পরীক্ষা পেছানোর আন্দোলন

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: মঙ্গল, ০৬/০১/২০০৯ - ১২:০৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

খবরটা জেনে মনে হল পোষ্ট এ দেই। জানিনা মডারেটরদের সীমানা পেরিয়ে নীড়ে পৌছাবে কিনা। কোটা আর সান্ধ্যকালীন ক্লাস এর ব্যপারে ছাত্রদের দাবীগুলো ভিসি মেনে নিয়েছেন। এগুলো আপাতত স্থগিত। তারপরও আজ রাতে পরীক্ষা পেছানোর মিছিল হয়েছে। যারা মিছিল করেছে, তাদের দাবী যে কি ছিল তা অনেক চেষ্টা করেও জানতে পারিনি। পড়া হয়নি তাই পরীক্ষা পেছাও। এই হয়ত দাবী।

ইসস, পরীক্ষা পেছানোর এই ব্যপারটা যদি বুয়েটে না থাকতো! মাঝে মাঝে মনে হয় কি হবে এত পড়ে। বুয়েটের ইতিহাসে আজ পর্যন্ত যেখানে একটা মিছিলও ব্যর্থ(!) হয়নি, তাতে মিছেমিছি অন্য কিছু চিন্তা করে কী লাভ!

কি করতে পারি আমরা?

পল্টু


মন্তব্য

সবজান্তা এর ছবি

পরীক্ষা পেছানো নিঃসন্দেহে নিন্দনীয় কাজ। তবে এর পেছনে শুধু মাত্র ছাত্রদের দায়ী করাটা বোধ করি সমীচিন হবে না।

ভবিষ্যতে প্রয়োজন হলে, বিশদ আলোচনা পোস্ট দেওয়া যেতে পারে।


অলমিতি বিস্তারেণ

yokel এর ছবি

আমার পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতায় বলতে পারি, এর জন্য মোটামুটি এককভাবে ছাত্ররাই দায়ী, বিশেষত তথাকথিত লেজুড় রাজনৈতিক দলগুলোর খুব অল্পসংখ্যক ছাত্র নামের নরাধমই এসবের পেছনে মুল ভূমিকা পালন করে। গত দুই বছর এসব ফালতু ছেলেপেলেদের দৌরাত্ব কম ছিল বলেই খোঁজ নিয়ে দেখেন "গত দুই বছর বুয়েটে কোন টার্ম ফাইনাল পরীক্ষাই পেছানো হয়নি, সব পরীক্ষাই নির্ধারিত সময়ে হয়েছে"। যেইমাত্রই নির্বাচন আসন্ন হয়েছে, এদের ততপরতাও বেড়েছে; যার ফলাফল দুই বছর পর এবারের টার্মফাইনাল নিয়ে আবারো এসব টালবাহানা। লেজুড় দলগুলোর বাইরেও যেসব ছাত্র সংগঠনগুলো বুয়েটের বেতন ভাতা দুই টাকা বাড়ালেও বুয়েটের গেইট আটকে দেয় তাদেরকেও কোনদিন পরীক্ষা পেছানোর আন্দোলনের বিরুদ্ধে কোনদিন অবস্থান নিতে দেখিনি। আপনি বুয়েটের ছাত্ররা ছাড়া আর কাদেরকে এসবের জন্য দায়ী করবেন স্পষ্ট বুঝলাম না।

সবজান্তা এর ছবি

প্রিয় Yokel,

বিগত দুই বছরের অভিজ্ঞতার কথা খোঁজ নিয়ে বলতে হবে না কারণ আমি নিজেই শেষ সেমিস্টারের ছাত্র, মোটামুটি পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা আমারও আছে।

পরীক্ষা পেছানোর কথা উঠলেই প্রতিবার আমার মাথায় যে প্রশ্নটা আঘাত করে সে'টা হচ্ছে, বুয়েটের মত প্রথম সারির একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা ভর্তি হয়েছে তাদের মোটামুটি সবাই-ই স্কুল-কলেজে নির্ঝঞ্ঝাট বারোটি বছর কাটিয়ে এসেছে সুনামের সাথে, ভালো ফলাফল করে। তাহলে হঠাৎ বুয়েটে ঠিক কী হতে পারে যে এরা পরীক্ষা বিমুখ হয়ে গেল ?

সবার আগেই বলতে হয় বুয়েটের টার্ম ফাইনাল পরীক্ষার গুরুত্বের কথা। শতকরা ৭০ শতাংশ নম্বর বহনকারী এই পরীক্ষাই কিন্তু আসল পরীক্ষা। আমার শিক্ষা জীবনে এমনও হয়েছে ক্লাস টেস্টে ষাটের মধ্যে ঊনষাট পেয়েও, টার্ম ফাইনাল পরীক্ষার আগে সামান্য অসুস্থতার দরুন সেই বিষয়ে এ মাইনাস পেয়েছি। এখন আপনি বলুন, সারা টার্ম পড়াশোনার দামটা কোথায় থাকলো ? সাধারণ নন-পলিটিক্যাল ছাত্রদের মধ্যে অধিকাংশ যারা পরীক্ষা পেছানো সমর্থন করে, তাঁরা শুধু টার্ম ফাইনালের সেই বিভীষিকাময় প্রশ্নের জন্য 'যথেষ্ট' প্রস্তুতি হয় নি, এই আশংকায় পিছানোর প্রস্তাবে রাজি হয়।

এতো গেল, মামুলি একটা কারণ। আপনি কি বলতে চান, শিক্ষকরাও সর্বদা সচেষ্টা পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে ? তাই যদি হয়ে থাকে, ঈদের পর হল খুলে গেল ঠিকই কিন্তু হলের ডাইনিং-ক্যান্টিন আর ক্যাফেটেরিয়া খুলতে এত দেরি হল কেন ? এ ছাড়া বুয়েটের ছাত্র হিসেবে সাদা রুটিন-লাল রুটিন এসবের কথা নিশ্চয়ই জানেন। আপনার কি মনে হয় না, এগুলো পরীক্ষা পেছানোরই পরোক্ষ সুযোগ ? গত পাঁচ বছরে নিশ্চয়ই এটা বুঝে গিয়েছেন, সাদা রুটিন মানেই পরীক্ষা একদফা পেছানো হবে, তাই না ? আমি বাজি ধরে বলতে পারি, কর্তৃপক্ষ যদি শুরুতেই লাল রুটিন দিয়ে দেয়, তাহলে নব্বই ভাগেরও বেশি ছাত্র ধরে নিবে যে, পরীক্ষা এই ডেটেই হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে অবশ্য মজার একটা ঘটনা স্মরণ করা যেতে পারে, গত বিশ্বকাপের সময় যখন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করা নিয়ে গণ্ডগোল তুমুলে কারণ এক পক্ষ চায় পরীক্ষা পিছনে যাক আর সাধারণ ছাত্ররা চায় পরীক্ষা ডিউ ডেটেই হোক,সাধারণ ছাত্ররা গেল ডি এস ডব্লু'র সাথে কথা বলতে। তাঁকে বলা হল, "স্যার রুটিনটা একেবারে লাল কাগজেই দিতেন", উত্তরে তিনি জানালেন, "বিশ্ববিদ্যালয়ের লাল কাগজ শেষ হয়ে গিয়েছে, তাই সাদাতেই দেওয়া হল।"

সমঝদারকে লিয়ে ইশারাহি কাফি হ্যায় - বুঝতে বাকি থাকে না এর পর যে, পরীক্ষা আসলে পিছাবে।

এক/দুই সপ্তাহের বেশী পেছানো প্রতিটা পরীক্ষায় এরকম কিছু না কিছু সিম্পটম ছিলো যাতে প্রমাণ হয়ে যায় শুধু ছাত্রদের অযৌক্তিক দাবী না, শিক্ষকদের সদিচ্ছার অভাবও পরীক্ষা পিছানোর অন্যতম কারণ।

কখনোই ছাত্রদের এর দায়ভার থেকে মুক্তি দেওয়া যাবে না- ঠিক, তবে এই কৃতিত্ব ছাত্রদের একক না। এই সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসতে হলে ছাত্র শিক্ষক উভয় পক্ষকেই পরীক্ষার ব্যাপারে আন্তরিক হতে হবে, নচেৎ সম্ভব নয়।


অলমিতি বিস্তারেণ

যুধিষ্ঠির এর ছবি

প্রিয় সবজান্তা, একমত হতে পারলাম না। লাল রুটিন, সাদা রুটিন, এগুলো অত্যন্ত শুধুই এক্সকিউজ। ছাত্ররা আসলেই পরীক্ষা দিতে চাইলে শিক্ষকদের পক্ষে সম্ভব না সেটা আটকানো।

সবজান্তা এর ছবি

যুধিষ্ঠির, আপনি কোন ব্যাচের তা ঠিক জানি না, তবে আন্দাজ করছি আমার ( আমি বর্তমানে শেষ সেমিস্টারে) চেয়ে অনেক সিনিয়র হবেন। তাই আপনার সময়ের সাথে মিলবে কি না জানি না, তবে আমার যুগের হাওয়াটা আমি বলতে পারি।

আমার যুগের ছাত্ররা জানে, লাল রুটিন মানে এই বস্তু পিছাবার না। আমার প্রশ্ন হচ্ছে শুরুতেই লাল রুটিন দিলে সমস্যাটা কোথায় ? আর রুটিন এত রঙ বেরঙ -এর করার দরকারটাই বা কী ?

আপনি বলতে চান, ছাত্ররা পরীক্ষা পিছাতে চায়, আর শিক্ষকরা পরীক্ষা নিতে উদগ্রীব ? তাই যদি হবে, ঈদের পর হলের ক্যান্টিন, ডাইনিং ইত্যাদি কেন জানুয়ারীর তিন তারিখ খুলে ?

