আজকের খবর জানাচ্ছে, ইরান সরকার শিরিন এবাদির নোবেল শান্তি পুরষ্কার হিসেবে পাওয়া পদক ও মানপত্র বাজেয়াপ্ত করেছে। ২০০৩ সালে শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার পাওয়া এই মানবাধিকার কর্মীর কাছে পুরষ্কারের অর্থের কর হিসেবে ১৩ লাখ মার্কিন ডলার দাবি করেছে ইরান সরকার। কিন্তু শিরিন এবাদি জানান, স্থানীয় আইন অনুযায়ী তিনি এই করের অর্থ ছাড় পান। শিরিন এবাদির এই পুরষ্কারকে ইরান সরকার প্রথম থেকেই ভালোভাবে নেয় নি। নানা সময় তাঁর বিরুদ্ধাচরণ করা হয়েছে যার সর্বশেষ ঘটনা এটি। খবরটি পড়ার সময় মনে হলো শিরিন এবাদি নোবেল পুরষ্কার গ্রহণের সময় নরওয়ের অসলোতে প্রদত্ত বক্তৃতাটি অনুবাদ করে রাখা আছে, যা শেয়ার করা যেতে পারে। কেউ হয়তো ইরান সরকারের এই শিরিন এবাদির বিরুদ্ধাচরণের একটি কারণ খুঁজে বের করলেও করতে পারেন এই বক্তৃতা থেকে।
......................................
সৃষ্টি ও প্রজ্ঞার ঈশ্বরের নামে,
মহামান্য রাজা ও রাণী, নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির সম্মানিত সদস্যবৃন্দ, সুধীবৃন্দ, সম্মানিত ভদ্রমহিলা এবং মহোদয়গণ,
আজকে এই গুরুত্বপূর্ণ জায়গা থেকে আমার কন্ঠস্বর সারা পৃথিবীর মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে, এটা ভেবে আমি খুব সম্মানিত বোধ করছি। নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি আমাকে এই বিরল সম্মান দিয়েছে। আমি আলফ্রেড নোবেলের মহৎ মনোভাবকে শ্রদ্ধা জানাই এবং তাঁর একনিষ্ঠ পথ অনুসরণকারীদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
মধ্যপ্রাচ্যের একটি মুসলিম দেশ ইরানের একজন নারীকে এ বছর নোবেল শান্তি পুরষ্কারে ভূষিত করা হয়েছে।
কোনো সন্দেহ নেই, শুধু ইরান নয়, আমাকে মনোনীত করার বিষয়টি ইতিহাসের পরম্পরায় নারীর অধিকার আদায়ে সংগ্রামে অংশগ্রহণকারী এ অঞ্চলের সমস্ত নারীকে অনুপ্রেরণা জোগাবে— যা ইরানের নারীদেরকে তো বটেই, বিশ্বের সব নারীকেই নিজের প্রতি আস্থা বাড়াতে সক্ষম হবে। সব দেশেই নারীরা মোট জনসংখ্যার অর্ধেক। তাদেরকে রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংষ্কৃতিক জীবনে আবদ্ধ করে রাখা ও তাদের কাজে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করার অর্থ হলো প্রতিটি সমাজকে তার সমগ্র জনসংখ্যার অর্ধেক সামর্থ্য থেকে বঞ্চিত রাখা। পুরুষতান্ত্রিকতা ও নারীর প্রতি বৈষম্য, বিশেষ করে ইসলামি রাষ্ট্রগুলোতে, চিরদিন চলতে পারে না।
নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির সম্মানিত সভ্যবৃন্দ!
