ছোটবেলায় আমার পছন্দের একটা কাজ ছিল রেলস্টেশনে গিয়ে পত্রিকার জন্য অপেক্ষা করা। সপ্তম-অষ্টম শ্রেণী থেকেই এই কাজটা করতাম। নবম শ্রেণীতে সাইকেল পাওয়ার পর ইশকুলের দিনগুলো ছাড়া বাদবাকি সব দিনই দুপুরের ঘুম বাদ দিয়ে সোজা ইস্টিশনে চলে যেতাম। ঢাকার কমলাপুর থেকে ভোর ৪টা ৪০ মিনিটে দিনের প্রথম ট্রেন অর্থাৎ মহুয়া এক্সপ্রেস নামের যে মেইল ট্রেনটি ছাড়ে, সেটি ময়মনসিংহ হয়ে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ পৌঁছতে পৌঁছতে দুপুর একটা থেকে বিকেল পাঁচটার মধ্যে যে কোনো সময় পৌঁছতে পারে। কোনো কোনোদিন আবার সাড়ে বারোটায়ও পৌঁছে যেত, ফলে সাইকেল চালিয়ে দুপুর বারোটা বা সাড়ে বারোটার মধ্যেই ইস্টিশনে পৌঁছে যেতাম। ট্রেন আসার আগে বাকি সময়টা কাটিয়ে দিতাম পত্রিকার হকার মোসাদ্দেক কাকার সঙ্গে গল্প করে, চা-বিস্কিট খেয়ে কিংবা স্টেশনের গায়কের ব্যাঞ্জো-বাজানো শুনে। কোনো কোনোদিন নিজেও ব্যাঞ্জোতে টুকটাক করতাম।
বাবা প্রথমে ছিলেন মোহনগঞ্জ সংবাদদাতা, পরে নিজস্ব প্রতিনিধি- ক্রমানুসারে আজকের কাগজ, ভোরের কাগজ ও প্রথম আলো পত্রিকার। পরে নানা চাপে সাংবাদিকতা বাদ দিয়েছেন। অন্যদিকে আবার মোহনগঞ্জের সংবাদপত্রের এজেন্টও ছিলেন বাবা (পরে সেটাও ছেড়ে দিতে হয়েছে)। ফলে যেটা হতো, ট্রেন আসার সাথে সাথে বাবার জন্য বরাদ্দ করা পত্রিকাটা বগলে নিয়ে অন্য পত্রিকাগুলো পড়তে শুরু করতাম। মোসাদ্দেক কাকা একটা একটা করে পত্রিকার সাদা রোল খুলেন আর আমি টেনে নিয়ে পড়তে শুরু করে দিই। নিজেদের ভাগের সৌজন্য কপি ছাড়াও কোনো পত্রিকা অতিরিক্ত পাতা বা ম্যাগাজিন দিলে তা-ও কিনে নিয়ে আসতাম মাঝে মাঝে। প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো পত্রিকার অতিরিক্ত পাতা বা ম্যাগাজিন থাকতোই; কোনোদিন সেটি পড়ে শেষ না করতে পারলে পরের দিন স্টেশনে নিয়ে যেতাম- অপেক্ষার সময়টা পড়তে পড়তেই কেটে যেত অনেক দিন!
