উলুম্বুশ
-------------------
সব ক্রিকেট দর্শকদের একটা বদ্গুণ আছে যেটা হল তারা ভাল খেললে আনন্দে সবাইকে আকাশে তুলে দেয় আর খারাপ খেললে সাথে সাথে মাটিতে নামিয়ে দেয়। আমি নিজেকে তার থেকে ব্যতিক্রম ভাবতাম। জিতে গেলে আমি অসম্ভব খুশি হই কারণ আমি আর সবার মত বাংলাদেশের সামর্থ্য বিশ্বকাপ জিতে যাওয়ার মত এই বিশ্বাসে বিশ্বাসী নই। তাই আমি জিতে যাওয়াটাকে অনেক অসম্ভব ভেবেই খুশি হই। এমন কি দুর্বল দল গুলার সাথে খেলার সময়ও আমি অনেক চিন্তিত থাকি। দুই বিশ্বকাপে কানাডা এবং আয়ারল্যান্ড এর সাথে হার আমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছে। আমার বড় ভাই আয়ারল্যান্ড থাকে। তাকে পোহাতে হয়েছে আরো কষ্ট। অস্ট্রেলিয়ায় যারা থাকে তাদের কাছে শুনেছিলাম তারা কেমন ভাবে অস্ট্রেলিয় দের বলেছিল আমরা তোমাদের হারিয়েছি সেই কার্ডিফের পরে। আমি আমার বড় ভাইয়ার কাছে শুনলাম তার উলটা কাহিনী। সেখানে এটা একেবারেই নতুন খেলা। তাই আমাদের সাথে জেতার পর তারা বলেছে ভাইয়াকে আমরা তো প্রথম এসেই পাকিস্তান আর তোমাদের হারিয়ে দিলাম। আগামীবার হয়ত আমরা বিশ্বকাপ ই জিতে যাব। হায় আল্লাহ!! এরা দেখি আমাদের মতই স্বপ্ন দেখে।
যা হোক আজ খেলা দেখতে বসেছিলাম। ২৩-৪ এই অবস্থায় আমি আর ধৈর্য্য রাখতে পারলাম না। এতদিন যে কোন বিপর্যয়ে আমি আশা রেখেছি পাশে ছিলাম। আজ আমি দর্শক হিসেবে রিটায়ার করে ফেললাম। তবে তার আগে কিছু প্রস্তাবণা দিয়ে যাই। বাংলাদেশ দলের প্রস্তুতি ম্যাচ আগে খেলা কিংবা টেস্ট এর ২য় ইনিংস আগে করা এগুলা খুবই জনপ্রিয় ধারণা। সেই সাথে আমার কিছু চিন্তাভাবনা যোগ হোক।
১। ক্যাপ্টেন্সি বাংলাদেশ দলে বড় একটা সমস্যা। এমন কি ভাইস ক্যাপ্টেন ও। তার প্রমান যত ভাইস ক্যাপ্টেন আছে তারা। রাজিন, শাহরিয়ার নাফিস থেকে শুরু করে হালের মাশরাফি তার প্রমাণ। তাই আমার প্রথম প্রস্তাবনা বাংলাদেশ দলে থাকবে নন প্লেয়িং ক্যাপ্টেন ভাইস ক্যাপ্টেন। ফিল্ডিং এর ১০ ওভার পরেই একজন ব্যাটসম্যানকে সরিয়ে ক্যাপ্টেন মাঠে নামবেন। আর ব্যাটিং এর সময় তো কোন সমস্যা নাই।
২। টিভিতে খেলা দেখালে নাকি আমাদের প্লেয়ারদের উপর খুব চাপ পড়ে। তাই বাংলাদেশের খেলা সম্প্রচার এর দায়িত্ব দেওয়া হোক এমন কোন চ্যানেলকে যেটা দেশে দেখা যায় না। আর বিটিভি খেলার কোন হাইলাইটস ও যেন না দেখায়।
৩। বাংলাদেশ দলে সবচেয়ে দুর্লভ জিনিস হল ধারাবাহিকতা। তাই একজন প্লেয়ার যখন একটা ফিফটি মেরে দিবে এটা শিউর হয়ে যাওয়া যায় পরের দিন তিনি ডাক না মারলেও ১০ করতে পারবেন না। তাকে তখন পরের ম্যাচে বসিয়ে দিতে হবে। (যেমন আজ তামিম ডাক মেরেছে)
৪। যে নিয়মিত খারাপ খেলবে তাকে বানিয়ে দিতে হবে দ্বাদশ প্লেয়ার। দলের সাথে ঘুরে বেড়াবে খেলতে পারবেনা। একদিন হঠাৎ করে চান্স দিলে সে সেঞ্চুরী মেরে দিবে। (যেমন রাজিন মেরেছিল )
৫। প্র্যাকটিসে ব্যাটসম্যানের অফ সাইডে এমন ব্যবস্থা করতে হবে যাতে সেদিকে ব্যাট না যায়। দেওয়াল তুলে দেওয়া যেতে পারে। অফ স্ট্যাম্প সজোরে চালানোর প্রবণতা রোধের জন্য।
আরো অনেকগুলা প্রস্তাবনা ছিল আমার। কিন্তু হঠাৎ কালকের একটা কথা মনে পড়ে গেল। মাশরাফি নাকি প্র্যাকটিস দেখতে আসা জনৈক ক্রিকেট ভক্ত কে বলেছে পারলে আসেন আপনি ক্রিজে এসে খেলেন। এখন আমাকেও যদি কেউ সেটা বলে তাহলে চুপ থাকা ছাড়া কিছু করতে পারবনা। তাই এখানেই শেষ করে ফেলি।
