একসাথে জোছনা কুড়ানোর গল্প ০০১

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: সোম, ০৭/০৭/২০০৮ - ৭:৪২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

১...
দুটো ছেলেমেয়ের ভালোবাসাবাসির গল্প বলি। ছেলেটা একটু কেমন যেন, বয়ঃসন্ধির একরোখা উদ্ধত বিদ্রোহ আর চেপে রাখা একটা ক্রোধ সারাক্ষণ তড়পায় ওর মধ্যে, তাই অল্পতেই মাথা গরম করে ফেলে, চিৎকার চেচাঁমেচি করে সবার কান ঝালাপালা করে দেয়। মেয়েটা আবার এরকম না, টিপিক্যাল বাঙালি ভদ্র মেয়ের আদর্শ উদাহরণ। মৃদুভাষী, বাবা মায়ের কথা শোনা মিষ্টি একটা মেয়ে। পাঠক হয়তো ভাবছেন, এই দ্বিমেরুক বৈপরীত্যের মাঝে ভালোবাসাবাসিটা আবার কিভাবে হবে? পাঠক নির্ভয়ে থাকুন, বহুবার উদ্ধৃত ক্লিশে হয়ে যাওয়া কথাটা আরো একবার শুনুন, জীবন নাটকের চেয়েও নাটকীয়। এবং, এই নাটকের পাত্র-পাত্রী দুজনেরই বাড়ি ঢাকার অদূরে এক মফস্বল শহরে। দুজনেই আবার বাড়ি ছেড়ে ভিন্ন ভিন্ন আবাসিক কলেজে থেকে পড়াশোনা করে। ছুটিছাটায় বাড়ি আসে। ছেলেমেয়েদের মানুষ করতেই হবে, এমন প্রতিজ্ঞা করা মা বাবার পাল্লায় পড়ে দুজনকেই ছুটির মধ্যেও পড়তে যেতে হয় ব্যাচে, তাও আবার দুই তিন জায়গায়। শহরটা ছোট, ব্যাচে পড়ানো স্যারদের সংখ্যাও কম। দুজনের তাই অবধারিতভাবেই দেখা হয়ে যায় একটা কেমিস্ট্রির ব্যাচে। আমার গল্পের শুরুও এখানেই।
২...
কেমিস্ট্রি স্যারের বাসায় লম্বা একটা টেবিল। টেবিলের তিনদিকে চেয়ার, আর লম্বা একটা পাশ খাটের সাথে লাগানো, সেই পাশটার মাঝখানে স্যার বসেন, তাকে ঘিরে চারপাশে বসে ছাত্র ছাত্রীরা। ছাত্ররা একপাশে আর ছাত্রীরা আরেকপাশে। সিরিয়াস পোলাপান সবসময় স্যারের পাশে বসে, ছেলেটা জীবনেও তেমন সিরিয়াস ছিল না, তাই প্রতিদিন সে গিয়ে বসে টেবিলের এক কোণায়। স্যার পড়ান আর ছেলেটা খাতায় আঁকিবুকিঁ কাটে, পড়া শেষ হলে মোড়ের সিগারেটের দোকানটায় গিয়ে দাঁড়ায় বন্ধু বান্ধব সহ। একটা সিগারেট তিন চার জন “একবারে তিনটান” নিয়মে ভাগাভাগি করে খায়, সবাইকে দেখাতে চায়, বড় হয়ে গেছে ওরা, মাথা ছাদ ফুঁড়ে আকাশ স্পর্শ করেছে এইরকম একটা ভাব। ছুটির দিনগুলো এভাবেই কেটে যাচ্ছিল, হঠাৎ ছেলেটা একদিন লক্ষ্য করে মেয়েটা পড়া ফেলে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। চোখে চোখ পড়তেই চোখ সরিয়ে নেয় মেয়েটা। দু সেকেন্ডের এই চোখাচোখিতেই যা হবার হয়ে যায়, ছেলেটা দেখে ফেলে নিজের সর্বনাশ, মৃত্যু, কষ্ট কষ্ট সুখ। ওই রাতে ওর আর ঘুম হয় না, মেয়েটার মায়াকাড়া চেহারা ভাসে কল্পনায়, বুকের ভেতর গাঙভাসানি বানের শব্দ আর দাবানলের দহন নিয়ে সারা রাত এ পাশ ও পাশ করে কাটিয়ে দেয়। পরদিন স্যারের বাসায় সবার আগে গিয়ে হাজির হয়। মেয়েটাও আসে কিছুক্ষ্ণণ পর, বসে গিয়ে স্যারের ঠিক পাশে খাটের ওপর, ছেলেটা যথারীতি টেবিলের কোণায়। স্যার পড়ানো শুরু করার পর আর অন্য দিনের মতো খাতায় আঁকিবুঁকি কাটে না ছেলেটা। আণবিক ভর না আণবিক সংখ্যা কি একটা নিয়ে কথা বলতে শুরু করেন স্যার, মেয়েটা বই খাতা খুলে নোট নেয়া শুরু করে, ছেলেটা স্যারের কথা শোনার ভান করে মেয়েটার দিকে তাকিয়ে থাকে। মেয়েটা হঠাৎ উপরের দিকে তাকাতেই চোখাচোখি হয়ে যায়, ছেলেটা লজ্জা পেয়ে চোখ সরিয়ে নেয়। একটু পর আবার তাকায়, আবার চোখাচোখি হয়। ছুটির বাকি দিনগুলো এভাবেই শেষ হয়ে যায়, দুজনেই ফিরে যায় কলেজের চার দেয়ালের গন্ডির মধ্যে।
৩...
