বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ বর্ষের শেষ দিক। অমানবিক দৌড়ে জীবন অতিষ্ঠ। মাঝে মাঝে মনে হয় লেখাপড়া বাদ দিয়ে বাপ মায়ের পছন্দের পাত্র বিয়ে করে ফেলি। সবার চোখে মুখে হাল ছেড়ে দেওয়া ভাব। তখন একদিন এক স্যার, হঠাৎ একদিন পুরো ক্লাসের সময়টা গল্প করলেন আমাদের সাথে। সেইদিন শুনলাম এমন এক কাহিনী, যা আমরা এর আগে কখনও শুনিনি।
উনি বললেন, তোমরা এতো অল্পতে হাল ছেড়ে দাও, একাত্তর সালে আমি কী করেছি জানো?
আমরা বললাম, কী স্যার?
উনি বললেন, একাত্তর সালে আমি ম্যাট্রিক পরীক্ষা দিয়েছি, পাকিস্তানে, বন্দুকের মুখে। তারপরে শোনালেন সেই আশ্চর্য গল্প।
একাত্তর সালে স্যার বেলুচিস্তানে ছিলেন। সেখানে আটকে পড়া শত শত বাঙ্গালিকে হুবহু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার নাৎসীদের কায়দায় মরুভূমির মধ্যে কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে বন্দী করে রাখা হয়েছিলো। অর্ধভুক্ত, মরুভূমির প্রচন্ড শীতে শীতবস্ত্রহীন অবস্থায় টানা তিন বছর অমানুষিক শারিরীক, মানসিক অত্যাচার সহ্য করেছেন তাঁরা। খাবার বলতে ছিলো পচে যাওয়া পোকা কিলবিল করা মাংস আর পাথরের মতো শক্ত রুটি। আর মানসিক অত্যাচারের একটা নমুনা দিলেন স্যারঃ একবার তাঁরা মিষ্টিকুমড়ার চাষ করলেন নিজেরা নিজেরা। তখন তাঁদেরকে কেউ কিছুই বলেনি। কুমড়ো অনেক বড়ো হয়েছে, পরদিন সকালে কাটোবেন সেগুলো। সেদিন মধ্য রাতে ট্যাঙ্ক নিয়ে এসে তাঁদের চোখের সামনে সবকিছু মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া হলো।
তবে স্যারের আরেকটা গল্প শুনে খুব ভালোও লেখেছে। বেলুচিস্তানের সাধারণ মানুষ নাকি নিজেদের জীবন বিপন্ন করেও সাহায্য করেছে কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের যুদ্ধবন্দীদেরকে। রাত্রের অন্ধকারে লুকিয়ে লুকিয়ে দিয়ে যেতো শীতবস্ত্র আর খাবার। ওরাও নাকি অত্যন্ত দরিদ্র ছিলো, কিন্তু সাহায্য করতে কার্পণ্য করেনি। ওই বছরগুলিতে স্থানীয় মানুষদের নিঃস্বার্থ সাহায্যনা পেলে হয়তো বাঁচতে পারতেন না ওঁরা।
বেলুচিস্তানের যুদ্ধবন্দীরা মুক্তি পেয়ে দেশে আসতে পারেন স্বাধীনতার পুরো দুই বছর পরে ১৯৭৩ সালে। স্যার নাকি দেশের মাটিতে পা দিয়েই স্লোগান দিয়েছিলেন, জয় বাংলা, আর আত্মীয় স্বজনেরা বলে উঠেছিলো, চুপ চুপ!
স্যারকে প্রশ্ন করেছিলেন, স্যার বই লেখেননা কেন? উনি বললেন, এসব কথা ছাপার অক্ষরে প্রকাশ হলেই তাতে রাজনীতির রঙ লাগবে। Word of mouth সবচেয়ে শক্তিশালী যোগাযোগের মাধ্যম। আমি আজকে তোমাদেরকে বনললাম, তোমরা একদিন তোমাদের সন্তানদেরকে বলবে। মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস এভাবেই প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে যাবে।
আজকে ছুটির দিন কোনো কাজ নাই দেখে এসব কথা মনে পড়ে গেলো। মনে জাগলো কিছু প্রশ্ন। কিন্তু নেটে খুঁজে কিছু তো পেলামনা। তাই সচলায়তনে পোস্ট দিচ্ছি।
আমার প্রশ্নগুলো হলোঃ
১. পাকিস্তানে মোট কতগুলি কনসেনট্রেশন ক্যাম্প ছিলো?