আমার ডিপার্টমেন্টের একজন বর্ষীয়ান, অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং অসাধারণ শিক্ষকের বক্তব্য হচ্ছে, "আপনাদের পরীক্ষা পিছালে আপনাদের চেয়ে বেশি লাভ মাস্টারের।" আমি একবারও দাবি করছি না ছাত্ররা দায়ী নয়, বরং মূল দোষী হয়ত তারাই, কিন্তু কতৃপক্ষও এর দায় এড়াতে পারে না।

আপনি যদি এরকম আরো উদাহরণ জানতে চান, তাও আমি হাজির করতে পারবো। মোদ্দা কথা হচ্ছে, ছাত্ররা তো স্বভাবগতভাবেই পরীক্ষাভীত, বিশেষত টার্ম ফাইনালের গুরুত্ব এবং জটিল প্রশ্নপত্র সেই ভয়কে বাড়িয়ে দেয় বহুগুনে। আর ছাত্রদের এই ভীতিটাকেই পাঁকাপোক্ত ভাবে আসন গাড়তে দেয় কতৃপক্ষের সিদ্ধান্ত।


অলমিতি বিস্তারেণ

যুধিষ্ঠির এর ছবি

নীচের একটা মন্তব্যে এনকিদু সত্যি কথাটা বলে দিয়েছেন, কার দোষ এটা নিয়ে তর্ক করতে গেলে মুরগী/ডিমের প্যাঁচে পড়তে হবে। শেষ পর্যন্ত মহান বিধাতাকে দুষতে হবে বুয়েট তথা সমগ্র বিশ্বব্রহ্মাণ্ড তৈরী করার জন্য। সে তর্কে না গিয়ে বলি, আমি নিজেই আমার এর আগে করা নীচের মন্তব্যে স্বীকার করে নিয়েছি যে ছাত্ররা একা এজন্য দায়ী নয় ঠিকই, কিন্তু আমার বিশ্বাস এটা প্রতিহত করার জন্য ছাত্ররা একাই যথেষ্ট।

হ্যাঁ, আমি এটা মানি যে আপনার যুগের সবকিছু আমার যুগের স্কেলে মাপা যাবে না। তবে দেশের সেরা ছাত্রদের একজন হয়ে জেনেশুনে ইঞ্জিনীয়ারিং-এর মত জটিল বিষয় পড়তে এসে

"... বিশেষত টার্ম ফাইনালের গুরুত্ব এবং জটিল প্রশ্নপত্র ..."
-কে ভয় পাওয়াটা আর সেটা যৌক্তিক বলে মেনে নেওয়াটা, দুঃখের সাথে বলছি, খুব দুর্বল এক্সকিউজ। সেক্ষেত্রে এই ছাত্রদের অন্য কোথাও কোন অপেক্ষাকৃত সহজ বিষয়ে পড়া উচিৎ।

সবজান্তা এর ছবি

আমি বিশ্বের অন্যান্য কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনা নাই বা টানলাম, দেশের মধ্যেই প্রথম সারির ইন্সটিউট IBA র কথাই না হয় একটু বলি। সেখানে সব বিষয়েই টার্ম ফাইনালে শতকরা ত্রিশ শতাংশের কাছাকাছি নম্বর রাখা হয়। বাদ বাকি সব নম্বরই থাকে প্রেজেন্টেশন, প্রোজেক্ট, ক্লাস টেস্ট কিংবা অন্যান্য ধরণের ইভালুয়েশনে।

আমার জানার গণ্ডী ছোট, কিন্তু তার মধ্যেই বিশ্বের অনেক ভালো বিশ্ববিদ্যালয়েই কোথাও শুনি নি এত বিশাল নম্বরের পরীক্ষা একসাথে হয়। যদি টার্ম ফাইনালেই ৭০ভাগ নম্বর থাকে, তাহলে সাড়ে তিনমাসের গুরুত্ব কই ?

কঠিন প্রশ্নের কথাটা তখনই উঠে। আমার ব্যক্তিগত বিচারে (এবং আমার পরিচিত বিশাল বুয়েট ছাত্রমহলে) বুয়েটের প্রশ্ন বেশ কঠিন বলেই বোধ হয়। এবং এরকম জটিল প্রশ্নে ঠাসা সত্তর মার্কের উত্তর দিতে আমার নিজেরও অস্বস্তি লাগে বৈ কি !

এ ছাড়া বুয়েটের প্রশ্ন যে কঠিন হলেও খুব জাতের কঠিন , তা কিন্তু না। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অকারণ কঠিন করে রাখে।আইসি র ইনিশিয়ালাইজেশন কোড মনে হয় দুনিয়ার কোন বিশ্ববিদ্যালয়েই মুখস্ত করে দেওয়া লাগে না, কিন্তু একজন সিনিয় টিচারের এরকম "অপূর্ব" ইচ্ছার কারণে আমরা তাই দিয়েছি।

দেশের সেরা ছাত্র কি না জানি না, তবে মেধা যাচাই করার মত প্রশ্নের উত্তর পারি না পারি, ভয় কখনো পাই নি। কিন্তু যখন অযাচিত রকমের মুখস্ত এবং কাঠিণ্য দিয়ে প্রশ্নপত্র ভরে রাখা হয়, তখন প্রশ্নপত্র আমার মত মানুষের প্রায়শই ভয় লাগে।


অলমিতি বিস্তারেণ

যুধিষ্ঠির এর ছবি

আমি বিশ্বের অল্প যে ক'টা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে জানি, তাদের কারোরই এতটা নম্বর টার্ম ফাইনালে থাকেনা। তবে এটাও মনে রাখবেন, এদের কারোরই প্রিপারেটরী লীভ বলে কোন কিছুর অস্তিত্ব নেই। তারপরও, টার্ম ফাইনালে ৭০ ভাগ নম্বর থাকাটা অবশ্যই গুরুত্বের বিষয় এবং এ বিষয়ে আপনার যুক্তি আমি মানি। আমার মতে দু-একটা ব্যতিক্রম বাদে অনেকগুলো বিষয়ের জন্যই এটা পুরো সেমিস্টারে সমানভাবে ছড়িয়ে দেয়া যায় আর প্রিপারেটরী লীভ বন্ধ করে দেয়া যায়। কিন্তু এই দেখুন, প্রিপারেটরী লীভ বন্ধের কথা বললে হয়তো অরেকটা ছাত্র আন্দোলনের রাস্তা খুলে দিচ্ছি আমরা।

প্রশ্নের ধরন আর "অযাচিত মুখস্ত আর কাঠিণ্য" বিষয়ে সাধারণভাবে একমত হলেও এখানে আর বিস্তারিত মন্তব্য করছি না - আমাদের প্রকৌশল শিক্ষাদানের ধরণ নিয়ে আলাদা অলোচনা হতে পারে। আশা করি প্রকৌশল শিক্ষার জটিলতা নিয়ে আমার পূর্ববর্তী মন্তব্য ব্যক্তিগতভাবে নেবেন না।

সবজান্তা এর ছবি

দেখুন, আমার স্বরে যদি মনে হয়ে থাকে আমি পরীক্ষা পিছানোকে সমর্থন করছি কিংবা বলছি ছাত্ররা ঠিক, তাহলে বোধহয় আমি নিজেকে ব্যক্ত করতে ব্যর্থ হয়েছি।

প্রিপারেটরি লীভ জিনিশটাই হাস্যকর। কিন্তু বুয়েটের বর্তমান সিস্টেমের প্রেক্ষিতে আমি এ'টা ছাড়া পরীক্ষার কথা ভাবতেও পারি না। আমার যে'টা মনে হয়, বুয়েটের সামগ্রিক পরীক্ষা পদ্ধতিকেই আধুনিক করার সময় চলে এসেছে। সারা সেমিস্টার ঘোড়ার ঘাস কাটলেও কিছুই যায় আসে না, শুধু সময় মত পরীক্ষার আগে পড়লেই চলে - এ'টা কোন সুস্থ নিয়ম হতে পারে না। ক্লাসটেস্ট, এসাইনমেন্ট, প্রোজেক্ট আর প্রেজেন্টেশন- এইসবের মাধ্যমে টার্মচলা কালীন সময়েই পঞ্চাশ থেকে ষাট শতাংশ নম্বর পূরণ করে ফেলা উচিত। এছাড়া বি এস সি পর্যায়েও এম এস সি পর্যায়ের মত শিক্ষকের হাতেই নম্বর বন্টণ ছেড়ে দেওয়া উচিত, তাঁর পূর্ন স্বাধীনতা থাকবে নম্বর বন্টণে।

এছাড়া টার্ম ফাইনালে যেন প্রশ্নগুলি একই গতানুগতিক মুখস্ত টাইপ না হয়, যেন আগের চার বছরের প্রশ্ন সলভ করলেই ভালো গ্রেডের নিশ্চয়তা না আসে। বিকটাকৃতি সূত্রসমূহ প্রয়োজনবোধে প্রশ্নপত্রে উল্লেখ করা যেতে পারে।

আমার বিশ্বাস এভাবে পরিবর্তন না করলে, আমরা কোনদিনই প্রিপারেটরি লীভ পদ্ধতির বাইরে যেতে পারবো না।


অলমিতি বিস্তারেণ

যুধিষ্ঠির এর ছবি

এইবার একদম সহমত!

হিমু এর ছবি

গতানুগতিক মুখস্থ টাইপ প্রশ্নের বাইরে প্রশ্ন করতে গেলে গতানুগতিক মুখস্থ টাইপ ভাবনা থেকে বের হয়ে এসেছেন এমন প্রশ্নকর্তাও লাগবে হাসি


হাঁটুপানির জলদস্যু

yokel এর ছবি

আপনার কথায় যথেষ্ট যুক্তি আছে- অনেকগুলোই আমি মেনে নিচ্ছি। তবে কেন গত দুই বছর পরীক্ষা পেছালো না তার উত্তর পেলাম না। আপনি যেই সিস্টেমের কথা বলেছেন সেই সিস্টেমও একইরকম ছিল, বুয়েটের টিচারদেরকে নিয়ে অনেক কথা বলেছেন তারাও এই সময়টাতে বুয়েটেই ছিল তবুও কেন কেয়ারটেকার সরকারের দুই বছর পরীক্ষা নিয়ে কোন অনিয়ম দেখলাম না। আর ঠিক এই নভেম্বর-ডিসেম্বরে এসেই আবার সব জট লেগে গেল। আপনার কারণগুলো যথার্থই যুক্তিযুক্ত, তবে এগুলো এই অনিয়মের ক্ষেত্রে আমার মতে ৫-১০% নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। বাকি ৯০% যে ফেক্টরটা এখানে মুল ভূমিকা পালন করে গত দুই বছর ক্যাম্পাসে তাদের উপদ্রব খুব কম ছিল বা ছিল না বললেই চলে। আপনি যদি হলে থেকে থাকেন তাহলে প্লীজ আগামী টার্মফাইনালের আগে যখন পরীক্ষা পেছানোর তোড়জোড় শুরু হবে, তখন দয়া করে একেবারে "প্রাথমিক পর্যায়ে" কারা এই কাজগুলো শুরু করে, হলে হলে পোস্টারিং করে, মিছিল বের করতে ছাত্রদেরকে উস্কানি দেয় এবং সংগঠিত করে ব্যপারগুলো লক্ষ করবেন আশা করি।

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

সবজান্তা এর ছবি

আচ্ছা একটা স্টেপ বাই স্টেপ ইন্সপেকশনে আসা যাক। এই ভিসি স্যার যখন দায়িত্ব নেন, আমি তখন লেভেল-২ টার্ম-২ এর ছাত্র। উনার দায়িত্ব নেওয়ার সময় রীতিমত দুর্যোগ, পুলিশের সাথে মারামারি করে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এর পর উনি এসে স্বল্পতম সময়ে টার্ম ফাইনালের ব্যবস্থা করলেন।

এরপরের সময়গুলিতে বুয়েটে পরীক্ষা না পিছানোর কারণ হচ্ছে প্রতিটা পরীক্ষার আগে যথেষ্ট সময় দেওয়া। মূলত এই কারণেই কোনবারই সপ্তাহখানেকের বেশি পরীক্ষা পিছায় নি, যদিও পরীক্ষা চলাকালীন সময়ের দৈর্ঘ্য ছিলো অনেক বেশি। তবে গতবারই একটু বেশি, প্রায় সপ্তাহ তিনেকের মত পিছিয়েছিলো বলে মনে পড়ে।

