প্রাথমিক শিক্ষা যদি দেশের বুনিয়াদ গড়ে তোলে তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা সেই বুনিয়াদের উপর মাল্টি স্টোরিড বিল্ডিং গড়ে তুলবে। যে কোন দেশের ইউনিভার্সিটিগুলোই যে সে দেশের ভাগ্য বদলিয়ে দিতে পারে তাতো একটু লক্ষ্য করলেই বোঝা যাবে। সাম্প্রতিক পৃথিবী সেরা ৫০টি ইউনিভার্সিটির দিকে তাকালেই দেখা যাবে সেগুলো মাত্র দুই-তিনটা দেশের দখলে এবং সেই দুই-তিনটা দেশই সারা পৃথিবীর উপর ছড়ি ঘোরাচ্ছে। আমাদের পার্শ্ববর্তি দেশ ভারতে যে ডাইনামিক রুপ এখন দেখা যাচ্ছে তাতে আইআইটি বা আইআইএম এর মত আন্তর্জাতিক মানের ইনিস্টিটিউটগুলোর অবদানই সবচেয়ে বেশি। তাদের নিরবিচ্ছিন্ন গনতন্ত্র এ ব্যাপারে অবশ্যই প্রণোদনা যুগিয়েছে। যাইহোক, তাহলে এ কথা আমরা নির্দ্বিধায় বলতে পারি আমাদের দেশেও যদি আন্তর্জাতিক মানের ৩-৪টা বিশ্ববিদ্যালয় থাকত তাহলে আমাদের বর্তমান অবস্থা নিশ্চিতই এত নাজুক হত না। কিন্তু খুবই আফসোসের কথা পৃথিবী সেরা ৫০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে আমাদের দেশের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ও নেই। সরকারকে ঠিক এখানেই হাত দিতে হবে। কি করলে আগামী অন্তত এক যুগের ভিতর বাংলাদেশের ৪-৫টি ইউনিভার্সিটিকে আন্তর্জাতিক মানে নিয়ে আসা যায় সেই লক্ষ্যে চিন্তা ভাবনা এবং কাজ শুরু করে দিতে হবে।
আমার মনে হয় ৪-৫টি ইউনিভার্সিটিকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের বাকি ইউনিভার্সিটগুলোকে ( সরকারি এবং বেসরকারি) একটি মনিটরিং বৃত্তে নিয়ে আসতে হবে যাতে সেই ৪-৫টি ইউনিভার্সিটি আন্তর্জাতিক উচ্চ মান অর্জনের পাশাপাশি বাকিগুলোও একটি সুনির্দিষ্ট মান বজায় রাখতে পারে। সেই ৪-৫টি ইউনিভার্সিটিগুলোতে ভর্তি প্রক্রিয়া খুবই কঠিন করে ফেলতে হবে যাতে বাংলাদেশের সবচেয়ে মেধাবী ছেলে-মেয়েরা সেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়ার সুয়াওগ পায়।
আর বাংলাদেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর রাজনীতির দিকে এবং বেসরকারি বিশেবিদ্যালয়গুলোর ব্যবসার দিকে যয়খানি ঝোঁক ঠিক ততখানিই অমনযোগ গবেষণার দিকে। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে এবং সেই গবেষণাগুলো হতে হবে দেশজ সমস্যার সমাধান নিয়ে, যে সন্স্যাগুলোর সাথে দেশের মানুষের কোন যোগই নেই সেইসব বিষয়ে গবেষণা করার চিন্তা-ভাবনা আপাতত বাদ দিতে হবে। গবেষণার জন্য যা অর্থ লাগবে তা দিবে সরকার এবং কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান মিলে। কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো চাইলেই বিভিন্ন ইউনিভার্সিটির বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের সাথে যৌথ উদ্যোগে নানা গবেষণা চালাতে পারে। অবশ্য এজন্য দরকার সরকারি উদ্যোগ এবং নীতিমালা।