২. এই ক্যাম্পগুলিতে সর্বমোট কতোজন বাঙ্গালি বন্দী ছিলেন?
৩. তাঁদের উপরে কী ধরনের নির্যাতন চালানো হতো?
৪. নির্যাতনের ফলে কেউ কি মারা গিয়েছিলেন?
৫. তাঁ কী সবাই মুক্তি পেয়েছিলেন? কবে নাগাদ তাঁরা বাংলাদেশে ফিরে আসেন?
৬. পাকিস্তানের কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে বাঙ্গালি যুদ্ধবন্দীদের সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যাবে, এমন বইয়ের নাম কী?
৭। আপনারা যাঁরা এমন ঘটনা আরও জানেন, প্লীজ শেয়ার করুন।
প্রশ্নগুলির উত্তর পেলে অত্যন্ত কৃতজ্ঞ থাকবো।
পুনশ্চঃ আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে উইকিপিডিয়াতে খুঁজতে গিয়ে এটা দেখিঃ
The exact cost of the violence on the people of East Pakistan is not known. R.J. Rummel cites estimates ranging from one to three million people killed.Other estimates place the death toll lower at 300,000.
সুত্রঃ উইকিপিডিয়াঃ Indo-Pakistani War of 1971
কিছুটা বিভ্রান্ত বোধ করলাম, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে প্রকৃত নিহতের সংখ্যা নিয়ে কী আসলেই বিতর্ক আছে?
মন্তব্য
আমিও জানতে আগ্রহী।
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
আমি পারিকবারিক সূত্রে কয়েকজনকে চিনি যারা সেসময় পাকিস্তানে বন্দী ছিলেন । তাঁদের অভিজ্ঞতা অনেকবার শুনেছি কিন্তু কখনো মনে হয়নি এগুলো নিয়ে আলোচনা করার মত সময় এসেছে । আপনার শিক্ষক যেমন বলেছেন, " রাজনীতির রঙ লাগবে ", আমিও তাই আশঙ্কা করি । আমাদের এখানে সবকিছু নিয়ে রাজনীতি করার চল যদি না থাকত তাহলে হয়ত এসব ব্যপার নিয়ে আলোচনা এবং গবেষনা করা সহজ হত এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গুলো এতদিন অজানা থাকত না ।
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অন্দিলা পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ। আপনার পোষ্টটা পড়ে এমন একজনের কথা মনে পড়ে গেল।
লিখব একটা পোষ্ট তাকে নিয়ে।
করুক রাজনীতি, তবুও আমাদের লিখতে হবে। দুষ্ট গরুর ভয়ে আমরা গোয়াল খালি করব? নাকী ঘাড় ধরে দুষ্ট গুলো বের করেদিয়ে ভাল গুলো রাখব? এটা ভেবে দেখার সময় এসেছে। হয়তো আমাদের এতদিনের নীরবতা দুষ্টগুলোর দুষ্টমি বাড়িয়ে দিয়েছে। বানর আস্কারা পেয়ে মাথায় উঠেছে!
**********************
কাঁশ বনের বাঘ
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অংশগ্রহণ করার জন্য সবাইকে অজস্র ধন্যবাদ।
আমি সঠিক জানিনা, কিন্তু আমার মনে হয় যুদ্ধের সময় কনসেনট্রেশন ক্যাম্প তৈরি করা অনেক বেশি গুরুতর একটি যুদ্ধাপরাধ, কেননা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে এরকম করার জন্য তো জার্মানির নাৎসীবাহিনীর বিচার হবার দৃষ্টান্ত রয়েছে। অথচ আমাদের দেশের মানুষদের সাথে ঠিক একইরকম করা হয়েছে কিন্তু আমরা তা সম্পর্কে তেমন কিছুই জানিনা, বিচার হওয়া তো আরও অনেক পরের ব্যাপার।
এই ব্যপারগুলি নিয়ে কবে আমরা কথা বলবো, জানবো, যুদ্ধের ভুক্তভোগী আর যুদ্ধাপরাধীরা সব মারা যাওয়ার পরে?
