বিদ্যাসাগরের অসম্পুর্ন কাজের তালিকা একেবারে ছোট নয়। ধরা যাক বাংলা অভিধানের কথা, সে সময় অনেক শিক্ষাব্রতী সাহিত্যিক স্ব স্ব ক্ষেত্র আলোকিত করছেন কেউই অভাব অনুভব করেননি একটি সার্থক বাংলা অভিধানের! বিদ্যাসাগর শুরু করলেন অভিধান প্রনয়নের কাজ। ‘অ’ থেকে শুরু করে ‘অদ্যাপি’ পর্যন্ত সংকলন করে আর এগুতে পারেন নি। সে হিসেবে বাংলা অভিধানের জনক বিদ্যাসাগর। তিনিই শুরু করেছিলেন বাংলা শব্দ সংগ্রহ তাও অসম্পুর্ন। শুরু করেছিলেন আত্মজীবনী লিখা কিন্তু মৃত্যু তাও শেষ করতে দেয়নি। একটি মাত্র কাজ বিদ্যাসাগর তাঁর জীবদ্দশায় করে যাননি সেটা হচ্ছে রাজনীতি।
রাজনীতি নিয়ে বিদ্যাসাগরের ধারনা কী ছিল? কংগ্রেসের দ্বিতীয় অধিবেশন হয়েছিল কোলকাতায় সে সম্পর্কে বিদ্যাসাগরের পরিষ্কার অভিমত ছিল, আগে দেশের মানুষকে না খেয়ে মরার হাত থেকে বাঁচাও তার পর তো রাজনীতি কর।
মাঝে মাঝে বিদ্যাসাগরের উপর খুব অভিমান হয় কেন তিনি রাজনীতি নামক বস্তুটা থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখলেন? কী হত ভাষা, সমাজ, শিক্ষা, জাতি এসব নিয়ে লড়াই না করে অস্ত্র হাতে নিলে? আর যাই হোক অন্তত হাতুড়ী আলোচকরা হাতুড়ী উদ্যত করতে সাহস পেত না।
নকশালীদের আর যাই থাক বুকের ভেতর জলন্ত আগ্নেয়গিরি ছিল সন্দেহ নেই তা না হলে কেন বিদ্যাসাগরের মূর্তিতে আঘাত করতে যাবেন? ফরহাদ মজহার বা সাজ্জাদ শরীফরা শুধু জাতীয়তাবাদ নিয়েই বিদ্যাসাগরকে বিধেননি ইংরেজ তাবেদারিত্বের অভিযোগও এনেছেন।
বিদ্যাসাগরের সমালোচকেরা কেউই হৃদয় দিয়ে তাঁকে অনুভব করার বা বোঝার চেষ্ঠা করেননি, করলে হয়ত বিদ্যাসাগর চর্চার ইতিহাস অন্য হত।
বিদ্যাসাগরের জাতীয়তাবাদ আলোচনার পূর্বে এটাও জানানো বোধকরি কর্ত্তব্য যে শুধুমাত্র ইংরেজ বিরোধিতাই তৎকালীন জাতীয়তাবাদের একমাত্র ধারক ও বাহক ছিল না। তবুও যদি তর্কের খাতিরে ইংরেজ বিরোধিতাকেই জাতীয়তাবাদের মানদন্ড হিসেবে বিবেচনা করেন তাদের উদ্দেশ্যে বিদ্যাসাগরের জীবন ও কর্মে ভালভাবে চোখ বুলিয়ে আসা ভিন্ন কিছু বলার থাকে না। তৎসময়ের “হিন্দু পেট্রিয়ট” ছিল ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম মুখপাত্র এবং সম্পাদক হরিশ্চন্দ্রের মৃত্যুর পর দীর্ঘসময় বিদ্যাসাগর ছিলেন পত্রিকা পরিচালনার দায়িত্বে। তিনি দায়িত্বে থাকা কালীন সময়ে একই রূপে প্রকাশিত হতে থাকে পত্রিকা, পরবর্তিতে মালিক পক্ষের সাথে নৈতিক মতবিরোধের কারনে পদত্যাগ করেন বিদ্যাসাগর।
