(ক্যামেলিয়া আলম)
বাংলাদেশের ৬টি বিভাগের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে ছড়িয়ে আছে হরিজন সম্প্রদায়ের কিছু অংশ। এই সম্প্রদায়ের প্রায় সকলেই পেশাজীবি হিসেবে জুতা তৈরির কারিগর। যারা সাধারণত মুচি নামে পরিচিত। সেই মুচি পাড়া বা মুচি পট্টির একটি হচ্ছে ঢাকার ওয়ারী মুচি পাড়া। এই মুচি পাড়ার একজন কিশোরী বিউটি।
এই সমাজে বিউটি তিন দিক থেকে বঞ্চিত মানুষ। প্রথমত ধর্মীয় সংখ্যালঘুত্ব, দ্বিতীয়ত সামাজিক বৈষম্য আর তৃতীয়ত তার নারীত্ব। তৃমুখী বঞ্চনার মধ্যে বেড়ে উঠা কিশোরী বিউটির দৈনন্দিন জীবন, বিভিন্ন প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে তার সংগ্রাম, নিজেকে সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে যাবার জন্য প্রচেষ্টা, তার স্বপ্ন, হতাশা, আশা ও আশাভঙ্গ এবং আবার উঠে দাঁড়ানোর উদ্যোগ নিয়েই বিস্তৃত এই প্রামাণ্যচিত্রের জমিন।
ওয়ারী মুচি পাড়ায় বেড়ে ওঠা কিশোরী বিউটি। পিতৃহীন এই কিশোরী থাকে মা ও এক বড় বোনকে নিয়ে। জীবিকার তাগিদে অষ্টম শ্রেণীর পর তাঁর লেখাপড়া ছাড়তে হয়। সে খুঁজতে থাকে এমন কোনো জীবিকা যা দিয়ে ভদ্র কোনো স্থানে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। তীব্র অভাবের মধ্যে থাকলেও সম্প্রদায়গত গতানুগতিক পেশায় না গিয়ে সে খোঁজার চেষ্টা করছে এমন কিছু যা দিয়ে সমাজের উচ্চ পর্যায়ে অধিষ্ঠিত মানুষের পাশে নিজেকেও দাঁড় করাতে পারে। একটা সময় বিউটির চেষ্টা সফল হয়। সে নিউজ রিপোর্টার হিসেবে কাজ শুরু করে ভীমরুল নামক একটি সাপ্তাহিক পত্রিকায়। সাফা মিডিয়া থেকে প্রতি সপ্তাহে বের হয় পত্রিকাটি। এ মিডিয়ার আরেকটি ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘দেশকাল’ যেটি মূলত প্রতি মাসে দু’বার প্রচারিত হয় একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে। এই অনুষ্ঠানের রিপোর্টিং এর সাথেও বিউটি যুক্ত হয়ে যায়। টেলিভিশন প্রোগ্রামের সাথে যুক্ত হবার পর বিউটি একজন ভিডিও এডিটর হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার গড়ার কথা ভাবছে। প্রোগ্রামগুলোর এডিটিং দেখতে দেখতেই মূলত এই ইচ্ছেটা এসেছে বিউটির মাথায়। কিন্তু প্রশিক্ষণটি খুব ব্যায়বহুল বলে এখনই শুরু করতে পারছে না। যাই হোক একদিকে জীবিকার সমস্যাও মেটানো গেলো অন্যদিকে নিজের স্বপ্নের কাছাকাছি পৌছাঁবার সিড়িও পাওয়া গেল। এভাবে বিউটি প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার বিভিন্ন কাজ করে যাচ্ছে। আর বিউটির রিপোর্টিং এর বিষয় গুলো হচ্ছে সুবিধাবঞ্চিত নারী ও শিশু। একজন সুবিধাবঞ্চিত মানুষ অন্য একজন সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্যেও যে করতে পারে। বিউটিই তাঁর বড় প্রমাণ। মাত্র ষোলো বছর বয়সী এই কিশোরী বর্তমানে তাঁর একজন পরিচিত কর্মীর সাথে ব্যবসায় নামতে যাচ্ছে অতি শীঘ্রই। তৈরি গার্মেন্টস এর এক্সপোর্ট ইমপোর্টের ব্যবসায়। প্রতিদিন প্রতি মুহূর্তেই বিউটি আশা করে তাঁর স্বপ্নের দরজায় সে একটা না একটা সময়ে ঠিকই পৌছাঁবে। কিন্তু নিজের স্বপ্নের দরজায় নিজেকে দাঁড় করানোর জন্য বিউটির দরকার কিছু নিঃস্বার্থ সহায়তার হাত
সেই হাতগুলো কি আছে আমাদের কারো?
মন্তব্য
ব্যাপারটি ঝাপসা রয়ে গেলো। আরও ডিটেইল লিখলে মনে হয় ভালো হতো।
সাবাস বিউটি।
লজ্জা দিলেন। ১৬ বছরের বাচ্চা মেয়ে কত বাধা ভেঙে ফেলছে, আর আমি বুড়া ধাড়ি বসে বসে ডুগডুগি বাজাচ্ছি!
জয় হোক বিউটিদের।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
এরকম করে উঠে দাঁড়াক আরো অনেক অনেক বিউটি।
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
এই লেখাটা পড়ে আমার একটা কথা মনে হলো। এখানে-ওখানে ছোটোবড়ো সবাই বলেন, সরকারি সাহায্য-সহযোগিতা চাই। আসলে বোঝা দরকার কোনো দেশে কোনো সরকার এসে সবার ভাঙা ঘর তুলে দিয়ে যায় না। মানুষকে নিজের ইচ্ছা ও শক্তিতেই কাজ করে যেতে হয়।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
নতুন মন্তব্য করুন