আপনার প্রিয় বই কোনটি?

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শুক্র, ১৮/০৪/২০০৮ - ২:৫১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমরা কম বেশী সবাই বই পড়তে ভালবাসি। পাঠক হিসাবে আমাদের পছন্দ ও বিভিন্ন রকম। তাই, কে কোন লেখকের লেখা বেশী পছন্দ করেন, বা আপনার সবচেয়ে প্রিয় বই কোনটি, এ সম্বন্ধে জানতে ইচ্ছা করছে। আপনাদের মতামতের মাধ্যমে হয়তো আরো অনেক নতুন ভালো বইয়ের সন্ধান পাবো।

আসলে শুধুমাত্র একজন লেখক বা শুধুমাত্র একটি বই বেছে নেয়া কিছুটা কঠিনই বটে। তবে আমাকে যদি বলা হয়, আমি শুধু একটি বই কাউকে পড়ার জন্য সুপারিশ করতে পারবো, তবে আমার পছন্দ হবে শীর্ষেন্দুর "দূরবীন" বইটি।

তবে কেউ যদি জিজ্ঞেস করে আমার সবচেয়ে প্রিয় লেখক কে, বা কার প্রতিটি লেখাই ভাল লাগে, তবে আমি বলব নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের কথা। আপনারা সবাই নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা পড়েছেন কিনা জানি না, তবে আমার মতে, বাংলা কিশোর সাহিত্যের মুকুটহীন সম্রাট তিনি।

নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের সাথে পরিচয় কিভাবে হল সে কাহিনী একটু বলি। তখন ক্লাস সিক্সে পড়ি। স্কুলে একটা নতুন পিরিয়ডের সূচনা হল। লাইব্রেরী পিরিয়ড। সে ক্লাসের সময় আমরা লাইব্রেরীতে যাই, আর বিভিন্ন বই পড়ি। আর বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের উদ্যেগে কিছু বই প্রতি সপ্তাহে আনা হয়, আমরা সে বইগুলো বাসায় নিয়ে পড়তে পারি।

লাইব্রেরীয়ান স্যার ক্লাস শেষ হবার আগে আগে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের বইগুলো টেবিলের উপর ঢেলে দেন, আর সবাই হুটোপুটি শুরু করে, কে কার আগে তার পছন্দ অনুযায়ী বই নিতে পারে।

আমি কাড়াকাড়ি বা ধাক্কাধাক্কিতে কোনকালেই পটু ছিলাম না। তাই মোটামুটি ভীড় কমলে আমি বই নিতাম। তো একদিন যখন আমি বই নিতে গেলাম, গিয়ে দেখি, টেবিলের উপর একটাই বই অবশিষ্ট আছে। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের "চার মুর্তির আভিযান"।

তখন আমার পাঠাভ্যাস মোটামুটি হুমায়ুন আর সেবা প্রকাশনী ভিত্তিকই ছিল। তো, নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম কখন ও শুনিনি, আর টেবিলের উপর যেহেতু একটা বইই অবশিষ্ট আছে, তাই ভাবলাম, এই বইটা নিশ্চয়ই খুব একটা সুবিধের হবে না।

আমি মোটামুটি মন খারাপ করে বইটি নিলাম।

তারপর এক বিরাট ইতিহাস। বই পড়ে হাসতে হাসতে আমার পেটে খিল ধরে যাওয়ার দশা । সেই যে শুরু করলাম, এরপর একে একে নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের মোটামুটি সব কিশোর সাহিত্যই পড়লাম। অসাধারণ!

এত মজা আমি আর অন্য কোন বাংলা বই পড়ে পাই নি। শুধু টেনিদার গল্পগুলোই না, আরো অন্যান্য গল্পগুলোও একই রকম মজার।

যারা এখন ও নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা পড়েন নি, তাদের তার লেখা পড়ে দেখার জন্য অনুরোধ করছি। দৃঢ় বিশ্বাস, পড়ে হতাশ হবেন না।

তো, এইবার বলুন, আপনার পছন্দের কথা।

(রেনেট)


