কিন্ডারগার্টেন ছাত্রের জুতা

এনকিদু এর ছবি
লিখেছেন এনকিদু (তারিখ: বিষ্যুদ, ২২/০৫/২০০৮ - ১২:৩৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কিন্ডারগার্টেন স্কুলে এক পিচ্চি নিজে নিজে জুতা পড়তে পারছে না, তাই শিক্ষিকার সাহায্য চেয়েছে ।

প্রথমে একটু বিরক্ত হলেও একটু পরেই ভদ্রমহিলা বুঝতে পারলেন পিচ্চি অকারনে তার শরনাপন্ন হয়নি । শিক্ষিকা ও তার ছাত্র দুজনের ক্রমাগত টানা-টানি ঠেলা-ঠেলির পরও পায়ে জুতা পড়াতে ভালই বেগ পেতে হল । তবে ছাত্র খুব লক্ষ্মি ছেলে, এর মাঝে একবারও আলতু ফালতু কথা বলে বিরক্ত করেনি । পুরো দুই পাটি জুতা পড়ানোর পর, ততক্ষনে ভদ্রমহিলার ঘাম ছুটে গেছে, পিচ্চি জানাল যে জুতা ভুল পায়ে পড়ানো হয়েছে । মানে ডান পায়ের টা বামে আর বাম পায়েরটা ডানে ।

আবেগ সংবর করা একটু কঠিনই হল, তবু ভদ্রমহিলা নিজের কর্তব্য ভুললেন না । তাছাড়া বাচ্চাটার মুখটা দেখে খুব মায়াও হচ্ছিল । "বেচারা ছোট মানুষ, তারও তো কষ্ট হচ্ছে" , ভাবলেন তিনি । সমস্ত রাগ ভুলে হাসি-হাসি মুখ করে হাত বাড়িয়ে দিলেন জুতা খুলে নেয়ার জন্য । জুতা পা থেকে খুলে নেয়াটাও খুব একটা সহজ হল না । তার পর আবার সেই টানা-টানি আর ঠেলা-ঠেলি প্রক্রিয়ার পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে জুতা ঠিক পায়ে পড়ানো হল ।

"তোমার জুতা পড়তে কি প্রিতিদিন এত কষ্ট করেন তোমার মা ?", হাঁফাতে হাঁফাতে ভদ্রমহিলা জিজ্ঞেস করেন । "না", পিচ্চি ছাত্রের পিচ্চি উত্তর । "তাহলে আজকে এই অবস্থা কেন বল তো ?", একটু অবাক হয়েই বললেন শিক্ষিকা । ছাত্রের সোজাসাপ্টা উত্তর, "কারন এগুলো আমার জুতা না" ।

মেজাজ সপ্তমে চড়ে গেল একথা শুনে । তারপরেও ভদ্রামহিলা নিজের কর্তব্য ভুললেন না । যাই হোক, এখন আবার এই জুতা খুলতে হবে পা থেকে, তারপর এর নিজের জুতা জোড়া খুঁজে বের করে পায়ে দিতে হবে । "প্রথমেই জুতা জোড়া খুলে নিই", ভাবলেন তিনি । আরো একদফা সংগ্রামের পর জুতা জোড়া পা থেকে খুলে নিতে সক্ষম হলেন তিনি । "তোমার নিজের গুলো কোথায় রেখেছ ?", তারপর ছাত্রকে জিজ্ঞেস করলেন তিনি । "সকালে আমার গুলো নোংরা ছিল, তাই মা আমার ভাইয়ের ঐ গুলোই আমাকে পড়িয়ে দিয়েছেন ", শিক্ষিকার হাতের জুতা জোড়ার দিকে নির্দেশ করে ছাত্র ।

এবার আরেকটু হলে ধমক দিয়েই ফেলেছিলেন, তবুও আবেগ দমিয়ে রাখার প্রানপন চেষ্টাটা সফল হয় । ধমকও দিলেন না, চাকরিটাও বেঁচে গেল । তবে এবার আর মুখে হাসি-টাসি আনতে পারলেন না । থমথমে মুখ করেই আরেক দফা কুস্তি করে জুতা পড়ানো হল । ভদ্রমহিলা কোন রকমে এই পিচ্চি কে বাইরে বেরোনোর উপযোগী করে তুলতে পারলেই বাঁচেন, আর কথা বাড়ানোর কোন ইচ্ছা তার নেই । জুতা পড়ানো শেষ করে জিজ্ঞেস করলেন, "তোমার দস্তানা জোড়া কোথায় তাড়াতাড়ি বল ।"

"জুতোর ভেতরে ।"

এবার আর আবেগ দমন করতে পারলেন না ।
.
.
.
আগামীকাল আদালতে তার শুনানি হবে ।

(নেট এ পাওয়া কৌতুক অবলম্বনে)

- এনকিদু


মন্তব্য

দ্রোহী এর ছবি

পড়লাম।

"জুতা পড়ানোর" এই গল্প পড়ে একটা মজার কৌতুক মনে পড়ে গেল।

"খোকা তুমি কী পড়?"
"আমি প্যান্ট পরি।"
"কোথায় পড়?"
"এই যে এখানে নাভীর নিচে।"


কি মাঝি? ডরাইলা?

মাহবুব লীলেন এর ছবি

বহুদিন পরে কোনো লেখা পড়ে হাসলাম একা একা

অতিথি লেখক এর ছবি

হাসি

আলমগীর এর ছবি

প্রাঞ্জল, সুপাঠ্য অনুবাদ। ভালো লাগলো।

অতিথি লেখক এর ছবি

হা হা! দারুণ লিখেছ। ভাল লেগেছে!

