিলাম, তাই ছোট ভাইবোনদের সবসময় নিরুৎসাহিত করেছি, করব।
------------------------------------------
'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)
এবং কোন কোন মেডিকেল কলেজে রাউন্ড শুরু হতে হতে বারোটা বেজে যায়- অর্থাৎ পুরো মর্নিংটা করতে হয়। অথচ সারা পৃথিবীর মতই আমাদের দেশেও কাগজে কলমে নিয়ম হচ্ছে, নাইট শিফটের পর মর্নিং-ডক্টরকে হ্যান্ডওভার দিয়ে ডে -অফ। এই ডে-অফের মানেটাই দেখি অনেকে বোঝে না! ডে-অফ বলতে বোঝায় হ্যান্ডওভারের পর থেকে পরবর্তী কর্মদিবস পর্যন্ত অর্থাৎ পরদিন সকাল আটটা পর্যন্ত কোন ডিউটি থাকবে না। কিন্তু কেউ শুনত না। ইন্টার্ন থাকতে জোর করে থাকতে বাধ্য করত কিছু সি,এ। ইন্টার্ন নেতাদের অধিকাংশকেই দেখতাম ওয়ার্ডে ফাঁকি দিতে। নিজেরা নানারকম সুবিধে নিত বলেই দেখতাম লগবই এর এই নিয়ম গায়ের জোরে লঙ্ঘন সত্ত্বেও ইন্টার্নদের তরফ থেকে কোন প্রতিবাদ আসত না। কারণ নেতারা এক নাগাড়ে ১৫-২০দিন ওয়ার্ডে না আসলেও মাফ হয়ে যেত।
ন্যায্য ডে-অফ, সি,এল চাইলেই খুব দক্ষ ইন্টার্নের গায়েও লাগিয়ে দেয়া হয় ফাঁকিবাজের লেবাস। আর অবৈতনিক ট্রেনিং বন্ধ করা উচিত। সরকারী মেডিকেল কলেজগুলোতে আবার ইন সার্ভিস ট্রেনিং চালু করা যেতে পারে। ৮৮ সাল পর্যন্ত তাই ছিল। অর্থাৎ নন-গেজেটেড অফিসার হিসেবে জয়েন করত সরকারী মেডিকেল কলেজ থেকে পাশ করার সাথে সাথেই, পরে বি,সি,এস দিয়ে গেজেটেড হত। সত্তরের দশকে ডাক্তারদের বি,সি,এস ছিলই না। ডাক্তারদের নিয়োগ অবশ্যই পৃথকভাবে এবং অত্যন্ত দ্রূতগতিতে হওয়া উচিত। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ২ সপ্তাহ থেকে ১ মাসের বেশি লাগানো উচিত নয়। ইন্টার্নশিপের মেয়াদ বাড়িয়ে ২ বছর করা যেতে পারে, কিন্তু সেক্ষেত্রে নিশ্চিত করতে হবে যে, এই ট্রেনিং পোস্ট-গ্র্যাজুয়েশনে গ্রহণযোগ্য হবে এবং দ্বিতীয় বর্ষে বেতন অন্তত দেড়্গুণ হবে। তাহলে অনারারি নামক নির্মম ব্যাপারটা এমনিতেই বিলুপ্তির পথে এগুবে।
আমি এখন পর্যন্ত বুঝি না, ইন্টার্ন ডাক্তারদের কেন বিনা পয়সায় কাজ করে যেতে হয়?
সমান্য ভাতা যেটা দিয়ে মান সম্মান নিয়ে বাঁচা যায় সেটার কি ব্যবস্থা করা যায় না?
গল্পে ৫ তারা।
শুভেচ্ছা
ইন্টার্ন ডাক্তারদের প্রতিমাসে ভাতা প্রদান করা হয়, সে অতি সামান্যই!
গল্পের মত শোনাতে পারে, কিন্তু একেবারে সত্যি বলেছি, নিজের চোখে দেখা।
------------------------------------------
'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)
'অমানুষের' বড্ড অভাব, 'মানুষে' ভরে গেছে চারিদিক!
