রিসার্চ পেপার লেখার নিয়ম কানুন
--------রাতুল
[আমার লেখার শিরোনাম দেখে যা ভাবছেন আসলে তা নয়। এ বিষয়টা নিয়ে লেখার মত তেমন বিস্তর জ্ঞান বা অভিজ্ঞতাও আমার নেই। আমার এ লেখার ঊদ্দেশ্য হল বিজ্ঞজনের কাছ থেকে এ ব্যাপারে তাদের মতামত ও পরামর্শ শেয়ার করা]
ঊদাহরন দিয়াই শুরু করি। যতদূর মনে পড়ে সেকেন্ড ইয়ারে শেষে থাকতে আব্দুল্লাহ ভাই রুমে রুমে ল্যান এর কানেকশন দেয়া শুরু করল। পাশাপাশি কয়েকটা রুম মিলে ল্যান হবে । সব গুলা ছোট ছোট ল্যান দিয়ে বিশাল নেটওয়ার্ক হবে।
হঠাৎ করে মাথায় আসলো যে আলদা করে ল্যান এর জন্য লাইন টানার দরকার কি? ইলেক্ট্রিসিটির লাইন দিয়ে করা যায় না? নব্যপাশকৃত লেকচারার আশিক ভাইরে জিগাইলাম কারেন্টের লাইনের মধ্য দিয়া ডাটা ট্রান্সফার করা যায় কিনা? সে মাথা চুলকাইয়্যা কইল “জারির ফাদলুল্লাহ” রে জিগাও। জারির ভাইরে খুইজাই পাইলাম না। গেলাম বিদ্যুত ভাইয়ের কাছে। উৎসাহ পাইলাম কিন্ত আশাব্যাঞ্জক কোন তথ্য পাইলাম না।
নেট নতুন ইঊজ করা শিখছি। হতাশ হইয়া গুগলে দিলাম সার্চ। খুশী হইয়া গেলাম। কারেন্টের লাইনের ভিতর দিয়া ডাটা পরিবহন করার নাম হইল Power Line Commutation (PLC).
আমার একখানা পাব্লিকেশনের প্রতি আগ্রহটা এখান থেকেই শুরু। আমি তখন ভাবছিলাম না জানি কি একটা বাইর কইরা ফালাইছি!!
একটা হিসাব কষলাম। দেশে ডিজিটাল টেলিফোন লাইন দিয়া ইন্টারনেট দিতে হইলে কি পরিমান টাকা লাগবে? কি পরিমান ডিজিটাল একচেঞ্জ বসাতে হবে? আর যদি পল্লীবিদ্যুত , PDB, DESA, এদের লাইন ব্যবহার করা যায় তবে দেশের দূর দূরান্ত পর্যন্ত অতি সহজেই (যদিও অত সোজা না) ইন্টারনেট দেয়া যাবে। গ্রামীণফোণের ইন্টারনেট তখনো চালু হয়নি। তাই সেটার হিসাব দেখাতে পারিনি। পুরাপুরি নন-টেকনিক্যাল পেপার। তানবীর স্যার অনেক সাহায্য করেছিলেন। সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে দিলাম ICCIT 2005 এ সাবমিট করে। আমারে অবাক করে দিয়া আ্যকসেপ্ট হয়ে গেলো।
ঐ কনফারেন্সে ড আতাঊল করিম স্যার এর কি নোট পেপার ছিল “How not to write research Manuscript”. একটা লেকচার যে কতটা প্রাণবন্ত হতে পারে ওনার লেকচার না শুনলে আন্দাজও করতে পারতাম না। তখন আমি থার্ড ইয়ারে। বেশীর ভাগ কথাই এন্টেনার ঊপর দিয়া গ্যাছে!!
ঘটনা-২
Data Structure কোর্স চলাকালীন আশিক একটা নতুন একটা সার্চিং এলগরিদম বের করল। সবাই অবাক। পরে আনিস ভাইয়ের সাথে আলাপ করে জানা গেল আসলে ইহা “মার্জ Sort”। আশিক কিন্ত আসলেই সেটা নিজে নিজে বের করেছিল। এরকম ঘটনা/আইডিয়া মনে হয় অনেকেরই হয় কিন্তু সেটাকে আনুষ্ঠানিক রুপ (পাব্লিকেশন করা) দেওয়া হয়ে ওঠে না।
এ কাহিনী দুইটা বলার কারন হল আসলে আমদের দেশে একজন আন্ডার গ্রাজুয়েটের পক্ষে কতটা গবেষনা করা সম্ভব? কিংবা আন্ডার গ্রাজুয়েটে গবেষনার উতসাহ বা ট্রেডিশান আমাদের কতটা ? আর সে গবেষনা লব্ধ ফলাফলকে একটা পাব্লিকেশনে রুপ দেয়াটার কলাকৌশলই বা কি?
কিংবা গবেষনাকে আমাদের দেশে কিভাবে শেখানো হয় বা আদৌ উতসাহিত করা হয় কি?
আমার মতে লোকাল কনফারেন্স গুলি আন্ডার গ্রাজুয়েটদেরকে উতসাহিত করে। ইন্ডিয়ার কথা নাইলে বাদ দিলাম পাকিস্তানেও যে পরিমান লোকাল কনফারেন্স হয় তার কাছে আমাদের সংখ্যা অনেক কম। অথচ রিসার্চের জন্য এরকম কনফারেন্স/জার্নাল ও তার অনলাইন সংস্করন থাক খুবই জরুরী। জাপানে/কোরিয়াতে তো রীতিমত নিজেদের ভাষায় লোকাল কনফারেন্স গুলি হয়!!
আমরা ইউনিভার্সিটি বললে বুঝি যেখানে কতগুলি পোলাপান HSC অথবা সমমানের পরীক্ষা দিয়ে ভর্তি হয় এবং পাশ করে চাকুরী খোজে। ইউনিভার্সিটি যে প্রধানত রিসার্চের জন্য আন্ডার গ্রাজুয়েট পড়ানো যে তার প্রধান কাজ নয় আমাদের এটা বিশ্বাস করতে কয়েকবার ঢোক গিলতে হয়।
গ্রাজয়েট লেভেলেই বা আমাদের কতটা রিসার্চ হচ্ছে? রিসার্চের জন্য ফান্ডিং লাগে,এইটা লাগে সেইটা লাগে। এগুলা আমদের নাই। আমাদের অনেক কিছুই নাই। এসব লিমিটেশনের মাঝেও দুচারটা কনফারেন্স হচ্ছে।তাও কম না। হাজার শুকরিয়া।
আমাদের হাজার কোটি লিমিটশনের মাঝে আমাদের বিশাল সংখ্যক আন্ডার গ্রাজুয়েটদেরকে কিভাবে রিসার্চে উতসাহিত করা যায় বলে আপনি মনে করেন?
মন্তব্য
বাংলাদেশে গবেষণার কথা উঠলেই অনেকে তিনটা জিনিস নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন, কেউ কেউ আবার এই দুটো বিষয়কে ঢাল বানিয়ে নিজের অক্ষমতা ঢাকতে চান এই বলে যে, যেহেতু ঐ তিনটা জিনিসই নেই, সেহেতু বাংলাদেশে গবেষণা সম্ভব নয়।
তো সেই জিনিস তিনটা হলো- ফান্ডিং (গবেষণার জন্য অর্থ), প্রজেক্ট (গবেষণার বিষয়), এবং জনবল (হতাশাবাদীরা মূলত পোস্টগ্র্যাজুয়েট ছাত্রের সংকটকেই বোঝান)।
রিসার্চের জন্য ফান্ড একটা বড় ব্যাপার সন্দেহ নেই। তাই বলে বাংলাদেশে থেকে যে গবেষণা একদমই করা যাবে না তা কিন্তু নয়। মাত্রাভেদে গবেষণা বিভিন্ন ধরণের হতে পারে। তাত্ত্বিক, ব্যবহারিক, প্রায়োগিক, কিংবা বিশ্লেষণী। সবক্ষেত্রে অর্থ ব্যয়ের পরিমাণ কিন্তু সমান নয়। উদাহরণ হিসেবে আমি আমার গবেষণা বিষয়ের কথা বলতে পারি। আমি মূলত কাজ করি বিভিন্ন শিল্পকারখানার অপটিমাইজেশনের ওপর। প্রথমে সিস্টেমের একটি গাণিতিক মডেল তৈরি করে কম্পিউটারের সাহায্যে নানাবিধ অংক কষে বের করি কীভাবে একটি কারখানা চালালে মুনাফার পরিমাণ বাড়ানো যায়, খরচ কমানো যায়। এখন, এই গবেষণায় আমার যেটুকু ইনভেষ্টমেন্ট তা হলো, একটি আধুনিক মানের কম্পিউটার এবং যে সফটওয়ারটি আমি ব্যবহার করি তার লাইসেন্স। বাংলাদেশের যে কোনো সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষেই আমার গবেষণার যাবতীয় খরচাদি এবং সরঞ্জামের ব্যবস্থা করা খুবই সম্ভব। তার মানে, আমার গবেষণার মত এরকম অনেক গবেষণাই বাংলাদেশে অবস্থান করেই চালিয়ে নেয়া যেতে পারে। বিশেষ করে, আমি মনে করি সিম্যুলেশন সম্পর্কিত অনেক গবেষণাই বাংলাদেশে সম্ভব, যদি স্বল্প অর্থের সঠিক ব্যবহার করার সঠিক দিকনির্দেশনা থাকে।
বাংলাদেশের অনেক প্রকৌশলগত সমস্যা আছে যার পূর্ণ বা এমনকি আংশিক সমাধানও ব্যাপক গবেষণার সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। একটু চিন্তা করলেই কিন্তু প্রচুর বিষয় পাওয়া যায় যার উপর বিস্তর গবেষণা সম্ভব। ঢাকা শহর নিজেই একটা গবেষণার বিশাল সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র। নগরায়ন, যানজট, পরিবহন, পরিবেশ, ক্ষুদ্র উদ্যোগ, জীবনযাত্রা, অর্থনীতি, শিল্প, উদ্ভাবন- কত বিষয়ই না আছে যে আমাদের দেশের ক্ষেত্রে একেবারে স্বত্যন্ত্র- একদম ইউনিক। যেখানে ফান্ডিং থাকাটাই গবেষণার একমাত্র কথা নয়। কৌশলী উদ্ভাবন, নতুন চিন্তা, কনসেপ্ট, একটু আন্তরিকতা- এই যথেষ্ঠ। একটি বড় পরিসরের সমস্যাকে ছোটো ছোটো অনেক সমস্যায় ভেঙ্গে ধাপে ধাপে তাদের একটু একটু সমাধানই কিন্তু গবেষণা। এরকম অনেক কিছুই বাংলাদেশে সম্ভব।
সুতরাং গবেষণার বিষয় কোনো সমস্যা না, আর শুরুতেই বলেছি অনেক গবেষণা আছে যার জন্য অর্থও বিরাট কোনো প্রতিবন্ধকতা নয়। আমি এই পোস্টকে ধন্যবাদ দিতে চাই এজন্য যে এই পোস্টে গবেষণার জন্য তৃতীয় যে দরকারি উপাদান সেই জনবলের একটি উত্স হিসেবেআন্ডারগ্রেড পর্যায়ের ছাত্রদেরকে দেখার তাড়না যুগিয়েছে।
বৈদেশিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কিন্তু আন্ডারগ্রেড পর্যায়ে যথেষ্ঠ ভালো গবেষণা হয়। আমি নিজেও এরকম বেশ কয়েকটি প্রজেক্টের সাথে জড়িত। এখানে ছয়মাসের জন্য একজন ছাত্রকে একটি গবেষণা প্রকল্পে কোনো এক অধ্যাপকের সাথে সংযুক্ত করে দেয়া হয়। অনেক সময়েই দেখা যায় যে এই ধরণের প্রকল্পগুলি একটি বৃহত্ প্রকল্পের সহায়ক হিসেবে বেছে নেয়া হয়। যার ফলে ছয় মাস পরে ছাত্রটি নিজে যেমন গবেষণাধর্মী কাজকে বুঝে উঠে, তেমনি কিছু না কিছু ফলাফল বের হয়ে আসে। অনেক ক্ষেত্রে সেটা পাবলিকেশনের পর্যায়েও চলে যায়।
