মেডিক্যাল কলেজগুলোতে ভর্তি পরীক্ষা বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্তে আপাতঃসমর্থন থাকলেও যে প্রক্রিয়ায় এবং যে সময়ে সিদ্ধান্তটি নেয়া হয়েছে, তা বিবেচনা করে আন্দোলনরত ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের দাবি ও অনুভূতির সঙ্গে একাত্ম পোষণ করতে চাই। এই মুহূর্তে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক এবং সে কারণে সরকারের উচিত সব দিক বিবেচনা করে এবারের মতো মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি পরীক্ষা চালু রাখা। পাশাপাশি আগামীবার (ভালো হয় আরো কয়েকবছর পর থেকে চালু করলে, সেই আলোচনা নিচে রয়েছে) থেকে ভর্তি পরীক্ষা না নেয়ার সিদ্ধান্তটিও এই মুহূর্তেই গ্রহণ করা উচিত। ভর্তি পরীক্ষার বদলে মেডিক্যাল কলেজগুলোতে আগামী বছরগুলোতে কোন প্রক্রিয়ায় ভর্তি করা হবে- তাও সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়া উচিত।
মেডিক্যাল কলেজগুলোতে ভর্তি পরীক্ষা বাতিলের এ সিদ্ধান্তের পক্ষে ও বিপক্ষে ইন্টারনেট মিডিয়ায় বেশ কিছু লেখা চোখে পড়েছে এবং টেলিভিশনে বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (যারা নীতিনির্ধারণী প্রক্রিয়ায় নানাভাবে জড়িত) তাদের মতামত দিয়েছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে, বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা সরকারের সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে. চৌধূরী নানা উদাহরণ দিয়ে সরকারের সিদ্ধান্তকে জায়েজ করার চেষ্টা করেছেন যদিও তাঁর যুক্তিগুলো ততোটা শক্ত হতে পারে নি; যতোটা তাঁর মতো একজন শিক্ষা-বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে আশা করা যায়। সরকারের সিদ্ধান্তের বিপক্ষে যে লেখাগুলো এসেছে, সেগুলো মূলত ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের মতামতকে প্রতিফলিত করেছে। সিদ্ধান্তটি কতোটুকু ভালো বা খারাপ- বর্তমান লেখায় প্রাসঙ্গিকভাবেই এ বিষয়টি আসবে; তবে বাংলাদেশের শিক্ষাক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণের বর্তমান পদ্ধতি যে একটি মূল সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে, তার ওপরও লেখার ফোকাস থাকবে।
অনেক আগে সচলায়তনেই একটি লেখায় বলার চেষ্টা করেছিলাম যে, বাংলাদেশের শিক্ষার নীতিনির্ধারণী বিষয়ে প্রধান প্রতিবন্ধকতা হলো সুস্পষ্ট শিক্ষানীতি না থাকা এবং এর ফলে নির্বাহী আদেশ বা অ্যাড-হক ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া। ওই লেখার পর অনেকটা সময় পার হয়েছে। ইতোমধ্যে দেশে প্রথমবারের মতো পূর্ণাঙ্গ শিক্ষানীতি প্রণীত হয়েছে কিন্তু শিক্ষাক্ষেত্রে নীতিনির্ধারণী বিষয়ে সিদ্ধান্তগ্রহণে নির্বাহী আদেশ কিংবা অ্যাড-হকভিত্তিতে কাজ করার পুরনো অভ্যাসটি এখনও টিকে রয়েছে- যার সর্বশেষ উদাহরণ এই সিদ্ধান্ত। বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্তের সাথে শিক্ষা মন্ত্রণালয় একমত; কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যারা বিশেষজ্ঞ হিসেবে কর্মরত আছেন, তারা কীভাবে এ ধরনের একটি সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত হতে পারলেন তা প্রশ্নবোধক এবং বিস্ময়-উদ্রেককারী। এই পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঠিক কী আলোচনা হয়েছে তা যেমন জানা জরুরি, তেমনি শিক্ষা ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্তাব্যক্তিরা হুট করে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন কিনা, সেই প্রশ্নেরও উত্তর জানাও জরুরি। সন্দেহ নেই, কোনো কার্যক্রম গতিশীল করতে নির্বাহী আদেশ কিংবা অ্যাড-হকভিত্তিতে কাজের আলাদা গুরুত্ব রয়েছে, কিন্তু সেগুলো দৈনন্দিন কাজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখা উচিত। দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব পড়তে পারে এমন কাজে নির্বাহী আদেশ এবং অ্যাড-হকভিত্তিতে কার্যক্রম প্রয়োজনে আইন করে বন্ধ করে দেয়া দরকার।
সরকারের এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে একমত পোষণ করার পেছনে কিছু কারণ রয়েছে- তবে সেটি দীর্ঘমেয়াদের কথা চিন্তা করে। প্রথমত, এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণের পর শিক্ষার্থীকে মেডিক্যাল কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার প্রথাটি কার্যত এইচএসসি পরীক্ষার গুরুত্বকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে- যা বন্ধ হওয়া দরকার। দ্বিতীয়ত, এসএসসি বা এইচএসসি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের যেভাবে মূল্যায়ন করা হোক (হোক তা শত প্রশ্নবিদ্ধ), তার বিপরীতে এক ঘণ্টার মূল্যায়ন শিক্ষার্থীর অর্জিত জ্ঞান কিংবা দক্ষতা মূল্যায়ন করতে যথার্থ নয়। তৃতীয়ত, এইচএসসি পরীক্ষার পর একজন শিক্ষার্থী মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির জন্য প্রচণ্ড আর্থিক-মানসিক-সময়-শ্রম এবং বৌদ্ধিক বিনিয়োগ করে। এই বিনিয়োগটুকু আসলে করা উচিত এসএসসি এবং এইচএসসির পরীক্ষার আগে- তাতে বিষয়ভিত্তিক জ্ঞানের দক্ষতা শিক্ষার্থীদের একটু হলেও বাড়বে এবং মুখস্থভিত্তিক পড়ালেখার চর্চা কিছুটা হলেও কমবে। এরকম আরো কারণ দর্শানো যায়, কিন্তু ভর্তি পরীক্ষা বাতিলের পক্ষে উপর্যুক্ত কারণগুলো আপাতদৃষ্টিতে যথেষ্ট বলে মনে হচ্ছে।