আচ্ছা তাকানো যাক এবারের পরীক্ষা দিকে। এবারের পরীক্ষা এমনিতেই স্পেশাল ছিলো, কারণ একে তে ঈদের ছুটি পড়েছে, তারুপর দীর্ঘ সাত বছর পর নির্বাচন। স্বভাবগতভাবেই তা বুয়েটের মত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর ছায়া ফেলেছিলো। প্রথমে ছাত্ররা একতা দাবি করেছিলো যে, ঈদের আগে কোন পরীক্ষা তারা দিবে না,তারা এসে একবারেই সব পরীক্ষা দিবে। ঈদের পর পরীক্ষা কিন্তু শুরুই হতে পারলো না কারণ নির্বাচন পিছিয়ে পড়লো উনত্রিশ তারিখ। ফলশ্রুতিতে, পরীক্ষার পিছানো তারিখ দেওয়া হল জানুয়ারির দশ।

এখন দশ তারিখ পরীক্ষা নিতে চাইলে,কেন কতৃপক্ষ এত দিন ডাইনিং বন্ধ রেখে তিন তারিখে খুললেন, সে'টা তারাই ভালো বলতে পারবেন।

আশা করা যায় শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে আমি এবারই আমার বুয়েট জীবনের সমাপ্তি টানতে পারবো, তাই পরের সেমিস্টারে আশা করি বুয়েটে থাকা হবে না। তবে আপনি যা বলতে চেয়েছেন তা আমি বুঝতে পেরেছি। দেখুন আমি শুধু এটাই বলতে চেয়েছি, পরীক্ষা পিছায় ছাত্ররাই, এতে কোন সন্দেহ নেই। তবে যদি শিক্ষকেরা আন্তরিক হতেন, তবে এই বাজে কালচার বুয়েট থেকে উঠে যেতে পারতো আগেই।


অলমিতি বিস্তারেণ

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালো ছাত্ররা পড়া হয়নি বলে পরীক্ষা পেছাতে চাইবে। এটা বিশ্বাস করতে কেমন যেন কষ্ট হয়।
(মহসীন রেজা)

পল্টু এর ছবি

আমরা ক্লাস শেষ করেছি ১২ই নভেম্বর, ২০০৮। প্রথম পরীক্ষা হবার কথা ২৫শে নভেম্বর। তারপর এক মাস ছুটি দিয়ে ২৮শে ডিসেম্বর দ্বিতীয় পরীক্ষা হবার কথা ছিল। যথারীতি আন্দোলন শুরু হয়। তের সপ্তাহ ক্লাস করে পরীক্ষা দিতে পারবনা, এই ছিল যুক্তি। কোন সুনির্দিষ্ট কারণ দেখাতে না পারলেও পিছিয়ে দেয়া হয়।

২৯শে ডিসেম্বর নির্বাচন ঘোষিত হওয়ায় ২৮শে ডিসেম্বর এর স্থগিত হয়ে যায়। পরে ঠিক করা হয় ১০ই জানুয়ারী পরীক্ষা শুরু হবে। এখন সেটাও ১৭ কিংবা ২৪শে জানুয়ারীতে পিছিয়ে দেবার চেষ্টা চলছে।

এখনকার আন্দোলন এর ব্যপারে আপনার কথাও ঠিক। হল কর্তৃপক্ষ ডাইনিং খুলেছে ৫ই জানুয়ারী। স্যারদের আরো আগেই ডাইনিং চালু করা উচিত ছিল। কিন্তু আমরা এতদিন পিএল পাবার পরও আর কত চাই?

আসলে পরীক্ষা পেছানোর জ্বালায় ত্যক্তবিরক্ত হয়ে গেছি। পড়তে বসি, হল থেকে খবর আসে, মিছিল হয়েছে। পড়া আর হয়না। এখানেই আন্দোলন এর সফলতা। আজকে ১০ জন, কাল ৩০ জন, পরশু ৮০ জন। তাতেও কাজ না হলে গেইটলক। আজ আমি বলছি বর্তমান রুটিন এ পরীক্ষা দেব, কাল আমিও হয়ত মিনমিন করে বলব, পরীক্ষা পেছালেই ভাল হত।

কোটা/ সান্ধ্যশিক্ষা চালু করলে যদি বুয়েটের মর্যাদাহানি হয়, তবে পরীক্ষা পেছানোর আন্দোলন করলে কি হয়?

আইইউটি, এমআইএসটি থেকে আমাদের ব্যচ('০৪) বের হয়ে গেছে। আর বুয়েট থেকে '০৩ ব্যচই এখনো শেষ করতে পারেনি।

পল্টু

বিপ্রতীপ এর ছবি

সবজান্তার সাথে সহমত। শুধু ছাত্ররা কিন্তু দায়ি না। কেউ যদি ক্লাসে উস্কানি দেন, তোমরা এইবার বিশ্বকাপেও পরীক্ষা দিবা? (বন্ধুর মুখে শোনা কথা) । তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আমরাই দায়ী ছিলাম, এ ব্যাপারে দ্বিমত নাই।
বুয়েটের সব আন্দোলনের ফলাফলটা আসলে এই একই হয়। তবে যারা পরীক্ষা পেছানো চায় না, তাদের বেশির ভাগও পরে পরীক্ষা পেছানো সমর্থন করে। কারন, একবার মিছিল দেখলে কেমন একটা গা-ছাড়া ভাব চলে আসে। হলে লাভলুর আনাগোনাও বেড়ে যায়...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
খুঁজে যাই শেকড়ের সন্ধান...

অবাঞ্ছিত এর ছবি

ছাত্ররা মিছিলে না গেলে মিছিল করবে কারা? কেন যায়?

প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির সাথে তুলনাটা লক্ষণীয়... আমরা আসলে ফ্রি এর মূল্য বুঝি না... বছরে "ইনসার্ট লার্জ এ্যামাউন্ট এন্ড কারেন্সি সিম্বল" খরচ করে পড়তে হলে পরীক্ষা পেছানো কেন, বরং এগিয়ে বের হয়ে চাকরিতে ঢুকতে আগ্রহী হত সব ছাত্ররা.. আদু
ভাইদের অস্তিত্ব থাকতো না..

অথবা হুজুগে না মেতে একটু সচেতনতা..

মাঝে মধ্যে আবার এইসব দরকারো মনে হয় মন খারাপ আমার ইউনিভার্সিটি শালার ধূমপান পর্যন্ত নিষিদ্ধ করে দিলো ক্যাম্পাসে... কোনো রা নাই কারো... নিয়ম করছে, মানো.. ধূর!

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

দ্রোহী এর ছবি

ফার্স্ট ইয়ার নাকি? তাহলে ঘাবড়াইয়েন না, অভ্যাস হয়ে যাবে। একবার অভ্যাস হয়ে গেলে মনে হবে পরীক্ষা পেছানো খুবই স্বাভাবিক এবং যুক্তিপূর্ণ বিষয়।

দিনমজুর এর ছবি

নারে ভাই, ফার্স্ট ইয়ারেই পরীক্ষা পেছানোর আন্দোলন ব্যাপক জোশের মনে হয়- তারপর ধীরে ধীরে এটার প্রতি বিরক্তি জমতে জমতে লেভেল ৪ এর পোলাপানদের এই বিরক্তি চরমে উঠে যায়।

দ্রোহী এর ছবি

কী জানি! আমার কাছে ব্যাপারটা সবসময়ই জোশের মনে হয়েছে। দেঁতো হাসি

১৯৯৭ সালের ৩রা জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম ক্লাস করতে গিয়েছিলাম। যেদিনটিতে মাস্টার্স পাশ করে বের হই সেদিন ছিল ২রা এপ্রিল ২০০৬। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে আমরাই মনে হয় সবচাইতে দীর্ঘসময় কাটিয়েছি।

আমার কিন্তু কখনোই খারাপ লাগেনি। বরং মনে হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনটা আরেকটু লম্বা হলে খারাপ হত না। দেঁতো হাসি

যুধিষ্ঠির এর ছবি

আমাদের সময় এইরকম অটোভ্যাকেশন আর পরীক্ষা পেছানোর মিছিল করে তিন-তিনটে বছর নষ্ট হয়েছে। কি অর্থহীন অপচয়, মেধা আর প্রাণশক্তির। মনে আছে অ্যামেরিকাতে মাস্টার্স করার সময় আমি ছিলাম আমাদের ক্লাসের আদুভাই, নিজের ইচ্ছায় বা অযোগ্যতায় একটি দিনও নষ্ট না করে। আজকে পেশাগত জীবনে তিন বছর পিছিয়ে শুরুটা করার মূল্য দিতে হয় প্রতিদিন, কমবয়সী ভারতীয়দের সাথে অসম প্রতিযোগিতায় নেমে।

ছাত্ররা এককভাবে দায়ী নয় ঠিকই, কিন্তু তারাই এককভাবে এটা প্রতিরোধ করতে পারে বলে আমার বিশ্বাস। আমাদের সময় যারা এগুলোর সামান্যতম বিরোধিতা করে ক্লাসে যেত বা পরীক্ষা দিতে চাইতো, তাদের রাজাকার নামে অভিহিত করা হত।

কবে যে বন্ধ হবে এ সব।

ইফতেখার এর ছবি

আমি বুয়েটে পড়িনি। নিজে সবসময় পরীক্ষা পেছানোর আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছি। আমার অভিজ্ঞতায় পরীক্ষা পেছানোর জন্য মূলত দায়ী শিক্ষকরা, অন্তঃত ৮০ ভাগ ক্ষেত্রে।

নামহীন [অতিথি] এর ছবি

বিশিষ্ট গীতিকার ও কন্ঠশিল্পী 'নচিকেতা'-র কথানুযায়ী বলতে হয়-
'যদি চাও সফলতা
মেনে নাও এই সিস্টেম,
ফেলে দাও স্রোতের মুখে
আদর্শ, বিবেক ও প্রেম।

মন খারাপ করেন না ভাই... সব ঠিক হয়ে যাবে।

...নামহীন

পুরুজিত এর ছবি

একটা ব্যাপার আমাকে শুরু থেকেই ভাবাত।

"পড়তে বসি, হল থেকে খবর আসে, মিছিল হয়েছে। পড়া আর হয়না।"

এইটা কেন হবে? কেউই তো বাচ্চা ছেলে না। পড়তে সমস্যা কি? পরীক্ষা না হলে আবার পড়া যাবে। এক বারের চেয়ে ২ বার পড়া নিশ্চয়ই ভাল!! নিজেদের আলস্যের সুযোগ নিতে দিয়ে আবার কান্নাকাটি করার কি মানে?

এনকিদু এর ছবি

এটাই আসল কথা ।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

পল্টু এর ছবি

একমত হতে পারলাম না। লক্ষ্যহীন দক্ষতা কোন কাজে আসবেনা। পরীক্ষার তারিখ জানার পর প্রায় সবাই একটা সময়সূচী তৈরী করে নেয়। পরীক্ষা পেছানোর মিছিল হলেই বোঝা যায়, নোটিশ একসময় আসবেই। এই ‘বোঝা যাওয়াটাই’ সমস্যা।

পরীক্ষা না হলে আবার পড়া যাবে। এক বারের চেয়ে ২ বার পড়া নিশ্চয়ই ভাল!! নিজেদের আলস্যের সুযোগ নিতে দিয়ে আবার কান্নাকাটি করার কি মানে?