শিক্ষার্থীরা যাতে নোট মুখস্ত করার প্রবণতা থেকে বেরিয়ে এসে সৃজনশীল উত্তরপত্র তৈরীতে মনযোগ দেয় সেজন্য ব্যাপক প্রচারণা এবং পরীক্ষা পদ্ধতির পরিবর্তন করতে হবে। আর একটা ব্যাপার, ইউনিভার্সিটির ছাত্রদের ভিতর বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে হবে। এই প্রতিযোগিতার মনভাব ছাত্রদের ভতর চারিয়ে গেলে তার ফল শুভ হতে বাধ্য। মোটকথা শুভচিন্তাগুলোকে একসাথে জড়ো করে তাদের বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিলেই দেশের ইউনিভার্সিটিরগুলোর চেহারা পাল্টে যাবে।
(মহসীন রেজা)
মন্তব্য
খুবই আইডিয়ালিস্টিক বক্তব্য। আমিও অনেকটা আপনার মতই ভাবি। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। পরিবর্তন রাতারাতি আসেনা, আসবেওনা। শিক্ষাক্ষেত্রে পরিবর্তন আনতে জাতীয় ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনতে হবে। তারও আগে নেতানেত্রীদের মধ্যে পরিবর্তন আনতে হবে। সর্বাগ্রে আমাদের সবারই দায়িত্ব সচেতন হতে হবে। এতগুলো ধাপ পেরোতে সময় লাগবে।
আপনি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান আর বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর একসাথে কাজের কথা বলেছে। খুবই ভালো কথা, কিন্তু আমার বেশ হাসি পাচ্ছে (আপনার জন্য নয় কিন্তু)। একটা ছোট্ট উদাহরণ দেই--
টিভির বিজ্ঞাপনের দিকে খেয়াল করুন। দেখুন বড় বড় কর্পোরেশন (যেমন ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি) তাদের বিজ্ঞাপনগুলোও বিদেশ থেকে কিনে আনে। নিজেরাই দেশে বিজ্ঞাপন তৈরিতে যারা উৎসাহী হয়না তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে জয়েন্টলি গবেষণায় অর্থ সংস্থান করবে তা আমার কাছে কোনভাবেই বোধগম্য হচ্ছেনা।
প্রিয় মহসীন রেজা
কিছু কথার সাথে একটু ভিন্নমত পোষণ করছি।
১. ভিন্ন রাষ্ট্রের উপর ছড়ি ঘুরানো একটা ভাল রাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে হতে পারে না। ব্রিটিশরা যে সময়ে সারা পৃথিবী জুড়ে সাম্রাজ্য বিস্তার করেছিল তখন তাদের ক'টা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল নামকরা? বর্তমানের হিসাবে গবেষণা ক্ষেত্রে সব পশ্চিমা/সাদাদের দেশের তুলনায় কয়েকগুণ গবেষণাপত্র বের হয় এক চীন থেকে। আন্তর্জাতিক খ্যাতনামা জার্নালগুলোত যেসব প্রবন্ধ প্রকাশ হয় তার সিংহভাগ চাইনিজ লেখকদের (চীন দেশে থেকে অথবা তার বাইরে থেকেও।) আমার টেলিকমনিকেশনের ফিল্ডে চাইনিজ নাম নেই এমন পেপার খুব কম দেখেছি।
চীনের কয়টা বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক মানের? সংশ্লিষ্ট অনেকেই যেটা বিস্ময়ে লক্ষ্য করছে তা হলো ভৌত বিজ্ঞানে মৌলিক গবেষণায় এখন যা কাজ হচ্ছে তা রাশিয়ান গবেষকরা বিশ বছর আগে করে রেখেছে! গণিত আর পরিসংখ্যানের বেলায় যে একথাটা কতটা সত্যি তা সংশ্লিষ্ট যে কেউ বলতে পারবেন। ফলাফলগুলো তারা শ্রেফ রাশিয়ান ভাষাতেই রেখেছে, ইংরেজিতে প্রকাশ করার কোন তোয়াক্কা করেনি। রাশান কটা বিশ্ববিদ্যালয় নামকরা?
