অপূর্ব সোহাগ
আকাশ ভরা মেঘ, ভালোলাগার মেঘ, তাকিয়ে তাকার মত মেঘ, তাকাতে তাকাতে কোন এক ভাললাগার ধ্যানে হারিয়ে যাবার মেঘ। এরকম মেঘ বহু বহু দিন ধরে নিশীপুরগ্রামে কেউ দ্যাখেনি! মিঠা বাতাসের স্পর্শে মাঝে মধ্যে চুল উড়তে থাকে ছোঁয়া নামের মেয়েটির, শ্যাম্পু'র ঘ্রাণ মিশে যাচ্ছে বাতাসে, আরো এক ভালো সৃষ্টি হয়...।
কতদিন পরে এমন ভাললাগার তরঙ্গে ভাসছে মনেই পড়ছে না তার। ভালোলাগার ক্ষণ বুঝি এতই ক্ষণস্থায়ী মনে রাখা দায়। তবু মানুষ ভাললাগাকেই খোঁজে জীবনভর। চিবুকের নীচে হাত দিয়ে আনমনা হয়ে ভাবতে থাকে ছোঁয়া। জানালার কার্নিশে দাঁড়িয়ে থাকা মেঘ কত জনমের আপন তার সেটা সে হীন আর কেউ-ই জানে না। তার কিছু কেউ জানুক সে চায়ও না! কী দরকার জানার? সে তো কাউকে জানতে চায় না? চানতে চায়না বল্লে ভুল হবে, সে জানতে চায়, মেঘ, মেঘকে জানতে, ছুঁতে চায়- বলতে চায় তুমি কেনো জল হয়ে ঝরে যাও চোখের কোণে?
একটি কবিতার পঙতি আবৃত্তি করে সে ---
চোখের ঘরে জল বেড়েছে
জল ভেঙ্গেছে পাড়,
জল ছোঁবনা জল ছোঁবনা
চোখ ছুঁয়েছি যার...,
ছোঁয়া শান্তি পায় এই কবিতাটি সে মনে রাখতে পেরেছে বলে। সে তো জীবনে কিছুতেই পরিপূর্ণ নয়, তাই বুঝি এই কবিতাটি মনে রেখতে পেরে আরো বেশি পুলকীত।
চারপশে জুরে বাতাস বইছে, মেঘগুলোও সরে যাচ্ছে! অন্ধকার ঢুকে যাচ্ছে তার ভাবনার ভালোলাগার মধ্যে। সব ভালোলাগার মধ্যেই বুঝি এমন অন্ধকার থাকে? সব ভালোলাগাই বুঝি সমাপ্তের আগে বিষাদ হয়ে যায়? সব রঙ্গিন স্বপ্ন যেভাবে রঙ হারিয়ে ডুবে যায় অভিশাপের সমুদ্রে? তবু মানুষ স্বপ্ন দ্যাখে! মেঘ ছোঁয়! কত কী-ই না করে। তারপরে শূন্য হয়ে- অনন্ত শূন্যতায় ভাসে, ভাসতে ভাসতে মানুষের তবু সাধ জাগে বাঁচতে। বাচঁতে পারে নি শুধু মেঘ ছোঁয়ার প্রথম ছেলে মেঘ, যার আজ জন্মদিন ছিল। একবছর আগে এমন দিনে ছোঁয়া প্রসূতি বেদনায় ডুবে ছিল।
মন্তব্য
নতুন মন্তব্য করুন