এই পুরষ্কারের সম্মান ও প্রভাব ইরান ও এ অঞ্চলের মানবতাবাদী ও এ পথের দৃঢ় অভিযাত্রীদের প্রচেষ্টায় ইতিবাচক ও সুদূরপ্রসারী প্রভাব বিস্তার করবে— বিষয়টি নিশ্চয়ই আপনারা উপলব্ধি করছেন। এই সম্মানের প্রভাব নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব স্বাধীনতাপ্রেমী ও শান্তির পথে কর্মরত প্রতিটি মানুষের ওপর পড়বে।
আমাকে এই সম্মান জানানোর জন্য এবং আমার দেশের শান্তিপ্রিয় জনগণের এই গৌরবের অংশীদার করার জন্য আমি নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটিকে ধন্যবাদ জানাই।
আজকের দিনটি একইসাথে মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণা গ্রহনের ৫৫তম বার্ষিকী উদযাপনের দিন। মানবজাতির সব সদস্যের স্বাভাবিক আত্মমর্যাদা, মানুষ হিসেবে সম ও অপরিবর্তনীয় অধিকারসমূহের স্বীকৃতি প্রদানের মধ্য দিয়ে এই ঘোষণা একই সাথে স্বাধীনতা, ন্যায়বিচার এবং শান্তির রক্ষাকবচ হিসেবে স্বীকৃত। ঘোষণাটি এই প্রত্যয় যোগায় যে, মানুষ মত ও অনুভূতি প্রকাশের স্বাধীনতা ভোগ করার পাশাপাশি সব ধরনের ভয় ও দারিদ্র্য থেকে নিরাপদ থাকবে ও নিরাপদ বোধ করবে।
কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে পূর্ববতী বছরগুলোর মতো এবারও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) বর্তমান প্রতিবেদন জানাচ্ছে, মানবাধিকারের সর্বজনীন সনদের প্রবক্তার সেই আদর্শিক পৃথিবী ধারণা থেকে মানবজাতির দূরত্ব দূর্যোগের কারণে বেড়েই চলেছে। ২০০২ সালে প্রায় এক দশমিক দুই বিলিয়ন মানুষ চরম দারিদ্রের সাথে বাস করতো— যাদের দৈনিক আয় ছিলো এক ডলারেরও কম। পঞ্চাশটিরও বেশি দেশ যুদ্ধ বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় রত। প্রায় ২২ মিলিয়ন মানুষ এইডসে আক্রান্ত, যার তড়িৎ ফলাফল প্রায় ১৩ মিলিয়ন এতিম শিশু।
একই সময়ে ১১ সেপ্টেম্বরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধকে উসিলা দেখিয়ে কিছু দেশ গত দুই বছরে সর্বজনীন মূলনীতি ও মানবাধিকারের ধারাগুলোকে লঙ্ঘন করেছে। ১৮ ডিসেম্বর ২০০২-এর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ নিষ্পত্তি ৫৭/২১৯; ২০ জানুয়ারি ২০০৩-এর জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ নিষ্পত্তি ১৪৫৬ এবং ২৫ এপ্রিল ২০০৩-এর মানবাধিকার বিষয়ক জাতিসংঘ কমিশন ২০০৩/৬৪ অনুযায়ী সন্ত্রাসবাদ নির্মুলে রাষ্ট্রের গৃহীত যেকোনো পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইন বিশেষ করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও মানবতাবাদী ধারাসমূহের বিধিনিষেধ অনুসরণ করতে হবে। অপরদিকে যে সমস্ত বিধিনিষেধ মানবাধিকার ক্ষুণ্ন করে ও মৌলিক স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্ত করে এবং যে সমস্ত বিশেষ কমিটি ও বিশেষ আদালতসমূহ যারা ন্যায়বিচারকে কঠিন এমনকি অসম্ভব করে তোলে, সন্ত্রাসবাদের বিরূদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার অজুহাত দিয়ে সেগুলোকে গ্রহণযোগ্যতা দেয়ার পাশাপাশি আইনগত বৈধতাও দেয়া হয়।