বাংলাদেশের প্রধান সমস্যা হচ্ছে জনসংখ্যা এবং তার সাথে সংশ্লিষ্ট দারিদ্র্য। এর সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের মান-উন্নয়নকে কীভাবে সম্পর্কযুক্ত করবেন আপনি? শিক্ষা মৌলিক অধিকার বলে যে কথাটা প্রায়ই শোনানো হয় তাতে কোন স্তরের শিক্ষা বোঝানো হয়? দরিদ্র মানুষের ছেলে-মেয়েরা প্রাথমিক স্কুলেই যেতে পারে না, বিশ্ববিদ্যালয়ে কেমনে করে যাবে?
২. দ্বিতীয় চিন্তাটা ভয়াবহ। গবেষণায় যদি স্বাধীনতা না থাকে কী বেরোবে? মেডিকেল কলেজগুলোকে নিয়েই জান বাঁচেনা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর। ভর্তি প্রক্রিয়া কঠিন করলে কি নিশ্চিত করা যায় সবচে মেধাবীরা তাতে টিকবে? পৃথিবীর নামকরা কটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিপরীক্ষা নামক প্রক্রিয়াটা আছে বলুন দেখি!
আপনি যে গবেষণার কথা গুরুত্ব দিয়ে বলেছেন, সেটা করার জন্য অসম্ভব মেধাবী লোকজনের দরকার নেই। জনসংখ্যা সমস্যার পর আমাদের সমস্যা হলো প্রশাসন/ম্যানেজম্যান্টে। বিদেশী সংস্থা যারা আমাদের আর্থিক অনুদান/ঋণ দেয় তারাও এটা বলে। এই সমস্যার সমাধানের জন্য কী আমাদের গবেষণার প্রয়োজন আছে?
৩. বিশ্ববিদ্যালয়ে কী কী পরিবর্তন আনতে হবে তা নির্ভর করে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কী চাই? জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাতার তলে হাজার-হাজার ছেলে-মেয়ে ব্যাচেলর পাস করে এখন (যেটাকে সোজা কথায় বিএ/বিএসসি পাশ বলে)। এতে কী হয়েছে ফলাফল? বেকারত্বের হার কি বিশেষ কমে গেছে?
তার চেয়ে ভেটেরনারি কলেজ, ভোকেশনাল ইন্সটিটিউট গুলো কিন্তু ভাল অবদান রেখেছে।
১। আমি মনে করি না ব্রিটিশরা শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের জোরে ছড়ি ঘুরিয়েছে। তবে ইউরোপিয়ানদের গত ৪০০/৫০০ বছরের দাপটের পেছনে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা অবশ্যই ছিল (অক্সফোর্ড, কেম্ব্রিজ, গটিঙ্গেন ...)। তার আগে ভারতীয় উপমহাদেশের ছিল নালন্দা, বিক্রমশীলা ইত্যাদি। রাশিয়া, চীন ২ দেশেরই অনেক ভাল ভাল বিশ্ববিদ্যালয় আছে।
২। নর্থ আমেরিকাতে ভর্তি পরীক্ষা আছে। সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতেই স্যাট বা এসিটি দিতে হয়।
গবেষণার স্বাধীনতার ব্যাপারে সহমত।
৩। সহমত
স্যাট/ জিআরই এসব কিন্তু ইউনি-স্পেসিফিক এডমিশন টেস্ট নয় যার কথা এখানে বলা হচ্ছে।
প্রফাইল
....................................................................................................................
এভাবেই স্থবির ঘর একদিন উড়ে যাবে
উড়ে উড়ে যাবে
ভাল ভাল কথা ... তবে আমার কাছে ডিম আগে না মুরগী আগে - এরকম অনুভুতি হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয় উন্নত হলে দেশ উন্নত হবে, নাকি দেশের সম্পদ উন্নয়ন হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতি হবে?