এক বারের চেয়ে বারবার পড়া তো অবশ্যই ভাল। কিন্তু কথাটা বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে। কোন সাধারণ ছাত্রই সেটা করবেনা। বই ধরা তো দূরে থাক, মুভি দেখতে বসবে, একটু আঁতেল হলে ব্যারন শব্দাবলি নিয়ে বসবে। মিছিলের পরদিন হলে গিয়ে দেখেছেন নিশ্চয়ই।

আলস্যই এই সংস্কৃতি তৈরি করেছে এটা মানতে রাজি নই। বরঞ্চ বারবার পেছানোর প্রবনতাই আলস্যতাকে লালন করেছে। পরীক্ষার তারিখটা কোন জরুরি অবস্থা ছাড়া পরিবর্তিত হওয়া উচিত নয়। মিছিল হবার পরও পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন না করে একটা উদাহরন তৈরী করতে হবে। তাহলে ছাত্রদের মধ্যে মিছিলকে গুরুত্ব না দেবার মানসিকতা আসবে।

পল্টু

এনকিদু এর ছবি

দুই দলেরই দোষ আছে । ছাত্র শিক্ষক সবাই মজা পেয়ে গেছে । কার দোষ বেশি এই বিতর্কটা মনে হয় করার মধ্যে কোন সার্থকতা নেই, ডিম আগে না মুরগি আগের মত লুপে পড়ে যাবেন ।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

একজন [অতিথি] এর ছবি

পরীক্ষার আগের রাতের মত এত্ত দ্রুত পড়ালেখা আর কখনই মাথায় ঢুকেনা। তাই অন্য সময় বই খুলে বসে থাকা হয়, পড়া হয়না, পরীক্ষার প্রস্তুতিও হয়না।

এলোমেলো ভাবনা এর ছবি

ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষা পিছিয়েছিল প্রায় আট মাসের জন্য। কি যে বিরক্তিকর একটা সময়। পরীক্ষার হলে পৌঁছে দেখি গেটে তালা।


এমন শহরে আমি ঘুরি , নাকি শহরটাই ভবঘুরে?


হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই,

দুইকে আমি এক করি না এক কে করি দুই৷

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

পরীক্ষা পেছানো কার দোষ এটা নিয়ে অনেক ক্যাচালই করা যাবে। সে দিকে না গিয়ে বলা যায়, সবচেয়ে বাস্তবসম্মত সমাধান, এক সপ্তাহ পিছিয়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সিদ্ধান্ত দেয়া। এটা করতে যতই গড়িমসি করা হবে, আখেরে ছাত্রদের লস আরো বাড়বে।

কোটা আর নাইট শিফটের ব্যাপারে ছাত্রদের দাবিগুলো কি ছিলো আর ভিসি কতোটা মেনেছেন, কেউ বিস্তারিত বলতে পারবেন? শিক্ষক সমিতির ওই কর্মপত্রটি কি তারা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন?

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

সবজান্তা এর ছবি

যতদূর জানি ভিসি আশ্বাস দিয়েছেন সন্তান কোটা কিংবা ইভেনিং শিফট - কোনটাই বাস্তবায়ন করা হবে না।

এইদিকে পরীক্ষা পেছানো নিয়ে উত্তরোত্তর টেনশন বৃদ্ধি পাওয়া এবং বড়সড় ঝামেলা এড়ানোর জন্য আজ আমরা দু দফায় গিয়েছিলাম DSW স্যারের কাছে। পরবর্তীতে বিকালে যেয়ে এপ্লিকেশন করে, এক সপ্তাহ পরীক্ষা পিছানো হয়েছে।

আশা করি মিনিমাম ড্যামেজের জন্য এর থেকে বেটার কিছু করার সুযোগ ছিলো না।


অলমিতি বিস্তারেণ

নাসিফ এর ছবি

হলে লাভলুর আনাগোনাও বেড়ে যায়...

হলে এখন লাভলু আসে না । আসে দুলু ! আমার লগে ভাল খাতির আসে !!
পরীক্ষা পিছানোর নোটিশের পাওয়ার জন্য মুখিয়ে আছি ।

এনকিদু এর ছবি

সত্যবাদী চলুক

দুলুকে নিয়ে একটা ব্লগ লিখার ইচ্ছা ছিল, মনে করিয়ে দিলেন ।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

বিপ্রতীপ এর ছবি

ও হ্যাঁ, আমদেরও শেষ কয়েক মাস দুলুই আসতো। দুলুর চাইতে লাভলু অনেক চালাক চতুর ছিল। সে পিএল এ বত্রিশটা দাঁত বের করে বলতো, মিছিল হইছে, পরীক্ষা তো পিছাইবোই? মুভি রাখবেন নাকি? চোখ টিপি
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
খুঁজে যাই শেকড়ের সন্ধান...

অতিথি এর ছবি

"গত দুই বছর বুয়েটে কোন টার্ম ফাইনাল পরীক্ষাই পেছানো হয়নি, সব পরীক্ষাই নির্ধারিত সময়ে হয়েছে"

-কারণ কি জানেন তখন কোনো নির্বাচন ছিলো না।
আমার মনে হইল আপনি বাসায় থাকেন।
তাই জানেন না যে হলের ডাইনিং ৩ তারিখ খুলেছে।সো
সবাই আগেই আস্তে পারে না।যাদের দরকার তারা আগেই আসলেও ৯০% পোলাপাইনই আসে নাই।তারা আসছে ডাইনিং খুললে।আর বাসায় কিন্তু পড়ালেখা হয় না তা তো সবাই জানে। তাই বলি ৭ দিন পিছালে কোনো মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে না।

"কোটা/ সান্ধ্যশিক্ষা চালু করলে যদি বুয়েটের মর্যাদাহানি হয়, তবে পরীক্ষা পেছানোর আন্দোলন করলে কি হয়?"
-না হয় না।

এনকিদু এর ছবি

চলুক


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

অতিথি এর ছবি

সুখবর সুখবর পরীক্ষা পিছাইছে।১ সপ্তাহ।
হাসি
-

হযবরল এর ছবি

পরীক্ষা পেছানোর আন্দোলন ব্যর্থ হয়নি শুনে মনে হলো, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রো-ভিসি শাহাদাত হোসেন কে বুয়েটে চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া দরকার। উনি একবার পুলিশ নিয়ে এসে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গিয়েছিলের পরীক্ষা পেছানোর দাবীরত কিছু ছাত্র-ছাত্রী'কে। পরে বাবা-মা'রা মুচলেকা দিয়ে ছাড়িয়ে এনেছিলেন।

অতিথি লেখক এর ছবি

পরীক্ষা পেছানোর আন্দোলন ব্যর্থ করার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের 'বাকী খলিলীকে'ও নিয়োগ করতে পারেন। উনি সেমিস্টারের শুরুতে শিডিউল দিয়ে দিতেন, ৫ দিন আগে রুটীন। অনেক আন্দোলন করার পরে দেখা গেল পরীক্ষা পিছানোর সম্ভবনা দেখা যাছে না, তখন দিন দিন আন্দলোনকারী কমতে থাকে।

উনার ভয়ে শিক্ষকরাও বলতেননা কোর্স শেষ করতে পারেনি.... কিসের পি.এল.!! ,পরীক্ষার ২ দিন আগেও ৩টা কোর্সের ক্লাস করেছি।

একবার পরীক্ষার রুটীন এমন পড়ল - একদিন পর পর পরীক্ষা... আমরা অনেক অনুরোধ করলাম স্যারকে, (আন্দোলনের সাহস শেষ), অন্তত ৩দিনের গ্যাপ দিক (আগে ৪ দিন দিত), সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা আগে ৪ দিন.....
স্যার একসময় নরম হলেন, বল্লেন -যাও তোমাদের রুটীন ঠিক করে দিচ্ছি....কিন্তু সবাইকে কমপক্ষে A পেতে হবে..এত্ত আনন্দ খুব কম পেয়েছিলাম।

পুনশ্চঃ নতুন রুটীনে কঠিন পরীক্ষা আগে ৪ দিন দিয়েছিলেন, কিন্তু বাকীগুলর ছুটি কমিয়ে...জানিনা ঢাবিতে আর কখন প্রতিদিন সেমিস্টার ফাইনাল হয়েছে কিনা।

অফ টপিক্ঃ আমি এখানে ভর্তি হয়েছিই পড়ালেখা করতে হবেনা, সেই আশায়.....কপাল!

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

আমার নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করি।

১। প্রথম সেমিস্টারে প্রথমবার পরীক্ষা শুরুর আগে কোমর বেঁধে পড়তে বসেছি। বুয়েটে ভাংচুর। বন্ধু শিবলী ফোন করে জানাল পরীক্ষা অনিদির্ষ্ট কালের জন্য বন্ধ। তিন মাস ধরে প্রথম প্রথম নেয়া ইন্টারনেট ঘেঁটে ঘেঁটে যখন হাতে পায়ে শিকড় গজাচ্ছে তখন জানা গেল যে পরীক্ষা হবে। খাতা পত্রের ধুলা ঝেড়ে আবার যখন পড়তে বসেছি তখন শোনা গেল যে আবার বন্ধ। তৃতীয় বার যখন শুনলাম পরীক্ষা হবে। তখন কেন যেন আর গায়েই লাগল না। ফলাফল জিপিএ ৩.২। শেষতক চার-ছক্কা পিটিয়েও জিপিএ ৩.৭৫ পার করতে পারলাম না, ৭৪ আটকে গেল।

২। মাস্টার্স করতে আসলাম। দেখি আমার বয়সী শিখ ছেলে গাগান পড়াশোনার পর চার বছর চাকরী করে আমার দুই সেমিস্টার আগে মাস্টার্স করতে এসেছে। প্রায় একইসাথে পাশ করে সে অফার পেল বছরে ৮৫ হাজার ডলারের বেতনের আর আমি? টাকার অংকটা নাহয় নাই উল্ল্যেখ করলাম। কিন্তু সেটা দুঅংকের বিশাল একটা এমাউন্ট।

৩। পিএইচডি করব কিনা সেটা নিয়ে ভেবে ভেবে হয়রান। আরো পাঁচ বছর? কিভাবে সম্ভব?

শুধু মাত্র এক মাস, দুই সপ্তাহ, এক সপ্তাহ ক্লাশ বন্ধ এই করেই কিন্তু এতো ক্ষতি হয়ে গেছে। সোনালী সময় গুলা কিন্তু আর ফিরে আসে না।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

কিন্তু সেটা দুঅংকের বিশাল একটা এমাউন্ট।

হাজার এককে দুই অংক। তারমানে মোট পাঁচ অংক। xx হাজার।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

দ্রোহী এর ছবি

এস এম মাহবুব মুর্শেদ লিখেছেন:
পিএইচডি করব কিনা সেটা নিয়ে ভেবে ভেবে হয়রান। আরো পাঁচ বছর? কিভাবে সম্ভব?