ছেলেটা কলেজে গিয়ে দৈনিক কর্মব্যস্ততা আর বন্ধুদের সাথে হইচইয়ের মাঝে হারিয়ে যেতে চায়, পারে না। বুকের মধ্যে অচেনা অনুভূতির তীব্রতা নিয়ে দিন কাটায়, রাতে পড়ার সময় না পড়ে একাডেমিক বিল্ডিং-এর দোতালার বাথরুমে গিয়ে গ্রীলহীন জানালায় পা ঝুলিয়ে বসে থাকে, ক্লাসে স্যারদের কথা না শুনে মোহ, ঝোঁক, কাম, প্রেম নিয়ে উচ্চমার্গের চিন্তাভাবনা করে, আর মেয়েটাকে একবার দেখার বাসনায় ভেতরে ভেতরে অল্প অল্প করে মরে যেতে থাকে। তবু বুকের ভেতরের অনুভূতিটাকে সংজ্ঞায়িত করতে পারে না। কলেজের টার্ম কখোনোই এত দীর্ঘ মনে হয়নি তার কাছে। অনুভূতির ঘূর্ণিঝড় বুকের মধ্যে আরো শক্তিশালী হয়ে দাপাদাপি করে, ছেলেটা কষ্ট পেয়ে জবাই করা পশুর মতো শব্দ করে গুঙিয়ে ওঠে, মাঝে মাঝে সবার সামনেই, বন্ধুরা জিজ্ঞেস করলে চেপে যায়, কাউকেই কিছু বলে না। অবশেষে সইতে না পেরে একদিন প্রেমে অভিজ্ঞ এক বন্ধুর কাছে গিয়ে খুলে বলে সব, নিজের অনির্ণীত অনুভূতির কথা জানায়, জিজ্ঞেস করে ওর কি মনে হয়, আসলেই ও কি প্রেমে পড়েছে নাকি কামজ মোহে তড়পাচ্ছে। ১৬ বছর বয়সের ছেলেটা তখনো সবকিছু সাদা কালোতে দেখে, প্রেম স্বর্গীয় বলেই জানে, কামকে মনে করে পাশবিক, ওইরকম মায়াবতী মেয়েকে কামনা করার মতো পাপ সে করতে চায় না। ইতোমধ্যে দুইটা প্রেমের অভিজ্ঞতা হয়ে যাওয়া বন্ধুর পাল্টা প্রশ্ন আসে, “তুই কি কনফিউসড?” ছেলেটা হ্যাঁ বলতেই বন্ধু দুইয়ে দুইয়ে চার করার মতোই নিজের অভিমত জানিয়ে দেয়, “কনফিউসন মিনস লাভ।” ছেলেটা অবশ্য এতে অত আশ্বস্ত হয় না। ওর বুকের বয়লারে আবেগের বাষ্পচাপ বাড়তেই থাকে। একদিন এই বাষ্প বের করার বুদ্ধি বের করে ফেলে ও, হোম ওয়ার্কের খাতা ভরে যায় কবিতায়। দেখতে দেখতে ছুটির সময় চলে আসে, ছেলেটা নিজেকে এইতো আর কদিন বলে সান্ত্বনা দেয়। এবং কদিন পরেই ওদের দেখা হয়ে যায় আবার সেই কেমিস্ট্রি স্যারের বাসায়।
৪...
পড়তে গিয়ে ছেলেটা শুধু মেয়েটার দিকেই তাকিয়ে থাকে, অন্যকেউ তাকালে চোখ সরিয়ে নেয়। রাতে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে বাড়ি ফেরার সময় মেয়েটার বাড়ির সামনে দিয়ে আসে, “রাত্রির আঙিনায়, যদি খোলা জানালায়, একবার, একবার যদি সে দাড়াঁয়।” চার পাঁচ রাতে হয়তো একবার সে দাড়াঁয়, ছেলেটা সেদিন বিশ্বজয়ের আনন্দ নিয়ে বাসায় ফেরে। খাবার টেবিলে মা যখন জিজ্ঞেস করেন এত খুশি কিসের, তখন মাকে “হ, তুমি তো সব বুঝো!” বলে উড়িয়ে দেয়। ছুটির দিনগুলো শেষ হতে থাকে আর আসন্ন কলেজ টার্মে আবারো সেই কষ্ট পেতে হবে বলে শংকিত হয়। অনেক ভেবে চিন্তে একটা বুদ্ধি বের করে ছেলেটা। মেয়েটাকে নিজের অনুভূতির কথা জানালে হয়তো এত কষ্ট হবে না, কোথায় যেন পড়েছিল, আবেগ পুষে রাখতে নেই, তাতে ভারসাম্য নষ্ট হয়। “নায়িভ” ছেলেটার মনে হয় মেয়েটা তার কষ্টের কথা জেনে গেলেই ওর আবেগগুলোর দাপাদাপি কমে যাবে। আস্তে আস্তে এই মনে হওয়াটা স্থির বিশ্বাসে পরিণত হয়। ছেলেটা প্রস্তুতি নেয়া শুরু করে মেয়েটাকে জানানোর। ওর সাহসে কুলায় না, সামনের কলেজ টার্মের কথা ভাবলে আবার ভয় হয়, আবার ওইরকম তড়পানির মধ্য দিয়ে তিন মাস কাটাতে পারবে না ও। একদিন বাসা থেকে স্যারের বাসার দিকে রওনা হওয়ার আগে মনে মনে নিজেকে বলে, হয় আজ নয়তো কোনদিনই না.........
৫...
ভাগ্য ভালো, স্যারের বাসায় গিয়ে মেয়েটাকে একলাই পেয়ে যায় ছেলেটা।
“আজ পড়া শেষে একটু থাকতে পারবা? তোমার সাথে কথা ছিল।”