এতো কথা বলার একটাই কারণ- ওই সময়েই মূলত পত্রিকার কলাম পড়ার অভ্যাসটা গড়ে উঠে- সময় কাটানোর প্রয়াসে। আস্তে আস্তে পত্রিকার কলাম ছাড়াও অতিরিক্ত পাতা বা ম্যাগাজিনগুলোর কাঠখোট্টা লেখা পড়তে শুরু করে দিয়েছি। অভ্যাসটা এতোটাই স্থায়ী হয়ে গেল যে, এখনো একটু সময় পেলে এসব কাঠখোট্টা লেখা পড়তে শুরু করে দিই।
বলা বাহুল্য, কাঠখোট্টা লেখাগুলো পড়ার আরেকটি বড় কারণ হচ্ছে- ছোটবেলায় ইচ্ছে ছিল একদিন অনেক বড় লেখক হব। আর বড় লেখকরা তো এসব কাঠখোট্টা লেখাই লিখেন! বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় নিজের তাগিদেই শিক্ষাবিষয়ক লেখা কোনোটা বাদ দিতাম না, আর ছাত্র ইউনিয়নে যোগ দেয়ার পর থেকে প্রায় সব লেখাই নানা আঙ্গিক থেকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়তাম।
পত্রিকার বিশেষ সংখ্যা বা অতিরিক্ত পাতা বা অতিরিক্ত গুরুগম্ভীর লেখা দিয়ে বিশেষ সংখ্যা চালুর প্রথাটা কোন পত্রিকা চালু করেছিলো জানা নেই, তবে এখন প্রায় সব পত্রিকাই বিশেষ বিশেষ দিনে বড় বড় মানুষদের লেখা দিয়ে বেশ কয়েকটি অতিরিক্ত পাতা বের করে। এসব পাতায় তারা দেশ-বিদেশের সমাজ-রাজনীতি-অর্থনীতি-শিক্ষা-সন্ত্রাস-মানবাধিকার-খেলা-চলচ্চিত্র-পরিবেশ- হেন বিষয় নেই যা নিয়ে তারা কথা বলেন না। যতো দিন যাচ্ছে পাল্লা দিয়ে এই বিশেষ সংখ্যা বের করার এক প্রতিযোগিতা চলছে পত্রিকাগুলোর মাঝে- আগে এটাকে সুস্থ মনে হলেও দিন দিন অসুস্থ প্রতিযোগিতাই মনে হচ্ছে। যার যেটা ফিল্ড না তিনি যেমন সেটা নিয়ে লিখছেন, যার যেটা ফিল্ড তিনি তো সেটাকে নিয়ে লিখতে লিখতে পঁচিয়ে ফেলছেন! অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, পত্রিকাগুলো বিশেষ কোনো দিন আসলে সেটাকে কেন্দ্র করে একটা বিশেষ সংখ্যা বের করবেই, আর ঘুরেফিরে সেই নির্দিষ্ট লেখকদের কাছেই ফিরে যাবে- যারা চর্বিতচর্বণ ছাড়া আপাতত আর কিছু করতে পারছেন না!
পত্রিকার বিশেষ সংখ্যায় দেশ-বিদেশের পরিস্থিতি নিয়ে লেখালেখিকে খারাপ কিছু মনে করি না; বরং খবরের পাশাপাশি এসব বিশ্লেষণ থাকাটা অনেক সময় কাজে দেয়। অনেকদিন আগে একটি বড় দৈনিকে কর্মরত পরিচিত এক সিনিয়র সাংবাদিক বন্ধুকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম- এই বিশেষ সংখ্যা বের করার কর্মপরিকল্পনাটা কীরকম? এটা কি দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পনা করে সে অনুযায়ী বাস্তবায়ন করা হয়, নাকি হুটহাট করে একটা কিছু বের করে ফেলা হয়। তিনি যা বললেন, তার সারমর্ম হচ্ছে- দু-একটি পত্রিকা ছাড়া বাদবাকি পত্রিকাগুলো মোটামুটি হুটহাট করেই এসব বিশেষ সংখ্যা বের করে। বিশেষ দিবস আসার কিছুদিন আগে সিনিয়ররা সিদ্ধান্ত নেন একটা বিশেষ সংখ্যা বের করতে হবে, সুতরাং লেখা যোগাড় করা দরকার। তো কী কী বিষয় নিয়ে লেখা হবে? রাজনীতি- ঠিক আছে, অমুকের কাছে যাও। দর্শন- অমুক তো ভালো লিখে। শিক্ষা- অমুকের একটা লেখা জমা আছে না? ওটাই ছাপিয়ে দিও। পরিবেশ- দেখো তো, অমুক সংগঠনের কারো কাছ থেকে লেখা আনতে পারো কিনা? বিদেশ- অমুককে বলে দাও, তিনি তো অমুক আন্তর্জাতিক সংগঠনে কাজ করেন ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি। বলা ভালো, ছাত্রজীবন থেকে শুরু করে ২০০৫ সালে চাকরি পাওয়ার আগ পর্যন্ত প্রায় বছর সাতেক খণ্ডকালীন সাংবাদিকতা করার সৌভাগ্য হয়েছিলো- ভোরের কাগজ প্রদায়ক, দৈনিক মাতৃভূমি এবং সাপ্তাহিক মৃদুভাষণে সাব-এডিটর হিসেবে। আমার নিজের অভিজ্ঞতাও মোটামুটি একইরকম।