কিছু খারাপ লোকের কারণে সবাইকে অপবাদ দেয়া হচ্ছে। আমি হতাশ, আমার সহকর্মীরাও হতাশ। ডাক্তার পরিচয় দিতেই শঙ্কা হয় এখন।
------------------------------------------
'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)
ডাক্তারদের "অমানুষ," "কসাই" ইত্যাদি খেতাব দেয়ার পেছনে হলুদ সাংবাদিকতা আছে, অনেক ডাক্তারের ম্যাল-প্র্যাক্সিস এবং প্রোফেশনাল ইনফেমাস কন্ডাক্ট আছে, সর্বোপরি আছে এই দারিদ্র্যপীড়িত সমাজব্যবস্থার বেশ কিছু দুষ্ট-চক্র।
এদেশে যে কোন সরকারী চাকরীতে যে বেতন দেয়, তাতে সংসার চলে না। ডাক্তারদের ঘুষ খাবার সুযোগ না থাকায় তারা বৈধ উপায়েই প্রাইভেট প্র্যাকটিস করে। কিন্তু আমাদের দেশে বিলেতের মত প্রাইভেট প্র্যাকটিসের সুস্পষ্ট নীতিমালা না থাকায়, অনেকেই সরকারী কাজে ফাঁকি দিয়ে চেম্বার ব্যবসায় নামে। আমাদের সিস্টেমের উৎস ব্রিটিশ সিস্টেমে কিন্তু বলা আছে কোনভাবেই এন,এইচ,এস এর সেবার মান এতটুকু কমিয়ে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করা যাবে না, সেটা হলে কনসালট্যান্টের কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে। দুপুর পৌনে দুটোয় এক্যুট করোনারি সিন্ড্রোম নিয়ে মাকে একটি প্রখ্যাত মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে ডিপার্টমেন্টাল হেডের খোঁজ পাই নি। তিনি অফিস-টাইমেই ধান্দায় চলে গিয়েছিলেন। উল্লেখ্য আমার পাশে দাঁড়িয়ে বি,এম,এ সেক্রেটারী হেডকে লাগাতার কল দিচ্ছিলেন- কারণ আমরা সবাই ডাক্তার। এটাও মনে আছে, ইন্টার্ন ও ট্রেইনী চিকিৎসকদের মিলিত চেষ্টায় মা যখন একটু ভালো তখন লাগাতার ৬ জন প্রোফেসর-এসিস্ট্যান্ট প্রোফেসর এলেন তেলতেলে চেহারা দেখাতে, পকেটে চাঁদের হাসি! আমি বুঝলাম এই ভণ্ড কিছু লোকের জন্য পরিশ্রমী তরুণ চিকিৎসকদের লোকে 'অমানুষ' বা 'কসাই' ডাকে।
আরেকবার এক নববর্ষের হেলথ ক্যাম্পে নেতাকে চেহারা দেখিয়ে এবং রোস্ট, ইলিশ-ভাজা, রুইয়ের কালিয়া দিয়ে ভরপেট লাঞ্চ করে সব সহকারী অধ্যাপক যে যার গাড়ি নিয়ে চেম্বারের উদ্দেশ্য ছুটলেন। তাঁদের ফলো করল এম,আররা- ওষুধসহ! হ্যাঁ! নববর্ষেও এঁরা ছুটি কাটান না। সেদিন ৪০ ডিগ্রীর তাপমাত্রায় অমানুষিক পরিশ্রম করেছিলাম আমরা, আই এর রেজিস্ট্রার, আমি, পিডিয়াট্রিক্সের আই,এম,ও। আমাদের খাবার জুটেছিল মোটা ভাত, জাটকা, একটু কলমী শাক আর ডাল। ওই খেয়ে আবার যখন আমরা ক্যাম্পে গেলাম, তখন আমরা তিন তরুণ ডাক্তার ছাড়া আর কেউ নেই। উত্তেজিত জনতা হুঙ্কার দিচ্ছিল, "ওষুধ না পাইলে, ডাক্তার-মাক্তার সব বল্টায়ালবাম!" আমি তিনবার ডায়াসে উঠে বিক্ষুব্ধ জনতাকে প্রবোধ দিলাম। একবার এলাকার একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা আমার সাথে উঠে জনতাকে বোঝালেন।
সেদিনের এই পরিস্থিতির জন্য পুরোপুরি দায়ী ছিলেন সহকারী অধ্যাপক ও কনসালট্যান্টরা যাঁরা হেলথ ক্যাম্পের উছিলায় নেতাকে চেহারা দেখাতে গিয়েছিলেন। সেদিন মাত্র একজন সহকারী অধ্যাপক স্যারকে আমি অনুরোধ করে ৫-৭ টা রোগী দেখাতে পেরেছিলাম। বাকিরা একটা রোগীও দেখেন নি! আমাদের ৩ জনের দম বেরুনোর উপক্রম হয়েছিল এবং শেষমেষ তাঁদের ফাঁকিবাজির দোষে গণধোলাইও খেতে বসেছিলাম- যেটা পর্যাপ্ত মাঠের অভিজ্ঞতার জন্য এড়াতে সক্ষম হয়েছিলাম!
