দুই হাতে লেখা - ২

স্পর্শ এর ছবি
লিখেছেন স্পর্শ (তারিখ: মঙ্গল, ২৯/০৪/২০০৮ - ২:৩১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

[ নিজেকে নিয়ে একটা এক্সপেরিমেন্ট করতে গিয়ে এই সিরিজের সূচনা। দুই হাতে লেখার এক্সপেরিমেন্ট! যথারীতি আব্‌জাব গল্প। বিশেষত্ব হচ্ছে আমি ঘন্টায় কয়টা গল্প লিখতে পারি এটা তার একটা স্ব-পরীক্ষা। গল্পের মান সম্পর্কে তাই কোন নিশ্চয়তা দিতে পারছিনা। হিসেবের জন্য মোবাইলে টাইমার অন করেছি। টিক্‌ টিক্‌ টিক্‌ ... গল্প শুরু হল!]

পশু

মেয়েটার নাম কাজল। একদম ধব ধবে ফর্সা! তার পরও তার দাদী এই নাম রাখছে। কাজল যখন প্রথম বুঝতে শিখে তখন দাদীকে একবার জিজ্ঞেস করেছিল, “দাদী আমার নাম কাজল রাখলা ক্যান? ওইডাতো কালো মাইয়াগো নাম”। দাদি তখন তার ফোকলা দাতে মিচকি মিচকি হাসছিল আর বেশ রঙ করে বলেছিল, “আরে এইডা নিয়া মন ব্যাজারের কি হইলো? তুই তো দ্যাখতে চান্দের লাহান! তর বিয়ার পর শশুর বাড়ি তর নাম হইবো রাঙাবউ”। কাজল সেদিন খুব লজ্জা পেয়েছিল। দাদীখান যে কি!! এখন সে বুঝতে শিখেছেনা?!

কাজলের ভাই কাজলের চেয়ে দুই বছরের বড়। কাজলের ভাই কে যেদিন স্কুলে নিয়ে গেল তার বাপ সেদিন কাজল কেও নিয়ে গেছিল সাথে। এটা মজার কাজ করেছিল সেদিন ওর বাবা। ভর্তির সময় মেয়ের বয়স তিন বছর বেশি আর ছেলের বয়স দুই বছর কমিয়ে দিয়েছিল! দাদির “রাঙা বৌ” এর ব্যপারটা বুঝতে শিখলেও তার বাবার এই সুক্ষ কারচুপির কারণটা সে বুঝেনি সেদিন। তবে মজার একটা ব্যপার ছিল সেটা! এর পর থেকে কাজল তার ভাই এর সামনে গলাটা একটু মোটা করে কথা বলতো। আর বড় বোনের মত হুকুম দারি করার চেষ্টা করত। এখন তো সে ই বড়!! তাইনা?

কাজলের ভাইটাও খুব ভাল। স্কুলে যাওয়ার সময় চেয়ারম্যান চাচার বাগান থেকে আম পেড়ে নিয়ে আসতো সে। কখনো বা পেয়ারা অথবা জামরুল। এসব অবশ্য বেশ আগের কথা। ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত পড়েছিল তারা এক সাথে। এর পর কাজল মেয়েদের স্কুলে চলে যায়। পড়াশুনাও তাই আর তেমন ভালোলাগেনি পরে।

কাজলের বাপ ধানি-পানি গেরস্থ। তবে অবস্থা খুব একটা ভাল না। আর দশটা সাধারণ কৃষকের মতই। মেয়েকে পড়িয়েছে কারণ উপবৃত্তি। শেষমেষ তো বিয়েই দিতে হবে। সেটা যাতে তাড়াতাড়ি করা যায় সেই ব্যবস্থাও সে করে রেখেছে কাজলকে স্কুলে ভর্তি করার সময়ই। কাজলও ব্যপারটা জানে। এখন সে আরো বেশি বুঝতে শিখেছে।

একদম সাধারন পল্লী গ্রাম। দিন গুলোও সাধারণ ভাবেই কেটে যায় সবার। উঠানের মাঝে যে কচা গাছের খুটিটা পুতেছিল তার বাবা, গরু ঘুরিয়ে ধান মাড়াই এর জন্য। সেটাতে পাতা গজায়, ডাল গজায়, একসময় বড় একটা গাছই হয়ে যায় সেটা। প্রতিবারই ধানমাড়াই এর সময় সেই গাছের ডালপালা কেটে আবার খুটি বানিয়ে ফেলা হয়। পাখি বসে যাতে ধান না খেয়ে ফেলে। পাখিরা তবুও ধান খায়। ঢেকী ঘরের ঢেকীতে ধান কাটতে থাকে, শব্দ হয় ধপ্‌ ধপ্‌ ধপ্‌ ধপ্...
সেই সাথে কাটতে থাকে সময়।