মেয়েটা অবাক চোখে তাকায় ওর দিকে, ইতস্তত করে বলে,
“ঠিক আছে।”
স্যার আসেন একটু পর, পড়ানো শুরু করেন, ছেলেটা ভয়ে আর শংকায় ফ্যানের নিচে বসে ঘামতে থাকে। দীর্ঘতম একটা ঘন্টা অবশেষে শেষ হয়। মেয়েটা বইখাতা গুছিয়ে স্যারের বাসার নিচে গিয়ে ছেলেটার জন্য অপেক্ষা করে। ছেলেটাও নিজের বুকের দ্রিম দ্রিম শব্দ শুনতে শুনতে মেয়েটার সামনে এসে দাড়াঁয়। ঔৎসুক চোখে তাকিয়ে মেয়েটা জিজ্ঞেস করে,
“কি বলবা যেন বলছিলা।”
ছেলেটা ঢোক গিলে। শুকনো হয়ে আসা মুখে অস্থির হয়ে আর্দ্রতা খোঁজে।
“বলব। তবে শর্ত আছে।”
-“কি শর্ত?”
“যা বলব, কাউরে বলতে পারবা না। পছন্দ না হইলে ভুলে যাবা। ঠিক আছে?”
মেয়েটা ভ্রু কুচঁকে ওর দিকে তাকিয়ে থাকে।
“ঠিক আছে।”
মেয়েটা আবার জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকায়। ছেলেটার জগত অন্ধকার হয়ে আসে, মুখ থেকে একটা কথাও বের করতে পারে না, জিভ সরাতে গিয়ে মনে হয় পাহাড় ঠেলছে ও, শ্বাস প্রশ্বাস দ্রুত হয়ে আসে ওর। শব্দ করে দম নেয়া শুরু করে। মেয়েটা অস্থির হয়ে ওঠে।
“কি? বলো না ক্যান?”
মরিয়া হয়ে ছেলেটা নিজের সবটুকু সাহস একত্র করে ইথারে ছড়িয়ে দেয় শব্দগুলো,
“আমি না তোমাকে পছন্দ করি।”
নিজের চারপাশের জগত হাওয়ায় মিলিয়ে যায়, মহাবিশ্বের সবকিছু মিথ্যে হয়ে গিয়ে মেয়েটার কোচঁকানো ভ্রুসহ মুখটাই কেবল জেগে থাকে ছেলেটার অনুভবে। কোঁচকানো ভ্রু আরো কুঁচকে যেতে দেখে ছেলেটা।
“তুমি বাসায় যাও।”
ছেলেটা তখন সব বোধ-অনুভবের উর্ধে। যন্ত্রের মতো পা চলিয়ে ওখান থেকে চলে আসে ও।
৬...
ঠিক আধা ঘন্টা পর, ছেলেটা যখন বুঝতে শুরু করে কি ঘটে গেছে, ওর একটুও কষ্ট লাগে না। যাই হোক, এটা তো আর প্রেম নিবেদন ছিল না, ছিল নিজের কষ্ট লাঘবের প্রচেষ্টা। অদ্ভুত একটা স্বস্তি বয়ে যায়, বুঝতে পারে বুকের বাষ্পচাপ এখন একটুও নেই, এক ঝামেলার হাত থেকে বাঁচা গেছে ভেবে ফুরফুরে এক অনুভূতি নিয়ে শহরের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো শুরু করে। কিছুক্ষ্ণণ পর মনে হয়, মেয়েটা আবার কিছু ভেবে বসল না তো? পরদিন মেয়েটার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে, ঠিক করে ও।
পরদিন স্যারের বাসায় আবার দেখা হয়, ছেলেটা একটু আড়ষ্ট হয়ে থাকে, দেরি করে আসায় ছেলেটার পাশেই বসতে হয় মেয়েটিকে। স্যার তখনো আসেননি, সবাই নিজেদের মধ্যে কথা বলছিল। মেয়েটা আস্তে আস্তে ছেলেটাকে বলে, “কথা আছে, একটু দাড়াঁয়ো।” শুনে প্রমাদ গুনে ছেলেটা, এইরে, এইবার না জানি কত বকা শুনতে হয়। আগের মতো অতটা ভয় সে পায় না, সে এখন এক চাপমুক্ত মানুষ! যথাসময়ে স্যারের পড়ানো শেষ হয়। বাইরে গিয়ে ছেলেটা দাড়াঁয়। মেয়েটা বান্ধবীদের সাথে নিচে নেমে আসে, ওকে দেখে থমকে যায়, বান্ধবীদের এগিয়ে যেতে বলে ছেলেটার সামনে এসে দাড়াঁয়। ছেলেটাই কথা শুরু করে।
“কাল যা বলছিলাম, তুমি মাইন্ড করো নাই তো?”
মেয়েটা অবাক চোখে তাকায়। ছেলেটা থামে না।
“মাইন্ড করলে আমি সরি। তুমি ভুইলা যায়ো ব্যাপারটা।”
মেয়েটার বড় বড় চোখ আরো বড় বড় হয়ে যায়, তারপর ছোট একটা নিশ্বাস ফেলে বলে,
“আমি তো বলতে চাইছিলাম, আমিও সেইম।”
বুঝতে পারে না ছেলেটা।
“কি সেইম?”
মাথাটা একটু নিচে করে মেয়েটা, মাটির দিকে তাকায়।
-“আমিও তোমার মতো, সেইম।”
তবু শূন্যদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে ও। মেয়েটা আলতো হেসে যখন চলে যেতে শুরু করে, তখনো বেকুবের মতো দাড়িঁয়ে থাকে ছেলেটা...

