আমি, কবি আর সেলিম

নিবিড় এর ছবি
লিখেছেন নিবিড় (তারিখ: সোম, ১৩/১০/২০০৮ - ৪:৫৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমি, কবি আর সেলিম

আমি, কবি রিফাত আর সেলিম এই তিন বান্দা, অদ্ভূত আমাদের এই ছোট দল। সারা দিন যেখানে থাকি না কেন সন্ধার সময় টিএসসি এর সামনে গোল চত্বর এ আমরা আসবই।পরিচিত সবাই অবাক হয় আর ভাবে আই তিন আলাদা চরিেএর লো্ক কিভাবে এক হলো। আলদা হলেও আমাদের একটা জিনিস এ বড় মিল, আমরা সবাই প্রেম সন্ধানি। আমি- যার ভাবনা হল সত্য প্রেম একবারি আসে, কবি- ঘনঘন প্রেমে পরা যার স্বভাব। আর মহামতি সেলিম- বাইরে যে প্রেম বিদ্বেষী অন্তরে প্রেম পিয়াসি। সেই মহান প্রেম এর জন্য রোকেয়া হল এর কোনায় আমাদের চিরচেনা আড্ডা ।

তবে আমদের জীবনে প্রেম আসে কিন্তু রোকেয়া হল ত্থেকে না বরং ডিপারর্টমেন্ট থেকে, আর আশ্চার্যজনক হল আমরা তিন জনই পরলাম সেই প্রেমে । যে সে না ডিপারর্টমেন্ট এর সেরা সুন্দরী রিমি আপুর প্রেমে । ক্লাসের বাইরে তাকে দেখে হিন্দি সিনেমার মত মনে হয় সময় থমকে দাড়াল আর থমকে দাড়ালাম আমরা তিন জন, ব্যাকগ্রাউন্ডে বেজে উঠল মিউজিক । খুব সম্ভবত আমরা তিন জন এক সাথেই ঠিক করলাম এর সাথেই প্রেম করবো কিন্তু আফসোস আমরাতো আর পঞ্ছ পান্ডব না আর রিমি আপু ও তো আর দৌপদ্রী না যে তিন জন এক সাথে প্রেম করব। সুতারাং আমরা সবাই যে যার মত চেষ্টা শুরু করলাম। হাস্যকর সে চেষ্টা, কিন্তু প্রাণান্তকর তার শ্রম। জীবনে যে আমারা কোনদিন ক্লাস এর কোন মেয়ের সাথে কথা বলার সাহস করতে পারিনি তারা কিনা সিনিওর আপুর সাথে কথা বলার জন্য হয়ে উঠলাম মরিয়া। আপু ভাল ছাঐী তাই আমি নোট নেওয়ার উছিলায় তার সাথে খাতির করে ফেললাম। কবি লিখে ফেললো অমর কবিতাf....হ্নৃদয়ে জাগাতে চাই বেদনা............আর সেলিম বলে মেয়ে জাতি আসলে খারাপ না এই যেমন ধর রিমি আপু, আর আমরা বলি মামা এতোদিনে লাইনে আসছ।

আস্তে আস্তে এভাবে কিভাবে যেন আপুর সাথে আমাদের খাতির বাড়তে থাকে, আমি বলি পড়াশুনার কথা, কবি শুনায় কবিতা আর সেলিম শুধুই গল্প। রাতে আপু কে মোবাইলে কল করে না পেলে বাকি দুই টার মোবাইলে কল দিয়ে দেখি ব্যস্ত নাকি। তিন জনের মধ্যে ভয় বাকি দুই জন না সফল হয়ে যায়। আমি রাতে মধুর সপ্ন দেখি- দুর কোন পাহাড়ে আমি আর রিমি সাথে পাহাড়ী নিরবতা আর আমাদের না বলা হাজার কথা । যে কবি জীবনে কোন কবিতা ছাপাতে পারেনি তার প্রেমের কবিতা শুনে লিটল ম্যাগ সম্পাদক হাসান ভাই পর্যন্ত বলে সাধু সাধু , তোমাকে দিয়েই হবে । সারা জীবন কাপড় এর দিকে খেয়াল না করা সেলিম নতুন নতুন চুল এর স্টাইল আমদানি করে । আপু যখন তার ক্লাসমেট দের সাথে কথা বলে আমরা কড়া চোখে তাকাই। কিন্তু এতকিছুর পরও আমদের প্রেম জমে না।

কিন্তু ঝামেলা দেখা দেয় অন্য দিক থেকে, আস্তে আস্তে আমাদের ক্লাসের এক জন দুই জন করে সবাই জানতে থাকে আমাদের এই প্রেমো চেষ্টার কথা। শেষ পর্যন্ত জানতে থাকে সিনিওরাও। কিন্তু এই সব চোখে পরে না শুধু আমদের এই তিন মজনুর। রিমি আপুও হয়ত এই কথা শুনে থাকবে বা আমাদের আচরণে কিছু আন্দাজ করে থাকবে, উনি আমদের এড়িয়ে যেতে থাকেন। আর হতাশ এই তিন মজনু‘র প্রত্যেকে এসবে বাকি দুই মজনুর হাত দেখতে পায়। হতাশা থেকে আমাদের মধ্যে দেখা দেয় দূ্রত্ব। হায়রে প্রেম এ শুধু মানুষ কে কাছে আনে না বন্ধুদের দূ্রেও সরিয়ে দেয়।

এর মাঝে রিমি আপু এক দিন আমদের তিন জন কে ডাকে । আমরা সবাই নিজের নিজের চান্স এর কথা ভেবে খুশি হয়ে উঠি। কিন্তু বাছা তুমি ভাব এক আর হয় আরেক। সিনেমার দুই নাম্বার নায়কের মত আপু আমাদের বলে দেখ- তোমরা আমার ছোট ভাই এর মত। আমি জানি তো্মরা কি ভাবছো। এসব ভুলে যাও, দেখো আরো কোন সুন্দরী মেয়ে তোমাদের জীবনে আসবে। এসব শুনে আমি নিচে তাকিয়ে থাকি, সেলিম নখ কামড়ায় আর কবি দূ্র আকাশে তাকিয়ে থাকে।

তারপর? তারপর আর কি? আমরা তিন জন আবার বসে থাকি রোকেয়া হলের কোণায়। আমি বলি প্রেম বড় কঠিন , কবি বলে দেখ ঐ মেয়েটা মনে হয় আমার দিকে তাকালো। আর সেলিম ?......... ঔ বলে নারী মাএই ছলনাময়ী ।

নিবিড়


মন্তব্য

সবজান্তা এর ছবি

এসব ভুলে যাও, দেখো আরো কোন সুন্দরী মেয়ে তোমাদের জীবনে আসবে।

এ দেখা যাচ্ছে এক চিরকালীন ডায়লগ !


অলমিতি বিস্তারেণ

অতিথি লেখক এর ছবি

হুম...... এইটা খালি চিরকালীন ডায়লগ না চিরকালীন আফসোস এরও অপর নাম ।
নিবিড়

শেখ জলিল এর ছবি

সাবলীল বর্ণনা ভালো লাগলো।

যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ জলিল ভাই ।
নিবিড়

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।