বেহায়া-খুনি এরশাদ আজকে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আজকে শফিক রেহমান রক্তলাল মশকরা করে লাল গোলাপ নিয়ে হাজির হয় মিডিয়ার দুয়ারে। অন্যদিকে জাফর-জয়নাল-দিপালী এবং তাঁদের রক্তরঞ্জিত কালো পিচপথ কোনো এক প্রশ্নহীন বোবামুখে বিস্ময়চোখে দেখে উত্তরপ্রজন্মের গোল্ডফিশ স্মৃতি। ব্যবসা যখন কোমর দুলিয়ে নাচে, মুষ্ঠিবদ্ধ হাতের বাতাসে-ঘুষি কি জমিন থেকে হারিয়ে যায়? বারবার এড়িয়ে গেলেও উত্তর কিন্তু একসময় দিতেই হবে, বর্তমান প্রজন্ম! রক্তঋণ শোধ না করে মুক্তি মিলবে না- তা সে যতোই সাধন-ভজন কর!
ক. আচ্ছা, আমরা কজন জানি এই ১৪ ফেব্রুয়ারি দিনটির কথা? যারা জানি, তারা আদৌ জানি কি? না হয় জানতাম, একসময়। এখন কি ভুলে যাই নি? আমরা কয়জন তরুণ-যুবাকে জানিয়েছি- শফিক রেহমানরা রক্তলালগোলাপ নিয়ে ব্যবসা করে? আমরা কয়জনকে বলেছি- এই দুনিয়ায় একসময় একজন জাফর ছিল? একজন জয়নাল মিছিল দেখে এগিয়ে গিয়েছিল? একজন দিপালীর কণ্ঠ শুনে চমকে উঠেছিল লোহার আয়ূধ?
খ. না হয় আমরা অপরাধী। শফিক রেহমানদের প্রোপান্ডার প্রত্যুত্তরে আমরা কিছুই বলি নি আপনাকে। কিন্তু, হে তরুণ! আপনি নিশ্চয়ই এতক্ষণে বুঝতে পারছেন উপরে কী বলতে চেয়েছি! ধৃষ্ঠতা মার্জনা করলে আবার একটু বলি? নির্ভয়ে বলি? - ধন্যবাদ।
গ. তখন মজিদ খান নামে এক ব্যক্তি ছিল যে কিনা স্বৈরাচারী এরশাদের শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে কাজ করতো (আহা! কে বলেছে এই বাক্য পড়ে হীরক রাজার শিক্ষামন্ত্রীর কথা মনে করতে!)। আমরা জানি না, ওই শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষার কী জানতো! কিন্তু দিয়ে দিল বিশাল এক প্রতিবেদন- এই দেশের শিক্ষা কীভাবে চলবে সে বিষয়ে। বললো, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর বাড়বে সরকারি কর্তৃত্ব। বললো- আরবি শিখতে হবে প্রথম শ্রেণী থেকে। বললো- টাকা নাই তো পড়ার যোগ্যতাও নাই! জানেন তো হে তরুণ- আপনি, আমি, আমরা যারা সাধারণ ঘরের মানুষ, তাদের জন্য শিক্ষাকে দুর্বিষহ করে তুলতে এই প্রতিবেদনের সুপারিশগুলোর তুলনা ছিল না!
সেদিন জাফর-জয়নাল-দিপালীদের দিয়ে ইতিহাস শুরু হয়েছিল। কিন্তু ইতিহাস সহসা শেষ হয়ে যায় নি। একে একে আসতে থাকে সেলিম-দেলোয়ার-কাঞ্চনদের নাম। আসতে থাকে তিতাস-তাজুল-ময়েজউদ্দিন। কিংবা বসুনিয়া-শাহজাহান। এবং এরই ধারাবাহিকতায় একসময় নূর হোসেন। আমরা কীভাবে এদেরকে ভুলে ভালোবাসা নিয়ে ন্যাকামি করতে পারি?
