…এইতো কিছুদিন আগের কথা

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শুক্র, ০৭/০৩/২০০৮ - ৩:২৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

[ অচল লেখক হিসাবে কলেজ লাইফের কাহিনী দিয়াই শুরু করলাম]

২০০০ সালের কথা।
স্কুলের গন্ডি পার হবার দুর্দান্ত আকাঙ্ক্ষা, সেই সাথে কলেজ নামক জিনিসটার প্রতি কোকেন টান আর এস এস সি-র ফলাফলের অপেক্ষায় দুরুদুরু দিন নিপাত।
কপাল ভালো।তাই রেজালট ভালো।
নিতাই স্যার বাসায় এসে বললেন “দেখেন নটরডেমে চান্স পায় কিনা?”
আব্বা ভয়ে বলে “ঢাকায় ছেলে পড়ানো কি আর মুখের কথা? কত টাকার ব্যাপার”
আমার বিপুল আগ্রহ দেখে আব্বাও রাজী হলেন।
নাইট কোচে রওনা হলাম “ভর্তি পরীক্ষা দিতে”
সায়েদাবাদ বাসস্টান্ড থেকে ৮ নাম্বার বাসে করে দৈনিক বাংলার মোড়ে নেমে ফকিরাপুলে একটা হোটেলে ঊঠলাম।
কাল সকালে “ভর্তি পরীক্ষা”। পরীক্ষা পরীক্ষা আবহাওয়া না থাকলে কি আর পড়া হয়? আমি সারাটা বিকাল ফকিরাপুল পানির ট্যাংকি দেখে কাটিয়ে দিলাম।
বেকিং পাঊডার দিয়ে ফোলানো নান রুটি খেয়ে গেলাম “ভর্তি পরীক্ষা দিতে”
পরীক্ষা কেমন দিয়েছিলাম তা মনে নাই, তবে চান্স পেলাম।
মৌখিক পরীক্ষায় ছিলেন সুশান্ত আর ভদ্র স্যার।
“বাগেরহাট থেকে এস এস সি? ঢাকায় কেঊ আছে? থাকবে কোথায়?”
“স্যার ঢাকায় অনেকে আছে, মামা, চাচা, ফুফাত ভাই............।”
(আসলেই অনেকে ছিলো কিন্তু এক রাত কারো বাসায় থাকার মত কেঊ ছিলো না!!!এটার নাম ঢাকা সিটি। এটা মেগাসিটি। এখানে মেগারা রাজত্ত করে। আমার মত মাইক্রো ন্যানোদের বেচে থাকাটাই বড় ব্যাপার।)

রাজু (এখন রেডিও ফুর্তিতে আছে) ছিল আমার বড় সাপোর্ট! ওর বাবাও ছিলো আব্বার মত সরকারী ব্যাংকের চাকুরে অফিসার।
দুজন মিলে আরামবাগের গলি, কুমলাপুরের চিপা, ফকিরাপুলের অন্ধকার চষতে লেগে গেলাম। কম পয়সার ছিট আর পাইনা।
“এক রুমে দূইটা ছিট খালি আছে। পার রুমে চার জন করে। নয় জনের একটা বাথরুম। ছিটা ভাড়া ১১০০। খাওয়া মিল হিসাব করে ৬০০-৮০০ আসবে।”
(তখন সব কিছুর দাম এত বেশী বেশী লাগত। কলেজের পাশের “ক্ষুধা নিবারণ” হোটেলের এক কাপ চা এর দাম ছিলো ৪ টাকা। তাও খেতাম।এত মজা লাগত!!)
খুজতে খুজতে এক লোকের কাছে জানলাম কলোনীতে “সাবলেট ভাড়া দেয়।” আইডিয়াল স্কুলের পাশে এজিবি কলোনী,ব্যাংক কলোনী, টিএন্ডটি কলোনীতে সাবলেট খুজতে লাগলাম।
কলনীতে সাবলেট ভাড়ার মিডিয়া হলো “কলোনীর দালাল”।যেমনঃ নটরডেম কলেজের বিপরীতের বাংলাদেশ বাংক কলোনীর দালালের নাম “ডাইল”।
এভাবে খুজতে খুজতে পেয়ে গেলাম ও ঠিকও করে ফেললাম
“এজিবি কলোনী, জি-২,বি-৭৪”
ঢাকায় এসে ঊঠেছিলাম রাজুর খালার বাসায় (এয়ারপোর্ট এর দক্ষিনখানে)। আসার সময় আম্মা সাথে করে ভাতের পাতিল, প্লেট, ডালের পাতিল দিয়ে দিছিলেন। আর দিছিলেন অনেক আদেশ,ঊপদেশ,কান্নাকাটি।
মায়েরা এত ভালো হয় কেনো?
শুরু করিলাম দু সদস্যবিশিষ্ট কলেজ মেস জীবন।
-------------------------------------------------
রাতুল।


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।