এক সময় কাজল বড় হয়। আসলে বড় হয়না। গ্রামের আর সব মহিলাদের ভাষায়। ‘সেয়ানা’ হয়ে যায়।‌ এই মহিলারা নিজেরাও একই ভাবে ‘সেয়ানা’ হয়ে গিয়েছিল বহুকাল আগে কোন এক দিন। সেয়ানা মেয়েকে বিয়ে দিতে হয়। কাজলের বাপ দৌড়া দৌড়ি শুরু করে। একসময় পাত্রও পেয়ে যায়। পাত্র শিক্ষিত। শহরে থাকে। ছোট খাটো একটা চাকরি করে ঢাকায়। বিয়ের পর মেয়েকেও ঢাকায় নিয়ে যাবে। এত ভাল পাত্র পাওয়া তার মত গেরস্থের মেয়ের জন্য সহজ ব্যপার না।

কাজল তখন আরো অনেক কিছুই বুঝতে শিখেছে। বিয়ের ব্যপারে আর দশটা মেয়ের মতই লজ্জা মিশ্রিত এক ধরনের জল্পনা-কল্পনা তার মধ্যেও ছিল। তবে পাশের বাড়ির কেয়ার কাছ থেকে বিয়ের কিছু ভিতিকর ডিটেইলও শুনেছে সে। এসবের জন্য সে প্রস্তুত না। তারপর একদিন হুঠ করে কাজলের বিয়ে হয়ে যায়। নিজেদের বাড়িতেই।

তারপর যথারীতি সেই রাতটা আসে। টিম টিমে একটা কুপি বাতি আর চৌদ্দ পনের বছরের একটা মেয়ে খাট আলো করে বসে থাকে। কিছু রঙীন কাগজ আর গাদা ফুল দিয়ে সাজানো ছোট্ট একটা ঘরে। কুপি বাতির আলোটা মাঝে মাঝে কেমন কেঁপে কেঁপে ওঠে। সেই সাথে কেঁপে কেঁপে ওঠে মেয়েটা নিজেও। তার জামাইটাকে একবার দেখেছিল সে। দোজো বর। আগেও নাকি একবার বিয়ে হয়েছিল। ছয়মাসের মাথায় বউটা মারা যায়। পাত্রী দেখার সময় কাজলের দিকে তাকায়ও নি তেমন। দ্বিতীয় বিয়ে তো। তাই পুলক একটু কম। ধুমসো কালো। বয়সও অনেক বেশী মনে হয়। তাও বত্রিশ হবে! চেহারাও ভয়ঙ্কর। ডাকাইত যেন একটা! ভাবলেই ভয় হয়।

জামাই বাইরে বাতাস খাচ্ছে। সারাদিন ধক্কল গেছে খুব। ফ্যানের বাতাস খাওয়া লোক। এই গাও গ্রামে এসে গরম সহ্য হচ্ছেনা। বিড়ি টিড়িও খাচ্ছে মনে হয়। কখন রুমে ঢুকে পড়ে কে জানে! এক ধরণের আতঙ্ক গ্রাস করতে থাকে কাজলকে। এরকম হওয়ার কথা ছিলনা। মোটেই না। এই দিনটা নিয়ে অনেক যত্নে লালিত কিছু স্বপ্ন ছিল তার। নিজের হাটুর উপর মাথাটা কাত করে রেখে দরজার দিকে আতঙ্কিত চোখে তাকিয়ে থাকে সে।

বাইরে বৃষ্টি শুরু হয়। তার পর মৃদু ক্যাচ ক্যাচ করে খুলে যায় দরজাটা। ঘরে উকি দেয় কাল একটা মুখ। বাইরের অন্ধকারের চেয়েও কাল। তারপর সেই মুখটাতে একে একে অন্যান্য অঙ্গ প্রত্ঙ্গ যুক্ত হয়। একটা মৃদু শব্দ হয় হুড়কো লাগানোর। নিজের হাটুর কাঁপন বুঝতে পারে মেয়েটা। বুঝতে পারে দুরু দুরু বুকের কাঁপনও। কালো পশুটা এগিয়ে আসতে আসতেই গায়ের পাঞ্জাবী খুলে ফেলে। স্যান্ডো গেঞ্জী পাশ দিয়ে উকি দেয় কালো কালো লোমের জঙ্গল। আর মৃদু ভুড়ি। আতংকিত চোখ দুট আরো বড় হয়েযায় কাজলের। তারপর হুঠ করে তেল ফুরিয়ে যাওয়ায়, কুপিবাতিটাও বিশ্বাসঘাতকতা করে তার সাথে...