জাতি থেকেই তো জাতীয়তা নামক বোধের উৎপত্তি আর বিদ্যাসাগরের সারা জীবন স্বজাতির উন্নয়নের জন্যই কাজ করে গেছেন। বিধবা বিবাহ, বহু বিবাহ রোধ, শিক্ষা বিস্তার, পাঠ্যপুস্তক প্রনয়ন সবই একটি জাতির জন্য করেছিলেন।
সাক্ষাৎকারের এক স্থানে সাজ্জাদ শরীফ জাতীয়তাবাদ সম্পর্কে বলেছেন
এটা (জাতীয়তাবাদ) অনেক গুলো জিনিসের উপর নির্ভর করে। যখন নাকি মানুষ নিজেকে ব্যক্তি হিসেবে আবিঃষ্কার করে তখন সে তার সংস্কৃতিকে নিদৃষ্ট একটা পরিচয় দিতে চায়
বিদ্যাসাগরের প্রথম পরিচয় যদি হয়ে থাকে “বাংলা গদ্যের জনক” তবে অবশ্যই দ্বিতীয় পরিচয় শিক্ষাব্রতী বা শিক্ষাসংষ্কারক। বেদান্ত এবং সাংখ্য এখনও অন্যতম হিন্দু দর্শন রূপে পরিচিত। সংস্কৃত কলেজে যোগদানের কয়েক বছর পরই বিদ্যাসাগর তাঁর পরিকল্পনা পেশ করেন যেখানে পরিষ্কার ভাষার বেদান্ত এবং সাংখ্য কে ভ্রান্ত দর্শন বলে উল্লেখ করে পাশাপাশি মানসম্মত ইউরোপীয় দর্শন পড়ানোর প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন। এই ভেবে আশ্চর্য লাগে যে নিজে ব্রাহ্মন পন্ডিত, সংস্কৃত কলেজের সমস্ত শিক্ষক এবং ছাত্ররা ব্রাহ্মন, সমাজ সমর্থন সব কিছুই বিরুদ্ধে যাবে তবু বিন্দু মাত্র দ্বিধাগ্রস্থ ছিলেন না বিদ্যাসাগর তাঁর স্বাধীন মত প্রকাশে। পৌনে দুশো বছর পূর্বে বিদ্যাসাগর যে বলিষ্ট মতামত রেখেছিলেন আজ বাংলাদেশ বা ভারতের কতজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের পক্ষে সম্ভব হবে এমন মতামত রাখা এবং কার্যে পরিনত করার দুঃসাহস? আমাদের কৃতকর্মাদের পক্ষে যে কাজ সম্ভব সেটা হচ্ছে আরিফুর রহমানকে জেলে পাঠানো আর সুমন্ত আসলামদের চাকুরীচ্যুত করা। তবু বিদ্যাসাগরের জাতীয়তাবোধ কথিত আলোচকদের ভাবায়! এ আসলেই পরিতৃপ্তি বা পরিতাপের ব্যাপার বৈকি।
বিদ্যাসাগর ইংরেজদের অধীনে চাকুরী করেছেন সত্য কিন্তু স্বাধীন ভাবে কাজ করতে না পারলে সে কাজ ছেড়ে আসতে বিন্দু মাত্র দ্বিধাবোধ করতেন না। এই আলোচনায় দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর বড় সহায়ক। তাঁর বিদ্যাসাগর সম্পর্কিত উক্তির কিছুটা যেখানে তিনি Patriot এবং philanthropist শব্দের পার্থক্য করেছিলেন
