বুয়েটের হলে থাকার সময় আমাদের সবচেয়ে আনন্দের সময়টা আসত যখন ফুটবল বিশ্বকাপ শুরু হত। আমরা বুয়েটের ছাত্ররা বরাবরই শান্ত প্রকৃতির হলেও বিশ্বকাপ বিশেষ করে ফুটবল বিশ্বকাপ আসলেই আমাদের রক্তে যেন যুদ্ধের দামামা বেজে উঠত। আমরাই বিশ্বকাপের সময় নির্বিঘ্নে খেলা দেখার জন্য পরীক্ষা পেছাতেও পিছপা হইনি। যাই হোক, বিশ্বকাপের সময় হল গুলোতে উত্সব লেগে যায়। অনেক হলে নতুন বড় পর্দার টেলিভিশন আমদানী হয়। টিভি রুমের দেয়ালে দেয়ালে রোনাল্ডো, রোনালদিনহো, বালাক, মেসি-রা ঝুলে ঝুলে রুমের শোভা বর্ধন করতে থাকে। অনেকে আবার নিজে স্বতঃ প্রোণদিত হয়ে নিজের প্রিন্টার থেকে খেলার ফিক্সার ও বিনামূল্যে বিতরণ করে থাকে। এই উত্সবে আবার অনেক রুমে তুমুল গোলমাল শুরু হয়ে যায়। অনেক রুমে রুমমেটদের মুখ দেখাদেখিও বন্ধ হয়ে যায়, এর কারণ এক রুমমেট হয়ত ব্রাজিলের সাপোর্টার আর আরেক জন হয়ত আর্জেন্টিনার সাপোর্টার। সারাবছর একই রুমে কোন সমস্যা না হলেও বিশ্বকাপের সময় গোলমাল বাধঁবেই। আমাদের নজরুল ইসলাম হলে তখন আর্জেন্টিনার সাপোর্টার রা আবার বরাবরই একটু বেশী মাত্রায় একটিভ। আজেন্টিনা কোন ম্যাচে জিতলে তাদের নর্দন কুর্দন হত দেখার মত। আর আমরা যারা ব্রাজিলের সাপোর্টার, আমরা কথা নয় কাজে বিশ্বাসী। এমনি কোন একদিন আর্জেন্টিনা হয়ত একটা ম্যাচ জিতেছে। আর্জেন্টিনার সাপোর্টারদের চিত্কার চেঁচামেচিঁতে সবাই অস্থির, যেন আর্জেন্টিনা ওয়ার্ল্ড কাপই জিতে ফেলেছে। পরদিন আমাদের এক বন্ধু যে ব্রাজিলের সাপোর্টার সে আমাদেরই আরেকজন কে জিজ্ঞেস করছে, “তুই কি সেই ঘৃণ্য আর্জেন্টিনার সাপোর্টার?”
লগ ইন নেমঃ অদ্ভুতুড়ে
মেইল এড্রেসঃ
মন্তব্য
খুব সুন্দর চেষ্টা ছিলো। ভালো লিখেছেন।
আরো লিখতে থাকেন।
একান্ত
নতুন মন্তব্য করুন