এসব বড় মানুষরা পত্রিকার বিশেষ সংখ্যায় কী লিখেন? তাঁরা যে যে বিষয়ে বিশেষজ্ঞ, মূলত সেসব বিষয় নিয়েই লিখেন। ভালো কথা, কিন্তু প্রশ্ন হলো- লেখাগুলো থেকে আমরা কি নতুন কিছু পাচ্ছি আদৌ? আজকে ইংরেজি নববর্ষ উপলক্ষ্যে পত্রিকাগুলো যে বিশেষ সংখ্যা বের করেছে, সেগুলোতে আদৌ কি নতুন কিছু আছে? আমি দু-তিনটি পত্রিকার বিশেষ সংখ্যা নেড়েচেড়ে দেখলাম। সত্যি কথা বলতে কি, কিছুদিন ধরে এসব একই লেখা ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে পড়তে পড়তে এতোটাই বিরক্তবোধ করছি যে, আজকে সেটি একেবাড়ে মাথাচাড়া দিয়ে উঠলো।
দেশে কি আর কোনো লেখক নেই? পত্রিকাগুলোকে কেন ঘুরেফিরে একই ব্যক্তির কাছ থেকে লেখা আনতে হবে? বিষয়বৈচিত্র্যে কি কোনো পরিবর্তন আনা যায় না? আমি অন্তত বিশ্বাস করি, এদেশে অন্তত আরো হাজারো তরুণ-যুবক আছে, যারা অনেক প্রতিষ্ঠিত লেখকের চাইতে কোনো অংশে কম তো লিখেন-ই না; বরং ক্ষেত্রবিশেষে তাদের চাইতেও ভালো লিখেন। তাদের লেখা কেন পত্রিকাগুলো ছাপায় না? কেন তাদের কাছে লেখা চায় না? ফেসভ্যালু নেই বলে? পত্রিকাগুলো কি পারে না গতানুগতিক লেখা ছাপানো বাদ দিয়ে তথ্যসমৃদ্ধ আকর্ষণীয় লেখা যোগাড় করতে? আজকাল রাজনীতি নিয়ে পত্রিকাগুলোতে যেসব কলাম ছাপা হয়, তার কয়টিতে নতুন কথা থাকে? মানুষজন যে বিড়বিড় করে বলে- একটা বন্ধ্যা সময় যাচ্ছে- তা বৈচিত্র্যহীন কলাম পড়লেই বুঝা যায়! আর বিশেষ সংখ্যা পড়লে সেটা হাড়ে হাড়ে অনুভূত হয়।
দেশে এখন নানা ধরনের সংকট চলছে। টিপাইমুখ ইস্যুর কথাই বলি। কোনো পত্রিকা কি পারতো না এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে পরিবেশ-সমাজতাত্ত্বিক-বন্যা নিয়ন্ত্রণ-বাঁধের অপকারিতা/উপকারিতা-বিদেশি অভিজ্ঞতা-পররাষ্ট্রনীতি-কূটনীতি ইত্যাদি একেকটি বিষয়কে ফোকাস করে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের খুঁজে বের করতে? তাদেরকে বিশেষ অ্যাসাইনমেন্ট দিয়ে অন্তত দশটি লেখা জোগাড় করে একটি বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করতে পারতো না কোনো পত্রিকা- তা সেটা পক্ষে/বিপক্ষে যেদিকেই যাক না কেন? এরকম ইস্যুর কি অভাব আছে দেশে? কোনো পত্রিকা কি পারে না শুধু আলোকচিত্র দিয়ে একটা বিশেষ সংখ্যা সাজাতে যেখানে এই দেশটিকে তুলে ধরতে পত্রিকার একটি বিশেষ সংখ্যা একেবারেই যথেষ্ট না! কোনো পত্রিকা কি পারতো না শুধু ছাত্রছাত্রীদের লেখা দিয়ে একটা সংখ্যা সাজাতে? আইডিয়ার কি আকাল যাচ্ছে পত্রিকা হাউজে?
কেন যেন মনে হয়, বন্ধ্যা সময়ের ছোঁয়া লেগেছে সব জায়গাতেই। নইলে একটু চিন্তাভাবনা করলে যেখানে হাজারো বৈচিত্র্যের সন্ধান পাওয়া সম্ভব, সেখানে কেন আমরা ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে একই কথা বারবার বিড়বিড় করি? এসব লেখা পড়তে আর ভালো লাগে না।
মন্তব্য
দারুণ!