প্রশ্ন হচ্ছে, ভর্তি পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত পোষণ করেও তাহলে কেন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের কারণকে সমর্থন করছি? মূল কারণ হলো বাতিলের পক্ষে সরকারের দর্শানো কারণ এবং এই সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়ার অসারতা। শিক্ষার যে কোনো ক্ষেত্রে এ ধরনের বড় সিদ্ধান্তে গ্রহণের পেছনে জোরালো যুক্তি থাকতে হয়। সরকার চাইলেই ভর্তি পরীক্ষার বিপক্ষে নানা জোরালো যুক্তি বের করতে পারে, তবে এর জন্য চটকদার ভঙ্গিতে মুখের কথার চাইতে গবেষণা ভিত্তিতে যুক্তি উপস্থাপন জরুরি। সরকার সেদিকে যায় নি, কারণ গবেষণা করে তাদের দাবিকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলে সময় প্রয়োজন যেটা সরকার কোনো কারণে করতে চাইছে না। তারা দোহাই দিচ্ছে কোচিং সেন্টারের। মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে কোচিং সেন্টারগুলো বড় সমস্যা বটে, কিন্তু তার জন্য ভর্তি পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্তটি পুরোপুরিই অযৌক্তিক। বর্তমান সরকার কোচিঙের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। চাইলেই মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সঙ্গে জড়িত কোচিং সেন্টারগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। কিন্তু তা না করে একজনের দোষ আরেকজনের ঘাড়ে চাপানোর মতো কোচিং বন্ধ করতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের বিপাকে ফেলেছে। তাও সমর্থনযোগ্য হতো যদি সিদ্ধান্তটি যথাযথ সময়ে জানানো হতো। বলা হচ্ছে, শিক্ষার্থীদের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল ও আরো কিছু বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে ভর্তির প্রক্রিয়া ঠিক করা হবে। যদি সেটাই হয়, তাহলে এক বছর আগে সরকারের এই বোধোদয় হলো না কেন? অনেক শিক্ষার্থীই মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির জন্য এ সময়টাতে জানপ্রাণ দিয়ে পড়ালেখা করে। এটি বহু বছরের চর্চা (যদিও সমর্থনযোগ্য নয়); কিন্তু হুট করে এ চর্চা বন্ধ করলে তা শিক্ষার্থীদের ক্ষতিগ্রস্ত করবে বেশি। কোনো প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতিযোগিতার শর্তাবলী জানিয়ে তৈরি হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সময় দিতে হয়। না হলে সিদ্ধান্ত যতো কল্যাণকামীই হোক না কেন, তা আদতে দুর্ভোগ বয়ে আনে। সবকিছুরই একটি সময় থাকে। ভালো সিদ্ধান্তও উপযুক্ত সময় এবং পরিপ্রেক্ষিতে গ্রহণ না করা হলে তা উল্টো ফল বয়ে আনতে পারে। সিদ্ধান্তগ্রহণকারী কর্তাব্যক্তিরা যদি এসব বিষয় বিবেচনা না করেন, তাহলে পড়ালেখার মৌলিক বিষয়গুলো নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার মতো যথাযথ যোগ্যতা ও দক্ষতা তাদের রয়েছে কিনা, কারো মনে সে সন্দেহ দেখা দিলে তা দোষের হবে না।
তাছাড়া এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের যেভাবে মূল্যায়ন করা হয় তাও প্রশ্নবিদ্ধ। সুতরাং দুটো পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে মেডিক্যাল বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করতে চাইলে এই পরীক্ষাগুলোর কিছু বিষয়ে পরিবর্তন আনা খুবই জরুরি। যে হারে এখন জিপিএ ৫ পাচ্ছে শিক্ষার্থীরা, তাতে এটা পরিষ্কার যে, নম্বরের পরিবর্তে প্রচলন করা এই জিপিএ পদ্ধতিও আগের পদ্ধতির মতোই সমভাবেই প্রশ্নবিদ্ধ। শতকরা আশি ভাগ নম্বর পেলেই যদি জিপিএ ৫ পাওয়া যায়, তাহলে ১০০ পাওয়ার জন্য প্রাণপণে পড়ালেখা করার প্রয়োজন পড়ে না এবং ঠিক এই ব্যাপারটি ঘটছে আমাদের শিক্ষার্থীদের মধ্যে। এই সমস্যার সহজ সমাধান করা যায় রিলেটিভ গ্রেডিং সিস্টেমের প্রচলন করে। জিপিএ পদ্ধতি প্রচলনের সময় বিষয়টি নিয়ে অনেক কথাবার্তা হয়েছে কিন্তু এতে সরকার আগ্রহী নয় বলেই মনে হয়েছে। অন্যদিকে দেশের সব বোর্ডের মূল্যায়ন পদ্ধতি এক নয়, প্রশ্ন করা কিংবা নম্বর দেবার ধরনও এক নয়। যেখানে সবগুলো বোর্ডের মূল্যায়ন পদ্ধতিই একরকম নয়, সেখানে কীসের ভিত্তিতে দেশের সব শিক্ষার্থীকে এক পাল্লায় মাপা হচ্ছে? মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা অন্তত একটি পাল্লায় মূল্যায়িত হওয়ার সুযোগ পেত। যতোদিন না এসএসসি ও এইচএসসির পাল্লাটা এক না হচ্ছে ততোদিন শিক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষা ছাড়া মূল্যায়ন করা যৌক্তিক হবে কিনা, তাও জোরালোভাবে ভাবা দরকার। তাছাড়া পাবলিক পরীক্ষাগুলোতে নম্বর প্রদানের ক্ষেত্রেও অনেক অভিযোগ শুনতে পাওয়া যায়। বোর্ড থেকে