স্বীকৃত প্রতিপক্ষগুলো যখন সাংস্কৃতিক আপেক্ষিকতাবাদের ভিন্নতার দোহাই দিয়ে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে এবং এর পাশাপাশি পশ্চিমা গণতন্ত্রের দেশগুলো যারা জাতিসংঘ সনদ ও মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণার প্রাথমিক উদ্যোক্তা, তারা যখন এসব নীতিমালা অমান্য করতে থাকে, তখন মানবাধিকার কর্মীদের উদ্বেগ বেড়ে যায়। এই ধরনের কাঠামোর অংশ হিসেবে সামরিক বিরোধিতার কারণে মাসের পর মাস শতশত ব্যক্তিকে গুয়ান্তানামো কারাগারে বন্দী করে রাখা হয়েছে, যারা আন্তর্জাতিক জেনেভা সনদ, মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণা এবং নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারের আন্তর্জাতিক (জাতিসংঘ) আইনানুসারে প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত।
এছাড়াও গত কয়েক বছর ধরে বিশেষ করে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সারা বিশ্বের লাখ লাখ নাগরিক যে প্রশ্নটি বারবার উত্থাপন করেছেন এবং এখনও করছেন, তা হলো— জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের কিছু নিয়ম বা সিদ্ধান্ত কেন অবশ্যই পালন করতে হয়? বিপরীতে অন্য কিছু সিদ্ধান্ত বা নিয়মে এই আবশ্যকতা পালনে চাপ নেই কেন? গত ৩৫ বছর ধরে ডজনের ওপর ইসরায়েল কর্তৃক প্যালেস্টাইনের সীমানা দখলসংক্রান্ত জাতিসংঘ নিষ্পত্তি যথাসময়ে বাস্তবায়িত হয় নি। এমনকি প্রথমবার নিরাপত্তা পরিষদের সুপারিশে এবং দ্বিতীয়বার নিরাপত্তা পরিষদের বিরোধিতার কারণে গত ১২ বছরে ইরাক ও তার জনগণকে সামরিক হত্যাযজ্ঞ, অর্থনৈতিক অবরোধ এবং শেষ পর্যন্ত সামরিক দখলদারিত্বের শিকার হতে হয়েছে। কেন?
ভদ্রমহিলা এবং মহোদয়গণ,
এবার আমি আমার দেশ, এলাকা, সংষ্কৃতি ও বিশ্বাস নিয়ে কিছু বলতে চাই।
আমি একজন ইরানি, মহান সম্রাট সাইরাসের বংশধর যিনি আজ থেকে প্রায় ২৫০০ বছর আগে ক্ষমতার শীর্ষপদে থেকে ঘোষণা দিয়েছিলেন, “...তিনি জনগণের কাছ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিবেন না, যদি না তারা সেটা চায়।” তিনি কোন মানুষকে ধর্ম ও বিশ্বাস পরিবর্তনে বল না প্রয়োগে প্রতিজ্ঞ ছিলেন এবং সবার স্বাধীনতার নিশ্চয়তা বিধান করতেন। মহান সাইরাসের সনদ মানবাধিকারের ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে সবার পাঠ করা দরকার।
আমি একজন মুসলিম। পবিত্র কোরানে ইসলামের নবীকে উল্লেখ করতে শোনা যায়: “তোমার কর্ম ও কর্মফল তোমার জন্যে, আমার কর্ম ও কর্মফল আমার জন্য।” একই ঐশীগ্রন্থ সকল নবীর অভিযাত্রাকে ন্যায়বিচারের পথে সব মানুষকে চলার আমন্ত্রণ হিসেবে দেখেছে। ইসলাম আসার আগে ইরানের সভ্যতা ও সংষ্কৃতি মানবতাবাদ, জীবনের প্রতি শ্রদ্ধা, অন্যের প্রতি বিশ্বাস ও আস্থা, পরমতসহিষ্ণুতা ও আপোষে অনুপ্রেরণায় বিশ্বাসী ছিল এবং নির্যাতন-রক্তপাত-যুদ্ধের বিরুদ্ধে ছিল। ইরানের সাহিত্য অঙ্গনের নক্ষত্ররবৃন্দ বিশেষ করে আধ্যাত্মজ্ঞানবাদী সাহিত্যিক হাফিজ, মৌলভি (পশ্চিমে যিনি রুমি নামে পরিচিত), আত্তার থেকে সাদী, সানেই, নাসের খসরু ও নেজামিরা এই মানবতাবাদী সংষ্কৃতির প্রতিনিধিত্ব করেছেন। সাদীর কবিতা থেকে এই মর্মবাণী আরও স্পষ্ট:
“আদমের পুত্রগণ একে অন্যজনের সুহৃদ
উদ্ভুত তারা এক আত্মা থেকে।”
“সময়ের আবর্তন একজনকে বিপদগ্রস্থ করলে
অন্যজন থাকতে পারে না সুস্থির।”
ঐতিহ্য ও আধুনিকতার পৌনঃপুনিক দ্বন্দ্বের বিরুদ্ধে প্রায় শতবর্ষ ধরে ইরানের জনগণ সংগ্রামরত রয়েছে। প্রাচীন ঐতিহ্য রক্ষার দোহাই দিয়ে প্রাচীনপন্থীরা এ পৃথিবীকে পূর্বসূরিদের দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে দেখার চেষ্টা করেছেন, করছেন এবং তারা বর্তমান দুনিয়ার সমস্যা ও বিপদগুলোকে প্রাচীন মূল্যবোধের মাধ্যমেই মোকাবিলার চেষ্টা করছেন। অন্যদিকে অধিকাংশ মানুষই ঐতিহাসিক ও সাংষ্কৃতিক ঐতিহ্য, ধর্ম ও বিশ্বাসের ওপর শ্রদ্ধা রেখে উন্নয়নের দিকে অগ্রসর হওয়ার পক্ষপাতী এবং তারা সভ্যতার মিছিল, উন্নয়ন ও প্রগতি থেকে পিছিয়ে থাকতে চান না। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইরানের জনগণ জনগণের সাথে সম্পর্কিত বিষয়গুলোতে অংশ নেয়াকে তাদের অধিকার হিসেবে মনে করেছে এবং নিজেদের স্বত্ত্বার ভবিষ্যৎ নিজেরাই নির্ধারণ করতে চায়।
শুধু ইরানেই নয়, অন্যান্য মুসলিম রাষ্ট্রেও এই দ্বন্দ্বের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। কিছু মুসলমান বলেন যে, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার ইসলামি শিক্ষা এবং ইসলামি সমাজের সনাতনী কাঠামোর সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এই অজুহাতে তারা অনেক স্বৈরতান্ত্রিক সরকারকে সমর্থন করেছেন এবং এখনও করে যাচ্ছেন। প্রকৃতপক্ষে নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন তাদেরকে গতানুগতিক, পুরুষতান্ত্রিক ও পিতৃতান্ত্রিক পদ্ধতি দিয়ে শাসন করা সহজ কাজ নয়।
ইসলাম ধর্মে নবীর উপর বর্ষিত প্রথম বাণীটি শুরু হয়েছে ‘পড়!’ শব্দটি দিয়ে। কোরান কলম এবং যা দিয়ে এটি লেখা হয়েছে, তার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ ধরনের বাণী ও বার্তা সচেতনতা, জ্ঞান, প্রজ্ঞা, মত ও অনুভূতি প্রকাশের স্বাধীনতা এবং সাংষ্কৃতিক বহুত্ববাদের বিরোধী হতে পারে না।
নাগরিক আইন বা সাংষ্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার চর্চার ক্ষেত্রে ইসলামি রাষ্ট্রগুলোতে নারীদের বঞ্চনা সমস্যা প্রবলতর। তবে এর কারণ ইসলাম নয়, এর আসল কারণ সমাজের পুরুষতান্ত্রিক ও পুরুষনিয়ন্ত্রিত সংষ্কৃতি। এ সংষ্কৃতি স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র সহ্য করে না। পাশাপাশি নারী-পুরুষ সম-অধিকার ও পুরুষাধিপত্যের (বাবা, স্বামী, ভাই...) বাইরে নারীস্বাধীনতার বিষয়টিও বিশ্বাস করে না, কারণ এই বিষয়গুলো সংষ্কৃতির শাসক ও অভিভাবকদের ঐতিহাসিক ও গতানুগতিক অবস্থানের পক্ষে সবসময়ই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হয়।