আমার প্রতিবেশী এক সার্জনকে দেখতাম কখনোই উপজেলার কর্মস্থলে না গিয়ে এ ক্লিনিক ও ক্লিনিকে ছুটোছুটি করে অপারেশন করে বেড়াতেন। মাস শেষে বেতন তুলতে যেতে অবশ্য ভুলতেন না! সবই "ম্যানেজ" হয়ে যেত। আমার অভিজ্ঞতায় এরকম জুনিয়র কনসালট্যান্টের সংখ্যা কম না। বরং তরুণ চিকিৎসকদের কমই ফাঁকি দিতে দেখেছি। যেটুকু অনুপস্থিত তাঁরা থাকে- সেটুকু না করলে তাদের পোস্ট-গ্র্যাজুয়েশন মনে হয় না আদৌ সম্ভব।
অনেক কলিগকে বলতে শুনেছি, ইংল্যান্ড-আমেরিকার মত বেশি বেতন দিলেই নাকি সব ঠিক হয়ে যাবে। আমি শুনে নীরব থাকি, কোন মন্তব্য করি না। আমেরিকায় উচ্চ বেতন আছে, আবার উচ্চ শিক্ষা-ঋণও শুধতে হয় ডাক্তারদের, সেই সাথে মামলার ভয়ে ইনশ্যুরেন্স, উচ্চ ট্যাক্স, উচ্চ জীবনযাত্রার মান, উচ্চ ব্যয়। আর আমাদের মডেল ব্রিটেনে কনসালট্যানটরা উচ্চ বেতন পান ঠিকই কিন্তু সেটা আমাদের বড় স্যারদের প্র্যাকটিসের আয়ের তুলনায় তেমন কিছুই না। "Consultants can earn a basic salary of between £75,249 and £101,451 per year।" উল্লেখ্য বিলেতে মোট বেতন এই বেসিকের চেয়ে খুব বেশি হয় না যেমন শুরুর বেতনটা হয়-£22,636 (এফ ১ বা ইন্টার্নদের), এফ ২ তে বেতন হয় £28,076 ( আমাদের অনারারিদের পর্যায় আর কী!)। এছাড়া আছে ৪০ ঘণ্টার পর ওভারটাইম- "If the doctor is contracted to work more than 40 hours and/or to work outside 7am-7pm Monday to Friday, they will receive an additional supplement which will normally be between 20% and 50% of basic salary. This supplement is based on the extra hours worked above a 40 hour standard working week and the intensity of the work."
কাজেই দেখা যাচ্ছে ব্রিটেনের নিয়ম সব পর্যায়ের ডাক্তারের জন্যই সমান। কনসালট্যান্টদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতে হয় খুবই কঠিন নিয়মের মধ্যে। বিলেতের ট্যাক্সের হার খুবই বেশি, উচ্চ আয়ের ওপর ৫৩% পর্যন্ত হয়। অন্যদিকে আমাদের অনেক অধ্যাপকেরই চেম্বার থেকে আয় এত বেশী যে, এসব বিলিতি কনসালট্যান্ট-অধ্যাপককে
আক্ষরিক অর্থেই চাকরী দেবার ক্ষমতা তারা রাখেন। আমার এক্স অনেক বসেরই আয় ইংল্যান্ডের কনসালট্যান্টদের চেয়ে অনেক বেশি ছিল। কাজেই নিজেদের স্বার্থেই এরা চাইবে না, বেতন বাড়িয়ে তরুণদের সার্ভিসে উদ্বুদ্ধ করতে। কারণ সরকার যদি মাসে ২লাখ টাকা দিয়ে বলে , চেম্বারে রেফার্ড কেস ছাড়া দেখা যাবে না- তাতে তাঁরা মানবেন কেন? যে ব্যক্তি ১০ লাখ ( কম করেই বললাম) এর স্বাদ পেয়েছে- সে ২ লাখে মানবে কেন?