ঘ. মিছিলটি শুরু হয়েছিল কলাভবন থেকে। গন্তব্য তো সেখানেই- শিক্ষাভবন। মজিদ খানের শিক্ষানীতি বাতিল না করলে যে নিজেদের অস্তিত্ব লুটিয়ে পড়ে! অস্তিত্ব রক্ষায় প্রকম্পিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা শহর, বাংলাদেশ। স্বৈরাচার এরশাদের গুলিবাহিনী ট্রাক তুলে দেয় মিছিলের ওপর। গুলি-টিয়ার শেল। গ্রেফতার। হাজার হাজার। ছাত্র। ছাত্রী। জনতা। কৃষক। শ্রমিক। চাকুরে। শিক্ষক। মানুষ। প্রতিবাদে পরদিন হরতাল। আবারো গুলিবাহিনীর সক্রিয়তা। শহীদ হন জগন্নাথ কলেজের শিক্ষার্থী আইয়ুব-কাঞ্চন। অনেকে বলেন, এই দুই দিনে শহীদ হন ৫০ জনেরও বেশি। শোনা যায়, চট্টগ্রামে শহীদ হয়েছিলেন ৪-৫ জন। তাঁদের লাশ নেই। এরশাদের গুলিবাহিনী গুম করে দিয়েছিল। এই উত্তাল কদিনে ক্যাম্পাসে রাজত্ব করতে চেয়েছিল বুটের শব্দ। কার্জন হল-কলাভবন-সায়েন্স অ্যানেক্স-মহসিন হল-জগন্নাথ হল-জহুরুল হক হল। প্রথমবারের মতো আক্রান্ত হয় বুয়েট ক্যাম্পাস। কোথায় ছিল না তারা? ফুলবাড়ির রাস্তা সেদিন খুব তাড়াতাড়ি শুষে নিয়েছিল গ্যালন গ্যালন রক্ত, যাতে বুটের ফণায় লোহিত কণাগুলো অপমানিত না হয়।
ঙ. ১৯৮৩ সালের এই ১৪ ফেব্রুয়ারি দিনটি খুব দুঃসহ। বিশেষত তখন যারা তরুণ ছিলেন, তাঁদের স্মৃতি যদি কোনোমতে আমরা মন্থন করতে পারতাম! আপনি হয়তো নানা কথাবার্তায় জেনে গেছেন- এই দিনটিতেই বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর সবগুলো ছাত্র সংগঠন প্রথম একসঙ্গে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল। অনেকে বলেন, মুক্তিযুদ্ধপরবর্তী প্রথম সংঘবদ্ধ উত্থানের দিন ছিল এই দিনটি। আর ওই স্বৈরাচারী আজকে নিজেকে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর বড় ভাই বলে দাবি করে। এ তথ্য দিয়ে অবশ্য আমরা এক ঠোঙ্গা চানাচুর ভাজা খাবো না।
চ. কিছুটা হলেও এই দিবসটি একসময় পালন হতো। যায়যায়দিন নামক একটি সাপ্তাহিকের সম্পাদক জেনেশুনেই এই দিবসটিকের তাৎপর্য ক্ষুণ্ন করার জোরালো উদ্যোগ নেয় তার পত্রিকার মাধ্যমে। ভালোবাসা দিবস পালনের নামে আত্মত্যাগের ঘটনাকে সরিয়ে দিয়ে আদেখলাপনার বেসাতি গড়ে তুলে।
আচ্ছা, এটা শফিক রেহমানদের সফলতা? নাকি আমাদেরও ব্যর্থতা?
ছ. আমার একটা আক্ষেপের কথা বলি? মাঝে মাঝে প্রবল বিস্মিত হই- এই দিনটি কী কারণে যেন রাজনৈতিক অঙ্গনে, শিক্ষা অঙ্গনে, মানুষের অঙ্গনে একটি বিশেষ দিন হয়ে উঠলো না! তবে কি চেতনার চেয়ে ব্যবসা-ই মনোজগতে আঙটার মতো দৃঢ়ভাবে উপনিবেশ স্থাপন করে? আজকের তরুণ- এই প্রশ্নটার উত্তর গত বছরগুলোয় আমরা এড়িয়ে গিয়েছিলাম। আজকে হয়তো আপনি এড়িয়ে যাবেন। ভবিষ্যতেও হয়তো অন্য তরুণেরা এড়িয়ে যাবে। কিন্তু যতোদিন পর্যন্ত উত্তর আমরা খুঁজে না পাচ্ছি; ততোদিন প্রশ্ন তাড়া দিয়ে ফিরবে আমাদের। তাড়াখাওয়া মানুষ হিসেবে আমরা কতোদিন টিকতে পারবো? নিজের অস্তিত্বের জন্যই কি প্রশ্নের উত্তর খোঁজা দরকার না আমাদের?
জ. এখন বলেন, জাফর-জয়নাল-দিপালী-আইয়ুব-কাঞ্চনদের ভুলে ভালোবাসার প্যানপ্যানানি কীভাবে সম্ভব?
ঝ. ভালোবাসা আজ ব্যবসা। ভালোবাসা আজ সীমাবদ্ধ- একটি দিনে। গিফট কার্ডে। বুক খোলা টি-শার্ট কিংবা কামিজে। মিডিয়ার ফ্যাশন পাতায়। লাল গোলাপে। ন্যাকামিতে। অসহ্য প্যানপ্যানানিতে।
ভালোবাসা আজ অনুভূতি নয়। যাদের জন্য আমরা পড়তে পারছি, ভালোবাসা আজ কোথাও দেখি না তাদের জন্য। পলাশের রক্তরাঙা দিনে ভালোবাসা আজ বড় কৃত্রিম।
ঞ. বসন্তের শুরুতে একটা আহ্বান জানাই? চলুন না, সমস্ত ব্যবসাকে দলিত করে আজকে-কালকে-পরশু আমরা আশেপাশের অন্তত কয়েকটা মানুষকে বলি ফেব্রুয়ারি ১৪ তারিখের আসল তাৎপর্যটি কোথায়। কী হয়েছিল এই দিনটিতে। অন্তত উপলব্ধি করি, আমাদের জন্য যারা মারা গিয়েছিল তাদেরকে বাদ দিয়ে কোনো ভালোবাসাই সম্ভব না।
মন্তব্য
খানিক আগেই এই বিষয়ে ভাবছিলাম/
মূল ইতিহাসটাকে এক পলকে ছোট্ট করে দেখিয়ে দেয়ায় ধন্যবাদ। ভালোবাসা দিবসে (বা পিতা-মাতা দিবস বা এই জাতীয় আরো সব) অনুভুতি প্রমাণে গিফট দিতে হবে কেনো, সেটা আমি কখনো বুঝতে পারিনি।
... ভালোবাসতে সমস্যা নেই। ভালোবাসা দিবসের দিনটি কেউ যদি পাশ্চাত্যের অনুকরণে প্রিয়জনের সাথে কাটায়ও, সেটাতেও সমস্যা দেখি না।
তবুও সেই সাথে, জাফর-জয়নাল-দীপালী সাহাদের ভালোবেসে স্মরণ করুক সকলে, সেটাই চাওয়া।
ভালোবাসতে কোনোই সমস্যা নেই সুহান ভাই।
কিন্তু এই দিনটার আসল তাৎপর্য কোথায় সেটা হারিয়ে যাচ্ছে বিস্মৃতিতে, উপেক্ষায়, অনাগ্রহে, অবহেলায়।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
সবকিছুই এখন বাণিজ্যিক।
ভালোবাসাও বাণিজ্যিক হবে, এতে আর আশ্চর্যের কী আছে?