প্রাচ্যের অক্সফোর্ড হিসেবে যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিচিত ছিল, তখনকার গ্রাজুয়েটরাইতো এখন দেশের প্রবীণ নেতা/ব্যবসায়ী। এটাতে কী প্রমাণ হয়? অবশ্য এখনকার পতিত বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েটরা যখন ঐ পর্যায়ে আসবে তখনকার অবস্থার সাথে তুলনা করতে পারলে বেশি ভাল হত।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
বিষয়টি নিয়ে আলমগীরের সাথে একমত। শুধু আর কয়েকটি কথা যোগ করতে চাই। গত দুই শতাব্দি যে দেশগুলো সারা পৃথিবীর ওপর ছড়ি ঘুরিয়েছে তারা তা করতে পেরেছে তাদের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, আদর্শিক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে।
সেসব দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার উচ্চ মানের কারণে সে দেশগুলোর অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, আদর্শিক দৃষ্টিভঙ্গি পরাক্রমশালী হয়েছে এমনটি বলা হয়তো ঠিক হবে না। তবে একথা বলা যায় যে, যে কোন দেশের শিক্ষার প্রয়োজন নির্ধারিত হয় সে দেশের চাহিদা অনুযায়ী। কর্পোরেট চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষার নীতি, গতি-প্রকৃতি নির্ধারিত হওয়া নতুন কিছু নয়। সাম্রাজ্যবাদী সম্প্রসারণের সাথে শিক্ষা-গবেষণার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল আর আজও আছে।
আমাদের দেশে সেরকম চাহিদা সেভাবে তৈরি হয়নি বলে আমাদের শিক্ষার অবস্থান এরকম।
ভারত আজ দক্ষিন এশিয়ায় পরাক্রমশালী শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে যাচ্ছে বলেই তাদের শিক্ষা-গবেষণা এগিয়ে যাচ্ছে। যেদিন আমাদের শক্তি আর রাজনৈতিক চাহিদা সে পর্যায়ে যাবে সেদিন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষাও সেভাবেই বিন্যস্ত হবে।
দ্বিমত।
প্রথমত, বিশ্ববিদ্যালয় প্রাথমিক শিক্ষার ওপর স্কাইক্র্যাপার করলে তা অনিবার্যভাবেই ধ্বসে পড়বে। মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ই আসলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাগ্রহণের প্রস্তুতিপর্ব। কিন্তু ওখানে একটা ভালরকম ওলটপালট না হলে 'চোথা' মুখস্থ করার স্বভাব কোনদিনই যাবে না।
দ্বিতীয়ত, উল্টোটাও সত্য। একটা দেশ তার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিতে পারে। ভিসি, ডিন, শিক্ষক সমিতি, সিনেট, সিন্ডিকেট, প্রমোশন সবজায়গায় শুধু একমাত্র মানদণ্ড করুন আন্তর্জাতিক জার্নালে পাবলিকেশন। সব টাইট হবে। রাজনীতি ভাতে মরবে। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অন্তত দশটি আন্তর্জাতিক মানের হয়ে যাবে কয়েক বছরের মধ্যেই, একথা বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি।
তৃতীয়ত. দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক মানের হলেই বা ক্ষতি কি? দরকার শুধু স্ট্রাটেজি বদল। খরচাপাতি খুব একটা বাড়বে না।
চতুর্থত, উদাহরণ হিসেবে ঢাবি'র একটি বিভাগের কথা বলা যায় যেখানে শিক্ষকেরা এমআইটি, হার্ভার্ড, কর্নেল এসব থেকে ডিগ্রি নিয়েছেন। শিক্ষার্থীরাও তুখোড়। সবাই আন্তর্জাতিক মানের। সমস্যা হল ভাল গবেষণা নেই ভাল জার্নাল নেই।
শেষত, এমআইটি, হার্ভার্ডের মত একদুইনম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ভর্তিপরীক্ষা লাগে না তাই ওটি আরো বেশি কড়াকড়ির আমি পক্ষপাতি নই। দেশের সবচাইতে মেধাবি শিক্ষার্থীরাই এখনো অন্তত পাব্লিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। হালে প্রাইভেট থেকে পাশ করাদের মধ্যে থেকেও কিছু কিছু কেরামতি দেখা যাচ্ছে।
প্রফাইল
....................................................................................................................