আর উইকিপিডিয়ার ব্যাপারটাতে আমি একটু ভয়ই পেয়েছি, অনেক সময় অনেক কাজে উইকিপিডিয়া কনসাল্ট করেছি, উইকিপিডিয়ার তথ্য ব্যবহার করেছি বিনা দ্বিধায়। এখন থেকে উইকির উপরে ভরসা কমে গেলো।
পুতুল আপু আর এনকিদু ভাইয়ের কাছে পাকিস্তানে আটকে পড়া সেইসব হতভাগ্য যুদ্ধবন্দীদের সম্পর্কে আরও কথা জানবার অপেক্ষায় রইলাম। অপেক্ষা রইলো অন্য সব সচলের বন্ধুদের মতামত জানবারও।
wikipedia সম্পর্কে কিছু কথা বলি । wikipedia বলতে আমি ধরে নিচ্ছি আপনি ইংরেজীটার কথা বলছেন । ইংরেজি উইকিতে প্রচুর ভুল / মিথ্যা / অগোছাল তথ্য আছে । আপনি যদি এখন লিখে আসেন ' golam azom was a rajakar, a war collaborator ' কিছুক্ষন পরেই একজন এসে সেটা মুছে দিবে । বিশ্বাস না হলে experiment করে দেখতে পারেন । আমার জানামতে বৈজ্ঞানিক বিষয়গুলো সম্ভবত একমাত্র নিরপেক্ষ তথ্য, তাই সেগুলো নিয়ে কেউ ঝামেলা করেনা । আপনি বৈজ্ঞানিক তথ্যের জন্য ইংরেজি উইকি ব্যবহার করতে পারেন । কিন্তু রাজনৈতিক, ঐতিহাসিক ইত্যাদি ক্ষেত্রে সাবধান ।
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
ধন্যবাদ অন্দ্রিলাকে এই দরকারী পোস্টটি লেখার জন্য। আমিও আপনার সাথে অপেক্ষায় রইলাম উত্তর জানার জন্য।
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে
৭১'এ মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানে অবস্থিত বাংলাদেশীদের কথা কেউই বলে না ।
আপনার স্যার যেমনটা বলেছেন যে রাজনিতীর ছোয়া লাগবে
খুবই সত্যি কথা বলেছেন
আবার এটাও দেখেন যে সেই সময় পাকিস্তানে যত বাংলাদেশি ছিল পাকিস্তানিরা একাত্তুরের পরে রিতিমত ঘারে ধরে বের করে দিয়েছে অথচ আমরা বাংলাদেশিরা কিন্তু সেটা করতে পারিনি যেমন বিহারি দের কথাই ধরেন আমরা কিন্তু এদের ঘার ধরে বের করে দিতে পারিনি এবং সেই সময় এর রাজাকারদের কথাই ধরেন যারা বাংলাদেশ হওয়ার বিরোধিতা করেছিল তাদেরও কিন্তু আমরা কিছুই করতে পারি নি ।
পাকিস্তান সেনা , নৌ, বিমান বাহিনিতে যেসব বাংলাদেশি সেই সময় কর্মরত ছিলেন তাদের কথাই ধরেন ।
১৯৬৫ এর যুদ্ধে অনেক বাংলাদেশীই অসম সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিলেন এদের মধ্যে বিমান বাহিনির এম এম আলম ছিলেন যিনি ৬৫ এর যুদ্ধে ৫ টি বিমান ভুপাতিত করে অসম সাহসিকতার জন্য সিতারায়ে জুরত পদক পেয়েছিলেন পরে নিজেকে পাকিস্তানি হিসেবে রেখে দিয়েছিলেন । ৭১ এর যুদ্ধের সময় শুধু পাকিস্তানে থাকার অপরাধে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এদের কথা কেউ শুনতে চায় নি বরংচ বাংলাদেশ সেনাবাহিনি তে বেশ বড় রকমের বিভক্তি করা হয়েছে অথচ এদের অধিকাংশই পাকিস্তানে বন্দি দশা কাটিয়েছেন এমনকি এম এম আলমও গ্রাউন্ডেড ছিলেন ।
অনেক কথা লিখতে ইচ্ছে করছে কিন্তু সচলায়তন এর রেস্ট্রিক্টেড লেখকের সিমাবদ্ধতায় সেটা সম্ভব নয় বিধায় বাদ দিলাম।
কি হবে তাদের কথা শুনে!