সুতরাং আন্ডারগ্রেড পর্যায়ে গবেষণার পর্যাপ্ত সুযোগ অবশ্যই আছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যদি একনিষ্ঠভাবে এই বিষয়ে চিন্তাভাবনা করেন, নতুন কিছু করতে চান, তাহলে কিন্তু কোনো একটি প্রকল্পকে ভেঙ্গে অনেকগুলি আন্ডারগ্রেড পর্যায়ের প্রকল্প হাতে নিতে পারেন। এতে ছাত্ররা যেমন উপকৃত হবে, তেমনি বাংলাদেশেই নতুন নতুন গবেষণার দ্বার উন্মোচিত হবে।
আমার নিজের অভিজ্ঞতাও সেরকমই। আন্ডারগ্রেডে আমার প্রজেক্ট সুপারভাইজারের উদ্দীপনায় আমাদের গ্রুপ থেকে একটি কনফারেন্স পেপার পাবলিশ করতে সক্ষম হয়েছিলাম, যদিও সেটাই ছিল আমাদের জীবনের প্রথম গবেষনায় হাতেখড়ি।
দেশের মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় এবং তাদের উপকারী কোনো গবেষণা- এইটাই মূল চালিকাশক্তি হওয়া প্রয়োজন। বাংলাদেশে ন্যানোটেকনোলজি নিয়া গবেষণার যতটা প্রয়োজন তার চেয়ে বেশি প্রয়োজন বিদ্যু, পানি, যাতায়াত, চিকিতসা- এইসব সমস্যার সমাধান। আর এই সমস্যার সমাধানও করতে হবে আমাদের মত করেই, সাশ্রয়ী, সহজলভ্য এবং সহজবোধ্য। উত্সাহের কথা হলো যে, এই ধরণের গবেষণা উন্নত বিশ্বে করার চেয়ে দেশে থেকেই করা ঢের ভালো, তাতে সমাধানে পৌছানোর সম্ভাবনা বেশি। এটা আন্ডারগ্রেড পর্যায়ের ছাত্ররা যদি উপলব্ধি করতে পারে তাহলেই একটা জোয়ার আসা সম্ভব।
পরিশেষে আমি একটা পুরষ্কারের কথা বলি (অনেকেই হয়তো জানেন) - Mondialogo Award একটু লিংকটা ঘুরলেই বোঝা যাবে যে ছোটো ছোটো গবেষণার যে বিষয়গুলা বাংলাদেশের জন্য জরুরী (কিন্তু আমরা অনেকেই ওভারলুক করি), সেরকম সমস্যার সমাধান করা কিন্তু কোনোমতেই ছোটো কিছু না। বাংলাদেশে থেকেই আন্ডারগ্রেডদের পক্ষেও এরকম প্রেস্টিজিয়াস প্রাইজ জেতা সম্ভব।
(বিরাট পেঁজগির মধ্যে আছি। মাথা উত্তপ্ত। তাই বিশাল লেকচার ঝেড়ে ফেললাম। পুরা কমেন্ট পরার কোনো প্রয়োজন নাই )
----------------------------------------------
আমাকে নিঃশব্দে অনুসরণ করে একটা নদী-
সাথে নিয়ে একটা পাহাড় আর একটা নিঃসঙ্গ মেঘ।
এত চমৎকার বিশ্লেষণী মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
দেশে অধ্যাপকেরা এই ধরণের প্রকল্পের সাথে জড়িত থাকার সুযোগ কম পান। আর পেলেও ছাত্র পড়িয়ে, আ্যডমিনের কাজ করে পরিশেষে গবেষণাটা অপশনাল থেকেই যায়। সর্বোপরি আমাদের সার্বিক উচ্চশিক্ষায় গবেষনার ঐতিহ্য/ট্রেডিশানের বড় অভাব।
পুরোটা একমত নই।
প্রথমত, প্রকল্পের সাথে জড়িত থাকার সুযোগ বলতে আপনি কি বুঝাচ্ছেন, এটা আমার কাছে পরিষ্কার হলো না। আপনি যদি সরকারী প্রকল্পের কথা বলে থাকেন তাহলে ঠিক আছে। সেখানে সবার পক্ষে সুযোগ হয়ে উঠে না। কিন্তু অধ্যাপকের নিজস্ব গবেষণার বিষয়কেই প্রকল্প ধরলে, এই সুযোগ অধ্যাপককে নিজেই তৈরি করে নিতে হবে। সব জায়গাতেই তাই হয়। রিসার্চ প্রপোজাল যার যত ভালো, তার ফান্ডিং তত বেশি। বাংলাদেশের অধ্যাপকদের নিজে থেকে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান ভাবতে হবে। তবেই তার গবেষণা চলবে।
যমুনা সেতুতে কেন ফাটল ধরলো, এই সরকারপুষ্ট গবেষণায় হয়তো বুয়েটের সকল শিক্ষকের পক্ষে সামিল হওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু যানজট কিভাবে কমানো যায়, বন্যা ক্যামনে ঠ্যাকানো যায়, সহজভাবে সেচ কীভাবে দেয়া যায়- এর জন্য নিশ্চই অন্যের উপর হা করে বসে থাকার প্রয়োজন নেই!
দ্বিতীয়ত, ছাত্র পড়িয়ে, আ্যডমিনের কাজ করে গবেষণার সময় পাওয়া যায় না- এই যুক্তি ধোপে টেকে না। রিসার্চ বেজড যে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে এগুলো একটুও কম করতে হয় না অধ্যাপকদের।
----------------------------------------------
আমাকে নিঃশব্দে অনুসরণ করে একটা নদী-
সাথে নিয়ে একটা পাহাড় আর একটা নিঃসঙ্গ মেঘ।
চমৎকার পোস্ট। আশা করছি খুব প্রাণবন্ত আলোচনা শুরু হবে, বিশেষ করে গবেষণা এবং প্রবন্ধপ্রকাশনার সাথে জড়িত অনেক সচল যেহেতু আছেন।
হাঁটুপানির জলদস্যু
আমাদের দেশে যারা সরকার থেকে অনেক সুবিধা নিচ্ছে তাদের রিসার্চে অবদান নাই বললেই চলে। উদাহরন হিসাবে ঢাবি ও বুয়েটের কথা বলা যায়। সব থেকে বেশি সুযোগ ও সুবিধা নিয়ে সব থেকে বেশি পিছিয়ে আছে। বাংলাদেশের একমাত্র ভাল মানের রিসার্চের কথা বললে সেক্ষেত্রে "বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়" এর ধারে কাছেও অন্য কেউ নাই।
ইনডিয়ার সাথে আমাদের তুলানা করা মানে হাতির সাথে বিড়ালের তুলনা। পাকিস্থানের কথা জানি না।
দেশ থেকে কে কত সুবিধা নিল বা দেশ আমারে কত দিল তার হিসাবের চাইতে আমি কতটা দিলাম তা কি বড় নয়?
আমাদের বর্তমান অবস্থা আমরাই সবচেয়ে ভালো জানি। তাই আবারো বলছি আমাদের অনেক কিছুই নেই।অনেক অনেক সমস্যা। এসবের মাঝে কি করে অপ্টিমাম সমাধাণ বের করা যায় তাই খুজতে হবে।
আমি কতটা দিলাম অবশ্যই সেটা মুখ্য। কিন্তু যে বেশি খাবে, নিজেকে সেরা বলে দাবি করবে মুখে মুখে আর কাজেই বেলায় ফুট্টুস, তারে নিয়ে কথা কেন বলা যাবে না??
আসলে ইউনিতে শিক্ষকদের বেতন হওয়া উচিত রিসার্সের উপরে বেজ করে।
আমার মনের কথাটা বলেছেন। বছর বছর প্রাগৈতিহাসিক আমলের নোট দিয়ে ক্লাশে ছাত্র পড়িয়ে, লাল, নীল দলের পেছনে সময় কাটিয়ে, আর বছরগেলে সিনিয়রিটির ভিত্তিতে আরো সিনিয়র, প্রমোশন, প্রভোস্ট ইত্যাদি হয়ে হয়ে সিস্টেমটাই গেছে।
অবশ্য দোষটা শুধু তাদেরই না। প্রেষণার অভাবও হইতে পারে।
এইজন্যেই উপরের মন্তব্যে জাঝা
----------------------------------------------
আমাকে নিঃশব্দে অনুসরণ করে একটা নদী-
সাথে নিয়ে একটা পাহাড় আর একটা নিঃসঙ্গ মেঘ।
কঠিন পোস্ট নজরে রাখছি আশাকরছি প্রানবন্ত আলোচনা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইদানিং নতুন বিষয়গুলো কোর্সের অন্তভূক্ত করা হয়না, নতুন বিষয়গুলোতে শিক্ষকদের গবেষণা এবং এই বিষয়গুলোতে পারদর্শীতার অভাবে। তাই দিনের পর দিন বস্তাপঁচা ফটোকপি সর্বস্ব নোটের উপর নির্ভর করেই শিক্ষার্থীদের গ্রাজুয়েশন লেভেল পার করতে হয়। আর পোস্ট গ্রাজুয়েশনে চাকরিরর বাজার খুঁজতে খুঁজতে গবেষণার কথা ভাবাতো অনেকটা স্বপ্নের মত, তবু ফারুক ভাইয়ের পরামর্শ অনেকটাই পজেটিভ।
মন্তব্যের জন্য (বিপ্লব)
শিক্ষকদের বেতন কাঠামো গবেষণা উপর হওয়া উচিত এই বিষয়ে ১০০% সহমত।
--------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে
-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে
(ফারুক হাসান ভাইকে) পুরোটাই পড়ে ফেললাম! আর আমার বলতে চাওয়া অনেক কথাই অনেক গুছিয়ে, অনেক সুন্দর করে আপনি বিস্তারিত বলে দিয়েছেন। কষ্ট কমিয়ে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ
জ্বী না, প্রহরী ভাই। এত অল্পতেই আপনি পার পাচ্ছেন না। ছবিতে যে ইকোয়েশন নিয়া ঘুরতেছেন, সেটাই বলে, এই লাইনে আপনি ঘাগু মাল। ঝটপট, কিছু ছাড়েন।
আমি ব্যক্তিগতভাবে বাংলাদেশে নানাবিধ গবেষণা কর্মকান্ডের যে ব্যাপক সম্ভাবনা দেখতে পাই, এই নিয়ে একটা জোরালো আলোচনা হওয়া উচিত। আর হিমু ভাই ঠিক বলেছেন, সচলায়তন হচ্ছে এর জন্য একদম সঠিক প্লাটফর্ম।
আবারো রাতুলকে ধন্যবাদ। পোস্টটি যথাসময়ে করার জন্য।
(আচ্ছা, শামীম ভাই কোথায়?)