ধন্যবাদ।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
ধন্যবাদ।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
-------------------------------------------------
ক্লাশভর্তি উজ্জ্বল সন্তান, ওরা জুড়ে দেবে ফুলস্কেফ সমস্ত কাগজ !
আমি বাজে ছেলে, আমি লাষ্ট বেঞ্চি, আমি পারবো না !
আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
ধন্যবাদ
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
লেখার প্রথম অংশে আপনার স্টেশনে পত্রিকার অপেক্ষায় বসে থাকা, ব্যাঞ্জোতে টুকটাক করা, সাইকেলে ফিরে আসা এইগুলা পড়তে পড়তে কেন জানি মনে হচ্ছিল এটা একটা গল্পের টুকরো টুকরো বর্ণনা। ঠিক করলাম একদিন এরকম একটা গল্প লিখে ফেলব
আর আমাদের কালচারে আমরা মনে হয় পরীক্ষা নিরীক্ষা তেমন একটা পছন্দ করি না। একবার কোন কিছুর একটা ফরম্যাট দাঁড়িয়ে গেলে বছরের পর বছর সেই ফরম্যাটে চালিয়ে দিই। পত্রিকাগুলো এর বাইরে যেতে পারে নি।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
লিখে ফেলেন নিবিড়। আপনার গল্পের অপেক্ষায় থাকলাম।
পত্রিকাগুলোর অনেক স্কোপ আছে নির্দিষ্ট ফরম্যাটের বাইরে যাওয়ার। কিন্তু তারা সেটা কেন করে না কে জানে! অনেক বড় পত্রিকার লোকবল সংকট নেই, বাজেট সংকট নেই; তারা কিন্তু এই কাজগুলো করতে পারে।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
পত্রিকাগুলোর এক ধরনের মরণ ঘনিয়ে আসছে। সেটা খুব কম পত্রিকাই বুঝতে পারছে। সর্বঘটেকাঁঠালীকলা লেখকদেরও দিন ঘনিয়ে এসেছে। প্রায় দিনই এসব বিশেষজ্ঞ কলামিস্টদের লেখা পড়ে মনে হয় এরা সচলে লেখা দিলে মানগত কারণে একটা বড় অংশই মডারেশনের বেড়া ডিঙাতে পারতো না।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
মডারেশনের বেড়া ডিঙাতে পারবে কিনা বলে সে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন, সেটার সাথে অবশ্য পুরোপুরি একমত নই। অনেক লেখাই ভালো, কিন্তু বক্তব্য দিনের পর দিন একই থেকে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে এসব লেখা ব্লগে হয়তো মডারেশনের বেড়া ডিঙিয়ে প্রকাশিত হবে কিন্তু পাঠকের সাথে ইন্টার্যাকশন হবে না। কে আর প্রতিদিন একই লেখা পড়তে চায়!
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
দারুণ। সহমত।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ধন্যবাদ।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
ধন্যবাদ
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
দারুণ লাগলো!
ধন্যবাদ
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
সহমত।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
ধন্যবাদ জাহিদ ভাই।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
কাগুজে পত্রিকার দিন শেষ! কথাটা পুরোপুরি অনুধাবন করতে আমাদের আরো কিছুদিন লাগবে।
যে জিনিসের দিন শেষ সে জিনিস স্বভাবতই মেধা সংকটে ভুগবে।
হুমম .... ....
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
দিন শেষ কথাটা অবশ্য মানতে পারছি না; কাগজের পত্রিকার স্বাদই আলাদা।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
দ্রোহীদা, বাংলাদেশে বোধহয় আরও অনেকদিনই কাগজের পত্রিকা টিকে থাকবে, তারা বালছাল যাই খাওয়াক না কেন আমাদের। একটা ছোট্ট অংশ, যাদের কাছে ইন্টারনেট অ্যাক্সেস আছে, এবং সেটা ব্যবহার করতে জানে, তাদের জন্যে দিন শেষ এটা সত্যি, কিন্তু বিশাল একটা অংশ বোধহয় এতটা সৌভাগ্যবাননা। প্রথম আলুকে অনেকেই মহাভারত জ্ঞান করে।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
কাগজের পত্রিকা সহজে বিলুপ্ত হবে না, হয়তো এর স্বাদ বদলাবে। আগে পত্রিকা পড়তে সময় লাগতো ঘণ্টাখানেকেরও বেশি, এখন মাত্র ১৫-২০ মিনিট। কাগজের পত্রিকা নিজেদের চরিত্র না বদলালে হয়তো সময়টা আরো কমে আসবে- কিন্তু পত্রিকার স্বাদ এবং গন্ধই আলাদা, এবং এই কারণেই টিকে থাকবে আমার মতো পুরানপন্থীদের কাছে।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
সহমত ...
