আমি এখন আমেরিকায় থাকি

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বিষ্যুদ, ০৩/০৪/২০০৮ - ১:৫৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এখন আমি আমেরিকায় থাকি। সবাই ভাবে, আমার মত সৌভাগ্যবান মানুষ খুব কমই আছে। আমেরিকার আকাশে বাতাসে উড়ে বেড়ায় টাকা, আছে যা খুশি তা করার সুযোগ, আহহহহ...স্বপ্নের আমেরিকা।
সত্যিই, আছে কি পৃথিবীতে আমার চেয়ে সৌভাগ্যবান মানুষ?
আমেরিকা নিয়ে কখনই কোন স্বপ্ন আমি দেখিনি। এটা একদিক থেকে আমার জন্য ভাল হয়েছে। স্বপ্ন ভঙ্গের বেদনায় পুড়তে হয় নি। অনেককেই দেখেছি, দু চোখ ভরে স্বপ্ন দেখতে দেখতে আমেরিকায় আসে, অতঃপর স্বপ্নের সে বেলুন আস্তে আস্তে চুপসে যায়।
যারা স্বপরিবারে এসেছে, তাদের তবুও একটা সান্তনা আছে, সুখে দুখে তারা পরিবারকে পাশে পাচ্ছে। আর আমার মত যাদের একা একা থাকতে হয়, তাদের আনন্দের দিনেও পাশে কেউ নেই, দুঃখের দিনে ও নেই।
সপ্তাহে ২/১ বার দেশে ফোনে আলাপ, ইমেইল, অনলাইনে কারো কারো সাথে কথা, আর সারাক্ষ্ণ দেশের জন্য ব্যাকুলতা। এইসব নিয়েই আমাদের জীবন।
দেশে থাকতে পার্টিকুলারলি দেশ নিয়ে কখন ও আলাপ করেছি বলে মনে হয় না। মানে, হাসিনা খালেদা নিয়ে আলাপ করেছি, ক্রিকেট নিয়ে আলাপ করেছি, যানজট নিয়ে আলাপ করেছি, দরকারী আদরকারী কত বিষয় নিয়ে আলাপ করেছি, কিন্তু "দেশ" নামক এনটিটি নিয়ে আলাদা করে কোন আলাপ করেছি বলে মনে হয় না। কারণ দেশ হচ্ছে অক্সিজেনের মত, প্রতিনিয়তই দেশ আমাদের সবকিছুর সাথে জড়িয়ে আছে, আমরা টের পাই না, বা মাথা ঘামাই না । কেবল যখনই আমরা অক্সিজেন পাই না, তখনই কেবল মনে পড়ে আক্সিজেনের প্রয়োজনীয়তার কথা। তেমনি, দেশ ছাড়ার পরের মুহুর্ত থেকে চিন্তা চেতনায় শুধুই দেশ।
কবে আবার দেশে যাব, দেশে গিয়ে কি কি করব, দেশের খাবার, দেশের মানুষ...সব চিন্তাই শুরু হয় দেশ শব্দটা দিয়ে। বাসায় যাব চিন্তা না করে চিন্তা করি দেশে যাব, মার হাতের রান্না কত মজা চিন্তা না করে চিন্তা করি দেশের খাবার কত মজা।
দেশে গিয়ে যখন এক বন্ধুকে বলছি, আমার আমেরিকায় থাকতে ভালো লাগে না, পড়াশোনা শেষ করেই চলে আসব, ইত্যাদি, তখন বন্ধুটি বলে, কি বল! আমেরিকায় না খেয়ে পড়ে থাকলেও শান্তি! আমি জিজ্ঞেস করলাম, না খেয়ে থেকেছ কখনও? থাকনি বলেই একথা বলছ। আমেরিকায় গিয়ে যখন ১ দিন না খেয়ে থাকতে হবে, তখন ঠিকই বুঝবে দেশে থাকাটাই কত আনন্দের।
আমেরিকায় নাকি আমরা আসি উন্নত জীবনের প্রত্যাশায়। আমেরিকায় আমাদের মত প্রবাসীদের জীবন দেশের জীবন থেকে কিরকম উন্নত হল, তা আমি ভেবে পাই না। আমার নিজের জীবনের কথাতেই আসি। দেশে থাকতে বাবা মা আমাকে অনেকটা ধরে বেধে জোর করে খাওয়াতেন। খেতে না পারাটাই যেন ছিল আমার কাছে সাফল্য। আর এখন যখন দিনে খেয়ে রাতে কি খাব, বা আদৌও খাবো কিনা চিন্তা করি, তখন এক সময় তিনবেলা খেতাম এটাই অনেক আশ্চর্যের মনে হয়। তিন বেলা খেতে চাওয়ার ইচ্ছাটাকে এখন বিলাসিতা বলে মনে হয়। ৫ ডলার খরচের ভয়ে ম্যাকডোনাল্ডস খাই না, কিন্তু টেক্সটবুক আবার ঠিকই কিনি ১০০ ডলার খরচ করে।
আবার দেশে থাকতে ছোটখাটো অসুখ বিসুখ হলেই বাবা মার চিন্তার অন্ত থাকতো না, সেই আমি এখন বিশাল অসুখ হলেও ডাক্তারের কাছে যাই না ইন্স্যুরেন্স কভার করবে না বলে।
দেশ থেকে কারো মৃত্যু সংবাদ পেলেও হয়তোবা যাওয়ার সুযোগ থাকবে না, পরিবারের কারো বিয়ে বা নতুন কোন অতিথির আগমন ইত্যাদি আনন্দময় মুহুর্তের কথা বাদই দিলাম।
পাচ্ছি না পর্যাপ্ত খাবার, যাচ্ছি না ডাক্তারের কাছে, থাকছি না কারো পাশে তাদের সুখ বা দুঃখের সময়, দেখছি না কত শত প্রিয় মুখ -----আরো না বলা কত কিছুর বিনিময়ে থাকছি আমেরিকাতে।
ভালো না থাকলেও বাবা মার কাছে মিথ্যে করে বলতে হয় ভাল আছি, কিংবা তারা ও আমার কাছে গোপন করে যান তাদের দুঃখের কথা।এভাবেই লুকোচুরির মাধ্যমে কেটে যাচ্ছে জীবন।
একটাই প্রাপ্তি----- আমেরিকায় থাকছি।
সত্যিই, আমি এখন আমেরিকায় থাকি।