কিছুক্ষন অন্ধকার থাকার পর। একটা মৃদু নীলচে আলো দেখা যায় ঘরটাতে। পশুটা পাঞ্জাবীর পকেট থেকে একটা মোবাইল বের করে। সেই আলোয় তার ভয়ঙ্কর মুখটা আরো বিভৎস হয়ে যায়। মোবাইলের দিকে তাকিয়ে অন্যমনস্ক ভাবে আরো কিছুটা এগিয়ে আসে সেই মুখ। তারপর কাজলকে অবাক করে দিয়ে। অসাধারণ মিষ্টি একটা ভরাট কন্ঠে বলে উঠে, “গান শুনবে? আজকে শুনবো বলে কিছু গান নিয়ে এসেছি”। কাজলের আতংকিত চোখে এবার ভর করে অবিশ্বাস!! ভেজা চোখে নীলচে আলোয় সেই কালো মুখটাই কেমন যেন অসাধারণ হয়ে উঠতে থাকে। পশুটা তখন একটা ইয়ারপিস্‌ গুজে দেয় কাজলের বাম কানে।

এর পরে তেমন কিছু মনে নেই কাজলের। শুধু টিনের চালে বৃষ্টির ঝম ঝম আর ইয়ারপিস্‌টা কানে দেওয়ার সময় বামকানে স্পর্শানুভুতির সেই অজানা শিহরনটা ছাড়া।

সেদিন নীলচে আলোয় চেহারাটা অসাধারণ হয়ে উঠলেও পশু লোক টা পশুই থেকে যায়। তাই এই আজও মিরপুরের ছোট্ট একটা বাসায় যদি খুব ভোরে কান পাতেন আপনি। ঘুম জড়ানো কন্ঠে একটা মেয়েকে বলতে শুনবেন, “ধ্যেত!! তুমি একটা পশু!!”

------
স্পর্শ

[এক ঘন্টায় যে ৫ টা গল্প লিখেছি এটা তার ২য়টা। মূল গল্প আরো ছোট ছিল। পরে খেয়ে কাজ পাচ্ছিলাম না! তাই একটূ বড় করে ফেলসি। পড়ে থাকলে প্লিজ জানান কেমন লাগলো! ]


মন্তব্য

খেকশিয়াল এর ছবি

গল্পটা দারুন !

-----------------------------------------
রাজামশাই বলে উঠলেন, 'পক্ষীরাজ যদি হবে, তা হলে ন্যাজ নেই কেন?'

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

অতিথি লেখক এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ!
আমি কিছুটা গেয়ো লোক তো তাই গ্রাম্য গল্প লিখি মাঝে মাঝে। আর ভয়ে থাকি কারো ভালো লাগেকিনা!!
আপনার ভালো লেগেছে দেখে খুব ভালো লাগছে! হাসি

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

হাসি
................................................................................
objects in the rear view mirror may appear closer than they are ...

অতিথি লেখক এর ছবি

মিষ্টি হাসির জন্য ধন্যবাদ! হাসি

রায়হান আবীর এর ছবি

বড় করাতে গল্পটা সুন্দর হয়েছে আরও...এমন একটা গল্প পড়েছিলাম যায়যায়দিন ভালোবাসা সংখ্যায়। এক গৃহবধু তার প্রথম রাতের অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়েছিলেন। তার স্বামী ছিল তার চেয়ে অনেক বেশী বয়সী, মাথায় টাক...কাজলের মতো সেও ভয়ে আতংকিত হয়ে গিয়েছিল...কি হবে এইটা ভেবে...কিন্তু স্বামী তাকে সেই রাতে স্পর্শ করেননি...সারারাত তাকে পাশে বসিয়ে শুনিয়েছিলনে সুনীলের কবিতা...