শুধুমাত্র এই কথাটা চিন্তা করেই আমার আর পিএইচডিতে যাওয়া হল না।

শাহ্ আসাদুজ্জামান এর ছবি

বুয়েটের শিক্ষকেরা অন্যায্য দাবী করলে যেমন সরবে তার প্রতিবাদ করা হয়েছে, বেয়াড়া কিছু ছাত্রদের পরীক্ষা পেছানোর দাবীকেও সেরকমই গদাম লাথি জানাচ্ছি।

--- সম্মুখ পশ্চাত্ উভয় দেশে, সজোরে, সম্মিলিত ভাবে ---

সবজান্তা এর ছবি

রাগিব ভাই,

নাহ, ১০১ উপায়ে পরীক্ষা পিছানোর কোন চোথা মারছি না।

পরীক্ষা পিছানো কিংবা না পিছানো কোনটাই আমাদের অর্থাৎ নন পলিটিক্যাল ( আমি তো আরো ব্রাত্য, বাসায় থাকি ) ছাত্রদের হাতে ছিলো না। এ'টা দিনের আলোর মতোই স্পষ্ট যে, পরীক্ষা পিছালে ছাত্রদেরই ক্ষতি এবং আন্দোলনকারী ছাত্ররা সে'টা বুঝতে চায় না। আমার ভাষ্য ছিলো এ'টাই, শিক্ষকেরা কি পারেন না এই আন্দোলনের পরিবেশটা নষ্ট করতে ?

একটা ছোট্ট উদাহরণ দেই,পাঁচ বছরে আমাদের সেন্স এখন কতোটা কার্যকরী সে'টার। ঈদের পর কোনও পরীক্ষার তারিখ দিচ্ছে না দেখে, আমি ভাবলাম দিন দশেকের জন্য ইন্ডিয়া থেকে ঘুরে আসি। ইন্ডিয়াতে থাকা অবস্থায়ই চার-পাঁচ দিনের মাথায় এক বন্ধুর মেইল পেলাম, দোস্ত পরীক্ষা ১০ তারিখ থেকে। এরপর আমি মটামুটি যতটা দ্রুত সম্ভব বাংলাদেশে চলে এসেছি। আসার পর এক বন্ধুর সাথে কথা প্রসঙ্গে যখন বললাম যে ভালোমত ঘুরতে পারি নি, পরীক্ষার জন্য চলে এসেছি, তখন ও বিরক্তি নিয়ে বললো, "তোকে কে বললো পরীক্ষা ১০ তারিখ থেকেই হবে?" আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি ওর দিকে। ও বললো,"এখনো হলের ডাইনিং খুলেনি, ক্যাফে খুলেনি, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের আগে খুলবে বলে মনেও হয় না। এতেই বোঝা যায় পরীক্ষা হবে না"

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আমার এই বন্ধুও শতভাগ আম জনতা, নন পলিটিক্যাল ছেলে। শুধু মাত্র এই ট্রেন্ড এনালাইসিস করেই সে ঠিক ধরতে পেরেছিলো।

আর যারা বলেন আমাদের মত সাধারণ ছাত্রদের একটিভ হওয়ার কথা, তাদের উদ্দেশ্যে বলি, বুয়েটে সাধারণ ছাত্ররা একবারই একটিভ হয়েছিলো ব্যাপকভাবে, সে'টা হচ্ছে গত বিশ্বকাপের সময়। সবাই মিলে দলে ধরে তৎকালীন DSW স্যারকে বারবার অনুরোধ করা হল, স্যার কারো অনুরোধেই যেন পরীক্ষা না পিছায়। স্যার আমাদের অনেক আশ্বাস দিলেন। এ'দিকে পরীক্ষা পিছাতে চায় যারা, সেইসব পলিটিক্যাল পোলাপানও স্যারের সাথে দেখা করতে গেল এবং তাদের দাবী জানালো। যথারীতি স্যার তাদেরও আশ্বাস দিলেন। এবং কার্যত ? কার্যত তিনি পলিটিক্যাল পোলাপানের আশ্বাসই রাখলেন। আমার বুয়েট জীবনে দেখা সবচেয়ে মরিয়া প্রচেষ্টা পরীক্ষা না পিছানোর জন্য মুখ থুবড়ে পড়লো।

রাগিব ভাই আপনি যেই কথাগুলি বলেছেন সেগুলি সত্যি। কিন্তু সহজ সত্যি আমাদের অনেকেই পাশ করার আগ পর্যন্ত বুঝবো না। আপনার বলার স্বরে অনেক বিরক্তি ছিলো, ক্ষোভ ছিলো - কিন্তু আপনিই চিন্তা করে দেখুন, এসব ছাত্ররা রাতারাতি পালটে যাবে এমনটা বিশ্বাসযোগ্য নয়- বরং শিক্ষকরাই কিছু পরিবর্তন এনে ছাত্রদের বাধ্য করাতে পারেন। আর এর উদাহরণ কিন্তু খুব বিরল কিছু নয়, শুধু মাত্র পরীক্ষার মধ্যের গ্যাপ বাড়িয়েই কিন্তু গত তিন সেমিস্টার আন্দোলন বিহীন, প্রায় পি এল বিহীন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।


অলমিতি বিস্তারেণ

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

রাগিব লিখেছেন:
আর, বুয়েটের শিক্ষকেরা অন্যায্য দাবী করলে যেমন সরবে তার প্রতিবাদ করা হয়েছে, বেয়াড়া কিছু ছাত্রদের পরীক্ষা পেছানোর দাবীকেও সেরকমই গদাম লাথি জানাচ্ছি। পাবলিকের টাকায় পড়াশোনা করে দুই দিন পর পর অমুক-তমুক অজুহাতে পরীক্ষা পেছানোর দাবী করা কারো সাথে পুতুপুতু বাবা বাছা করে কথা বলার কোনো রূচি হয় না। দুনিয়ার আর কোনো দেশে এরকম হয় না, ২-৩ মাস বন্ধ পেয়েও আবারো পরীক্ষা পেছানোর কথা কেউ মুখে আনতে পারে। ধিক!

রাগিবের এই মন্তব্যের সূত্র ধরে সামগ্রিকভাবে আমার বক্তব্য:

এখানে একটা প্রহসন আছে। এই ২/৩ মাসটা কিন্তু প্রথমেই বলে দেয়া হয় না, সময়টা আসে স্টেপ বাই স্টেপ বেসিসে। ফলে, ছাত্ররা এই অনিশ্চিত সময়টার জন্য নির্দিষ্ট কোনো প্ল্যান করতে ব্যর্থ হয়। পড়াশোনার সিস্টেমেও গলদ আছে। অনেক বিষয়ই আছে মুখস্ত করা লাগে। প্রথম ১ মাসে যা পড়া হলো, পরের ২ সপ্তাহে তার অধিকাংশই ভুলে যায়, সবকিছু একেবারে গোড়া থেকে শুরু করতে হয়। সেকেন্ড টাইম শুরু করলে অনেকের ক্ষেত্রেই আগের মত কনসেন্ট্রেশন আসে না। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে জানি, আমার সবচেয়ে খারাপ রেজাল্ট হয়েছিলো ১১ মাসের সেমিস্টারে।

আমার মতে, সবচেয়ে বড় সমস্যা অথোরিটির পরীক্ষা প্ল্যানিংয়ে। ছুটির সময় ছুটি, কাজের সময় কাজ - এই নীতিতে চললে সবচেয়ে এফেক্টিভ রেজাল্ট পাওয়া যাবে। এজন্যই রোজার বন্ধ, ঈদের ছুটি, নির্বাচন ইত্যাদির সাথে যোগ করে পিএল বা পরীক্ষার সময় নির্ধারণ করলে আখেরে ক্ষতি।

দেশের সবচেয়ে মেধাবী ছেলেগুলো কেন বারবার পরীক্ষা পিছাতে সচেষ্ট হয়, কর্তৃপক্ষের উচিত সেদিকে নজর দেয়া। যে কারণগুলো দেখানো হয়:

১) রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তি: বুয়েটে শতকরা কতভাগ ছেলে অ্যাকটিভলি পলিটিক্স করে? খুবই নগণ্য। যারা পলিটিক্স করে, তাদের নিজেদের জন্য পরীক্ষা পেছানোর তেমন দরকার আছে বলে মনে হয় না। তাদের অধিকাংশেরই দরকার পাস গ্রেড এবং তার জন্য ২ সপ্তাহের পিএল যা, ২ মাসের পিএলও তাই। তারপরেও পরীক্ষা পেছানোতে এদের অবদান আছে। কারণ, অনেক 'নিউট্রাল' ছেলেও পরীক্ষা পেছানোর জন্য এদের দিকে চেয়ে থাকে। এখন, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তি বন্ধ করা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় আমরা কি তাদের ওপর দোষ চাপিয়ে হাল ছেড়ে দিয়ে বসে থাকবো? সব সমস্যারই সমাধান আছে, প্ল্যানিংয়ে ত্রুটি না থাকলে এই সমস্যা কাটিয়ে উঠেও নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষা নেয়া সম্ভব।

২) ফ্রি পড়ে তাই চিন্তা নাই: এইটা একটা রাবিশ তত্ত্ব। পাবলিক ইউনিভার্সিটি সো কলড ফ্রি পড়ার জন্যই। আর ফ্রি পড়লেই কেউ দায়িত্ব-জ্ঞানহীন হয়ে যায় না। (প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে এক সেমিস্টার ক্লাস নেয়ার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, অনেক স্টুডেন্টই রেগুলার ক্লাস করে না, এক ল্যাব কোর্সে গ্রেডিং করতে গিয়ে দেখি ২/৩ জন এমনকি ফাইনাল কুইজও দেয় নি। এমন না যে, অসুস্থ ছিলো। পাস করানোর জন্য তাদেরকে আমিই ডেকে এনে আলাদা কুইজ নেই। বুয়েটে এই অবস্থা কেউ স্বপ্নেও ভাবতে পারবে না।) ফ্রি পড়া ঠেকাতে তাই টিউশন ফি আরোপের মত দুর্ঘটনা ঘটলে পরীক্ষা পেছানো বন্ধ তো হবেই না, উপরন্তু অনেক স্টুডেন্টই বিপাকে পড়বে। আমাদের দেশে স্টুডেন্টদের বাড়তি অর্থ সংস্থানের স্কোপ খুবই সীমিত।

৩) টিউশনি করে তাই পড়াশোনা করার সময় পায় না: সার্বিকভাবে এইটাও আরেকটা ফালতু কথা। কিছু কিছু পোলাপান আছে কোচিং সেন্টার ব্যবসায়ের সাথে জড়িত। তার বাইরে বুয়েটের অধিকাংশ ছাত্রই টিউশনি করে স্রেফ পড়াশোনার টাকা ম্যানেজ করার জন্য। এই দলে ক্লাসের ফার্স্টবয় যেমন আছে, ক্লাসের লাস্টবয়ও তেমন আছে। কোচিং সেন্টার ব্যবসায়ীরা পুরোদস্তুর ব্যবসায়ী। পরীক্ষা পেছানো আন্দোলনে দেয়ার মত সময় তাদের প্রায়ই থাকে না। দ্বিতীয় দলের জন্য তাড়াতাড়ি পাস করে বেরোনোই মঙ্গল। এমন না যে, সেমিস্টার দীর্ঘায়িত হলে রেজাল্ট ভালো হবে। পরীক্ষা পেছানোর মিছিলে আমি নিজেও অনেকবার গিয়েছি। গড়পড়তায় টিউশনিও করতাম ২টা। কিন্তু টিউশনি করে নিজে পড়তে পারি নাই, তাই পরীক্ষা পেছাও, এরকমটা কখনো হয় নি। অসুস্থতা ছাড়া ক্লাস ফাঁকি দিতেও হয় নি কখনো।