(রেনেট)

ranet_usa@yahoo.com


মন্তব্য

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

যাবজ্জীবন ।

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

অনুভূতিগুলো মন ছুঁয়ে যায়...

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- নটরডেমের পোলা হৈয়া এই ভুলটা কেমনে করলেন রে ভাই?
এতো বড় নদী পার হৈতে গেলেন কেন আপনে? ফিরা আসেন ভাই, ফিরা আসেন। আপনের লাইগ্যা আমার কান্দোন আইতাছে! মন খারাপ
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>

অতিথি লেখক এর ছবি

এখন আমি পরিস্কার বুঝতে পারি আপনি সারাক্ষণ কেন শালী বিষয়ক চিন্তায় মেতে থাকেন;)
আমার ও এরকম কোন আসক্তি খুজে বের করতে হবে যেন সেটা নিয়ে মেতে থাকতে পারি।
শালী বিষয়ক চিন্তার আইডিয়াটা মন্দ না!
~রেনেট

সৌরভ এর ছবি

যাবজ্জীবন ।



আমি ও আমার স্বপ্নেরা লুকোচুরি খেলি


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাই রেনেট, আমার চোখ ভিজে গেল পড়ে।

আমি আরো কিছু যোগ করি?
কোনদিন রান্না করে খাওয়া দূরে থাক রান্নাঘরের কাছেও যাইনি। এখন দিব্যি রান্না করতে হয়, বাসন ধুতে হয়, ঘর পরিষ্কার করতে হয়। কে জানে হয়তো দেশে থাকতে আমার মত কেউ অলস ছিল না।
আরেকটা জিনিসের জন্য মন খুব ব্যকুল হয়ে থাকে, বাংলায় কথা বলা, আড্ডা দেয়া।
ইচ্ছে থাকলেই হুট করে কোথাও যেতে পারি না। আমার মতো যাদের এখন ও গাড়ি নেই তাদের অন্যদের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয় কবে একটু গ্রোসারি আনা যাবে। চরম দরকার পড়লে হয়তো ফোনে অনুরোধ।
একাকিত্বের কোন অষুধ নেই, ফোনে কথা বলে কতটুকু মন ভরে?

