• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

মহেশের মৃত্যু

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: মঙ্গল, ১১/০৩/২০০৮ - ২:৩৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

শরৎচন্দ্র রচিত ছোট গল্প ‘মহেশ’ এর মৃত্যু নিয়ে এই গল্প নয়। এই গল্প আমার প্রথম গাড়ি মহেশের মৃত্যু নিয়ে।আমার এই দুঃখের কাহিনী আমি কিভাবে বলব ঠিক বুঝে উঠতে পারছিনা।যাই হোক, কথা বাড়ালেই বাড়বে, তার চাইতে আমি মূল কাহিনীতে চলে আসি।

সেদিন ছিল শুক্রবার। সকাল থেকে সবকিছুতেই একটু তাড়া লেগেই আছে। বাংলা মায়ের কোলে থাকলে শুক্রবার সকালে মনের আনন্দে ঘুমিয়ে থাকতাম। কিন্তু আমেরিগো ভেসপুচির দেশ আমেরিকাতে সে সুযোগ একেবারেই নেই। সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই দৌড় দিতে হল ক্লাসের উদ্দেশ্যে। তারপর বাসায় ফিরে এসে দেখি খাবার কিছু নেই। আর কি করা, ক্ষুধা পেটে নিয়েই রান্না শুরু করতে হলো। এমনি সময় আবার মোবাইল ফোনটা বেজে উঠল। দৌড়ে গিয়ে ফোনটা ধরলাম। অপরপ্রান্ত থেকে ওয়াসেফের কণ্ঠস্বর শুনতে পেলাম। বলল, “ অণ্ডে হনায়?” ওয়াসেফ আবার চাঁটগাইয়া কিনা, তাই মাঝে মাঝে তার আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলে উঠে। এই প্রশ্নটির অর্থ হচ্ছে, “আপনি কোথায়?”
- আমি বাসায়। তা বাজি তুমি কোথায়?
- বাসে। আমি বাসায় আইতাসি। বাকিরা কোথায়? জুম্মায় যাবেননা?
- নাসিম ভাই আর তুহিন মনে হয় একসাথে আছে। ওদের তুলতে হবে ওদের ল্যাব থেকে। তুমি আস, then একসাথেই বের হবনে। নাকি আমি আসব তোমাকে তুলতে?
- নাঃ থাক, আমি almost এসে পরসি।
তারপর ওয়াসেফ এসে উপস্থিত হলো বাসায়। আমর আর দেরি না করে বের হয়ে গেলাম বাকি দুইজনকে তুলতে। পথে তুলে নিলাম রনি ভাইকে।সবাইকে নিয়ে আবার রওনা দিলাম বাসার দিকে। বাসায় ওযু করে সবাই একসাথে বের হব জুম্মার নামাযের উদ্দেশ্যে। ক্যাম্পাস থেকে বাসায় ফেরার পথ খুব একটা লম্বা নয়। কিন্তু এই স্বল্প যাত্রা পথেই আমাদের পাঁচ বাঙ্গালীর অল্প আড্ডা শুরু হয়ে গেল। সবাই মিলে বলাবলি করতে লগলাম যে, আজকে বেশ ঝিরঝিরে বৃষ্টি পড়ছে। এমন দিনেতো খিচুরি না খাওয়াটা অপরাধ। আমাদের উচিৎ, এবং একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য ভুনা খিচুরি, ঝোল ঝোল গরু, ডিম ভাজি/ভুনা দিয়ে জম্পেশ একটা খানা দেয়া। তা নাহলে ঠিক জমবেনা। ড্রাইভিং সিট থেকে আমিও লাফ দিয়ে উঠলাম।
আর এসবের স্বপ্ন দেখতে দেখতে বাসায় ফেরার পথের প্রথম সিগনালটাকে অমান্য করে ফেললাম। সবাই হা হা করে উঠলো। বলে উঠলো, “আজমীর, এটা কি হলো??!! সাবধান হও। মামু (পুলিশ) দেখলে কিন্তু খবর আছে।আর তাছাড়া দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে।” কিন্তু কে শুনে কার কথা। আমি যদি অত বুদ্ধিমানই হতাম, তাহলেতো আর কথাই ছিলনা। আমি আমার মতই গাড়ি চালাতে লাগলাম। একটু দূর যেতেই আবার একটি সিগনাল এলো। এই সিগনাল থেকে সোজা কিংবা ডানে, দুদিক দিয়েই আমাদের বাসাতে যাওয়া যায়। লাল বাতি জ্বলে যাবার কারণে আমি সোজা যেতে পারছিনা। তাই আমি দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম যে, আমি এখন ডান দিয়ে চলে যাব। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমি ডানে যাবার সিগনাল দিয়ে ডানে চলে গেলাম। তারপর একটু বামে পথটা বাঁকা হয়ে যায়। বামে হালকা বাঁকের পরেই আবার একটি সিগনাল দেখতে পারলাম। এই সিগনাল থেকে আমাদের বাসায় যেতে হলে আমাকে বামে যেতে হবে। তাই আমি বামে যাবার সিগনালটি জ্বালিয়ে দিলাম। এরই মধ্যে আমি দেখতে পেলাম রাস্তার বাম দিকে যাবার সিগনালের তীরচিহ্নটির সবুজ থেকে হলুদ হয়ে গেল। এখন এটা যদি লাল হয়ে যায়, তাহলেতো আমি আটকে গেলাম। কিন্তু আমি আটকে গেলেতো চলবেনা। আমি চলতে ভালবাসি ঝড়ো গতিতে, আর সেই আমি যদি আটকে যাই, তাহলেতো হবেনা। তাই আবারও একটি দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম। সিদ্ধান্ত নিলাম যে, আমাকে বামে যাবার হলুদ তীরচিহ্নটি লাল হবার পূর্বেই বামে চলে যেতেই হবে। আমি সাথে সাথে গাড়ির গতিসীমা ১৪-১৫ মাইল প্রতি ঘন্টা থেকে বাড়িয়ে ২৫-২৬ মাইল প্রতি ঘন্টা করে ফেললাম।গাড়িটি ছিল Infinity I30t, যার নাম ছিল মহেশ। আমেরিকার ভার্জিনিয়া স্টেটে নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী লাইসেন্স প্লেট নিতে পারার সুবিধার কারণে এর নাম মহেশ করা হয়। মহেশের চালকের আসনে বসে মহশকে বামে যাবার জন্য আমি স্টেয়ারিং হুইল বামে ঘুরিয়ে ফেললাম।দেখতে পেলাম ধীরে ধীরে মহেশ বামে কাটা শুরু করল। কিন্তু তারপরই সোজা যাওয়া শুরু করে দিল। আমার ডান পাশের আসনে, অর্থাৎ চালকের পাসের আসনে বসে ওয়াসেফ নির্বাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখতে লাগল কি হচ্ছে এবং কি হতে যাচ্ছে। কেউ যেন তার গলা চেপে ধরে কথা বলার সকল শক্তি কেড়ে নিয়েছে। কোন শব্দই ওর মুখ দিয়ে আর বের হচ্ছিলনা। ওয়াসেফের পিছনে বসা নাসিম ভাই শুধু আজমীর বলে একবারই চিৎকার করে উঠলেন। পিছনে মাঝে বসা রনি ভাই কথা বলছিলেন ফোনে। তাই উনি বেশি কিছু দেখার এবং বোঝার সময় পাননি। আমার ঠিক পেছনেই তুহিন বসে ছিল। চোখের সামনে মহেশ সম্পুর্ণ বামে না গিয়ে পিছলে যাওয়া শুরু করল সামনে দাঁড়ানো গাড়িগুলোর দিকে। আমি তাড়াতাড়ি ব্রেক চেপে ধরলাম, কিন্তু তাতে দেখলাম মহেশ থামছেনা। তাই আবার ব্রেক ছেড়ে দিয়ে চাকা ঘোরার সুযোগ দিলাম, যাতে সঠিক দিকে আবার যাওয়া শুরু করার একটি সুযোগ মহেশ পায়। কিন্তু কিছুতেই কিছু হলোনা। সামনে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িগুলোকে বাঁচিয়ে ফেলললেও পুরোপুরি বামের রাস্তাতে উঠে যেতে সক্ষম হলাম না। ঠিক এমনি সময় তুহিন চিৎকার করে উঠল, “আজমীর এটা না করলেও পারতা,” আর মহেশ কোনাকুনি চলে গেল এবং রাস্তার কোনার একটি গাছে গিয়ে বিকট শব্দে ধরাম করে আঘাত করল।