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

ওহ! আমার অতি প্রিয় একজন লেখক, মুহম্মদ জাফর ইকবালের নাম এখানে না ঢুকিয়ে কিছুটা অপরাধবোধে ভুগছি। বাংলাদেশের মত জায়গায় যিনি বিখ্যাত হয়ে ও তার লেখার মান ধরে রেখেছেন, তিনি হচ্ছেন মুহম্মদ জাফর ইকবাল। আর তার সবচেয়ে প্রিয় ২ টি বই হচ্ছে "স্কুলের নাম পথচারী" ও "আমার বন্ধু রাশেদ"।
জানি, লিস্টি লম্বা হচ্ছে, কিন্তু "আট কুঠুরী নয় দরজা"-র কথা না বললেই নয়! বাংলা ভাষায় আমার পড়া সর্বশেষ্ঠ মৌলিক থ্রিলার উপন্যাস হচ্ছে আট কুঠুরী নয় দরজা।
ঠিক আছে, মাইক এখন আপনাদের হাতে হাসি
~রেনেট

eru এর ছবি

স্টেইনবেকের অব মাইস এন্ড ম্যান।
মানিকের পদ্মা নদীর মাঝি।
eru

-------------------------------------------------
সুগন্ধ বিলোতে আপত্তি নেই আমার
বস্তুত সুগন্ধ মাত্রই ছড়াতে ভালবাসে।

পরিবর্তনশীল এর ছবি

বাংলা সাহিত্যে যার বই পড়ে সবচে তৃপ্তি পায় তিনি হচ্ছেন বিভূতিভূষণ। মনে আছে তাঁর পথের পাঁচালী আমি কী পরিমাণ অবাক হয়েছিলাম। প্রিয় লেখকের সবচে প্রিয় বই বাছাই করতে যাওয়া একটা অপরাধের পর্যায়ে পড়ে। তবুও বলব 'দৃষ্টিপ্রদীপ'। আরো অনেকের লেখা পড়ে মুগ্ধ হয়েছিলাম- তাদের মধ্যে আছেন 'যাযাবর'। মানিকের লেখার মধ্যে সবচে ভালো লেগেছিল 'পুতুল নাচের ইতিকথা'।
আর এখন যারা লিখছেন তাদের মধ্যে সবচে প্রিয় শীর্ষেন্দু। যাও পাখি-(দূরবীন- পার্থিব-হৃদয় বৃত্তান্ত-পারাপার কয়টা বলব?
সুনীলের পূর্ব পশ্চিম, সেই সময়, প্রথম আলো, একা এবং কয়েকজন, বুকের মধ্যে আগুন কিংবা সমরেশের কালবেলা ত্রয়ীও অসাধারণ লেগেছে।

আর বাইরের লেখার মধ্যে দস্তয়ভস্কির গ্যাম্বলার, ইডিয়ট ভালো লেগেছিল।

আর এখন যাদের ত্রিলার পাগলের মত খাই তারা হলেন- কেন ফলেট আর ফ্রেডরিখ ফরসাইথ।

ও আরেকজনের নাম বলতে ভুলে গেছি। ছোটগল্পের রাজা সত্যজিত রায়।

এরকম একটা সুযোগ করে দেয়ার জন্য রেনেট ভাইকে পাঁচ তারকা দাগাইলাম।

---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

জাহিদ হোসেন এর ছবি

ফ্রেডেরিখ ফরসাইদ ভয়ানক প্রিয় লেখক আমারও। কেন ফলেট অতোটা না। ইদানিং কালের থ্রিলার লেখকদের মধ্যে জেমস রোলিনস, স্টিভ বেরীকেও ভাল লাগে। পারলে পড়ে দেখতে পারেন। জন গ্রিশামের পুরনো বইগুলোও ভাল, তার অবস্থাও এখন আমাদের হুমায়ূন আহমেদের মতো। যা লেখে, তাই ট্র্যাশ। কিন্তু বিক্রি হয় ভাল।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

পছন্দের বইয়ের লিস্টি দেয়া তো কঠিন।
তুলনা করতেও পারি না।
এই মুহুর্তে - মাধুকরী, চিলেকোঠার সেপাই - লিখলাম।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

এই প্রশ্নটা কেউ জিজ্ঞেস করলে আমি মনে করতে পারি না যে আমি জীবনে আদৌ কোনো বই পড়েছি কি না

নাহ বইটই পড়িনি কোনো কালে
ওটা মাস্টাররা ইশকুলে পড়াতো বেত মেরে

অমিত এর ছবি

ডি লা গ্র্যান্ডি, মেফিস্টোফিলিস, ইয়াক ইয়াক

জাহিদ হোসেন এর ছবি

যে বইগুলো বারবার পড়েছি এবং পড়ি।
তারাশংকরের 'কবি', শীর্ষেন্দুর "পারাপার", হুমায়ূন আহমেদের 'নির্বাসন'।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।