খাতা নেয়ার সময় পরীক্ষকদের নম্বর বাড়িয়ে দিতে বলা হয়। এটা না করলে অনেক পরীক্ষককে পরবর্তী বছর থেকে খাতা দেখতে দেয়া হয় না। এই অভিযোগগুলো হয়তো প্রমাণ করা যাবে না, কিন্তু এগুলো অনেকেই বলে। এখন যে শিক্ষার্থীকে ইচ্ছাকৃতভাবে নম্বর বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে, সে মেডিক্যাল কলেজে পড়ার উপযুক্ত কিনা, তা কে যাচাই করবে? তাছাড়া ঠিক এ কারণেই কোনো কোনো বোর্ডের শিক্ষার্থীরা কিছু অগ্রিম সুবিধাও পেতে পারে! শিক্ষাবিষয়ে একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, নানা দিক দিয়ে সিলেট বোর্ড দেশের অন্য বোর্ডগুলোর তুলনায় পিছিয়ে আছে। কিন্তু এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় দেখা গেল উল্টো চিত্র। সিলেট বোর্ডের এবারকার রেজাল্ট অনেককেই হতভম্ব করেছে।
সুতরাং শিক্ষার্থীদের জন্য একটি সমমানের মূল্যায়ন ব্যবস্থা চালু না করে তাদেরকে শুধু নম্বরের ভিত্তিতে স্বল্প সময়ের নোটিশে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির মতো এতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটি অবশ্যই পুনর্বিবেচনা করা দরকার। শিক্ষার্থীরা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছে। যে কোনো আন্দোলনেই আমাদের সর্বশেষ গন্তব্য ঢাকার রাজপথ, কারণ রাজপথে না নামলে সরকার কোনো আন্দোলন-প্রতিবাদে গা করে না। এর জন্য যে লাখ লাখ মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হয়, সেই চিন্তা সরকার বা আন্দোলনকারী কারোরই থাকে না। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা রাস্তায় না নেমে অন্য কোনোভাবে আন্দোলন করলে সরকার সেটিকে পাত্তা দিত বলেও মনে হয় না। সুতরাং উপায়ান্তর না থাকলেও শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনকে অনেকে সমর্থন জানাচ্ছে। কোচিং সেন্টারগুলো অবশ্য তাদের নিজস্ব ধান্ধা থেকে এ আন্দোলনকে সমর্থন করবে। সরকারের সেটিকে পাত্তা না দিলেও চলবে, কিন্তু হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে অপ্রস্তুত অবস্থায় একটি সিদ্ধান্তের মুখে ঠেলে দেয়ার অযৌক্তিক সিদ্ধান্তকে পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানাই। সেই সঙ্গে অন্তত তিন বছর পর থেকে যেন এই সিদ্ধান্তটি চালু করা হয় এবং এর মাঝে পাবলিক পরীক্ষাগুলোর মূল্যায়ন পদ্ধতিকে আরো উপযোগী, যথাযথ ও নিরপেক্ষ করা হয়, সেটি নিশ্চিত করারও আহ্বান জানাই।
শুরুতে যা বলছিলাম, নির্বাহী আদেশ বা অ্যাড-হক ভিত্তিতে নেয়া কোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত দেশের জন্য বুমেরাং হতে পারে। বরং এরকম সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে প্রয়োজনীয় গবেষণা এবং যাচাইবাছাই দরকার। দরকার এমন একটি কর্তৃপক্ষ যারা নানা ধরনের প্রাসঙ্গিকতা ও উপযোগিতা বিবেচনা করে দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের ভিত্তিতে নানা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। আমাদের দেশে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমের সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের (যারা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষার বিষয়টি তদারিক করে) কার্যক্রমের সমন্বয় কম বলে দেখা যায়। শিক্ষার একটি পর্যায়ের সঙ্গে অন্য পর্যায়ের সরলরৈখিক, উল্লম্ব, স্পাইরাল এবং অনুভূমিক যোগসূত্র থাকা দরকার। মন্ত্রণালয় এ কাজগুলো করতে পারে না, কারণ তাদের কাজের অধিকাংশ সময় নিয়ে নেয় প্রশাসনিক বিষয়গুলো। দেশে তাই একটি স্থায়ী শিক্ষা কমিশন কর্তৃপক্ষ গঠন করা জরুরি। এতে যেমন শিক্ষার নানা বিষয়ে দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপ গ্রহণ করা সম্ভব হবে, তেমনি নির্বাহী আদেশ বা অ্যাড-হকের ঝামেলাও দূর করা সহজতর হবে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, দেশে একটি স্থায়ী শিক্ষা কমিশন থাকলে আজকে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের এ দুর্ভোগ পোহাতে হতো না, দেখতে হতো না অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্তও।
মন্তব্য
পোস্টে একমত!!
প্রথমে যদিও সরকারের সিদ্ধান্তে একমত ছিলাম না কিন্তু পরে চিন্তা করে দেখলাম ঠিকই আছে। আমার মত ওয়ান নাইট ফাইট আর আযাদ স্যারের ইম্পর্টেন্ট দাগানো চাপ্টার পড়ে যারা পাশ দিছি তাদের জন্য খবরটা সুখকর না হলেও শেষ বিচারে হয়ত ভালই হবে। দেখা যাক!!
তবে আমার মনে হয় সরকার বাহাদুর আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল এই বিষয়ে, শুধু ঈদের আগের টাইমিংয়ের জন্য অপেক্ষা করছিল যাতে আন্দোলনের তেজটা ঝিমায়ে যায়। কারণ যখনই এই ঘোষণা দিত তখনই আন্দোলন হইত, এতে কোন সন্দেহ নাই।
সবচেয়ে ভাল লাগছে কোচিং ব্যাবসা বাই বাই!! এইজন্য।
সরকার যদি আগে থেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে কেবল আন্দোলনের ভয়ে এই কাজ করে থাকে, তাহলে সরকারকে মাইনাস। তবে কোচিং ব্যবসা বন্ধের জন্য পরীক্ষা-পদ্ধতি বাতিলের কারণটি হাস্যকর।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