এভাবেই স্থবির ঘর একদিন উড়ে যাবে
উড়ে উড়ে যাবে
১) ভর্তি পরীক্ষা কঠিন করে খুব একটা লাভ হবে বলে মনে হয় না.. আমাদের প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বাস্তবমুখী নয়। বাইরে পড়তে এসে অনেক গ্র্যাজুয়েট লেভেল এর শিক্ষার্থীই প্রথমে হাবুডুবু খায় লিটারেচার রিভিউ আর সাইটেশন নিয়ে। আরেক বিশাল ধাক্কা হল "চোথা"র অপ্রতুলতা। যেখানে নিচের স্তর এমন "ইনকমপিটেন্ট", সেখানে কঠোর ভর্তি পরীক্ষা কেবল আরো কিছু প্রাইভেট কোচিং সেন্টারের জন্ম দেবে। আমাদের প্রথমে কোচিং কালচার থেকে বের হয়ে আসতে হবে। শিক্ষাগ্রহন প্রাথমিকভাবে হবে শিক্ষকদের কাছ থেকে, বুয়েট এর ছাত্রদের কাছ থেকে নয়, এবং তা হবে ক্লাশেই- বাসায় নয়। বর্তমান অবস্থায় ঢাকার সব নামকরা ও প্রথম শ্রেনীর স্কুল তুলে দিলেও সেখানকার ছাত্র/ছাত্রীদের খুব অসুবিধা হবে বলে মনে হয় না.. বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই অবস্থাসম্পন্ন পরিবারের ও তাদের একাধিক প্রাইভেট টিউটর.... ফলে ব্যাপক ব্যাবধান সৃষ্টি হয় অন্যদের সাথে। এই অবস্থার পরিবর্তন করতে হবে। ব্যবহারিক কে প্রহসন হিসেবে না নিয়ে বাস্তবায়িত করতে হবে। ইংরেজী শিক্ষার নামে এখন যে "কমিউনিকেটিভ ইংলিশ" নাম্নী খোঁড়াকরণ প্রক্রিয়া চলছে তা পাল্টাতে হবে। শিক্ষা ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে হবে যেন শিক্ষার্থীরা চিন্তা করতে শেখে।
২) গবেষনা করতে পাত্তি লাগে। বিশ্বের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে ফান্ডিং আসে কোম্পানী থেকে.. আমাদের দেশে তেমন কোম্পানী কই? আমাদের পয়সা বেশি হইলে আমরা তাজমহলের নকল বানাই... যেইখানে ল্যাবরেটরিতে নাই অ্যাপারেটাস। সমাধান?
০ দেশে লাভজনক শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়তে হবে, এবং দুর্নীতিমুক্ত রেখে তাকে চালু রাখতে হবে যেন ভবিষ্যতে তারা বিনিয়োগ করতে পারে দেশের ইউনিভার্সিটিতে।
০ বেসরকারী প্রতিষ্ঠান থেকে বাধ্যতামূলক ভাবে ফান্ডিং এর ব্যবস্থা করা যেতে পারে সংশ্লিষ্ট গবেষণায়।
০ বিদেশ থেকে দেশীয় যোগ্য ও উচ্চ শিক্ষাপ্রাপ্তদের দেশে ফিরিয়ে এনে উপযুক্ত সম্মানীতে গবেষনার সুযোগ করে দেওয়া যেতে পারে তাহলে যেন আমাদের সম্পদ বাধ্য হয়ে বিদেশে না দিতে হয়।
০ সংশ্লিষ্ট কোম্পানীতে ইন্টার্নশিপের সুযোগ রেখে শিক্ষার্থীদের বাস্তব জ্ঞান বৃদ্ধি করতে হবে।
আপাতত এই মাথায় আসছে...
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...
নতুন মন্তব্য করুন