----------------------------------------------
আমাকে নিঃশব্দে অনুসরণ করে একটা নদী-
সাথে নিয়ে একটা পাহাড় আর একটা নিঃসঙ্গ মেঘ।
যত বড় আলোচনা চলছে .... মন্তব্যগুলো পড়েই শেষ করতে পারলাম না।
কথা ঠিক ... গবেষণার ক্ষেত্রের কোন অভাব নাই। কিছু ক্ষেত্রে ঘিলু ব্যবহারের আগ্রহের অভাব আছে।
ইতিমধ্যে বুড়িগঙ্গার সেই প্রস্তাবের প্রাথমিক কাজ শুরু করে দিয়েছি। থিসিসের একটা গ্রুপের কাজ দিয়েছি, ল্যাবে প্রাথমিক পরীক্ষা করার।
কিছু এপ্রোপ্রিয়েট টেকনোলজিও খুঁজে পেয়েছি ..... চিংড়ি হ্যাচারীতে ওরা পানিতে অক্সিজেন বাড়ানোর জন্য এয়ারেটর ব্যবহার করে। সবকিছুই এখানে কিনতে পাওয়া যায় ... (আমি যে বাসায় থাকি ঐ বাসার মালিকেরই ঐ যন্ত্রপাতি সরবরাহের ব্যবসা ... )
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
চালিয়ে যান!
----------------------------------------------
আমাকে নিঃশব্দে অনুসরণ করে একটা নদী-
সাথে নিয়ে একটা পাহাড় আর একটা নিঃসঙ্গ মেঘ।
ইয়ে আমি খুবই ছোট মানুষ, দেশের একটা সরকারী প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে চতুর্থ বর্ষে পড়ছি। তাই আমার অভিজ্ঞতা খুব বেশি নয়।
আন্ডারগ্র্যাডে অনেকেই চায় ( অন্তত আমার আশে পাশে এমনকি আমি নিজেও ) কিছু পাবলিকেশন করতে। কিন্তু সমস্যা থাকে নানাবিধ। মূল সমস্যা হচ্ছে আমাদের (সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়কেই বোঝাচ্ছি) শিক্ষক মহোদয়দের সময়ের বড্ড অভাব। অধিকাংশ শিক্ষক নানা বিশ্ববিদ্যালয়ে খ্যাপে ক্লাস নেওয়া এবং একটু বয়স্ক হলেই সেই সাথে নানাবিধ প্রশাসনিক দায়িত্ব মিলে, রিসার্চের সময় সেভাবে তিনি আর বের করতে পারেন না। তবে বর্তমানে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে , আমার বিভাগে একদম তরুণ কিছু শিক্ষক অসাধারণ ভূমিকা রাখছেন গবেষণামূলক কাজে ছাত্রদের উৎসাহী করতে, সেজন্য তারা অবশ্যই ধন্যবাদের দাবীদার।
আন্ডারগ্র্যাড লেভেলে একজন ছাত্র সাধারণত ক্লাসরুমে যা পড়ে, তা অত্যন্ত গৎবাঁধা। এটুকু পড়ে অন্তত আমি কোনদিনই ধারণা করতে পারিনি, এ বিষয়ের উপর আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কি কি কাজ হয়েছে, এবং এই আন্ডারগ্র্যাডের ছাত্র হয়েই আমার পক্ষে কি কি কাজ করা সম্ভব। তাই এ ক্ষেত্রে আমার মনে হয়, শিক্ষকদের পাঠদান ভঙ্গিমারও একটা ভূমিকা আছে।
সর্বোপরি আমার যেটা মনে হয়, আমাদের দেশে রিসার্চের সংস্কৃতিটাই সেভাবে গড়ে ওঠেনি। ফান্ডিং কিংবা ইকুইপমেন্ট নেই - এই রূঢ় সত্যের বাইরেও যদি আমরা চেষ্টা করি, কিছু সামান্য কাজ হলেও হয়ত করতে পারি, কিংবা থিয়োরিটিক্যাল মডেলিংগুলো হয়ত করতে পারি। কিন্তু এর কিছুই হয় না, আমাদের সেই মানসিকতা নেই বলে।
আমার স্বল্প জ্ঞানে বিশাল লেকচার ঝাড়লাম, বয়োজেষ্ঠদের কাছে আগাম ক্ষমাপ্রার্থী !
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
আমাদের জীবনসংলগ্ন সমস্যাগুলির সমাধান নিয়েও দুর্দান্ত সব গবেষণা হতে পারে। ধরা যাক, ধানমন্ডি এলাকায় ট্রাফিক জ্যামের নিরসন। ধানমন্ডির টপোলজি, জ্যামের প্রকৃতি, গাড়িঅলাদের স্বভাব, ইত্যাদি বিশ্লেষণ করে একটি গ্রহণযোগ্য, প্রয়োগযোগ্য, টেকসই সমাধানে এগিয়ে আসতে পারে কোন বিশ্ববিদ্যালয়। কাগজ, কলম (কিংবা একটি সাধারণ কম্পিউটার) আর গুগল ম্যাপস থেকে ধানমন্ডির একটি ম্যাপ পেলে আপাতত আর কিছু লাগে না।
একই সমস্যাকে বিস্তৃত করা যেতে পারে এয়ারপোর্ট রোডে প্রাত্যহিক জ্যামের ওপরে। যে পরিমাণ জ্বালানি আর মানুষ-ঘন্টার অপচয় হয় এই জ্যামের জন্যে, তার মূল্য নিরূপণ করলে মাথা চক্কর দেয়াই স্বাভাবিক। এর একটি ক্ষুদ্র ভগ্নাংশ যদি তিন সদস্যের একটি ছাত্র-গবেষক দল আর তার সুপারভাইজারকে দিয়ে ফল পাওয়া যায়, সমস্যা কোথায়?
আমাদের নিত্যদিনের সমস্যাগুলিকে গবেষণালব্ধ ফল প্রয়োগ করে সমাধান করা সম্ভব, এই আত্মবিশ্বাসই আমরা বোধহয় অর্জন করতে পারিনি।
হাঁটুপানির জলদস্যু
কমেন্টে জাঝা।
পরিহাস এই যে, যেখানে উন্নত বিশ্বে গবেষণার জন্য ফিল্ড/ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডাটা'র জন্য গবেষকরা দুয়ারে দুয়ারে কেঁদে বুক ভাসায়, সেখানে বাংলাদেশে ডাটা'র কোনো অভাব নেই!
পরিহাস এই যে, হাজারো প্রকাশনার ভীরে ছোট্ট একটা আনকোড়া নতুন রিসার্চ প্রপোজাল বের করতে কোথায়ো কোথায়ো যেখানে এইখানে একটু, ওইখানে আধটু ঘষে, পুরান মালের গায়ে রং চড়িয়ে দিতেই লোকজনের লেজে গোবরে অবস্থা, সেখানে বাংলাদেশের আনাচে কানাচে নিদারুণ অবহেলায় হাজারো সম্ভাবনাময় প্রজেক্ট।
কেবল গবেষক নেই!
----------------------------------------------
আমাকে নিঃশব্দে অনুসরণ করে একটা নদী-
সাথে নিয়ে একটা পাহাড় আর একটা নিঃসঙ্গ মেঘ।
আমি আরেকটা দিক তুলে ধরতে চাইছি।
সেটা হলো সোজা কথায়, 'লিটারেচার রিভিও'। বাংলাদেশের বেশিরভার বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে বলা যেতে পারে যে, গরম গরম মাত্র প্রকাশ পাওয়া গবেষণা তথ্য এবং জার্নালের উপর সার্চ করার তেমন কোনো উপায় নেই। ইন্টারনেটভিত্তিক কোনো ব্যবস্থা নেই যাতে করে সর্বশেষ প্রকাশিত এবং বিগত সময়ের গবেষণাপ্রবন্ধ পড়া যায়। ওয়েব অফ সাইন্স/ সাইন্স ডিরেক্ট/ ইঞ্জিনিয়ারিং ভিলেজ বা এরকম কোনো সার্চ প্রযুক্তি আমি কোথায়ো দেখিনি।
অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বলতে পারবো না,কেবল বুয়েটের সেন্ট্রাল লাইব্রেরীর রেফারেন্স সেকশনে কত ধুলো জমা পড়ে তা আল্লাহই জানে। খুব কম ছাত্রই দোতোলায় যায়। আর গেলেও কতটা লেটেস্ট তথ্য পাওয়া যায়, তাতে আমি সন্দিহান।
এর মূল কারণ হতে পারে, অর্থ। যে পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে নানাবিধ প্রবন্ধের ডাউনলোড কপিরাইট পাওয়া যায়, তা পোষানোর মত সাধ্য হয়তো আলাদাভাবে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের নেই।
আমি মনে করি, সেক্ষেত্রে কেন্দ্রীভূত একটি একক ব্যবস্থা গড়ে তোলা যেতে পারে, যেখানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় একত্রে সার্চ করতে পারবে, ব্যবস্থাটিও দশে মিলে পুষতে পারবে এবং সরকারও একটা বরাদ্দ রাখতে পারবে।
----------------------------------------------
আমাকে নিঃশব্দে অনুসরণ করে একটা নদী-
সাথে নিয়ে একটা পাহাড় আর একটা নিঃসঙ্গ মেঘ।
দোতলার দরজা আমি কি কোনদিন খোলা দেখেছি ? মনে পড়ে না
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
অতো হিসাবের কী আছে
রিসার্চের বাংলা হলো গবেষণা
গবেষণা= গো + এষণা
গো= গরু। এষণা= খোঁজ করা
সুতরাং গবেষণা= গরু খোঁজা
আগের যুগে পণ্ডিতদের টোলে যে সকল শিক্ষার্থীরা পড়তো তারা পড়ার পাশাপাশি পণ্ডিতের গরুরাখার কাজও করত
কিন্তু গরু রাখতে রাখতে খেলতে শুরু করায় সন্ধ্যাবেলা অনেক গরুই এদিক সেদিক চলে যেত
তখন তারা দল বেঁধে পাজন আর কূপি বাতি নিযে বের হতো গরু খুঁজতে
এবাড়ি ওবাড়ির গোয়ালে গিয়ে জিজ্ঞেস করত- ওমুক রংয়ের একটা গরু কি এসছে এখানে?
শিক্ষার্থীদের এমন কাণ্ডকে আশপাশের লোকজন বলত গবেষণা...