ঠিক। কারণ, ভর্তি পরীক্ষা না নিয়েই তো কোচিং বাণিজ্য বন্ধ হচ্ছে না। কোচিং নানান উপায়ে হয়। যেমন:
ক) স্কুল কলেজ শিক্ষকদের কাছে বাধ্যতামূলক কোচিং: এটা না করলে স্কুলের পরীক্ষার খাতায় কম নম্বর দেয়, বোর্ডের পরীক্ষায় প্র্যাকটিক্যালে বাঁশ।
খ) নার্সারি থেকে শুরু করে প্রতি ক্লাসেই ভর্তি কোচিং: এটা চলছে, চলবে।
গ) ক্যাডেট ভর্তি জাতীয় কিছু স্পেশ্যল কোচিং: এটাও বন্ধ করার উপায় নাই।
ঘ) প্রি-ইউনিভার্সিটি কোচিং: ইউনিভার্সিটিতে ক্লাস শুরুর আগে পড়াশুনা এগিয়ে রাখার কোচিং।
ঙ) পাবলিক ইউনিভার্সিটি ভর্তি কোচিং: সব পাবলিক ইউনি।
চ) মেডিকেল ভর্তি কোচিং: মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য।
ছ) প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি ভর্তি কোচিং: অনেক প্রাইভেট ইউনিও ভর্তি পরীক্ষা নেয়।
উপরের শ্রেণীগুলোর মধ্যে ক হলো সবচেয়ে বড়ো এবং ফিক্সড ব্যবসায়। স্টুডেন্টদের জন্য এটা বাধ্যতামূলক। বর্তমানে চ বন্ধ করার কথা হচ্ছে। বাকিগুলো বহাল তবিয়তেই থাকছে।
আর কোচিং মানেই খারাপ জিনিস না। এইচএসসিতে সাজেশন করে পড়লেই এ প্লাস পাওয়া যায়। ফলে অনেক বিষয়ই ঠিকমতো বা মোটেই পড়া হয় না। ভর্তি কোচিং এই গ্যাপটা পূরণ করে।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
১০০% সহমত। যতদিন পর্যন্ত না সাজেসন পেয়ে নাম্বার বাড়ানোর এই কালচার টা ঠিক না হবে ততদিন পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষার বিকল্প নেই। তার জন্য আগে এস এস সি আর এইচ এস সি পরীক্ষা পদ্ধতি ঠিক ঠাক করতে হবে। যতগুলো কোচিং জীবনে করেছি তার মধ্যে সবচেয়ে কাজের ছিল ভর্তি পরীক্ষার কোচিং, ওখানে শিখেছি অনেক, বাকিগুলো তেমন কিছু শিখাতে পারেনি। তারপরও অন্য কোচিং বন্ধ না করে এটার পিছনে কেন লাগল বুঝলাম না।
অন্য কোচিং নিয়ন্ত্রণের একটা চেষ্টা কিন্তু চলছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এখন কয়জনকে পড়াতে পারবেন, তার একটি নিয়ম করে দেয়া হয়েছে। কোচিং বন্ধে হাইকোর্টেরও আদেশ রয়েছে। সার্বিক অর্থে কোচিং দৌরাত্ম্য কমাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটা উদ্যোগী ভূমিকা আছে, কিন্তু নানা দিক বিবেচনা করে তারা আস্তেধীরে পা ফেলছে বলে আমার ধারণা।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
আর কোচিং মানেই খারাপ জিনিস না। এইচএসসিতে সাজেশন করে পড়লেই এ প্লাস পাওয়া যায়। ফলে অনেক বিষয়ই ঠিকমতো বা মোটেই পড়া হয় না। ভর্তি কোচিং এই গ্যাপটা পূরণ করে।
আমারতো ধারণা ছিল ভর্তি পরীক্ষারও একটা "সাজেশন" বা "ইম্পোর্টেন্ট" থাকে। গত বছর যেটা আসছে সেটা এই বছর আসবে না এই টাইপের এবং ভাল কোচিং সেন্টারের সাজেশন খুব কাজে দেয় ভর্তি পরীক্ষায়!! এবং তারা সাজেশন পায় সরাসরি যারা প্রশ্ন করে তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন উপহারের বিনিময়ে। আমার অভিজ্ঞতা বলে মেডিকেল বা অন্য ভর্তির আগের রাতে ফাইনাল সাজেশন পাবার জন্য হাতে টাকা নিয়া নীলক্ষেতে রাত ৩টা পর্যন্ত দাড়াইয়া থাকা বিশেষ কোচিং সেন্টারের সাজেশন মতে!! পরেরদিন সেই সাজেশন থেকে কতটুকু প্রশ্ন আসছে সেইটা ইতিহাস!!
এখন প্রশ্ন হইল কোচিং ব্যবসার আগে কি ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হইছিল? যদি হয়ে থাকে তাইলে কতটুকু। আর প্রশ্নপত্র ফাঁস করার পিছনে কোচিং ব্যবসায়ীদের অবদান কতটুকু? আমারতো মনে হয় শতভাগ। কারণ তাইলে পরেরবার বিজ্ঞাপনে বলতে পারবে আমাদের সাজেশন থেক ৯০% প্রশ্ন কমন পড়ছে
সবকিছু মিলায়েই আমি উপরে বলছিলাম কোচিং ব্যাবসা (এইখানে শুধু মেডিকেল পড়তে হবে) বাই বাই!! আর ছাগুদের আইডোলজি বিতড়ন নাহয় বাদই দিলাম এখন। @গৌতম
আপনি বলাইদার কমেন্ট ধরে মন্তব্য করতে যেয়ে শেষে আমাকে ট্যাগ করে দিয়েছেন।
যা হোক, প্রশ্নপত্র ফাঁসের ব্যাপারে যেটা বললেন সেটা মনে হয় সত্যি। গতবার বা তার আগের বার শুভেচ্ছা কোচিং সেন্টারের মালিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল এই অভিযোগে। অনেকে রেটিনার বিরুদ্ধেও আঙ্গুল তুলে।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
সরকারের একটা চেষ্টা আছে সবগুলো নিয়ন্ত্রণে আনা। পারবে কি পারবে না, বা বন্ধ করা উচিত কি উচিত না- সেটা অন্য প্রশ্ন।
নির্ভর করে কোথাকার কোচিং। যেখানে বিদ্যালয় ব্যবস্থায় গুণগত মানে কিছু মনোযোগ দিলে কোচিঙে বড় ধ্বস নামে, সেখানে কোচিং মানে খারাপ। অন্তত আমার মতে।
ঠিক এ কারণেই এই ভর্তি পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে মূল্যায়ন ব্যবস্থা বদলানোর কথাটা বলেছি।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে ভর্তি পরীক্ষা বাদ দেয়ার কোন সুযোগই নেই। কয়েকটা বড় কারন বলি-