বিষয়টা সম্পর্কে ভাসা ভাসা জানতাম। ব্লগ থেকেই। কোন পত্রিকায় কখনো এ বিষয়ে কিছু দেখেছি বলে মনে পড়ে না।
---আশফাক আহমেদ
পত্রিকাগুলো একসময় লিখতো। এখন আর লিখে না। এক কলাম এক ইঞ্চির দাম কতো জানেন? ওই জায়গায় একটা টি-শার্টের বিজ্ঞাপন ছাপলেও তো প্রচুর টাকা আসে। সেখানে সেই অতীতে কোথাকার কে মারা গেল, তা দিয়ে পত্রিকার কী যায় আসে!
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
আমরা বোধহয় সত্যই খুব অকৃতজ্ঞ আর নোংরা গৌতম'দা। ভাইবোনের রক্তের কথা ভুলে বসে থাকি!
জলপাই এরশাদ তোকে ঘেন্না করি!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
খেয়াল করেছেন আজকে কোনো পত্রিকা বা টিভি চ্যানেল এটা নিয়ে কোনো কথা বলে নি! আমরা আসলেই অকৃতজ্ঞ। যে মানুষগুলো আমাদের জন্য মারা গেল, তাদেরকে আমরা কী সহজেই না ভুলে গেলাম!
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
মনে হল গালের উপ্রে কইষা একটা চটকানা দিলেন।
পোস্ট প্রিয়তে।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
আরে কী যে বলেন! আমি জাস্ট আমার অনুভূতিটা ঝালিয়ে নিলাম।
পোস্ট প্রিয়তে নেয়ার জন্য ধন্যবাদ।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
এই ঘটনা আমার জন্মের আগে। আমি শুনেছিলাম তবে পুরোটা এতো বিশদভাবে নয়, মনটা খারাপ হয়ে গেল, আম্রা এতোটা ভুলোমনা জাতি।
আরেকটা বিষয় সবার সাথে শেয়ার করতে চাই, আমি এই ইউরোপে দেখলাম, ১৪ ফেব্রুয়ারী নিয়ে যত মাতামাতি, বাংলাদেশে এর চেয়ে হাজার গুন বেশি মাতামাতি, বাসার কাছে ধানমন্ডি লেকে জুটিদের ভীড়ে মনে হয় সাধারণ মানুষের পা ফেলার জো নেই ১৪ ফেব্রুয়ারীতে ।
আরিফিন সন্ধি
একটা অনুরোধ রাখবেন? আপনি যেহেতু ইউরোপে আছেন, এই দিবসে সেখানে কোন দেশে কী হচ্ছে, কীভাবে হচ্ছে তা নিয়ে একটা লেখা দিবেন? আমরা বাংলাদেশের সাথে তুলনা করে দেখি- ব্যবসাটা আসলে কোথায় হচ্ছে!
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
মিছিলে ট্রাক সম্ভবত তুলে দিছিলো পরের বছর, অর্থাৎ '৮৪র ২৮ ফেব্রুয়ারি, যেদিন সেলিম দেলোয়ার নিহত হন।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
তাই? কি জানি! আবার চেক করতে হবে তাহলে।
আপনার লেখাটার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। বেশ একটি তথ্যসমৃদ্ধ লেখা উপহার দিলেন।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
আমার জন্ম ৮৩'র এপ্রিলে। পরবর্তী কালে এই গৌরবের ইতিহাস জানানোর জন্য তথাকথিত মিডিয়াগুলোর তেমন অবদান মনে পড়েনা। তবে কলেজে উঠে প্রথম সেই বিখ্যাত কবিতাটার মাধ্যমেই জানতে পেরেছিলাম...
মধুর ক্যান্টিনে যাই
অরুণের চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে
বসু, তোমাকে মনে পড়ে যায়............
.........................................................
শিক্ষা ভবন মুখে সামরিক শাসন ভাঙ্গার প্রথম মিছিলে তুমি ছিলে
রক্তাক্ত ১৪ই ফেব্রুয়ারীর কাফেলায় তুমি ছিলে
লেফটেনেন্ট জেনারেলের ট্রাক মিছিল চাপা দেয়ার দিন তুমি ছিলে
এমন কোনো হরতাল, ধর্মঘট, মিছিল, আন্দোলন নেই তুমি ছিলেনা......
..............."