কাউকে বলিনি, এসেই অন্তত দেশে যাবার টিকিটের টাকা আলাদা করে রেখেছি, খোজ নিয়ে রেখেছি কি করে এক দিনের মধ্যে দেশে যাবার টিকিট পাওয়া যাবে।
বড় ভয় করে কখন ভয়ঙ্কর কোন খবর আসে......

দেশে থাকতে একটা পত্রিকা পড়তাম একটা, তাও কোনরকম পাতা উলটানো। আর এখন অনলাইনে ৩ টা পত্রিকা পড়ি। তাও মনে হয় মন ভরে না।

ছুটির দিন গুলোতে সেই গৎ বাঁধা পার্টি আর ভাল লাগে না।এখানে যারা আছেন তারা নিশ্চয়ই জানেন ছুটির দিনে করবো বলে জমিয়ে রাখা কাজ কিভাবে পার্টির কারনে নষ্ট হয়।

মনে আছে আমার, সিডর এর ঠিক আগে আগে একটা পরিক্ষা ছিল, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং। আমি খালি খবর পড়ছি, সিডর আসছে আর বুকের ভেতরে দুরুদুরু আওয়াজ আরো জোরাল হচ্ছে। যতই মনকে বোঝাই এমন ঝড় আমাদের দেশে প্রতি বছর হয়, হয় তো তেমন কিছু হবে না, মন তো মানে না। কিছুতেই পড়ায় মন বসছে না। ফোন করলাম অনেকবার দেশে। কিছুতেই লাইন পাচ্ছি না। জানলাম অনেক টেলিফোনের তার আগেই ছিঁড়ে গেছে। আরও টেনশনে পড়লাম।
এখানে একজন বাস ড্রাইভার কে চিনি, বাড়ি পিরোজপুর। সকালে সেই বলল, "ভাইজান আমি তো বাড়ির কোন খোঁজ পাইতেছি না। কাল হইতে ফোন করতেছি। অনেক ঝড় নাকি হইছে?"
ধ্বক করে উঠলো বুকটা। বললাম, "চিন্তা করবেন না, নিশ্চই মোবাইলের টাওয়ারের ক্ষতি হয়েছে।"
মনে মনে বললাম তাই যেন হয়।
পরীক্ষার হলে ঢোকার আগেই কোলকাতার একটা ছেলে বলল, "খবর পেয়েছ?"
এবার আমি আর কথাই বললাম না। রাত থেকেই খবর পড়া বন্ধ করে দিয়েছি। অষ্ট্রিচ এলগোরিদম এ যদি দুঃসংবাদ এড়ানো যায় এই আশায়।
কিসের কি।
পরীক্ষায় যথারীতি বাঁশ।

পরদিন, আবারো দেখা সেই ড্রাইভারের সাথে। "ভাইজান ১০,০০০ নাকি মারা গেছে?"
ইস, লোকটা কি আর কোন কথা জানে না?
আমি বললাম , ভুল শুনেছেন হয়তো, আগেই তো অনেক মানুষকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
না, ভুল শুনেনি সে। আমি জানি এটাই হয়েছে, তাও বললাম কথাটা। তার চোখ বলছে সে আমার কথাটা বিশ্বাসের প্রানপণ চেষ্টা করছে।
ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করলাম ,” কথা হয়েছে?” জোরে মাথা নাড়ল সে।
এরপর দুহাত দিয়ে মুখ ঢেকে কান্না শুরু করল।
আমি সান্তনার জন্য বলার কিছু খুঁজে পাচ্ছি না। কি করে পাব আমিও ফোনে লাইন পাই নি বাসায়। কিন্তু দেখেছি ঢাকায় তেমন ক্ষতি হয় নি যতটা উপকূল অঞ্চলে হয়েছে।
এরপরের কাজটা আরও স্বার্থপরের মতো করলাম। দ্রুত পায়ে সরে আসলাম লোকটার কাছ থেকে। আশে পাশে তাকিয়ে সাবধানে চোখ মুছলাম।