১। আমাদের মেডিকেলের আসন সংখ্যা অনেক কম। আর সব মেডিকেল কলেজ সমান নয়। একজন গরীব ছাত্রের জন্য প্রাইভেট মেডিকেল অপশনই হতে পারে না। সরকারি মেডিকেল গুলোর প্রতিটিতে আসনসংখ্যা মাত্র ১৫০। এজন্য যে ফাইন গ্রেইনড অর্ডারিং দরকার পাবলিক পরীক্ষা সেটা দিতে পারছে না।
২। রিলেটিভ গ্রেডিং এর ইউটোপিয়া আমাদের দেশে কোনদিন হবে না। কারন, জিপিএ ৫ একটা পলিটিক্যাল ব্যপার। সরকার শিক্ষাক্ষেত্রে নিজেদের সফলতা জিপিএ ৫ এর সংখ্যা দিয়ে মাপে। তাই, বছর বছর জিপিএ ৫ বাড়তেই থাকবে - এবার ৬০ হাজার হয়েছে, কয়েক বছরেই লাখ ছাড়াবে। তাই পাবলিক পরীক্ষার খোল-নলচে বদলাবে এমন আশা অমূলক। প্র্যাকটিকেল পরীক্ষার নামে তামাশার কথা না হয় নাই বললাম।
৩। অস্পষ্টতা দূর্ণীতির সবচেয়ে ভালো নিয়ামক। যদি ৬০,০০০ থেকে কয়েকশ বেছে নিতে হয় - প্রক্রিয়াটা অনেকখানিই ঘোলাটে হবে। যে মন্ত্রনালয় স্রেফ ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নটা পাহাড়া দিয়ে রাখতে পারে না - ঘুষের লোভ এড়িয়ে, তারা দূর্ণীতির এই মহাসুযোগ কাজে লাগাবে না - এমনটা হতেই পারে না।
৪। জিপিএ ৫ এর এই যুগে ছাত্ররা পুরো বই পড়ে না। সায়েন্সের সাবজেক্টগুলোতে ৮০ পাওয়া সহজ, তাই এসব বিষয়ে তাদের দূর্বলতা অনেক বেশি। বিজ্ঞানের বই ভালোভাবে পড়ার একমাত্র ইনসেনটিভ ছিল ভর্তি পরীক্ষা। সেটা তুলে দিলে স্নাতক পর্যায়ে বিজ্ঞান ভালো জানা ছাত্রই খুজে পাওয়া যাবে না। নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে পাওয়া খবরে জানি, জিপিএ ৫ এর প্রভাবে, বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষায় দেখা যায়, অনেক ছাত্রই ম্যাথ, ফিজিক্স, কেমিস্ট্রিতে অনেক খারাপ করে। ভর্তি পরীক্ষা এমন শর্টকাটে পাওয়া জিপিএ ৫ ওয়ালাদের দৌড়াত্ম কমাতে খুবই কার্যকরী।
৫। ভর্তি পরীক্ষায় একটা সেকেন্ড চান্স পাওয়া যায়। একবার না হলে পরের বারও দেয়া যায়। কিন্তু কোন কারনে এসএসসি বা এইচএসসি কোনটাতে একটা সাবজেক্টে জিপিএ ৫ না পেলে আর কোন সুযোগই থাকবে না। এমনটা হওয়া উচিত না।
এবার এখনকার সিস্টেমের একটা ভালো দিক বলি। এখনকার মেডিকেল পরীক্ষায় ভাইবা নাই - তাই দূর্ণীতির সুযোগ কম। ভর্তি পরীক্ষায় ১০০ আর এসএসসি, এইচএসসি মিলে ১০০ - তাই পাবলিক পরীক্ষার গুরুত্বও থাকছে। আর তারচেয়েও বড় কথা প্রক্রিয়াটা ভীষনভাবে ব্যর্থ হওয়ার কোন নমুনা এখনো দেখা যায়নি। যেখানে পাবলিক পরীক্ষা প্রায় ব্যর্থ বলা যায় - যে সিস্টেম ৬০,০০০ জনকে সমান মেধাবি বলে - তা আর যাই হোক কোন মেধার ইন্ডিকেটর হতে পারে না।
একদম একমত।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
সহমত।
ভাই, "ব্যর্থ" বলতে সবাই যুক্তি দিতেছে প্রশ্নপত্র ফাঁসের কথা।
আমি একটা ব্যপার বুঝি না, ভর্তি পরীক্ষা কি শুধু মেডিক্যালেই হয় নাকি? দেশে আরও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় আছে, হাজার হাজার ছাত্র পড়ালেখা করতেছে সেখানে কি ভর্তি পরীক্ষা হয় না? এমনতো কখনই শুনা যায় নাই যে সেখানে প্রশ্নপত্র লিক হইছে।
এই মেডিক্যাল ওয়ালারা এই পরীক্ষাই যদি ঠিকমত নিতে না পারে, তাইলে এরা এদের সংস্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় গুলারে পরীক্ষার দায়িত্ব দিয়ে দিলেই পারে (যেমন ডিএমসির পরীক্ষা নিবে ডিইউ, আরএমসির পরীক্ষা নিবে আরইউ ইত্যাদি)।
লিক হয়েছে ভাই। বছর দুয়েক আগে ঢাবির ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন লিক হয়েছে। আর মেডিক্যালওয়ালারা ঠিকমতো পরীক্ষা নিতে পারে নাই, এমন অভিযোগ উঠে নাই। অভিযোগের অঙ্গুলি উঠেছে কোচিং সেন্টারগুলোর দিকে, যে কারণে পরোক্ষভাবে এই দায় মেডিক্যালওয়ালাদের ঘাড়েও চাপে।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
১। বর্তমান মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষাও 'ফাইন গ্রেইনড অর্ডারিং' মাপতে পারে না। শিক্ষাবিজ্ঞানের ধারণাতে আমরা এটাকে বলি- পরীক্ষার্থী বেশি সংখ্যক হয়ে গেলে বাদ দেয়ার কৌশল।
২। একমত। এবং একটা বড় সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে সে কারণেই।
৩। এই প্রক্রিয়ায় বরং দুর্নীতি কম হবে বলে মনে হচ্ছে। কারণ নির্দিষ্ট মানদণ্ডের বাইরে তারা যেতে পারবে না। তবে এই মানদণ্ডে একাধিক পরীক্ষার্থী থাকলে কী করবে সেটা এখনো পরিষ্কার না।
৪। ঠিক। এবং সে কারণেই এইচএসসি পরীক্ষাকে কার্যকর করতে বলছি। ওটা পাবলিক পরীক্ষা, ওটাকে কার্যকর করলে আখেরে লাভবান হবে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী।
৫। এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। এই বিষয়টা নিয়ে সরকারের আরো ভাবা দরকার।
মেডিক্যাল ভর্তি প্রক্রিয়াটা ভীষণভাবে ব্যর্থ না হলেও ওটা এমন কোনো পরীক্ষা না যেটা শিক্ষার্থীর জীবনে খুব বেশি কিছু অ্যাড করে। বরং এর কারণে অনেকে পাবলিক পরীক্ষাতে কিছুটা হলেও উদাসীনতা দেখায়।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
