কিছু বিচ্ছিন্ন ভাবনা

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বিষ্যুদ, ১৩/১২/২০০৭ - ৭:০৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বেশ কিছুদিন ধরেই এলোমেলো নানান ভাবনা মাথায় খেলছে। বেশ একটা চাপ অনুভব করছি। কিন্তু চাপটা যে ঠিক কিসের বুঝতে পারছি না। জামাতের মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা, নাকি শর্মিলা বোসের ঔদ্ধত্য, না সিটিজির আড়ালে আর্মির (দুঃ)শাসন নাকি সিডর-পরবর্তী অবস্থা, না একেবারেই ব্যক্তিগত কারণ: বাচ্চাদের শরীর ভালো না।

কারণটা যাই হোক না কেন এই সবগুলো কারণের কাছেই নিজে খুব অসহায় বোধ করছি। জামাতের শয়তানী যতোই চামড়ার ভিতরে চিড়বিড় করুক না কেন --- এই চিড়বিড়ানি ছাড়া কিছুই তো করা যাচ্ছে না ওদের রুখতে। এই এতোদিন পরও ওরা বলতে পারে : মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করেছিলো নারী নির্যাতন আর লুটপাট করার জন্য বা বাংলাদেশে কোন যুদ্ধাপরাধী নাই কারণ যুদ্ধ হয়েছিলো ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে --- এইসব কথা শুনছি মাথায় আগুন ধরে যাচ্ছে, বিস্তর চিল্লাফাল্লা করছি তারপর এক সময় দম ফুরিয়ে যাচ্ছে। যেমন আমাদের সিটিজি সরকারের দম ফুরিয়ে গেলো যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রশ্নে। আকাশে বাতাসে বেশ একটা ঢেউ উঠেছিলো, মনে হচ্ছিলো এবার বোধহয় হয়েই গেলো; কিন্তু কী আর করা দম শেষ!

বা শর্মিলা বোস, সেই বা কোন উদ্দেশ্য নিয়ে একের পর এক ভুল মেথোডলজিতে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বাংলাদেশের বাঙ্গালীদের সবচেয়ে স্পর্শকাতর জায়গায় নুনের ছিটা দিচ্ছে। এক রাতে রাগে ধড়ফড় করে উঠে বসা ছাড়া আর তো কিছু করা গেলো না।

আর আমাদের আশা-ভরসার সিটিজি সরকার এই যে শিক্ষকদের জেলে পুরলো, আবার কাউকে ছেড়ে দিলো, কাউকে ছাড়লো না... এই প্রহসেনরই বা অর্থ কী? সিটিজির আড়ালে সিপাহী সরকারের মতলব নিয়ে কোন কথা তো বলা যাচ্ছেই না বরং মৌন মিছিল করার অপরাধেও ধরে নিয়ে যাচ্ছে।

আর সিডার, সিডারের কাছে এসে তো সবচেয়ে হাত-পা বাঁধা। হাজার হাজার মানুষ ঘর ছাড়া, খাবার ছাড়া, স্বজন ছাড়া --- কিন্তু আমি, যাকে সিডার প্রত্যক্ষভাবে আঘাত করেনি, তার দিন তো চলেই যাচ্ছে হেসে-খেলে আমোদ করে। নিজের কনশান্সকে ঠান্ডা করছি নানান কায়দায়। সিডারের জন্য ধুন্ধুমার অনুষ্ঠান করছি, টাকা তুলছি আরো কতো কী (?)!

তবে একটা কথা না বলে পারছি না, ডিসেনসিটাইজড হওয়ার নামে আমাদের কিছুই ছুঁতে পারছে না। দেশের কাহিল অবস্থা না, মানুষের বিপর্যয় না, কিছুই না। এইসব কিছুর পাশ দিয়েই হুঁশ করে বেরিয়ে যাচ্ছি নিজের চালচুলা নিয়ে। আমাদের হয়েছে গোল্ড ফিশের দশা: পাঁচ সেকেন্ডের স্মৃতি --- সবকিছুই আবার ঘুরেফিরে ঘটছে কিন্তু পাঁচ সেকেন্ড পরেই স্মৃতিভ্রষ্ট হচ্ছে বলে কিছুই আর পরে মনে থাকছে না।

শামসুর রাহমানের কবিতায় আমাদের স্পষ্ট চেনা যায়:
সরকারী বাসে চড়ছি,
দরকারী কাগজ পড়ছি
কাজ করছি, খাচ্ছি দাচ্ছি, ঘুমোচ্ছি, কাজ করছি
খাচ্ছি দাচ্ছি...
ঝাঁকের কই ঝাঁকে মিশে যাচ্ছি।


মন্তব্য

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

অনেকগুলা কঠিন সত্য কথা বলে ফেলসেন অল্প পরিসরে। লেখকের নামটা কি?

-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ সুবিনয়।

এই অধমের নাম অতন্দ্রিলা, থাকি লন্ডনে, ঘোরাফেরা করি সচলায়তনে --- লেখাগুলো পড়তে ভালো লাগে।
এক সময় নিজেও লিখতে চেষ্টা করলাম আর এই চেষ্টা চালিয়ে যাবার আশা রাখি।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।