তিনি (বিদ্যাসাগর) যদি একশত বিশ্ব-বিদ্যালয় স্হাপন করিতেন, শত সহস্র দরিদ্র লোককে Rothschilde করে দিতেন, দশ কোটি বিধবার মৃত সাধব্য পুনর্জীবিত করিতেন, তাহা হইলে শুদ্ধ কেবল সেই কারনে তাঁহাকে আমি patriot বলিতাম না; তাহা হইলে বলিতাম তিনি মস্ত একজন philanthropist । patriot তাহাকে বলিতেছি আরেক কারণে। যখন তিনি Woodrow সাহেবের অধীনতা শৃঙ্খল ছিন্ন করিয়া নিঃসম্বল হস্তে গৃহে প্রত্যাবর্তন পূর্বক লেখনী যন্ত্র দ্বারা জীবিকা সংস্হানের পথ কাটিতে আরম্ভ করিলেন, তখন বুঝিলাম যে, হ্যা ইনি patriot যেহেতু ইনি খাওয়া পরা অপেক্ষা স্বাধীনতাকে প্রিয় বলিয়া জানেন
ফরহাদ মজহার বা সাজ্জাদ শরীফ একটি ব্যাপার নিয়ে আসতে পারতেন সেটি হচ্ছে বিধবা বিবাহ বা বহু বিবাহ রোধে আইন প্রণয়ন করার কথা। অযৌক্তিক হলেও অপ্রাসঙ্গিক হয়তো হতো না, অন্তত সংস্কৃত কলেজ থিওরী টাইপ মিথ্যাচার হত না। বঙ্কিম চন্দ্র এবং তাঁর অনুগামীরা এ সংক্রান্ত ব্যাপারে আইন প্রণয়ন প্রয়োজনীয়তা নেই বলে বিদ্যাসাগরের তীব্র সমালোচনা করেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য বিদ্যাসাগরের পুনঃ পুনঃ প্রচেষ্টার ফল ছিল ১৮৫৬ তে বিধবা পুর্নবিবাহ বিল আইনে পরিণত হয়। অন্য ভাবে বলা যায় বিদ্যাসাগর বাধ্য করেছিলেন রাজশক্তিকে আইন প্রণয়ন করতে। বিদ্যাসাগর এই ক্ষেত্রে সর্বাংশে সঠিক ছিলেন। ব্যাপারটিকে সম্যক বুঝতে হলে একটু পিছনে ফিরে তাকানো আবশ্যক। ইংরেজদের শাসনরীতির অন্যতম প্রধান লক্ষ্যই ছিল ধর্মীয় ব্যাপারে নিরপেক্ষ থাকা, সতীদাহ বা বাল্যবিবাহে যেহেতু ধর্মবোধ জড়িত ছিল তাই ইংরেজরা প্রকাশ্যে পক্ষে বা বিপক্ষে দাড়াতে স্বচ্ছন্দ বোধ করতেন না। বিদ্যাসাগর বিধবা পুর্নবিবাহের পক্ষে দুটো পুস্তক রচনা করেন, বিধবা পুর্নবিবাহ যে শাস্ত্র সিদ্ধ তা প্রমান করেন কিন্তু তিনি ধর্মশাস্ত্র রচনা করেননি বা তিনি কোন ধর্মগুরুও ছিলেন না। সুতরাং তাঁর সামনে দুটো রাস্তা খোলা ছিল,
এক বিশাল জনসমর্থন নিয়ে আন্দোলনকে সফল করা অথবা দুই ক্ষুদ্র জনসমর্থন এবং রাজশক্তির সহায়তা গ্রহন করা। তিনি দ্বিতীয় পন্হা বেছে নেন এবং সফল হন। পরবর্তিতে বিধবা বিবাহকে তিনি জীবনের সবচেয়ে বড় মহৎ কর্ম বলে উল্লেখ করেছেন।
তথাকথিত সমালোচকেরা বিদ্যাসাগরের বিরুদ্ধে জাতীয়তাবাদের অভিযোগ আনেন তাঁর জীবন ও কর্ম-বিশ্লেষণ ছাড়াই। জীবিতাবস্থায় যেমন জুটেছে নানাবিধ সমালোচনা মৃত্যুর দুশো বছর পরও এখনও খড়গ হস্ত হতে দ্বিধা বোধ করেন না সমালোচকেরা । তবু বিদ্যাসাগরের প্রতি বাঙালীর শ্রদ্ধার একমাত্র কারণ, তাঁর চরিত্র, তাঁর পৌরুষ এবং অক্ষয় মনুষত্ব। আজো যা বহমান ।