অসাধারণ রোমান্টিক একটা ঘটনা...আপনার গল্পটাও দারুন হয়েছে।
---------------------------------
জ্ঞানীরা ভাবলেন খুব নাস্তানাবুদ করে ছাড়া গেছে...আআআহ...কি আরাম। বিশাল মাঠের একটি তৃণের সাথে লড়াই করে জিতে গেলেন।

ছোট্ট তৃণের জন্য অপরিসীম ঘৃণা।

অতিথি লেখক এর ছবি

মুল গল্প করুণ ছিল। বড় করতে গিয়ে রোমান্টিক বানিয়ে ফেলেছি।
যায় যায় দিন পড়া হয়না। পলিটিক্যালি বায়াসড মনে হয়।

গল্প ভাল লেগেছে যেনে খুশি হয়েছি।
ধন্যবাদ! হাসি

তীরন্দাজ এর ছবি

খুবই ভাল লাগলো গল্পটি। পশুত্ব আর রোমান্টিক ছবি মিলেমিশে একাকার। জীবনের মতোই! বাল্যবিবাহ সবচেয়ে বড় পশুত্ব।

**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

অতিথি লেখক এর ছবি

আসলেই, বাল্যবিবাহ ব্যপার টা করুণ
অনেক ধন্যবাদ! হাসি

পরিবর্তনশীল এর ছবি

ভালো লাগল।
তবে কেন জানি শেষটা বুঝে গিয়েছিলাম। লোকটার অতিরিক্ত কুৎসিত বর্ণনা দেখে।

---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

অতিথি লেখক এর ছবি

আসলে প্রথমে যখন গল্পটা লিখি তখন

"কুপিবাতিটাও বিশ্বাসঘাতকতা করে তার সাথে..."
এই পর্যন্ত লিখেছিলাম।
পরে গল্প বড় করার সময় কেন যেন মেয়েটার প্রতি দয়া হল!

বাস্তবে বাল্যবিবাহের শিকার দের এই সৌভাগ্য হয়না! মন খারাপ
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

----
স্পর্শ

পরিবর্তনশীল এর ছবি

না এই শেষটা অসাধারণ হয়েছে।
গল্প শেষ হওয়ার পর মনটা কিছুক্ষণ ভালো লাগায় আচ্ছন্ন হয়ে থাকে।
এটাই ভালো।

---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

অতিথি লেখক এর ছবি

হুমম,
আমারো ভাল লেগেছে।

আমি হ্যাপী এন্ডিং এর পক্ষের লোক! হাসি

পরিবর্তনশীল এর ছবি

এহে ... কমেন্ট দুইবার চলে আসছে! দেঁতো হাসি

---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

অতিথি লেখক এর ছবি

দুই বার কেন দুইশত বার আসলেও সমস্যা নেই। হাসি
কমেন্ট পেতে খারাপ লাগেনা। দেঁতো হাসি

জি.এম.তানিম এর ছবি

সুন্দর লেখা! ভাল্লাগসে!
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।

-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।

অতিথি লেখক এর ছবি

থেঙ্কু হাসি
কিন্তু তুই এত কম কম লিখিস ক্যান?

শামীম এর ছবি

পড়লাম, তাই জানান দিয়ে গেলাম। হাসি

ভাল লেগেছে।

অনেকদিন (একযুগেরও বেশি সময়) যাবৎ কিন্তু আমিও দুই হাতে লিখি।
(টাইপিং টিউটরটা বেশ কাজের ছিল।)
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

অতিথি লেখক এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ!

আসলেই ইদানিং কলমে লিখতেই পারিনা।
যেখানে দুই হাতে লিখলে প্রতিটা আঙ্গুলের একেক্টা হিটেই একেক্টা হরফ হয়ে যায় সেখানে কলম ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে লেখা মুশকিল। আর টাইপিং টা ফাস্ট ও হয় প্রচুর। হাতের লেখারও বালাইনেই!!
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে! হাসি

আরিফ জেবতিক এর ছবি

প্রতি ঘন্টায় পাঁচটা করে গল্প লিখছেন !

ভাই , আপনি তো বিরাট প্রতিভাবান । অভিনন্দন ।

eru এর ছবি

তাইতো মনে হচ্ছে।

গল্প ভাল লেগেছে।
eru

-------------------------------------------------
সুগন্ধ বিলোতে আপত্তি নেই আমার
বস্তুত সুগন্ধ মাত্রই ছড়াতে ভালবাসে।

অতিথি লেখক এর ছবি

না ভাই মনে হবার কিছু নাই!