যারা সভ্যতার সঙ্কট বা এ এলাকায় পাতানো যুদ্ধ বা সামরিক আগ্রাসন নিয়ে কথা বলেন, নিজেদের কর্মকাণ্ড ও মতামতকে বৈধতা দেয়ার জন্য দক্ষিণ-অঞ্চলের দেশগুলোর সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক রাজনৈতিক নিষ্ক্রিয়তা বা মন্থরতার উসিলা দেন, তাদেরকে বলা উচিত যে— আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন মানলে বিশেষ করে নিজের গন্তব্য নির্ধারণে প্রতিটি জাতির নিজস্ব অধিকারকে সম্মান করলে, অন্যান্য ব্যবস্থার চেয়ে সংসদীয় গণতন্ত্রকে প্রাধান্য দিলে ও শ্রেষ্ঠ বিবেচনা করলে, আপনি শুধু ব্যক্তিগত নিরাপত্তা, আরাম, স্বার্থপরতা ও একগুয়ে স্বভাব নিয়ে থাকতে পারেন না। প্রতিটি দেশের রাজনৈতিক স্বাধীনতা ও ভৌগলিক একাত্মতা রক্ষা করে মানবাধিকার এবং গণতন্ত্রের উপভোগ করতে দক্ষিণের দেশগুলোকে নতুন মত ও পথের অভিযাত্রার দিকে ভবিষ্যৎ উন্নয়ন ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের কথা মাথায় রেখে জাতিসংঘকে এসব বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।
ইরান ও মুসলিম বিশ্বের প্রথম নারী হিসেবে আমাকে ২০০৩ সালে নোবেল শান্তি পুরষ্কার প্রদান করে পরিষদ আমাকে তো বটেই, লাখ লাখ ইরানি ও মুসলিম বিশ্বের জনগণকেও উৎসাহিত করেছে যারা প্রত্যেকে নিজেদের দেশে মানবাধিকার ও গণতন্ত্র বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক নাগরিক সমাজের সমর্থন, প্রশ্রয় ও সংহতির সাথে আমাদের চেষ্টা, উদ্যোগ ও সংগ্রামের বিষয়ে আশাবাদী হয়েছে। এই পুরষ্কার ইরানের জনগণের জন্য, ইসলামি রাষ্ট্রগুলোর জনগণের জন্য, মানবাধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সংগ্রামরত দক্ষিণ-বিশ্বের জনগণের জন্য।
ভদ্রমহিলা ও মহোদয়গণ,
বক্তব্যের শুরুতে আমি মানবাধিকারকে স্বাধীনতা, ন্যায়বিচার ও শান্তির রক্ষাকবচ হিসেবে উল্লেখ করেছিলাম। যদি মানবাধিকার আইনে প্রতিফলিত হতে বা রাষ্ট্র দ্বারা কার্যকর হতে ব্যর্থ হয়, তবে মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণার সূচনায় যা বলা আছে— মানুষের পক্ষে তখন বিকল্পের কোনো সুযোগ থাকবে না এবং ‘একনায়কতন্ত্র ও অত্যাচারের বিরূদ্ধে বিদ্রোহ হবে’ একমাত্র কাজ। মানুষ সব ধরনের আত্মমর্যাদা থেকে বিচ্ছিন্ন হলে, মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত হলে, ক্ষুধায় জ্বালায় কাতর হলে, দুর্ভিক্ষ, যুদ্ধ ও অসুস্থতায় পতিত হলে, মানুষ হিসেবে অবমাননাকর অবস্থায় পড়লে, উপায়হীন বা সর্বস্ব হলে বা রাষ্ট্রহীন হলে একজন মানুষের পক্ষে সে যা হারিয়েছে তা উদ্ধার করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না।
একুশ শতক যদি সহিংসতার চক্র এবং সন্ত্রাস ও যুদ্ধ থেকে নিজেকে মুক্ত করতে চায়, মানবসভ্যতার সবচেয়ে দুর্যোগপ্রবণ বিশ শতকের অভিজ্ঞতার পুনরাবৃত্তি দেখতে না চায়, তাহলে বর্ণ, জেন্ডার, বিশ্বাস, জাতীয়তা ও সামাজিক অবস্থান নির্বিশেষে সব মানুষের জন্য মানবাধিকারের মর্ম অনুধাবন ও তা চর্চার কোনো বিকল্প নেই।
সেই দিনের প্রত্যাশায়।
ধন্যবাদসহ।
(ছবিটি নেয়া হয়েছে ইংরেজি উইকিপিডিয়া থেকে)
মন্তব্য
সুন্দর জিনিস উপস্থাপন করেছেন উপযুক্ত সময়ে।
আমার এটাও বলতে ইচ্ছে করছে সাম্প্রতিক ইসলামী শাসনব্যবস্থা-বিতর্কেরও প্রেক্ষিতে, যে- এ-ও তো ইসলামী শাসনব্যবস্থা'র নমুনা!