কাজেই তরুণ ডাক্তারদের বাঁচার দাবী কোনদিন পূরণ করবে না সিস্টেম-বিল্ডাররা। ৪০ পর্যন্ত আধপেটা খেয়ে, এফ,সি,পি,এস পাশ করে তারপর শুরু হবে বুভুক্ষুর মত অতিভোজন। এই চক্র থেকে মুক্তি দেখতে পাচ্ছি না। শুধু তরুণ, সৎ চিকিৎসকদের আমার স্যালুট ও সহমর্মীতা জানাই।
চমৎকার ভাবে বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছেন। আমার মনে হয়, টাকাওয়ালাদের জন্য এইসব বড় বড় ডাক্তাররা থাকলেও, বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা টিকে আছে এই তরুণ চিকিৎকদের ঘাড়ের উপর ভর করে।
কয়েকদিন আগে সচলেই লেখা নিয়াজ ভাইয়ের আরেকটা ডাক্তারি গল্প পড়েছিলাম, এক তরুণ ডাক্তারের বর্ণনায়। তরুণরাই চেষ্টা করেছে সঠিক পথে থেকে রোগীকে সেবা দিতে, সিস্টেম সেটা হতে দেয় না।
বাংলাদেশের (কিছু) মানুষেরও বাতিক আছে, মোটামুটি সামান্য সমস্যায়ও অনেকে বিশেষজ্ঞ দেখাতে ছোটেন, হয়ত সেটা পাড়ার এমবিবিএস ডাক্তারের পরামর্শেই চলত। কিছু লোকের কাছে বড় ডাক্তার দেখানো স্ট্যাটাসের বিষয়। আলাপ প্রসঙ্গে যাতে বলা যায়, "গ্যাস্ট্রিক হইছিল, অমুক প্রফেসররে দেখাইছি। খুব ভালো ওষুধ দিছে, এখন অনেক ভালো আছি"। সম্ভবত, ঐ ওষুধ পাড়ার এমবিবিএস ডাক্তারও দিতে পারতেন। আর, প্রয়োজেন হলে রেফারও করে দিতে পারতেন।
শুভেচ্ছা
মেঘলা মানুষ,
আমাদের সিস্টেমের আরেকটা বড় সমস্যা হল রেফারেল পদ্ধতি। অস্বীকার করতে পারি না যে আমাদের এই রেফারেল সিস্টেম ঠিকভাবে গড়ে উঠে নি বলেই রোগীদের ভোগান্তির শেষ নেই।
------------------------------------------
'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)
একপেশে বক্তব্য না দেয়ার জন্য
চেম্বার করাটাকে কিছু লোক অবৈধ মনে করে। কিন্তু সরকারি কাজে ফাঁকি না দিয়ে চেম্বার করার অধিকার অবশ্যই আছে, এটা অবৈধ কিছু নয়।
ডাক্তারদের প্রোমোশনের জন্য চাই পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন। আর হাজার হাজার টাকা সে সব পরীক্ষার ফি! সামান্য মাইনে দিয়ে পরীক্ষার ফি জুটোতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়।
করুণ বাস্তব। আর এই চক্র থেকে বের হয়া যাচ্ছে না বলেই পুরো পেশাটাই আজকে কলঙ্কিত হয়ে গেছে।
------------------------------------------
'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)
ট্রেনিং এর উছিলায় ডাক্তারদের এই মাসের পর মাস ফাও খাটানোর পদ্ধতি কে যা বের করছিল?
আর কোনো দেশে ফাও খাটায় কিনা বলতে পারেন? আমার জানা নেই!