(শেষ)
প্রথম পর্ব এখানে
[আমার বিভিন্ন চিরকূট, লিখার প্রথম পাঠক ছিলেন দু জন। একজন জেবতিক রাজীব হক । তাঁদের অবিরত তাড়া ছাড়া আদৌ আমার পক্ষে আবারো লিখা সম্ভব ছিল না ]
মন্তব্য
খুব তথ্য বহুল লেখা। পড়ে অনেক কিছু জানলাম।
একটা ব্যাপারে একমত নই- ফরহাদ মজহার গং সমালোচক নন, তারা সাম্প্রদায়ীকতার রং (কালি) বিলিয়ে রুটি-রুজি করেন।
তবে তাদের এই ভন্ডামি না থাকলে এমন একটা লেখাও পেতাম না।
অফ টপিক,
অনেক জায়গায় শুনেছি; মাইকেল মধূসুদন দত্তকে দেশে ফিরিয়ে নিতে বিদ্যাসাগরের বিশেষ ভূমিকা ছিল। জানার খুব আগ্রহ, সময় পেলে একটা লেখা দিন।
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
আপনার ভাল লেগেছে জেনে আনন্দ হচ্ছে ।
মাইকেলকে ফিরিয়ে এনেছিলেন নয়, মাইকেল ফিরে এসেছিলেন সার্বিক সহযোগিতা অর্থাৎ অর্থ বাসস্থান চাকুরী সব ব্যবস্থাই করে দিয়েছিলেন বিদ্যাসাগর। পরে মাইকেল নিজের পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রি করে সে টাকা পরিশোধ করেছিলেন ।
'''''''''''
তৃপ্তি আমার অতৃপ্তি মোর
মুক্তি আমার বন্ধনডোর
'''''''''''
তৃপ্তি আমার অতৃপ্তি মোর
মুক্তি আমার বন্ধনডোর
এই প্রসঙ্গে প্রচলিত গল্পটা বলার লোভ সামলাতে পারছি না...
এক মাতাল এসে গোঁ ধরে বিদ্যাসাগরকে বলল, তুমি মাইকেল মধুসূদনকে মদ খাবার জন্য টাকা দাও, আমাকেও তোমার মদ খাবার জন্য টাকা দিতে হবে...
বিদ্যাসাগর হাতের কাজটা সারতে সারতে মুখ না তুলেই বললেন, দেব, অবশ্যই দেব, তার আগে মেঘনাদবধ কাব্যের মতো আরেকটা কাব্য লিখে নিয়ে আস না কেন?
এখন বিতর্ক নিয়ে কত অনুষ্ঠান হয়, আমার মতে বিদ্যাসাগর ছিলেন তাঁর সময়ের শ্রেষ্ঠ বিতার্কিক, কথা যে বলতেন একদম ছুরির ধারের মতো... ভেতরে ঢুকে যায়!
বিদ্যাসাগরকে নিয়ে কতটা অনুভূতি কাজ করতে পারে, সেটা পাঠকরা দেখতে পেয়েছে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের "সেই সময়" উপন্যাসে।
সুনীল তাঁকে নিয়ে এতটাই মুগ্ধ ছিলেন যে, তার আদলে বিশু ঠাকুর নামের একটা চরিত্র বানিয়েছিলেন ছোটদের জন্য। যাকে পাওয়া যাবে "জলদস্যু" এবং "আঁধার রাতের অতিথি"তে। আশ্চর্য সেই দুই উপন্যাস। সুনীলের মতো কট্টর নাস্তিকের সেই নায়ক বিশু ঠাকুর খাঁটি ব্রাক্ষণ (ক্ষ-টা ভুল আছে, আসলটা লিখতে পারছি না), কালীপূজা দেয়... দুর্দান্ত এক সাহসী তেজী চরিত্র, লাঠি হাতে একাই বাঘ মারতে ছুটে যায়...