যেভাবে ঘটে অঘটন:
প্রথম সিনারিও: এখনকার অবস্থা জানি না, তবে আমাদের সময়ে সেশনালের কুইজগুলো থাকতো ক্লাসে শেষ দুই সপ্তাহে। ওইগুলো দিতে দিতেই পোলাপান টায়ার্ড হয়ে যেত। গ্রেড নির্ধারণে এই কুইজই ছিলো সবচেয়ে পায়াভারী জিনিস। এ অবস্থায় পোলাপানের দাবি থাকতো ৩ সপ্তাহ পিএল-এর। কর্তৃপক্ষ অনড়। তারা ধনুকভাঙ্গা পণ করেছেন, পিএল বাড়ানো হবে না। এক সপ্তাহ বাড়লে কেয়ামত হয়ে যাবে। ফলাফল ডিএসডাব্লিউ/ভিসির কাছে অনুরোধ, মিছিল করে সময় নষ্ট। যারা মিছিল করে না, তারাও পড়াশোনায় ঢিলা দেয়। কারণ, এক পরীক্ষার জন্য ২ বার প্রস্তুতি নেয়ার মত বিরক্তিকর কাজটি অনেকেই করতে চায় না।
দ্বিতীয় সিনারিও: এবার যেমনটা ঘটেছে, পিএল এর সাথে অন্যান্য ছুটির ওভারল্যাপ করে স্কেজিউল করা হয়। ফলে পোলাপান না পারে ছুটিতে রিল্যাক্সড হতে, না পরে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে। একটা অস্থির সময়ের হতাশবোধ থেকেই মূলত পরীক্ষা পেছানোর ফন্দিফিকির শুরু করে।

সমাধান কি হতে পারে?
১) প্রথমে দরকার সিলেবাস ও প্রশ্নপত্রের ধরণ এমন করা, যাতে পরীক্ষার চাপ কমিয়ে ছাত্ররা কি শিখলো তার যথাযথ মূল্যায়ন করা যায়। ম্যাক্সওয়েলের ফর্মূলার প্রমাণ মুখস্ত করে পরীক্ষার খাতায় বমি করাজাতীয় প্রশ্নপত্রের হাত থেকে ছাত্রদেরকে মুক্তি দেয়া উচিত।

২) পিএল সিস্টেমটাই তুলে দেয়া যায়। ছাত্রদের সাথে ক্লাসে আলোচনা করে প্রত্যেক শিক্ষক কোনো বিষয়ের পরীক্ষা কবে নিবেন, তা ঠিক করতে পারেন।

৩) সারা ইউনিভার্সিটি একসাথে পরীক্ষা না নিয়ে প্রত্যেক ডিপার্টমেন্টের ওপর তাদের পাছা সামলানোর দায়িত্ব ছেড়ে দেয়া। এই প্রক্রিয়ায়ও পিএল দরকার নেই।

৪) এরপরেও পিএল রাখতে হলে সেশনালের কাজগুলো আগেভাগেই শেষ করা, যাতে সেমিস্টারের লাস্ট ২ সপ্তায় ছাত্রদের নাভিশ্বাস না ওঠে। টার্মের শুরুতে এমনভাবে প্ল্যান করা, যাতে পিএল/পরীক্ষা অন্য কোনো 'জনগুরুত্বপূর্ণ' ছুটির সাথে ওভারল্যাপ না করে। (ইউনির বাইরের ফ্যাক্টরগুলো বিবেচনা করতে হবে কেন, এ প্রশ্ন তোলা যেতে পারে। তবে সমস্যা যেহেতু হচ্ছে, এটাও একটা বাস্তব সমাধান বলেই মনে হয়।) পিএল না বাড়িয়ে পরীক্ষার মাঝে গ্যাপ বাড়ানো যেতে পারে।

৫) শিক্ষকদের মূল্যায়ন সিস্টেম চালু করা। বুয়েটের জন্য এটা খুবই দরকার।অনেক শিক্ষকই আছেন, যারা আদ্যিকালের চোথা আবৃত্তি করে টার্ম শেষ করেন। ক্লাসে ভালো না পড়ালে সেমিস্টারের শেষে গিয়ে ছাত্রদের ওপর চাপ বেশি পড়ে। একজন ছাত্র যেমন ইচ্ছামত টিউশনি করতে পারে, একজন শিক্ষকও ইচ্ছামত প্রাইভেটে ক্লাস নেন - কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু তার জন্য মেইন কাজের ক্ষতি যাতে না হয়, সেটা নিশ্চিত করার জন্যও এই মূল্যায়ন দরকার। এটা করলে ছাত্রশিক্ষক সম্পর্কেও উন্নতি ঘটবে। কোনো শিক্ষক যেমন ছাত্রকে ঝাড়ি দিতে পারবেন, "এই ছেলে তোমার স্টুডেন্ট নাম্বার কতো?" বলে, ছাত্রও মুচকি হেসে বলতে পারবে, "স্যার, কোন সাবজেক্টের ক্লাস নেন?" চোখ টিপি

৬) শিক্ষকেরা সামার ভ্যাকেশনও নেন না শুনে খুব অবাক এবং দুঃখিত হয়েছি। এত নিবেদিতপ্রাণ হওয়ার দরকার নেই। আপনারা আপনাদের প্রাপ্য ছুটি নিন, ছুটিতে রিল্যাক্সড হউন। ছুটির পরে আবার পূর্ণোদ্যমে ফিরে আসুন ক্লাসে। এমনকি যন্ত্রেরও বিশ্রাম দরকার। আর একজন মানুষ বিশ্রাম না নিয়ে কতোটা কাজ করতে পারে? সে কাজের কোয়ালিটিই বা কেমন হবে?

৭) ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের উন্নয়ন। এটা কিভাবে করা যায়, দুইপক্ষই ভাবুন।

সমস্যা থাকলে সমাধান থাকবে। তবে কর্তৃপক্ষকে রাজনৈতিক দল, বেয়াড়া ছাত্র ইত্যাদির ওপর অজুহাত চাপানোর সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে দায়িত্ব পালনে আন্তরিক হতে হবে। সঠিক সময়ে সঠিক উপায়ে শিক্ষাদান নিশ্চিত করতেই তারা আসন অলঙ্কৃত করেন। এটা তারা পুতু পুতু বাবা সোনা করে করুন আর পুলিশ লেলিয়ে দিয়ে করুন বা সঠিক পরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়নের মাধ্যমে করুন, দায়িত্বটা তাদের, ব্যর্থতাটাও (অন্তত সিংহভাগই) তাদের।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

সবজান্তা এর ছবি

চলুক

বলাইদা আপনি জিনিয়াস। এই কথা, ঠিক এই কথাগুলাই আমি বলতে চাচ্ছিলাম, তবে আপনার মত প্রিসিশনটা আসছিলো না।


অলমিতি বিস্তারেণ

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

হে হে। এই বক্তব্য নিয়া আমি একবার দারুণ বিপাকে পড়েছিলাম। ইন্টারনেটের ব্যাপার না হলে মাইরটাইর খাইতাম। চোখ টিপি

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

সবজান্তা এর ছবি

দুঃখের কথা কি কমু কন !

গতকাল আমাদের সাধারণ পোলাপান 4-2 এর ডি এস ডব্লু স্যারের সাথে দুই দফায় দেখা কইরা, স্যাররে বারবার রিকোয়েস্ট করসে, স্যার প্লিজ এক সপ্তাহ পিছায়া দেন, না হইলে স্যার বড় ঝামেলায় অনেক দিন গ্যাঞ্জমা হয়া যাবে। স্যার আশ্বাস দিলো এক সপ্তাহ পিছানো হবে, আমরাও খুশি।

আজকে একটা একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিং ছিলো, সেইটা শেষও হয়ে গেছে। সাধারণত মিটিং এর ঘন্টা খানেকের মধ্যেই নোটিশ চলে আসে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এক সপ্তাহের নোটিশ আসে নাই। এইদিকে ভিতরের জোরদার খবর হচ্ছে টিচারেরদের কাছে দশ তারিখ পরীক্ষার হিসেবে গার্ড দেওয়ার শিডিউল বা এই ধরণের কিছু পৌছে গেছে। হলগুলিতে নানা রকম গুজবে রীতিমত আতংক।

এখন কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা করছি যেন নোটিশ চলে আসে। না হলে, কি হতে পারে ভাবতেই অস্থির লাগছে।


অলমিতি বিস্তারেণ

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

আপনার এই কমেন্টে অনেক প্রয়োজনীয় বিষয় উঠে এসেছে।

মুখস্ত করা দু ধরনের হয়।
১। চোথা মেরে দেয়া। অর্থাৎ দাড়ি কমা সহ মুখস্ত।
২। চোথা মেরে মেরে প্যাটার্ন মুখস্ত করা। যেমন, অংক এই ধরনের হলে এইভাবে করতে হবে।

আমাদের সত্যিকার প্রবলেম দেয়া হয় না। কিংবা দিলেও বুয়েট কালচার সেটার একটা নিজস্বঃ পদ্ধতি বানিয়ে নিয়েছে। একবার হিট ট্রান্সফার ক্লাসে একটা চমৎকার প্রবলেম এসাইনমেন্ট হিসেবে দেয়া হল। সেটা টাফ ছিল। আমি দুরাত জেগে সেটা সমাধান করলাম। কম্পিউটারে গ্রাফট্রাফ জেনারেট করার জন্য সিতে একটা প্রোগ্রাম লিখলাম। তারপর দেখি এক বন্ধু আমাকে জিজ্ঞেস করছে কিভাবে করতে হবে। তাকে সুত্র ধরিয়ে দিলাম। তাতে সে সন্তুষ্ট নয়। তারপর তাকে একটা কপি দিলাম সমাধানটার। পরের দিন ক্লাশে গিয়ে দেখি পলাশীতে সেই সমাধানে কপি বিক্রী হচ্ছে। সেইসাথে পোলাপাইন আমার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছে, কেননা আমি সেটা তাদের কাছে আগে দেইনি! কারো মাথায় এটা নেই যে সমস্যাটা ১৩০ জনের একটা ক্লাশে এট লিস্ট ৯০ জনের আলাদা ভাবে করা উচিৎ ছিল।

প্রফেসররা অংক বানিয়ে দেননা। লাইব্রেরী থেকে একটা অপরিচিত বই খুঁজে এনে সেখান থেকে প্রবলেম টুকে দিয়ে দেন। উচ্চ নম্বর প্রত্যাশী শিক্ষার্থীরা স্যারদের রুমে ঘুর ঘুর করে আর জেনে নেয় কি কি বই উনার রুমে আছে। তারপর সে গুলো ফলো করলেই ছক্কা!