(ইহা ৯৫% সত্য ঘটনা, ৫% পাত্রপাত্রীর পরিচয় গোপন রাখার স্বার্থে কল্পনা করা হয়েছে।)

--- লাইঠেল


মন্তব্য

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

১ ...

“আমি তো বলতে চাইছিলাম, আমিও সেইম।”
বুঝতে পারে না ছেলেটা।
“কি সেইম?”
মাথাটা একটু নিচে করে মেয়েটা, মাটির দিকে তাকায়।
-“আমিও তোমার মতো, সেইম।”

হা হা, মজার ডায়লগ ...

লেখা ভালৈছে, চালায়ে যাও দোস্ত ...

২ ...

এই লেখাটা মনে হয় ফ্রন্ট পেজে নাই, মডুরা কি একটু দেখবেন ক্যামনে কি? চিন্তিত

................................................................................
objects in the rear view mirror may appear closer than they are ...

পথে হারানো মেয়ে এর ছবি

মজা পাইছি!

স্বপ্নাহত এর ছবি

তাই তো কই, নায়ক নায়িকা কেমুন চেনা চেনা লাগে দেঁতো হাসি

লাইঠেল ভাই, সচলে বিশাল স্বাগতম। লাঠি ঘুরান সদর্পে। আল্লাহু আকবার!!

লেখা ব্যাপকস হইসে। কিন্তু প্রথম পেজে নাই ক্যান, ক্যামনে কি? চিন্তিত

---------------------------------

বিষণ্ণতা, তোমার হাতটা একটু ধরি?

---------------------------------

বাঁইচ্যা আছি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।