তো তার পর থেকে শিক্ষার্থীরা যাই খোঁজে আমজনতা তাকে গরু খোঁজার সাথে মিল রেখে বলে গবেষণা...
এর আবার পেপার কী?
একটা হারিক্যান আর পাঁজন নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়লেই হয়
গরু কোথাও না কোথাও তো আছেই
ফিরে এসে তার প্রাপ্তিস্থান- প্রাপ্তি পদ্ধতি আর কার কার কাছে কীভাবে গরু খোঁজা হয়েছে তা লিখে দিলেই একখান গরুখোঁজাপত্র হয়ে যাবে
আমাদের দেশে গবেষণা, আবিষ্কার ও উদ্ভাবনের চর্চাটা কম। আমাদের সংস্কৃতির মধ্যে প্রাচীনতার প্রতি আনুগত্য ও নতুনের প্রতি নাক সিঁটকানোর একরকম প্রবণতা আছে। গবেষকরা/উদ্ভাবকরা তাই আমাদের দেশে খুব একটা পাত্তা পান না। বরং যা আবিষ্কার করেছেন তা অন্যদের বুঝাতে বুঝাতে উদ্ভাবকদের বাকী জীবন যায়।
দারিদ্রের দুষ্ট চাকা এখানে একটা প্রভাব ফেলে অবশ্যই। তবে আমি জনমানসের চিন্তাচেতনার ঘাটতিকেই দায়ী করবো।
নতুন একটা কবিতা লেখা হলে, সিংহভাগ পাঠক আগে বিবেচনা করতে বসে এটা রবীন্দ্র-নজরুল-জীবনানন্দের মত হয়েছে কিনা। নতুবা নাকচ।
নতুন একটা গান শুনলে সবাই নাক সিঁটকায় এই বলে, সেই আমদের সময়ের গানের মত হলো না।
নতুন পোশাক, নতুন খেলা, নতুন নেতা, নতুন দল, নতুন চিন্তা-ভাবনা, নতুন পদ্ধতি - কোনোকিছু সহজে আমাদের মন জয় করতে পারে না।
সুতরাং কপিক্যাটদের জয়জয়কার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশে-পাশের ফটোস্ট্যাটের দোকানগুলো যত ব্যস্ত - আমার অনুমান দক্ষিণ এশিয়ার বাইরে কোনো দেশে এমন দেখা যাবে না।
উদ্ভাবন নিয়ে একবার লিখেছিলাম, তাতে মিশুকের কথা বলেছিলাম, ঢাকা শহরের জন্য বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের উদ্ভাবন। এরকম লাগসই প্রযুক্তির কথা তখন বলা হতো। পরে এসব উদ্যোগ ট্রেডিং ব্যবসায়ীদের মুনাফার তোড়ে হারিয়ে গেছে।
সব গবেষণায় টাকা লাগে না -এটা সত্য। তারপরও একটা ন্যূনতম জীবিকার ব্যবস্থা থাকতে হয়। মুনতাসীর মামুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের শিক্ষক। ঢাকা শহর সহ অন্যান্য বিষয়ে তার গবেষণা বিপুল প্রশংসা পেয়েছে সবার। অন্যদিকে তাঁরই সহপাঠী মৃত্তিকা বিজ্ঞানের এস এম ফায়েজ ২৭ বছরে ডক্টরেট আর ৩৯ বছরে অধ্যাপক হয়ে যাওয়ার পর ডিঙানোর আর কোনো হার্ডল পান না। সুতরাং তিনি রাজনীতিতে - বিভাগীয় ডিন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি।
আমাদের দেশে কিছু শিল্প-প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। তারা উপকৃত হতে পারতো স্থানীয় শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলোর গবেষণার সুযোগ নিয়ে। এখন পর্যন্ত তারা যেসব গবেষণার সুযোগ নেয় তা মূলত: বিপণনের সাথে জড়িত। মার্কেটিং বা আইবিএ-র শিক্ষক-ছাত্ররা ভালোই ব্যস্ত আছেন।
মাত্র ১৫-২০ হাজার টাকা খরচ করে একটা মাস্টার্সের ছাত্রের গবেষণা স্পন্সর করা যায়। পানের উত্পাদন নিয়ে সমস্যায় ভোগা খাসিয়া মন্ত্রীর ছেলে রাজেশকে এই পরামর্শ দিয়েছিলাম কয়েক বছর আগে। রাজেশ পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের সাথে এরকম একটা চুক্তি করেছিলো।
গণিত নিয়ে গবেষণা করতে, সাহিত্য নিয়ে গবেষণা করতে, দাবা বা কাবাডি খেলা নিয়ে গবেষণা করতে, বিভিন্ন রকম কৃষি পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করতে খুব একটা অসুবিধা হওয়ার কথা না। কিন্তু ঐ যে বল্লাম, গবেষণার অনুকূল সংস্কৃতি বা মানস যদি গড়ে না ওঠে, তাহলে গবেষক শিক্ষকের চেয়ে রাজনীতিবিদ শিক্ষককেই বেশি অনুসরণযোগ্য মনে হবে।
বেইলি রোডের অফিসার কোয়ার্টারের মাঠে একজন বয়স্ক ব্যক্তিকে উদভ্রান্তের মতো ঘুরতে দেখতাম। তিনি সাইন্স ল্যাবরেটরির একজন কর্মকর্তা। বাসার দরজায় তার নেমপ্লেটে পরিচয় লেখা ছিল - বিজ্ঞানী ফজলুর রহমান। ১৫-২০টার মতো প্যাটেন্ট করা উদ্ভাবন তার আছে বলে শুনেছি। কিন্তু পাড়ার ছেলে-বুড়া সবার কাছে তার একটাই পরিচয় ছিল - পাগলা ফজলুর রহমান।
আরো বহুকথা বলার ছিল। অন্যসময় হবে।
রাতুলকে শুভেচ্ছা।
-----------------------------------------------
Those who write clearly have readers, those who write obscurely have commentators.--Albert Camus
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।
তরুনদের বিজ্ঞানীদের উৎসাহ দেবার জন্য সরকারী একটা উদ্যোগের কথা না বললেই নয়। বাংলাদেশ জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যাদুঘর 'তরুণ বিজ্ঞানী প্রকল্প' নামে একটা প্রকল্প চালু করে খুব সম্ভবত ১৯৯২-৯৩ সনের দিকে। আমি তখন স্কুলের বিজ্ঞান মেলায় বিভিন্ন প্রজেক্ট বানাই পুরস্কার জেতার লোভে। ব্রিজ সেফটি প্রজেক্ট, দীর্ঘস্থায়ী মোমবাতি....এই সব হাবি-জাবি । তখন ঐ প্রকল্পের আওতায় একজন তরুন বিজ্ঞানীকে মাসিক বৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থাও করেছিলো কতৃপক্ষ। ৩৬০০ টাকা করে বছর তিনেক এই বৃত্তি পেলাম, এই উৎসাহ প্রকল্প আমার জীবনে কি কাজে লেগেছে বলতে পারিনি, তবে সেই বৃত্তি পাবার পর কোন বিজ্ঞানমেলায় আর পুরস্কার হাতছাড়া হয়নি। তরুন বিজ্ঞানীদের উৎসাহ দেয়ার পাশাপাশি গবেষকদের গবেষণা প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য প্রতিমাসে ১০ হাজার টাকা করে তিনমাস মেয়াদী একটা স্কিম চালু করেছিলো বিজ্ঞান যাদুঘর কতৃপক্ষ। প্রকল্প উপস্থাপকদের কেন্দ্রে অবস্থান করে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য আবেদন করতে বলা হতো। যেহেতু খুব ছোট ছিলাম তাই গবেষণার বিষয়ে অতটা বিস্তারিত জানার চেষ্টা করিনি।
সেই প্রকল্প কতটুকু সফল হয়েছিলো জানা নেই, কিংবা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যাদুঘর নতুন কিছু করছে কিনা কিংবা গবেষণার ব্যপারে তাদেরইবা ভুমিকা কতটুকু সেবিষয়ে ব্লগে জানার ইচ্ছে ছিলো...
--------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে
-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে
রাতুলকে প্রথমে ধন্যবাদ এ বিষয়ে পোস্ট দেয়ার জন্য। হয়তো অনেকে আগেই পড়েছেন, যারা পড়েন নি তাদের আমি অনুরোধ করব রিসার্চ বিষয়ে রিচার্ড হ্যামিং-এর “You and Your Research” নামক বিখ্যাত লেকচারটি পড়ে দেখার জন্য। খ্যাতনামা গণিতবিদ ও কম্পিউটার বিজ্ঞানী রিচার্ড হ্যামিং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ম্যানহাটান প্রজেক্ট, পরবর্তীতে বেল ল্যাব ইত্যাদি নামী জায়গায় কাজ করেছেন। এই লেকচারটি তিনি ১৯৮৬ সালে বেলকোরে সতীর্থদের উদ্দেশ্যে দিয়েছিলেন, যা নানা ক্ষেত্রের গবেষকদেরও ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত করে আসছে। অনেক দীর্ঘ লেকচার। নীচে প্রশ্নোত্তর পর্বও আছে। তাই সময় নিয়ে ধীরে ধীরে পড়ুন যতদিন লাগে।
একজন গবেষক বা গবেষক হতে ইচ্ছুক ব্যক্তির কাছে রিচার্ড যে তিনটি প্রশ্ন রেখেছেন তা হলঃ
১। আপনার ফিল্ডে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কি কি সমস্যা আছে?
২। আপনি কি সেগুলো নিয়ে কাজ করছেন?
৩। কেন নয়?