---
স্পর্শ

অতিথি লেখক এর ছবি

হেসে গড়িয়ে না পরলেও ভাল লেগেছে ।

অভী আগন্তুক
----------------------
যাহা বলিব সত্যই বলিব ।

অতিথি লেখক এর ছবি

আমারে চাইর কে দিলেন ?
ধন্যবাদ হাসি

- এনকিদু

আলমগীর এর ছবি

আমি দিছি। কেন বেশী হয়ে গেছে? ঠিক আছে কমাই একটু।

অতিথি লেখক এর ছবি

আরে না না , আমি তো ধন্যবাদ দিসিলাম । যাউক গা কে জানি অলরেডি চাইর থেকে টাইনা তিনে নামাইসে । ব্যপার না, আরেকটা ব্লগ লিখুম আপনার চাইর পাওয়ার জন্য, ঐটাতে আবার চাইর দিয়েন হাসি

-এনকিদু

মুশফিকা মুমু এর ছবি

হাহাহাহাহা হাসতে হাসতে লুটোপুটি গড়াগড়ি দিয়া হাসি
"দস্তানা" কি ??
--------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

বাংলায় যেটাকে বলে "গ্লাভস", ইংরেজিতে সেটাকেই বলে দস্তানা!
---------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়!

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

অতিথি লেখক এর ছবি

এটা মুল কৌতুকের চেয়ে খাসা হইছে...

নীল ভূত।

আলমগীর এর ছবি

মুশফিকা মুমু লিখেছেন:

"দস্তানা" কি ??

গ্লাভস।

এইটা রম্য বলা হলেও মোটেও হাসির কাহিনী না। শিক্ষিকা সম্ভবত ছেলেটাকে বাড়াবাড়ি কোন একটা আদর করে ফেলেছে।

মুশফিকা মুমু এর ছবি

ধন্যবাদ মৃদুল ভাই এবং আলমগীর ভাই, "দস্তানা" শব্দের বাংলা শিখলাম খাইছে
--------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

আলমগীর এর ছবি

মৃদুল দা
এক সেকেন্ডের জন্য জিতে গেলেন।

রাতুল এর ছবি

মন্তব্যতেও মজা।

রাতুল এর ছবি

মন্তব্যতেও মজা।

স্বপ্নাহত এর ছবি

রাতুল ভাই মনে হয় বেশি মজা পাইয়া গ্যাসে।

একই মন্তব্য দুইবার দেঁতো হাসি

---------------------------

থাকে শুধু অন্ধকার,মুখোমুখি বসিবার...

---------------------------------

বাঁইচ্যা আছি

রায়হান আবীর এর ছবি

হা হা ...সিরাম লাগছে বাহি...

---------------------------------

রাতুল এর ছবি

অফিসে হাসতে অবস্থা খারাপ.................................।
সেই রকম হইছে!!
জটিল লিখছেন।

মামুন-উর-রশীদ এর ছবি

মনে পড়ে গেলো......
ছোট বেলায় আমাকে বড় জুতা কিনে দিতো আমার পিতা যাতে বড় হলেও(আমি), ছিডে (জুতা) গেলেও সেলাই করে বেশিদিন পরতে পারি।
আমি ঐ বড় জুতার ভেতর কাপড় দিয়ে ছোট বানিয়ে পরতাম।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

দ্রোহীদার গল্প শুনে নিজেরও একটা গল্প বলতে ইচ্ছা হলো...

মওলানা: নামাজ পড়?
বালক: না
মওলানা: কেন?
বালক: টাইট হয়
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালই তো স্কুলের পোলাপান নিয়ে কৌতুক হইতেসিল, আপনি আবার নামাজ-কালাম আনলেন কেন ? আবার যদি বিলাই কাহিনী পুনরাবৃত্তি ঘটে ? মন খারাপ

তবে কৌতুকটা ভাল হইসে । টাইইইট কৌতুক !!

- এনকিদু

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

হা হা হা... হি হি হি... অফিসে বসে শালার হাসাও কঠিন... অর্ধেক পরিমাণ হাসছি তাতেই লোকজন আশেপাশে উসখুস করতাছে...

বাদবাকিটুকু বাসায় গিয়া হাসুম...

আসাদুজ্জামান এর ছবি

হেসে ফেললাম,
লেখনীতে হাসি; বড়ই সৌন্দর্য

দুর্দান্ত এর ছবি

পিচকিগুলান জবর বিচ্ছু হয়!

অতিথি লেখক এর ছবি

যারা কষ্ট করে এই জুতা সংক্রান্ত কৌতুকটা পড়ার পর আমাকে জুতা মারেন নাই, উল্টা সুন্দর সুন্দর সব মন্তব্য দিয়েছেন, সবাইকে অনেক ধন্যবাদ । স্টকে আরেকটা পিচ্চি পোলার কৌতুক আছে, আজকে বাংলাদেশ সময় রাত বারোটার দিকে পোস্ট করব । ভাল থাকবেন সবাই ।

- এনকিদু

বিপ্রতীপ এর ছবি
অতিথি লেখক এর ছবি

সুন্দর কৌতুক।

-নিরিবিলি

অতিথি লেখক এর ছবি

হাআআআআহাআআআআআআআআআআআআআআআআআহাহাহা
মজার কৌতুক। আমার মতে ভদ্রমহিলা যথেষ্ট কস্ট করসেন। জাজ আমি হইলে খালাস দিয়া দিতাম। চোখ টিপি

মনজুর এলাহী

অতিথি লেখক এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

বুনোহাঁস

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।