তার পরদিন ফোন বাজলো বেশ সকালে। টেলিমার্কেটিং ওয়ালারা সকালে বেশ জন্ত্রনা করে। তাই ফোন তা ধরলাম না। আবারও বাজল। এবার উঠতে উঠতে কেটে গেল।
সোফায় গা এলিয়ে আরক দফা ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছি আবার ফোন বাজল। ধরলাম।
হাউ মাউ করে কেদে উঠল কেউ। আমি অপ্রস্তুত হয়ে ফোন হাতে দাঁড়িয়ে গেলাম।
চট করে মাথা পরিস্কার হয়ে গেল। মজিদ, সেই বাস ড্রাইভার।
“কি হয়েছে খুলে বলেন তো”। আর তো কোন কথাই বুঝতে পারছি না।
কান্নার তোড়ে যা বলল তার সারমর্ম, ওর গ্রামে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
অনেক লোক নিখোঁজ। ওর বাড়ির কারও কোন খোঁজ পায়নি সে এ ক’দিনে।
তাই সে সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশে যাবে, লাশ খুঁজতে।

আমার কাছে ফোন করার কারণ তার হাত খালি, যদি কিছু সাহায্য করতে পারি।
হায়রে, আমি কুত্থেকে টাকা দিব? হিসেবের টাকা। নিরাশ করলাম।
ফোন রাখার পর থেকেই মনটা আবার খারাপ হয়ে গেল। লোকটাকে আমি যতদুর জানি, সহজ সরল। খুবই পরিশ্রমি। হঠাৎ মনে হল আমি তো পারি তাকে সাহায্য করতে। এ ধরণের একটা পরিস্থিতির কথা চিন্তা করেই ত সেই টাকা গুলো আলাদা করে রেখেছি।
হোক না আমার নয় অন্য কারো, তবুও তো আপন কেউ। চোখ বন্ধ করে মাকে বললাম “মাগো আর কয়েকটা দিন সুস্থ থাকো, অন্তত যে কয়দিন আবার টাকাটা না জমে।“

হাত বাড়ালাম ফোনের দিকে.........

জাফরী
নদীর পাড়, ক্যালিফোর্ণিয়া।

সৌরভ এর ছবি

কাউকে বলিনি, এসেই অন্তত দেশে যাবার টিকিটের টাকা আলাদা করে রেখেছি, খোজ নিয়ে রেখেছি কি করে এক দিনের মধ্যে দেশে যাবার টিকিট পাওয়া যাবে।
বড় ভয় করে কখন ভয়ঙ্কর কোন খবর আসে...

এতোটা সাজানোগোছানো নই,
কাজেই মাস্টার আর ভিসার কাছে বন্ধক রেখেছি নিজের জীবন।

এই অভিজ্ঞতা হয়ে গেছে এর মাঝে।
১২ ঘন্টার নোটিশে প্লেনে চড়ে বসার দরকার হয় অনেক সময়। সেই ভ্রমণগুলোতে বয়স বাড়ার অনুভূতি হয়, নিজের ফেলে আসা পথ আর অনিশ্চিত সামনের দিক সব নতুন করে চেনা হয়।


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

আরিফ জেবতিক এর ছবি

জাফরীর এই কমেন্টা আলাদা পোস্ট হতে পারত/ পারে ।
ভালো লেগেছে ।

-----------------------------
কালের ইতিহাসের পাতা
সবাইকে কি দেন বিধাতা?
আমি লিখি সত্য যা তা,
রাজার ভয়ে গীত ভনি না।

তীরন্দাজ এর ছবি

যুদ্ধই জীবন, দেশে বা বিদেশে- সবখানেই!

**********************************
যাহা বলিব সত্য বলিব

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

রায়হান আবীর এর ছবি

রেনেট ভাই, মন ছুঁয়ে যাওয়া একটা লেখা। আপনার জন্য কষ্ট হচ্ছে।
আর এখন থেকে নিজেকে একদম একলা ভাববেন না। সুখে দুখে সচলায়তন তো আছেই। আমরা আছি।

আম্রিকা নিয়া আমার একটা পোস্ট ছিল এইখানে... মন খারাপ
---------------------------------
এভাবেই কেটে যাক কিছু সময়, যাক না!