বাংলাদেশে আমরা কিন্তু আমাদের নিজ নিজ ফিল্ডে কি কি সমস্যা তা ভালই জানি (গ্লোবাল লেভেলে না হলেও অন্তত লোকাল লেভেলে)। কিন্তু আমরা সেগুলো নিয়ে কাজ করি না। কারণ, কাজ না করলেও আমাদের গবেষক/শিক্ষকদের চাকরী ঠিকই থাকে। কাজ করার প্রতিবন্ধকতা হিসেবে আমরা ফান্ড সমস্যা, জনবলের অভাব ইত্যাদি অজুহাত দেই। কিন্তু আগে তো কাজ শুরু করতে হবে! ফান্ড ছাড়াও অনেক গবেষণা করা যায়, পেপারও পাবলিশ করা যায়। অনেক জার্নালেই পেপার পাবলিশ করতে কোন টাকা নেয় না। ফান্ড না থাকলে এ ধরণের জার্নাল টার্গেট করে এগোনো উচিত।
ফান্ড বিষয়ে কোন এক ফোরামে বাংলাদেশের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক একবার জানিয়েছিলেন, তিনি একটি নামী কনফারেন্সে পেপার উপস্থাপনের আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় টাকা না দেয়ায় তিনি যেতে পারেন নি। এমতাবস্থায় দেশে কীভাবে ভাল গবেষণা হবে তা উনার বোধগম্য নয়! আমি পড়ে অবাক হয়েছিলাম কনফারেন্সে যাবার জন্য এক শিক্ষক কান্নাকাটি করছেন দেখে। কনফারেন্সে নানা আইডিয়া শেয়ার হয়, নতুন অনেক কিছু জানা যায় এবং তা গবেষণার জন্য প্রয়োজন তা আমি অস্বীকার করছি না। কিন্তু সত্যি করে বলতে গেলে কনফারেন্সে যাবার একটা মূল উদ্দেশ্য থাকে অন্যের পয়সায় মাস্তি করার বা নতুন জায়গা দেখার এবং এর চেয়ে ভালো মওকা আর হয় না (কেউ অস্বীকার করলে কোন আপত্তি নাই আমার, তাঁরা হয়ত মহান বিজ্ঞানী)। আর কনফারেন্স পেপার সাধারণত পাবলিশড পেপার হিসেবে ধরা হয় না। কারণ কনফারেন্সের মূল উদ্দেশ্য থাকে রেজিস্ট্রেশন ইত্যাদির মাধ্যমে মেম্বারদের কাছ থেকে টাকা কামানো, তাই একেবারে আলতু-ফালতু না লিখলে বেশীরভাগ পেপারই গৃহীত হয় (পিয়ার-রিভিউড হলেও)। কিন্তু জার্নালে একটা স্ট্যান্ডার্ড বজায় না রাখলে পেপার গৃহীত হয় না। তাই ফান্ড ইত্যাদি রিসার্চ পেপার পাবলিশ করার জন্য সমস্যা না। বরং আমার কাছে যেটা প্রধান সমস্যা মনে হয় যেটা ফারুক হাসান ইতিমধ্যে বলেছেন লাইব্রেরীগুলোতে জার্নাল সাবস্ক্রাইব করে না, ফলে লিটারেচার রিভিউ করা যায় না। আজকাল সব জার্নালেরই অনলাইন ভার্শন থাকে, যেগুলো লাইব্রেরী থেকে সাবস্ক্রিপশনের মাধ্যমে এক্সেস করা যায়। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উচিত ছাত্র/শিক্ষকদের হাতের নাগালে এগুলো পৌঁছিয়ে দেয়া। এটা তো আসলে একজন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের মৌলিক অধিকারের মত। এতকিছু নিয়ে ছাত্র-আন্দোলন হয়, এগুলো নিয়ে কেনো যে হয় না!
= = = = = = = = = = =
তখন কি শুধু পৃথিবীতে ছিল রং,
নাকি ছিল তারা আমাদেরও চেতনায়;
সে হৃদয় আজ রিক্ত হয়েছে যেই,
পৃথিবীতে দেখ কোনখানে রং নেই।
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। লিটারেচার রিভিঊ হল পূর্ববর্তী গবেষনাকে জানা,কে কতটা কাজ করেছে, কে কিভাবে সমস্যার সমাধান দিয়েছে তা নিয়ে সম্যক ধারনা জন্মানো। এ ব্যপারে অনলাইন সাবস্ক্রিপশনের বিকল্প নাই। আর Google Scholar তো আছেই।
আমার ভার্সিটির এমন সাবস্ক্রিপশনের ব্যবস্থা ছিল না। তাই আমি আগে Google থেকে সার্চ করার পর পেপার গুলির Abstract পড়ে একটা লিস্ট তৈরী করি। বড় ভাই যারা বাইরে বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গেছেন তাদেরকে মেইল করে একটু ডাউনলোড করে দিতে বলি।
আন্ডারগ্র্যাডের পোলাপান যত ভাল গবেষনয়ার বিষয় হতে পারে, কামলা হতে পারে, তত ভাল গবেষক হতে পারার কথা তাদের না। আমি ডুগি-হাউজারের মত বাচ্চা জিনিয়াসদের কথা বলছি না, আমি বলছি A-level/HSC - তে বেশ ভাল রেজাল্ট করে এসেছে তাদের কথা। মৌলিক গবেষনা (research) আর মৌলিক ভাবনা (idea) এই দুটির মধ্যেকার গুণগত, নিরীক্ষার গভীরতা, আর বিমুর্ততার দুরত্বই বলে দিচ্ছে চার থেকে ছয় বছর একটি শিক্ষায়তনিক পরিবেশের মধ্য বসবাস করার আগে কারো মনে অনেক মৌলিক ভাবনা আসতে পারে ও আসবেও; কিন্তু আস্ত গবেষনা আসবে না। "শিক্ষায়তনিক পরিবেশের মধ্য বসবাস করা" এর মানে আমার কাছে হল বারংবার ভাল ফল দেখানো, গবেষনারত কিছু কামেল লোকের কামলা হওয়া আর এবং নিজের ভাবনাগুলিকে উড়তে শেখানো - নিয়মিত দেশীবিদেশী কাগজে/ব্লগে নিজের ভাবনাগুলিকে গিরিবাজের মত ডিগবাজী দিয়ে উড়িয়ে নেয়া।
পশ্চিমে গ্রীষ্মকালীন ছুটির সময় ওজনদার সব বিশ্ববিদ্যালয়েই আন্ডারগ্র্যাডদের জন্য গবেষনার পয়সা বরাদ্দ করে। খতিয়ে দেখবেন, বলছে গবেষনা কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই তা আসলে ভাবনাকে উড়তে শেখানো। পয়সাগুলো বেশিরভাগই আসছে ব্যাক্তিখাত থেকে; গবেষনার সাথে ঐ প্রতিষ্ঠানে কিছুদিন কামলা দেয়ার শর্ত যেমন থাকছে, অনেক ক্ষেত্রেই পাশ করার পর ঐ ছাত্রের যে ডক্টরেট পড়ার (মানে আপনি যে ভবিষ্যতে আসল গবেষনা করবেন) তার ইচ্ছা, উপায় আর ঘিলু আছে তা ঐ প্রতিষ্ঠান যতটা সম্ভব নিশ্চিত হতে চায়। বাংলাদেশে যেহেতু শিল্পক্ষেত্রের চাইতে সেবাক্ষেত্রের জোড় বেশী, শোমচৌ যেমন টি বললেন, দেখবেন IBA-এর পোলাপান কিন্তু এই ধরনের কামলা (মাগ্নায়) অনেক খাটে।
IBA -এর একজন ছাত্র, যে শুধু পোর্টার-কুঞ্জ-ড্রাকার এর বই মুখস্থ করে ফেলল, কিন্তু বাংলাদেশে সে তত্বের ব্যাবহারিক প্রয়োগ (আসলে বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই সেগুলোর সিমাবদ্ধতা) , তা সে ই-পি-জেড, তেজগাঁও, কারওয়ান বাজার, কালুরঘাট, খাতুন গঞ্জ, ব্যাঙ্কপাড়া, সচিবালয়- যেখানেই ঘটুক, তা খুব কাছ থেকে ঘেঁটে দেখল না - সে ছাত্রের সেকেন্ড ইয়ারের উঠার সম্ভাবনা ক্ষীণ; (কিছু ফ্রি রাইডার তার পরেও থাকেই, ঐটাকে "বাংলাদেশ ধ্রূব সিস্টেম লস" ধরে নিতে হবে)।
আমার অভিজ্ঞতা ভাল না:
১. লিটারেচার সার্চের জন্য এসিএম বা আইইই ডেটাবেসের সাবস্ক্রিপশনে অনেক টাকা লাগে। শাহজালালের সেটা কখনোই ছিল না।
২. ইন্টারনেট স্পিড, আমার সময় ইন্টারনেটই ছিল না।
৩. অবকাঠামো: শিক্ষক হবার পর কয়েকজনকে সুপারভাইজ করেছি। একজন সারাবছর আমার সাথে কাজ করে অন্যের সাথে পেপার বের করেছে, আমাকে বলা ছাড়াই।
৪. ইউজিসির একটা গ্রান্টের আবদেন করেছিলাম। সেটার জন্য একটা ইন্টারভিউ দিয়েছিলাম। সেখানে ছিলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমার একই নামের এক শিক্ষক। তিনি যে প্রশ্ন/মন্তব্য করেছিলেন, তা হজম করার মতো নয়।
এটুকুই, পরে আরো বলা যাবে।
রাগিব ভাইয়ের কথার পরে আর কথা থাকে না ... কাজেই আমি বরং অন্য ভার্সিটি নিয়ে একটু বলি ...
আইইউটিতে সেকেন্ড ইয়ারে ফাহিম কাউসার নামের এক জুনিয়র টিচার একদিন প্রথম পেপার লেখা নিয়ে জ্ঞান দেন ... পেপার লেখার জন্য সেকেন্ড ইয়ার থেকেই চেষ্টা করা উচিৎ, পেপার লেখা হায়ার স্টাডির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, আর পেপার লেখার জন্য বেশি বেশি পড়তে হবে, এটুকু জানলাম ... তখনো আমাদের পেপার ভাবতেই মনে আসে প্রথম আলো, কাজেই ফাহিম ভাইয়ের সেই বক্তৃতা কোন কাজে আসলো না ...
এর কিছুদিন পরে আশিক নিজের থেকে কাউন্টিং সর্ট আবিষ্কার করলো, আনিস ভাইকে [আরেক জুনিয়ার টীচার] নিয়ে দেখালো, আনিস ভাই অনেক প্রশংসা-টশংসা করে তারপরে আস্তে করে নতুন করে চাকা আবিষ্কারের কথা বললেন ...
থার্ড ইয়ার শেষ হয়ে গেল, রাতুল [মানে এই পোস্টের লেখক] ছাড়া কারো কোন পেপার নাই, কেম্নে পেপার লিখতে হবে সেটা নিয়েও কারো কোন আইডিয়া নাই ...
তারপরে কেম্নে কেম্নে জানি জানা গেল পেপার লিখতে হইলে আগে প্রচুর পেপার পড়তে হবে ... পেপার পাব কই? ... আইট্রিপলই, এসিএমের নামও জানি না ভালো করে ... কেউ কেউ বুদ্ধি দিল নেটে সার্চ করে নাকি পেপার পাওয়া যায়, কিছু উদ্যমী পোলাপান সার্চ দিল, দেখা গেল টাকা চায়, পেপার লেখার উদ্যমের সেখানেই সমাপ্তি ...
গুগল স্কলার থেকে কিভাবে ফ্রী পেপার নামানো সম্ভব এই টেকনিক আমি জানছি পাশ করার এক বছর পরে ...
আর জানলেও লাভ হইতো না ... বাংলাদেশে ফান্ড আর অবকাঠামোর দিক দিয়ে আইইউটির চেয়ে ভালো অবস্থায় মনে হয় আর কোন ভার্সিটি নাই, সেই ভার্সিটির একেক জন ছাত্র মাসে আমাদের সময়ে মাত্র দুই ঘন্টা [মানে দিনে গড়ে ছয় মিনিট] ফ্রী নেট ইউজের সুযোগ পাইতো, এর বেশি হইলে পয়সা দেও ... আর নেটেরও যে স্পীড তাতে মেইল চেক করতেই ছয় মিনিট লাগে [এখন অবস্থার কোন উন্নতি হইছে কিনা কে জানে] ... সিয়াইটি ডিপার্টমেন্টের হেড ডঃ মোতালেবকে সমস্যার কথা বলা হইলো, তার সাফ কথা, তোমরা তো নেটে খালি শয়তানি কর, এর বেশি নেট ইউজের দরকার কি তোমাদের?