তখন, কে এই বসু ? - স্বগোতক্তি করতে গিয়ে আম্মার কাছে রাওফুন বসুনিয়া সম্পর্কে টুকটাক শুনেছিলাম।
তখনি প্রথম "রক্তাক্ত ১৪ই ফেব্রুয়ারী" শব্দটাকে কানে আসে, ক্ষনিকের জন্য হলেও মনে হয়েছিল, কই
কোথাওতো "রক্তাক্ত ১৪ই ফেব্রুয়ারী" সম্পর্কে আর কিছু শোনা যায়না...। তারপর বিস্মৃত হয়ে গেছিলাম দীর্ঘদিন । এই এতোদিন পর সেই আসল ইতিহাস জানতে পারলাম সচলের সুবাদে।।
গৌতম'দা কে সাধুবাদ জানাই।
--- নুশান
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ নুশান। অনুরোধ থাকবে এই কথাগুলো পরিচিতজনদের জানানোর।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
এই ইতিহাসগুলো যত বেশি করে সামনে তুলে ধরা হবে ততই অপসংস্কৃতিগুলো দূরে সরে যাবে। আমাদের কাজ হবে ইতিহাসগুলো বার বার সামনে নিয়ে আসা। লেখাটির জন্য ।
উৎসাহমূলক মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ স্বাধীন ভাই। আর যা-ই করি, চেষ্টা করবো প্রতি বছরই এই ইতিহাসটা কোথাও না কোথাও তুলে ধরতে। অন্তত কয়েকজন তো জানবে! কয়েকজনের তো পুরনো স্মৃতি মনে পড়ে যাবে!
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
শহীদদের জানাই শ্রদ্ধাঞ্জলি।
চমৎকার এই লেখাটির জন্য গৌতম'দাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
অনেক ধন্যবাদ দ্রোহী ভাই।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
অনেক কিছু জানতাম না। লেখাটার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। -রু
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
গৌতমদা, ঘুণে ধরা এ অস্তিত্বকে আবার দেখিয়ে দিলেন।
আসলে আমাদের হজমশক্তি অবিশ্বাস্য, আমরা সবকিছুই হজম করে ফেলি, ফেলতাম, ফেলছি, ভবিষ্যতেও হয়ত ফেলব। আমরা না শান্তিপ্রিয় বুকভরা ভালবাসাময় জাতি। আমরা একাত্তরের শুয়োরের বাচ্চাদেরও কত ভালবাসি দেখেন না। যুদ্ধাপরাধী বললে আমরা আঁতকে উঠি, ভালবাসার প্রমাণ হিসেবে ফেলানীদের উপহার দেই কাঁটাতারে ঝুলিয়ে, ভালবাসার প্রমাণ রাখতে বঙ্গবন্ধুর নাম ব্যবহার করে আড়িয়াল বিলে মহান হবার প্রয়াস নিই, একটি বাড়ির জন্যে সারাদেশ অচল করে ফেলি, জনগণকে সাথে নিয়ে জনগণের স্বার্থে জনগণকে রাস্তায় পিটিয়ে মারি, ট্রেনের নিচে ফেলে দিই, গেটের দরজা আটকে দিয়ে আগুন ধরিয়ে কাবাব বানাই। সেই কাবাবের গন্ধে মৌ মৌ করে বাংলার আকাশবাতাস, সেই গন্ধের সুবাস নিতে আসে শাহ্রুখ খানেরা, আমাদের শালা কয় ভালবেসে। এত ভালবাসার মধ্যেকি আর এসব রক্তফক্ত মিশ খায়?
-অতীত
ঠিক। আপনি অনেক শক্ত কথা খুব সহজে বলে ফেলেছেন। আমার যে অনুভূতিগুলো প্রকাশ করতে পারি নি, সেগুলো এরকমই।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
আমি এই ইতিহাসটা জানতামনা, জানানোর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আমাদের দেশের এখনকার "খুব সাধারণ" শিক্ষা-ব্যাবস্থাটার অধিকারের জন্যও যে কাউকে কাউকে রক্ত দিতে হয়েছে, এটা আমাদের সবারই জানা উচিত এবং মাথায় রাখা উচিত।
ভালবাসা দিবসের স্রোতে যেন আমরা এই ইতিহাসটা ভুলে না যাই, আপনার এই আহ্বানটাও বুঝেছি।
আর শফিক রেহমানের "জেনেশুনেই এই দিবসটিকের তাৎপর্য ক্ষুণ্ন করার জোরালো উদ্যোগ" ব্যাপারটা বুঝি নাই। এই দিবসের তাৎপর্য ক্ষুণ্ন করে তার কী লাভ?
দুঃখিত দেরিতে আপনার প্রশ্নটির উত্তর দেবার জন্য। নানা কারণে নেটে বসতে পারি নি।
তবে ইতোমধ্যে নিশ্চয়ই নজরুল ভাইয়ের পোস্ট থেকে এবং নিচের নানা মন্তব্যে আপনার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেছেন!