গৌতমদা'।
একটা কথা: জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের 'নিষ্পত্তি' নিশ্চয়ই আপনি রেজোল্যুশনের বাংলা করতে গিয়ে বলেছেন। এতে অর্থবিভ্রান্তি আসছে ব'লে মনে করছি। আমার মতে, 'সংকল্প' শব্দটা বরং অপেক্ষাকৃত কাছাকাছি হ'তো, অথবা 'রেজোল্যুশন' রাখলেও তো কোনো সমস্যা ছিল না, না?
------------------
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
ধন্যবাদ সাইফুল ভাই।
আর ঠিক ধরেছেন, রেজুল্যুশনের বাংলা করেছি নিষ্পত্তি, কারণ আমার কেন যেন মনে হচ্ছিলো জাতিসংঘের এই রেজুল্যুশনগুলোকে বাংলায় নিষ্পত্তি বলা হয়। এর আগে সম্ভবত 'মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন'-এর একটি ডকুমেন্টে শব্দটি দেখেছিলাম। অনুবাদ করার সময়ও শব্দটি নিয়ে বেশ দ্বিধায় ছিলাম। আবার ঘাঁটাঘাটি করে দেখতে হবে। তবে অর্থের বিকৃতি ঘটলে অবশ্যই রেজুল্যুশন রাখাটাই ভালো হবে।
আবারও ধন্যবাদ সাইফুল ভাই, বিশেষ করে এই ফিডব্যাকটির জন্য।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
শিক্ষাবিষয়ক সাইট ::: ফেসবুক
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
এমজে'র ডকুমেন্টে ব্যবহার যদি হয়েও থাকে, তবু আমি কনভিন্সড না গৌতমদা'। রেজোল্যুশন বলতে যা বুঝি আইন-ছাত্র হিসেবে, সেটা নিষ্পত্তি হ'তে পারে না। আর নিষ্পত্তি বলতে আমরা সবাই যা বুঝি, সেটার জন্য আবার ক্লোজেস্ট লিগ্যাল কয়েনিং হ'লো 'ডিজলভ' কিংবা 'ডিসপোজ-অফ' (নাউন করতে গেলে আবার এখানেও কিছু লস্ট হবে, তাই ভার্ভ-রুট-টাই বললাম)।
অবশ্য, হ্যাঁ, এইরকম আরো আরো জিনিসের অনেক ট্র্যান্সলেশন-লস্ট মিসনোমার-ও অফিশিয়ালি প্র্যাকটিসড হয়ে হয়ে পুরোপুরি নর্মাল হয়ে যেতে দেখা গ্যাছে।
আচ্ছা, বাদ দেন।
লেখাটা পড়তে ভালো লেগেছে। আপনার এই নোবেল-বক্তৃতা প্রকল্পে প্লাস প্লাস প্লাস।
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
না, না, বাদ দিবো কেন? এই আলোচনাগুলো তো দরকার। আমি এমজেএফ-র সাথে যোগাযোগ করছি এ ব্যাপারে। দেখি তারা কী বলে! এর আগে তারা শিশু আইন, শ্রম আইন ইত্যাদি অনেক দলিলের বাংলা করেছিলো, সেগুলোতেও তারা বেশ কিছু পরিভাষা ব্যবহার করেছে। রেজুল্যুশনের বাংলাটা বোধহয় তখনই দেখেছিলাম।
তবে আপনার কথাগুলো বেশ যুক্তিযুক্ত। এমজেএফের সাথে যোগাযোগের পর তারা যদি যুক্তিপূর্ণ কারণ দেখাতে না পারে, তাহলে ভাবছি আপনার কথানুসারে রেজুল্যুশনই রেখে দিবো। কিংবা আপনি আরেকটি বাংলা শব্দ সাজেস্ট করেছিলেন, সেটিও রাখতে পারি, যদি কানে না ঠেকে। তবে এটা অবশ্যই ঠিক, মানুষ যেটা সহজে বুঝবে সেটা রাখাই সমীচিন।
আপনাকে আবারও ধন্যবাদ। বেশ উপকৃত হলাম। এরকম উপকার কিন্তু আরও চাই।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
শিক্ষাবিষয়ক সাইট ::: ফেসবুক
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
আপনি আসোলেই একজন অ্যাকটিভিস্ট। আমি এখন আর এক ফোঁটাও অ্যাকটিভিস্ট নাই। অকালে বুইড়া হইয়া হুদাই ইজিচেয়ার থিক্যা ফাল পাড়ার মধ্যে ওস্তাদ!