বিদ্যাসাগরের কোনো ছুঁৎমার্গ ছিল না, বিশুঠাকুরের খানিকটা ছিল, কেরেস্তানদের হাতে সে কিছু খেতে চায় না...
--------------------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়...
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
সূনীলের বিশু ঠাকুরের কথা মনে করিয়ে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।
মাউস দিয়ে, হ্ম = হ যুক্ত ম।
বিদ্যাসাগর সম্পর্কিত অনেক গল্প প্রচলিত আছে, কিন্তু এই গল্পটি জানতাম না!
অনেক ধন্যবাদ ।
বর্ণমালা কে যদি বিদ্যাসাগরের সাথে প্রথম পরিচয় গন্য করি তবে অবশ্যই দ্বিতীয় পরিচয় সেই সময়ে ..
মনে করিয়ে দিয়ে আমাকে সেই সময়ে নিয়ে গেলেন ।
'''''''''''
তৃপ্তি আমার অতৃপ্তি মোর
মুক্তি আমার বন্ধনডোর
'''''''''''
তৃপ্তি আমার অতৃপ্তি মোর
মুক্তি আমার বন্ধনডোর
এবার বদরুদ্দীন উমরের বিদ্যাসাগর কে নিয়ে রচিত গ্রন্থের সমালোচনা লেখার অনুরোধ করছি ।
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
প্রিয়
নুরুজ্জামান মানিক
আগের পর্বে আপনার মন্তব্যের জবাবে কিছু বলব বলব করেও বলা হয়ে উঠেনি।
লজ্জিত ।
হ্যা , বদরুদ্দীন উমরের বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগ তিনি মিথ্যাচার করেছেন এবং দ্বিতীয় এবং সবচেয়ে বড় অভিযোগ বিনয় ঘোষের অন্ধ অনুকরন।
(বিদ্যাসাগর এবং বাঙালী সমাজ – বিনয় ঘোষ – প্রকাশিত জানুয়ারী ৭৩)
তিনি (বদরুদ্দীন উমরের) প্রচুর তিরষ্কৃত হয়েছেন। (মীজানূর রহমানের ত্রৈমাসিক পত্রিকা – বিদ্যাসাগর সংখ্যা - ১৯৯২) আমি যদি আবার কিছু লিখতে যাই, সেটা হবে চর্বিত চর্বনের নামান্তর এবং উমর সাহের কোনরূপ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছেন বলে মনে করতে পারছি না।
তবে বর্তমানে বিদ্যাসাগর চর্চা নিয়ে কিছু লিখার ইচ্ছে আছে।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
'''''''''''
তৃপ্তি আমার অতৃপ্তি মোর
মুক্তি আমার বন্ধনডোর
'''''''''''
তৃপ্তি আমার অতৃপ্তি মোর
মুক্তি আমার বন্ধনডোর
ভাল লাগল।
আরও লিখুন
চমৎকার হয়েছে ।
তাই বুঝি ! !