তাদের সাথে আরেকটু যোগ করি-
এই সমস্ত সিস্টেম চালুকরণে ব্যক্তি মুখ্য না- ব্যক্তিকে পরিচালিত করে পুঁজিবাদী সমাজ আর মিডিয়া। আজকে শফিক রেহমান না করলে আরেকদিন অন্য কেউ হয়তো করতো। ব্যবসা কখনো হাত গুটিয়ে বসে থাকে না।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
দিনক্ষণ সঠিক জানতাম না গৌতমদা। ধন্যবাদ আপনাকে মনে করিয়ে দেওয়ার জন্যে। তবে সেইন্ট ভ্যালেন্টাইনকে নিয়ে যে দুটো গল্প প্রচলিত আছে, তাতে তিনিও একজন নির্যাতিত মানুষ ছিলেন। কারও ভালোবাসা ছিলো দেশমাতৃকার জন্যে আর কারও ছিলো প্রিয়ার জন্যে। একটা একান্তই আমাদের আর অন্যটা বৈশ্বিক। এই দিবস উদযাপনের পজিটিভ দিকটা আমার কাছে মনে হয় যে বছরের একটা দিনের জন্যে হলেও আমাদের মনের দরজায় 'ভালোবাসা' কড়া নেড়ে দিয়ে মনে করিয়ে দিয়ে যায় যে আমি এখনও তোমাদের মাঝে আছি। এই চরম ব্যাক্তিকেন্দ্রিকতার যুগে ভালোবাসা দিবস, মা দিবস, বাবা দিবস, বন্ধু দিবস, এগুলোর আসলেই খুব প্রয়োজন।
এই দিবসের তাৎপর্য ক্ষুন্ন করে শফিক রেহমানের কি লাভ ঠিক বুঝতে পারলাম না। এদিনের শহীদরা ঠিকই মানুষের অন্তরে চির ভালবাসার স্থানেই থাকবেন বলে আমি বিশ্বাস করি। আমি ব্যাক্তিগতভাবে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহন করেছি এবং স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের সব শহীদরাই আমার কাছে বীর। গৌতমদা যদি আর একটু বিস্তারিত লিখতেন শফিক রেহমানের উদ্দেশ্য নিয়ে তাহলে বিষয়টা আরও পরিষ্কার হতো।
যেহেতু সেইন্ট ভ্যালেন্টাইনের ভালোবাসার স্বীকৃতি হিসেবে দিবসটা উদযাপিত হয়ে আসছে সেই খৃষ্টশতক ১৪ থেকে, তাই এক "তথাকথিত ভালোবাসা দিবস" বলাতেও আমার একটু অস্বস্তি আছে।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
দেখুন, ভালোবাসা নানাবিধ। আপত্তিটা আসে সেখানেই যেখানে এতো বড় একটা ঘটনাকে ইচ্ছাকৃতভাবে ভুলিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। আপত্তিটা সেখানেই যেখানে অনুভূতির চেয়ে ব্যবসা প্রধান হয়ে উঠে। ব্যবসা যখন অনুভূতিকে নিয়ন্ত্রণ করে- আপত্তিটা তখনই বেড়ে ওঠে। এসব ক্ষেত্রে 'তথাকথিত' শব্দটা তখন মানানসই হয়ে ওঠে বলে আমি মনে করি। আর দিবস পালন করা হয় সেটির তাৎপর্য অনুধাবনের লক্ষ্যে। সেটা না থাকলে দিবস আর দিবস থাকে না।
শফিক রেহমান প্রসঙ্গটির উত্তর নিশ্চয়ই অন্যদের মন্তব্য থেকে পেয়ে গেছেন।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
সরি গৌতমদা, আমার মন্তব্যটা মনে হয় সঠিক এ্যাপ্রোচে করা হয়নি। শফিক রেহমানকে নিয়ে আমার বিশেষ কোনও মাথাব্যাথা নেই। যেখানে বাংলাদেশের সব মিডিয়া, সংবাদমাধ্যম বাণিজ্য নিয়ে মগ্ন সেখানে শফিক রেহমান ভালোবাসা দিবস নিয়ে ব্যবসা করলে তা বিচিত্র কিছু হয়না। তবে কথা হচ্ছে দিবসটার তাৎপর্য ক্ষুন্ন করতে (অন্যার্থে স্বৈরাচার এরশাদের একটা কুকর্মকে ধামাচাপা দিতে) জেনেশুনে ভালোবাসা দিবসের আবির্ভাব, এর সাথে আমি দ্বিমত পোষণ করছি। আপনি যদি বলতেন যে শফিক রেহমানের কখোনেই উচিত ছিলোনা এমন একটা দিনে ভালোবাসা দিবসের ধুঁয়ো তোলা; তবে আমি একমত হতাম। কিন্তু যখনই শফিক রেহমানের এহন কর্মকে পক্ষান্তরে জেনেশুনে বা উদ্দেশ্যমূলকভাবে স্বৈরাচারের অপকর্মকে ঢেকে দেয়- এরকম একটা লিংকেজ সৃষ্টি করা হয়; তখন আমি আর তার সাথে একমত হতে পারি না। শফিক রেহমান যা করেছেন তা অবশেষে স্বৈরাচারের পক্ষে গেছে, এমন বিশ্লেষণে আমি দ্বিমত করছি না। কিন্তু দ্বিমত করছি মাত্র একটা শব্দে যেটা হচ্ছে "জেনেশুনে"।
শফিক রেহমানের প্রতি আমার কোনও ব্যাক্তিগত অনুরাগের ব্যাপার নেই। আমি একজন সাধারণ ইনডিভিজুয়ালিষ্টিক এনজিও করণিক তাই ভ্যালেন্টাইন ডে আমার কাছে বিশেষপালনীয় কোনও উপলক্ষ না। আমি মনেপ্রাণে কামনা করি সেদিনের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের শহীদদের আত্মা আমাদের মাঝে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তর চিরজীবি হোক। তবে এরশাদের কুকর্মের সাথে শফিক রেহমানের লিংকেজ না টানলেই ভালো। শফিক রেহমানের নিন্দা আলাদাভাবে করা উত্তম।