[[ ডিসক্লেইমারঃ এই লেখাটা এক ভগ্ন হৃদয়ের ক্রিকেট ভক্তের মাথা গরম লেখা কেউ এটাকে সিরিয়াস লেখা হিসেবে নিলে লেখক দায়ী নয়। ছবিটি ক্রিকইনফো থেকে নেওয়া ]]
মন্তব্য
প্রতিদিন ভালো করলে লোকে মন্দ বলবে না!! বেশি ভালো নাকি ভালো না... আর একটা সেঞ্চুরি করলে আশরাফুলদের মতো প্লেয়ারদের যখন একবছর দলে থাকা নিশ্চিত, তখন বছরে একটা সেঞ্চুরি করলেই হয়।
এই ধরনের লেখা আর লিখবেন না। ওরা যদি রাগ করে বলে- আর খেলুমই না। তখন কী করবেন? তাও তো ওরা খেলতেছে। কিছু মানুষ তো অন্তত ওগো খেলা দেখে হাসতেছে। এমন নির্মল বিনোদন আর কোথায় পাব...
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
-উলুম্বুশ
ভাই আর যে পারিনা। প্রতিবার বড় আশা করে খেলা দেখতে বসি। অবশ্য ওরা খুব আমাদের কথা চিন্তা করে। যেমন শুক্রবারে টেস্ট শুরু হয় রবিবারের আগেই তারা শেষ করে দেয়। নইলে বাকি দুদিনের খেলা তো আমরা দেখতে পারবনা।
হা হা হা! জটিল লিখেছেন।
মাশরাফি কি আসলেই ওটা বলেছে? আমি হলে নিশ্চিত চ্যালেঞ্জ নিতাম।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
মেজাজ খারাপ আছে খেলা দেখে...
---------------------------------
এসো খেলি নতুন এক খেলা
দু'দলের হেরে যাবার প্রতিযোগিতা...
ভগ্ন হৃদয়ের ক্রিকেট ভক্তের মাথা গরম লেখা হলেও যথেষ্ট যুক্তি খুঁজে পাচ্ছি।
আমার একটা প্রস্তাব যোগ করলে খুশি হবো---
* জাতীয় দলের কোন খেলোয়াড় বোর্ডের বিনা অনুমতিতে বিয়ে করতে পারবেনা এবং কোন ক্রিকেটার ৩৩ বছর বয়সের আগে বিয়ে করতে পারবেনা। ( শুধু মাত্র বালক বয়সে করা বিয়েই নাফিস ইকবাল, শাহরিয়ার নাফিস, আফতাব আহমেদ ও রাজিন সালেহ, র ১২টা বাজিয়ে দিয়েছে)।
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অজ্ঞাতবাস
সুমন ভাই @ আমার মনে হয় অন্য সব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। কিন্তু অবস্থার কোন পরিবর্তন হয়নাই। তাই এইটা প্রয়োগ করলে একটা ফল আসতে পারে।
ইস!
এই প্রস্তাবগুলা যদি কোনভাবে বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রভুদের কানে ঢোকানো যেত।
রাকিব হাসনাত ভাইয়ের প্রস্তাবটাও জটিল
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
ক্যা ভাই, হেগো কি কুনু সাদ আল্লাদ নাই নাকি?
---------------------------------
এসো খেলি নতুন এক খেলা
দু'দলের হেরে যাবার প্রতিযোগিতা...
আমার মনে হয় ডেভ হোয়াটমোর কে ফেরাতে পারলেই আপাতত বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য সবথেকে ভাল হবে। আর আপনারা বড় অধৈর্য, আরো ৫ বছর পরে বাংলাদেশ ভাল ক্রিকেট খেলবে।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
সঠিক ডায়াগনসিস। সাধ আর সাধ্যের ফারাকের কথা কেউ মনে রাখতে চায় না।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
ভাইরে, 'আর ৫ বছর' এই কথা গত ১২ বছর ধরে শুনতেছি।
----------------------------------------------
আমাকে নিঃশব্দে অনুসরণ করে একটা নদী-
সাথে নিয়ে একটা পাহাড় আর একটা নিঃসঙ্গ মেঘ।
আমার শুধু জানতে ইচ্ছে করছে, কয় বছরে ৫ বছর হয় ?
আলাভোলা
নতুন মন্তব্য করুন