'''''''''''
তৃপ্তি আমার অতৃপ্তি মোর
মুক্তি আমার বন্ধনডোর
'''''''''''
তৃপ্তি আমার অতৃপ্তি মোর
মুক্তি আমার বন্ধনডোর
ঠিক এই লেখার উদ্দেশ্যের সাথে যায় না তবে বিষয়-সংশ্লিষ্ট একটা মন্তব্য করি। প্রায় বছর বিশেক আগে বিদ্যাসাগরের জীবন চিন্তা-ভাবনার সমালোচনা করে লেখা একটা বই পড়েছিলাম। এত আকর্ষণীয় সে লেখা ছিল যে এখনও লেখক ও বইয়ের নাম মনে আছে।
লেখক ছিলেন চিত্ত সিংহ। চট্টগ্রামের লোক কিন্তু কোলকাতায় ঠাঁই নিযেছিলেন। লেখক হিসেবে কত বিখ্যাত হতে পেরেছিলেন জানি না। তার সম্ভবত: একটা সিরিজ ছিল বইয়ের - সেই সিরিজের নাম ছিল - ব্রাত্যের দর্পনে বিগ্রহরা। তার একটা বই ছিল বিদ্যাসাগরের ওপর। বিদ্যাসাগরের তীব্র সমালোচনামূলক বই।
তবে সেসব সমালোচনায়ও বিদ্যাসাগরের প্রতি লেখকের ভালবাসা ও একধরনের অভিমান দেখতে পেয়েছি।
কিছু সমালোচনা থাকে হালে পানি পাওয়ার জন্য। নজরে আসার জন্য। ঐ যে পেঁচার সঙ্গে সূর্যের শত্রুতার মত।
কিন্তু গৌরীশ রায় একে ভ্রান্ত দর্শন বলছেন কেন- বুঝা গেল না। এটা তো আর দর্শন নয়। বিদ্যাসাগরের জীবন-কর্ম বিশ্লেষণমূলক লেখা।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন... ...সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
দুজনের প্রথমে মতামত পরে সিদ্ধান্ত, সেজন্য দর্শন বলেছি ।
আপনাকে ধন্যবাদ।
'''''''''''
তৃপ্তি আমার অতৃপ্তি মোর
মুক্তি আমার বন্ধনডোর
'''''''''''
তৃপ্তি আমার অতৃপ্তি মোর
মুক্তি আমার বন্ধনডোর
খুব ভালো লেখা। বিদ্যাসাগরের প্রতি অবিমিশ্র শ্রদ্ধা নিয়েই বাঙালি বড়ো হয়, আমার ধারণা পশ্চিমবঙ্গে যেমন তেমনি বাংলাদেশেও। সাম্প্রতিক কালে মদনমোহন তর্কালঙ্কারের প্রসঙ্গে তাঁর সমালোচনা ছাড়া আর কোনো জাতীয় সমালোচনার কাছাকাছি কিছুও কখনো শুনি নি। এই সব সমালোচকেরা তাই জনমানসে আদৌ কোনো প্রভাব ফেলতে পারবেন সে আশঙ্কা হয় নি কখনো। তবে খারাপ কথার ধার বেশি, মানুষ সহজে বিশ্বাস করে, কাজেই একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। আপনাকে সেই জন্যই আরো বেশি করে ধন্যবাদ জানাই, এমন লেখার জন্য।
কিছু বানানপ্রমাদ চোখে পড়লো (অসম্পুর্ন, শিক্ষাসংষ্কারক, ব্রাহ্মন, নিদৃষ্ট, উদাহরন, দাডা়তে, পন্হা, মনুষত্ব, ইত্যাদি), এমন চমৎকার লেখা নির্ভুল হলে আরো ভালো লাগে।
অনেক সমালোচনা হয়েছে খুব সম্ভবত সবচেয়ে বড় সমালোচক বিনয় ঘোষ।
আর বানান খুবই লজ্জিত । আগামীতে চেষ্টার ত্রুটি থাকবে না এটুকু বলতে পারি ।
এবং .. আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ
'''''''''''
তৃপ্তি আমার অতৃপ্তি মোর
মুক্তি আমার বন্ধনডোর
'''''''''''
তৃপ্তি আমার অতৃপ্তি মোর
মুক্তি আমার বন্ধনডোর
তখ্যসমৃদ্ধ ভাল লেখার জন্য বিশাল ধন্যবাদ
মন্তব্যের জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ ।
'''''''''''
তৃপ্তি আমার অতৃপ্তি মোর
মুক্তি আমার বন্ধনডোর
'''''''''''
তৃপ্তি আমার অতৃপ্তি মোর
মুক্তি আমার বন্ধনডোর
মন্তব্যের জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ ।
'''''''''''
তৃপ্তি আমার অতৃপ্তি মোর
মুক্তি আমার বন্ধনডোর
'''''''''''
তৃপ্তি আমার অতৃপ্তি মোর
মুক্তি আমার বন্ধনডোর
নিয়মিত চলুক। পড়ছি...খুব ভাল লাগছে। পারলে মাইকেলকে নিয়েও আলাদা ভাবে লিখুন...অনেক কিছু জানতে পারছি।
---------------------------------------
হতাশাবাদীর হতাশাব্যঞ্জক হতশ্বাস!