ক্ষমাপ্রার্থী আমার এই দীর্ঘ প্রতিমন্তব্যের জন্যে। একান্তই আমার ভাবনা ব্যাক্ত করলাম।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
আসলে বিষয়টা এভাবেও দেখা যেতে পারে।
১. ভালোবাসা দিবসটা যদি অন্য কোনো দিনে হতো, তাহলে কি আমরা শফিক রেহমানকে গালমন্দ করতাম! হয়তো করতাম, হয়তো না। কিন্তু দুটো একইদিনে হওয়াতে একটু সমস্যা হয়ে গেল। আবার ধরলাম শফিক রেহমান এই দিবস নিয়ে কোনো কিছু শুরু করে নি কখনোই। তাহলে কি অন্য কেউ করতো না! অবশ্যই করতো। বাণিজ্য হলে লক্ষ্মীন্দরের সেই সাপের মতো, ফুটো থাকলেই ঢুকে পড়ে।
২. তাহলে যেহেতু এই দিবসগুলো অবধারিতভাবেই আসতো, সেক্ষেত্রে শফিক রেহমানকে কেন দায়ী করছি আমরা? আসলে তাকে পুরোপুরি কেউ দায়ী করছি না। কারো আক্ষেপ দিবসটা নিয়ে ব্যবসা করায়, কারো আক্ষেপ এই দিনে শহীদদের একেবারে ভুলে যাওয়ায়।
৩. এবার কিছু শোনা কথা বলি। শোনা কথা এ কারণে যে, এগুলো আমি শুনেছি এমন একজনের কাছ থেকে যিনি বাড়িয়ে বলবেন না। কিন্তু লিখিত কিছু নেই বলে এগুলোর প্রমাণ দেওয়া শক্ত।
তিনি কাজ করতেন শফিক রেহমানের সঙ্গেই। শফিক রেহমান যখন থেকে ভালোবাসা দিবসের প্রোপাগান্ডা শুরু করেছে, তখন তাকে বলা হলো এই শহীদদের নিয়ে কিছু বলার জন্য। তাকে বলা হলো ভালোবাসা দিবসের কথামালায় এই শহীদদের কথা যেন কিছুটা থাকে। তাদের স্মরণ করাও তো একপ্রকার ভালোবাসা! শফিক রেহমান এগুলো পুরোপুরি উপেক্ষা করেছিলেন।
এমনও শোনা গেছে, শফিক রেহমান নাকি শহীদদের এই আত্মত্যাগকে পাত্তাই দিতে চান নি। তিনি চেয়েছিলেন ভালোবাসা দিবস শুরু করতে যাতে এই দিবস শুরু করার পুরো ক্রেডিট তার পকেটে যায়। এই দিবসে অন্য কিছু মিশলে সেই কৃতিত্বটা তার পুরোপুরি উপভোগ করা হয় না। যে কারণে সমস্ত ইতিহাস জানা থাকা সত্ত্বেও এই দিবসে শফিক রেহমান নাকি তাদের নাম নিবে না ইচ্ছে করেই। বদলে ভালোবাসা দিবসের প্রচারণা চালাতে তার আগ্রহ বেশি।
এগুলো আমার শোনা, যারা শফিক রেহমানের সাথে কাজ করতেন একসময় তাদের অনেকের কাছ থেকে। শোনা কথায় যেহেতু লিখিত কিছু থাকে না, তাই এগুলো লেখা ঠিক হবে কিনা দ্বিধায় ছিলাম। আর এই লেখাটা যেহেতু আবেগের জায়গা থেকে লেখা, তাই আমার আবেগের দিক দিয়ে আমি পুরোপুরিই উপলব্ধি করি, শফিক রেহমান 'জেনেশুনে'ই এটা করেছিল। আপনি বিষয়টা নিয়ে পুনরায় প্রশ্ন না করলে আমি এটা লিখতামই না।
আশা করছি কেন আমি জেনেশুনে শব্দটা লিখেছি তা আপনার কাছে পরিষ্কার হয়েছে।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
ধন্যবাদ গৌতমদা। আপনি আমার আসল প্রশ্নের জায়গাটায় পিনপাত করেছেন। ব্যাখ্যা পরিষ্কার। এবং এই ব্যাখ্যাটুকুই খুঁজছিলাম। শফিক রেহমান এই যে অবস্থান, এটা সত্যি বা বানানো, এই বিতর্কে না যেয়েও বলা যায় যে নিরংকুশ কৃতিত্ব পকেটস্থ করার প্রবনতা অনেকেরই স্বভাবজাত। সেই প্রেক্ষিতে আপনি বন্ধুর কাছ থেকে যা শুনেছেন তা যৌক্তিক।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
এরকম আরো অনেক ঘটনা আছে। বেশ কিছু ঘটনা শুনলে আপনি স্তম্ভিত হয়ে যাবেন।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
শহীদদের জানাই শ্রদ্ধাঞ্জলি।
চমৎকার এই লেখাটির জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
গৌতম, বিস্মরনের আচ্ছাদনে ঢেকে দেয়ার কাজটি সুবিধাবাদী গোষ্ঠী ভালভাবেই করেছে বলতে হবে । সামগ্রিকভাবে মানুষে মানুষে বিচ্ছিন্নতা আর স্বার্থপরতার সংস্কৃতির যে চর্চা (যা কিনা এশিয়ার বৃহত্তম শপিং মল থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক শাহরুখ খানকে নিয়ে মাতামাতি পর্যন্ত্য বিস্তৃত) শক্তিশালী করা হয়েছে, তাও একটি বড় কারন বলেই মনে হয় । তারপরেও মূল ধারার মিডিয়ার বিরুদ্ধ স্রোতে দাঁড়িয়ে "আজাইরা" ব্লগ থেকেই জানাতে হবে জাফর, জয়নাল, দীপালী আর নূর হোসেনের বীরত্ব গাথা । উত্তর প্রজন্মকে জানাতেই হবে একদিন এই দেশে এই রাজপথে এই সব অমৃতের সন্তানেরা রক্ত ঢেলে দিয়েছিল বলেই আজ আমরা দাঁড়িয়ে আছি । বিশ্ব বেহায়া এরশাদ আর তার পদলেহী শফিক রেহমানের লাল- গোলাপী মৌসুমী বানিজ্যিক ভালবাসার হাওয়াই মিঠাইয়ের জন্য নয় ।