১। ভর্তি পরীক্ষার উদ্দেশ্য হলো ভবিষ্যতে একজন ছাত্র তার প্রফেসনের জন্য কতটা উপযুক্ত হবে সেটা যাচাই করা। কিন্তু লং রানে কে বেশি উপযুক্ত সেটা বোঝার কোন সহজ উপায় নেই বলে আমরা একটা হিউরিস্টিক ব্যবহার করি - রিলেভেন্ট বিষয়ে কার জ্ঞান কতটা বেশি। ভর্তি পরীক্ষা বাদ দেয়ার যুক্তি হতে পারে এই যে, রিলেভেন্ট জ্ঞান পরিমাপ করার জন্য এসএসসি, এইচএসসিই যথেষ্ট, বাড়তি পরীক্ষার দরকার নাই। এই যুক্তির অসারতা বোঝার জন্য দুটো সহজ প্রশ্ন করুন।
ক) যথেষ্ট জ্ঞান ছাড়াই, পুরো বই না পড়েই জিপিএ ৫ পাওয়া সম্ভব কি? উত্তর হলো হ্যা
খ) যথেষ্ট জ্ঞান ছাড়াই, পুরো বই না পড়েই ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করা সম্ভব কি? উত্তর হলো না
যতদিন পর্যন্ত পাবলিক পরীক্ষায় যথেষ্ট না পড়েই সর্বোচ্চ ভালো ফলের সুযোগ থাকবে, ততদিন ভর্তি পরীক্ষা লাগবেই।
৩। কোচিং সেন্টারগুলো মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন করে না, ফলাফল মূল্যায়নও তারা করে না। তারা বড়জোড় ভর্তি প্রক্রিয়ার সাথে জড়িতদের ঘুষ দিয়ে প্রভাবিত করতে পারে।এই ঘুষের প্রভাব এতটাই যে সরকার এর কোন প্রতিকার খুজে পাচ্ছে না। যখন অসংখ্য ছাত্রের কোয়ালিফিকেশন একই হবে, তখন অর্ডারিং করতে ঘুষের লেনদেন হবে না, সেটা আশা করার কোন কারন নেই।
৪। এসএসসি, এইচএসসি পরীক্ষা পদ্ধতির উন্নতি করার জন্য মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা কোন বাধা নয়। সেজন্য আগে ভর্তি পরীক্ষা বাতিল করে এরপর পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে ভাবার কোন যৌক্তিকতা নেই। বরং আগে এসএসসি, এইচএসসি রাজনৈতিক মারপ্যাচ এড়িয়ে ভালো হোক, এরপর মেডিক্যালের ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে ভাবা যাবে।
ভর্তি পরীক্ষা অবশ্যই একজন ছাত্রের জীবনে জরুরী কিছু অ্যাড করে। এইচএসসিতে বিজ্ঞান বিষয়ক সিলেবাসে যা কিছু আছে ভর্তি পরীক্ষার সুবাদে সেটা ভালো করে পড়া হয়ে যায়। এই পড়াটা স্নাতক পর্যায়ে কাজে দেয়।
ভর্তি পরীক্ষায় মোট ২০০ নম্বর - ১০০ হলো এসএসসি, এইচএসসির জিপিএ, আর ১০০ এমসিকিউ। দুটোতে জিপিএ ৫ পেলে ১০০ তে ১০০ পাওয়া যায়। এমসিকিউতে নম্বর তোলার চেয়ে এই ১০০ তে ১০০ পাওয়া বেশি সহজ। বলতে চাইছেন এর পরেও কেউ কেউ এমন করে ভাবে, এসএসসি, এইচএসসির জিপিএ থেকে ১০০ নম্বরে কম পেলে কিছু আসে যায় না। এটার জন্য খুব একটা পড়ে কাজ নেই। পরে ভর্তি পরীক্ষার ১০০ নম্বরে পড়ে ফাটায় ফেলবো।
--------অসাধারণ! প্রশ্ন দুটির উত্তরে একমত হলে সকল বিতর্কের এখানেই অবসান হওয়া উচিত ।
আপনি যে সব কারণে ভর্তি পরীক্ষার না হবার পক্ষে তার সাথে দ্বিমত পোষণ করছি।
১. আপনি কেন মনে করলেন ১ ঘণ্টার পরীক্ষা এক জন ছাত্রের মেধা যাচাই এর জন্য যথেষ্ট নয়। এটি কি কোন গবেষণা লব্ধ জ্ঞান থেকে বলছেন নাকি এইটা আপনার ব্যক্তিগত ধারণা।
২. এস এস সি এবং এইচ এস সি পরীক্ষার পাস করে কেউ মেডিকেলে ভর্তি হয়, কেউ
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়, কেউ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়, কেউবা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। এসব প্রতিষ্ঠানের মান একটা থেকে আরেকটা অনেক পার্থক্য। ধরা যাক এস এস সি এবং এইচ এস সি পরীক্ষা দিয়ে এক জন ছাত্রের মেধার মান যাচাই করতে চাইলাম। তাহলে এমন কিছু প্রশ্ন রাখা উচিত যেটা শুধু সবচেয়ে মেধাবীরা পারবে, এমন কিছু প্রশ্ন রাখা উচিত যেটা মধ্য এবং সবচেয়ে মেধাবীরা পারবে, এমন কিছু প্রশ্ন রাখা উচিত যা পারলে পাস করা যাবে। মূল কথা ধরা যাক বিভিন্ন লেভেলের প্রশ্ন করে মেধার বিভিন্ন লেভেল যাচাই করতে চাইলাম। তাহলেও কি সমস্যার সমাধান হবে? আমার ধারণা বিষয়টা কঠিন হবে। কারণ স্নাতক পর্যায়ে একটা প্রতিষ্ঠান থেকে আরেকটির মানের পার্থক্য। এর কারণে সবার ইচ্ছে থাকে সব চেয়ে সেরাটাতে পড়ার। সবাই চায় ডি.এম. সি. ভর্তি হতে তাহলে এমন কিছু প্রশ্ন এস এস সি এবং এইচ সি রাখা উচিত যেটার উত্তর শুধুমাত্র ১৫০ পারবে এবং তাদেরকে সুযোগ দেয়া হবে ডি এম সি তে পড়ার। যত গুলো স্নাতক প্রতিষ্ঠান রয়েছে এভাবে করতে চাইলে কত গুলো লেভেল প্রশ্ন করা উচিত অনুমান করতে পারছেন কি? আপনার কি মনে হয় সেইটা সম্ভব?
৩. এস এস সি এবং এইচ এস সির খাতার মূল্যায়ন নিয়েও প্রশ্ন করা যায়। যারা খাতা দেখেন সবার যোগ্যতা সমান না। ধরা যাক একটা অঙ্ক গতানুগতিক নিয়মে সমাধান না করে বিকল্প নিয়মে সমাধান করলেন একজন ছাত্র। শিক্ষক বুঝতে না পেরে কম নম্বর দিয়ে দিলেন। তাহলে কি মেধার সঠিক মূল্যায়ন হল?
পোস্টের সাথে অনেকটাই একমত।পুরোটা না। ভর্তি পরীক্ষা বাদ দিতে চাইলে সেটা করা উচিৎ অন্তত ৪ বছর পর থেকে। এখন যারা ক্লাস এইট এ পড়ে তাদের থেকে করা যায় । এবং ভর্তির জন্য এসএসসি এবং এইচএসসি এর রেসাল্ট কেমন হতে হবে , কোনটাতে কেমন মার্কস থাকতে হবে, সেটা এখন জানিয়ে দিলে ছেলে মেয়েরা সেভাবে পড়াশুনা করতে পারবে। আর পাবলিক পরীক্ষা দুটোর মানও বাড়াতে হবে। একই প্রশ্নে পরীক্ষা নেয়া হোক, খাতা দেখার মান কাছাকাছি হোক সব জায়গায়।
