বৃষ্টি এবং ফুটবল এর গল্প

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বিষ্যুদ, ০৯/১০/২০০৮ - ৬:১১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কাল্ কে রাত এ অফিস এর কিছু প্রগ্রামিং নিয়ে কাজ করছিলাম। কাজ করতে করতে কখন যে রাত পার হয়ে ভোর হয়ে গেছে টের পাই নাই। হঠাৎ তাকিয়ে দেখি ভোরের আলো এবং বৃষ্টি। বৃষ্টি দেখেই মনে পরে গেলো কলেজ এর সকাল এর কথা । প্রতিদিন পিটি এর সময় চিন্তা করতাম বৃষ্টি নামে না কেনো? ইস , একটু বৃষ্টি নামলেই ত সবাই দোয়া করতাম আরেকটু জোরে নামতো যদি। আর পিটি তে যাবার পর যদি বৃষ্টি নামতো, সেদিন তো ঈদ এর মতো মনে হতো। কারন হাউসে এসে ১০-১৫মিনিটের ঘুমটা কি যে ভালো লাগতো।

বৃষ্টি এর সাথে ফুটবল এর ১টা অদ্ভুত সম্পক আছে। তাই বৃষ্টি এর সাথে ফুটবল এর কথা না বললেই না।

আমরা তখন ক্লাস টুয়েলভ এ।আইসিসিএফএম খেলতে গেলাম ১৯৯৯ এ রংপুর এ। (সাইফ আল দিন তুই যে কেনো যাস নাই আমি এখনও চিন্তা করি) আমরা ছিলাম আগের বারের চ্যাম্পিয়ন। তাই আমাদের সাথে প্রথম খেলা সাগতিক রংপুর এর। আগের মাঠ দেখেই টাসকি খেলাম। এতো বড় কেনো মাঠ। ওটা তো প্রায় ২টা ফুটবল মাঠ এর কাছাকাছি। পরে শুনলাম রংপুর ইচ্ছে করেই করেছে এই কাজ এবং ওরা প্রায় ৩ মাস প্র্যাক টিস করেছে ওই মাঠে। (ভাই, রংপুরের কেউ মাইন্ড কইরেন না, আমাদের দোস্তরাই বলছিলো )। যাই হোক, আমরা ১ দিন প্যাক টিস করলাম ওই মাঠে। খেলার আগের দিন সারাদিন, সারারাত বৃষ্টি। সেকি বৃষ্টি। ভালই হ্ল, হাউসে ৮ কলেজ কঠিন আড্ডা দিলাম। (পাবনা কেনো যেনো নিজেরা নিজেরা থাকতো। ) তো ম্যাচ এর দিন আমরা নতুন ড্রেস, বুট , গ্লাভস ইত্যাদি পড়ে মাঠে গেলাম। গিয়ে দেখি, বৃষ্টি বাবাজি তখনো চলছে। আমি গিয়ে পোষ্টে দাড়ালাম। আমার বুট পুরোটাই পানির নিচে। যাই হোক খেলা শুরু করলাম। ভালই চলছিলো। ১০ মিনিটে আমরা গোলও পেয়ে গেলাম। ইতিমধ্যে আমি প্রচুর গালি পাচ্ছি বিনামূল্যে। কারন আমি গোলকিপার। আর আমার পোষ্ট এর পিছনে সাগতিক দশক। বুজতেই পারছেন। অনেক ধরনের গালি শিখলাম ওইদিন। কিছুখন পর ১টা শ ট ধরতে গিয়ে আমি দেখি পানিতে সাতার দিয়ে ডি বক্স এর অনেক বাইরে আর রংপুরের ১ জন ডাইভ দিয়ে বল সহ পোষ্টের ভিতর। ওই ম্যাচ আমরা হেরেছিলাম ৪-২ গোল এ।

ক লেজ থেকে বের হয়ে ভারসিটি তে আসলাম। যেহেতু বেসরকারি, তাই খেলাধূলার তেমন সুযোগ নাই। তো ১ বছর পর হঠাৎ আসলো Inter Private University Football Tournament, খুশি লাগলো আবার খেলতে পারবো। যথারিতি আমি আবার কীপার। তো কোয়াটার ফাইনাল এ খেলা ইবাইস ভারসিটি এর সাথে। যথারীতি বৃষ্টি তে। ওদের টীম এ আবার জাতীয় দলের ৭-৮ জন প্লেয়ার। আমিনুল, জনি, আরমান আরো কে কে জেনো।তারা নাকি এম বি এ করছে। যদিও আমরা জানি খেলার জন্য ই ওদের আনা হয়েছে। আর আমাদের দল এ আমরা ২-৩ জন ছাড়া সবাই ফারমের মুরগি। (ঃ)) সবাই বুজতেই পারছেন ওদের সাথে খেলতে গিয়ে আমাদের কি অবস্তা হতে পারে। তাও আমরা খারাপ খেল্লাম না। ৩-১ এ হারলাম। আর আমি ১টি পেনাল্টি আটকিয়ে বাফুফে থেকে man of the match পেয়েছিলাম (নিজের ঢোল নিজে পিটাও)।ওই বছর আমরা ফেয়ার প্লে ট্রফি ও পেলাম।

তার পর শুরু করলাম অফিস লাইফ। এখানে প্রতি বছ্ র ফুটবল হয়। তো ২০০৭ এ গিয়েছিলাম নারায়নগঞ্জ প্রীতি ম্যাচ খেলতে। গ্রামীন ফোন বনাম নারায়নগঞ্জ ক্লাব। গিয়ে দেখি অইদিন এর এমন অনেক প্লেয়ার আছে যারা বাংলাদেশ এ অনেক নামী দামী। যেমন চুন্নু, জাকির, আসলাম। আবারো সেই বৃষ্টি। বৃষ্টি এর কারনেই অইদিন আমরা সম্মান নিয়ে আস তে পেরেছিলাম। বৃষ্টির জন্য তারা বেশি ভালো খেলতে পারলোনা। ৩-১ এ হারলাম।

তাই আমার হারগুলার সাথে বৃষ্টির ১ টা অদ্ভুত সম্পক আছে।জিতেছি অনেক। ওগুলা নাহয় আরেকদিন বলব পরে।

রবিন৭৫৭
(যেহেতু active হয় নাই, তাই নাম,মেইল দিলাম)


মন্তব্য

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

পুর্বে প্রকাশিত

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- আরও লিখুন রবিন ভাই। নতুন নতুন লেখা লিখুন।
আপনি লেখেন ভালো, আমাদের মতো আম-জাম পাঠকদের ঠকাবেন কেনো? হাসি
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

যাক... এখানে একজন খেলোয়ার পাওয়া গেলো...

ঁ মুর্শেদ ভাই... এত খবর রাখেন কেম্নে কন তো?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

রণদীপম বসু এর ছবি

বৃষ্টি এবং ফুটবলের গল্পের সাথে একজন খেলোয়ার তো পেলামই। সাথে একজন দুর্দান্ত রেফারীও পেলাম, যিনি পেনাল্টির বাঁশিটা ঠিকই বাজিয়ে দেন। তিনি এস এম মাহবুব মুর্শেদ !

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

বৃষ্টির দিনে আসল বল ঘরে রাইখ্যা জাম্বুরা দিয়া ফুটবল খেলতাম। দারুণ মজার খেলা! দেঁতো হাসি
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।