গল্প ভাল লেগেছে জেনে আমি খুব খুশি। হাসি
ধন্যবাদ!!!

অতিথি লেখক এর ছবি

আরে ছি ছি! কি যে বলেন!! খাইছে

না আসলে প্রতি ঘন্টায় তো লিখিনা। যখন গল্প আসে তখন তাড়া হুড়া করে লিখে ফেলি। এই এক্সপেরিমেন্ট টা করার সময় লাকি ছিলাম। আর ৫ টার মধ্যে অনেকগুলোই 'স্বার্থক গল্প' হয়নি।

যেকোন সময় বসেই যদি এরকম করতে পারি! তাহলে তো আসলেই প্রিতিভাবান হয়ে যাব!! অ্যাঁ খবর হয়ে যাবে তখন। দেঁতো হাসি

অনেক ধন্যবাদ আপনার কমেন্টের জন্য।
আপনার প্রতিটা লেখা মনযোগ দিয়েপড়ি। আপনিও আমার লেখা পড়েছেন দেখে আমি খুশি! হাসি

তারেক এর ছবি

আপনার প্রসবের হার দেখে আমি যার-পর-নাই ঈর্ষান্বিত। চোখ টিপি
বোমা মারলেও আমার একটা বেরোয় না, আপনি পাঁচটা লিখেন ঘন্টায়! গুরু গুরু

গল্প ভালো লেগেছে। তবে একেবারে প্রাথমিক বর্ণনায় লোকটাকে পশু বলার কারণ খুঁজে পেলাম না। এইটা আচরণগত উপমায় বেশি যায় বলে আমার ধারণা।

_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

অতিথি লেখক এর ছবি

হা হা হা! আমি হলাম জীবানু শ্রেণির লেখক। আমার প্রসবের হার সম্পর্কে ইংরেজীতে বলা যায়ঃ

" I don't give birth, I multiply!!" খাইছে

গল্প ভাল লাগার জন্য ধন্যবাদ। আসলে লোক টা অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েকে বিয়ে করতে যাচ্চে। তার উপর চেহারা খারাপ। তাই পশু বলেছি। হাসি

আর প্রচন্ড তাড়া হুড়া করে লেখা। তাই আসলে ডিটেইলে খেয়াল করতে পারিনি।
অনেক ধন্যবাদ কমেন্টের জন্য।

---
স্পর্শ

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍আপনি আমার আগের কমেন্টে মাইন্ড খাইসেন?
সবাইরেই উত্তর দিসেন, কিন্তু আমি বাদ! মন খারাপ

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
নিঃস্বার্থ বন্ধুত্ব দেবো। কিন্তু কী পাবো তার বদলে? চিন্তিত

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

অতিথি লেখক এর ছবি

এই যে বস!! কি যে বলেন!!

শোনেন আমি মাইন্ড করলে আমারে ধরে একটা লাত্থি দিবেন। দেঁতো হাসি
মাইন্ড করার মত কিছু কি বলেছেন?

আসলে ঐ গল্পে আর ঢোকা হয়নি। 'অতিথি লেখক' তো। তাই কমেন্ট এর ট্রাক রাখা মুশকিল।
আমি আবার আজকেই অতিথি লেখকের লিস্ট থেকে নিজের লেখা খুজার উপায় শিখলাম। আগে তো মেইন পেজ স্ক্রল করে করে খুজতাম আমার নিজের লেখা!! ইয়ে, মানে...

আপনার কমেন্ট পেয়ে আমি যারপরনাই খুশি। হাসি
আপনারে একদিন গুরু মানলাম না?? অ্যাঁ

অনেক অনেক ধন্যবাদ! হাসি

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

কাহিনীটা সুন্দর। শেষটা ভালো লেগেছে। কিছুটা ব্যতিক্রমী। কারণ পশু স্বামীর কাছে পরাস্ত হয়েছে স্ত্রী, এমনটাই স্বাধারণত বেশি নজরে আসে।
তবে একটা কথা জানার ছিল। আপনি কি ঘন্টায় পাঁচটা গল্প কাগজে-কলমে লিখেছেন নাকি সরাসরি কম্পিউটারে টাইপ করে? শুভকামনা।