জন্মভূমির সকল বীর সন্তানদের স্মৃতিতে রেখে যাই শ্রদ্ধাঞ্জলি ।
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
আবারও একটু কনফিউজড হয়ে যাচ্ছি। যতদূর জানি এর্শাদের আমলে দুইবার যায়যায়দিন ব্যান হয়েছিলো। শফিক রেহমানকে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়েছিলো। এবং তার বাবা বিশিষ্ট দার্শনিক প্রফেসর সাইদুর রহমান মারা গেলে তাকে ঢাকা এয়ারপোর্ট থেকে দেশে ঢুকতে না দিয়ে ফেরত পাঠানো হয়েছিলো। তাই তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
দূঃখিত, বলতে চেয়েছিলাম “ভালবাসা দিবসের” সুত্রপাতে শফিক রেহমানের ভূমিকার কথা ।
যতদূর মনে পড়ে বাংলা একাডেমীর বই মেলাতে যায় যায় দিন স্টলেই প্রথম ভালবাসা দিবসের হার্ট আকৃতির ছোট্ট পিলো, কার্ড আনা হয়েছিল । তারপর ভালবাসা দিবসের বাণিজ্য হলমার্ক, আর্চিসের হাত ধরে বেগবান হয় । এখনকার টি ভি চ্যানেলগুলোতে ভালবাসা দিবসের নাটকের ছড়াছড়ি । অথচ, এই দিনটির (১৯৮৩র সেই গণ আন্দোলনের) আসল তাৎপর্য্যের কথা বিস্মরনের ধূলোয় ঢাকা পড়ছে ।
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
ধন্যবাদ জোহরা আপা আপনার মন্তব্য আর অনুভূতির জন্য।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
শফিক রেহমানের ভূমিকা মনে রাখার বা গুরুত্ব বোঝার মতো বড় ছিলাম না। কিন্তু মুশকিল হলো শফিক রেহমান শুরু না করলেও হিন্দি আর ভারতীয় অন্য চ্যানেলের দৌরাত্বে এই বিভিন্ন 'দিবস' পালনের সংস্কৃতি আমাদের মাঝে বেশ ভালোভাবেই অনুপ্রবেশ করতোই পরে হলেও। ভালোবাসার জন্যে বা বন্ধুদের জন্যে একটাই দিবস কেন চাই সেই ব্যাপারটা ঠিক মাথায় ঢুকে না আমার, শুধুই কি সেন্ট ভ্যালেন্টাইন, এমন ত আরো অনেক উদাহরণ দেয়া যাবে আর তাদের সবার জন্যেই কেন না একেক দিন দিবস পালন করলে হয়?! সন্দেহ আছে আমরা উপমহাদেশে ইদানীং বিভিন্ন দিবস পালনে যে পরিমাণ মাতামাতি করি ইওরোপ, আম্রিকাতেও এত মাতামাতি করে কিনা বেশিরভাগ মানুষ! আসল কথা হলো বাণিজ্য, আর সেটার জন্যেই 'দিবসের' ট্যাগ।
আসলেই পুষ্টিহীনতায় আমাদের স্মরণশক্তি অনেক কমজোরি হয়ে গেছে। আগে পত্রিকায় কিছু লিখতো, টিভিতে কিছু দেখাতো, খবরেও নূর হোসেনের নাম বলতো, আবছা কিছু মনে আছে, বিশেষ করে মনে আছে বাবা-মা সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরলে আমার তাদেরকে জানানো - 'প্রেসিডেন্ট এরশাদ পদত্যাগ করার ভাষণ দিয়েছে বিটিভিতে'!
গৌতমদাকে অনেক ধন্যবাদ এই সংক্ষিপ্ত কিন্তু চমৎকার লেখাটার জন্যে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
সেই কথাটাই উপরের একজন বলছিলেন যে ভালোবাসা দিবস নিয়ে ইউরোপেও এতো মাতামাতি হয় না। যদি কোনো দেশে এই দিনে এমনভাবে এতোজন মারা যেত, তাহলে সেখানে ভালোবাসা দিবস নিয়ে এতোটা মাতামাতি হতো কিনা জানি না।
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ পড়ার জন্য।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
আমাদের প্রধান সমস্যা মনে হয় সীমা অতিক্রম করা। আমরা জানিনা কোথায় থামতে হয়। তাই ভালবাসা দিবসের উচ্ছাসে ভুলে যাই সব। অথচ এই শহিদেরাও তো পথে নেমেছিলো দেশকে ভালবেসেই। বোধ সম্পন্ন জাতি হলে আমরা ভালবাসা দিবস পালন করতে পারতাম তাদের ভালবাসা কে শ্রদ্ধা জানিয়েই, আমাদের নিজেদের মত করে,অন্যের অন্ধঅনুকরনের গ্লানি ছাড়া।
আপনার কথাগুলোর সাথে পুরোপুরি একমত।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
------------------------------------
Sad Poems
Sad Stories
হাততালির মাজেজা কী?
