সকালটা রোজকার মতই সদামাটা, দেরিতে ঘুম থেকে উঠে কোনমতে গোসলটা সেরে জোরকদমে মার্চপাষ্ট, প্রায় দৌঁড়েই রাস্তার মোড়ে। তার পরে টুক করে হোটেলে ঢুকে পড়া, রোজকার পরিচিত বেয়ারার সালাম নেওয়া গম্ভীর মুখে, যেনো আমি কোনো বিশিষ্ট হোমরা চোমরা আরকি।
না বলতেই এসে দাঁড়ায় এক কাপ কম চিনি দেওয়া চা হাতে, দিনের প্রথম সিগারেট, চায়ের সাথে, এক চুমুক আগুন গরম চা আর এক বুক ধোঁয়া। আহ!
চা শেষ হতে না হতেই সামনে পেয়ে যাই একটা প্যাকেট, তিনটে পরোটা আর ডালের পার্শেল। বিল মেটাই, বকশিশ ছাড়ি মোটা, নামি রাস্তায়।
"আ্যাই খালি" পিলে চমকানো গলায় ডাকি, রিক্শা নিয়ে সোজা অফিসে, কোনমতে পৌঁছোই হাজিরার নির্দিষ্ট সময় পার হবার আগেই। তার পরে আয়েশ করে নাস্তা। পেটভরে যাবার পরে ছাড়ি মিউজিক, গান ছাড়া কাজ করতেই পারি না একদম।
দুপুরে নিরস মুখে গিলি খানিকটা ন্যুডুলস - ডাক্তারের বারন, ওজন নাকি অনেক বেশি আমার, অসহ্য ব্যাক পেইনের সেটাই কারন। তবে, মানছি, হাভাতের মত গেলা কমিয়ে পেইন কমেছে খানিকটা।
সন্ধেবেলায় নামি নীচে, আবার রিকশা খুঁজে ফেরা, তবে বাসা নামের খুপরিটাতে নয়, রোজ কোনো নতুন মোড়ে। ঘরফেরতা মানুষের ভীড়ে ঠেলে ধাক্কিয়ে এলোমেলো চলা খানিকটা। মানুষগুলোর সারাদিনের কাজের ক্লান্তি ভরা শ্রান্ত মুখ, মোড়ের চায়ের দোকানে অফিসের ওপরওলার ওপরে নিস্ফল ঝাড়া ক্রোধ, ক্লান্ত অথচ সুখি চেহারার ছেলেটার নিচু গলার ফোনালাপ - প্রেমিকা অথবা ঘরণীর সাথে, বহুদিন আগে রিটায়ার্ড চাকুরে বুড়োটার এই গোল্লায় যাওয়া দুনিয়ার প্রতি বাক্যবান - এসবের মাঝে যেনো বেঁচে থাকবার প্রেরনা পাই রোজ।
তারপরে একসময় কাঁধের ব্যাগটা ভারি মনে হতে থাকলে ফিরে যাই নিজের খুপরিটাতে। ল্যাপটপটা অপেক্ষায় থাকে অনলাইন হবার।
স্ট্যাটাস অফলাইন করে, দিনদুনিয়া দাবড়ে ফিরি সারা রাত, ভোর নাগাদ ক্লান্ত শরীর ঘুমোতে চায়, অথচ চোখে ঘুম নামেনা একদমই।
জোরকরে নিজেকে বিছানায় ফেলি, মুখের ভেতরকার সবসময়কার তেঁতো স্বাদটা আরো প্রকট হতে থাকে।
পরদিন আরেকটা অভিশপ্ত দিনের অপেক্ষায় একসময় ঘুমোই কয়েক ঘন্টা।
অথবা মরে যাই প্রমিথউসের মত...
রাতমজুর
http://www.raatmojur.com/
মন্তব্য
গণরোজনামচা
তাই বুঝি?
গড়পড়তা এই তো জীবন...
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
ভালো লাগলো।
---
তবে সম্ভবত, লেখার ভেতরের ছন্দটুকু ভেঙে দিলে পড়তে আরো ভালো লাগতো। ...
নিয়মিত লেখার অনুরোধ রইলো।
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
স্বাগতম রাতমজুর!
লেখাটা খুব ভাল লাগলো। পড়তে পড়তে নিজের যাপিত জীবনেরও একটুকরো দেখতে পেলাম, এরকম মনে হলো!
আরো লিখতে থাকেন।
@শাহেনশাহ সিমন
তাই নাকি!!!
@সুলতানা পারভীন শিমুল
সেটাই বোধ হয়...
@বিপ্লব রহমান
এখোনো চরম নভিস ভাই আমি...
@অনীক আন্দালিব
আহ্বানের জন্যে ধন্যবাদ।
ডুয়াল পোস্টিঙের কারণে পোস্টটি লেখকের নিজের ব্লগে প্রকাশিত হলো। বিস্তারিত জানতে নীতিমালা দেখুন। ধন্যবাদ।
নতুন মন্তব্য করুন