অতিথি লেখক এর ছবি

কাগজে কলমে লেখা সম্ভব না!! কম্পিউটারেই লিখেছি।
অভ্র ফনেটিকে আমার টাইপিং স্পিড এখন ভয়ঙ্কর।

আসলে মেসেঞ্জারে আমি সব সময় বাংলা হরফে বাংলা লিখে চ্যাট করি। খুব ফাস্ট লিখতে হয়। [অনেক জি.এফ. তো চোখ টিপি ]
এই কাজ করতে গিয়ে আমার টাইপিং স্পিড দূর্দান্ত খাইছে হয়ে গেছে। দেঁতো হাসি

কাহিনী ভাল লেগেছে যেনে আমি এইরকম তারাহুড়ার লেখায় উৎসাহ পেয়ে গেলাম !! হাসি [আরও অনেক গল্প আসিতেছে :D]
ইদানিং আমার উৎপাদন হার বেড়ে গেছে মনে হয়। এই ৫ টা লেখার পর আরো ৩ টা লিখে ফেলসি!! তেমন ভাল না তার পরও লিখে আরাম পাচ্ছি। এই হল আসল কথা।
সে গুলোতেও কমেন্ট পাবো আশা করি।

----
স্পর্শ

জাহিদ হোসেন এর ছবি

খুবই ভাল লেখা। অনেকদিন আগে পড়া "বালিকাবধূ" বইটির কথা মনে পড়লো। যদিও বাল্যবিবাহে এই জাতীয় ঘটনা খুবই বিরল।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রথমে গল্প টা করুণ করে লিখেছিলাম!
পরে কেন যেন মন নরম হয়ে গেল। পজিটিভ কিছু লিখতে ইচ্ছা হল। তাই পোস্টিঙ্গের আগে বদলেদিয়ে ছি শেষ্ টা হাসি

আপনাকে ধন্যবাদ।

মুজিব মেহদী এর ছবি

লেখা যখন আসে, ঘণ্টায় তেরোটা আসলেও সই। তাই লিখে ফেলুন। পরে ঝেড়েবেছে ৩টাও যদি থাকে তাতেই লাভ।

গল্পের মন্দ দিকটা হলো লোকটার উপর পশুত্বটা চাপিয়ে দেয়া। তারেকের মন্তব্যটাও এরকম ছিল।

গল্পে বর্ণিত লোকটার কোনো আচরণই তাকে পশুতুল্য করে তোলে না। দোজো বর, গায়ের রঙ কালো, দেখতে ডাকাতের মতো হলেই কেউ পশু হয় না। তাই চরিত্রটা নিয়ে পুনরায় ভাবতে বলি।

................................................................
আমার সমস্ত কৃতকর্মের জন্য দায়ী আমি বটে
তবে সহযোগিতায় ছিল মেঘ : আলতাফ হোসেন

... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখা যখন আসে, ঘণ্টায় তেরোটা আসলেও সই। তাই লিখে ফেলুন। পরে ঝেড়েবেছে ৩টাও যদি থাকে তাতেই লাভ।

একে বারে আমার মনের কথা। হাসি

আসলে শুরুতেই একজন বত্রিশি লোক , পনের বছরের একটা বালিকা কে বিয়ে করতে রাজি হয়েছে! এইটার কারনে পশু বলেছি।

অন্য ব্যপার গুলোতে আপ্নার সাথে এক্ম্মন্ত আমি। গল্প লেখা হয়েছে ১২ মিনিটে [এইটাতে একটু বেশী]
আসলে ডিটেইল খারাপ তো আসবেই। হাসি পাঠকের কাছে সেকারনে ক্ষমা প্রার্থী।

আর অনেক অনেক ধন্যবাদ কমেন্টের জন্য।
পরবর্তীতেও আপনার কমেন্ট আশা করব। হাসি

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- বিয়ের আদিম ব্যাপারগুলো নিয়ে আতঙ্কে থাকা বালিকা এমন চেহারার বরকে পশু ভেবেছে, স্বাভাবিক। পশুর উপমাটাও ঠিকাছে এখানে। কিন্তু তারপর ভুল ভাঙে বালিকাটির। বর কেবলই পশু না, মানুষও বটে। রোমান্টিক হৃদয়ের একজন মানুষ।