যাই হোক, তারপরেও আশার কথা, বড়ভাইরা জানাইলো, ফোর্থ ইয়ার প্রজেক্টের জন্য একটা থীসিস লিখতে হয়, সেটা ঘষামাজা করে পেপার বানায়ে ফেলা যায় ... খুব ভালো কথা ... ফোর্থ ইয়ারে ওঠার আগে থেকেই প্রজেক্ট নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করলাম, আবার সেই একই প্রবলেম ... কি প্রজেক্ট করবো? কেম্নে করবো? কিছুই তো পারি না ... আলো দেখানোর কেউ নাই ... স্যারদের কাছে গেলেই বলে, পড়ালেখা কর ... কিভাবে কোথায় কি পড়বো সেটা বলার সময় নাই কারো ...
প্রজেক্ট সিলেক্ট আর প্রেজেন্টেশন করা নিয়ে আরেক তুগলকি কারবার ... আপনি যতই ভালো গবেষণা করেন না কেন ফাইনাল প্রেজেন্টেশনের সময় আপনি যদি কিছু এক্টা নাড়াচাড়া করায়ে দেখাইতে না পারেন তাহলে আপ্নার বেইল নাই ... কাজেই দেখা যায় কম্পু থেকে ইনপুট দিয়ে লাইট জ্বালানো বিশাল প্রজেক্ট হয়ে যায়, অথচ ডিনায়াল অফ সার্ভিস এটাক নিয়ে চমৎকার এনালাইসিস কেউ বুঝে না, কেউ হাততালিও দেয় না, প্রেজেন্টেশন শেষ করার পর ডঃ মোতা প্রশ্ন করে, "এগুলি তো আছেই, তোমরা কি বানাইছো বল ... প্রব্লেম সল্ভের কোন উপায় বের করছো? ... কর নাই? ... তাহলে কি করছো? :D"
আমাদের আগের ব্যাচের একটা গ্রুপের কথা মনে পড়লো ... তারা লিনাক্সে ক্লাস্টারিংয়ের উপরে প্রজেক্ট করছিলেন ... তখন ডিটেইলস বুঝি নাই বাট একটা কাজকে ভাগ করে নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অনেক মেশিনে ছড়িয়ে দিয়ে সবার এক্সট্রা রিসোর্স ইউজ করে কাজ করা জাতীয় কিছু একটা ... বেশ ভালো কাজ ছিল, খালি একটাই সমস্যা, প্রজেক্টটায় দেখানোর মত কিছু নাই ... খালি লিনাক্সের একটা কমান্ড প্রম্পট ছাড়া ... এই সমস্যা সমাধানের জন্য তারা যেটা করলেন সেটার তুলনা নাই, এক্টা রিমোট কন্ট্রোল গাড়ি আনা হল ... সেই গাড়িকে পিসি থেকে কমান্ড দেয়া হয় ... সেই কমান্ড চারটা পিসিতে ডিস্ট্রিবিউট করে হিসাব করা হয় [রিসোর্সের কি অপচয় ] ... সেই আউটপুট রেজাল্ট গাড়িতে পাঠানো হয়, গাড়ি চলে ...
প্রেজেন্টেশনের সময় সেই গাড়ি চলা দেখে সব টিচার বাকবাকুম, পেছনের ডিস্ট্রিবিউটেড কম্পিউটিং কেউ দেখলো না, দুই ভাইয়া থীসিসে ভাল গ্রেড নিয়ে পাস করে গেল ...
এই হচ্ছে গবেষণার অবস্থা ... কি কি করা হয় ...
কি কি করা যাইতো সেটা নিয়ে পরে লিখবো ...
................................................................................
objects in the rear view mirror may appear closer than they are ...
এখন ও সেই অবস্থাই আছে ভাই।থাকবেই।
মাস্টার্স করতে এসে চার-পাচ মাসে যা বুঝলাম, আমাদের এই জায়গাগুলিতে কাজ করার স্কোপ আছেঃ
১) রিসার্চ কি, কেম্নে করতে হয়, পেপার কি, কেম্নে লিখতে হয় সেটা নিয়ে পোলাপানদের একটা ক্লিয়ার ধারণা দেয়া ... রিসার্চ মানেই যে নতুন নতুন যুগান্তকারী থিওরি না, এক্সিস্টিং কোন থিওরিকে নতুন একটা সিমুলেটরে রান করে রেজাল্ট এনালাইসিসই যে খুব ভালো একটা রিসার্চ হতে পারে [রাগিব ভাই যেটা বলছেন] সেটা বোঝানো ...
২) একইভাবে পেপার মানেই হাতিঘোড়া না, লিটারেচার রিভিউও খুব ভালো পেপার, এটা দেখানো ... (মুখের কথা শুনে এগুলি বিশ্বাস হয় না, হাতে কলমে দেখানো উচিৎ) ...
৩) জার্নালের গুল্লি মারো, গুগল স্কলার কেমনে ব্যবহার করতে হয় সেটা শিখতে হবে সবাইকে ...
৪) প্রায় সব সিমুলেটরই ফ্রী পাওয়া যায় নেটে, কিন্তু সেগুলির ব্যবহার নিজে শিখতে হয় ... এটা কেউ শিখাবে না, কোন টীচারও পারবে না, কিন্তু সমস্ত টীউটোরিয়াল নেটে পাওয়া যায় ... একবার এই টীউটোরিয়াল পড়া শিখে ফেললে বাকিটুকু পোলাপান নিজেই পারবে, বাট এই পর্যন্ত তাদেরকে পথ দেখাতে হবে ... [আর অল্টাইম নেট লাগবে, দিনে সাড়ে ছয় মিনিটে কিছু হবে না, কিন্তু মোতারে বুঝাবে কে?]
৫) লিনাক্স ভয় পায় না এমন পাবলিক কম, কিন্তু লিনাক্স ছাড়া গতি নাই ... উবুন্টু তুলনামূলকভাবে অনেক সহজ, এইটা দিয়েই শুরু করা যায় ...
কিন্তু কথা হইলো পোলাপানদের সময়মত এইগুলি শিখাবে কে? বুড়া-হাবড়া টীচারদের দিয়ে আশা নাই, কিন্তু পাশ করেই যারা জয়েন করে তাদের কাছ থেকে তো এইটুকু আশা করাই যায় নাকি
................................................................................
objects in the rear view mirror may appear closer than they are ...
খুব সুন্দর টপিক। বিষয়টি নিয়ে প্রানবন্ত আলোচনাও হচ্ছে। আমি শুধু এটুকুই বলতে চাই যে, গবেষনার জন্য প্রচুর জার্নাল ঘাটতে হয়। আমাদের দেশে কি যথেষ্ট পরিমানের আন্তর্জাতিক মানের জর্নাল পাওয়া যায়। আমি নিজে ঢাবি এর অনুজীববিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ছিলাম দশ বছর আগে। তখন খুব একটা আন্তর্জাতিক মানের জার্নাল পাওয়া যেত না। আইসিডিডিআরবিতে কিছু পাওয়া যেত, সাভারে এআরআই এর লাইব্রেরিতে কিছু পাওয়া যেত, ঢাবি এর লাইব্রেরিতে একেবারেই না।
-সাহোশি
আমি কি ভুল বুঝতেছি? গুগল স্কলার তো মূল পেপার দেয় না। আইইই এর সাবস্ক্রিপশন ফি বছরে ইউএস ডলার ৭০,০০০+।
সাইটসিয়ার একসময় ভাল ছিলো, গত দুবছরে কোন দরকারী পেপার পাইনি। অথরা যে নিজের সাইটে পেপার দিয়ে রাখে, সেটা খুব কম সংখ্যক লোকই করে (কপিরাইটের ব্যপার)। আমি অস্ট্রেলিয়ায় থেকে, জাপানের একজন আর ইউএস এর একজন থেকে মাঝে মধ্যেই ধার করি। নিজের পয়সা খরচ করে রেসপেক থেকে পেপার কিনেছি কয়েক দিন আগে।
সেটা কী মূল পেপার পড়ার বিকল্প হয়? নাকি আমি কো চোরাই পদ্ধতি মিস করছি?
আলমগীর
সব যে পাবেন সে নিশ্চয়তা নেই ,,, তবে গুগল স্কলারে সার্চ রেজাল্টে পেপারের শিরোনামের পাশে হালকা রঙে all X versions এ ক্লিক করলে সাধারণত একটা পিডিএফ লিংক পাওয়া যায়
তবে প্রায়ই আমার আর গুগল-স্কলারের কেমিস্ট্রি ভালো যায়না ,,,, ঠিক যেই পেপারটার শিরোনাম বা ফিড দেখে মনে হয় কাজে লাগতে পারে, ঐটাই পাওয়া যায়না
তাও বলবো, বেশ ভালো একটা সোর্স
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
আমি তার সাথে আইসিসিডিডিআরবির কথা বলব। এক ওরাল স্যালাইনের জন্য তাদের অনেক বড় কৃতিত্ব প্রাপ্য।
চেষ্টা নেয়া হয়েছিল। ঢাকাভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আগ্রহ কম। কারন, তাদের লাভ নেই। ইউজিসি জ্যাকনেট নামে প্রকল্প হাতে নিয়েছিল, অজানা কারনে তা বন্ধ হয়ে যায়। এমনকি ইন্টার-লাইব্রেরি ধার বলেও কিছুতে তারা রাজী না। এখানে অস্ট্রেলিয়ার সব বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টার-লাইব্রেরি ধার সুবিধা আছে। এমনি ডিফেন্সের লাইব্রেরিও যুক্ত আছে (এক সময় এদের সংগ্রহ ছিলো সবচেয়ে বেশী)।
আলমগীর
শুনে খারাপ লাগলো।
মনে হচ্ছে গবেষণার মানসিকতা না থাকাটা আমাদের পিছিয়ে পড়ে থাকার একটা বড় কারণ। কিন্তু আমি ভেবেছিলাম, যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকেরা সবাই উচ্চতর শিক্ষায় শিক্ষিত এবং পিএইচডি পর্যায়ের গবেষণার অভীজ্ঞ, সুতরাং তাদের একটা সহজাত দুর্বলতা থাকবে গবেষণা চালিয়ে যাবার প্রতি। কিন্তু এখন দেখছি, ব্যাপারটা তা নয়। যদি আন্তরিকতা থাকতোই, তাহলে ওরকম সম্মিলিত লিটারেচার ব্যাংক ঠিকই টিকে যেত।
আরেকটি ব্যাপার বুঝতে পারলাম না। আপনি বলেছেন, এধরণের কাজে ঢাকাভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আগ্রহ কম। কারন, তাদের লাভ নেই। কেন তারা মনে করেন যে তাদের কোনো লাভ নেই? আমার তো মনে হয়, ব্যাপারটা উল্টো হওয়া উচিত।
ঠিক কি কি কারণে একজন বিদেশ ফেরতা গবেষক শিক্ষকের বাংলাদেশের আলো বাতাসে তার মধ্যেকার গবেষণার উদ্দীপনা ধ্বংস হয়ে যায়, সেটাও গবেষণার একটি বিষয় হতে পারে এখন!