সত্যিকারের মানসিক উন্নয়ন হয়না এসব ক্ষেত্রে। সত্যিকারের ব্রিলিয়ান্ট ছেলেগুলোও উঠে আসেনা।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

হিমু এর ছবি

আমি মাস্টার্সে এসে পরপর দুইদিন পরীক্ষা বেশ কয়েকটা দিলাম। শতভাগ ওয়েইট ঐ পরীক্ষাতেই ছিলো। পিএল বলে কোন বালছাল ছিলো না। প্রতিবাদের প্রয়োজনও ছিলো না, কারণ সবকিছু পূর্বনির্ধারিত। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর, শিক্ষক এবং ছাত্ররা সেমেস্টারের শুরুতেই এ নিয়ে আলাপ করে তারিখ ঠিক করেছে। কাজেই সে অনুযায়ী গোটা সেমেস্টার ধরে প্রস্তুতি নেয়া যায়।

বুয়েটে আমার ফলাফল লজ্জাস্কর ছিলো, হামজা দিয়েও টেনে তোলা সম্ভব ছিলো না আমাকে। সেমেস্টারের শেষ দিকে সেশন্যালের জন্যে টানা পড়ার একটা জোশ ভর করতো, পিএলে বরং সেই জেহাদী জোশে ভাটা পড়তো। গোটা পিএল কেটে যেতো হাবিজাবি করে। ফলে ঐ যা পড়ার তা পরীক্ষার আগের দিনই পড়তে হতো। আমি যেহেতু নিতান্তই একজন সাধারণ ছাত্র ছিলাম, পিএল পদ্ধতিটাই তুলে দেয়ার জন্যে যে দাবি বারবার করে নানামহলে করে এসেছি, তা ফলপ্রসূ হয়নি। লীগ বা দলের পান্ডা হলে একটা কথা ছিলো।

সাধারণ ছাত্রদের ওপর দোষ চাপানো সহজ। বুয়েটের প্রবল পরাক্রমশালী শিক্ষকবৃন্দ তাঁদের একজন ছাত্রী খুন হওয়ার পরও ছাত্রদের দাবির মুখে অবিচল ছিলেন। আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের পুলিশ দিয়ে পশুর মতো পিটিয়ে বার করেছেন ক্যাম্পাস থেকে। আটদিন ধরে অনশনরত স্যালাইনে রাখা এক ছাত্রকে লাথি দিয়ে সিঁড়ি থেকে ফেলে দিয়েছিলেন আমার বিভাগের এক নৃশংস সিনিয়র শিক্ষক। তার পরও খুনী মুকির বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শক্ত অবস্থান নিতে শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ হয়েছে। আর পরীক্ষা পেছানো নিয়ে ছাত্রদের আন্দোলনের মুখে তাঁরা ঘাবড়ে গিয়ে পরীক্ষা পেছান, এ ধরনের লেবেনচুশ স্টেটমেন্ট শুনলে প্রবল হাসি পায়। হোয়েন দেয়ার ইজ আ উইল, দেয়ার ইজ আ ওয়ে। বুয়েট কর্তৃপক্ষ আমড়াতলা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বৌচি টুর্নামেন্টের বি-টীম নন।


হাঁটুপানির জলদস্যু

সবজান্তা এর ছবি

০০

বুয়েট কর্তৃপক্ষ আমড়াতলা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বৌচি টুর্নামেন্টের বি-টীম নন

হো হো হো

০১

কয়েকদিন আগে আমি আর আরেকবন্ধু মিলে চিন্তা করছিলাম ঠিক কীভাবে বুয়েট কর্তৃপক্ষ ঠিক সময়ে পরীক্ষা নিতে পারে।

আমরা চিন্তা করে দেখলাম, টার্মচলাকালীন সময়ে কিংবা শেষের দিকে প্রতিটা লেভেল-টার্ম-ডিপার্টমেন্টের থেকে দু'জন করে ছাত্র নিয়ে একটা সভাতে শিক্ষকরা বসবেন। সেখানে তারা জানতে চাইবেন, ক্লাস শেষ হওয়ার কত দিন পর ছাত্ররা পরীক্ষা দিতে চায়। তাদের এক সপ্তাহ সময় দিবেন সহপাঠীদের সাথে আলাপ করার জন্য। এরপরের সপ্তাহে শিক্ষক-ছাত্ররা নিজেদের ভেতর আলোচনা করে পরীক্ষার ডেট দিবেন। এবং শর্ত থাকবে কোন অবস্থাতেই এই তারিখ পরিবর্তন করা যাবে না। যদি এর পর কোন আন্দোলন হয়, তাহলে এইসব ছাত্রদের শো কজ করা হবে।

চিন্তাটায় কিছু খুঁত আমরা নিজেরাই বের করতে পেরেছি, কিন্তু এর চেয়ে ভালো কিছু আর মাথায় আসেনি।


অলমিতি বিস্তারেণ

অতিথি এর ছবি

ইহা আসিয়াছে।
৭ দিবসের জন্য ইহা পিছাইয়া গেলো

বুয়েট_ছাত্র এর ছবি

অনেক কথা শুনলাম । নানা মুনির নানা মত , সেটাই স্বাভাবিক । আমার পাঁচ বছরের বুয়েট লাইফের ধারনা থেকে একটা কনক্লুসানে আসি >>>>
১। পরীক্ষা পেছানোর পক্ষে থাকে না তারা যারা সারা টার্ম নিয়মিত পড়াশুনা করে । ২ সপ্তাহের পি,এল এদের কাছে বইগুলো একবার রিভিশন দেয়ার সময় । পিএল বেশী দিলে এদের সমস্যা একদিক দিয়ে না থাকলেও আবার আছে। বুয়েটে গ্রেড্রিং পুরোটাই নর্মালাইজড ওয়েতে করা হয় । ব্যাপারটা এরকম যে যদি কোন কারনে ১০০ জনের কারোরই নাম্বার ৮০ প্লাস না হয় তখন শিক্ষকের মর্জির উপর ডিপেন্ড করে ৫-১০ জন A+(৮০ প্লাস) গ্রেড পায় । সুতরাং এই ক্লাসের ছাত্ররা চাইবে না পরীক্ষা পেছাক কারন তাতে অন্যদের তাকে ধরে ফেলার সম্ভাবনা বাড়বে । এছাড়া বারবার রিভিশন দেয়াটা এদের জন্যও বিরক্তিকর ।

২। পরীক্ষা পেছানোর পক্ষে থাকে যারা তারা সাধারনত সারা টার্মে বলতে গেলে কিছুই পড়ে না ,শুধু হয়ত ক্লাসটেষ্টের আগের রাতে বসে ক্লাসটেষ্টের জন্য সিলেক্টড কিছু টপিকস পড়ে । তাই ১৪ দিনের পিএলটাতেই এদের পুরা বই পড়তে হয় । এরা তাই চায় পরীক্ষা পেছাতে । আমার ব্যক্তিগত ধারনা থেকে বলতে পারি শুধুমাত্র এ পদ্ধতি অবলম্বন করেও 3.7 পাওয়া যায় । তাই সারা টার্ম না পড়ে এরকমভাবে পরীক্ষা পিছিয়ে ভাল করলে খারাপ কি ?

৩। এই শ্রেনীর ছাত্ররা পরীক্ষ পেছায় স্রেফ পরীক্ষার ভয়ে । পরীক্ষা পেছালেও এরা পড়বে ঐ পরীক্ষার আগের ২-৩ দিনই ।

অবাঞ্ছিত এর ছবি

"ছাত্ররা কবে পরীক্ষা দিতে চায়" এ বিষয়টা কেন বারবার আলোচনায় উঠে আসছে বুঝতে পারলাম না...... যতটুকু জানি/বুঝি (খুব কম) তা হল যে কর্মক্ষেত্রে নিয়োগকর্তা বা উপরমহল কখনো জিজ্ঞাসিবেন না "তুমি কাজটা কবে জমা দিতে চাও?" ... ডেডলাইন মিট করতে না পারলে ঘোরতর বিপদ বলেই জানি....

শিক্ষাক্ষেত্র তো এইসব পরিস্থিতির জন্যেই প্রস্তুত করে.... সকল ক্ষেত্রেই করা উচিত... উপরোক্ত উদাহরণ অবশ্য আমি চোথা মেরে দিলাম আমার এক প্রফেসরের থেকে... তাঁর নিজের এক দিনে তিনটা ফাইনাল দেবার অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা ওঠায় বলেছিলেন ....

আমাদের বছরের শুরুতে ফাইনাল পরীক্ষার ডেট নির্ধারিত থাকে.. ঐদিন দিলে দিবো.. না দিলে ফেইল করব... সহজ হিসাব.. এখানে আন্দোলন করার কোন সুযোগ নেই। এবং এই নিয়ম পালন করতে কিন্তু বিদেশে কোন বাংলাদেশী ছাত্রেরই অসুবিধা হচ্ছে না.. ঠিকই মানিয়ে নিচ্ছে (যেমনটা পূর্বেও বলা হয়েছে)। দেশে কেন পারা যাবে না?

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

সমস্যা আসলে এই একনায়কতান্ত্রিক মনোভাবেই। আমি যতদূর বুঝি, প্রত্যেকটা স্মার্ট বসই ফ্লেক্সিবিলিটির অপশন থাকলে যে কাজটা করবে, সেই অধস্তনের সাথে আলোচনা করেই ডেডলাইন ঠিক করেন। তাতে অধস্তন মোটিভেটেড থাকেন, ডেডলাইন নিয়ে অসন্তুষ্টির কোনো কারণ থাকে না।

শিক্ষক-ছাত্র সম্পর্ক কতোটা বস-অধস্তন সম্পর্ক তা নিয়ে তর্কের অবকাশ আছে। তবে বিদেশের যে উদাহরণ দিলেন, আমার অভিজ্ঞতা তার থেকে ভিন্ন। এখানে বছরের শুরুতে পরীক্ষার তারিখ ঠিক করা থাকে না। অধিকাংশ প্রফেসরই ক্লাসে ছাত্রদের সাথে আলোচনা করে একটা তারিখ ঠিক করেন। কারো মারাত্মক অসুবিধা থাকলে, যেমন একই সময়ে ২ পরীক্ষা, তারা প্রস্তাবিত তারিখ পরিবর্তন করেন, বা দরকার হলে ওই ছাত্রের পরীক্ষা আলাদাভাবে নেন।

কাজটা যে করছে, সেটা পরীক্ষার পড়া হোক আর অফিসের কাজ, তার মোটিভেশন থাকাটা খুবই দরকার। কোনো স্মার্ট লোকই সেই মোটিভেশনটা নষ্ট করতে বসগিরি বা প্রফেসরগিরি ফলাবেননা। বসের সম্মান বা প্রফেসরের সম্মান আদায় করার অন্য উপায় আছে।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

অবাঞ্ছিত এর ছবি

আপনার সাথে আমার অভিজ্ঞতা মিলছে না...