তারপরও কিছু কথা থাকে। আমার স্কোর অনেক ভাল ছিল, ভর্তি পরীক্ষা বেশী ভাল না দিয়েও মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছি, আমার বেশ কিছু ক্লাসমেট আছে যাদের স্কোর খারাপ ছিল ভর্তি পরীক্ষা খুব ভাল দিয়ে সুযোগ পেয়েছে। তারা এখন অনেকেই অনেক বেশী ভাল রেসাল্ট করছে। অনেকেই গ্রামের প্রত্যন্ত জায়গা থেকে আসে, আমাদের মত ভাল স্যার , পরিবেশ, সুযোগ কোনটাই পায় না। গ্রামের একটা ছেলে যেখানে গাজী আজমল স্যার এর বই পড়েছে , আমরা সেখানে গাজী আজমল স্যারের কাছেই পড়েছি( এটা জাস্ট একটা উদাহরণ দেয়ার জন্য বলা, তার কাছে পড়লেই ভাল হবে তা না) । আমি যেটা বলতে চাইছি তা হল, আমরা সবাই তো সমান লেভেল এর সুযোগ পাচ্ছি না। এদেশে সব স্কুল গুলো যদি ভিকারুন্নেসা বা আইডিয়াল এর মত হত, সব কলেজ এর মান যদি নটরডেমের কাছাকাছি থাকত তাহলে ভর্তি পরীক্ষার প্রয়োজন ছিল না। এরকম সুযোগ না পাওয়া অনেকের জন্য ভর্তি পরীক্ষা একটা ভাল সুযোগ তৈরি করে নিজেকে প্রমানের জন্য। হুট করে সেটা কেড়ে নেয়াটা ঠিক হচ্ছে না।
আবার অনেকেই খাতা দেখে, নকল করে ভাল স্কোর নিয়ে আসে, কিন্তু আদৌতে তারা পড়াশুনা বেশী করেনি, এ সমস্ত ছেলে মেয়েরা ভর্তি পরীক্ষার ছাঁকনিতে বাদ পরে।
আবার আমাদের পাবলিক পরীক্ষায় যে প্রশ্ন আসে সেটাও সবার কথা মাথায় রেখে, যে পাশ করবে আবার যে ৯০ পাবে সবার জন্যই সেখানে প্রশ্ন থাকে। মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্ন আসে সবচেয়ে ভাল ২৩০০ ছাত্র বেছে নেয়ার উদ্দেশে ।আমাদের সিট সংখ্যা যেহেতু কম তাই এরকম ছাঁকনির তো অবশই প্রয়োজন রয়েছে।
আর ভর্তি পরীক্ষা থাকলেও তো মেডিকেলের ভর্তির ক্ষেত্রে এসএসসি এবং এইচএসসি এর একটা অংশ যোগ হয়, তাই পাবলিক পরীক্ষার গুরুত্ব থাকছে না , এই কথা বলাটা ঠিক না।
আপনি বলছেন তার বিপরিতে, কিন্তু বিপরিতে কেন হবে, এস এস সি এবং এইচ এস সি এই দুটার সাথে সাথে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমেও একটা মূল্যায়ন হয়। যারা পাবলিক পরীক্ষা গুলোতে ভাল নাম্বার পায় তারা অবশই প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকে।
সবাই এক ঘণ্টার পরীক্ষা যথেষ্ট না কেন বলছে বুঝলাম না। পৃথিবীর কোন দেশে পরীক্ষা সারাজীবন ধরে হয়? পরীক্ষা তো কয়েক ঘণ্টারই হবে। কিন্তু সেই এক ঘণ্টা পরীক্ষা দিতে গিয়ে প্রিপারেসন তো নিতে হচ্ছে সারাজীবন ধরেই। আর এক ঘণ্টার পরীক্ষা যথেষ্ট না হলে সময় বাড়ানো হোক। দরকার হলে কয়েকদিন ধরে পরীক্ষা নিক। কিন্তু বাদ দেয়ার কি মানে? আমরা এমবিবিএস কোর্স এ তিনটা প্রফ মিলিয়ে কয়েকশো দিন পরীক্ষা দিয়ে এসেছি। এখন আবার সেই একই বই পরে এফসিপিএস পরীক্ষা দিতে হচ্ছে কয়েক ঘণ্টার। তাহলে কি এফসিপিএস এর দরকার নেই? আমি এই কথাগুল ঠিক বুঝলাম না। এটা কেমন যুক্তি হল?
মোদ্দা কথা, ভর্তি পরীক্ষা বাতিল করতে চাইলে আগে অন্য সমস্যা গুলো ঠিক করে নেয়া উচিৎ। যতদিন পর্যন্ত সেসব ঠিক হচ্ছে না ততদিন পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষার বিকল্প নেই। আর আমাদের দেশের মত একটা দেশে যেখানে সবচেয়ে ভালোদের সংখ্যাই ৬০০০০, বাকিদের কথা বাদ থাক, এদের ভিতর থেকেই মাত্র ২৩০০ খুঁজে নিতে হয় , সেখানে এস এস সি এবং এইচ এস সি এর পরে অবশই আরও একবার পরীক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়নের প্রয়োজন রয়েছে।
ভর্তি পরীক্ষা বন্ধের পক্ষের একটা কারণও ভ্যালিড না।
ভর্তি পরীক্ষায় বসার জন্য এসএসসি এইচএসসিতে একটা মিনিমাম গ্রেড পাওয়ার দরকার হয়। তাছাড়া ভর্তি পরীক্ষার নম্বরের সাথে এসএসসি এইচএসসির গ্রেডের ওপর নির্ভর করে একটা অংশ যোগও করা হয়। তাহলে এই পাবলিক পরীক্ষার গুরুত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে কোথায়?
আর পাবলিক পরীক্ষার মডেল ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার বা উচ্চশিক্ষিত তৈরির একমাত্র উদ্দেশ্যে করা না। সুতরাং স্পেশাল বিষয়ের জন্য স্পেশাল পরীক্ষা দরকার।
এক ঘন্টার মূল্যায়ন যথার্থ না, এটা কি কোনো গবেষণায় পাওয়া গেছে? অর্থাৎ ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে বিপুল হারে যোগ্য স্টুডেন্ট বাদ পড়ছে আর অযোগ্যরা ভর্তি হচ্ছে? সেরকম হলে ভর্তি পরীক্ষাকে মডিফাই করা দরকার।
তবে উসাইন বোল্টকে চেনার জন্য সাড়ে ৯ সেকেন্ডই যথেষ্ট। সে শ খানেক বার দৌঁড়ালে দুয়েকবার ফলস স্টার্টের কারণে বাদ পড়তে পারে, দুয়েকবার ইয়োহান ব্লেকের কাছে হারতে পারে; কিন্তু অধিকাংশ সময়ই ওই সাড়ে ৯ সেকেন্ডই তাকে জাজ করার জন্য এনাফ।
এসএসসি এইচএসসি পরীক্ষার আগে ছাত্ররা কি ঘোড়ার ঘাস কাটে নাকি? এইচএসসির যে সিলেবাস, তা দেড় বছরে শেষ করা সম্ভব না। সুতরাং ছাত্ররা সবসময়ই চাপে থাকে। এরপরেও পুরো সিলেবাস শেষ করা সম্ভব না। সুতরাং তাদেরকে সাজেশন করে কিছু ধরে কিছু বাদ দিয়ে পড়তে হয়। বিষয়ভিত্তিক দক্ষতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এইচএসসির পরের কোচিং খুব কাজে লাগে। ভর্তি পরীক্ষার জন্য আগে বাদ দেয়া বিষয়গুলোও ভালো করে পড়তে হয়।
