আমার এক বন্ধু রহিম (অবশ্যই রহিম হচ্ছে ছদ্মনাম। কারণ, এখানে তার আসল নাম প্রকাশের অনুমতি সে আমাকে দেয়নি বিধায় এই ছদ্মনামের আশ্রয় নিতে হচ্ছে।) দেশের বাইরে চলে যায় আমাদের মধ্যে সর্বপ্রথম। রহিম প্রায়ই আমাদের ফোন করে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলত। এরই মধ্যে তার আবার এক মেয়েকে ওখানে পছন্দ হয়ে গেল। কিন্তু রহিম খুবই চিন্তিত ছিল কিভাবে তাকে প্রস্তাব করবে সেটা নিয়ে। এই ব্যাপারেও আমাদের সাথে রহিমের বেশ কিছু কথা হয়েছিল। এখানে ধরে নিচ্ছি মেয়েটির নাম মিনা। মিনা নামক এই মেয়েটিও নাকি বাংলাদেশ থেকেই গিয়েছে। মিনার সাথে পরিচয়ের পর থেকে রহিম যখনই ফোন করত, আমরা জানতাম যে এখন আমাদের অন্তত পক্ষে ১৫ মিনিট মিনার বিভিন্ন গুণাবলী শুনতে হবে।
এভাবে দিন কেটে যাচ্ছিল রহিম পর্বের। একদিন হঠাৎ করে রহিম আমাকে আলাদা করে ফোন করে বলে বসল যে, ওকে একটি কবিতা লিখে দিতে হবে এবং এটা কাউকে বলা যাবেনা। শুনেতো আমি অবাক।বললাম,
- ১ম কথা তুই হঠাৎ কবিতা চাচ্ছিস কেন? আর ২য় কথা, আমাকে কি কবি মনে হচ্ছে যে আমি কবিতা লিখে দেব?
- তুইতো মাঝে মাঝে লেখালেখি করিস, তাই বললাম। চেতে যাইতেসিস কেন? কাহিনী শোন আগে, তারপর তোর ফ্যাচফ্যাচ করিস।
- আচ্ছা বল।
- কাহিনী হলো, এখানে একটা আড্ডা বসবে যেখানে সবাই কবিতা লিখে নিয়ে আসবে। সবাই মানে আমরা যে ৪-৫ জন আছি আরকি। মিনাও আসবে। সমস্যা হলো, মিনা already নাকি লিখে ফেলেছে, কিন্তু আমিতো ভাই কিছুই লিখি নাই। রকিবকে বললাম, ও বলল তোকে বলতে।
- তো আমি কি এখন তোর জন্য প্রেমের কবিতা লিখব নাকি বসে বসে? ফাইযলামি কর মামা আমার সাথে? তুই দেশে আয়, তোর প্রেম কইরা কাজ নাই। প্রেম করবি তুই, আর কবিতা লিখব আমি, এটা কোন জাতের কথা হইল brother?
- আরে দোস্ত, friend হইয়া যদি friend এর এতটুকু উপকার করতে না পারিস, তাইলে কেমনে হবে? আর তোকে প্রেমের কবিতাই লিখতে হবে এমনতো কোন কথা নাই। একটা মোটামুটি লিখে দিলেই হবে। যেকোন কিছু একটা কিছু লিখে দে আরকি।
- আচ্ছা যা, e-mail দেখিস কালকে। যা মাথায় আসে লিখব। তবে বিরহের কিছু লিখুম মামা, যাতে তুমি বেশি পাট নিতে না পার। হিহিহিহিহিহি।
- Ok. No problem. তাইলে অপেক্ষায় রইলাম।
এখানে আমাদের ফোনের কথা শেষ হয়ে গেল। আমি ভাবতে লাগলাম যে, এতদিনতো খালি ভাসা ভাসা ভাবে শুনে এসেছি, আর রহিম কি বলত কখনও মন দিয়ে শুনিনি। কিন্তু এখন সময় হয়েছে পুরো কাহিনী জানার। ওর জন্য কবিতা একটা কিছু গোঁজামিল হলেও লিখতে হবে, নাহলে ব্যাটা আমায় ওর ভেতরের কাহিনী বলবেনা। কি আর করার, রহিম-মিনার প্রেম কাহিনী জানার জন্য চট করে একটি কবিতা লিখেও ফেললাম। যে কবিতাটি লিখেছিলাম, তা পরবর্তী সংখ্যায় পাঠকমহলকে লিখে দেব। আজকে একটু সময়স্বল্পতার কারণে আর লিখতে পারছিনা।
আজমীর
মন্তব্য
ভার্জিনিয়ার আজমীর নাকি?
কি মাঝি? ডরাইলা?
জ্বী, সেই আজমীর। ভাবির ঝাড়িতে কাজ হয়েছে মনে হয়। গল্পগুলো ব্যাটা ঠিকঠাক মত ছাড়লে হয় এখন শুধু! মহেশের সচিত্র মহাপ্রয়াণ দেখেছেন?
ভার্জিনিয়ার কিনা জানিনা, তবে বাংলাদেশের নিশ্চিতভাবে জানি। অনেক কাহিনীই আছে মাথার মধ্যে, কিন্তু সমস্যা হলো বেশীরভাগই চরীত্রগুলার নাম উল্লেখ না করে লিখতে হবে।
আজমীর
খুবই সোজা বিষয়
একজনের কাহিনী আরেকজনের ঘাড়ে বসিয়ে দেন। একজনের প্রেমিকাকে আরেকজনের কাহিনীতে পাঠিয়ে দেন
দেখবেন যাকে নিয়ে লিখেছেন সে পড়ে একটু একটু মিল পাবে আর আরেকটু পাবে না
উল্টো আপনাকে জিজ্ঞেস করবে- এতো পাগলের খবর তুমি জানো কেমনে?
আমার কপালে এই ঝামেলা একবার এসে পড়েছিল। পরের দিন এইচএসসি পরীক্ষা, বাংলা ২য় পত্র। আমি কান্নাকাটি আর দোয়াদরূদের উপর আছি, এই অবস্থায় এক বান্ধবী ফোন করে প্রেমপত্র লিখে দিতে বলেছিল। আমি ফোন কেটে মোবাইল অফ করে রেখেছি। বিকেলে বাসায় এসে হাজির। বলে, বাংলা প্র্যাকটিস হবে। ভয়ানক অবস্থা।
অন্তরা রহমান
নতুন মন্তব্য করুন