স্যাল্যুট!
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
গৌতম, বাংলা অনুবাদ দেবার জন্য ধন্যবাদ । তবে অনুবাদটি কয়েকটি জায়গায় বেশ ত্রুটিপূর্ণ । কে এই অনুবাদ করেছেন?
মূল নোবেল লেকচারটি ছিল ফার্সিতে, তার ইংরেজি অনুবাদ নোবেলপ্রাইজ সাইটেই পাওয়া গেল যার সাথে বাংলা অনুবাদটি মিলিয়ে দেখলামঃ
http://nobelprize.org/nobel_prizes/peace/laureates/2003/ebadi-lecture-e.html
সর্বশেষ খবর হিসেবে যা পড়েছি, ইরান সরকার এবাদির ব্যাংকের ভল্ট থেকে পদক ও মানপত্র সরানোর কথা অফিসিয়ালি অস্বীকার করেছে। শিরিন এবাদি গত কয়েকমাস ধরে দেশের বাইরে রয়েছেন আর তিনি এই অভিযোগ এনেছেন গত সপ্তাহে । ঠিক কি ঘটেছে তার জন্য বোধহয় আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে ।
অনুবাদটি আমার করা। তবে 'বেশ ত্রুটিপূর্ণ' কি? অনুবাদ করার পর একবার মিলিয়ে নিয়েছিলাম, তাছাড়া আরেকজনও দেখে দিয়েছিলেন। হয়তো ছোটখাটো ভুল থাকতে পারে, কিংবা ভাষা বা প্রকাশগত জড়তাও হতে পারে সেটি। আপনি 'বেশ ত্রুটিপূর্ণ' বলায় ভড়কে গেলাম।
যা হোক, আবারও চেক করছি। ধন্যবাদ।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
শিক্ষাবিষয়ক সাইট ::: ফেসবুক
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
আমি বুঝিনি অনুবাদটি আপনার করা। প্রথমেই তাহলে ঝরঝরে বাংলায় অনুবাদ করার জন্য ধন্যবাদ দিতাম । আমি ভেবেছিলাম কোন "প্রফেশনালের" কাজ, তাই প্রশংসা না করে সরাসরি 'ত্রুটি'র ব্যাপারে কথা বলা শুরু করলাম।
ধরে নিচ্ছি আপনি ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন। কিছু তুলনা করি
১) In the Koran the Prophet of Islam has been cited as saying: "Thou shalt believe in thine faith and I in my religion".
এর অনুবাদ করেছেনঃ পবিত্র কোরানে ইসলামের নবীকে উল্লেখ করতে শোনা যায়: “তোমার কর্ম ও কর্মফল তোমার জন্যে, আমার কর্ম ও কর্মফল আমার জন্য।”
এখানে faith , religion-এর অনুবাদ দেখুন। আর প্রথম অংশের অনুবাদও কিছুটা দ্ব্যর্থবোধক হয়েছে।
২) The Koran swears by the pen and what it writes.
এর অনুবাদ করেছেনঃ কোরান কলম এবং যা দিয়ে এটি লেখা হয়েছে, তার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
খেয়াল করে দেখুন, এখানে কলম এবং কলম যা লিখে তার কথা বলে হয়েছে । আর আমার বোঝা মতে এখানে "প্রতিশ্রুতিবদ্ধ" কোরানিক swear-এর সঠিক অনুবাদ/পরিভাষা নয়। আমার মতানুবাদঃ কোরান কলম এবং কলম যা লিখে তার শপথ নেয় ।
ছোটখাট কিছুর উদাহরণঃ
৩) Islam is a religion whose first sermon to the Prophet begins with the word "Recite!"