মুশফিকা মুমু এর ছবি

আসলেই খুব কষ্ট লাগছে আপনার জন্য। আমরা যারা এখানে ফামিলি নিয়ে আছি তারা বুঝতে পারিনা প্রবাসি বাংগালী স্টুডেন্টরা কত সেকরিফাইস করে। যানি অনেক হার্ড তারপরও বলছি আপনি কষ্ট করে পরা শেষ করে যদি ওখানে গ্রিন কার্ড নিতে পারেন তাহলে দেখবেন আস্তে আস্তে সেটেল হয়ে যাবেন। আপনি বিয়ে করবেন, আপনার নিজের ফামিলি হবে, তখন লাইফ এমন থাকবেনা। আর লাইফ যেমনই হক দেশ মিস করবেনই।

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

দিগন্ত এর ছবি

আমার ভবিষ্যতে এরকমই দশা হতে চলেছে মনে হচ্ছে ... (দীর্ঘশ্বাস)!!
---------------------------------
হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

বিপ্লব রহমান এর ছবি

রেনেট,

আপনার লেখা পড়ে কি বলবো ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না। ...কোনো শান্তনাই কি এখন আপনাকে ছুঁতে পারবে?

আপনি বরং এই সব পাওয়া না পাওয়া, স্বপ্ন-দুঃস্বপ্ন নিয়ে আরো লিখুন। সচল থাকুক আপানার লেখা।

আর এই লেখাটি একেবারে জাঝা। শাবাশ!


আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ বিপ্লব ভাই, আপনার সহানুভূতি, অনুপ্রেরণা এবং উত্তমের জন্য।
~রেনেট

দ্রোহী এর ছবি

হায় মেরিকা‍ !!


কি মাঝি? ডরাইলা?

অতিথি লেখক এর ছবি

অশেষ ধন্যবাদ সবাইকে, আপনাদের আন্তরিক সহানুভূতির জন্য। মন খারাপ করা লেখা লিখতে ইচ্ছা করে না, তারপর ও কেন জানি লিখে ফেললাম।
~রেনেট

মাহবুব লীলেন এর ছবি

স্বপ্নের টানে কেউ দেশ ছেড়ে যায়
স্বপ্নের টানেই কেউ দুঃস্বপ্নে খুলে বসে ঘর-সংসার

- অভিবাসন/ কবন্ধ জিরাফ

অপরিচিতা এর ছবি

সত্য কথা খুব সহজ ভাষায় বলেছেন। আমেরিকার জীবন বড্ড বেশী গতিময় (পড়ুন stressful). সবাই যেন উর্ধশ্বাসে ছুটে চলছে। কারও দ'দন্ড দাঁড়ানোর সময় নেই। কারন দাঁড়ালেই যে এই চলোমান স্রোতে ধাক্কা খাব।

নিঝুম এর ছবি

একটাই প্রাপ্তি----- আমেরিকায় থাকছি।
সত্যিই, আমি এখন আমেরিকায় থাকি।

রেনেট ,খুব সুন্দর হয়েছে লেখাটা।এই শেষ দুইটা লাইনের মধ্যে যাবতীয় কষ্ট, আর বিষাদ টের পেলাম।

তুই যুক্তিপ্রবন মানুষ।আমি জানি তুই দেশে ফিরে আসবি।ওইদিন সব ঠিক হয়ে যাবে।একদিন আমি,তুই, আমরা সবাই মিলে দেশ টাকে ঠিক করে ফেলব।

এই আশা...
---------------------------------------------------------
শেষ কথা যা হোলো না...বুঝে নিও নিছক কল্পনা...

