যন্ত্রবিলাসে আচ্ছন্ন কারো কথা

গৌতম এর ছবি
লিখেছেন গৌতম (তারিখ: বিষ্যুদ, ০৩/০১/২০০৮ - ১১:৪৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ঘড়ি কখন ঠিকমতো সময় দেয়? যখন তার কলকব্জা সব ঠিক থাকে, পাশাপাশি ব্যাটারি থেকে পর্যাপ্ত শক্তি পায়। কলকব্জা সব ঠিক কিন্তু ব্যাটারি শেষ- ঘড়ি চলবে না। ব্যাটারি ঠিকই আছে কিন্তু কলকব্জার কোথাও না কোথাও নষ্ট- কোনো লাভ নেই। এ জন্যই এটা যন্ত্র। এখানে 'বেশিরভাগ', 'প্রায় পুরোটাই' ইত্যাদি শব্দগুলো নিরর্থক। শতভাগ ভালো না থাকলে চলে না বলেই এটা যন্ত্র।

মানুষও কখনো কখনো যন্ত্র। আমরা বলি বটে, যন্ত্রের অনুভূতি নেই বলেই তা যন্ত্র। মানুষের অনুভূতির কারণেই সে যন্ত্র থেকে আলাদা। অনুভূতিশূন্য মানুষকে তাই আমরা কখনো কখনো যন্ত্র বলে আখ্যা দিই। কামুর আউটসাইডারকে তো অনেকেই মানবযন্ত্র বলে।

কিন্তু কী অদ্ভুত! চূড়ান্ত আবেগিক মুহূর্তে মানুষও যে একপ্রকার যন্ত্র, তা খোদ মানুষই বুঝতে পারে না। হয়তো তার সব আছে- টাকাপয়সা, স্বাস্থ্য, ঘরবাড়ি ইত্যাদি ইত্যাদি, কিন্তু মনটা ভালো নেই। তার কি সবকিছু আগের মতো চলবে? সে কি উদভ্রান্ত হয়ে যাবে না? সুস্থ স্বাভাবিকভাবে যে কাজগুলো করতে পারার কথা, সেগুলো কি সে করতে পারবে? যন্ত্র যেমন বিগড়ে যায়, মানুষও তেমনি তখন বিগড়ে যায়। ঘড়ি দেয় উল্টাপাল্টা সময়, মানুষ করে উল্টাপাল্টা আচরণ। ফলাফল তো একই। মানুষ যন্ত্র হিসেবে আরো মারাত্মক। যার কাছ থেকে আবেগিক শক্তি পায়, সে যদি এই উল্টাপাল্টা আচরণ বুঝতে না পারে; কাছে আসছে, কথা বলছে, হাসছে, খেলছে- কিন্তু বুঝতে পারছে না যে তার সামনের এই মানুষটি উল্টাপাল্টা হয়ে যাচ্ছে আস্তে আস্তে, তাহলে ওই মানুষটির সার্কিট পুরোপুরিই বিগড়ে যায়। অথচ ঘড়ির ব্যাটারিকে অল্প একটু রিচার্জ দিয়ে দেখুন, সে চলা শুরু করবে নতুন গতিতে।

কী আশ্চর্য! কাজ বাদ দিয়ে এসব উল্টাপাল্টা চিন্তাভাবনা আসছে কেন!


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।