এর অনুবাদঃ ইসলাম ধর্মে নবীর উপর বর্ষিত প্রথম বাণীটি শুরু হয়েছে ‘পড়!’ শব্দটি দিয়ে।
এখানে বাক্যের প্রথমের এমফাসিস বা চাপ হারিয়ে গেছে ।
৪) The discriminatory plight of women in Islamic states, too, whether in the sphere of civil law or in the realm of social, political and cultural justice, has its roots in the patriarchal and male-dominated culture prevailing in these societies, not in Islam.
এর অনুবাদঃ নাগরিক আইন বা সাংষ্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার চর্চার ক্ষেত্রে ইসলামি রাষ্ট্রগুলোতে নারীদের বঞ্চনা সমস্যা প্রবলতর। তবে এর কারণ ইসলাম নয়, এর আসল কারণ সমাজের পুরুষতান্ত্রিক ও পুরুষনিয়ন্ত্রিত সংষ্কৃতি।
এখানে বৈষম্যমূলক (discriminatory) শব্দটি বাদ পড়েছে।
আবারো ধন্যবাদ । কিছু কিছু অংশের অনুবাদের ভাষা দুর্দান্ত হয়েছে। অনুবাদ চালিয়ে যান।
সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করার জন্য ধন্যবাদ।
ধর্মসংক্রান্ত অনুবাদগুলোর সময় একজনের সাহায্য নিয়েছিলাম যিনি এই বিষয়গুলো ভালো জানেন। তিনি কোরান শরীফ ঘেঁটে ইন্টারনেট ঘেঁটে যে সাজেস্ট দিয়েছেন, সেগুলোর ভিত্তিতে তাঁর সাথে বসে এগুলো ফাইন্যাল করেছি। এই বিষয়ে আমার জ্ঞান বা বোঝাপড়া কম, তাই এগুলোতে কিছু সাহায্য নিতে হয়েছে।
তবে ধর্মসংক্রান্ত অনুবাদগুলোতে আরও বেশ কিছু সমস্যা আছে। যেমন- আনোয়ার আল-সাদাত তাঁর নোবেল বক্তৃতায় সরাসরি জিসাস, মোজেস এবং মোহাম্মদ ব্যবহার করেছেন। আমি যখন এগুলো সরাসরি রাখতে গেলাম তখন একজন বললেন, এগুলো এভাবে রাখা ঠিক হবে না। হযরত ঈসা, হযরত যিশু, হযরত মোহাম্মদ এভাবে লিখে পাশে (সাঃ), (রঃ) এগুলো লিখতে হবে। এখন আমি আবার এগুলো ভালো জানি না। সুতরাং এসব ব্যাপারে হেল্প নিতেই হচ্ছে। তারপরও আপনি লেখার পর এই বিষয়গুলো আমি প্রয়োজনে আরেকজনকে দিয়ে চেক করিয়ে নিবো।
আর চেষ্টা করেছি সরাসরি বা আক্ষরিক অনুবাদ না করার। নিজে উপলব্ধি করে বা আমি নিজে বললে কীভাবে বলতাম, সেই বিষয়টা মাথায় রেখে অনুবাদ করেছি। এতে যেটা হয়েছে অনেক শব্দের হুবহু অর্থ না আসলেও পুরো বাক্যে তিনি কী বলতে চেয়েছেন সেটা চলে এসেছে।
যা হোক, এগুলো ফাইন্যাল করার সময় আবার চেক করা হবে। তখন আরেকটু ভালো হবে আশা করি। আর আপনার ফিডব্যাকের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
শিক্ষাবিষয়ক সাইট ::: ফেসবুক
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
ভাল লেগেছে গৌতম'দা।
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
আপনাকে অসংখ্য ব্যাক্টেরিয়া ও ভাইরাসময় শুভেচ্ছা।
মিঞাঁ, আপনার লেখা কই?
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
শিক্ষাবিষয়ক সাইট ::: ফেসবুক
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
নতুন মন্তব্য করুন