আসল ইমেইল এড্রেস দিলাম তাও সচলায়তন বলে
The e-mail address you specified is not valid
রাগিব ভাই
এম এম আলমের কথা বলেছি যে উনার মত খাস চামচা লোকজন ও ৭১ এ দৌড়ের উপর ছিলেন সেটা বোঝানোর জন্য এবং সেখানে সাধারন বাংলাদেশিদের কি অবস্থা হতে পারে সেটা আন্দাজ করার জন্য।
সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। রাগিব ভাই আর এনকিদু ভাই আপনাদের কাছে আমি সত্যি কৃতজ্ঞ এতো সহযোগিতা করার জন্য।
উইকিপিডিয়া ব্যবহার প্রসঙ্গে বলি, আমি ব্যবসায় প্রশাসনের ছাত্র ছিলাম, তাই ওই বিষয়ে জানার জন্যই উইকি ব্যবহার করেছি সবচেয়ে বেশি। তবে উইকির তথ্য নিয়ে কখনো ঝামেলাতে পড়িনাই, ভাগ্যিস!
রাগিব ভাই এর পরে থেকে আপনি যেভাবে বলেছেন সেইভাবে সেকেন্ডারি রিসার্চ করার চেষ্টা করবো। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
গোলাম আযমের জীবনীতে, সে যে একটা যুদ্ধাপরাধী ছিলো, এই কথাটা সংযোগ প্রসঙ্গে আমার একটা ছোট্টো কৌতুহলঃ সে যে মুক্তিযুদ্ধের সময় কোন পক্ষে ছিলো, তা তো একাত্তর সালের বিভিন্ন বাংলা ইংরেজি খবরের কাগজের ক্লিপিংসে পাওয়া যাবে, তাই না? ওইগুলির স্ক্যান করা কপি কি উইকিতে দেওয়া যায় না? তার সেইসময় পাকিস্তানি বাহিনীর বিভিন্ন লোকের সাথে ছবিও তো আছে, এরকম একটা ছবি আমি মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরে দেখেছি বলে মনে পড়ে। এগুলিই কি যথেষ্ট শক্তিশালী তথ্য প্রমাণ নয়? এবং একই পদ্ধতি নিযামী, মওলানা মান্নান, এবং অন্য সব রাজাকারের ক্ষেত্রে কী প্রয়োগ করা যায়না?
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তিন মিলিয়ন মানুষ মারা যাওয়ার ব্যপারে আমি যতোটুক জানি, তা হলো, মুক্তিযুদ্ধের আগে সম্ভবত ৬৯/৭০ সালে পাকিস্তানে একবার আদমশুমারি হয়েছিলো। স্বাধীনতার পর পর আবার যখন আদমশুমারি করা হয়, তখন নাকি তিন মিলিয়ন মানুষ কম পাওয়া গেলো। যতোদূর মনে পড়ে কোনো একটা টক শোতে মতিয়া চৌধুরী বলেছিলেন এই কথা।
আর এমএম আলমের নাম আমি এখানেই প্রথম শুনলাম, আমার আরেকটা প্রশ্ন যুক্ত হলোঃ
একাত্তর সালে পাকিস্তানে থাকা বাঙ্গালিদের বিভিন্ন ধরনের ভূমিকা কী কী ছিলো?
এখন পর্যন্ত আগের ছয়টা প্রশ্নের একটারও জবাব পেলাম না কিন্তু...