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
বিদ্যাসাগরের মূর্তিতে নিশ্চয়ই দুই একটা নেংটি ইন্দুর হেগে এসে ক্রেডিট নেয়ার চেষ্টা করবে জীবনে। বিদ্যাসাগরদের তাতে কিছুই হয় না।
দ্যাটস ট্রু , হেভী মজা পাইলাম ।
'''''''''''
তৃপ্তি আমার অতৃপ্তি মোর
মুক্তি আমার বন্ধনডোর
'''''''''''
তৃপ্তি আমার অতৃপ্তি মোর
মুক্তি আমার বন্ধনডোর
বিদ্যাসাগর শেষে কে আসবেন?
নিশ্চয় রামমেহান।
অপেক্ষায় আছি।
এই ফাঁকে বলে রাখি মন্তব্য করা হবে না আপনার লেখায়। এইসব বিষয়ে আমি নিতান্তই এক মুগ্ধ পাঠক আপনার। আলোচনার জোর আমার নাই।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
আমার ও নাই।
'''''''''''
তৃপ্তি আমার অতৃপ্তি মোর
মুক্তি আমার বন্ধনডোর
'''''''''''
তৃপ্তি আমার অতৃপ্তি মোর
মুক্তি আমার বন্ধনডোর
কেন যেনো মনে হলো লেখাটার স্বতঃস্ফূর্ত গতিটাকে থামিয়ে দিয়ে আচমকা শেষ করে দিলেন। আসলেই কি আপনি যেভাবে শুরু করেছিলেন সেইভাবে শেষ করলেন ? আমার ঠিক তা মনে হচ্ছে না।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
আপনার মন্তব্য পড়ে আমারও তাই মনে হচ্ছে ।
বিদ্যাসাগরের চরিত্র এতটাই বর্নাঢ্য যে কিছু লিখতে ভয় লাগে । সমাজের বোধকরি এমন কোন ক্ষেত্র ছিল না যেখানে তাঁর পদার্পন পরেনি। লিখার সমন্বয়ের অভাব ছিল।
তবে আপনার কথা সত্য যেভাবে শুরু করেছিলাম সেইভাবে শেষ হয়নি ।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ।
'''''''''''
তৃপ্তি আমার অতৃপ্তি মোর
মুক্তি আমার বন্ধনডোর
'''''''''''
তৃপ্তি আমার অতৃপ্তি মোর
মুক্তি আমার বন্ধনডোর
জীবিতাবস্থায় যেমন জুটেছে নানাবিধ সমালোচনা মৃত্যুর দুশো বছর পরও এখনও খড়গ হস্ত হতে দ্বিধা বোধ করেন না সমালোচকেরা । তবু বিদ্যাসাগরের প্রতি বাঙালীর শ্রদ্ধার একমাত্র কারণ, তাঁর চরিত্র, তাঁর পৌরুষ এবং অক্ষয় মনুষত্ব। আজো যা বহমান ।
ঠিক তাই। সমালোচনায় যা বলা হচ্ছে আর যিনি সমালোচনা করছেন এই দুইয়ের যাই কূটউদ্দেশ্য থাক, তাতে সাধারনের মনে সমালোচিতের অবস্থান নেমে যায় না। আর বিদ্যাসাগরের মত মনীষির বিষম সমালোচনা করা আকাশে থুথু ছোড়ার মতই।
---
আপনার তথ্যসমৃদ্ধ পর্যালোচনা ও আনুষ্ঠানিক উপস্থাপনভঙ্গী আমার কাছে বিষয়োচিত মনে হয়েছে। আরো লিখুন।
অনুপ্রাণিত হলাম ।
'''''''''''
তৃপ্তি আমার অতৃপ্তি মোর
মুক্তি আমার বন্ধনডোর
'''''''''''
তৃপ্তি আমার অতৃপ্তি মোর
মুক্তি আমার বন্ধনডোর
নতুন মন্তব্য করুন