সিরিয়াসলি, বাংলাদেশের পাবলিক পরীক্ষার কনটেক্সটে ভর্তি পরীক্ষা বাদ দেয়ার পক্ষে কোনো গ্রহণযোগ্য যুক্তিই নাই। শুধু পাবলিক পরীক্ষা সংস্কার করেও এটা করা সম্ভব না। কারণ, আমাদের উচ্চশিক্ষার সুযোগের চেয়ে ছাত্রসংখ্যা অনেকগুণ বেশি। ফুলানো ফাঁপানো গ্রেডের মূল কারণ প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি বিজনেস। কিন্তু সরকার এখন সেটা আবার তাদের সাফল্য-ব্যর্থতার সূচক হিসেবে বিবেচনা করায় যে রেজাল্ট বিস্ফোরন হচ্ছে, তাতে করে প্রাইভেটেও পরিস্থিতি সামাল দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
একটা পরীক্ষায় 'পাস' করলেই একজন ছাত্র 'গুড এনাফ' হিসেবে বিবেচিত হওয়া উচিত। কিন্তু রেজাল্ট বিস্ফোরণের কারণে এমন অবস্থা হয়েছে যে সর্বোচ্চ গ্রেডধারীদের জন্যই পর্যাপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নাই, বাকিরা অলরেডি খরচের খাতায়।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
মেডিকেলের জন্য এক ঘন্টার ভর্তি পরীক্ষার চেয়ে বোর্ডের দুই ডজন পরীক্ষার যথার্থতা বেশি - এই ধরনের বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি বোধগম্য নয়, বিশেষত যেখানে দুটি পরীক্ষার উদ্দেশ্য, ধরন ও মান দৃশ্যতই অনেক ভিন্ন । বিষয়টা অনেকটা সবচেয়ে দ্রুতগতির দৌড়বিদকে খুঁজতে ১০০ মিটারের পরিবর্তে ডেকাথলন প্রতিযোগিতার আয়োজন করার মত ব্যাপার।
ভালো হয় candidate short-list করে (বুয়েটের মতো) পরীক্ষা ন্ওেয়া।
শর্ট লিস্ট করা তো কর্তৃপক্ষের সমস্যা না। কর্তৃপক্ষের সমস্যা কোচিং।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
ভর্তি পরীক্ষা, পড়ালেখা, প্র্যাকটিক্যাল, ভাইবা ইত্যাদি হুজ্জতি না করে প্রতি বছর হাজারখানেক লোককে এমবিবিএস ডাক্তার ঘোষনা করে দিলেই কিন্তু ল্যাঠা চুকে যায়।
অভিমতের সাথে সহমত এবং একমত।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
_____________________
Give Her Freedom!
ধন্যবাদ।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
তথাস্ত।
এস এস সির এপ্লাস নিয়া কলেজে- এইস এস সির এপ্লাস নিয়া বুয়েট, মেডিকেল, বিশ্ববিদ্যালয়ের বারান্দায় (মেডিকেলে এপ্লাস দেখিয়ে ভর্তি হৈতে পারলে কয়দিন পর অন্য জায়গাতেও হৈতে পারবে) না হয় উঠলাম। কিন্তু এরপরের ফার্স্ট ক্লাস দেইখাই লুকজন চাকরি বাকরি দিতে চায়না। বিসিএস/ আইএসএসবি/ নিয়োগ পরীক্ষা- আরও কি কি জানি দিতে কয়। লুকজন খুব খ্রাপ। এইটারও একটা বিহিত হওয়া দরকার।
বিসিএস একটা ফালতু পরীক্ষা। নিয়োগ পরীক্ষায় কিছু বিশেষ দিক পরীক্ষা করা হয়। আইএসএসবি বরং তুলনামূলকভাবে অনেক দিক কভার করে। ...পড়াশোনার জন্য পরীক্ষাপদ্ধতি আর চাকুরির পরীক্ষা দুটোর উদ্দেশ্য ও পদ্ধতি ভিন্ন হওয়াই স্বাভাবিক।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
পড়াশোনার পরীক্ষাপদ্ধতির কি কি উদ্দেশ্য, জানতে পারি কি?
ধরা যাক, একজন ভালো মতন ডাক্তারি পাশ দিল। এইবার ডাক্তার হিসাবেই একটা চাকুরি খুঁজতে গেলো। চাকুরিদাতা বলল- সার্টিফিকেট হইলেই হবে না। একটা পরীক্ষা দিতে হবে। এইখানে কোন কোন যুক্তিতে চাকুরি দেবার আগে সে পরীক্ষা নিতে চাইতে পারে- যেখানে বেচারা ডাক্তার দস্তুরমত সার্টিফিকেট পাবার জন্য দরকারমত সব পরীক্ষা দিয়ে পাশ করে আসছে?
যদি বলা হয় প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে তাঁর বিষয়ের উপরে জ্ঞানের গভীরতা মাপতে একটা পরীক্ষা নেয়া দরকার (একজন ডাক্তারকে নিশ্চয়ই সুমন চাটুজ্জের গানের সঞ্জীব পুরোহিতের মতন ২৫ কি মি হাঁটতে বলার কারন নাই )। সেই মাপামাপিতে সার্টিফিকেটের গ্রেডিং জুতসই হচ্ছে না। তাইলে এই সার্টিফিকেটগুলো দিয়ে আমরা আগে কি মাপলাম?
আর মেডিকেলের সম্মানিত শিক্ষক মহোদয়গণ কি মেপে তাঁকে সার্টিফিকেট দিলেন, যেই সার্টিফিকেট থাকার পরেও চাকুরির পরীক্ষা দিতে হয়?
পড়াশোনা-সম্পর্কিত পরীক্ষায় বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান মাপা হয়, চাকুরিতে এর বাইরেও নানা ধরনের দক্ষতা কিংবা আগ্রহ দেখার স্কোপ থাকে।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
আমি একটা অন্য প্রসঙ্গে কথা বলতে চাই। তেড়ে আসবেন না যেন।
যতদূর দেখেছি, ঢাকা শহরের অনেক নামকরা স্কুল-কলেজে প্র্যাকটিক্যাল ক্লাশ করানো হয়না, কিন্তু এসএসসিও এইচ এসসি তে সব ছাত্রই প্র্যাকটিক্যালে পুরো নম্বর পায় এবং আমার জানা মতে এটা অ্যারেঞ্জড। কোন মফস্বল শহরে অথবা গ্রামাঞ্চলে নিশ্চয় এ সুযোগটি নেই। কাজেই এখানেইতো এক ধরণের বৈষম্য বিদ্যমান। তুলনামূলক ভাল ফলাফল করার এটাও একটা পজিটিভ সুযোগ বটে।
যাহোক লেখাটার জন্য লেখককে ধন্যবাদ। এর মাধ্যমে অনেক বিষয় উঠে আসছে।
কী মুশকিল! তেড়ে আসার প্রসঙ্গ আসে কেন! ঢাকা শহরের প্র্যাকটিক্যাল ক্লাশের নম্বর নিয়ে আপনার বক্তব্যের সাথে তো দ্বিমত নেই! তবে ঘটনাটা মফস্বল শহরেও ঘটে। আমার বিদ্যালয়ে এবং উপজেলার অন্য সব বিধ্যালয়ে এই ধরনের অ্যারেঞ্জড মার্কিং-এর ঘটনা ঘটে।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
নতুন মন্তব্য করুন