------------------------------------------
'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
বিহঙ্গের পাখা ভেঙ্গে যায়।
------------------------------------------
'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)
বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার মতো হযবরল পৃথিবীর আর কোন দেশে আছে আমার জানা নেই। ডাক্তার এবং রোগী নানান কারণে পরস্পরের উপর শ্রদ্ধাশীল না। প্রাইভেট হাসপাতাল আর ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো একেকট ব্যবসা কেন্দ্র। সরকারী হাসপাতালে ডাক্তারের তুলনায় রোগী অনেক বেশী। বাজারে ভেজাল ওষুধের ছড়াছড়ি। ভুল চিকিৎসায় মারা যাচ্ছে রোগী। রোগীর স্বজন যদি শক্তিমান হয় সেই ডাক্তার হাসপাতালের উপর গজব নেমে আসে। আর রোগী নিরীহ হলে চুপচাপ লাশ নিয়ে বাড়ি যায়। এখানে সবারই অভিযোগের তালিকা আছে। রোগীর যেমন আছে ডাক্তারেও আছে। কিন্তু একটা গ্রহনযোগ্য সমাধান নেই কেন? এই ব্যর্থতাটা সরকারের। এদেশে সরকার এমন কোন সিস্টেম তৈরী করতে পারেনি যাতে রোগী আর ডাক্তার দুই পক্ষই পরস্পরের উপর আস্থাশীল হতে পারে। প্রাইভেট প্র্যাকটিস দোষের কিছু না, কিন্তু হাসপাতালের ডিউটি ফাঁকি দিয়ে প্রাইভেট প্র্যাকটিস অবশ্যই দোষের।
আমাদের দেশে গরীব মানুষ অসুস্থ হলে কতটা ভোগে আমার জানা নেই। তাদের একমাত্র ভরসা সরকারী হাসপাতাল। কিন্তু যারা মোটামুটি স্বচ্ছল জীবনযাপন করে, তারা সরকারী হাসপাতালে যায় না। ভালো সার্ভিসের আশায় প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি হয়। কিন্তু প্রাইভেট হাসপাতালগুলো গুনে গুনে টাকা নেবার বেলায় যতটা তৎপর রোগীর সেই সেবার বেলায় ততটা নয়। আমি চট্টগ্রামের প্রায় প্রত্যেকটা প্রাইভেট হাসপাতালে রোগী নিয়ে ভুগেছি। এত বিরক্ত হয়েছি যে, মাঝে মাঝে মনে হয় এর চেয়ে কোন তারকা হোটেলে রুম ভাড়া নিয়ে শুয়ে থাকলে অন্ততঃ রুম সার্ভিসটা ঠিকমতো পাওয়া যেত। কোন প্রাইভেট হাসপাতালে একজন ডাক্তারও রাতের বেলায় থাকে না। একদম নবীন দুয়েকজন ইন্টার্নী ডাক্তার থাকে, বাকীরা নার্স আর আয়া। একবার আমার এক রোগী মাঝরাতে মৃত্যুঝুঁকিতে পড়লে আমি ডিউটি ডাক্তারকে ঘুম থেকে ডেকে তুলি, তিনি আমাকে বললেন, পরদিন সকাল দশটার সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করুন, তখন বড় ডাক্তার আসবেন। এখন কিছু করার নাই। আমি অবাক হয়ে যাই তার কথায়, এই রোগীকে এখনই ট্রিট করা না গেলে ঘন্টা দুয়েকের মধ্যে শেষ। রোগীর আর্তনাদে পুরো হাসপাতাল জেগে উঠেছে। আমি নিজে তৎপর হয়ে প্রফেসারকে বাসা থেকে ডেকে না আনলে ভয়াবহ ঘটনা ঘটে যেতো। এখন এই ধরনের ব্যাপারগুলোর জন্য কাকে দায়ী করবো। অবশ্যই হাসপাতাল কতৃপক্ষকে। তারা পয়সা খরচ করে একজন বড় ডাক্তারকে রাখতে পারেন না সার্বক্ষণিক পরামর্শের জন্য। এমনকি হাসপাতাল কতৃপক্ষের কোন প্রতিনিধিও থাকেন না রাতের বেলা। তাই দেখা গেছে অধিকাংশ দুর্ঘটনা রাতের সেশানেই ঘটে যায়।