তবে পরবর্তীতে বরকে পশু বলার ব্যাপারটা আরও রোমান্টিক। 'যাহ্ দুষ্টু টাইপ'। গল্পের সমাপ্তিটা ভালো লেগেছে। খুব বেশি ঋণাত্বক হলে খারাপ লাগতো। বাস্তবতা যেমনই হোকনা কেনো, কোনো কিছুর ধনাত্বক পরিণতি দেখতে আমরা ভালোবাসি।
আপনার গল্পটা সেদিক দিয়ে যথাযথ। চলুক
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>

অতিথি লেখক এর ছবি

বাস্তবতা যেমনই হোকনা কেনো, কোনো কিছুর ধনাত্বক পরিণতি দেখতে আমরা ভালোবাসি।

আপনি তো ভাই পুরোপুরি আমার মত চিন্তাভাবনার লোক। একেবারে আমার মনের কথা গুলো সব বলেদিয়েছেন। হাসি

অনেক অনেক অনেক ধন্যবাদ! হাসি
পরবর্তী লেখাগুলোতেও আপ্নার কমেন্টের আশায় রইলাম।

----
স্পর্শ

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- টেনশন নিয়েন না মিয়া ভাই। এই পুরা সচলায়তনে আমিই একমাত্র পাপিষ্ঠ যার মন্তব্য কোটা শেষ হয়ে যায়। দেঁতো হাসি
অতএব নিশ্চিন্ত থাকেন। আপনি না চাইলেও মন্তব্যের ঘরে এই অধমের নাম দেখতে পাবেন বলে। হাসি
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>

অতিথি লেখক এর ছবি

অ্যা আ আ আ ... অ্যাঁ
মন্তব্যের আবার কোটাও আছেনি ইহানে!!! দেঁতো হাসি

অনেক ধন্যবাদ আশা দেওয়ার জন্য! হাসি

-----
স্পর্শ

অতিথি লেখক এর ছবি

বাল্য বিবাহ বাস্তবে ভয়ংকর অবিশাপ মেয়েদের জন্য। গল্পে হলেও এই সব বিষয়কে গ্লোরিফাই করা ঠিক নয় মনে হয়...ঃ-)
যাই হোক,গল্পটা ভালো লেগেছে।

নন্দিনী

অতিথি লেখক এর ছবি

আসলে প্রথমে যখন লিখি তখন বেশ করুণ ছিল গল্পটা। পরে পোস্ট করার আগে তাড়াহুড়া করে লাস্টের দুতিন প্যারা লিখে ফেলেছি।
গল্পই যখন লিখবো তখন শুধু শুধু একজন কে কষ্ট দিব কেন! মেয়েটাকে সুখি করার আমার একটা ক্ষুদ্র চেষ্টা এটা। বাস্তবে যদিও এরকম হয়না! মন খারাপ

গল্প ভাল লেগেছে জেনে ভাল লাগছে।
ধন্যবাদ।

----
স্পর্শ

ইরতেজা এর ছবি

মন্তব্য করার জন্য লগইন করলাম ভাই। এই আপনার প্রথম লেখা পড়েছি। অসাধারন হয়েছে । আমাদের সাথে থাকবেন। আরো লিখুন। ধন্যবাদ

_____________________________
টুইটার

অতিথি লেখক এর ছবি

হা হা হা,
ইরতি ভাই, আপনি আমার লেখা আগেও পড়েছেন! খাইছে
কিন্তু এখন চিনতে পারেননি। দেঁতো হাসি

অনেক অনেক ধন্যবাদ কমেন্টের জন্য। হাসি

------
স্পর্শ

শেখ জলিল এর ছবি

[এক ঘন্টায় যে ৫ টা গল্প লিখেছি এটা তার ২য়টা। মূল গল্প আরো ছোট ছিল। পরে খেয়ে কাজ পাচ্ছিলাম না! তাই একটূ বড় করে ফেলসি। পড়ে থাকলে প্লিজ জানান কেমন লাগলো! ]
....আপনি তো এক বিরাট চিজ! এক ঘন্টায় পাঁচটা?
..অভিনন্দন। গল্পটা খুব ভালো হয়েছে।

যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!

অতিথি লেখক এর ছবি

এই একটা গল্পই মনে হয় একটু ভাল হয়েছে! হাসি
বাকি গুলা পুরাই ফালতু!
গাইল খাইতে খাইতে আমি শেষ! মন খারাপ

অতিথি লেখক এর ছবি

পুরো গল্পটাই ভালো লেগেছে। শেষটা দারুণ সুন্দরভাবে হয়েছে।

ফেরারী ফেরদৌস

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।