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
চমৎকার লেখাটার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। ...
১. শফিক রেহমানের আসল উদ্দেশ্য যে ব্যবসা তাতে কোনোই সন্দেহ নেই। উপরে রাতঃস্মরণীয়ের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আমি একটি শোনা কথাও যুক্ত করেছি।
২. আমি একটি পত্রিকার একজন সিনিয়র সাংবাদিকের সাথে এই বিষয়টা নিয়ে কথা বলেছি। তিনি যেটা বললেন সেটা হাস্যকর- তাদের নাকি এটা মনে ছিল না!
৩. এই সেকশনের (খ) অংশে আপনি যা বলেছেন সেটাই আমার উদ্বেগের বিষয়। তবে এটাও যুক্ত করি- পয়লা ফাগুনও আস্তে আস্তে পণ্যায়নের আওতায় পড়ে যাচ্ছে। উপলক্ষ আছে, কিন্তু ব্যবসা হবে না, তা তো হয় না।
৪. আমি তো সিদ্ধান্ত নিয়েছি আগামী বার এই বিষয়ে একটা লেখা কোনো এক দৈনিকে পাঠাবো। দেখি ছাপায় কিনা! তবে ছাপাক বা না ছাপাক, অন্তত সেই দৈনিকের সিনিয়র সাংবাদিক ভুলে যাবার বাহানা দিতে পারবে না। এর পরও যদি না ছাপায়, সেক্ষেত্রে এই বছরের উক্তিটা মনে করিয়ে দিব।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
নজু ভাইয়ের মন্তব্যে আমি একটু সংশয়ে পড়লাম, বছরটা ১৯৮৩ ছিল নাকি ১৯৮৪? নাহ, আমার মনে হয় ১৯৮৩ই সঠিক। স্মৃতি যদি প্রতারনা না করে থাকে এটা আমার এরশাদের পুলিশ বাহিনীর আতিথ্যে যাবার আগের বছরের ঘটনা।
আশির দশকে শফিক রেহমানকে যখন আমরা হিরো মনে করতাম, ভ্যালেনটাইন তখনকার মশকরা ঘটনা। দিবস হিসেবে কর্পোরেট স্বীকৃতি পায়নি তখন। এরশাদের সাথে তখন তার দা কুমড়া সম্পর্ক। শফিক রেহমান যখন নায়ক থেকে ভাঁড়ে পরিণত হলো তখন থেকে ভ্যালেনটাইন দিবস কেন যেন কর্পোরেট আদর পেতে পেতে মূল্য সংযোজন দিবসে পরিণত হয়। তারপর থেকে আমরা ১৪ ফেব্রুয়ারীর ট্রাজেডিকে ভুলতে শুরু করি। শফিক রহমান সাংবাদিকজগতের ভাঁড় হয়ে গেলেও দেশে তার সৃষ্ট দিবসটা পোক্ত হয়ে গেল। এবং তা এরশাদের কুকীর্তি ভুলে থাকার জন্য বাড়তি চাদর হিসেবে কাজে লাগলো। এরশাদ একটা স্বয়ংক্রিয় বেনেফিট পেয়ে গেল, যেতেই পারে কারণ জুতোপেটা করার বদলে এরশাদকে এখন একই মঞ্চের চেয়ারে বসিয়ে গনতন্ত্রচর্চা করি আমরা।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
ফেইক "৩০ সেট অলঙ্কার" -এর (মনে আছে?) হিরো যে নিজেও আসলে ফেইক, বুঝতে কত সময় লেগেছিল ?
মনমাঝি
ঠিক।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
ভুলে যাইনি তবে অকৃতজ্ঞ আমাকে অথবা আমাদেরকে এভাবে মনে করিয়ে দেয়ার জন্যে আপনাকে অনেক ধন্যবাদ গৌতম'দা...
"চৈত্রী"
ধন্যবাদ চৈত্রী।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
গৌতম দাদা কে অন্তরের ভেতর থেকে ধন্যবাদ। সচলে আমি এসেছি ২/৩ মাস হল। ভালবাসা দিবস আমার কখনোই ভাল লাগত না। আমার মনে হয়, ভালবাসা একদিনের জন্য নয়, সারাজীবনের জন্য।
যাই হোক, আমি এই বিষয়টা জানতাম না। আসলে বিষয়টা বলা ঠিক হচ্ছে না। আমাদের প্রজন্ম কোন কষ্ট ছাড়াই নতুন দেশ পেয়েছি। মুক্ত বাতাসে ঘুরতে পারছি কিন্তু কখনো কি ভেবেছি আমাদের এইখানে দাড়াঁবার জন্য কত মানুষ শ্রম দিয়েছে, রক্ত দিয়েছে! দাদা, অনেক ধন্যবাদ। আমি আমার পরিচিত সবাইকে জানাব রক্তাক্ত ১৪ই ফেব্রুয়ারীর কথা।
রক্তাক্ত ১৪ই ফেব্রুয়ারীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।
লেখাটা অনেক পরে নজরে আসলো। আশা করছি এ বছর আর ভালবাসা দিবস নিয়ে মাতামাতি হবেনা।
১২/১২/১২ ইং তারিখে আমি একটা লেখায় লিখেছিলাম,
নতুন মন্তব্য করুন