ডাক্তার অমানুষ না। আমার ঘনিষ্ট স্বজনদের মধ্যে ডাক্তার আছে। আমাদের পরিবারের প্রধান উপদেষ্টা একজন ডাক্তার। ডাক্তারদের সমস্যাগুলো নিয়ে আমাদের প্রায়ই আলাপ করতে হয়। কিন্তু কিছু ডাক্তার আসলেই অমানুষ। আমি সেরকম একজনের কথা বলি। তিনি বসেন চট্টগ্রামের শেভরনে। ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ ডা.আনোয়ারুল করিম। এই ভদ্রলোক ডাক্তার পেশার কলংক বিশেষ। একজন ডাক্তার যে রোগীর সাথে বিনা কারণে এত দূর্ব্যহার করতে পারে, আমি প্রত্যক্ষদর্শী না হলে বিশ্বাসই করতাম না।
অনেক বড় হয়ে গেল কমেন্ট। কিন্তু এই বিষয়ে আমার তিক্ত অভিজ্ঞতা এত বেশী যে পাতার পর পাতা লিখে শেষ করা যাবে না।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
পরস্পরের মধ্যে তিক্ততা বেড়েই চলেছে। ডাক্তার-রোগীর সম্পর্ক কখনো সুস্থ হবে কি না সে ব্যাপারে আমি যথেষ্ট সন্দিহান। আর প্রচণ্ড হতাশ।
------------------------------------------
'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)
কলঙ্ক-বিশেষ ভদ্রলোকের কৃতকর্মের পর্যাপ্ত প্রমাণ বি,এ, এন্ড ডি,সিতে দাখিল করুন এবং উপযুক্ত আইনানুগ ব্যবস্থা নিন।
এই অভিযোগ সব প্রাইভেট হাসপাতালের জন্য সত্যি না। তবে ইন্টার্নদের বাইরে খ্যাপ দেয়াটা আইনসঙ্গত নয়, কারণ তাদের টেম্পোরারি লাইসেন্স থাকে শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট মেডিকেল কলেজে কাজ করার জন্য।
------------------------------------------
'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)
পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ না থাকলে বারডেমের মত ঘটনা ঘটতেই থাকবে। আর সব সময় শিকার হবে নিরীহ মানুষ - সে চিকিৎসকই হোক বা চিকিৎসা গ্রহীতাই হোক।
পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ গড়ে উঠবে তখনই যখন একে অন্যকে "ফিল" করবে। "কসাই" এর কাছে যাচ্ছি জাতীয় মানসিকতা নিয়ে যাবে না অথবা টাকা বানানোর উপকরণ হিসেবে দেখবে না। এ জন্য আমাদের ভারসাম্যপূর্ন নীতিমালা এবং তার যথোপযুক্ত প্রয়োগ দরকার। কিন্তু এখানে আবার সেই নীতি নির্ধারকদের কথা চলে আসে, যারা দেশকে নিজেদের বাপ-দাদার সম্পত্তি মনে করেন এবং কী করে নিজেদের ব্যাংক ব্যালান্সকে ফুলিয়ে তুলবেন সেই চেষ্টায় থাকেন।
দেশের সাধারণ মানুষ কিন্তু অনেকেই এখনো ডাক্তারকে দেবতা মনে করেন!! আমার এক বান্ধবীর কাছে এক বৃদ্ধ ভদ্রলোককে আসতে দেখেছি তার গাছের পাকা পেঁপে নিয়ে। ঐ পেঁপেটা নাকি গাছের একমাত্র ফল ছিল এবং সেই বৃদ্ধ ফলটা এনে আমার বান্ধবী তার এক টুকরো মুখে না তোলা পর্যন্ত যায়নি। কৃতজ্ঞতার এরকম নমুনা অহরহ ছড়িয়ে আছে। আবার বারডেমের ঘটনার মত ঘটনাও আছে। মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ!!
____________________________
সহমত।
মুদ্রার ওপিঠটাই ক্রমশ ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে।
------------------------------------------
'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)
নতুন মন্তব্য করুন