-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
১৯৭১ ছবিটি দেখতে পারেন। যদিও ওই ছবিটি পাকিস্তানে বন্দী ভারতীয় কিছু সেনার, কিন্তু এই প্রবন্ধের সাথে প্রাসঙ্গিক। বাঙ্গালীদের মতই কিছু ভারতীয় আর্মি সদস্য নাকি পাকিস্তানে বন্দী আছে।
ছবিটির শেষে বলেছে এখনও পাকিস্তানের বিভিন্ন জেলে কয়েকশ ভারতীয় সেনা ধুঁকে ধুঁকে মরছে, অথচ সরকার থেকে এদের জন্য কিছুই করছেনা।
@অন্দ্রিলা অনেকদিন আগে যায়যায় দিনে এম আছাব আলি নামের একজন লিখতেন তার কাছে লিখলে আপনি জানতে পারতেন বেশ কিছু ঘটনা।
@পলাশ এম এম আলম কিন্তু বাংলাদেশের বাঙ্গালি না সেই হিসেবে বাংলাদেশের প্রতি তার টান ছিল না বললেই চলে।
@রাগিব
মতি আঙ্কেলের এর প্রতি পুর্ন শ্রদ্ধা রেখেই বলছি উনি যেই দুঃসাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিলেন সেটাতে মুক্তিযুদ্ধের প্রচারে বেশ কাজে লেগেছিল ঠিকই কিন্তু সাথে সাথে পাকিস্তানে থাকা লাখ খানেক বাংগালিদের জীবন ও বিপন্ন হতে বসেছিল।
মতি আঙ্কেলের আগস্ট মাসের ওই ঘটনার আগে পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহেই কিছু কিছু বাংলাদেশি নাই হয়ে যাচ্ছিলেন ।
নানা অজুহাতে বাংলাদেশিরা তাদের পরিবার পরিজন দেশে পাঠিয়ে দিচ্ছিলেন।
কিন্তু আগস্ট মাসের পরে সেনা, বিমান ও নৌ বাহিনিতে থাকা সকল বাংলাদেশিদের ক্লোজ করা হয় এবং তাদেরকে কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে নয় বিভিন্ন জেল এ রাখা হয় ডিসেম্বরের পরে পি,আইএ ,রেডিও পাকিস্তান এমনকি করাচির মাছ বিক্রেতা থেকে শুরু করে আরো বিভিন্ন যায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাংলাদেশিদের ধরে সেখানে এনে রাখা হয় ।
১৯৭২ এর সিমলা চুক্তির সময় পাকিস্তান জেনেভা কনভেশনকে বুড়া আঙ্গুল দেখিয়ে এই সব আটকে পরা বাংলাদেশীদের কে POW হিসেবে দরাদরি করে তাদের ৯২ হাজার জওয়ান অফিসার কে নিয়ে যায় যাদের অধিকাংশই যুদ্ধাপরাধি যদিও হামিদুর রহমান কমিশন সামান্যই যুদ্ধ অপরাধ খুজে পেয়েছিলেন।
জেনেভা কনভেনশন এর ধারা অনুযায়ী শত্রু পক্ষের হয়ে যুদ্ধ করা অবস্থায় অথবা কোন ভাবে শত্রু পক্ষের কমান্ড এর অনুসারি হলে তবেই তাকে প্রিজনার অব ওয়ার বলা যায় সেখানে করাচির রাস্তায় মাছ বিক্রেতা রহিম করিম কে ও ধরে এনে পাকিস্তানি রা POW বানিয়ে দিয়েছে ।
পাকিস্তান সামরিক বাহিনিতে যেসকল বাংলাদেশি ছিলেন তারাও জেনেভা কনভেশন অনুযায়ি শত্রু যোদ্ধা হিসেবে পরিগনিত হন না কারন তাদের কে মার্চ এর পর পরই ডিস-আর্ম করে রাখা হয়েছিল ।
এখানেই শেষ নয় পাকিস্তান যে শুধু বাংলাদেশের সাথেই বেঈমানি করেছে তা নয় ভারতেরও অসংখ্য সৈনিক অফিসার তারা রেখে দিয়েছে এক ভারতীয় সহকর্মীর কাছে শুনেছিলাম সেখানে নাকি লস্ট পি,ও,ডাব্লিউ দের এসোসিয়েশন ও আছে।
সব শেষে সেই সময় পাকিস্তানে আনুমানিক ২ থেকে তিন লাখ লোক আটকে ছিলেন সে সকল পরিবারের কস্টের কথা কেউ শোনে নি কেউ জানতেও চায় নি ।
সবাই ভেবেছে তারা ত বেশ ভালই ছিলেন
অনেকটা নদীর এপার কহে ছাড়িয়া .....................
পোস্টটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, অন্দ্রিলাকে অনেক ধন্যবাদ । সবার কমেন্ট পড়ছিলাম, আমিও জানতে চাই ।
-----------------------------------------
রাজামশাই বলে উঠলেন, 'পক্ষীরাজ যদি হবে, তা হলে ন্যাজ নেই কেন?'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
আটক অনেকে বিভিন্ন পথে পালিয়েও এসেছিলেন।
****************************************
নতুন মন্তব্য করুন