না কি গোড়ায় গলদ! যারা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছুটি নিয়ে টাকা জমাতে জমাতে পিএইচডি সেরে দেশে ফেরেন, তাদের সবার কি গবেষণাই মূল লক্ষ্য থাকে, নাকি অন্যকিছু? পাঁচবছরের শিক্ষাছুটির অর্জনটা কি তাহলে?
----------------------------------------------
আমাকে নিঃশব্দে অনুসরণ করে একটা নদী-
সাথে নিয়ে একটা পাহাড় আর একটা নিঃসঙ্গ মেঘ।
এপ্রসঙ্গে যে ব্যাপারটা আমার খুব খারাপ লাগে, দেখা যায় যে শিক্ষকরা আন্ডারগ্র্যাড ছাত্রদের রিসার্চের হাতেখড়ি ধরান পেপার করার লোভ দেখিয়ে ,,, দেশে এই ট্রেন্ডটা খুব বেশী চালু, যেজন্য আইসিসিআইটি সাফল্য পায়নি ,,,, ব্যক্তিগতভাবে মনে করি যে পেপার লেখাই যদি উদ্দেশ্য হয় তাহলে আসলে রিসার্চ না করাই ভালো ,,, একজন রিসার্চারের একটা জিনিসই দরকার -- "প্যাশন" ,,, এবং সেটা অবশ্যই পেপার পাবলিকেশন না, যা নিয়ে রিসার্চ করছে সেটার ব্যাপারে ,,,
এজন্যই আমি বলি যে ভালো ছাত্র হলেই ভালো রিসার্চার হবে এমন কথা আদতে নেই ,,, কারণ "কেন হলো না হলো" এসবকে তুলে রেখে তারা আপাততঃ পরীক্ষায় কিভাবে বেশী নাম্বার পাবে সেদিকেই মনোযোগ দেয় ,,, বরং, আমাদের স্কুলগুলোর অংক পরীক্ষায় যে ছাত্রগুলো খারাপ করে ওদের দিয়ে ভালো রিসার্চ হতে পারে ,,, কারণ তাদের মনে আসলেই অনেকগুলো "কেন" কাজ করে ,,,,কোনমতে পারপাওয়ার দিকে তাদের মন সায় দেয়না ,,, সেজন্যই শেষমেষ সংক করতে পারেনা, একগাদা প্রশ্ন মনে রেখে ফেল করে ,,,,এরা ভালো রিসার্চার হবার কথা
(কপালের ফেরে রিসার্চ লাইনে এসে নিজের দূর্বলতা টের পেয়ে মনের সব খেদ উদগীরন করছি, কেউ বেশী সিরিয়াসলি নিয়েননা)
উপরে শোহেইল ভাইর কথাগুলোর সাথে ভীষন একমত ,,, আমাদের গবেষণার সংস্কৃতি নেই ,,,, গবেষণার মূল শক্তি হলো "কেন?" ,,, আমাদের শিক্ষায় "কেন"টা নেইই ,,,, সব "কি" নিয়ে কাজকারবার ,,, বইয়ের সবগুলো অংক করলে পরীক্ষায় ১০০ ভাগ কমন পড়ে ,,, ছাত্ররা "কেন" নিয়ে ভাববে কখন ,,,
আরো অনেক ফ্যাক্টর আছে ,,, গবেষকদের একটু দুনিয়াভোলা হতে হয় ,,, আমাদের অধিকাংশ শিক্ষকরা(গবেষক)ই ভালো ছাত্র ,,,, অধিকাংশই সেই এইচএসসি সময় থেকেই লাইফের প্ল্যান শুরু করে ,,, কোন লাইনে গেলে কিভাবে তরতর করে উপরে ওঠা যাবে সেসব ,,, এজন্য প্রায়ই দেখা যায় আমাদের মাঝে কোথায় গেলে ছেলেমেয়ের পড়াশোনা ভালো হবে, সহজে নাগরিকত্ব পাওয়া যাবে, বাড়ী কেনা যাবে, বেশী আয় হবে -- এসব দেখে ইউনিভার্সিটি পছন্দ করার প্রবণতা বেশী ,,,, প্যাশনের বিন্দুমাত্রটি নেই!!! ,,,সবকিছু আসলে একসাথে যায়না ,,, আমাদের ছোটবেলা থেকে শেখানো হয় "লেখাপড়া করে যে গাড়ীঘোড়া চড়ে সে" -- এই একটা ছড়াই আমাদের যাবতীয় দূর্ণীতি, সন্ত্রাস, লোভ, পরশ্রীকাতরতার জন্য দায়ী
আন্ডারগ্র্যাজুয়েটের ছেলেদের দিয়ে একবছর ধরিয়ে একটা টপিকের ওপর শুধু লিটারেচার ওভারভিউ করালেই অনেক ,,,, রিসার্চ করে কিছু বেরকরা/ডেভেলপ করার অনেক সময় পরে পাওয়া যাবে ,,,, প্রথমে দরকার কোন এক লাইনে কি কি কাজ হচ্ছে, কোন কোন সমস্যা আছে, থিওরিটিকাল ব্যাপারস্যাপার -- এসব নিয়ে পরিস্কার ধারণা থাকা ,,,
আর এ্যাবস্ট্রাক্ট দেখে লিটারেচার ওভারভিউ করা আসলে কোন কাজের কিছুনা ,,, একটা পেপার পড়লে সেটা এমনভাবে পড়া উচিত যেন নিজের চোখে ভিজুয়ালাইজ করা যায় যে অথররা কি কি পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গেছে ,,, ইউরোপে এই জিনিসটা খুব প্রচলিত ,,, আমার যে দুটো জার্নাল পেপার আছে, খুব সাধারন মানের, সেগুলো নিয়েও সুইডেন, ডেনমার্ক, ইউকে'র বেশ কিছু ছাত্র ই-মেইলে ইনকোয়ারী করেছে ,,, একজনের কমেন্ট পড়ে বুঝলাম, আমরা পেপারে যেসব কাজ করেছি সে পুরোটারই একটা প্রোটোটাইপ বানিয়ে ফেলেছে !! আমাদের কাছে ইমেজ স্যাম্পল চাইতে মেইল করেছিলো
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
ইশ!! যে ছাত্রটা আপনার গবেষনার প্রোটোটাইপ বানিয়ে ফেলেছে ঐ ছেলেটা কেন বাংলাদেশী হল না?? আমার প্রশ্নটা এখানেই।
কাসেল বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অশীতিপর প্রফেসর আছেন, গুয়ন্ঠার কম্পা, গোটা ইয়োরোপেই তাঁর বেশ নামডাক, মাইক্রোওয়েভ আর লেজার বিশারদ। তাঁর গবেষণা সহকারীরা কোন পেপার লেখার প্রস্তাব করলে তিনি কিছুক্ষণ ঝিমান, তারপর ঘোঁৎ করে বলেন, পেপার লিখে সময় নষ্ট না করে বরং কাজ করো।
হাঁটুপানির জলদস্যু
আমি এ যাবত মাত্র কয়েকটা ওই পদ্ধতিতে পেয়েছি, এবং সবগুলোই jstor এর ফ্রি পেপার। আমার মনে হয় অনেকে ইউনি থেকে এক্সপ্লোরে বিনা বাঁধায় ঢুকে যান আর মনে করেন এটা ফ্রি। (এক জনের সাথে আমার বিতর্কও হচ্ছিল এ নিয়ে।)
সঠিক কারন কী তা আমার মাথায় আসে না। আমার ধারণা, ধরুন বুয়েট বা ঢাবির যে কালেকশ অন্য কোন ইউনির তা হবে না। তো ঢাবি শাহজালালকে যদি দশটা বই ধার দেয় বিনিময়ে কটা ধার আনতে পারবে? কম্পিউটার/ইইএর জার্নাল বুয়েট ছাড়া কেউ রাখত না। এখন হয়ত অনেকে রাখে। আর এখন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় এসে সব হিসাব পাল্টে গেছে। কায়কোবাদ স্যার যেদিন থেকে এনএসইউ গেছেন সেদিন থেকে বুয়েটের পেপার আউটকামে একটা পরিবর্তন হয়েছে। এই একটা মাত্র লোক ছেলেদের অপরিসীম উতসাহ দিয়ে বেড়াতেন।
জ্যাকনেট নিয়ে আমরা সিলেটে খুব আশা করে ছিলাম।
আমার মনে হয় না কেবলমাত্র গুগল স্কলার আর ইন্টারনেটের ওপেনসোর্স ইনফরমেশনের উপর ভরসা করে কার্যকরী কোনো রিভিও হওয়া আদৌ সম্ভব।এছাড়া, যাদের জার্নাল এক্সেস আছে তাদের উপরও সবসময় ভরসা করা ঠিক নয়। কপিরাইটের ব্যাপার আছে। গুগল কিংবা ব্যক্তিগত যোগাযোগ- এর মাধ্যমে একদমই প্রাথমিক কিছু ধারণা হয়তো পাওয়া যেতে পারে, কিন্তু কার্যকর কিছুর জন্য বিভিন্ন জার্নালের সাবস্ক্রাইব করার বিকল্প নেই।
এক্ষেত্রে বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাথে কোলাবরেশনে আসা যেতে পারে, বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরী সম্পদের শেয়ারের জন্য সাহায্য চাওয়া যেতে পারে।
আরেকটা জিনিস শিক্ষক ও গবেষকদের মাথায় রাখা উচিত। যদি তারা গবেষণা চালিয়ে যেতে চায়, তাহলে তাদের নেটওয়ার্কের সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে হবে। এর সুফলও আছে। নিজের রিসার্চ নেটওয়ার্ক কম্যুনিটি থেকেও নানান সাহায্য পাওয়া যেতে পারে। এরকম অনেক দেখা যায় যে, একজন জুনিয়র ফ্যাকাল্টি তার ছাত্রদেরকে কোলাবরেশনে তার নিজের সুপারভাইজারের ল্যাবে ৩/৬ মাসের জন্য পাঠায়। এটি সম্ভব হয় তার সাথে তার সুপারভাইজারের আন্ডারস্ট্যান্ডিং সেই পর্যায়ের থাকে বলে। এতে যে ছাত্রটি কোলাবরেশনে বিদেশি অন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যায় তার গবেষণার জ্ঞানের পরিধি যেমন বাড়ে, তেমনি অন্য আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যাবতীয় সুবিধাদিও সে সেই সময়ে ব্যবহার করতে পারে।
বাংলাদেশের শিক্ষকরাও যদি তাদের নিজেদের পিএইচডি সুপারভাইজারের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রেখে কিছু কিছু ছাত্রকে এক্সচেন্জ/ভিজিটিং স্টুডেন্ট হিসেবে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছুদিনের জন্য পাঠাতে পারে, তাহলে আধুনিক গবেষণার পরিবেশের সাথে ছাত্রটি যেমন পরিচিত হতে পারবে তেমনি ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসোর্স ব্যবহার করে একদম আপটুডেট লিটারেচার রিভিওয়ের কাজটা সেরে আসতে পারবে। অনেকটা এক ঢিলে দুই পাখির মতন।
NUS এ ভারতের আইআইটি থেকে এরকম আন্ডারগ্রেড পর্যায়ের প্রচুর ছাত্র আসে, যারা NUS এ থাকাকালীন পড়াশোনা আর গবেষণার পাশাপাশি এই কাজগুলোই করে মূলত।
আর এই ধরণের কোলাবরেশন ছাত্রটির মনে, জ্ঞানে এবং চিন্তাভাবনায় যে পরিবর্তন আনে তার উল্লেখ না হয় নাই করলাম!
