***********দিনমজুর**************
"গত মাসে প্রকাশিত এক রিপোর্টে Congressional Budget Office (CBO) জানিয়েছে, "ইরাক, আফগানিস্তানে কার্যক্রম এবং অন্যান্য সন্ত্রাসবিরোধী কর্মকাণ্ড পরিচালনায় যুক্তরাষ্ট্র ২০০৭ সালে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে অর্থ বরাদ্দ বাড়িয়েছে"।
এবারে দেখি যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবরাদ্দের একটি খতিয়ানঃ
২০০৩ সাল থেক ২০০৫ সাল পর্যন্ত গড়ে প্রতি বছর এই খরচ ৯৩ বিলিয়ন ডলার। ২০০৬ সালে যা বেড়ে দাঁড়ায় ১২০ বিলিয়ন ডলার। এবং ২০০৭ সালে তা হয় ১৭১ বিলিয়ন ডলার। এবং বুশ প্রশাসন ২০০৮ সালের জন্য ১৯৩ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ চেয়েছে।
সিনেট বাজেট কমিটির চেয়ারম্যান কেন্ট কনরাড ২০০৩ সাল মার্কিন হামলার সময় থেকে ইরাককে কেন্দ্র করে মার্কিন যুদ্ধ খরচকে নির্দেশ করে বলেছেন, "It keeps going up, up and away"।
CBO এর সূত্রমতে- ১১ সেপ্টেম্বর থেকে এ পর্যন্ত ইরাক ও আফগানিস্তানের যুদ্ধ উপলক্ষে এবং এ সংক্রান্ত বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনায় যুক্তরাষ্ট্র-কংগ্রেসকে সর্বমোট ৬৯১ বিলিয়ন ডলারের চেক সাইন করতে হয়েছে।
ইরাকে প্রায় ১,৫৮,০০০ এবং আফগানিস্তানে ২৭,০০০ মার্কিন ট্রুপস অবস্থান করছে।
মাসে ১১ বিলিয়ন ডলার!!
CBO এর হিসাব মতে- এই মোট অংকটির মধ্যে ৪৪০ বিলিয়ন ডলারই খরচ হয়েছে ইরাক যুদ্ধে- যার উদ্দেশ্য ছিলো প্রেসিডেন্ট সাদ্দমকে ক্ষমতাচ্যুত করা ও গণবিধ্বংসী অস্ত্র খোঁজা, যেটা এখনও পাওয়া যায়নি।
ইরাক ও আফগানিস্তানে যুদ্ধবাবদ যুক্তরাষ্ট্রের মাসিক খরচ প্রায় ১১ বিলিয়ন ডলার- যেখানে মার্কিন সরকারের ঋণ বুশ ২০০১ এর জানুয়ারিতে ক্ষমতায় আসার সময় ৫.৬ ট্রিলিয়ন ডলার থেকে লাফিয়ে এখন হয়েছে ৯ ট্রিলিয়ন ডলার।
আর অন্যদিকে- বুশ প্রশাসন ইরাক ও আফগানিস্তানে যুদ্ধ পরিচালনার খরচ ট্যাক্স ও অন্যান্য নির্দিষ্ট অফসেট সহ পরিশোধ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। এর মানে এই দাঁড়াচ্ছে যে, যুদ্ধবাবদ খরচকৃত প্রতিটি পেনি যুক্তরাষ্ট্রের ঋণের অংকে যুক্ত হচ্ছে। CBO এর হিসাবে, এ বছর শুধু ঋণের উপর সুদ বাবদই গনতে হবে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার। যেখানে বাতসরিক বাজেট ঘাটতি প্রায় ২৫০ বিলিয়ন ডলার।
এই বাজেট ঘাটতি ও ঋণের উপর সুদ- যুক্তরাষ্ট্রের ঋণের বোঝাকেই বাড়াচ্ছে, যেটি এ মুহুর্তে ৯ ট্রিলিয়ন ডলারেরও উপরে গিয়ে পৌঁছিয়েছে।
CBO এর হিসাব মতেআগামী এক দশকে ঋণের সুদবাবদই গনতে ২.৯ ট্রিলিয়ন ডলার।
এবং এই ঋণ সমস্যা বাড়তেই থাকতে হবে- যদি ইরাকে মার্কিন সেনা উপস্থিতি আরও দীর্ঘায়িত হয় এবং যদি- সরকার চালিত স্বাস্থ্য সেবা ও অবসর কর্মসূচি বন্ধ না করা হয়।"
১। তারপরেও কেন সাম্রাজ্যবাদ যুদ্ধকে এভোয়েড করতে পারে না?
২। শেষ বাক্যটিতে- সরকার চালিত সেবা খাত বন্ধের ইঙ্গিতটি তাতপর্যপূর্ণ।
৩। পুঁজিবাদী দুনিয়ার এসমস্ত সংকটের মূল কি?
সূত্রঃ
১। US War Costs in Iraq Up: Report-> Reuters
২। Howard Goller and Donia Chiacu editorial in Truthout
মন্তব্য
যুদ্ধ খরচ না বলে যুদ্ধ বিনিয়োগ বলা উচিত। ঋণ সমস্যার রিপোর্ট শুধুমাত্র শো অফ। ১১ বিলিয়ন ডলারের মাসিক বিনিয়োগ কত হাজার বিলিয়ন মাসিক মুনাফা দেয়, সেই অঙ্ক অগ্রাহ্য করলে তো বিপদ। লাভ ছাড়া যুদ্ধ করবে, আমেরিকাকে এত বোকা মনে করার কোন যুক্তি খুঁজে পাই না।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
অছ্যুৎ বলাই,
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
এটা ঠিক যে, যুদ্ধ সাম্রাজ্যবাদীদের জন্য একধরণের বিনিয়োগ। কিন্তু হিসাবটি অত সহজ না হওয়ারই কথা। এই যুদ্ধ বিনিয়োগের মুনাফার অংশটি কোথায় যাচ্ছে?? সেটি খুবই সীমিত অংশের কাছেই!! আর রাষ্ট্র কিন্তু এতে পুরোটাই ক্ষতি ছাড়া কিছুই পাচ্ছে না!! এখন রাষ্ট্রের ঋণ বাড়লে সমস্যা কার এটাও একটি বিষয়।
আর, যুদ্ধ বিনিয়োগের পেছনে কি কি কারণ/ উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলে মনে করেন??
পাগলেও ব্যবসা বোঝে আর এতো যুক্তরাষ্ট্র !
কি মাঝি? ডরাইলা?
অবশেষে দুনিয়া জুড়ে এই ক্ষতি দৃশ্যমান হচ্ছে। কয়েকটি রাজনৈতীক নেতাদের মালিকানাধীন কম্পানি লাভবান হয়েছে।
জনগণের পশ্চাৎদেশের ছাল-চামড়া উঠে যাবার জোগাড়। জনকল্যানে দরকারী ৭০০ বিলিয়ন দিয়ে আসলে কাকে রক্ষা করা হল সেটার উপর একটা বিশ্লেষন দরকার।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
নতুন মন্তব্য করুন