তারপর?

তারপর দুই সেকেণ্ডের জন্য সবাই নীরব হয়ে গেল। দুই সেকেণ্ড পর আমরা দেখতে পেলাম যে মহেশের মুখ দিয়ে, অর্থাৎ কিনা ইঞ্জিন দিয়ে ধোঁয়া বের হচ্ছে। সবাই ছিটকে বের হয়ে মহেশকে ত্যাগ করল, এবং মহেশের মৃত্যু হল।

হয়তো গল্পটি পড়ার পর পাঠক মহলের মনে হতে পারে যে, চরম বাজে ভাবে উপস্থাপিত এই গল্পটি নিশ্চিতভাবে কোন নাটক বা ছায়াছবি থেকে চুরি করা হয়েছে। তাই দুর্ঘটনার সময়েরটাতো আর সম্ভব নয়, কিন্তু দুর্ঘটনা পরবর্তী সময় করা একটি ছোট্ট ভিডিও ক্লিপ এর ঠিকানা আমি এখানে দিয়ে দিচ্ছি।

http://www.youtube.com/watch?v=oKI563B7hr0

আজমীর


মন্তব্য

মাহবুব লীলেন এর ছবি

এইভাবে মরারও আলাদা একটা দাম আছে
এর পরেরবর মহেশের সাথে গফুর- আমিনাদেরও (মহেশের মালিক এবং তার সঙ্গে যারা থাকে) মৃত্যু কামনা করি

তাহলে শরৎচন্দ্রের মতো অন্য কোনো দর্শক একটা ভালো গল্প লিখতে পারবে

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

হায় মহেশ, হায় আজমীর! কিছু পূণ্য করেছিলাম বলে সেদিন ঘুমের জন্য নামায মিস্‌ করেছিলাম।

আমার ভাষায় এটা ছিল মহেশের মেসওয়াক। ক্রমে ক্রমে মহেশের বৃত্তান্ত শুনলেই জানবেন ভ্রমন কাহাকে বলে। ক'দিন আগে সাউথ থেকে ঘুরে আসায় গাড়ির সামনে অনেক পোকা লেগে ছিল। ঘুম জড়ানো চোখে বেরিয়ে এসে মনে হচ্ছিল যেনো মহেশ'কে মেসওয়াক করানো হয়েছে গাছে ঘষে।

হিমু এর ছবি

মহেশের মাহুতের বিরুদ্ধে গাড়িক্লেশনিবারণসমিতির পক্ষ থেকে অচিরেই মকদ্দমা রুজু করা হবে বলে আশঙ্কা করছি।


হাঁটুপানির জলদস্যু

অতিথি লেখক এর ছবি

মহেশের সাথের স্মৃতিগুলি যদি প্রতিদিন একটি করে বলা শুরু করি, তাহলে মনে হয় খুব সহজেই কয়েক মাস খালি এসব গল্প বলেই কাটিয়ে দেয়া যাবে।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

তবে তা-ই হোক!!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।