ভাল সব কিছুতেই এখন বন্ধ্যা সময় যাচ্ছে...
ধন্যবাদ
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
দারুণ! মনের কথাগুলো বলে দিলেন।
ধন্যবাদ
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
ঠিক!
ধন্যবাদ
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
পত্রিকার বিশেষ সংখ্যাগুলোর জন্য অতীতেও অপেক্ষা করতাম, এখনো করি। আগে করতাম অনেকগুলো ভালো ও প্রিয় লেখকদের লেখা একসাথে পাওয়া যেতো বলে, এখন করি মোটাসোটা একটা সংখ্যা বিক্রি করার সময় পাল্লায় ওজনদার হয় বলে
এটা অবশ্য একটা ভালো দিক
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
লেখার প্রথম অংশ বেশ উপভোগ করেছি!
২য় অংশের সাথে সহমত। বিশেষ সংখ্যায় ঘুরে ফিরে একি জিনিস। আর অনেক তরুণ অনেক প্রতিষ্টিত লেখকের চেয়ে অনেক ভাল লিখে কথা সত্য। পত্রিকাওয়ালারা মুখ দেখে লেখা ছাপানো কবে যে বন্ধ করবে ...............!!
ঠিক এই কথাটাই বলতে চাইছি।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
অসাধারন একটি পোস্ট।
লেখা ভালো লাগলো। সুন্দর করে বলা। সহমত তো বটেই।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
ধন্যবাদ
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
অসাধারন একটি পোস্ট।
ঐক্যমত্য প্রকাশ করছি।
অনেক ধন্যবাদ।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
ঠিক এই কথাটাই বলতে চাইছি।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
হুম!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
দারুন বলেছেন। ঈদ সংখ্যায় হুড়োহুড়ি করে লেখা যোগার করার মত হয়ে গিয়েছে বিষয়টা।
ঈদ সংখ্যাগুলোও কিন্তু এই লেখার বিষয়!
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
ধন্যবাদ
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
চমৎকার লেখা!
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
ধন্যবাদ
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
লেখা খুবই ভাল লাগলো। আমারও পত্রিকা পড়ার অভ্যাস গড়ে উঠেছে একদম পিচ্চিকালে, ইনফ্যাকট আমি অক্ষর চিনেইছি সংবাদ আর ইত্তেফাক পেপার পড়ে পড়ে। আমার কাজ ছিল রোজ সকালে উঠে বানান করে পেপার পড়া, মেঝের ওপর রেখে একেবারে পেপারের ওপর বসে
এখনো দিনে তিন চারটে পত্রিকা পড়া হয় অনলাইন অফলাইন মিলিয়ে। গত পাঁচ সাত বছর ধরেই খেয়াল করছি পত্রিকারগুলোর ধার কেমন যেনো কমে আসছে। সব কেমন যেনো একই ছকে বাঁধা খবর। আসলেই এখন আর ভালো লাগে না।
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
আপনি যেভাবে অক্ষর চিনেছেন এটাকে বলে বর্ণনানুক্রমিক পদ্ধতি। আপনি খুবই লাকি, কারণ আমাদের প্রায় সব বাচ্চাই অক্ষর চেনা শুরু করে শব্দানুক্রমিক পদ্ধতিতে, যেটা আসলে অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতি এবং অনেক পেইন দেয়! এনসিটিবির প্রথম শ্রেণীর বইতে লেখা আছে তারা বর্ণনানুক্রমিক পদ্ধতি ফলো করে, কিন্তু তারাও বাচ্চাদের অক্ষর শেখায় শব্দানুক্রমিক পদ্ধতিতে । দেন, আপনার অক্ষর চেনা বিষয়ে বিশাল ব্যাখ্যা দিলাম- এবার ফি-টা দেন!