----------------------------------------------
আমাকে নিঃশব্দে অনুসরণ করে একটা নদী-
সাথে নিয়ে একটা পাহাড় আর একটা নিঃসঙ্গ মেঘ।
কুপি পাজন নিয়ে গরুখোঁজার পেছনে মূলমন্ত্র কিন্তু ছিল পণ্ডিতদের লাঠির বাড়ি; তেমনি দেশের গবেষণার পরিবেশ তৈরিতেও প্রয়োজন শিক্ষক গবেষকদের উদ্যোগ। অন্যরা এসে পথ তৈরি করে দেবে না। আমাদের দেশে যেকোন বিদ্যায়তনে পড়ানো বা গবেষণার চেয়ে আয় উন্নতি বেশি হয় রাজনীতি করলে।
কেমিকেল আলীর কথায় আসি। এক বড়ভাই ফ্লোরিডার কোন এক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ান। কথায় কথায় জানলাম গবেষণা, প্রজেক্ট আর পেপার ছাড়া ভাত নাই। মানে যত বেশি প্রজেক্ট ও গবেষণা আয় তত বেশি। শুধু বগলে মোটা মোটা বই নিযে ক্লাসে গেলে আর ছাত্রীদের শরীর মেপে বাড়ি ফিরলে বছরের শেষে বেনসন কেনার পয়সা থাকবে না পকেটে উপরন্তু চাকরিটাও খোয়া যেতে পারে। সরকারি চাকরি একবার হলে বাঙলাদেশে তা আর খোয়ানোর কোন সুযোগ নেই।
আমাদের দেশের বেহাল দশা দেখেন। যে মাস্টার রাজনীতি করে এবং সঙ্গত কারণেই তার অকেসময় ক্লাস নেয়ারও সময় থাকে না তার নামডাক, আয়উপার্জন সবই বেশি। তিনি এখানে সেখানে বিভিন্ন সরকারী প্রতিষ্ঠানে, সংস্থায় পরিচালক, চেয়ারম্যান ইত্যাদি বনে বসে থাকেন। সরকারী গাড়ি, বাড়ি, মালি, দারোয়ান, পেয়াদা পেয়ে আমলার স্বাদ নেন। আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি বহাল থাকে, বেতন নেন, ছুটির দিনে এসে নিজের রুমে দামি সিগারেট ফুঁকে চলে যান।
আমাদের দেশে প্রফেসার বলতে কী বুঝি? প্রথমে লেকচারার, তারপর অ্যাসিসটেন্ট, অ্যাসোসিয়েট তার কিছুদিন পর আপনাআপনি প্রফেসর হয়ে বসে যাবেন চেয়ারে, ব্যস্।
আসল কথা শিক্ষকরাই গবেষণার ক্ষেত্রকে উজ্জীবিত করতে পারেন। সবই আছে নাই শিক্ষক। নাই শিক্ষার, গবেষণার পরিবেশ। যারা পরিবেশ নষ্ট করেছেন সেই শিক্ষকদেরই আবার তা পূনরুদ্ধার করে দিতে হবে। ডক্টরেট করে বড় বড় প্রতিষ্ঠান চালানো আর দেশ চালানো একরকম পারদর্শিতার ব্যাপার না, তা সবাই দেখছেন। রাজনীতি করা আর গবেষণা করাও এক কথা না। যত ছাত্র, তরুণ গবেষক সকলের অভিভাবক হিসেবে তাদেরকে বিবেক জাগিয়ে রাস্তায় না নামিয়ে বরং ঠেলে দিতে হবে গ্রন্থাগারে, গবেষণাগারে। তারা জাতির বিবেক না হয়ে বরং জাতির ল্যাবরেটরি হোক। প্ল্যাকার্ড নিয়ে রাস্তায় দাঁড়ানোর দরকার দেখিনা। একটা মোক্ষম গবেষণা, একটা পেপারইতো পারে জাতির বিবেককে শান দিতে। ওসব বস্তাপঁচা ইংরেজ তাড়ানো জ্বালাও-পোড়াও রাজনৈতিক হাতিয়ার এই স্বশাসনের দিনে ধোপে টেকে না।
একজন অধ্যাপকের Inaugural lecture দেয়ার প্রথা আছে বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। সেখানে দেশের নামী প্রফেসর, রাজনীতিবিদ, সমাজকর্মী, সাংবাদিক, আইনজ্ঞ, প্রকৌশলি, চিকিৎসক, ছাত্রছাত্রী, এবং আরও অনেকে আমন্ত্রিত হন। সেখানে সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত প্রফেসার সাহেব শুধু চর্বিত চর্বণ বা আইনস্টাইন, মার্ক্স, ফুকো কী বলেছেন তা নয়, তিনি নিজে বিগত দিনে কী কী গবেষণা করেছেন এবং তিনি আসলে আলোচ্য বিষয়ে ঠিক কী অবদানের জন্য আজ অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ বা পদোন্নতি পেলেন তার ব্যাখ্যা দেন। এবং তার ভবিষ্যত পরিকল্পনা বা স্টাডির ব্যাপারে কিছু আগাম ইঙ্গিত দেন।
আমি জানিনা বাঙলাদেশে কোন শিক্ষক পদোন্নতি পেয়ে প্রফেসার হওয়ার পর এমন কোন Inaugural lecture হয় কি না। তা না হলে তারা কিসের ভিত্তিতে পদোন্নতি পান। সব দোষ দিতে গেলে শিক্ষকদেরই দিতে হয়। তারা পূঁজনীয়, শ্রদ্ধেয় তাই তাদের দায়িত্বও বেশি। ছাত্রদের উৎসাহিত করা বলুন, প্রজেক্ট বলুন, অর্থ বলুন সব জোগাড় করা শিক্ষকদের দায়িত্ব এবং তাদের পক্ষে তা সম্ভবও। দরকার আন্তরিকতা। কারণ তারা শিক্ষক, তারা অ্যাডমিনিসট্রেটর তারা অভিভাবক। তাদেরকেই পারতে হবে। ছাত্রদের ইচ্ছা, উদ্যম, আর ক্ষমতা যে কম না তা বোঝা যাচ্ছে। রাতুলকে ধন্যবাদ বিষয়টার অবতারনা করার জন্য। আর সবাইকেও।
জিজ্ঞাসু
যারা বলছেন গুগল স্কলার সার্চ দিয়ে গবেষনা করা সম্ভব, তাদেরকে আমি আবারো ব্যাপারটি নিয়ে চিন্তা করতে বলব। আমি নিজে পিএইচডি শেষ করেছি তিন বছর আগে, এখন একটি কনসাল্টিং ফার্মে জড়িত। আমার প্রফেসরের সাথে মিলে কিছুদিন আগে একটা রিভিউ পেপার জমা দিলাম। রিভিউটি লেখার সময় আমার কিছু জরুরি পেপার দরকার হয়ে পড়ল। গুগল স্কলার এ সার্চ দিয়ে শুধু এ্যবস্ট্রাক্ট পেলাম, এ্যবস্ট্রাক্টটা তো সব নয়। পেপার পড়ার অর্থ হল, একটা পেপার কে পুরো দশবার পড়ে কি বলতে চেয়েছে তা বোঝা এবং আমার নিজের মতামত যদি পেপারটার সাথে ভিন্ন হয়, তাহলে পেপারের লেখকদের সাথে যোগাযোগ করা।
অনেকেই পেপার পাবলিশ করাকে ভিন্ন চোখে দেখছেন। আসল ব্যাপারটা হল, কার কিসে মোটিভেশন। আমি নিজে পেপার পাবলিশিংএ খুবই মোটিভটেড। আমি এমন কোন প্রফেসরের সাথে কাজ করতে চাইব না যার পেপার পাবলিশে অনীহা আছে (তা ঐ প্রফেসর যত বড় পন্ডিতই হোক না কেন)। কারন, রিসার্চে আমার মোটিভশনই হল, পেপার পাবলিশ করা। আমি যদি পেপার পাবলিশ করতে না পারি তাহলে আমার রিসার্চ করারই দরকার নাই। আমার মত নিশ্চয় এমন অনেক লোক আছে যাদের মোটিভেশনই হল, পেপার পাবলিশ করা, সুতরাং তারা তো পাবলিশ করবেই।
গুগল স্কলারে সব পেপারের ফ্রী ভার্সন পাওয়া যাবে এমন কোন কথা নাই ... তবে উপরে রাগিব ভাই যেমন বলেছেন, প্রায় সব পেপারেরই আজকাল অনেকগুলি কপি থাকে [যেমন, রাইটাররা নিজেদের ওয়েবসাইটে হোস্ট করে রাখেন], গুগল স্কলারে এই সমস্ত কপির লিংক থাকে [নামের পাশে হালকা নীলে, see all versions নিশ্চই খেয়াল করেছেন] ... এই সমস্ত কপির মধ্যে অন্তত একটা ফ্রী ভার্সন থাকার চান্স খুব বেশি ...
অন্য ফিল্ডের খবর জানি না, বাট কম্প সায়েন্সের এমন ফ্রী পেপারের সংখ্যা একেবারে কম না ...
পেপার সাবস্ক্রাইব করাটা অবশ্যই বেস্ট অপশন ... কিন্তু আমাদের বিজ্ঞ নীতিনির্ধারকরা সেটা কবে বুঝবেন আর কবে সেই অনুযায়ী আমল করবেন সেটার অপেক্ষায় যদি কেউ বসে থাকতে চান থাকতে পারেন ... আর যদি নিজে থেকে কিছু করতে যান, গুগল স্কলার ইজ এট ইওর সার্ভিস ...
................................................................................
objects in the rear view mirror may appear closer than they are ...
আমার কখনো বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবার সুযোগ হয়নি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিটি বিষয়ে নির্দিষ্ট কিছু অংশ বরাদ্দ করা থাকে রিসার্চ করার জন্য। শতকরা ২০-৩৫ ভাগ কিছু কিছু ক্ষেত্রে। যা সম্পন্ন করা বাধ্যতামূলক সকলের জন্য ঐ বিষয় পাস করার জন্য।কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমরা সহযোগিতা পাই শিক্ষকদের কাছে থেকে কিছু ক্ষেত্রে নয়। এখানে স্কুল লেভেল থেকে আমাদেরকে উৎসাহিত করা হয়েছে আমাদেরকে বিভিন্ন প্রজেক্ট / Assignment দিয়ে গবেষণার কাজে উৎসাহিত করে তোলার জন্য। আমার মনেহয় বাংলাদেশেও এমন শিক্ষা ব্যবস্থার গোড়া থেকে যদি গবেষণায় ছাত্রদের উৎসাহিত করা যেত তাহলে অনেক পরিবর্তন আমরা আশা করতেই পারি।
~~~টক্স~~~
সিডনী, অস্ট্রেলিয়া।
নতুন মন্তব্য করুন