---------------------------------------------------------------------------
কারও শেষ হয় নির্বাসনের জীবন । কারও হয় না । আমি কিন্তু পুষে রাখি দুঃসহ দেশহীনতা । মাঝে মাঝে শুধু কষ্টের কথা গুলো জড়ো করে কাউকে শোনাই, ভূমিকা ছাড়াই -- তসলিমা নাসরিন

জাহিদ হোসেন এর ছবি

আমেরিকাতে (বা বিদেশে) থাকলে আরো কিছু প্রাপ্তি আছে (নিজের অভিজ্ঞতা থেকে। তাদের আংশিক তালিকা নীচে দেয়া হোল।
১। দেশ এবং দেশের মানুষ যে কত প্রিয় তা বুঝতে পারা।
২। নিজে নিজে অনেক কিছু করতে শেখা (যেমন থালাবাটি ধোয়াধুয়ি, নিজে উঠে পানি খাওয়া, ইত্যাদি)।
৩। কাজের লোকের প্রতি মমতাশীল হওয়া।
৪। দু চারটে পাকিস্তানীর সাথে কয়েক সেকেন্ড আলাপের পরই মুক্তিযুদ্ধের যৌক্তিকতা বুঝে ফেলা (যদি কারো মনে এখনো কোন সন্দেহ থেকে থাকে)।
৫। এনটিভি বা এটিএন বাংলা কে উপভোগ করতে শেখা।
৬। রাস্তায় পদচারীদেরকে সম্মান করতে শেখা।
৭। প্রতি উইকএন্ডে কোথাও কারো বাড়ীতে বসে ভরপেট খেয়ে তাস খেলতে বসা বা শাড়ীগয়নার আলাপ করা।
৮। একান্ত প্রয়োজন না পড়লে গাড়ীর হর্ণটি না বাজানো।
৯। পুলিশকে ঘুষ অফার না করা।
১০। কোন জিনিস কিনে, সেটা বেশ ক'দিন ব্যবহার করে, তারপর দোকানে গিয়ে ফেরত দেয়া।

আরো নিশ্চয়ই অনেক কিছুই আছে যেগুলো আমার এই মুহুর্তে মনে পড়ছে না।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

অতিথি লেখক এর ছবি

জাহিদ হোসেন লিখেছেন:
দু চারটে পাকিস্তানীর সাথে কয়েক সেকেন্ড আলাপের পরই মুক্তিযুদ্ধের যৌক্তিকতা বুঝে ফেলা (যদি কারো মনে এখনো কোন সন্দেহ থেকে থাকে)।

একমত!! সত্যি কথা... বিদেশ না এলে এই কথা জানা হত না।

রেনেট আপনি সত্যি দারুন লিখছেন... চালিয়ে যান।
পাখি বালক

অতিথি লেখক এর ছবি

আরিফ জেবতিক লিখেছেন:
জাফরীর এই কমেন্টা আলাদা পোস্ট হতে পারত/ পারে ।
ভালো লেগেছে ।
-----------------------------

ধন্যবাদ আরিফ ভাই, এখন থেকে লেখার চেষ্টা করব।

জাফরী,
নদীর পাড়,
ক্যালিফর্ণিয়া।

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রবাস জীবনের করুন কাহিনী!! পড়ে বেশ কষ্ট পেলাম।
জাফরীর কমেন্টটাও বেশ লেগেছে।
জাহিদ ভাইয়ের পাকিস্তান ওয়ালা পয়েন্টের সাথে ১০০ % একমত!!!

কালবেলা

অতিথি লেখক এর ছবি

দেশে থাকতে একবেলা বা দুবেলা খাওয়াটা ছিলো আমার কাছে বিলাসিতা আর বাইরে পড়তে এসে সেটা হয়ে গেছে বাস্তবতা। আপনার লেখার সাথে নিজের জীবনের অনেক মিল খুজে পেলাম।
"একটাই প্রাপ্তি----- আমেরিকায় থাকছি।
সত্যিই, আমি এখন আমেরিকায় থাকি।"

তারপরেও ভালো থাকবেন।

সু

অতিথি লেখক এর ছবি

আবার ও ধন্যবাদ সবাইকে লেখাটি পড়ার জন্য, মন্তব্য করার জন্য।
ভাল থাকার চেষ্টা করে যাচ্ছি।
~রেনেট

স্বাধীন এর ছবি

দেশে থাকতে খুব আরামে ছিলেন বুঝি? বাবার আদর, মায়ের সোহাগ একটু বেশিই ছিল বোধহয়?
তবে এখনকার অনুভূতির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করছি। ওখানকার কষ্টটা দেশে করুন। দেখবেন দেশটা ভাল হতে খুব বেশি দেরি হবেনা।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।