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
ঠিকাছে।
পত্রিকার স্মৃতি একদম ছোটবেলার। 'সংবাদে'র ব্যাপারে আবেগ কাজ করত না। আগ্রহ ছিল 'ইত্তেফাকের' সিমেমার পাতার জন্য। 'অভজারভার' ছিল বিভিষিকার নাম - কখনও কখনও দাঁত-ভাঙ্গা একটা প্যারা পড়তে হত উচ্চারনের ব্যাপারে আপোষহীন ঠাকুরমার কাছে (ওয়েনেসডে...ওয়েন্সডে... হচ্ছেনা, হচ্ছেনা)...
এখন মনে হয় পত্রিকা জীবনের একটা পার্ট হয়ে গেছে। সকালে একটা পত্রিকা পড়তে হয়, এমনকি বিদেশে গেলেও (যুক্তরাজ্যে প্রথম দুইবার হোটেলে জানতে চাইল পত্রিকা লাগবে কিনা, বিস্তারিত জানতে চাইলে বলল ফ্রি, কিন্তু তারপরও আমরা জানতে চাই যেহেতু অনেকে পড়েনা, দুটাও রাখতে পার। তৃতীয় বার আরেক হোটেলে জানতে চাইলে দুটার কথাই বললাম। দিন বিশেক থাকার পর ৭০ পাউন্ডের বিল ধরিয়ে দিয়ে বলল এটাতো রুমের সাথে ফ্রি না, তুমি বলেছ তাই দিয়েছি )। ইদানিং পাঁচ মিনিটে শেষ হয়ে যায়। মনে হচ্ছে আমার মত পত্রিকাশক্ত লোকের জন্য প্রিন্ট মিডিয়ার আয়ু আরও আছে...।
তবে হয়ত পত্রিকা ঠিকে যাবে, খবর 'পরিবেশন' হয়ত আর মুখ্য উদ্যেশ্য না... নতুন যারা এসেছে, আসছে এবং ভবিষ্যতে আসার চেষ্টা করছে তাদের 'মালিকানার' প্রোফাইল দেখলে বিষয়টা পরিষ্কার হবে।
আগে পত্রিকা পড়তে আমারও সময় লাগতো অনেক- ঘণ্টাখানেকের তো বেশি বটেই। আর এখন কমতে কমতে তা ১৫-২০ মিনিটে পৌঁছেছে- তারও অধিকাংশ নিয়ে নেয় খেলার পাতা।
পত্রিকা বের করা এখন অর্থকরী লোকদের স্ট্যাটাস! এতোগুলো পত্রিকা চালানোর জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক মানসম্পন্ন সাংবাদিক আছে কিনা সেটা একটা প্রশ্ন - আর এই প্রশ্নটি আমার নয়, লেখায় যে সাংবাদিকের কথা বললাম- তারই প্রশ্ন এটি।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
নৈষাদের মত আমার ও পত্রিকা পড়া শুরু হয়েছিল ইত্তেফাক দিয়ে। মেঝেতে বিছিয়ে, তার উপর বসে অথবা বিছানার উপরে রেখে কনুই এ ভর দিয়ে (ভর দেবার জায়গাতে পত্রিকা বাটি হয়ে যেত!) আর বড় ভাইয়ের সাথে প্রতিযোগিতা চলত, কে আগে পড়বে। আম্মু নিয়ম করে দিয়েছিল, যে আগে পত্রিকা হাতে নিবে সে আগে পড়বে। বেশিরভাগ দিন ভাইয়া সিঁড়িতে বসে থাকত হকার আসার আগেই। ২০০৬ এ এসে বাসায় প্রথম আলো রাখা শুরু হল। পত্রিকার কলাম পড়া আমার কাছে নেশার মত। পড়ি, পড়ি, পড়তেই থাকি কিন্তু এখন আর বেশি পড়া হয় না। গত দেড়/দুই মাস তো মোটেই পড়া হয়না। মনে হয় যা লিখেছে সবই আমার আগে পড়া হয়ে গেছে! আপনি খুবই চমৎকার করে লিখেছেন মূল ভাবনাটি। আপনার লেখা পড়ে মনে হল, যেন আমার মনের কথাই আপনি লিখে দিয়েছেন। আপনার সাথে সহমত।
ধন্যবাদ। এত সুন্দর লেখার জন্য।
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ আপনার অনুভূতিটা জানানোর জন্য।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
খুবই দরকারি এবং দারুন একটি পোস্ট
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
ধন্যবাদ
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
নতুন মন্তব্য করুন