আমি এই- http://www.okstate.edu/registrar/Exams/FinalExamsFall2007.html ধরনের স্কেডিউল মেনে অভস্ত্য। কারো আনএভয়েডেবল সমস্যা থাকলে অনেক সময় পরীক্ষা নির্ধারিত সময়ের আগে নেন প্রফেসর আলোচনা করে, তবে সেটা বিশেষ ক্ষেত্র...

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

ফিক্সড স্কেজিউল থাকা তেমন সমস্যা না,সমস্যা হলো ফ্লেক্সিবিলিটি না থাকা। আপনার প্রফেসর যেমন কারো সমস্যা থাকলে আলাদা পরীক্ষা নেবেন, বুয়েটে সেটা হবে না। বাই এনি চান্স, আপনি পরীক্ষার দিন অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রফেসরকে সেটা ইনফর্ম করেও কোনো লাভ হয় না। পরের সেমিস্টারে আবার পরীক্ষা দিতে হয় এবং ম্যাক্সিমাম গ্রেড সম্ভবত C পাওয়া যায়। চোখ টিপি

আমি থার্ড ইয়ারে একবার পরীক্ষার মধ্যে পড়লাম চিকেন পক্সে। ২৫ তারিখ পরীক্ষা, ২৩ তারিখ রাত্রেই আমাকে তল্পিতল্পাসমেত হাসপাতালে চলে যেতে হলো। কয়েকটা পরীক্ষা মিস করা দূরে থাক, পুরো সেমিস্টার উইথড্র করার ডেডলাইনও তখন নেই। পরীক্ষা না দিলে পরের সেমিস্টারে রিপিট করলে আমি কোনো সাবজেক্টেই C এর বেশি পেতাম না। (জানি না, এই নিয়মটা এখনো বহাল তবিয়তে আছে কিনা।) আমার জন্য ভালো রেজাল্ট টা গুরুত্বপূর্ণ ছিলো, ওই এক টার্মের অসুস্থতা আমার আগের সব পরিশ্রমকে নষ্ট করে দিতে পারতো। সেই সময় হাসপাতালে ভয়াবহ একটা সময় কাটিয়েছি। সারা শরীর চুলকায়, ব্যথা, মাথায় যন্ত্রণা, বাথরুমে গেলে পড়ে যাবো কিনা, শরীরে বিন্দুমাত্র শক্তি অবশিষ্ট নেই। তার মধ্যেও আমাকে পড়তে হয়েছে।১০ মিনিট পড়ে ১ ঘন্টা রেস্ট নিতে হতো। ভাগ্য ভালো, আমার প্রস্তুতি খারাপ ছিলো না, ওভাবে পরীক্ষা দিয়েই ৩.৯২ পাই। চোখ টিপি (এই রেজাল্টটা আসলে নিজেকে ভালো ছাত্র জাহির করার জন্য না, বুয়েটের একজন পরীক্ষা পেছানো আন্দোলনে যোগ দেয়া ছাত্রের ধৈর্য্যের উদাহরণ হিসেবে দিলাম।)

সেই সময়ের কথা মনে পড়লে এখনো শিউরে উঠি। একজন অসুস্থ মানুষের সর্বোচ্চ প্রায়োরিটি সুস্থ হয়ে ওঠা। বেঁচে থাকলে কাজ করা যাবে,পরীক্ষাও দেয়া যাবে। এখন শত কাজ থাকলেও সামান্য জ্বর হলেই অফিসে যাওয়া লাগে না, এমন কি ছুটিও লাগে না। আর বুয়েটের এমনই নিয়ম যে,বাই এনি চান্স একটা পরীক্ষা না দিতে পারলে আগের সব পরিশ্রম মাটি।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

বটমলাইনটা মনে হয় একটু ভিন্ন জায়গায়:
পরীক্ষা পেছানোর জন্য ছাত্র বা শিক্ষকদের মধ্যে যারাই দায়ী হোক,
পরীক্ষা পেছানোতে ক্ষতিটা হয় শুধুই ছাত্রদের।
ছাত্ররা এটা যত তাড়াতাড়ি বুঝবে, ততই তাদের জন্য ভালো।

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

আইবিএ-র অভিজ্ঞতা বলতে পারি। বিবিএ-র শুরুর দিকের ব্যাচ আমরা। খালেদা-হাসিনার ব্যাপক ফাইট তখন। দল আর লীগের পিটাপিটিতে ক্যাম্পাসে নিরীহ পোলাপাইন মরে। সাত সকালে গিয়া দেখি নজরুলের কবরের পাশে গেট লক করা। এই সব আন্দোলন হরতালের কারনে ক্লাস হয় নাই ঠিকমতন। অসুবিধা নাই। মেক-আপ ক্লাসের তারিখ দিলো সব টিচার। কি টাইমিং। শুক্রবার সকালে, জুম্মার আগে। হরতালের পরে, সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায়। এমন কি পাবলিক হলিডেতে পর্যন্ত। বিজয় দিবস মানে ১৬ই ডিসেম্বরের দিন সন্ধ্যাবেলা আইবিএ-তে মেক-আপ ক্লাস করার অভিজ্ঞতা মনে পড়ে - সেটা বোধ হয় ১৯৯৭ সালের কথা। চার বছরে পাশ করতে পারছিলাম সেই কারনে। ২২ বছর বয়সে প্রথম জব। তবে এখন কি অবস্থা আইবিএ-র জানা নাই।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

পল্টু এর ছবি

এমন কি করা যায় না,

১। যত দিন পরীক্ষা পেছাবে, তত দিন পর্যন্ত বুয়েট কর্তৃপক্ষ সরকার থেকে কোন অর্থ গ্রহণ করবেন না। প্রতিদিন বুয়েটের বেতন/অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ এর জন্য যে খরচ প্রয়োজন, সেই খরচটা ছাত্রদের বহন করতে হবে। কারণ এই বন্ধগুলো একদমই একাডেমিক ক্যালেন্ডার এর বাইরে। ছাত্ররা যদি সবাই পরীক্ষা পেছাতে একমত হয় তাহলে পেছানো হোক।

অথবা,

২। প্রত্যেক ছাত্রের একটা করে আইআইসিটি একাউন্ট আছে। এই একাউন্ট দিয়ে আমরা কোর্স রেজিস্ট্রেশন করে থাকি। সেখান থেকে পরীক্ষার তারিখ এর বিষয়ে পোলিং এর ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

অন্দ্রিলা [অতিথি] এর ছবি

আইবিএ বিবিএ বারো নাম্বার ব্যাচ।

ইউনিভার্সিটিতে ঢুকার ঠিক পরপরই একুশে বইমেলাতে হুমায়ুন আজাদ স্যারের উপরে এ্যাটাকের প্রতিবাদে স্টুডেন্ট স্ট্রাইক হয়ে চার/পাঁচ মাসের জন্য পুরা ইউনিভার্সিটি বন্ধ হয়ে গেলো। ইউনি খোলার পরে মনে হয় এক মাসের মতো ক্লাস হয়ে সব মিড-টার্ম, আর মিড-টার্মের তিন সপ্তাহ পরে ফাইনাল হলো মনে হয় আগস্টেই। তার জন্য মেক-আপ ক্লাস, প্রেজেন্টেশন সব করে প্রায় দিনই সন্ধ্যা সাতটা আটটায় বাসায় যেতাম। স্যারেরা শুক্রবার সকালে জুম্মার আগে ক্লাস নেওয়া শুরু করতো, আবার জুম্মার পরে লাঞ্চ খাওয়ায়ে আবার ক্লাস নিতো। মেক আপ ক্লাস নেওয়া পরের সেমিস্টারেও সমানে চলেছিলো। এই কারনেই সেকেন্ড সেমিস্টার ঠিক ডিসেম্বরেই শেষ হয়েছিলো।

আমাদের ৪ বছর অনেক রাজনৈতিক উত্থান পতন হয়েছে, অনেকবার স্টুডেন্ট স্ট্রাইক হয়েছে, এই কারনেই আমাদের ব্যাচের বের হতে সম্ভবত সব চাইতে বেশি সময় লেগেছে, চার বছর চার মাস। এর মধ্যে ঢাকা ইউনিভার্সিটির সামার ভ্যাকেশন, উইন্টার ভ্যাকেশন কোনোদিন চোখে দেখলাম না। চার বছরই বিজয়া দশমীর দিনে মিড-টার্ম বা ফাইনাল কিছু একটা দিয়েছি :'(

এই চার বছরে একই দিনে দুইটা মিড-টার্ম বা দুইটা ফাইনাল পরীক্ষা দিয়েছি অনেকবার, আবার ওই একই দিনে টার্ম পেপারও জমা দিতে হয়েছে।

ফলাফল, ২২ বছর বয়সে প্রথম চাকরি। আমাদের চাকরির প্রায় এক বছর হয়ে যাচ্ছে, আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমাদের চাইতে তিন চার বছরের সিনিয়র ব্যাচের লোকজন এখন মাত্র পাশ করে ইন্টার্নশিপে বা এন্ট্রি লেভেল পজিশনে ঢুকছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া আমার স্কুল কলেজের বন্ধুরা এখনো সবাইই ছাত্র।

তবে ফ্রেশার বা আমার মতো কম এক্সপেরিয়েন্সওয়ালাদের জন্য দেশে চাকরি বাকরির অবস্থা এখন মারাত্মক খারাপ। পুরানো ব্যাচগুলা যেইরকম মুড়িমুড়কির মতো চাকরি পেয়েছে, সেই স্বর্ণযুগের সাথে এখনকার সময়ের তুলনা করলে অনেক মন খারাপ লাগে। সেইটা অবশ্য আরেক ইতিহাস।

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

স্বর্ণযুগ কি না জানিনা, তবে সেই সময়ে বিবিএ জিনিসটাই নতুন ছিল। এমনকি অনেক ছাত্রদের কাছেও -- এমপ্লয়ারদের কথা তো বাদই দিলাম। (বিবিএ-র ভর্তি পরীক্ষার ফর্ম ফিলাপের আগের দিন পর্যন্ত আমি আর আমার বেস্ট ফ্রেন্ড জানতাম না, বিবিএ-টা আসলে কি বস্তু। এইটা কি খায় না পিন্দে? তখন আমাদের সবার জোর ফোকাস স্যাট পরীক্ষার দিকে। এক রকম ভাসতে ভাসতেই আইবিএ-তে আসা।) পাশ করার পর দেখলাম বিভিন্ন অফিস-আদালত আস্তে আস্তে বেশী নাক-উঁচু, বেশী ঠাট-বাটওয়ালা আর বেশী-পয়সা-চাওয়া এমবিএ-দের পিছনের সীটে পাঠায় দিল, আর বাচ্চা বিবিএ-রা তার সুবিধাটা পেতে শুরু করলো। তার পাশাপাশি প্রাইভেট-এর বিবিএ-র কোয়ালিটি নিয়েও তখন অনেকরকম সন্দেহ ছিল।

এখন তো শুনি আইবিএ আর প্রাইভেট-এর বিবিএ চাকরির বাজারে সমান তালেই পাল্লা দেয়। মার্কেটে বিবিএ-ও অনেক বেশী।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।